তারেক রহমানকে নিয়ে কথা বললে ‘কিছু হয়ে গেলে আমরা দায়ী থাকব না’ বলে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়া নেতার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ছাত্রদল। বরং সংগঠনের নেতারা মনে করেন, ওমর ফারুক কাউসার সেদিন ‘সঠিক কাজ করেছেন’।
ছাত্রদল নেতারা এও বলেছেন, ভবিষ্যতেও বিএনপি বা দলের নেতাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করলে একইভাবে ‘প্রতিবাদ করে যাবেন’ তারা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে যে আলোচনায় বিএনপি সমর্থক এই বুদ্ধিজীবীকে ‘হুমকি’ দেয়া হয়, সেখানে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এহছানুল হক মিলন। তিনিও সেদিন ছাত্রদল নেতাকে কিছু বলেননি।
এ বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর আলোড়ন তুললেও বিএনপির কোনো নেতা জাফরুল্লাহকে ফোন করে তার খোঁজখবর নেননি। যদিও জাফরুল্লাহ গত কয়েক বছর ধরেই বিএনপির পক্ষ নিয়ে কথা বলে আসছেন।
গত শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বিএনপির কী করা উচিত তা বলতে গিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী তারেক রহমানকে দুই বছর চুপচাপ থেকে পড়ালেখা করার পরামর্শ দেন। আর তিনি এও বলেন যে, ‘বিএনপি চলে লন্ডন থেকে আসা ওহি দিয়ে।’
এ কথা বলার পর পর শ্রোতার আসনে থাকা ছাত্রদলের সহসভাপতি ওমর ফারুক কাউসার দাঁড়িয়ে ‘স্লামালাইকুম ওস্তাদ’ বলে কটাক্ষকর সম্বোধন করেন জাফরুল্লাহকে।
সবাই চমকে গিয়ে কাউসারের দিকে দৃষ্টি দেন। আর তিনি জাফরুল্লাহর সঙ্গে তর্ক করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন, ‘আপনি বিএনপির কে যে আপনার কথা শুনতে হবে?’
পরে বলেন, ‘আপনি আমাদের নেতাকে নিয়ে কথা বলবেন না। যদি বলেন, পরবর্তী সময়ে কিছু হলে কিন্তু আমরা দায়ী না।’
জাফরুল্লাহ চীনপন্থি বাম বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত হলেও গত এক দশক ধরে বিএনপিকে নানা বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বিএনপি এসব পরামর্শ নিচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও তিনি তার সিংহভাগ আলোচনায় বিএনপির কী করা উচিত, তা নিয়ে বক্তব্য রাখেন। বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দ্রুত আন্দোলনে যাওয়ার তাগিদও দিয়ে আসছেন তিনি। একাধিকবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে খোলা চিঠিও লিখেছেন তিনি।
গত জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনেও জাফরুল্লাহ রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। নিজেও যোগ দেন সেই জোটে।
স্বভাবতই তাকে এভাবে প্রকাশ্য ‘হুমকি’ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তবে যিনি ‘হুমকি’ দিয়েছেন, তার সংগঠন ছাত্রদল এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
জাফরুল্লার কাছে এমন আচরণ আশা করে না ছাত্রদল
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। যে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ব্যবহার করতেন, সেটিতেও পাওয়া যায়নি।
পরে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন নিউজবাংলার সঙ্গে। তিনি কাউসারকে সমর্থনই করেন। তিনি মনে করেন না জাফরুল্লাহকে হুমকি দেয়া হয়েছে।
কাউসারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না, জানতে চাইলে শ্যামল বলেন, ‘ব্যবস্থা নেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা বিষয়টি দেখেছি। কাউসারের কথায় কোনো উগ্রবাদী আচরণ ছিল না। উল্টো সে খুব বিনয়ের সঙ্গে সালাম দিয়ে কথা বলেছে।’
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন সিনিয়র সিটিজেন। মুক্তিযুদ্ধে ওনার একটি ভূমিকা রয়েছে। একই সঙ্গে তারেক জিয়া এই মুহূর্তে আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক। দলকে নিয়ে, অভিভাবককে নিয়ে কথা তোলায় নিজের আবেগ ধরে রাখতে না পেরে সে (কাউসার) তার কথা বলেছে মাত্র। প্রতিবাদ করেছে। এ ধরনের প্রতিবাদকে আমরা সমর্থন করি। ভবিষ্যতে ঘটলেও আমরা তাই করব। একই সঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো একজন বুজুর্গ ব্যক্তির থেকে এ রকম আচরণ আমরা আশা করি না।’
কাউসার যা বলছেন
নিউজবাংলার সঙ্গে কথা হয়েছে কাউসারেরও। তিনি বলেন, ‘জনাব তারেক জিয়া আমাদের অভিভাবক। এই দল আমাদের আদর্শ। উনি সব সময় এমন সমালোচনা করে যান। আগেও অনেকবার নানা আপত্তিকর কথা বলে আসছেন। আমরাও রক্ত-মাংসের মানুষ।’
সেদিন তার বক্তব্যে আক্রমণাত্মক কিছু ছিল না বলেও মনে করেন এই ছাত্রদল নেতা। বলেন, ‘উনাকে হুমকি দিইনি। আমি সালাম দিয়ে খুব বিনয়ের সঙ্গে তাকে বলেছি। খারাপ লাগার জায়গা থেকে ওনাকে সতর্ক করেছি মাত্র।’
কারা কিছু করবে বলে আশঙ্কা করছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা ভিন্নমতে বিশ্বাসী। উনি ওনারটা বলবেন। তবে এই যে উনি যে উল্টাপাল্টা মন্তব্য করেন। আমাদের ছাত্রদলেই কত ছেলে আছে। সবার কন্ট্রোল একরকম না। দলকে নিয়ে, প্রিয় নেতা নিয়ে বাজে মন্তব্য আসলে অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। আবেগ থেকে কেউ একজন রাস্তাঘাটে কী বলে ফেলবে না ফেলবে, সেই কথা চিন্তা করে ওনাকে সতর্ক করেছি মাত্র।
‘আর দল নিয়ে, নেতাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করলে এ রকম প্রতিবাদ আমরা সামনেও করব’- বলেন ছাত্রদলের সহসভাপতি।
সমালোচনা করেই যাব: জাফরুল্লাহ
গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, তিনি আগেও সমালোচনা করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন।
বিএনপি ও ছাত্রদলকে ইঙ্গিত করে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারা তো আর মাঠে গিয়ে আন্দোলন করতে পারছে না। খালেদা জিয়াকেও মুক্ত করতে পারছে না। তাই ঘরে বসে দুটো কথা বলে কাজ দেখাইল আর কি। আমি আগেও সমালোচনা করেছি, সামনেও করে যাব। সত্য বলতে দোষের কী?’
সেদিনের ঘটনা নিয়ে মনে কোনো ক্ষোভ আছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক ক্ষুব্ধ না, তবে হাসির মেটার এটা। দুইটা ছেলে সেদিন আগায় আসল। একজন এসে বলল আমাকে, তাদের নেতাকে নিয়ে কিছু না বলতে। আওয়ামী লীগ এক লোকের বন্দনা করে, বিএনপি আরেক লোকের বন্দনা করে। তারই ফলাফল এটা।’
প্রেস ক্লাবে সেদিন যা ঘটেছিল
শনিবার ওই সেমিনারের আয়োজক ছিল এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) নামে বিএনপি সমর্থক একটি সংগঠন। বিষয় ছিল ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: শিক্ষায় প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি এবং করোনাকালীন শিক্ষা বাজেট: ২০২১-২০২২’।
আলোচনার একপর্যায়ে বিএনপি, তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন জাফরুল্লাহ। মন্তব্য করেন, ‘বিএনপি চলে লন্ডন থেকে আসা ওহি দিয়ে।’
তারেক রহমানকে দুই বছর চুপচাপ বসে লন্ডনে পড়ালেখার পরামর্শও দেন জাফরুল্লাহ।
এ সময় শ্রোতাদের আসনে থাকা ছাত্রদল নেতা কাউসার তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ওস্তাদ স্লামাইকুম।’
মুহূর্তে সেমিনার কক্ষে উপস্থিত সবাই চমকে যান। সেই ব্যক্তি বলতে থাকেন, ‘আপনি বিএনপির কী? আপনি কে যে আপনার কথা শুনতে হবে? আপনি আমাদের নিয়া উল্টাপাল্টা কথা বলেন?’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আপনি আগে কথা তো শোনেন।’
তখন ছাত্রদল নেতার সঙ্গে থাকা একজন বলেন, ‘আপনি জয়রে (প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়) নিয়া বলেন।’
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনাদের ভালোর জন্য বলি। আপনারা আপনাদের ভালো বোঝেন না।’
ছাত্রদল নেতা কাউসার বলেন, ‘না না, আমরা অবশ্যই বুঝি, আমরা আমাদেরটা বুঝি, আপনি আপনারটা বোঝেন। আপনি আমাদের নেতাকে নিয়ে কখনও এভাবে কথা বলবেন না। আপনি আপনাকে নিয়ে কথা বলেন, যদি বলেন, পরবর্তী সময়ে কিছু হলে কিন্তু আমরা জানি না।’
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘কোনো কিছু হবে না, আপনারা দায়ী হবেন কেন?’
কাউসার বলেন, ‘ধন্যবাদ।’
এই কথোপকথনের পর কাউসার তার সঙ্গীদের নিয়ে সেমিনার কক্ষ ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগকে ভারতীয় পণ্য উল্লেখ করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘এই দলকে বর্জন করলেই জাতির মুক্তি মিলবে। সব পণ্য বর্জনের প্রয়োজন হয় না।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে ‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’ নামের একটি সংগঠন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘আপনি তো ভেজাল লাগালেন! বললেন, সারা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশের লোক আমাদের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। ভারত পাশে না থাকলে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারতাম না।
‘এখানে কী বুঝব? আজকে সবাই পণ্য বর্জনের কথা বলছে। তাহলে ভারতের সবচেয়ে বড় পণ্য হচ্ছে আওয়ামী লীগ (সরকার), শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী)। এই সরকারকে বর্জন তো করছেই, এটা ফেলে দিলেই শেষ। এই একটা পণ্য বর্জন করলেই তো জাতি মুক্ত হয়, সব পণ্য বর্জনের প্রয়োজন হয় না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘চিকিৎসাসহ নানা কারণে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দশ হাজার মানুষ পাসপোর্ট জমা দেন। গড়ে ৮’শ টাকা করে হলেও প্রতিদিন ৮০ কোটি টাকা লাগে এ জন্য। একটা মানুষের সীমান্ত অতিক্রম করতে প্রতিদিন খরচ গড়ে ৫ হাজার টাকা। আসার সময় আবার ৫০ হাজার টাকার বাজার করেও আনে।’
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘তাহলে পণ্য বর্জন কিসের? বাংলাদেশের মানুষ যদি বলে যে কাল থেকে ভারতে যাব না, তাহলে দিল্লি বলবে- শেখ হাসিনা তোমাকে রাখতে গেলে আমরা বাঁচতে পারব না।’
গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও থিংকট্যাংক আগামী এক’শ বছর পর দেশের কী হবে তা নিয়ে হিসাব কষে। তারা দেশের মধ্যে মাতব্বরি করে না। আর আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের (বিরোধী দল) পেছনে লেগে আছে। তারা দেশের জন্য কাজ করতে পারে না।’
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বিএনপি পাকিস্তানের সঙ্গে কখনও সম্পর্ক ছিন্ন করেনি অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলটি কোনো বিদেশির দাসত্ব করে না।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে শুক্রবার ইফতার ও ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে কাদের এ কথা বলেন বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে দিল্লির শাসন মেনে নিতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়নি—বিএনপির এক নেতার এমন বক্তব্যের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আসলে বিএনপি পাকিস্তানের সাথে কখনও সম্পর্ক ছিন্ন করে নাই। বিএনপির হৃদয়ে পাকিস্তান, চেতনায় পাকিস্তান। আর আওয়ামী লীগ কোনো বিদেশি শাসন, কোনো বিদেশির দাসত্ব করে না।
‘আমাদের হৃদয়ে বাংলাদেশ, চেতনায়ও বাংলাদেশ। সেটাই আমরা মনে প্রাণে ধারণ করি।’
বিএনপির সমালোচনা করে করে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন মানবতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপির রাজনীতিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। বিএনপি এ অন্ধকার থেকে আর বের হতে পারছে না।
নির্বাচনের আগে বিএনপি বিদেশি শক্তির তাবেদারি করেছে অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বিএনপি কীভাবে বিদেশি শক্তির তাবেদারি করেছে? কীভাবে বাংলাদেশকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া ও নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করেছে?’
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘সুসময় আসতে সময় লাগে। সারা বিশ্বে সংকটের যে প্রতিক্রিয়া, আমাদের এখানেও ধাক্কা লেগেছে, তবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মতো দক্ষ, বিচক্ষণ নেতৃত্ব আছে বলেই বাংলাদেশের মানুষ মোটামুটি ভালো আছে। তুলনামূলকভাবে অনেক দেশের চেয়ে ভালো।’
বিএনপির ৮০ শতাংশ নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিগৃহীত ও নির্যাতিত হচ্ছে বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার বক্তব্যের সমালোচনা করেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলকে বলব, এসব মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকুন। প্রকাশ্যে এসে তালিকাটা হাজির করুন। ৮০ ভাগ নেতা-কর্মী এরা কারা? মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু সবাই তো একে একে জেল থেকে বের হয়ে গেলেন।’
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের সভাপতিত্বে ইফতার ও ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমানসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বর্তমান কমিটির উপজেলা ছাত্রলীগের এবং ছাত্রলীগের একাংশের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
পৌরসভার হলরুমে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলন উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্যরা।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় সোনাইমুড়ী বাজারে রাজমহল রেস্তোরায় দেলোয়ার হোসেন সুজন ও শ্যামল উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশ উপজেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অছাত্র, চাঁদাবাজি, দখলবাজ, অছাত্র, বিভিন্ন মামলার আসামি, টেন্ডারবাজি, নানা বিষয়ে ছাত্রলীগের নেতা পরিচয়দানকারী বিবাহিতসহ নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বর্তমান কমিটির উপজেলা ছাত্রলীগ নানা অভিযোগ ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, ‘সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের গত বছরের ১৫ মে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। চাঁদাবাজি মামলার আসামি, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিএনপি জামাতের লোক, সরকারি জায়গা দখলকারী, অটোরিকশার চাঁদাবাজরা এখন ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিচ্ছে। গত বুধবার ছাত্রলীগের কিছু নেতা পরিচয়দানকারী সংবাদ সম্মেলন করেছে।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ আরও বলেন, ‘এ সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামে তারা বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, কাল্পনিক তথ্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন অভিযোগ উপস্থাপন করেছে। এ ধরনের ভিত্তিহীন তথ্য পরিবেশন করে তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে। বুধবার তাদের করা সম্মেলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন। এ সংগঠনের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ ওঠা সুখকর নয়। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
আরও পড়ুন:নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার প্রদান করেনি বলে শিক্ষামন্ত্রীর দাবির একদিন পর এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউনূস সেন্টার।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে ইউনূস সেন্টার জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪-১৬ মার্চ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত বাকু ফোরাম একাদশে বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিজামি গানজাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে পাঠানো বাকু ফোরামের অফিশিয়াল অনুষ্ঠানসূচিতেও অধ্যাপক ইউনূস ইউনেস্কোর পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অধ্যাপক ইউনূসকে বাকু ফোরামের সমাপনী নৈশভোজে যোগদানের বিষয়টি বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যাতে তিনি ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারটি গ্রহণের জন্য মঞ্চে সশরীর উপস্থিত থাকেন।
ইউনূস সেন্টার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনেস্কোর পুরস্কারের বিষয়টি উল্লেখ করে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রদত্ত ‘ট্রি অফ পিস’ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত পদকের একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে ২০২৩ সালের জুনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনের সময় ইউনেস্কো এবং অধ্যাপক ইউনূস প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনূস স্পোর্টস হাবের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইউনেস্কোর ফিট ফর লাইফ ফ্ল্যাগশিপের অধীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে কাজ করে যাওয়া।
এর আগে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার দেয়নি।”
তিনি বলেন, “আজারবাইজানের গঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসকে ইসরাইলের একজন ভাস্কর ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করেন।”
ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বলে ড. ইউনূস যে দাবি করেছেন তা অসত্য বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন:বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্যাতন ও জনগণকে দমন করা ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না। বিএনপির ৮০ শতাংশ নেতাকর্মী এই ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আর তাদের দমন-পীড়নের প্রথম শিকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।’
বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত গুমের শিকার পরিবারের সদস্যদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ফ্যাসিস্ট সরকার বা একদলীয় শাসন বা এক নারী শাসনের বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন শুরু করলে নেতা-কর্মীদের ওপর তারা দমন-পীড়ন শুরু করে।
‘তারা এমন ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে, যেখানে কেউ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে না, লিখতেও পারছে না।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের দমন-পীড়ন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাবা-মা, ছেলে, মেয়ে-স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও রেহাই পায়নি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে নখ উপড়ে ফেলা, পা ভাঙাসহ নানা অমানবিক নির্যাতনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন ভুক্তভোগীরা। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, তারা কোনো চিকিৎসা পাননি। পরিবারও তাদের চিকিৎসা করাতে পারেনি।’
সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা আমাদের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি কাজ করে যাচ্ছি।
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০ সালের মতো ঐক্য গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সে সময় জনগণ একতাবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। এবারও আমাদেরকে সেভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
আরও পড়ুন:স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও ড. ইউনূস ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ থেকে এবং একজন ইসরায়েলির দেয়া পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন। আর ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পুরস্কার উল্লেখ করে মিথ্যাচার করছে, যা খুবই দুঃখজনক।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারে আমি বিষ্মিত, হতবাক। সম্প্রতি আজারবাইজানের বাকুতে একটি সম্মেলনে মিজ হেদভা সের নামে একজন ইসরায়েলি ভাস্বর ড. ইউনুসকে একটি পুরস্কার দিয়েছেন। এ সম্মেলনে ইউনেস্কো কোনোভাবে জড়িত ছিল না।
‘এই পুরস্কার ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তো নয়ই, একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। আর ইউনূস সেন্টার সেটিকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করেছে। তবে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ওদিকে গাজায় আজ নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি, প্রতিবাদ করেননি।
‘বরং এই সময়ে তিনি একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এর অর্থ কি এটাই নয় যে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন? এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সীমান্ত হত্যায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৫ মার্চ মধ্যরাতে লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ ভোরে নওগাঁ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো এবং সীমান্তে পতাকা বৈঠকও হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি। সম্প্রতি ভারত সফরেও এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে গুরুত্বসহ আলোচনা করেছি। সেই প্রেক্ষিতে সীমান্তে এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নন-লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাবার বুলেটে অনেকে আহত হন; কিন্তু প্রাণহানি কমে এসেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য প্রাণহানিকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা।’
নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা চলছে
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও জাহাজটিকে মুক্ত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
তিনি বলেন, ‘জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি।’
জাহাজে খাদ্য সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, জাহাজটিতে খাদ্য সংকট নেই। এর আগে তিন মাস ধরে জলদস্যুদের কবলে থাকা অন্য জাহাজেও খাদ্য সংকট ছিল না।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য