× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

রাজনীতি
প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিলীন অটুট আওয়ামী লীগ
google_news print-icon

প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিলীন, অটুট আওয়ামী লীগ

প্রতিদ্বন্দ্বীরা-বিলীন-অটুট-আওয়ামী-লীগ
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন তিন নেতা মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান. মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ।
প্রতিষ্ঠার পর গত সাত দশকে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রভাব ও গুরুত্ব অটুট থেকেছে। এ সময়ে এই ভূখণ্ডে অনেক রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটেছে, আবার তারা প্রভাব হারিয়ে নামসর্বস্ব অস্তিত্বে পর্যবসিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ভূমিকায় কোনো হেরফের ঘটেনি, সরকারে থাকতেও না, বিরোধী দলে থাকতেও না।

তিন দশক ধরে লড়াইটা বিএনপির সঙ্গে। তবে আগের পাঁচ দশকে বারবার প্রতিদ্বন্দ্বী পাল্টেছে।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত দেশের রাজনীতিতে বহুবার আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বীর পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভেঙেও কয়েকটি দলের উত্থান হয়েছে। কিন্তু আবার সময়ের সঙ্গে তারা মিলিয়েও গেছে।

তবে সাত বছর ধরেই প্রতাপের সঙ্গে রাজনীতি করে আসছে বর্তমানে ক্ষমতাসীনরাই। এর মধ্যে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব, স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতাকে হারানোর পরে বিরুদ্ধ পরিবেশেও ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই কীভাবে করতে হয়, সেটিও দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান জন্মের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তৎকালীন পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক নেতারাই। সে সময় পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক দল ছিল মুসলিম লীগ। কিন্তু পরে দলটিতে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এ অঞ্চলের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি দেখা দেয়। এমনই এক প্রেক্ষাপটে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জন্ম নেয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তী সময়ে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নামকরণ করা হয় আওয়ামী লীগ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হারুন অর রশিদের মতে, আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ দলগুলো রাজনীতিতে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়ায় পরে তারা জনসমর্থন হারিয়েছে।

অধ্যাপক হারুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ কখনোই বলার মতো কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে জনগণের মন-মানসিকতার চাহিদা বিবেচনায় রেখে যৌক্তিকভাবে কর্মসূচিগুলো যথাসময়ে হাতে নিয়ে ৭২ বছর পথ চলেছে। এ কারণেই আওয়ামী লীগ আজও রাজনৈতিক অগ্রভাবে থেকে, সরকারে থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে।’

প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিলীন, অটুট আওয়ামী লীগ

নানা সময় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী পাল্টানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাসদ মার্জিনালাইজড হয়েছে তার হঠকারী কর্মকাণ্ডের জন্য, নেতিবাচক রাজনীতির জন্য। ভাসানী ন্যাপ হয়েছে বলা যায় একই ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে।’

মুসলিম লীগও জনগণের মনোভাব ধরতে না পেরে হারিয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি। বিএনপিও নানা ভুল করেছে বলে তার মূল্যায়ন।

রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের প্রায় তিন দশকের প্রতিপক্ষ বিএনপির মূল্যায়ন অবশ্য একটু ভিন্ন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দীন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক অপশক্তি বলতে একটা টার্ম আছে। আওয়ামী লীগের সেই অবস্থা চলছে। কালো ছায়ায় অন্ধকার হয়ে আছে গোটা দেশ। গ্রাস করে নিয়েছে জনগণের ক্ষমতা। বলেন তাহলে কীভাবে টিকে আছে?’

অবশ্য এ ক্ষেত্রে দ্বিমত রয়েছে অধ্যাপক হারুন অর রশিদের। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৭২ বছর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, জনগণের স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় থেকে আসছে। আওয়ামী লীগের মাধ্যমে এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে স্বাধীনতা পেয়েছি, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আমাদের এই স্বাধীন ভূখণ্ড, বাংলাদেশে যা কিছু রাজনৈতিক অর্জন, তার সিংহভাগ কৃতিত্বই আওয়ামী লীগের।’

বিএনপির কী ভুল- তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াত হলো যুদ্ধাপরাধী দল, স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের রাজনীতিচর্চারই অধিকার থাকার কথা না। সেখানে জিয়াউর রহমান ও বিএনপির কল্যাণে তারা ফিরে এসেছে। স্বাধীনতাবিরোধী মুসলিম লীগকে আত্তীকরণ করে এগিয়েছে বিএনপি।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত এবং সম্প্রতি হেফাজত- এগুলোর মধ্যে আমি মৌলিক কোনো পার্থক্য দেখি না। বিএনপি একসময় ফ্রিডম পার্টিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে, নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং জঙ্গিবাদের উত্থানে তারা ভূমিকা রেখেছে।

‘এটা তো কোনো রাজনৈতিক দলের আচার হতে পারে না। মূলত মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ না করে বরং এর পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের কারণে তারা খাদের গহিনে পৌঁছে গেছে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল এই ভূখণ্ড হবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের বাংলাদেশ। সেই নীতি যতদিন ধরে রাখতে পারবে, ততদিন আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের আস্থাশীল দল হিসেবে পরিচিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের এ পথচলায় অনেক দলের জন্ম হয়েছে, অনেকেই এসেছেন। কিন্তু অন্য কোনো রাজনৈতিক দলই মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। এর কারণ হচ্ছে, তাদের নীতি বা আদর্শিক কোনো জায়গা ছিল না।’

লেখক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি সফল বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক দল। যখন তারা সরকারে যায়, তখন দলটাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। বিরোধী দল ও সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ভূমিকা দুই রকমের।

‘বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে জনগণের মধ্যে আমরা বেশি দৃশ্যমান দেখি। আর সরকারি দল হিসেবে আমরা আওয়ামী লীগকে দেখি সরকারি বৈঠকখানায়, প্রেসনোটে, ক্রোড়পত্রে– খুব বেশি পরিমাণে এই হচ্ছে বড় পার্থক্য।’

পাঁচ বছরেই নিশ্চিহ্ন মুসলিম লীগ

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল মুসলিম লীগ। কিন্তু এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুব বেশি দিন টেকেনি। ক্ষমতায় থাকা মুসলিম লীগকে হটাতে ১৯৫৩ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত হয় নির্বাচনি জোট যুক্তফ্রন্ট।

এই জোটে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের কৃষক শ্রমিক পার্টি, পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল, পাকিস্তান খিলাফত দল, নেজামে ইসলাম পার্টি ও কয়েকটি বামপন্থি দল।

১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট পায় ২২৩টি আসন। সে সময় ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ পায় মাত্র ৯টি।

প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিলীন, অটুট আওয়ামী লীগ

সেই আঘাত আর সামলে উঠতে পারেনি মুসলিম লীগ। রাজনীতিতে একেবারে নিশ্চিহ্নই হয়ে যায় তারা। তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তারা ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল তারা। কিন্তু পরে বিএনপিতে বিলীন হয়ে যায় আনুষ্ঠানিকভাবে।

’৫৪ সালের সেই নির্বাচনের পর যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা গঠন করলেও তা খুব বেশি দিন টেকেনি। ওই বছরের মে মাসে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ মন্ত্রিসভা বাতিল করে দিয়ে প্রদেশে গভর্নরের শাসন জারি করেন।

তবে যুক্তফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের এখন অস্তিত্ব নেই, বা থাকলেও তা একেবারেই গুরুত্বহীন হয়ে গেছে।

১৯৫৮ সালে পুরো পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি হলে আওয়ামী লীগের লড়াই শুরু হয় সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে।

মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগকে সামরিক শাসকদের রোষে পড়তে হয়েছে।

এর আগেই অবশ্য ১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগে প্রথম ভাঙন দেখা দেয়। আওয়ামী লীগে থাকা বামপন্থি রাজনীতিকদের নিয়ে ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ পার্টি নামে একটি আলাদা রাজনৈতিক দল গঠন করেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী।

পরে বিভিন্ন আন্দোলনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সামনে আসে এই দলটির নামই।

সে সময় রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় এই এলাকায় সবচেয়ে বড় দল কোনটি, তা নিয়ে বিতর্কের সমাধানের সুযোগ ছিল না। এর মধ্যে ন্যাপ বিভক্ত হয়ে পড়ে চীনপন্থি ও মস্কোপন্থি বিভিন্ন গ্রুপে।

প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিলীন, অটুট আওয়ামী লীগ

তার পরেও জনপ্রিয়তার একটি লড়াই হতে পারত ১৯৭০ সালের নির্বাচনে। তবে মওলানা ভাসানী সে পথে আর হাঁটেননি। আর ভূমিধস জয় পেয়ে এই অঞ্চলের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন বঙ্গবন্ধু, দল হিসেবে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে আওয়ামী লীগ।

এই জয়ের পেছনে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা প্রস্তাবের প্রভাব আছে বলে ধারণা করা হয়। ছয় দফার পক্ষে বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা, তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার পরিকল্পনার অভিযোগে মামলা আর গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার মধ্য দিয়েই তিনি বাঙালির প্রধান নেতায় পরিণত হন।

কিন্তু পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকসেনার দল। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়।

বড় হতে না হতেই হারিয়ে যায় জাসদ

মুক্তিযুদ্ধের পরে জিয়ার আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত কী হয়েছে।

স্বাধীনতার পর আরেকবার ভাঙনের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগ। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে প্রথমে ছাত্রলীগ এবং পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের অন্য সহযোগী সংগঠনগুলো থেকে নেতারা বেরিয়ে এসে ১৯৭২ সালে গঠন করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের আগে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে এই জাসদই। তবে জাতির পিতাকে হত্যার বছরে নভেম্বরে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে বিপ্লবের চেষ্টা করে ছিটকে যায় জাসদ। নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হাতে।

বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর নভেম্বরে যে সেনা অভ্যুত্থান ও প্রতি-অভ্যুত্থান হয়, সেখানেও জাসদ নেতাদের বড় ভূমিকা ছিল। পরে ওই বছরের ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমান সামরিক সরকার গঠনেও সমর্থন ছিল জাসদের।

প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিলীন, অটুট আওয়ামী লীগ

কিন্তু সামরিক শাসক জিয়াই জাসদের বিরুদ্ধে একপ্রকার দমন অভিযান শুরু করেন। এরপর জাসদ আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি। পরে বিভিন্ন সময়ে নানা মতে ভাগ হয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে দলটি। এক অংশ বিলীন হয়ে যায় বিএনপিতে, আর বাকি অংশ নিভু নিভু করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।

বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট ১৪ দলের অন্যতম শরিক দল জাসদ।

আওয়ামী লীগের প্রতাপের সঙ্গে টিকে থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই রাজনৈতিক দলটি প্রথমত হচ্ছে যে তৃণমুল থেকে গড়ে ওঠা দল। দুই নম্বর হচ্ছে, এটা বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা এই দর্শনের ওপর দলটি দাঁড়িয়েছে। একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু এ দলকে এই দুই দর্শনের ওপর কেন্দ্র করে স্বশাসন ও স্বাধীনতার সার্বিক যে নেতৃত্ব সেখানে আওয়ামী লীগ সামনের কাতারে ভূমিকা রাখে। সুতরাং বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু জড়িয়ে আছেন, এটা একটা বড় অর্জন।

‘১৫ আগস্টের পর সামরিক শাসকরা, সাম্প্রদায়িক শক্তি ক্ষমতা দখল করে নেয়, তখন সামরিক শাসন অবসানের সংগ্রামে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রত্যাবর্তন, সাম্প্রদায়িকতাকে বর্জন, এ ব্যাপারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। ফলে তারা তাদের একটি দার্শনিক ভিত্তি অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদ, এই দলকে টিকিয়ে রেখেছে।’

অবশ্য মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পরও পরবর্তী সময়ে কেন সে ধারা জাসদ ধরে রাখতে পারেনি, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

জিয়ার আবির্ভাবে নতুন বাস্তবতা

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার আগে বাকশাল প্রবর্তন হওয়ার পর অন্যান্য অনেক দলের সঙ্গে বিলুপ্ত হয় আওয়ামী লীগও। তবে জিয়ার শাসনামলে আওয়ামী লীগ আবার কার্যক্রম শুরু করে।

১৯৭৭-৭৮ সালে আওয়ামীবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের একত্রিত করে জিয়াউর রহমান শুরুতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) ও পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠন করেন।

প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিলীন, অটুট আওয়ামী লীগ

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে নেতৃত্বের অভাবে আওয়ামী লীগও বিভিন্ন মতে বিভক্ত হয়ে যায়। সেই সময় জিয়ার বিরুদ্ধে তেমন কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি আওয়ামী লীগ।

দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে সভাপতি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। সেই বছরই দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। শুরু করেন দল গোছানোর কাজ। তবে সেনাবাহিনীতে একের পর এক অভ্যুত্থানের মধ্যে জিয়াউর রহমান নিহত হলে জিয়াবিরোধী রাজপথের লড়াইটা আর বেশি দূর আগায়নি।

জিয়ার মৃত্যুতে লড়াই এরশাদের সঙ্গে

১৯৮২ সালে সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হন জিয়াউর রহমান। ক্ষমতায় আসেন আরেক সেনা কর্মকর্তা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনিও জিয়ার পথ ধরেই ক্ষমতায় থেকে গড়ে তোলেন রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি।

এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বও আসে আওয়ামী লীগ থেকে। এরশাদ সরকারের পতন হলে তার দল জাতীয় পার্টিও হারিয়ে ফেলে ছন্দ।

৯০ দশক থেকে লড়াই বিএনপির সঙ্গে

স্বৈরাচার পতনের পর দেশে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার এক নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয়। পরবর্তী তিন দশক ধরে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল হয়ে আছে বিএনপি।

প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিলীন, অটুট আওয়ামী লীগ
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ছয় বছর পর ১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের পতাকা বয়ে চলেছেন তার উত্তরসূরি শেখ হাসিনা

তবে বিএনপি এখন আপাতদৃষ্টিতে খুবই দুর্বল অবস্থানে। যদিও দলটি দাবি করছে, তারা গণতান্ত্রিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না, তাদের কর্মী-সমর্থকরা ভোট দিতে পারছে না। সেটি হলে ক্ষমতায় তারাই থাকতে পারত।

ঘটনা যা-ই হোক, ২০০৯ সালের পর থেকে টানা ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। এই দীর্ঘ সময়ে রাজপথে তেমন কোনো গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বিএনপি। তার ওপর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব দুর্নীতির অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে দলটি।

আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে চার দলীয় জোট, পরবর্তী সময়ে ২০ দলীয় জোট গঠন করা হয়।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ভোটে জিতলেও পরের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়।

২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আগে ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেও সফল হয়নি তারা।

আওয়ামী লীগও এখনও জোটবদ্ধ রাজনীতি করছে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেই তারা গঠন করে মহাজোট।

আরও পড়ুন:
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের শ্রদ্ধা
জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
রোজ গার্ডেন রূপ নিচ্ছে জাদুঘরে
আ. লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: বরিশালে বর্ণাঢ্য আয়োজন
‘নেতাকর্মীরাই দলকে মজবুত ভিত্তি দিয়েছে’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

রাজনীতি
The inauguration of the Naogaon District BNP biennial conference will be led by the leadership?

উদ্বোধন হলো নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন; কারা আসবে নেতৃত্বে?

উদ্বোধন হলো নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন; কারা আসবে নেতৃত্বে?

নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার ১১ আগষ্ট দুপুর ১ টায় নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলনের অধিবেশনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম

উদ্বোধনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত ও দলীয় গান পরিবেশন করে সন্মান প্রদর্শন করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহীদ ও জুলাই আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নতুনভাবে দল পরিচালনার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম ও এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন।

এদিন বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং দুটি সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলার ১৪টি ইউনিটের ১ হাজার ৪১৪ ভোটার গোপন ব্যালটে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন।

কাজেই সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ পদ কারা পাচ্ছেন, কারা হাসবে জয়ের হাসি, কাদের নেতৃত্বে চলবে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক কার্যক্রম তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন।

দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জেলা বিএনপির সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এতদিন নানা সীমাবদ্ধতায় সম্মেলন করতে না পারলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেশ ঘটা করে সম্মেলনের আয়োজন করেছে দলটি। তাই সম্মেলন ঘিরে পুরো শহর সেজেছে নতুন কমিটির নেতৃত্বে আসা নেতাদের ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে। এই সম্মেলন ঘিরে ১৭ বছর হামলা, মামলা, নির্যাতন ও কারাবরনে জর্জরিত নেতাকর্মীরা ফিরে পেয়েছেন প্রাণচাঞ্চল্য। কর্মীরাও মুখে আছেন নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে।

এই সম্মেলনে নেতৃত্বে কারা আসছেন এ নিয়ে তৃনমূল থেকে শুরু করে শহরের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অনেক নেতাকর্মী ভাবছেন নতুন নেতৃত্ব আসবে, আবার কেউ কেউ ভাবছেন ধারাবাহিক নেতার মধ্যে দুই একজন জয়ী হতে পারেন।

তবে নেতাকর্মীরা বলছেন, যারা বিএনপির রাজনীতিতে রাজপথে ছিলেন, রাজপথ থেকে উঠে এসেছেন, রাজনীতিতে যাদের দলীয় পরিচয় বেশি, যারা কর্মী বান্ধব তারাই আসুক নেতৃত্বে। দলের দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তারা যেন সঠিক মূল্যায়ন পান। এছাড়াও সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন করে দলকে পুনরুজ্জীবিত ও সুসংগঠিত করে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে ভূমিকা রাখবে এমন নেতৃত্ব চান নেতাকর্মীরা।

দলীয় সুত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১০ সালে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন মামুনুর রহমান রিপন। ২০১৫ সালে ওই কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সম্মেলনের মাধ্যমে আর কোনো কমিটি গঠন হয়নি।

এরপর ২০২২ সালে আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নুকে আহ্বায়ক ও বায়েজিদ হোসেন পলাশকে সদস্য সচিব করে গঠিত আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছিল।

পট পরিবর্তনের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুসারে, ঘোষিত সম্মেলন উপলক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। গত রোববার (৩ আগষ্ট) তফসিল ঘোষণা করেন সম্মেলন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা। পরের দিন সোমবার জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই দুইটি পদপ্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। একই দিনে মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই ও চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ, সভাপতি পদপ্রত্যাশীরা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক সনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মাষ্টার হাফিজুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান তুহিন, পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুস শুকুর, জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ এস এম মামুনুর রহমান ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এ বি এম আমিনুর রহমান।

সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার জন্য লড়ছেন চারজন। তারা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল হক বেলাল। এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের দুটি পদের জন্য আটজন মনোনয়ন তুলেছেন। তারা হলেন শফিউল আজম (ভিপি) রানা, নূর-ই আলম, ফরিদুজ্জামান, খায়রুল আলম, শবনম মোস্তারী, সুলতান মামুনুর রশিদ, কামরুজ্জামান কামাল ও জহুরুল হক।

এদিকে এই সম্মেলনের আগের দিন রোববার (১০ আগস্ট) দুপুর ২টায় নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সম্মেলনের কাউন্সিলর বা ভোটার তালিকাকে ‘বিতর্কিত’ উল্লেখ করে সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম বেলাল।

মন্তব্য

রাজনীতি
Mirza Fakhrul the top five leaders of the BNP will be going to the July Declaration

জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি’র শীর্ষ ৫ নেতা

জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি’র শীর্ষ ৫ নেতা

জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বিএনপি’র শীর্ষ ৫ জন নেতা। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির ৫ সদস্য এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

বিএনপি’র মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ডক্টর আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমদ।

এদিকে, সোমবার রাতে বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকটি রাজধানীর গুলশানে বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে রাত সাড়ে ১০টায় শেষ হয়।

বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মন্তব্য

রাজনীতি
Khaleda Zia and Tareq Rahman are expected to surround the BNP leader

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঘেরাও করতে চাওয়া সেই বিএনপি নেতা বহিষ্কার

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঘেরাও করতে চাওয়া সেই বিএনপি নেতা বহিষ্কার বহিষ্কৃত নেতার ছবি

বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঘেরাও করতে চাওয়া নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার বিএনপির সদস্য লুৎফর রহমান খোকাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা চিঠিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। তবে বহিষ্কারের বিষয়টি বুধবার সকালে প্রকাশ পায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। তিনি বলেন, বহিষ্কারের তথ্যটি সঠিক।

চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলীয় নীতি, আদর্শ ও সংহতির পরিপন্থি কার্যকলাপের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার বিএনপির সদস্য লুৎফর রহমান খোকাকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৩ জুলাই বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার ফতুল্লায় সোনালি সংসদ মাঠে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন লুৎফর রহমান খোকা। তিনি বলেন, শাহ আলমের (নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী) জন্য আমরা নমিনেশন আনবো। প্রয়োজনে আমরা আত্মাহুতি দেবো কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে। তারেক রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ও বিএনপির মহাসচিবকে ঘেরাও করবো।

তিনি বলেন, বিএনপির সর্বোচ্চ মহলকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, ফতুল্লাকে নিয়ে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে কাউকে ছাড়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, এখানে কোনো জোট চলবে না। এই খেলা আর খেলবেন না। ধানের শীষ ছাড়া ফতুল্লায় কিছু চলবে না। ফতুল্লার জনগণের আবেগ, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। ফতুল্লার মানুষদের প্রিয় নেতা শাহ আলমকে বাদ দিয়ে এখানে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া মানেই জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।

এদিকে এই ঘটনার দুই দিন পর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ঘেরাও করার মন্তব্যটি সঠিক হয়নি বলে স্বীকার করেন লুৎফর রহমান খোকা। তিনি বলেন, মন্তব্যটি স্লিপ অব টাং বলতে পারেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রায় ৮০ ভাগ ভোটার বিএনপির। এখানে যদি জোটের অন্য কাউকে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা ভোটারদের জন্য কষ্টদায়ক। বিষয়টি কেন্দ্রকে বোঝাতে গিয়ে একটু বেশি বলে ফেলেছি। এটা আমার ঠিক হয়নি

মন্তব্য

রাজনীতি
The actual reform is not possible without the elected representative Fakhrul

নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল

নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত না করে এবং একটি সঠিক গণতান্ত্রিক কাঠামো জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা না করে কোনও প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক আলোচনাসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি তাদের সমালোচনা করেন যারা মনে করেন, সংস্কার রাতারাতি বা কয়েকটি বৈঠকের মধ্য দিয়েই হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’

বিএনপি নেতা বলেন, যদি সরকার মনে করে যে, তারা চাইলেই কাল থেকে পুলিশ ঘুষ নেওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে সেটা হবে না। ‘আপনাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে ঘুষ নেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়।’

জিয়া পরিষদ এই আলোচনাসভার আয়োজন করে, যার শিরোনাম ছিল ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’। এটি গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়।

ফখরুল দেশের উন্নয়নে বাধা হিসেবে বিদ্যমান আমলাতন্ত্রকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আমলাতন্ত্র উন্নয়নের একটি বড় বাধা। এটি একটি নেতিবাচক আমলাতন্ত্র এবং এটিকে একটি ইতিবাচক কাঠামোয় রূপান্তর করতে হবে। তা করতে হলে মূলত জনগণকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

বিএনপি নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফিরে যাওয়া, তাদের চাহিদা বোঝা এবং সেই চাহিদাকে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিফলিত করা।

নির্বাচন চাওয়ার কারণে বিএনপিকে ঘিরে চলমান সমালোচনার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করতেই বলা হলো, বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’

তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, নির্বাচন ছাড়া প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা যায় না। ‘আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা কীভাবে সংসদে যাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে কীভাবে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে?’

ফখরুল বলেন, ‘আপনি দেশ চালাতে বাড়ি ও বিদেশ থেকে কয়েকজন লোক ভাড়া করে আনতে পারেন না। এটি সম্ভব নয়।’

মন্তব্য

রাজনীতি
Every crisis in the country must deal with solidarity from unity Tareq Rahman

ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে : তারেক রহমান

ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে : তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেন, জাতির এই শোকের সময়ে আমি সকল গণতন্ত্রপন্থী সহযোদ্ধার প্রতি শান্ত ও সংহত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, বিভেদমূলক সংঘাত কিংবা জনতার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বন্ধ করতে হলে আমাদের সহনশীলতা ও আত্মসংযমের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু সদস্যের মাধ্যমে জনতা ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্বেগজনক খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব গোষ্ঠীকে অনুরোধ করব, বাংলাদেশের ইতিহাসের এমন একটি শোকাবহ মুহূর্তকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। এর পরিবর্তে জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং সহানুভূতি ও সংহতি প্রদর্শনের দিকেই আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, আমাদের শক্তি ব্যয় হোক নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বের করা, নিহতদের সঠিকভাবে তালিকাভুক্ত করা, আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং বিমান দুর্ঘটনার মূল কারণ নির্ধারণে কর্তৃপক্ষকে নিরপেক্ষ ও কার্যকর তদন্তের সুযোগ করে দেওয়ার কাজে।

তারেক রহমান বলেন, প্রাণহানির শিকার নিরীহ ব্যক্তিবর্গ এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর পাশে রয়েছে আমাদের হৃদয়ের গভীর সহানুভূতি। বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।

মন্তব্য

রাজনীতি
Rizvi question on training aircraft flying in densely populated areas

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন নিয়ে রিজভীর প্রশ্ন

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন নিয়ে রিজভীর প্রশ্ন

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান চালানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত।

ওই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন, তাদের দেখতে গতকাল সোমবার বিকাল পাঁচটার দিকে যান রুহুল কবির রিজভী। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ প্রশ্ন তোলেন। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ অন্য নেতারা ছিলেন।

রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এ এলাকার মধ্যে প্রশিক্ষণ বিমান দিয়ে উড্ডয়ন শিখবে, এটা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়। এটা বিস্তীর্ণ প্রান্তরে হতে পারে। যশোর, কক্সবাজারের মতো জায়গায় হতে পারে। সেখানে পাশে সমুদ্র আছে, বিস্তীর্ণ জায়গা আছে। কিন্তু এ ধরনের ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় প্রশিক্ষণ বিমানে প্রশিক্ষণ নেবে, এটা আমি কোনোভাবেই যেন মেনে নিতে পারছি না।’

রুহুল কবির আরও বলেন, ‘নেভিগেশন বা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আমি অবশ্যই জানব না। কিন্তু সাদা চোখে যেটা মনে হয়েছে, চারদিকে এত বাড়িঘর, মানুষ থইথই করছে, এর মধ্যে একটা প্রশিক্ষণ বিমানে প্রশিক্ষণ নিতে পারে না। এটা নিয়ে প্রশাসন, সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। দায়িত্বে অবহেলা করলে প্রতিনিয়ত মানুষের জীবন বিপন্ন হতে থাকবে।’

রিজভী বলেন, ‘বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত। আমার মনে হয়, যেসব লোকালয় গড়ে উঠেছে, তা পরিকল্পনার অংশ নয়। এত ঘনবসতি এই এলাকায় হতে পারে না।’

বিএনপির নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরা রক্তের জোগান দেওয়াসহ অন্যান্য সহযোগিতা করছে। দলের কয়েকটি কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে।

মন্তব্য

রাজনীতি
BNP at the top of the choice of young voters
সানেম ও একশনএইডের জরিপ

তরুণ ভোটারদের পছন্দের শীর্ষে বিএনপি

তরুণ ভোটারদের পছন্দের শীর্ষে বিএনপি

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, আগামী নির্বাচনে তরুণদের চোখে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

জরিপে অংশ নেওয়া তরুণরা জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে।

সানেম-অ্যাকশনএইড পরিচালিত ‘যুব জরিপ-২০২৫’ শীর্ষক এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণে সারা দেশের আট বিভাগের ২ হাজারের বেশি পরিবারের ওপরে এ জরিপ চালানো হয়েছে।

জরিপের তথ্যানুযায়ী, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আনুমানিক ৩৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট পাবে। বিএনপির পড়েই আছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোট পাবে বলে মনে করছেন তরুণরা।

অন্যান্য ইসলামপন্থি দল, এনসিপি ও জাতীয় পার্টির অবস্থান আরও নিচে। এছাড়াও, যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারত, তবে ১৫ শতাংশ ভোট পেত বলে মনে করেছেন জরিপে অংশ নেওয়া তরুণরা। বিএনপির প্রতি পুরুষ ভোটারদের সমর্থন নারীদের তুলনায় একটু বেশি। জামায়াতের ক্ষেত্রেও পুরুষ সমর্থন বেশি নারীর তুলনায়। অন্যদিকে, এনসিপির প্রতি নারীদের সমর্থন পুরুষদের চেয়ে বেশি, এবং শহরাঞ্চলে এই দলের জনপ্রিয়তা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি।

উল্লেখ্য, জরিপের ফল গত রোববার প্রকাশ করেছে সানেম, যা তরুণদের রাজনৈতিক ঝোঁক ও আগ্রহের একটি সময়োপযোগী প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

দেশের তরুণদের মধ্যে ৯৩ দশমিক ৯৬ শতাংশই আশাবাদী আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তবে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ ইতোমধ্যেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা হারিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ৭৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ তরুণ, অন্যদিকে ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ তরুণ ভোট দিতে অনাগ্রহী বলে জরিপে উঠে এসেছে।

জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী রাজনীতি ও সংস্কার নিয়ে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি জরিপে উঠে এসেছে। রাজনৈতিক সচেতনতার দিক থেকে মাত্র ২৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ তরুণ নিয়মিত দেশের রাজনীতির হালচাল অনুসরণ করেন, ৩৯ দশমিক ০৯ শতাংশ মাঝে মাঝে করেন, আর ৩৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ এ ব্যাপারে একেবারেই আগ্রহী না।

নারীদের মধ্যে ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ জাতীয় রাজনীতিতে আগ্রহী না, যেখানে পুরুষদের মধ্যে এ হার ১৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ঘনিষ্ঠভাবে রাজনীতি অনুসরণকারী তরুণের হারও খুব কম—পুরুষদের মধ্যে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে মাত্র ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। আঞ্চলিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও একই চিত্র—পুরুষদের মধ্যে ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ১৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

জরিপে রাজনৈতিক দলের কার্যকারিতা নিয়ে তরুণদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি স্পষ্ট। মাত্র ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডায় দেশের প্রকৃত সমস্যার প্রতিফলন ঘটে, যেখানে ৪৯ দশমিক ৪২ শতাংশ একেবারেই এ বিষয়ে একমত না। দেশের ৫০ শতাংশ তরুণ মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সঙ্গে কোনো সংযোগ স্থাপন করতে পারেনি, আর বিপরীতে ১৬ দশমিক ১ শতাংশ তরুণ মনে করেন যে দলগুলো তরুণদের সঙ্গে যুক্ত।

রাজনৈতিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়েও তরুণদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ মনে করেন সংস্কার ছাড়াই পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। তবে ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন, যদি প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে পরিবর্তন সম্ভব। অপরদিকে, ১১ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ ভবিষ্যতে পরিস্থিতির আরও অবনতি দেখছেন এবং ১৩ দশমিক ১ শতাংশ মনে করেন, কিছুই পরিবর্তন হবে না।

দেশের ৮২ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ কোনোভাবেই রাজনীতিতে যুক্ত হতে আগ্রহী না। ১১ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণের মধ্যে কিছুটা আগ্রহ আছে এবং মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ বর্তমানে কোনো না কোনোভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন।

রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিয়ে তরুণদের প্রত্যাশা অনেকটাই আদর্শভিত্তিক। ৬০ শতাংশ তরুণ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রত্যাশা করেন তারা পৃষ্ঠপোষকতা, স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক সহিংসতা দূর করবে। ৫৪ শতাংশ চায় নিয়মিত নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রথা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক। পাশাপাশি, ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ তরুণ মনে করেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত নয়।

জরিপ পরিচালনা করা সংস্থা দুটি জানিয়েছেন, জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে তরুণরা রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের গতিপথ, অন্তর্ভুক্তি ও কার্যকারিতা সম্পর্কে কীভাবে চিন্তা করছে—তাও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে জরিপটিতে। জরিপটি তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংস্কারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছে। সার্বিকভাবে, এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল তরুণদের দাবি ও আকাঙ্ক্ষাগুলো আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা, যেন তা নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয় এবং যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়।

মন্তব্য

p
উপরে