তিন দশক ধরে লড়াইটা বিএনপির সঙ্গে। তবে আগের পাঁচ দশকে বারবার প্রতিদ্বন্দ্বী পাল্টেছে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত দেশের রাজনীতিতে বহুবার আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বীর পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভেঙেও কয়েকটি দলের উত্থান হয়েছে। কিন্তু আবার সময়ের সঙ্গে তারা মিলিয়েও গেছে।
তবে সাত বছর ধরেই প্রতাপের সঙ্গে রাজনীতি করে আসছে বর্তমানে ক্ষমতাসীনরাই। এর মধ্যে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব, স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতাকে হারানোর পরে বিরুদ্ধ পরিবেশেও ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই কীভাবে করতে হয়, সেটিও দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান জন্মের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তৎকালীন পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক নেতারাই। সে সময় পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক দল ছিল মুসলিম লীগ। কিন্তু পরে দলটিতে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এ অঞ্চলের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি দেখা দেয়। এমনই এক প্রেক্ষাপটে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জন্ম নেয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তী সময়ে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নামকরণ করা হয় আওয়ামী লীগ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হারুন অর রশিদের মতে, আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ দলগুলো রাজনীতিতে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়ায় পরে তারা জনসমর্থন হারিয়েছে।
অধ্যাপক হারুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ কখনোই বলার মতো কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে জনগণের মন-মানসিকতার চাহিদা বিবেচনায় রেখে যৌক্তিকভাবে কর্মসূচিগুলো যথাসময়ে হাতে নিয়ে ৭২ বছর পথ চলেছে। এ কারণেই আওয়ামী লীগ আজও রাজনৈতিক অগ্রভাবে থেকে, সরকারে থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে।’
নানা সময় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী পাল্টানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাসদ মার্জিনালাইজড হয়েছে তার হঠকারী কর্মকাণ্ডের জন্য, নেতিবাচক রাজনীতির জন্য। ভাসানী ন্যাপ হয়েছে বলা যায় একই ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে।’
মুসলিম লীগও জনগণের মনোভাব ধরতে না পেরে হারিয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি। বিএনপিও নানা ভুল করেছে বলে তার মূল্যায়ন।
রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের প্রায় তিন দশকের প্রতিপক্ষ বিএনপির মূল্যায়ন অবশ্য একটু ভিন্ন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দীন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক অপশক্তি বলতে একটা টার্ম আছে। আওয়ামী লীগের সেই অবস্থা চলছে। কালো ছায়ায় অন্ধকার হয়ে আছে গোটা দেশ। গ্রাস করে নিয়েছে জনগণের ক্ষমতা। বলেন তাহলে কীভাবে টিকে আছে?’
অবশ্য এ ক্ষেত্রে দ্বিমত রয়েছে অধ্যাপক হারুন অর রশিদের। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৭২ বছর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, জনগণের স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় থেকে আসছে। আওয়ামী লীগের মাধ্যমে এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে স্বাধীনতা পেয়েছি, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আমাদের এই স্বাধীন ভূখণ্ড, বাংলাদেশে যা কিছু রাজনৈতিক অর্জন, তার সিংহভাগ কৃতিত্বই আওয়ামী লীগের।’
বিএনপির কী ভুল- তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াত হলো যুদ্ধাপরাধী দল, স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের রাজনীতিচর্চারই অধিকার থাকার কথা না। সেখানে জিয়াউর রহমান ও বিএনপির কল্যাণে তারা ফিরে এসেছে। স্বাধীনতাবিরোধী মুসলিম লীগকে আত্তীকরণ করে এগিয়েছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত এবং সম্প্রতি হেফাজত- এগুলোর মধ্যে আমি মৌলিক কোনো পার্থক্য দেখি না। বিএনপি একসময় ফ্রিডম পার্টিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে, নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং জঙ্গিবাদের উত্থানে তারা ভূমিকা রেখেছে।
‘এটা তো কোনো রাজনৈতিক দলের আচার হতে পারে না। মূলত মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ না করে বরং এর পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের কারণে তারা খাদের গহিনে পৌঁছে গেছে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল এই ভূখণ্ড হবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের বাংলাদেশ। সেই নীতি যতদিন ধরে রাখতে পারবে, ততদিন আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের আস্থাশীল দল হিসেবে পরিচিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের এ পথচলায় অনেক দলের জন্ম হয়েছে, অনেকেই এসেছেন। কিন্তু অন্য কোনো রাজনৈতিক দলই মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। এর কারণ হচ্ছে, তাদের নীতি বা আদর্শিক কোনো জায়গা ছিল না।’
লেখক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি সফল বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক দল। যখন তারা সরকারে যায়, তখন দলটাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। বিরোধী দল ও সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ভূমিকা দুই রকমের।
‘বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে জনগণের মধ্যে আমরা বেশি দৃশ্যমান দেখি। আর সরকারি দল হিসেবে আমরা আওয়ামী লীগকে দেখি সরকারি বৈঠকখানায়, প্রেসনোটে, ক্রোড়পত্রে– খুব বেশি পরিমাণে এই হচ্ছে বড় পার্থক্য।’
পাঁচ বছরেই নিশ্চিহ্ন মুসলিম লীগ
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল মুসলিম লীগ। কিন্তু এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুব বেশি দিন টেকেনি। ক্ষমতায় থাকা মুসলিম লীগকে হটাতে ১৯৫৩ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত হয় নির্বাচনি জোট যুক্তফ্রন্ট।
এই জোটে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের কৃষক শ্রমিক পার্টি, পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল, পাকিস্তান খিলাফত দল, নেজামে ইসলাম পার্টি ও কয়েকটি বামপন্থি দল।
১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট পায় ২২৩টি আসন। সে সময় ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ পায় মাত্র ৯টি।
সেই আঘাত আর সামলে উঠতে পারেনি মুসলিম লীগ। রাজনীতিতে একেবারে নিশ্চিহ্নই হয়ে যায় তারা। তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তারা ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল তারা। কিন্তু পরে বিএনপিতে বিলীন হয়ে যায় আনুষ্ঠানিকভাবে।
’৫৪ সালের সেই নির্বাচনের পর যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা গঠন করলেও তা খুব বেশি দিন টেকেনি। ওই বছরের মে মাসে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ মন্ত্রিসভা বাতিল করে দিয়ে প্রদেশে গভর্নরের শাসন জারি করেন।
তবে যুক্তফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের এখন অস্তিত্ব নেই, বা থাকলেও তা একেবারেই গুরুত্বহীন হয়ে গেছে।
১৯৫৮ সালে পুরো পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি হলে আওয়ামী লীগের লড়াই শুরু হয় সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগকে সামরিক শাসকদের রোষে পড়তে হয়েছে।
এর আগেই অবশ্য ১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগে প্রথম ভাঙন দেখা দেয়। আওয়ামী লীগে থাকা বামপন্থি রাজনীতিকদের নিয়ে ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ পার্টি নামে একটি আলাদা রাজনৈতিক দল গঠন করেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী।
পরে বিভিন্ন আন্দোলনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সামনে আসে এই দলটির নামই।
সে সময় রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় এই এলাকায় সবচেয়ে বড় দল কোনটি, তা নিয়ে বিতর্কের সমাধানের সুযোগ ছিল না। এর মধ্যে ন্যাপ বিভক্ত হয়ে পড়ে চীনপন্থি ও মস্কোপন্থি বিভিন্ন গ্রুপে।
তার পরেও জনপ্রিয়তার একটি লড়াই হতে পারত ১৯৭০ সালের নির্বাচনে। তবে মওলানা ভাসানী সে পথে আর হাঁটেননি। আর ভূমিধস জয় পেয়ে এই অঞ্চলের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন বঙ্গবন্ধু, দল হিসেবে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে আওয়ামী লীগ।
এই জয়ের পেছনে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা প্রস্তাবের প্রভাব আছে বলে ধারণা করা হয়। ছয় দফার পক্ষে বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা, তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার পরিকল্পনার অভিযোগে মামলা আর গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার মধ্য দিয়েই তিনি বাঙালির প্রধান নেতায় পরিণত হন।
কিন্তু পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকসেনার দল। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়।
বড় হতে না হতেই হারিয়ে যায় জাসদ
মুক্তিযুদ্ধের পরে জিয়ার আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত কী হয়েছে।
স্বাধীনতার পর আরেকবার ভাঙনের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগ। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে প্রথমে ছাত্রলীগ এবং পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের অন্য সহযোগী সংগঠনগুলো থেকে নেতারা বেরিয়ে এসে ১৯৭২ সালে গঠন করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বেদনাবিধুর ঘটনাপ্রবাহের আগে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে এই জাসদই। তবে জাতির পিতাকে হত্যার বছরে নভেম্বরে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে বিপ্লবের চেষ্টা করে ছিটকে যায় জাসদ। নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হাতে।
বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর নভেম্বরে যে সেনা অভ্যুত্থান ও প্রতি-অভ্যুত্থান হয়, সেখানেও জাসদ নেতাদের বড় ভূমিকা ছিল। পরে ওই বছরের ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমান সামরিক সরকার গঠনেও সমর্থন ছিল জাসদের।
কিন্তু সামরিক শাসক জিয়াই জাসদের বিরুদ্ধে একপ্রকার দমন অভিযান শুরু করেন। এরপর জাসদ আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি। পরে বিভিন্ন সময়ে নানা মতে ভাগ হয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে দলটি। এক অংশ বিলীন হয়ে যায় বিএনপিতে, আর বাকি অংশ নিভু নিভু করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।
বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট ১৪ দলের অন্যতম শরিক দল জাসদ।
আওয়ামী লীগের প্রতাপের সঙ্গে টিকে থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই রাজনৈতিক দলটি প্রথমত হচ্ছে যে তৃণমুল থেকে গড়ে ওঠা দল। দুই নম্বর হচ্ছে, এটা বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা এই দর্শনের ওপর দলটি দাঁড়িয়েছে। একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু এ দলকে এই দুই দর্শনের ওপর কেন্দ্র করে স্বশাসন ও স্বাধীনতার সার্বিক যে নেতৃত্ব সেখানে আওয়ামী লীগ সামনের কাতারে ভূমিকা রাখে। সুতরাং বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু জড়িয়ে আছেন, এটা একটা বড় অর্জন।
‘১৫ আগস্টের পর সামরিক শাসকরা, সাম্প্রদায়িক শক্তি ক্ষমতা দখল করে নেয়, তখন সামরিক শাসন অবসানের সংগ্রামে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রত্যাবর্তন, সাম্প্রদায়িকতাকে বর্জন, এ ব্যাপারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। ফলে তারা তাদের একটি দার্শনিক ভিত্তি অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদ, এই দলকে টিকিয়ে রেখেছে।’
অবশ্য মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পরও পরবর্তী সময়ে কেন সে ধারা জাসদ ধরে রাখতে পারেনি, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
জিয়ার আবির্ভাবে নতুন বাস্তবতা
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার আগে বাকশাল প্রবর্তন হওয়ার পর অন্যান্য অনেক দলের সঙ্গে বিলুপ্ত হয় আওয়ামী লীগও। তবে জিয়ার শাসনামলে আওয়ামী লীগ আবার কার্যক্রম শুরু করে।
১৯৭৭-৭৮ সালে আওয়ামীবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের একত্রিত করে জিয়াউর রহমান শুরুতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) ও পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠন করেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে নেতৃত্বের অভাবে আওয়ামী লীগও বিভিন্ন মতে বিভক্ত হয়ে যায়। সেই সময় জিয়ার বিরুদ্ধে তেমন কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে সভাপতি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। সেই বছরই দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। শুরু করেন দল গোছানোর কাজ। তবে সেনাবাহিনীতে একের পর এক অভ্যুত্থানের মধ্যে জিয়াউর রহমান নিহত হলে জিয়াবিরোধী রাজপথের লড়াইটা আর বেশি দূর আগায়নি।
জিয়ার মৃত্যুতে লড়াই এরশাদের সঙ্গে
১৯৮২ সালে সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হন জিয়াউর রহমান। ক্ষমতায় আসেন আরেক সেনা কর্মকর্তা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনিও জিয়ার পথ ধরেই ক্ষমতায় থেকে গড়ে তোলেন রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি।
এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বও আসে আওয়ামী লীগ থেকে। এরশাদ সরকারের পতন হলে তার দল জাতীয় পার্টিও হারিয়ে ফেলে ছন্দ।
৯০ দশক থেকে লড়াই বিএনপির সঙ্গে
স্বৈরাচার পতনের পর দেশে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার এক নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয়। পরবর্তী তিন দশক ধরে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল হয়ে আছে বিএনপি।
তবে বিএনপি এখন আপাতদৃষ্টিতে খুবই দুর্বল অবস্থানে। যদিও দলটি দাবি করছে, তারা গণতান্ত্রিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না, তাদের কর্মী-সমর্থকরা ভোট দিতে পারছে না। সেটি হলে ক্ষমতায় তারাই থাকতে পারত।
ঘটনা যা-ই হোক, ২০০৯ সালের পর থেকে টানা ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। এই দীর্ঘ সময়ে রাজপথে তেমন কোনো গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বিএনপি। তার ওপর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব দুর্নীতির অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে দলটি।
আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে চার দলীয় জোট, পরবর্তী সময়ে ২০ দলীয় জোট গঠন করা হয়।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ভোটে জিতলেও পরের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়।
২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আগে ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেও সফল হয়নি তারা।
আওয়ামী লীগও এখনও জোটবদ্ধ রাজনীতি করছে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেই তারা গঠন করে মহাজোট।
আরও পড়ুন:অসম্ভবকে সম্ভব করার এই গল্পটি প্রতিটি ছাত্রের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। স্বপ্ন পূরণের পথে সাহস আর নিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, কেবল বিজয়ের জন্য নয়, বরং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্যই লড়াই করতে হয়। সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে মেধা ও পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই, আর সেই পথেই রচিত হয় নতুন ইতিহাস। এই ডাকসু নির্বাচন সেই ইতিহাসেরই একটি অংশ, যেখানে মেধা আর সততা পেয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান।
দুর্ধর্ষ জয়, না অভিস্মরণীয় বিজয়! ডাকসুতে শিবিরের এই জয়কে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ এবং মহিউদ্দিন খান তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়েছেন, মানে এক কথায় অলআউট উইন। জয়ের ব্যবধানটাই সবচেয়ে বড় চমক সৃষ্টি করেছে এখানে। ডাকসুর ইতিহাসে এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি। ভিপি পদে সাদিক কায়েম পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট, ছাত্রদলের আবিদ পেয়েছেন ৫৬৫৮ ভোট, অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম। জিএস পদে এস এম ফরহাদ পেয়েছেন ১০,৭৯৪ ভোট, অন্যদিকে ছাত্রদলের হামিম পেয়েছেন ৫২৮৩ ভোট। এখানেও রয়েছে দ্বিগুণ ব্যবধান। এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান পেয়েছেন ৯৫০১ ভোট, অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মায়েদ পেয়েছেন ৪২৫৪ ভোট। অর্থাৎ ৫২৪৭ ভোটের ব্যবধান রয়েছে এখানে। শিবিরের এই তিন নায়ক সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়া যাক।
শুরুতেই আলোচনা করা যাক মহিউদ্দিন খান মহিকে। চোখে চশমা, পরনে পাঞ্জাবি আর চেহারায় ভদ্রতার ছাপ সুস্পষ্ট। শিক্ষার্থীরা তো বটেই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও মহিউদ্দিনের জনপ্রিয়তা আছে। ভদ্রতার পাশাপাশি মেধাতেও যে কারো চেয়ে এগিয়ে তিনি। মহিউদ্দিন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি অনার্সে ৩.৯৩ সিজিপিএ অর্জন করে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং মাস্টার্সে ৪.০০ সিজিপিএ অর্জন করতে সক্ষম হন। এরপর তিনি মাস্টার্সের পূর্ণাঙ্গ ফলাফলে ৩.৯৭ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। তিনি বিজয় '৭১ হলের সাবেক শিক্ষার্থী। ছাত্র রাজনীতিতে দাপট বজায় রাখার জন্য হলে বছরের পর বছর সময় কাটানোর নজির আছে, সেখানে মহিউদ্দিন খান বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। স্নাতকোত্তর শেষ হওয়ার তিন দিনের মাথায় তিনি হল ছেড়ে দেন যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয় তখন। তাই এজিএস হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে মহিউদ্দিন খানের এই জয়টা মোটেও অবাক করার মতো নয়।
এবার আসবে এস এম ফরহাদের নাম। দেখতে সে ছোটখাটো হলেও তার দায়িত্বটা বিশাল। একজন ডিবেটর হিসেবে তার বেশ খ্যাতি আছে। কখনো কখনো তিনি বাম রাজনীতির সমালোচনা করেছেন, আবার কখনো ছাত্রদলের ভুলগুলোকে ধরিয়ে দিয়েছেন। আবার প্রতিপক্ষের দিক থেকেও কেউ কেউ ফরহাদকে নিয়ে নানা সময় নানা আলোচনা ও সমালোচনা করেছেন। তিনি সেসব সমালোচনার সুস্পষ্ট জবাব দিয়েছেন তার দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে। ছাত্রলীগের সাথে তার অতীত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রচুর সমালোচনা আছে, কিন্তু ফরহাদের দাবি সেটা ছিল তার চৌকস কৌশল। তিনি নাকি পরিচয় লুকিয়ে শিবির করতেন। ফরহাদের যে রুমমেট তার সঙ্গে দীর্ঘ চার বছর থেকেছে, সেও ফরহাদের আসল রাজনৈতিক পরিচয় জানতো না। ২০০৪ সালের ৫ই আগস্টের পর ফরহাদের পরিচয় সামনে আসার পর, অন্য অনেকের মতো তার রুমমেটও অবাক হয়েছিল। ফরহাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ১৭-১৮ সেশনের এবং পাশাপাশি কবি জসীমউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ডাকসু নির্বাচনের সময় ফরহাদকে তেমন প্রচারণা করতে দেখা যায়নি, অথচ তার জয় আল্লাহ সহজভাবে এনে দিয়েছেন।
সর্বশেষে আসবে এই ডাকসুর ইতিহাসের অন্যতম নাম, যার দ্বারা পুরো ডাকসু আগামী কয়েক বছর পরিচালিত হবে, তার নাম হলো সাদিক কায়েম। তিনি হলেন শিবিরের অন্যতম ফ্রন্টলাইনার। ডাকসুতে তিনি শিবিরের হয়ে প্রচার-প্রচারণা করেছেন সবচেয়ে বেশি। সাদিক কায়েমের প্রচারণা সবসময়ই ছিল একদম সাদামাটা। কিন্তু তার জয় আল্লাহ দিলেন অনেক বড়সড় করে। তিনি বর্তমান ডাকসুর ইতিহাসে শিবিরের প্রথম এবং একমাত্র ভিপি। মাঝরাতে গতকাল সবাই যখন বিজয় উল্লাসের অপেক্ষায়, সাদিক কায়েমকে তখন নামাজরত অবস্থায় একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়। ভিপি হওয়ার আগেই আল্লাহর নাম স্মরণ করে সাদিক কায়েম বলেছিলেন, “ডাকসুর কাজ নেতা তৈরি করা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ হাসিল করা। এই স্বার্থগুলোর মধ্যে রয়েছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ: আবাসন সংকট দূর করা, শিক্ষার্থীদের খাবার এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, এবং বিশেষ করে রেজিস্টার ভবনে শিক্ষার্থীদের অনেককালের ভোগান্তি থেকে চির বিদায় দেওয়া।” এবার মূলত সেসব বাস্তবিকতার চিত্র প্রমাণ করার পালা। তিনি শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম চাকরির সুযোগ, আধুনিক লাইব্রেরি ব্যবস্থা, মসজিদের আধুনিকায়ন, শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের প্রসারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানে কাজ করতে চান। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে সাদিক কায়েম অপূর্ব মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছেন। সাদিক কায়েম যে এলাকা থেকে উঠে এসেছেন, সেখান থেকে খুব কম সংখ্যক ছেলে এ যাবৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নিতে পেরেছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় খুব ভালোভাবে টিকে যান এবং একাধিক সংগঠনের প্রধান হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। তার নেতৃত্বের গুণটা তার ভেতর আগে থেকেই আছে। এবার ভিপি হিসেবে তিনি কতটা সফল হবেন, তা সময় বলে দেবে।
জীবনে বড় কিছু অর্জন করতে হলে শুধু মেধা থাকলেই চলে না, তার সাথে দরকার দৃঢ় সংকল্প আর সততা। এই নির্বাচন প্রমাণ করলো যে, যখন মেধা আর সততার সমন্বয় ঘটে, তখন যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। ছাত্র রাজনীতিকে কলঙ্কমুক্ত করে নতুন একটি উদাহরণ সৃষ্টি করার এই সুযোগ এসেছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। বিজয় শুধু একটি পদের নয়, বরং লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর প্রত্যাশার। এই পথচলা যেন নতুন দিনের সূচনা করে।
সংক্ষিপ্ত জীবনী :
ডঃ তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইমপ্যাক্ট গ্রুপে গ্লোবাল কনসালট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন।
দাউদ ইব্রাহিম হাসান, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় একজন রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হওয়ার পাশাপাশি ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি আইডিএলসি ফাইনান্স পিএলসিতে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের একজন সদস্য হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।
আজ সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের জানান, রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসকের শিডিউল আগে থেকেই নেওয়া ছিল। সেই অনুযায়ী আজ তারা সিঙ্গাপুর গেছেন।
তিনি জানান, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা রওনা হন। তবে, চিকিৎসার জন্য তারা কতদিন সিঙ্গাপুরে থাকবেন, তা জানাননি শায়রুল।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বলেনছেন- নির্বাচনটা বানচাল করার জন্য অনেকেই চেষ্টা করতেছেন। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করতেছে, কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে একটি নির্বাচিত সরকার দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থায় নিয়ে আসতে পারে। নির্বাচন ছাড়া এ দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারী ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা এবং ক্রেস্ট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, নির্বাচন নিয়ে যারা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করুন না কেন এই বাংলাদেশের মানুষ অন্তত সচেতন। আমরা জনগণকে নিয়ে সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে যাতে সঠিক সময়ে নির্বাচন হয় এবং সরকারও নির্বাচনটা সঠিক সময়ে দিতে বদ্ধপরিকর। সে ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকব এবং সক্রিয় থাকব।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের সাথে জোটের ব্যাপারে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।
এ সময় ভূঞাপুর বালিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকে গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তরফদার। এতে অতিথি ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
আগামী রমজানের আগেই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এতে ষোলো বছর পর দেশের ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতিহা পাঠ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের মানুষ এখনো নানাভাবে অধিকারবঞ্চিত উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীদের দিক থেকে আমরা এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের মধ্যে বাস করছি। আমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি। তবে আমাদের বিশ্বাস খুবই দ্রুত রমজানের আগেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তাতে এ দেশের ভোটাররা ষোলো বছর ধরে যে ভোট দিতে পারেননি, এবার তারা সেই ভোট দিতে পারবেন।’
‘পাশাপাশি গণতন্ত্রের আরও বিভিন্ন শর্ত, যেমন: এ দেশের মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ তৈরি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা— পূরণ করা সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘আদালত হতে হবে অসহায় মানুষের শেষ ভরসার স্থল। সেই ধরনের একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর এই লক্ষ্য পূরণে মানুষের অনুপ্রেরণা হচ্ছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন মানবতা, প্রেম ও দ্রোহের কবি। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম, স্বাধীনতার লড়াই, নব্বইয়ের গণআন্দোলন এবং বছরখানেক আগে যে দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, প্রতিটি জাতীয় অর্জন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যার গান ও কবিতা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে, দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছে, তার গান গাইতে গাইতে ও তার কবিতা আবৃত্তি করতে করতে আমরা রাজপথে নেমে আসতাম।’
রিজভী বলেন, ‘স্বৈরশাসনের তপ্ত বুলেটের সামনে নিঃশঙ্কচিত্তে দাঁড়াতেও দ্বিধা করিনি, কারণ আমাদের কণ্ঠে ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতা। যখনই এ দেশের মানুষ অধিকারহারা হয়, তখনই তাদের সংঘবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করে অত্যাচারীর শৃঙ্খল ভাঙার প্রত্যয় জেগে ওঠে যার কবিতা ও গানে, তিনি কাজী নজরুল ইসলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি (নজরুল) তার শানিত কলম চালাতে দ্বিধা করেননি। তার লেখা কবিতা, গান ও সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যে চেতনা তিনি গোটা জাতিকে দিয়েছেন, তা ধারণ করেই আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগ্রাম করেছি, জুলাই আন্দোলনে যার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠোমোতে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য চলে আসছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সেখানে রাতারাতি এগুলোর সমাধান সম্ভব হবে না। কিন্তু আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এই রাষ্ট্রকাঠামো বদলাতে হবে।
তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারর চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা এখনো আসতে পরিনি। এমনকি নির্বাচন নিয়েও একই বিষয় আছে, যদিও জাতি এখন সেই দিকেই মনোনিবেশ করেছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম ও লড়াই করেছি, এটা মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে— এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর প্রেসক্লাবে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটুকু সু-রক্ষিত’ শিরোনামের এই সেমিনারের আয়োজন করে অর্পণ আলোক সংঘ নামের একটি সংগঠন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ। সেমিনারটির সঞ্চালনা করেন অর্পণ আলোক সংঘের চেয়ারম্যান বীথিকা বিনতে হোসাইন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখন রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের কথা বলছি, একইসঙ্গে অর্থনৈতিক কাঠামোর কথাও বলছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের সব অনাচার, অবিচার, নৈরাজ্য, দুর্নীতি ও স্বৈরাচার— সবকিছু কাটিয়ে একদিনে সুন্দর করে একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করব, এটা মনে করার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। যে ৫২ বছরে একটা নিয়মিত ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিধান আমরা তৈরি করতে পারিনি, সেখানে আজ হঠাৎ করে মুহূর্তের মধ্যে আমরা সবকিছু ঠিক করতে পারব না। আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা চেষ্টা করছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিংবা জোড়াতালি দিয়ে কোনোকিছু করা যায় না। এর জন্য সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা ও লক্ষ্য প্রয়োজন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরও আন্তরিকতা থাকতে হবে।’
এ সময়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। এই কাঠামো বদলাতে হবে। কারণ, বেগুন গাছ লাগিয়ে আমরা কমলালেবু আশা করতে পারি না। কাজেই আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে, সেটা যদি কাজে লাগাতে পারি, বৈষম্যহীন একটা সমাজব্যবস্থার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি, তাহলে হয়তো-বা অভ্যুত্থানের কিছুটা মূল্য আমরা পাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবকিছু নির্ধারণ করে আমলারা। সেখান থেকে সবকিছু নেমে আসে। একজন স্কুলশিক্ষককেও নিজের সমস্যা সমাধান করতে ঢাকায় আসতে হয়, যেটার কোনো প্রয়োজন নেই। এর জন্য তো জেলা পরিষদই যথেষ্ট হওয়ার কথা।’
‘কিন্তু ওই যে সিস্টেম। কারণ, তারা যদি ঢাকায় না আসেন, তাহলে ঘুষ আসবে কোথা থেকে? এখন স্কুলশিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক— সব নিয়োগ হয় ঘুষের বিনিময়ে। যেই রাষ্ট্রকাঠামোতে এমন বৈষম্য চলতে থাকে, সেখানে রাতারাতি কিছু করে ফেলতে পারব না।’
অনুষ্ঠানে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘মেহনিত মানুষের আন্দোলনের দাবি-দাওয়ার মঞ্চ হিসেবে আমরা নিজেদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। ২০১৫ সালে গণসংহতি আন্দোলনকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা করি। এ সময়ে বাংলাদেশের মানুষের লড়াই-সংগ্রামে যুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি।’
‘রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ রাখা; আমাদের লক্ষ্যও তাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে শ্রেণিগত পার্থক্য রয়েছে। সবচেয়ে বড় পার্থক্য ধনসম্পদে। গত ৫৪ বছরে যে দলগুলো ক্ষমতায় ছিল, তারা যে নীতি তৈরি করেছে, তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ খেটে খাওয়া মানুষ, নিপীড়িত জনগোষ্ঠী কিংবা লিঙ্গীয় পরিচয়ের মানুষ, তাদের জন্য সাম্য তো দূরের কথা, ন্যূনতম ভারসাম্যও তৈরি করতে পারেনি।’
‘এতে লুটপাট-নির্ভর একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ধরে নেওয়া হয়, ক্ষমতা দিয়ে টাকা-পয়সা বানাবে।’
ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে ব্যাংক লুট হয়ে সাফা হয়ে গেছে। কিন্তু গত পরশুদিন দেখলাম, ৯টি নন-ব্যাংকি ফিন্যানশিয়াল ইনস্টিটিউশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা বিশাল ব্যাপার। কিন্তু হাসিনা চলে যাওয়ার পরও লুটপাট বন্ধ হয়ে যায়নি। গেল ১২ মাসে প্রায় একইভাবে ব্যাংকিং খাতে লুটপাট হয়েছে। এটি আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয়, যেগুলো হাসিনার আমলে বেশি হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এজন্য কোনো জবাবদিহিতা নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ব্যাংক থেকে একটি টাকা লুট হলেও বাংলাদেশের ব্যাংকের নজরদারি থাকে। লুট হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক জানবে না— এটা হয় না। হাসিনার আমলে যে লুট হয়েছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানত। কিন্তু সেখানে যে কর্মকর্তাদের এই নজরদারি করার কথা ছিল, তাদের নামে কোনো নিউজ হয়নি, মামলা হয়নি। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা হয়নি।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সাধারণ মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমি নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। যদি জনগণ চায় তবে আমরাই সরকার গঠন করব।
তিনি বলেছেন, ইসলামী সমমনাদের এক মঞ্চে আনার বিষয়ে সবাই একমত। বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা অনেক সময় পিআর বুঝেন না, কিন্তু সাধারণ মানুষ বিষয়টি ভালোভাবেই বোঝে। কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন ও বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে অগ্রগতি হয়েছে। শিগগিরই সুখবর আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দিনব্যাপী কুমিল্লা ফানটাউনে জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগরীর ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালুর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, প্রয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে হ্যাঁ/না ভোটের মতো পদ্ধতিও গ্রহণ করা হতে পারে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন- কুমিল্লা মহানগরীর আমির ও কুমিল্লা ৬ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।
কুমিল্লা মহানগরীর দুরবস্থার প্রসঙ্গ টেনে ড. তাহের বলেন, আমি কান্দিরপাড় থেকে ডুলিপাড়া ফানটাউনে আসতে ৪৫ মিনিট সময় নিয়েছি। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে ৫ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালুর বিষয়ে জামায়াত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। প্রয়োজনে বিকল্প ফরম্যাটেও কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো দল যদি মনে করে আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত জয়ী হবে তাহলে বোঝা যায় জেতার জন্য তারা কোনো একটা মেকানিজম করছে। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে পারবে। জনগণ যাকে চাইবে তারাই জয়ী হবে।
মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান এবং সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগরীর নায়েবে আমির অধ্যাপক এ কে এম এমদাদুল হক মামুন, যুব বিভাগের সভাপতি কাজী নজির আহমেদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগর সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন মোল্লা, মোতাহার আলী দিলাল, ভিপি মুজিবুর রহমান, কুসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক এ জি এস শহিদুল্লাহ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সবুজ প্রমুখ।
মন্তব্য