একসময় খুবই সাধারণ চলাফেরা ছিল তার। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই চলে আসেন পাদপ্রদীপের আলোয়। পরিচিত হয়ে ওঠেন সবার কাছে। পাল্টে যায় সিদ্দিকী নাজমুল আলমের খোলনলচে।
তখন থেকেই প্রায় প্রতি মাসে গাড়ি পাল্টানো যেন নাজমুলের শখে পরিণত হয়। সারাক্ষণ ঠোঁটে জ্বলত দামি সিগারেট। মাথার চেয়ে হাত চলাই নাজমুল ও তার অনুসারীদের এনে দেয় বিশেষ পরিচিতি। বিতর্ক হয়ে ওঠে নাজমুলের সমর্থক।
তবে নাজমুলের ভক্ত-সমর্থক ছিল তার সমসাময়িক নেতাদের তুলনায় ঈর্ষণীয়। ছাত্রলীগের সেই দাপুটে নেতা বহুদিন ধরেই দেশের বাইরে। হার্টে একাধিক ব্লক নিয়ে চিকিৎসাধীন হাসপাতালের বিছানায়।
এ অবস্থায় থেকে নাজমুল প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লিখেছেন আবেগঘন এক স্ট্যাটাস। তার আক্ষেপ প্রিয় নেত্রীর ভুল ভাঙাতে না পারার।
সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় টানা চার বছর অনেকটা একহাতে ছাত্রলীগের প্রায় সব নিয়ন্ত্রণ করেছেন দাপটের সঙ্গে। ক্ষমতাসীন দলটির সংগঠনটিতে সিদ্দিকী নাজমুলই তখন ছিলেন শেষ কথা। কথিত আছে, এ সময়েই বিপুল সম্পদের মালিক হন তিনি। বনে যান একটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকও।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালেই নাজমুল বেশ কয়েকটি দেশে নিয়মিত ভ্রমণ করতেন। সেই সময় থেকেই সেসব দেশে ব্যবসার সঙ্গে জড়ান তিনি।
ছাত্রলীগের দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকেই নাজমুলের নানা সম্পদের খবর আসতে থাকে। সবশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ অন্যদের সঙ্গে ওঠে ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতার নাম।
সেই থেকে দেশের বাইরে নাজমুল। বিতর্কিত ঠিকাদার ও যুবলীগ নেতা জিকে শামীমের কেলেঙ্কারিতেও আসে নাজমুলের নাম।
বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে উঠে আসে, সিদ্দিকী নাজমুলের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ক্ষুব্ধ হন তার প্রতি। নাজমুলের দাবি, তার ব্যাপারে নেত্রীকে দেয়া হয়েছে ভুল তথ্য।
লন্ডনের বার্থ হাসপাতাল থেকে ফেসবুকে দেয়া নাজমুলের স্ট্যাটাস
সবাই আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ক্ষমা করে দিয়েন। বাঁচব কি না জানি না, তবে এই চরম মুহূর্তে কিছু সত্য কথা বলে যাই, আমি রাজনীতিটা একমাত্র দেশরত্ন শেখ হাসিনারে মেনেই করতাম এবং করি। কোনো দিন তার বাইরে যাইনি।
সাবেক অনেক বড় ভাইয়ের কথায় আমি কখনও চলি নাই। বরং পেছনের সারির অনেককে নেতা বানাইছি নিজের ইচ্ছায়। আর প্রেম করেছিলাম, কিন্তু মানিয়ে নিতে পারিনি তাই বিয়ে হয়নি। আর শেষ কথা হলো বাংলাদেশে কোনো ব্যাংকে আমার নামে এক পয়সাও লোন নাই এবং লোনের কোনো টাকা বিদেশেও নিয়ে আসিনি। তদবির ঠিকাদারি দালালি পদ-বাণিজ্য কখনও করিনি।
লন্ডনে গায়ে খাটি। জীবনে যে কাজ করিনি তা করে জীবনযুদ্ধে লিপ্ত ছিলাম। কিন্তু আমার কপাল ভালো না। কিছুক্ষণ আগেই আমার এনজিওগ্রাম সম্পন্ন হয়েছে। অনেকগুলো ব্লক ধরা পড়েছে, ওপেন হার্ট সার্জারি করতে হবে। হয়তোবা আজকালের মধ্যেই করবে, সরকারি হাসপাতালেই করবে। কারণ, এই দেশে চিকিৎসা ফ্রি। তাই আর কেউ কষ্ট কইরা ভুল তথ্য দিয়েন না, যে কোটি টাকার অপারেশন।
যদি মরে যাই একটাই কষ্ট থাকবে নিজের দলের মানুষের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মিডিয়া ট্রায়াল হয়েছে বারবার আমার নামে। আর আফসোস, হয়তোবা বড় কোনো ভাই আমার নামে অনেক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার নেত্রীর কান ভারী করে রেখেছে, সেই ভুলগুলো হয়তো ভাঙিয়ে যেতে পারলাম না।
আপা, আপনিই আমার মমতাময়ী জননী স্নেহময়ী ভগিনী। আপনাকে অনেক ভালোবাসি, ক্ষমা করে দিয়েন আমাকে। সবাই ভালো থাকবেন, আপনাদের আর যন্ত্রণা দিব না।
পোস্টটি দেয়ার এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ের মধ্যে রিঅ্যাক্ট পড়ে ৩৫ হাজার। কমেন্ট পড়ে ১০ হাজার। শেয়ার হয় ১ হাজার ৪০০।
নাজমুলের পোস্টে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, ‘ইনশাল্লাহ তুমি ভালো হয়ে যাবে। চিন্তা করো না আমাদের দোয়া তোমার সাথেই আছে।’
উত্তরবঙ্গের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ লিখেছেন, ‘আল্লাহর রহমতে তুমি ফিরে আসবে।’
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বহিষ্কৃত) গোলাম রব্বানী লিখেছেন, ‘ভাই আপনি সুস্থ হয়ে দেশে আসেন। সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই করে প্রকৃত সত্য উন্মোচন করতে হবে। দোয়া করি, অপারেশনটা ভালোয় ভালোয় হয়ে যাক, আপনি দুর্দিনের রাজপথের লড়াকু নাজমুল, একদম ভেঙে পড়বেন না। এবার একসাথে নেত্রীর নামে স্লোগান ধরব ইনশাল্লাহ।’
বন্যা ও স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে চলতি মাসেই ৩টি নদী ও ১০টি সংযোগ খালের - পুনঃখনন কাজ শুরু হচ্ছে। এ কাজের জন্য ১৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সেনাবাহিনী ৩টি নদীর ৮২ কিলোমিটার এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ১০টি সংযোগ খালের ৩১ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হবে।
কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে হরি নদীর ভবদহের ২১ ভেন্ট সুইস গেট থেকে উজানে ৭ কিলোমিটার ও ভাটিতে হরি নদীর খর্ণিয়া ব্রিজ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার, খর্নিয়া ব্রিজ থেকে তেলিগাতি ঘ্যাংরাইল পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার, হরি নদীর শাখা আপার ভদ্রার কাশিমপুর থেকে মঙ্গলকোট ব্রিজ পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, বড়েঙ্গার তিন নদীর মোহনায় জিরো পয়েন্ট থেকে কেশবপুর মনিরামপুর হয়ে রাজগঞ্জ রোড পর্যন্ত হরিহর নদীর ৩৫ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হবে। এছাড়া নদীর ১০টি সংযোগ খালের মধ্যে নুরানিয়া ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার, বাদুড়িয়া ৩ কিলোমিটার, বুড়ি ভদ্রার শাখা খালের ৫ কিলোমিটার, গরালিয়া ১ দশমিক ৩৫০ কিলোমিটার, কন্দর্পপুর ১ কিলোমিটার, কাশিমপুর ১ কিলোমিটার, ভায়না ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, বিল খুকশিয়া ৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, বুড়ুলি ৩ কিলোমিটার ও পাথরা খাল ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হবে। ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে নদীর সিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীও নদীগুলি পরিদর্শন করেছেন। পাউবো আরও জানায়, কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার বর্ষার অতিরিক্ত পানি হরি নদীর শাখা দেলুটি দিয়ে শিবশা নদী হয়ে সাগরে পতিত হয়। এসব নদীর সংযোগ খালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসংখ্য পোল্ডার ও ৯১টি লুইস গেট রয়েছে। বিল খুকশিয়া ৮ ভেন্ট সুইস গেটের সাথে ছোট বড় ২৭ টি বিল, নূরনিয়া ৪ ভেন্ট সুইস গেটের সাথে ১২টি বিল, ভবদহের ২১ ও ৯ ভেন্ট লুইস গেটের সাথে ছোট বড় ৫২টি বিল ও কোনো কোনো রেগুলেটরের সাথে একাধিক বিল যুক্ত আছে। যা পোল্ডারে আবদ্ধ থাকায় দু'পাশ পলিতে ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। পোল্ডারের কারণে প্লাবনভূমির সঙ্গে নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বর্তমানে হরিনদীসহ অন্যান্য নদীতে জোয়ার উঠে না। ফলে নদীগুলো বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রূপ নিয়ে থাকে।
এছাড়া শুধুমাত্র কেশবপুরের বিভিন্ন বিলের মধ্যে ৫৯টি সরকারি খাল রয়েছে যা মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীরা দখল করে তাদের ঘেরের সাথে যুক্ত করে মাছ চাষ করে আসছে। এসব খাল দখলমুক্ত করতে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কেশবপুরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, বন্যা ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ৩টি নদী ও ১০টি খাল পুনঃখননে সরকার ১৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে ৩টি নদীর পুনঃখনন সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে করা হবে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী নদী এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসব নদী-খাল খনন সম্পন্ন হলে এলাকা বন্যা ও জলাবদ্ধতা মুক্ত হবে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের শিকার এক শিশুর অভিভাবকের সঙ্গে অত্যন্ত অশালীন ভাষা ব্যবহার ও দুর্ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ঘটা এই ঘটনার একটি বিতর্কিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, চিকিৎসক আবুল কাশেম চিকিৎসাধীন ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাবা ও স্বজনদের উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ, অপমানজনক ও হুমকিমূলক ভঙ্গিতে কথা বলছেন।
স্থানীয় ভাষায় তাকে বলতে শোনা যায়— ‘ ‘হাসপাতালডাক তোমরা চিড়িয়াখানা পাইছ, চিড়িয়াখানার মতো ভর্তি হবার আইসো, কোনঠে সাংবাদিক আইসো, দেউনিয়া-মদ্দিনা আইসো, এলাকাবাসী আইসো, পুরুষ-মহিলা আইসো, ছোট-বড় আইসো, এইটা হরিবোল, হরিবোল দেওয়ার জায়গা নাকি? এই ছুটি বাড়ি যাও, আইজকে বিস্তিবার (বৃহস্পতিবার) আর কোথায় রাখব? তোমরা মামলা করলে করো, না করলে…(অশ্লীল ভাষায় কিছু বলেন)।’
এদিকে, বিতর্কিত ভিডিওটি সিভিল সার্জনের নজরে আসার পর রাতেই অভিযুক্ত চিকিৎসক আবুল কাশেমকে শনিবারের (২০ সেপ্টেম্বর) মধ্যে ঘটনার কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান জানান, কী ঘটেছিল এবং কেন রোগীর পরিবারের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে, তার সঠিক জবাব চেয়ে নোটিশ করা হয়েছে। গত শুক্রবার ১৯ সেপ্টেম্বর সরকারি ছুটি থাকায় শনিবারের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি যেহেতু আলোচিত, তাই জবাব পাওয়ার পর তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার গভীর রাতে, উপজেলার খলিশাকুণ্ডি ইউনিয়নের পিপুলবাড়িয়া মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতেরা রাস্তার ওপর গাছ ফেলে অ্যাম্বুলেন্সটি থামিয়ে, অস্ত্রের মুখে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্ট্রোকের রোগী লিটনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে পিপুলবাড়িয়া মাঠের কাছে যাত্রীছাউনির সামনে গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করে পাঁচ-ছয়জনের এক ডাকাত দল। দেশীয় অস্ত্র হাতে তারা অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও ভেতরে থাকা চারজনকে জিম্মি করে অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
অ্যাম্বুলেন্স চালক রতন আহমেদ জানান, রাত ১টার দিকে রোগীকে কুষ্টিয়ায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ডাকাতেরা গাড়ি আটকে আমার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ নিয়ে যায়। তারা কাউকে কিছু না বলতে কড়া হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
রোগীর এক স্বজন জালাল বলেন, আমরা চালককে কাতলামারী হয়ে না যেতে অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি ওই পথেই যান। পথে এই ঘটনা ঘটে এবং আমাদের কাছ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে লিটন নামে একজন রোগী হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পথে অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে এখনই পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে দেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে বাংলাদেশকে গুরুত্ব সহকারে বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বিবেচনা করার, যার মধ্যে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন অন্যতম।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ এবং তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না।
কার্ল পেজ তাঁর বক্তব্যে নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি ও হাইব্রিড সিস্টেমের সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এসব প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্য, শূন্য-কার্বন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। বিশেষ করে ভাসমান বা বার্জ-মাউন্টেড রিঅ্যাক্টর তুলনামূলকভাবে কম খরচে, কম রক্ষণাবেক্ষণে, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্পখাতের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
পেজ বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তি আজ আর বিশ্বব্যাংকের মতো বড় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থাগুলোর কাছে নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতোমধ্যেই তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনে বাংলাদেশের শক্তিশালী রেকর্ড রয়েছে, তাই দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে পারে। এর সুফল হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
পেজ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র এবং পারমাণবিক উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি একটি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতি প্রণয়ন করেছে, যাতে সৌর জ্বালানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্প নিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এসব সুযোগ অনুসন্ধান করব। তবে প্রতিশ্রুতিশীল এসব প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণা দরকার। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস করতেই হবে।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শালবন গ্রামে নিখোঁজের তিন দিন পর শিশু তাসনিয়ার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী একরামুল ইসলামের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত তাসনিয়া আক্তার (১১)উপজেলার শালবন গ্রামের এরশাদ আলীর মেয়ে। স্থানীয় এলাকাবাসী এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে পড়লে পরিস্থিতি শান্ত করে রাতে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ ঘটনায় দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের শালবন গ্রামের একরামুল হকের স্ত্রী হাবিবা (৩০) ও একই এলাকার আব্দুল রাজ্জাকের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা (৬২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত তিন দিন ধরে শিশু তাসনিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী একরামুলের গোয়ালঘরে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে একরামুল বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে তার স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আব্দুল করিম বলেন, খবর পেয়ে শিশুর লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সিমান্তরক্ষী বাহিনীর যৌথ সম্মতিতে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ পথে ভারতে গিয়ে কারাভোগ শেষে ১৮ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর সিমান্তের ১৪৭ নম্বর আন্তর্জাতিক মেইন পিলার কাছে বিজিবি সদস্যদের হাতে তাদের হস্তান্তর করা হয়। সকলেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।
কুষ্টিয়া বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিন কাজিপুর বিওপি-র কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার শাহাব উদ্দিন জানান, দেশের বিভিন্ন সিমান্ত দিয়ে বাংলাদশী নাগরিকরা অভৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশের সময় ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।
পরে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে দেওয়া সাজা ভোগ শেষে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ সদস্যরা বিজিবিকে হস্তান্তর করে।
ফেরত আসা ১৮জনের তথ্য যাচাই বাছাই শেষে গাংনী থানায় সৌপর্দ করা হবে।
ভারতের গান্দিনা বিএসএফ ১১ ব্যাটেলিয়ন ক্যাম্পের এসি সুনিল কুমার যাদব সহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিল।
ভারত থেকে কারাভোগ শেষে বাংলাদেশে ফেরত আসারা হলো, পটুয়াাখালী জেলার মেহেদী, চুয়াডাঙ্গার নুরজাহান, নড়াইলের ফরিদ শেখ, ঝিনাইদহের জিসান মন্ডল, সাইদুল ইসলাম, চাঁদপুরের খোকন বেপারী, সাতক্ষীরার মাজেদা ঢালী, শামিম হোসেন, মিঠুন ঘোষ, খালিদা সরদার, মিলন কুমার, রাজশাহীর আব্দুল কুদ্দুস, যশোরের আহমেদ আলী, মৌলভীবাজারের লিটন দেব, চট্টগ্রামের শুভ মজুমদার, ঢাকার স্বাধীন রাজবংশী, মাদারিপুরের মহিউদ্দিন ফকির, নাসিমা শেখ কুষ্টিয়া।
চুরির অভিযোগে এক যুবককে আটক করে কুকুর দিয়ে কামড়ানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অমানবিক এমন ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের দেবপুর এলাকায় সাকুরা স্টিল মিলে।
চুরির অভিযোগে নির্যাতিত হওয়া ওই যুবকের কুকুর লেলিয়ে দিয়ে নির্যাতনের এমন ভিডিওটি শ্রী জয় (৩২)। তিনি চান্দিনা উপজেলার মাইজখার গ্রামের শ্রী বিষ্ণুর ছেলে। ভিডিওতে দেখা যায়, দুটি কুকুর ওই যুবককে কামড়াচ্ছে এবং কয়েকজন ব্যক্তি লাঠি হাতে তাকে মারধর করছে। কুকুরের কামড় ও লাঠির আঘাতে অসহায় যুবক চিৎকার করতে থাকে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, সাকুরা মিলটিতে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছিল। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের সময় নিরাপত্তা কর্মী ও শ্রমিকরা তাকে ধরার জন্য অপেক্ষা করে। নামাজ শুরু হলে শ্রী জয় মিলের ভেতরে প্রবেশ করলে তাকে কুকুর লেলিয়ে ধরা হয় এবং পরে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে শান্ত ইসলাম, মোহাম্মদ লিপু ও মো. সজিব নামে তিনজনকে আটক করেছে।
র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর মেজর সাদমান ইবনে আলম জানান, ঘটনাটির তদন্ত চলছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
বুড়িচং থানার ওসি মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে যৌথ অভিযানে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
মন্তব্য