নানা সমালোচনার মুখে প্রায় দুই যুগের সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত নিয়েও ঘোষণা ঝুলিয়ে রেখেছে বিএনপি। জোট ত্যাগের চিঠি তৈরি করেও তা দেয়া হয়নি। দলটির নেতারা এখন বলছেন উল্টো কথা।
জামায়াতকে চিঠি দিতে যে নেতাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তিনি বলছেন, তারা সে সময় সিদ্ধান্ত নিলেও এখন ‘সময় চাইছে’ অন্য কিছু। তাই আপাতত সেই চিঠি দেয়া হচ্ছে না।
জামায়াতের সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হয় চলতি বছরের জানুয়ারির শেষে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে চিঠি প্রস্তুত করার কথাও জানান নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা ফেব্রুয়ারিতে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে নিউজবাংলাকে জানান, তাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে। শিগগিরই জামায়াতকে তা লিখিত আকারে জানানো হবে। সেখানে ব্যাখাও দেয়া হবে, কী কী কারণে জোট ভাঙা হচ্ছে।
তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘বারবার স্থায়ী কমিটি থেকে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের প্রস্তাব করা হচ্ছিল। সেটা নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছিল…জামায়াতকে নিয়ে আমরা আর এগোচ্ছি না। তারা তো শুধু ব্যবসা বোঝে, মুনাফা খোঁজে।’
চার মাস পর সেই একই নেতাকে একই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বলেন, ‘আপনারা সময়, অসময় বোঝেন না। এখন কি এমন প্রশ্ন করার সময়? এখন সবার দরকার ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের স্বেচ্ছাচারিতাকে রুখে দেয়া। এখন নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটির সময় নয়।’
‘কিন্তু আপনারা তো জামায়াতকে ছেড়ে দেয়ার জন্য চিঠি প্রস্তুতের দাবিও জানিয়েছিলেন?
উল্লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দলের জন্য দরকার যেটা সেটা একরকম। আর সময় কী চায় সেটা আরেক রকম। এটা তো আপনাকে বুঝতে হবে। এই মুহূর্তে দলের দরকারের থেকেও সময় কী চায় সেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনের সময় বিএনপি-জামায়াতকে নিয়ে যে চারদলীয় জোট গঠন করে তাতে যোগ দেন জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও। পরে তিনি জোট ছেড়ে গেলে তার দলে ভাঙন ধরে এবং একাংশ এই জোটে থেকে যায়।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৯৯ সালে জোটবদ্ধ হয় জামায়াত ও বিএনপি। সঙ্গে ছিল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি ও আজিজুল হকের ইসলামী ঐক্যজোট।
এর মধ্যে বিএনপির জামায়াত ছাড়ার প্রসঙ্গ নানা সময়ই এসেছে। দশম সংসদ নির্বাচনের পর দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, সময় এলে তারা জামায়াতকে ছেড়ে দেবেন।
তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি ও জামায়াত জোটবদ্ধভাবেই করে। কিন্তু এরপর নানা ঘটনায় দুই পক্ষের দূরত্বও দেখা যায়।
সম্প্রতি পৌরসভা নির্বাচনের তিন ধাপ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির পাশে ছিল না জামায়াত। এর আগে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিকে সমর্থন না দিয়ে জামায়াত আলাদা প্রার্থী দিয়েছিল।
২০২০ সালের শুরুতে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এক সভায় জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে লাভ-লোকসান নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। সেখানে বিএনপির তিন নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বারবার জামায়াতের সঙ্গে জোট ত্যাগের পরামর্শ দেন। পরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে বিষয়টি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। এর পরই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যায়।
এই কমিটির একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি।
তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে এমন কিছু হয়নি। আর এখন দেশের যে পরিস্থিতি সেখানে মনোযোগ দেয়াই ভালো।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আপনিও একজন সাংবাদিক। রোজিনা ইসলামও। আমার আসলে মনটাই ভালো নেই। আপনি আরেক দিন ফোন দিয়েন।’
জামায়াতের মানবতাবিরোধী অপরাধী নেতা প্রয়াত গোলাম আযমের সঙ্গে এক ইফতার মাহফিলে বেগম খালেদা জিয়া
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শোনেন, পলিটিক্স হলো এমন একটা জিনিস, যার মাইন্ড যত বেশি ডার্টি, সে তত বড় পলিটিশিয়ান। একটি দলের মধ্যে যখনই কোনো নতুন সিদ্ধান্ত আসবে, সেটি সেই দলের জন্য একটা বিরাট ইস্যু। তাই নতুন সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য নানান রকম বিষয় মাথায় রাখতে হয়।’
‘এখন আমাদের অবস্থা আসলে এমন যে গলায় কাঁটা নিয়েই থাকতে হবে কিছুদিন’, জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথাই জানালেন এই নেতা।
ফেব্রুয়ারিতে তিনি নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘আমরা ভোটের সঙ্গী হিসেবে তাদের (জামায়াত) সঙ্গে নিয়েছিলাম। পর্যালোচনা করে দেখা গেল, তাদের দিয়ে উল্টো বিএনপি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের প্রতি জনগণের যে নেতিবাচক ভাবনা আছে, সেটার দায়ভারও আল্টিমেটলি বিএনপিকে নিতে হয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, সামনে তাদের সঙ্গে নির্বাচনি জোটেও আর থাকবে না বিএনপি। তাদের নিয়ে রাজনীতির মাঠে আর থাকারই প্রশ্ন আসে না।’
জামায়াত-বিএনপির রসায়ন
জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি জোটের আলোচনা হয়েছিল ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেই। জামায়াত নেতা মুজিবুর রহমানের লেখা একটি বইয়ে উল্লেখ আছে, তারা সে সময় ১০০টি আসন চেয়েছিলেন বিএনপির কাছে। কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি না হওয়ায় জোট আর হয়নি। পরে অঘোষিতভাবে ৩৫টি আসনে জামায়াতকে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিনিময়ে তারাও দেশের বাকি আসনগুলোতে বিএনপির হয়ে কাজ করেছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
১৯৯৬ সালে বিএনপি ও জামায়াত পুরোপুরি আলাদা নির্বাচন করে। তখন ভরাডুবি হয় জামায়াতের। তারা জেতে মাত্র তিনটি আসনে। এরপর বিএনপি ও জামায়াত একে অপরের গুরুত্ব বুঝতে পারে।
১৯৯৯ সালে জোট করার দুই বছর পর যে জাতীয় নির্বাচন হয়, তাতে ভূমিধস জয়ের পেছনে দুই দলের ভোট যোগ হওয়াই ছিল প্রধান কারণ।
তবে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আবার জামায়াতসঙ্গ বিএনপির জন্য নেতিবাচক হিসেবেই ধরা দেয়। ওই নির্বাচনের আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি বড় হয়ে ওঠার পর বিএনপি-জামায়াত জোটের ভরাডুবি হয়। স্বাধীনতাবিরোধী দলটিকে সঙ্গী করে ভোটে নেমে দীর্ঘদিনের শক্তিশালী অবস্থানেও বড় ব্যবধানে হেরে যায় বিএনপি।
ওই নির্বাচনের পর বিএনপির পক্ষ থেকে ১০টি কমিটি গঠন করা হয় বিপর্যয়ের কারণ পর্যালোচনায়। এর মধ্যে ৯টি কমিটিই জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধতাকে দায়ী করে, যা ছিল বিএনপির তৃণমূল নেতাদের অভিমত।
নির্বাচনের পর বিএনপির তরুণ নেতারাও প্রকাশ্যেই দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে দাবি তোলেন।
তবে দশম সংসদ নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে এবং নির্বাচনের পর সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনে জামায়াতকে নিয়েই যোগ দেয় বিএনপি। আর ব্যাপক সহিংসতার পর বিএনপি নেতারা নানাভাবে জামায়াতকে দায় দেন।
ওই নির্বাচনের পর একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়া বলেন, জামায়াতের সঙ্গে তাদের জোট কৌশলগত। সময় এলেই তিনি জামায়াতকে ত্যাগ করবেন।
এসব ঘটনায় আবার জামায়াত মনঃক্ষুণ্ন হয় বিএনপির প্রতি। যদিও তাদের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য আসেনি।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট গড়ে তোলার পরও জামায়াতের সঙ্গে জোট আর থাকবে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। খালেদা জিয়া কারাগারে থাকা অবস্থায় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা হয়ে ওঠা ড. কামাল হোসেন প্রকাশ্যেই বলেন, জামায়াত আছে জানলে তারা জোটেই যেতেন না।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট গড়ে তোলে বিএনপি, যার প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন ড. কামাল হোসেন। তবে এই জোট এখন নিষ্ক্রিয়।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, মীর কাসেম আলী, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আরেক নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের ফাঁসি কার্যকর সময়ের ব্যাপার। এই অবস্থায় সাংগঠনিক অবস্থাও ভেঙে পড়েছে জামায়াতের।
দলের নেতাদের এই বিচারের সময় বিএনপির কাছ থেকে প্রত্যাশিত সহযোগিতাও পায়নি জামায়াত। এ নিয়েও খেদ আছে দলের নেতাদের মধ্যে।
আবার রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার যোগ্যতাও হারিয়েছে জামায়াত।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারে মদ্যপানের পর স্বামীকে হত্যা করে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জনতার সহায়তায় আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী বাইপাস সড়কের উত্তরণ আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান, জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি জানান, নিহত রঞ্জন চাকমার মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আটক বিরেল চাকমাকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। ধর্ষণের শিকার নারী একই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন। তাদের সকলের বাড়ি রাঙ্গামাটি।
মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, বিরেল চাকমা (৫৫) এর সাথে রঞ্জন চাকমার স্ত্রী পূর্ব পরিচিত। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে গত ৩ দিন আগে তার স্বামী রঞ্জন চাকমা কক্সবাজার এসে বিরেলের বাসায় অবস্থান করছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, কক্সবাজার বাস টার্মিনাল এলাকায় জসিম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করার জন্য স্বামী-স্ত্রী বিরেলের বাসায় অবস্থান করছিলেন।
“ নিহতের স্ত্রীর জানিয়েছে, বিরেল চাকমা কয়েকদিন থেকে ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। রাজি না হওয়ায় বিরেল চাকমা সংক্ষুব্ধ হয়। “
জেলা পুলিশের এ মুখপাত্র বলেন, “ শনিবার দিবাগত রাতে ওই বাসায় বিরেল চাকমা ও রঞ্জন চাকমা মিলে মদ্যপান করে। বিরেল চাকমা মাতাল অবস্থায় রঞ্জন চাকমার স্ত্রীকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললে রঞ্জন চাকমা ও বিরেল চাকমা'র বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে বিরেল চাকমা ধারলো দা দিয়ে রঞ্জন চাকমার মাথায় সজোরে কোপ মেরে হত্যা করে। তারপর বিরেল চাকমা ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। “
জসিম উদ্দিন জানান, পরে ওই নারী কৌশলে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় চিৎকার দিয়ে আশপাশের লোকজনের সাহায্য চায়। এতে স্থানীয়রা সেখানে জড়ো হলে বিরেল চাকমাকে শরীরে রক্তমাখী অবস্থায় ব্যাগ হাতে পালিয়ে যেতে দেখতে পায়। এসময় তাকে ধৃত করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
আটক আসামী বিরেল চাকমার বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রামে দুদিন ব্যাপি জলবায়ু পরিষদের সদস্যগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
রবিবার সকালে বেসরকারি সংস্থা ইএসডিও এর দাশেরহাট কার্যালয়ের মিলনায়তনে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন, নাগেশ্বরী উপজেলা জলবায়ু পরিষদের সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,কুড়িগ্রাম জেলা জলবায়ু পরিষদের
সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম চঞ্চল, সাধারণ সম্পাদক খাদিজা পারভীন খুশি, উলিপুর জলবায়ু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা পারভীন প্রমুখ।
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পদক্ষেপসমূহ নিশ্চিতকরণ টেকসই সমাধান (অ্যাক্সেস) প্রকল্পের আওতায়
কুড়িগ্রাম জেলা জলবায়ু পরিষদ সংগঠনের নাগেশ্বরী, উলিপুর এবং জেলা কমিটির ৪৫জন সদস্যকে নিয়ে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
হেলভেটাস সুইস ইন্টার কো অপারেশন, বাংলাদেশের সহযোগীতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)
ভোলায় চাঞ্চল্যকর এক ঘটনায় নিজ ছেলের হাতে খুন হয়েছেন দারুল হাদীস কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ও সদর উপজেলা পরিষদ মসজিদের খতিব মাওলানা আমিনুল হক নোমানী। বাবাকে হত্যার অভিযোগে তার ছেলে রেদোয়ানকে (১৭) আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে ভোলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গেম ও মোবাইলে আসক্ত রেদোয়ানকে প্রায়ই শাসন করতেন নোমানী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ছেলে বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে ইন্টারনেটে ‘সাইকো’ ধরনের সিনেমা দেখে হত্যার কৌশল শেখে এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ থেকে একটি ছুরি অর্ডার করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজ শেষে ঘরে ফেরার পর বাবাকে ছুরিকাঘাত করে রেদোয়ান। এ সময় নোমানী জীবন ভিক্ষা চাইলেও ছেলে থেমে যায়নি। মুভির কৌশল নকল করে পেটে ও ঘাড়ে আঘাত করে নিশ্চিত মৃত্যু ঘটায় সে। হত্যার পর আলামত নষ্ট করতে ছুরিটি পাশের খালে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে উদ্ধার হওয়া আলামতের সূত্র ধরে পুলিশ রেদোয়ানকে আটক করে এবং তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খুনের অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেদোয়ান জানায়, বাবার শাসন-শোষণের আক্রোশ থেকেই সে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যার জন্য আগে থেকেই কালো পোশাক ও ক্যাপ জোগাড় করে রাখে। ঘটনার দিন রাতেই মামার বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে।
প্রসঙ্গত, গেল ৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে ভোলার চরনোয়াবাদ এলাকায় নিজ বাড়িতে খুন হন মাওলানা আমিনুল হক নোমানী। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি টি-শার্ট, মাস্ক ও ঘড়ি উদ্ধার করে। এসব আলামতের ভিত্তিতেই রেদোয়ানকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মেহেরপুরের গাংনীর কাজিপুর গ্রামে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে রাব্বি হোসেন নামের এক স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে।
রাব্বি হোসেন গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের মহব্বত আলীর ছেলে ও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র।
ভবানিপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আব্দুল করিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আজ রবিবার সকালের দিকে নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হলে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাব্বি হোসেনের মামা আব্দুস সালাম জানান৷ সকালের দিকে নিজ ঘরের দরজা খুলতে গেলে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয় রাব্বি।
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে র্যাবের অভিযানে ৯৬ গ্রাম হেরোইনসহ মোস্তফা হাওলাদার নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে চুনকুটিয়া চৌধুরীপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব-১০।
গ্রেফতারকৃত মোস্তফা হাওলাদার (৪৫) বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রতনপুর গ্রামের মোবারক হাওলাদারের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে ৯৬ গ্রাম হেরোইন ও ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, মোস্তফা হাওলাদার পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। সে দীর্ঘদিন ধরে হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।
আটককৃত আসামির বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
জেলার সদর উপজেলায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ কাজল (৩৫) এবং আবির আহম্মেদ (২৭) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার বৈখর এলাকা থেকে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত কাজল সদর উপজেলার বৈখর গ্রামের আবু তালেব শিকদারের পুত্র এবং আবির আহম্মেদ নয়াকান্দি গ্রামের শাহীন মাঝির পুত্র।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম সাইফুল আলম জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় সদর উপজেলার বৈখর এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় অবৈধ মাদক ক্রয় বিক্রির সাথে জড়িত কাজল এবং আবির আহম্মেদকে ১৭টি দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। মাদক ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় তারা এসব ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করতো।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত কাজলের নামে মাদক আইনে আগে থেকেই মামলা আছে।
শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা ৪ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। আগামী ১ থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত এ ছুটি পাবেন তারা।
২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ১ অক্টোবর (বুধবার) নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি। আর ২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সাধারণ ছুটি।
পরের দুদিন ৩ ও ৪ অক্টোবর (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। সবমিলিয়ে ১ থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে সরকারি কর্মচারীদের।
উল্লেখ্য, সাধারণত সরকারি কর্মচারীদের ঈদে তিন দিন করে ও দুর্গাপূজায় একদিন ছুটি থাকে। তবে কোনো কোনো বছর নির্বাহী আদেশে তা বাড়ানো হয়েছিল।
তবে ২০২৫ সালের দুই ঈদ মিলিয়ে মোট ১১ দিন ছুটি এবং শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি দুই দিন অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বছরের ১৭ অক্টোবর ছুটির তালিকা অনুমোদন করা হয়। সে অনুযায়ী ছুটির তালিকা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য