আওয়ামী লীগ সুদিনের কোনো নেতাকে চায় না জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, দলে আগাছা আসলে, হাইব্রিড আসলে উপড়ে ফেলে দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘‘দলের দুর্দিনে কেউ কেউ পিছিয়ে যায়। ২০০১ সালে ‘বয়স হয়েছে, বাকি কটা দিন শান্তিতে থাকতে চাই’ এসব কথা বলে অনেকেই রাজনীতি থেকে দূরে ছিল। দলের দুর্দিনে তারা পালিয়ে যায়। আমরা সুদিনের নেতা চাই না। আগাছা আসলে, হাইব্রিড আসলে, আমরা উপড়ে ফেলে দেব।’’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ এর পর কেউ কেউ বলত রাজাকার-যুদ্ধাপরাধী বলে ভাগাভাগি করার কী দরকার। এ কথা বলে তারা অপরাধীদের বিচার রুখতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা আপস না করে বঙ্গবন্ধুর করে যাওয়া আইনেই তাদের বিচার করেছেন।’
যারা দেশবিরোধী, সাম্প্রদায়িক চেতনার অপরাজনীতি করে মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন দলটির এই নেতা বলেন, ‘সে কারণেই যুদ্ধপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছে। আজ যারা ধর্ম ব্যবসায়ী তাদেরও মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।
‘তাদের এ দেশে স্থান নেই। তারা চাইলে পাকিস্তানে যেয়ে পাকিস্তানের রাজনীতি করুক। আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে গড়ে তুলব।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন সোনার বাংলাদেশ গড়তে সোনার মানুষ চাই। আমরা সোনার মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে পারি। দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে আসুন আমরা নিজেদের উৎসর্গ করি। শেখ হাসিনা ১৭ মে যেভাবে দেশকে ভালোবেসে, মানুষকে ভালোবেসে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন, আসুন আমরাও তাতে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের উৎসর্গ করি।’
‘শেখ হাসিনা এসেছিলেন ঐক্যের প্রতীক হিসেবে’
১৯৮১ সালের ১৭ মে’র প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তখন দেশ এবং আওয়ামী লীগও করুণ অবস্থায় ছিল। তখন ঐক্যের প্রতীক হিসেবে, আদর্শের প্রতীক হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়। সে দিন বঙ্গবন্ধুকন্যা আলোর দিশারি হয়ে দেশে আসেন। তিনি এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের মানুষকে জাগরিত করেছেন, ঐক্যবদ্ধ করেছেন।
‘১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে না আসলে আমরা এ পর্যায়ে আসতে পারতাম না। সে দিন তিনি দেশে আসায় আমরা স্বপ্ন দেখতে পেরেছি। শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য।’
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘১৭ মে শেখ হাসিনা দেশে এসেছিলেন বলেই জাতির পিতার হত্যার বিচার করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশে যেমন মহাত্মা গান্ধী হত্যার সঠিক বিচার হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা খুনিদের সাথে আপস করেননি। বিচার না হলে আমরা কলঙ্কিত জাতি হয়ে থাকতাম। বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের সেই কলঙ্ক থেকে মুক্ত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি হওয়ার পরও খুনি, একনায়ক জিয়াউর রহমান তাকে দেশে আসতে বারণ করেছিল। তিনি সে দিন নিজ বাড়িতে উঠতে পারেননি, আত্মীয় বাড়িতে উঠেছিলেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি সর্বহারা, আমি আপনাদের জন্য, দেশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করলাম।’’
শেখ হাসিনাকে এ পর্যন্ত ১৯ বার হত্যার চেষ্টা হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে দেশকে ভালোবেসে, মানুষকে ভালোবেসে জাতির পিতার স্বপ্নের গণতান্ত্রিক উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য দেশে এসেছিলেন, দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
আরও পড়ুন:বরগুনার আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সওকত ইসলাম সিফাত দুটি যুদ্ধবিমান, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাডার, মিসাইল ও যুদ্ধ জাহাজ তৈরি করেছেন। তার এমন সৃষ্টি কর্মে অভিভূত এলাকাবাসী। সিফাত একজন বৈজ্ঞানিক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে সেই প্রতিভা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে তাকে আর্থিক সহযোগিতা করলে তিনি তার সৃষ্টিশীল কাজে আরও এগিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা সিফাতের।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর রাওগা গ্রামের মো. বশির প্যাদার ছেলে সওকত ইসলাম সিফাত ছোটবেলা থেকেই নতুন নতুন আবিষ্কার কর্মে উৎসাহী ছিলেন। ২০২২ সালে একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় হেফজো বিভাগে ভর্তি হন। ১ বছর হেফজো শেষে তিনি ২০২৩ সালে চাওড়া পাতাকাটা মেহেরআলী দাখিল মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়া করেন। ২০২৫ সালে গাজীপুর বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয় নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। লেখাপড়ার পাশাপাশি নতুন সৃষ্টিশীল কাজে মনোনিবেশ করেন তিনি। নতুন নতুন আবিষ্কারই যেন তার নেশায় পরিণত হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে তিনি যুদ্ধবিমান তৈরির উদ্যোগ নেন। দীর্ঘ তিন মাস প্রচেষ্টার পরে তিনি রাশিয়ার তৈরি মিগ-২৯ মডেলের যুদ্ধবিমান তৈরি করেন। ওই বিমান তিনি আকাশে উড়িয়ে এলাকার মানুষের কাছে খুদে বিজ্ঞানী উপাধি পান। তাকে এলাকার সবাই বিজ্ঞানী বলে ডাকে। বাবা বশির প্যাদা ও মা চম্পা আক্তারের অনুপ্রেরণা এবং এলাকার মানুষের উৎসাহে তিনি আরও নতুন নতুন আবিষ্কারের নেশায় মেতে ওঠেন। এরপর তিনি দুই মাস চেষ্টা করে আমেরিকার তৈরি এফ-২২ মডেলের যুদ্ধবিমান তৈরি করেন। এরপর তিনি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাডার, মিশাইল ও যুদ্ধ জাহাজ তৈরি করেছেন। সকল আবিষ্কারেই তিনি সফল হয়েছে। মা চম্পা আক্তার জানান, ছেলে সিফাত লেখাপড়ার চেয়ে আবিষ্কারের নেশায় মত্ত। সারাক্ষণ আবিষ্কারের নেশায় গবেষণাগারে পড়ে থাকে। ইতোমধ্যে তিনি দুটি যুদ্ধবিমান, যুদ্ধ জাহাজ ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাডার ও যুদ্ধ জাহার আবিষ্কার করেছেন। তার সবকটি আবিষ্কারই তিনি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তার তৈরি বিমান আকাশে উড়ছে, যুদ্ধ জাহাজ পানিতে চলছে, রাডার ও মিশাইল সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। কিন্তু বাধা এসেছে তার পরিবারের আর্থিক দৈন্য দশায়। টিফিনের টাকা জমা করে এবং বাবা-মা ও প্রতিবেশীদের দেওয়া অর্থ দিয়ে তিনি এগুলো আবিষ্কারের সরঞ্জাম কিনেছেন। এগুলো আবিষ্কার করতে তার প্রায় ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থ সংকটের কারনে তিনি নতুন আবিষ্কারের প্রতিভা বিকশিত করতে পারছে না। সরকারি-বেসরকারিভাবে অনুদান পেলে তিনি নতুন নতুন আবিষ্কারে আরও এগিয়ে যেতে সক্ষম হবেন। মঙ্গলবার দুপুরে খুদে বিজ্ঞানী সওকত ইসলাম সিফাতের এমন সৃষ্টিকর্ম সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে। তিনি রিমোটকন্টোল সিস্টেম আমেরিকার তৈরি এফ-২২ মডেলের যুদ্ধবিমান আকাশে উড়িয়ে দেখান। এ যুদ্ধবিমান তৈরিতে তিনি রিমোট, রিসিভার, বিএলডিসি মর্টার, সার্ভো মর্টার ও ব্যাটারিসহ নানা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করেছেন।
জসিম প্যাদা ও জালাল মৃধা বলেন, ছোটবেলা থেকেই সিফাত নানা কিছু আবিষ্কার করে আসছে। ওর আবিষ্কার দেখে আমরাও অভিভূত। ওকে নতুন নতুন আবিষ্কারে উৎসাহী করি। তারা আরও বলেন, ওকে এলাকার সকলে খুদে বিজ্ঞানী বলে ডাকে।
খুদে বিজ্ঞানী সওকত ইসলাম সিফাত বলেন, মা ও বাবার অনুপ্রেরণায় টিফিনের টাকা জমিয়ে রাশিয়ার তৈরি মিগ-২৯ মডেল যুদ্ধবিমান, আমেরিকার তৈরি এফ-২২ মডেল যুদ্ধ বিমান, যুদ্ধ জাহাজ, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাডার ও মিশাইল তৈরি করেছি। তিনি আরও বলেন, আরও অনেক কিছু তৈরির পরিকল্পনা আছে। অর্থের অভাবে আবিষ্কার করতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, আমি বৈজ্ঞানিক হয়ে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কাজ করতে চাই।
কৃষক বাবা মো. বশির প্যাদা বলেন, ছেলের প্রতিভা দেখে অর্থের দিকে তাকাই না। অনেক কষ্ট হলেও সাধ্যমতো অর্থ দিয়ে ওর সৃষ্টিকর্ম সচল রাখতে চেষ্টা করি। কিন্তু এখন আর পারছি না। আমার ছেলেকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগিতা করলে অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আশা করি।
গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহীন মাহমুদ বলেন, মেধাবী ছাত্র সওকত ইসলাম সিফাত ক্লাসের বাহিরে বিভিন্ন আবিষ্কার নিয়ে গবেষণা করে। সে ইতোমধ্যে যুদ্ধবিমান, যুদ্ধ জাহাজ ও রাডার তৈরি করেছে। ওকে প্রয়োজন মতো বিদ্যালয় ও থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরকারিভাবে আর্থিক সহয়তা পেলে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তার এমন উদ্ভাবনী সৃষ্টি কর্মের জন্য আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোরের কেশবপুরে স্ত্রী ও সন্তানের পিতৃ পরিচয় চাওয়ায় তসলিমা খাতুন নামে এক যুবতিকে লোহার রর্ড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে দু'হাত ভেঙ্গে দেওয়াসহ মাথা ফাঁটিয়ে দেওয়ার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সজ্ঞয় দাস আসামীর নিকট থেকে মোটা অংক নিয়ে জখমি সনদ আড়াল করে তড়িঘড়ি করে সাধারণ ধারায় আদালতে চার্জসীট দাখিল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এনিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তসলিমার বোন নাসিমা খাতুন বলেন, গত ৬ আগষ্ট তার বোন তসলিমা খাতুন স্ত্রীর মর্যাদা ও সন্তানের পরিচয় চাওয়ায় উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন (৩০) তাকে মারপিটসহ তার দু'হাত ভেঙ্গে দেয়। এ নিয়ে কেশবপুর থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় থানার এসআই সজ্ঞয় দাসকে।
নাসিমা খাতুন বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা ভিকটিম ও স্বাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহন না করে এবং ডাক্তারী সনদ আড়াল করে, তড়িঘড়ি করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ২৫ আগস্ট মামলার চার্জসীট আদালতে দাখিল করেন। চার্জসীটে তিনি ভিকটিমের দু'হাত ফ্যাকচার (ভাঙ্গা) উল্লেখ না করে সাধারণ ফোলা-যখমের কথা উল্লেখ করেছেন। তাতে মামলার আসামীকে আইনের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে ভিকটিম ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
নাসিমার অভিযোগ, সাধারণ ধারায় প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার ফলে মামলার আসামী সোহাগ হোসেন ১২ অক্টোবর আদালত থেকে স্থায়ী ভাবে জামিন পেয়েছেন। তিনি এসময় বলেন, মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা এসআই সজ্ঞয় দাস মামলার তদন্তসহ সঠিক ভাবে চার্জসীট দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা গ্রহন করেন। তার পরও তিনি মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছেন। এর বিরুদ্ধে আমাদের আইনজীবি এ্যাড. আব্দুল মজিদ পুলিশের চার্জসীটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি পত্র দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত তা মঞ্জুর করে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে তার তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করার জন্য যশোর পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে মামলার বাদী সংবাদ সম্মেলনে জানান।
প্রায় ১ সপ্তাহ আগে দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানে কেবিএস কলেজ সংলগ্ন মাসিমপুর এলাকায় হাবিবউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি মেইন রোডের পাশে ১ টি পাকা দোকান নির্মাণ করে। সড়ক ও জনপদের নির্দেশ অনুযায়ী অবৈধ পাকা দোকানটি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলে দোকান মালিক হাবিবউদ্দিনের লোকজন সেখানে সিন্ডিকেট তৈরি করে সড়ক ও জনপদের সাব-এসিস্ট্যান্ট ইন্জিনিয়ার আরিফ ও সার্ভেয়ার অমিতকে অবরুদ্ধ করে রাখে। সেখানে উত্তেজিত পরিবেশ সৃষ্টি হলে প্রথমে পুলিশ পরে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখানকার সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ভেবেছিল, এবার বুঝি সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে। গত ৭ অক্টোবর এই উচ্ছেদ অভিযানের মাত্র ৭ দিনের মাথায় সেই স্বস্তি উধাও। অভিযানের রেশ কাটতে না কাটতেই উচ্ছেদকৃত স্থানে আবারো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রশাসনের নজরদারির অভাব এবং স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের যোগসাজশেই এই প্রবণতা বাড়ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
মোঃ রায়হান আলী জানিয়েছেন আমার জায়গার পাশে দোকান করলে ভবিষ্যতে বাড়ী বানালে সেখানে চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে সেজন্য আমি ইতিমধ্যে সড়ক ও জনপথ সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। এমনকি আদালত থেকে ১৪৪ ধারা জারির পরেও সেখানে জোর করে হাবিবগং তাদের লোকজন দিয়ে রাতারাতি দোকান তুলে রাস্তা বন্ধ করার পাঁয়তারা করছে ।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম জানান একটি সড়ক দুর্ঘটনা কেবল একজন মানুষকে নয়, পুরো একটি পরিবারকে নিঃস্ব করে দেয়। সড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো বিশেষকরে পুলহাট থেকে শিকদার হাট পর্যন্ত আমাদের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় গড়ে ওঠা এসব অবৈধ স্থাপনার কারণে রাস্তার জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়ে, অবকাঠামোগত বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, পুলহাট থেকে খানপুর পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে যতগুলো অবৈধ স্থাপনা আছে, সেগুলো আমরা উচ্ছেদ করবো। আবার কেউ গড়ে তুললে আমরা আবারো অভিযান চালাব। তবে আমাদের সাব-ডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার সংশ্লিষ্টরা নিয়মিত মাঠে তদারকি করছেন। শুধু সওজ নয়, প্রশাসন, পুলিশ ও জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব না।
ব্যবসায়ী সংগঠনের তীব্র আপত্তি থাকার পরেও মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের আরোপ করা বর্ধিত শুল্ক (ট্যারিফ)। তবে নতুন শুল্ক নিয়ে বন্দর এবং ব্যবসায়ীরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। ৩৯ বছর পর এই ট্যারিফ বাড়লেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দর তো এত বছর লস করেনি। গত বছরও প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা লাভ করেছে। তারপরও ট্যারিফ বাড়ানো হচ্ছে কার স্বার্থে?
আলোচনা ছাড়াই ট্যারিফ কার্যকর করায় আমদানি খরচ বেড়েছে বলে দাবি করেছে বন্দর ব্যবহারকারীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন শুল্ক নীতির বড় প্রভাব পড়বে ভোক্তা পর্যায়ে। ফলে নতুন শুল্কনীতি স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইর প্রথম সহসভাপতি সেলিম রহমান বলেন, ট্যারিফ বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে একবারও আলোচনার প্রয়োজন মনে করেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। আমার কাছ থেকে বাড়তি ট্যারিফ নেবেন, আপত্তি নেই। কিন্তু তা হবে আলোচনার ভিত্তিতে।’ তিনি বলেন, ২৯ বছরের ব্যবসায়িক ক্যারিয়ারে চট্টগ্রাম বন্দরের লস হয়েছে শুনিনি। তাহলে এখন কেন এই ট্যারিফ বাড়াবেন?’
চিটাগাং চেম্বারের সাবেক প্রেসিডেন্ট আমির হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমাজ বর্ধিত এই ট্যারিফ পরিশোধ করবে না। এর আগে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে ট্যারিফ কতটুকু বাড়ানো যায়; কিংবা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে কি না। এই আলোচনার আগ পর্যন্ত ট্যারিফ আদায় স্থগিত রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘ট্যারিফ বাড়ানোর কাজ তো এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ না। এটি নির্বাচিত সরকারের কাজ।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, ১৯৮৬ সালে প্রতি ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা ছিল ৩০ টাকা, এখন তা ১২২ টাকা। তাহলে তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ট্যারিফ বাড়ছেই। নতুন করে আবার বাড়াতে হবে কেন? নতুন এ বৃদ্ধিতে প্রতি কনটেইনারে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হবে। আর এই টাকা গিয়ে পড়বে ভোক্তাদের ওপর।
ট্যারিফ কত বাড়ছে: আগে যেখানে একটি জাহাজের পাইলটিং চার্জ ছিল ৩৫৭ দশমিক ৫০ ডলার, এখন সেখানে করা হয়েছে ৮০০ ডলার। আগে যেখানে ২০০ থেকে ১,০০০ জিআরটির জাহাজের টাগ চার্জ ছিল ১৫৮ ডলার, এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬১৫ ডলার। ইকুইপমেন্টের ক্ষেত্রে আগে যেখানে পণ্যভর্তি ২০ ফুট কনটেইনারের কি গ্যান্ট্রিক্রেন চার্জ ছিল ১৫ ডলার, এখন তা ২০ দশমিক ৮০ ডলার করা হয়েছে। ২০ ফুটের খালি কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৫০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১০ দশমিক ৪০ ডলার করা হয়েছে। ১০ টনের মোবাইল ক্রেন ব্যবহারে আগে দিতে হতো ১ দশমিক ৭২৩ ডলার, এখন দিতে হবে ১০ দশমিক ৭০ ডলার। আমদানি করা এফসিএল কনটেইনারের ক্ষেত্রে প্রথম চার দিন, রপ্তানিযোগ্য এফসিএল এবং এলসিএল কনটেইনারে ছয় দিন ফ্রি টাইম রাখা হয়েছে। কিন্তু সপ্তম দিন থেকে ৬ দশমিক ৯ শূন্য ডলার দিয়ে শুরু হবে ট্যারিফ আদায়। যার ২১ দিন পার হলেই যুক্ত হবে ৬২ মার্কিন ডলার করে। এ ছাড়া এখন থেকে বন্দরে জাহাজের অবস্থানকালীন সময় ১২ ঘণ্টা অতিরিক্ত অবস্থানের জন্য ১০০ শতাংশ, ২৪ ঘণ্টার জন্য ৩০০, ৩৬ ঘণ্টার জন্য ৪০০ এবং ৩৬ ঘণ্টার বেশি হলে অতিরিক্ত চার্জ ৯০০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে প্রতিটি কনটেইনারে বর্তমানে গড়ে মাশুল আদায় হয় ১১ হাজার ৮৪৯ টাকা। এখন তা বেড়ে হবে ১৬ হাজার ২৪৩ টাকা। অর্থাৎ কনটেইনারপ্রতি মাশুল বাড়ছে গড়ে ৩৭ শতাংশ। প্রতিটি কনটেইনার জাহাজ থেকে ওঠানো বা নামানোর জন্য পরিশোধ করতে হতো ৪৩ দশমিক ৪০ ডলার। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৬৮ ডলার। বাল্কের ক্ষেত্রে প্রতি কেজি পণ্যে আগে গড়ে মাশুল দিতে হতো ১ টাকা ২৮ পয়সা, এখন আরও বাড়তি দিতে হবে ৪৭ পয়সা।
অবশেষে কার্যকর হলো আলোচিত-সমালোচিত চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন ট্যারিফ। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গত ১৫ সেপ্টেম্বর কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও ব্যবসায়ীদের সমালোচনার মুখে ট্যারিফ কার্যকর এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত গত সোমবার রাত ১২টা থেকে ট্যারিফ কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন ট্যারিফ সিস্টেমে পাইলটিং চার্জ ৮০০ মার্কিন ডলার এবং প্রতিবার জাহাজ টেনে আনার টাগ চার্জ ৬১৫ থেকে শুরু করে ৬ হাজার ৮৩০ ডলার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। বেড়েছে কনটেইনার ওঠানামার চার্জও।
সবশেষ ১৯৮৬ সালে ট্যারিফ বাড়িয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ৩৯ বছর পর ৩৮-৪১ শতাংশ হারে ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে। আর এই বাড়তি ট্যারিফ নিয়েই যত আপত্তি বন্দর ব্যবহারকারী এবং ব্যবসায়ীদের।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘এটি অর্থ মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় হয়ে গেজেট আকারে প্রকাশ হয়েছে। তাই গেজেটের আলোকে ১৫ অক্টোবর থেকে বর্ধিত এই ট্যারিফ কার্যকর হচ্ছে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ চট্টগ্রাম বন্দরের নেই।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে মঙ্গলবার দিনব্যাপী দেবিদ্বার উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ এফ এম তারেক মুন্সী। এ সময় তিনি খলিলপুর বাজার, নূরপুর, ফতেহাবাদ মোকামবাড়ি ও ফতেহাবাদ বাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেন। এছাড়া খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়, গঙ্গামন্ডল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ, নূরপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং ফতেহাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়সহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
গণসংযোগকালে এ এফ এম তারেক মুন্সী বলেন, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি হলো জাতির পুনর্জাগরণের নকশা। এই কর্মসূচির মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা, দুর্নীতি দমন ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ধানের শীষ কেবল একটি প্রতীক নয়, এটি পরিবর্তন ও আশার প্রতীক। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন মাহফুজ, সদস্য সচিব আব্দুল আলিম পাঠান, ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পূর্ব বিএনপির সভাপতি শাকিল মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, পশ্চিম শাখার সভাপতি এডভোকেট সোহরাব হোসেন, সদস্য সচিব দৌলত খান, কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম ইমরান হাসান, উপজেলা যুবদলের সভাপতি নুরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক মো. রকিবুল হাসান, জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নেয়ামত উল্লাহ এবং উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কাউছার মোল্লা।
নওগাঁয় চক্ষু শিবিরে বিনামূল্যে দরিদ্র মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে তিনটি ইউনিয়নের ৫শতাধিক মানুষকে এই এই চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।
নওগাঁ সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের প্রথম ভিপি, বিএনপির তথ্য সংগ্রহ কমিটির সদস্য ও নওগাঁ-৫ (সদর) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহবুবুর রহমান ডাবলুর এই আয়োজন করে।
জয়পুরহাট জেলার খঞ্জনপুর মিশন চক্ষু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এই চিকিৎসা সেবা দেন। এই উদ্যোগের ফলে অনেক দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ প্রয়োজনীয় চক্ষু চিকিৎসা সেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন বলে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
চোখের ছানি নিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা আকবর হোসেন জানান, তার পক্ষ্যে অর্থের অভাবে কোনো হাসপাতালে গিয়ে ছানি অপারেশন করা সম্ভব ছিল না। এখান থেকে তার অপারেশন, থাকা-খাওয়া সব ফ্রিতে করে দিবে।
ফাতেমা বেগম নামের সেবা প্রত্যাশাী বলেন, শহরে বড় হাসপাতালে গেলে অনেক টাকা লাগতো। এখানে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা পেলাম। যারা এমন মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন বিশেষ করে ডাবলু ভাতিজার জন্য দোয়া ও শুভ কামনা রইলো।
এসময় মাহবুবুর রহমান ডাবলু জানান, চিকিৎসা সেবায় দরিদ্রদের চক্ষু পরীক্ষা এবং চশমা প্রদান করা হয়। এছাড়া চোখের ছানি পড়া রোগীদের বাছাই করে বিনামূল্যে আপারেশন, কৃত্রিম লেন্স সংযোজনসহ ওষুধ প্রদান, হাসপাতালে ভর্তি ও খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, এলাকার অনেক অসহায় ও দরিদ্র মানুষ অর্থাভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে না পেরে নানা রোগে ভুগে থাকে। আর চোখ হচ্ছে মানুষের অমূল্য সম্পদ। তাই সমাজের পিছিয়ে পড়া এসব মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিনামূল্যে চক্ষু শিবিরের আয়োজন করেছি। এই কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। এসময় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৬৩৩টি খামারের ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদিপশু নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে খামারিরা। এসব গবাদিপশুর মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি নামে একটি রোগ। যাকে পক্সভাইরাস বলা হয়। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া অ্যানথ্রাক্স নিয়েও আতঙ্কে রয়েছে এ অঞ্চলের গরুর খামারিরা। গবাদিপশুর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে নেই কোনো উদ্যোগ। এই রোগের জন্য সরকারিভাবে টিকা দেওয়া কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে সম্পূর্ণ উদাসীন। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এসব রোগ সম্পর্কে অবহিত না করে ঘুমিয়ে আছেন। গরুর খামারিদের জনসচেতনতা নিয়ে কোনো সহায়তা করছে না বলে অভিযোগ খামারিদের।
পশু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগটি গবাদিপশুর জন্য খুবই ক্ষতিকর। এর মধ্যে যদি অ্যানথ্রাক্স রোগটিও ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে এ অঞ্চলে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদিপশু ও সাধারণ মানুষের অবস্থা খারাপ হতে পারে। তাই শুরুতেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
পক্সভাইরাস ও অ্যানথ্রাক্স মূলত গবাদিপশুর থেকে ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এই রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে টিকা দেওয়া কথা রয়েছে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় অঞ্চল রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
ইতোমধ্যে অধিকাংশ খামারের গরু-ছাগল ও ভেড়ার মধ্যে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ ছড়িয়ে পড়লেও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাউকে পাশে পাচ্ছে না বলে জানান, কয়েকজন খামার মালিক।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানায়, রামগতিতে ১০২টি গরুর খামারে ৬৭ হাজার ২৫১টি গরু, ১৩৯টি ছাগলের খামারে ১৩ হাজার ৩৩৮টি ছাগল, ৫৯টি ভেড়ার খামারে ১০ হাজার ২২৮টি ভেড়া ও ৮ হাজার মহিষসহ মোট ৯৯ হাজার ১০৭টি গবাদিপশু রয়েছে।
কমলনগরে ২৫০টি গরুর খামারে ২০ হাজার ২৩০টি গরু, ৫০টি মহিষের খামারে ৬ হাজার ৫২৫টি মহিষ, ২৫টি ছাগলের খামারে ৪ হাজার ৫৯৮ ছাগল ও ৮টি ভেড়ার খামারে ৪৫৫টি ভেড়াসহ মোট ৩১ হাজার ৮০৮টি গবাদিপশু আছে। দুই উপজেলায় মোট ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদিপশু রয়েছে।
রামগতি উপজেলার চরলক্ষ্মীগ্রামের খামার মালিক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘তার খামারের সব গরুর মধ্যে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ রয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে ফোন দিলে তারা ফোন ধরে না। কোনো খবরও নিচ্ছে না।’
কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন ও রামগতি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রুবেল সরকার বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে গবাদিপশু বা মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স রোগ ধরা পড়লেও আমাদের এ অঞ্চলে এখন পর্যন্ত এই ধরনের রোগের খবর আমরা পাইনি। তবে কয়েকটি গরু-ছাগলের খামারে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ ধরা পড়েছে। আমরা কিছু কিছু খামারের গরুকে টিকা দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সব খামারে টিকা দেওয়া হবে।
মন্তব্য