কোনো আলেম-ওলামা নয়, সাধারণ মানুষের বাড়ি ঘরে যারা আগুন দিয়েছে তাদেরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজশাহী সড়ক জোন, বিআরটিসি, বিআরটিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মঙ্গলবার সকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, ‘কোনো দল বা আলেম-ওলামা দেখে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যারা এ তাণ্ডবলীলার সাথে সরাসরি জড়িত, বাড়ি-ঘরে হামলা ও আগুন দিয়েছে, ভিডিও দেখে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিবাদে গত ২৬ ও ২৮ মার্চ দেশের নানাস্থানে তাণ্ডব চালায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা।
৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে নিয়ে অবরুদ্ধ মামুনুল হককে উদ্ধার করতে যাওয়া নেতা-কর্মীরাও তৈরি করে ত্রাস।
সেই রিসোর্ট ছাড়াও সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কার্যালয়, স্থানীয় ছাত্র ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর, মহাসড়কের যানবাহনে বেপরোয়া আক্রমণ চালিয়েছে তারা। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান আর সুনামগঞ্জের ছাতকেও উসকানি ছাড়াই হামলা হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কার্যালয়ে।
হঠাৎ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা সংগঠনটিকে এরপর কঠোর বার্তা দেয় সরকার। একে একে গ্রেপ্তার করা হয় ১০ শীর্ষ নেতাকে। যার সব শেষ সংযোজন মামুনুল হক যিনি হেফাজতের চতুর্থ সারির নেতা হলেও গত কয়েক বছর উত্তেজক বক্তব্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন।
হেফাজতের ১০ জন নেতাকেই পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে অথবা করছে।
হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে বিএনপির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের। তিনি বলেন, ‘হেফাজতের তাণ্ডবে বিএনপি যে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত, তা আজ সবাই জানে। হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক যে তাণ্ডবলীলা তাতে শুধু পৃষ্ঠপোষকতাই নয় বরং এসব সহিংস ঘটনায় জড়িত ছিল বিএনপি।’
বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলছেন সরকার নাকি গণবিচ্ছিন্ন। গত ১৩ বছর টানা ব্যর্থতার গ্লানিবোধ থেকে বিএনপি এসব কথা বলছে। প্রকৃতপক্ষে সরকার নয়, বিএনপিই জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত ও গণবিচ্ছিন্ন।
‘বিএনপি এক যুগের বেশি সময় ধরেই আন্দোলনের হাঁক-ডাক দিয়ে যাচ্ছে। শুধু আন্দোলনই নয়, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন এবং উপনির্বাচনে বিএনপির নির্লজ্জ ভরাডুবিই প্রমাণ করে জনগণ থেকে কারা জনবিচ্ছিন্ন।’
কাদের বলেন, ‘করোনার এ সময়ে রাজনৈতিক উদেশ্যে বিরূপ মন্তব্য করা সমীচীন নয়। পারস্পরিক দোষারোপ করাও এ সময় উচিত হবে না। কিন্তু নিত্যদিন বিএনপির মিথ্যাচার ও অন্ধ সমালোচনার জবাব দিতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘জন্মলগ্ন থেকে যে দল অগণতান্ত্রিক পথরেখা ধরে হেঁটেছে তারা আজ গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা সেজেছে এবং সবক দিচ্ছে দেশ ও জাতিকে।’
‘বিএনপির গণতন্ত্র হচ্ছে না ভোটের বাক্সবিহীন হ্যাঁ/না ভোট আর রাতের বেলায় কারফিউ। বিএনপির গণতন্ত্র মানে ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন, মাগুরা, ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচন আর এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারের প্রস্তুতি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্রের বন্ধুর পথ ধরে হাঁটছেন শেখ হাসিনা। বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানে অত্যন্ত আন্তরিক বর্তমান সরকার।
‘কিন্তু বিএনপি এ পথে বড় বাধা। তাদের অসহযোগিতা এবং বাধার কারণেই গণতন্ত্রের মসৃণ যাত্রা বারবার হোঁচট খেয়েছে।’
আরও পড়ুন:ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই ফিরে এলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সিঙ্গাপুরগামী একটি ফ্লাইট। ইঞ্জিনে ক্রটি দেখা দেয়ায় ২৫০০ ফিট ওপরে ওঠানোর পর ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে।
গতকাল সকালে বিমানের বিজি ৫৮৪ ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটে। ফ্লাইটটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের এয়ারক্রাফট দিয়ে পরিচালিত হচ্ছিল। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণ করেছে। বিমানে মোট ১৫৪ জন যাত্রী এবং ৭ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। সব যাত্রী-ক্রু নিরাপদ ও সুস্থ রয়েছেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানের ফ্লাইটটি বাংলাদেশ সময় ৮টা ৩৮ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের পরপরই, প্রায় ২৫০০ ফিট উচ্চতায় পৌঁছালে বিমানের ক্যাপ্টেন ইঞ্জিনসংক্রান্ত সমস্যার কথা জানিয়ে ঢাকায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে বিমানটি বাংলাদেশ সময় ৮টা ৫৯ মিনিটে সম্পূর্ণ নিরাপদে অবতরণ করে এবং বিমানবন্দরের বে-১৪ নম্বরে পার্ক করা হয়।
সম্ভাব্য বার্ড স্ট্রাইক ভেবে অবতরণের পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ রানওয়ের পরিদর্শন করে। তবে সেখানে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বস্তু বা পাখির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বিমানবন্দর জানায়, কারিগরি পর্যালোচনা শেষে পরবর্তী ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযানে ঢাকাসহ সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১ হাজার ৬১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মামলার এবং ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১ হাজার ৬০ জন এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত ৫৫৬ জন রয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর আজ এ তথ্য জানান।
এ সময় একটি বিদেশী পিস্তল ও চার রাউন্ড কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে।
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, কর্ণফুলী পেপার মিলের কাগজ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে সরকার। কারখানাটি পুরোদমে উৎপাদনে থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আজ রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেডের (কেপিএমএল) অতিথি ভবনের সম্মেলনকক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কেপিএমএলের কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। আজ এক তথ্য বিবরণীতে একথা জানানো হয়।
উপদেষ্টা বলেন, দেশে প্রচুর পরিমাণ কাগজ প্রয়োজন, বিদেশ থেকে কাগজ আমদানি না করে দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে। মিলের উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা হবে। বিদেশি ক্যামিকেলের ওপর নির্ভর না করে দেশীয় কাঁচামাল দিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মতবিনিময় সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবায়দুর রহমান, বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান, কেপিএমএলের এমডি শহীদ উল্লাহ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন, কেপিএমএল সিবিএ সভাপতি আব্দুল রাজ্জাকসহ কেপিএমএলের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভা শেষে তিনি কেপিএমএল কারখানা পরিদর্শন করেন এবং কারখানার বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন।
দেশের খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো ও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল আরিচায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ শুক্রবার ভোর ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আদ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১৪ মিনিটে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আগামী ছয় মাসে কমপক্ষে ২০ হাজার মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে। এর ফলে এই সব মামলায় জড়িত ব্যক্তিরা চিরতরে সকল কলঙ্ক ও কষ্ট থেকে মুক্তি পাবেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি মনে করি, মন্ত্রণালয় আগামী ছয় মাসে কমপক্ষে ২০ হাজার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার মিথ্যা বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের একটি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ইতোমধ্যেই প্রায় ১২ হাজার মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে, যা কমপক্ষে ৩ লাখ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে।’
আইন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি এ পর্যন্ত (২৮ মে পর্যন্ত) ১৬টি বৈঠকে ১১ হাজার ৪৪৮টি রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে এবং এ বিষয়ে আরও কাজ চলছে।
ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহায়তাও চেয়েছিল তারা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে সরকার কর্তৃক অবহেলার অভিযোগের প্রেক্ষাপটে মন্ত্রণালয় এই আহ্বান জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জেলা পর্যায়ের কমিটি ও আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর শাখা প্রেরিত তালিকা ও সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করে কমিটি রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজনৈতিক দলগুলোও প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটিতে রাজনৈতিক মামলার তালিকা পাঠাতে পারে।
এর আগে ড. আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ‘এই পরিপ্রেক্ষিতে, বিএনপি ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার মামলার তালিকা পাঠিয়েছিল এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ সালের মধ্যে ১ হাজার ২০০টি মামলার তালিকা পাঠিয়েছিল।’
তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি, নিজস্ব উদ্যোগে কাজ করে, ইতোমধ্যেই প্রায় অর্ধেক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে।
আইন উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল দুটিকে তাদের মামলার তালিকার সঙ্গে প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন (এফআইআর) ও চার্জশিট (যেখানে প্রযোজ্য) এর মতো প্রাসঙ্গিক নথি না পাঠানোর জন্যও দোষারোপ করে বলেছেন যে, এটি মামলা প্রত্যাহার বিলম্বিত হওয়ার প্রধান কারণ।
উপদেষ্টা সম্প্রতি তার যাচাইকৃত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে বলেছেন, ‘অন্যদিকে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, ২০ মে, ২০২৫ তারিখে ৪৪টি মামলার তালিকা দাখিল করেছে। মামলাগুলোর নথি পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
ইতোমধ্যে এই মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য মামলার তালিকাসহ এফআইআর ও চার্জশিট জমা দিতে আইন মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
অন্যায়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
আজ চার দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দ্বিতীয় দফায় তাকে ফের দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শামসুজ্জোহা সরকার।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ২২ জুন রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন ২৩ জুন তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরে বাংলা নগর থানার এসআই শামসুজ্জোহা সরকার। অপর দিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুস্তাফিজুর রহমান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২২ জুন শেরেবাংলা নগর থানায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
আয়কর অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপির নামে আন্দোলন চালিয়ে একটি ‘কুচক্রী মহল’র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যারা আয়কর অফিসে বা অন্যান্য বিভাগে বিএনপির নামে আন্দোলন করছেন—তারা বিএনপির অংশ নয়। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই এটা করছে।’
শুক্রবার (২৭ জুন) রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রিজভী এই মন্তব্য করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং সরকারি অফিসে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নামে নতুন নতুন কার্যকলাপ শুরু করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী তাদের সকলেরই তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কিন্তু তারপরও অনেকে বিএনপির নাম ব্যবহার করে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।’
রিজভী বলেন, তিনি এমন একজনের কথা শুনেছেন যিনি বিএনপির নাম ব্যবহার করে আয়কর অফিসে আন্দোলন করছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি (সেই ব্যক্তি) এখন (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অপসারণের চেষ্টা করছেন এবং ভবিষ্যতে অন্য কাউকে অপসারণের চেষ্টা করবেন। কে তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে? আমি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব—আমি এ বিষয়ে জানি না। আপনি নিজেই বিএনপির নাম ব্যবহার করে একটি অফিসে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেখানে আরও অনেক বিএনপি নেতা আছেন, কেউ এ সম্পর্কে জানেন না।’
বিএনপির নামে যারা অপকর্ম করছে তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান রিজভী। বলেন, ‘রক্তপাত এবং সংগ্রামের মাধ্যমে সৃষ্ট সুযোগ আগামী দিনে একটি উন্নত রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করলেও সরকারের ভালো কাজের প্রতি সমর্থন জানায় বিএনপি।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে আলোচনা অনুসারে, সরকার যুক্তিসঙ্গত সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল স্বীকার করেছেন যে, ২০২৪ সালের নির্বাচন ছিল একটি ভুয়া নির্বাচন। ‘তার এই মন্তব্য স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে (শেখ) হাসিনার আমলে সমস্ত নির্বাচন অবৈধভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
বিএনপি নেতা দাবি করেন, প্রশাসনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কিছু লোক—যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। তারা বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।’
মন্তব্য