২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর ও সাম্প্রতিক তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের একের পর এক শীর্ষ নেতা যখন গ্রেপ্তার হচ্ছেন, তখন রিসোর্ট-কাণ্ডে সমালোচিত নেতা মামুনুল হক বন্দিত্বের প্রশংসা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
কারাগারের বাইরের জীবনকে তিনি ‘জুলুমের মুক্ত বাতাস’ হিসেবে দেখছেন।
মামুনুল হক নিজেও সহিংসতার মামলার আসামি এবং তাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর পর হেফাজতের নেতা-কর্মীরা হুমকিধমকির পর ব্যাপক সহিংসতা চালান। এরপর আবার একজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলে সারা দেশে মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দেন মামুনুল হকসহ অন্য নেতারা।
তবে শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর হেফাজতের নেতৃত্ব নমনীয় হয়েছে। আমির জুনায়েদ বাবুনগরী শুক্রবারের খুতবায় নেতা-কর্মীদের দোয়া ও ইসতিগফার পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
পরদিন মামুনুল হক ফেসবুকে এসে এমন প্রতিক্রিয়া দিলেন, যা ২৬ মার্চের আগে-পরে নানা বক্তব্যের ঢংয়ের পুরোপুরি বিপরীত।
তিনি লিখেন, ‘নিজ দেশে যারা পরবাসীর মতো থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তাদের কথা ভিন্ন। অন্যথায় আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ইমানদারগণ এটা নীরবে মেনে নিতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে জুলুমের মুক্ত বাতাস থেকে প্রতিবাদের বন্দিত্বই হাজার গুণে শ্রেষ্ঠ!’
৩ এপ্রিল রিসোর্ট-কাণ্ডের পর বিপাকে পড়া মামুনুল অবশ্য ফেসবুক পেজে ৮ এপ্রিলের পর এক সপ্তাহ সক্রিয় ছিলেন না।
৮ এপ্রিল ফেসবুক লাইভে এসে তিনি রিসোর্ট-কাণ্ডের ঘটনায় স্ত্রীর কাছে অসত্য দাবি করার ঘটনাটির যুক্তি দেখিয়ে বলেন, ইসলামে সীমিত পরিসরে সত্য গোপনের সুযোগ আছে।
ওই লাইভে তিনি তার, স্বজন ও সংগঠনের নেতাদের ফাঁস হওয়া ফোনালাপগুলোর সত্যতা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে বলেন, এগুলো ফাঁস করে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
পরে এই লাইভ তিনি ফেসবুক পেজ থেকে ডিলিট করে দেন। আর এক সপ্তাহ কার্যত নীরব হয়ে যান। মাঝে আরবিতে দুটি স্ট্যাটাস দেয়া ছাড়া আর কোনো আপডেট হয়নি পেজটির।
শুক্রবার রাতে মামুনুল তাদের সংগঠনের মহাসচিব নুরুল ইসলামের একটি বিবৃতি পোস্ট করেন।
এরপর শনিবার তিনি গ্রেপ্তার অভিযান নিয়ে স্ট্যাটাস দেন।
গত ২৬ মার্চ থেকে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সরকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালান হেফাজত কর্মীরা। গুলিতে নিহত হয় চারজন।
দুই দিন পর হরতালের দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়। হামলা হয় পুলিশের ওপরও।
৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে নারী নিয়ে মামুনুল হক অবরুদ্ধ হওয়ার পর হেফাজত কর্মীরা ওই এলাকা ছাড়াও মুন্সিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে তাণ্ডব চালায়।
ওই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও সরকারি দল আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা হেফাজতকে সতর্ক করে বক্তব্য রাখতে থাকেন।
এরপর থেকে গ্রেপ্তার হতে থাকেন হেফাজতের শীর্ষ নেতারা।
১১ এপ্রিল ধরা পড়েন হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী। পরদিন তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
১২ এপ্রিল নাশকতার পরিকল্পনা, ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়ানো, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও ধর্মীয় অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচরে মামুনুল হকের তারবিয়াতুল উম্মাহ মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার হন কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি ইলিয়াস হামিদী। পরদিন তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
১৩ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন নারায়ণগঞ্জ হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মুফতি বশির উল্লাহ। তিনি গ্রেপ্তার হন ২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জে সহিংসতার মামলায়।
একই দিন ধরা পড়েন হেফাজতের সহপ্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফউল্লাহ। তাকে ২০১৩ সালের ৫ মের তাণ্ডবের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
১৪ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন হেফাজতের সহকারী মহাসচিব মুফতি শাখাওয়াত হোসাইন রাজী। হেফাজতের সাম্প্রতিক তাণ্ডবে তার ইন্ধনের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
একই দিন রাতে গ্রেপ্তার করা হয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে। তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে তাণ্ডবের মামলায়।
১৬ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন হেফাজতের ঢাকা মহানগরের সহসভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ যোবায়ের। তিনি ২০১৩ সালের ৫ মের ঘটনাপ্রবাহের পর মতিঝিল থানায় করা নাশকতার মামলার আসামি।
যোবায়ের ইসলামী ঐক্যজোটের প্রয়াত আমির মুফতি ফজলুল হক আমিনীর জামাতা।
২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের মামলায় আসামি করা হয়েছে হেফাজত নেতা মামুনুল হককেও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পটিয়া, হাটহাজারীতে শতাধিক হেফাজতকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামার পর মারা যাওয়া হেফাজত আমির শাহ আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগ এনে করা মামলায় গত রোববার যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে সেখানেও বাবুনগরীকে আসামি করা হয়েছে।
মামুনুলের দাবি, একটি ঢিলও ছোঁড়েননি তারা
সহিংসতার দায় হেফাজতের ওপর চাপানো ‘উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর নামান্তর’ দাবি করে দেয়া স্ট্যাটাসে ২৬ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত ঘটনা নিয়ে কথা বললেও ৩ এপ্রিল তার রিসোর্ট-কাণ্ড নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি।
মামুনুল লেখেন, ‘২৭ মার্চ থেকে ২রা এপ্রিল বিক্ষোভ, হরতাল, দোয়া ও প্রতিবাদ সমাবেশ হেফাজতে ইসলাম আহূত প্রতিটি কর্মসূচি পালিত হয়েছে প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষে এবং শান্তিপূর্ণভাবে।’
২৬ মার্চের গন্ডগোলের দায় কোনোভাবেই হেফাজতের ওপর বর্তায় না দাবি করে মামুনুল লেখেন, ‘এ দায় হেফাজতের ওপর চাপানো সুস্পষ্ট অন্যায়।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতা হেফাজতের নেতা-কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা কতটুকু, সেটাও মামুনুলের বিবেচনায় ‘প্রশ্নসাপেক্ষ’।
তিনি লেখেন, ‘সেখানে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কোন্দল ও তাদের কর্তৃক হামলার কথা খোদ প্রশাসনও অস্বীকার করে না। সুতরাং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহিংসতা ও জ্বালাও-পোড়াওয়ের দায় হেফাজতের ওপর চাপিয়ে দেয়াও উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানো বৈ কিছুই নয়।’
মামুনুল লেখেন, ‘হেফাজতের কর্মসূচি চলাকালীন চার দিনে ঢাকায় তো একটা ইটপাটকেলও ছোড়া হয়নি। পুলিশের নিরাপত্তা ও বেষ্টনীর মধ্যেই সবগুলো কর্মসূচি পালিত হয়েছে।’
রোজায় ঢাকায় কেন ধরপাকড় চলছে-এমন প্রশ্ন তুলে মামুনুল লেখেন:
‘আজিজুল হক ইসলামাবাদী কাকে আঘাত করেছে?’
‘মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী কোথায় হামলা করেছে?’
মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী কার মাথায় বাড়ি মেরেছে?’
‘মাওলানা যুবায়ের আহমদ কার বাড়াভাতে ছাই দিয়েছে?’
‘মাওলানা ইলিয়াস হামিদী, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, মুফতি বশিরুল্লাহ, মাওলানা শরিফুল্লাহরা কোথায় কার ওপর হাত তুলেছে?’
হেফাজত নেতা লেখেন, ‘করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতায় লকডাউনের সময় এভাবে আলেম-ওলামাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয়।’
আরও পড়ুন:
জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৫ এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এ বছরও দেশের বৃক্ষ সম্পদ বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভারসাম্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে ‘বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৫’ গ্রহণ করেছে।
এ উপলক্ষ্যে সোমবার (৩০ জুন) বিমান বাহিনী সদর দফতর প্রাঙ্গনে গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে উক্ত কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এ বছরের বৃক্ষরোপণ অভিযান কর্মসূচি পালন করছে।
বিমান সদরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসাররা বিভিন্ন গাছের চারা রোপণ করে ওই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিমান সদরের পরিচালকরা এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিট সমূহেও একই ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় বিমান বাহিনী বিভিন্ন ধরনের ফলজ, বনজ ও ওষুধি গুনাগুন সম্পন্ন গাছের চারা রোপণ করবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর ও আন্তরিকভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন। সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চীন আশা প্রকাশ করেছে যে, তারা বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আরও বেশি আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে কাজ করবে।’
ফখরুলের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের বিএনপির প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক চীন সফরের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সফর নিয়ে ফখরুল বলেন, বিএনপি দল চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছে। বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্প সম্পর্কে আমাদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেছি এবং তারা ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে।’
তিনি বলেন, চীনা পক্ষ এখনো তিস্তা নদীর পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। ‘ভবিষ্যতে যদি আমাদের সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পাই এবং তারা(চীন) যদি এই প্রকল্পের প্রস্তাব দেয়—তাহলে আমরা মনে করি আমরা এটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করব।’
ফখরুল বলেন, বিএনপি প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে চীনকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
তিনি বলেন, চীনা কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারকে রাজি করানোর জন্য তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার আশ্বাস দিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের সফর দুই ‘ভ্রাতৃপ্রতিম’ দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নত ও জোরদার করার জন্য একটি পথ খুলে দিয়েছে—ভবিষ্যতে এই বন্ধন আরও দৃঢ় হবে বলেও তিনি আশা করেন।
এর আগে ২২ জুন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের বিএনপির প্রতিনিধিদল পাঁচ দিনের জন্য চীন সফর করে।
বিএনপির প্রতিনিধিদলের অন্য আট সদস্য ছিলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার।
সফরকালে ফখরুল বলেন, বিএনপির প্রতিনিধিদল সিপিসির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং দ্বিপক্ষীয় বিষয় এবং সিপিসি ও বিএনপির মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পাট চাষের জন্য জমির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক শূন্য ৫ লাখ হেক্টর। এ পরিমাণ জমিতে চাষাবাদের জন্য পাট বীজ প্রয়োজন ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টন।
সোমবার বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) কৃষি উইং আয়োজিত ‘বার্ষিক অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে পাটের মোট উৎপাদন ১৫ লাখ মেট্রিক টন, পাটকাঠির মোট উৎপাদন ৩০ লাখ মেট্রিক টন এবং চারকোলের উৎপাদন ৬ লাখ মেট্রিক টন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘পাট নিয়ে অনেক কিছু করার আছে। পাটের সম্ভাবনা কোনো দিন শেষ হবে না। কাঁচা পাট নিয়ে অন্যান্য দেশ কীভাবে কাজ করছে তার ওপরেও মার্কেট রিসার্চে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বদ্ধ চিন্তাধারা থেকে বের হয়ে বিজ্ঞানীদের বিশদভাবে কাজ করতে হবে। কারণ পাট নিয়ে অনেক কিছু করার আছে, পাটের সম্ভাবনা কোনো দিন শেষ হবে না। মার্কেট এবং বাস্তবতার নিরিখে গবেষণা করতে হবে। আমাদের সীমাবদ্ধ জমিতে কীভাবে পাটের উৎপাদনকে আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়েও কাজ করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে বিজেআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. নার্গীস আক্তার বলেন, ‘পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় চাষিরা কৃষিঋণের মতো পাটঋণ এবং পণ্য রপ্তানিতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। সরকার থেকে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পায় চারকোল রপ্তানিকারকরা। দেশে প্রায় ৫০টি চারকোলের কারখানা রয়েছে। বর্তমানে কিছু কারখানা বন্ধ আছে।’
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা অনুবিভাগ) মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলু, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজেআরআইয়ের প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম মোস্তফা এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজেআরআইয়ের জেনোম গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম মাহবুব আলী।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল আমিন, কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক মো. মসীহুর রহমান, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালক মো. সাইফুল আজম খান, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ২৫ (পঁচিশ) জন সদস্য আজ সোমবার নগর ভবনে উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতে ০৫ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কর্পোরেশনের সভার কার্য বিবরণী দৃঢ়ীকরণ এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। পরবর্তীতে সভার আলোচ্য সূচি অনুযায়ী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (অতি. দা.) জনাব আলী মনসুর। পরবর্তীতে, পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন প্রদান করেন।
বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ ও অনুমোদন প্রদান করায় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক বলেন, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এই বাজেট আমাদের কাছে সম্মানীত করদাতাদের আমানত। এই বাজেট সফলভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করছে আমাদের সবার প্রিয় এই নগরীর ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের দৈনন্দিন নাগরিক সমস্যার সমাধান।”
সভায় ১৯৯৮ সাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসকারী নগরবাসীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও মাতৃত্বকালীন বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী ‘আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প-২ পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং বিদ্যমান প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারী এনজিওসমূহের মধ্যে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পরবর্তীতে, অর্থ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৬০০/- (ছয় শত) টাকা হতে ৮০০/- (আট শত) টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, মন্ত্রীপাড়ায় অবস্থিত অস্থায়ী মসজিদটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক একটি তিনতলাবিশিষ্ট নান্দনিক মসজিদে রূপান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয়গণ উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে শেরপুর জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ঝিনাইগাতী উপজেলার ইউএনও জনাব মো. আশরাফুল আলম রাসেল।
জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের নির্ভুলতা, সময়ানুবর্তিতা ও সার্বিক দাপ্তরিক ব্যবস্থাপনায় অনন্য ভূমিকা রাখায় তাঁকে এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র তুলে দেন শেরপুর এর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ মাজিস্ট্রেট তরফদার মাহমুদুর রহমান।
পুরস্কার গ্রহণের পর অনুভূতি প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন,"এই স্বীকৃতি শুধু আমার একার নয়, এটি ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কর্মী, গ্রাম পুলিশ এবং সহযোগী সব পক্ষের সম্মিলিত চেষ্টার ফল। আমরা চেষ্টা করেছি নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ রাখা, জনসচেতনতা তৈরি ও নিবন্ধন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে। এই সম্মাননা আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করবে জনসেবায় নতুন উদ্যমে কাজ করতে। আমি জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “জন্ম ও মৃত্যুর মতো গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক তথ্যের সঠিক নিবন্ধন ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের অন্যতম ভিত্তি। তাই এই কাজকে আমি শুধু প্রশাসনিক দায়িত্ব নয়, নাগরিক অধিকারের অংশ হিসেবেও দেখি।”
এছাড়াও একই কার্যক্রমে ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও একজন শ্রেষ্ঠ গ্রাম পুলিশকেও পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাদের নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা ও নিবন্ধন কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) ও গ্রাম পুলিশ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বায়ুদূষণ রোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সোমবার (৩০ জুন) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে চীনের একদল বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা জানান, শীত আসার আগেই রাজধানীর সব কাঁচা ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার সংস্কারকাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ধুলা দূষণ কমাতে রাস্তায় মাটি ঢেকে দেওয়া ও পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ‘জিরো সয়েল’ নীতি কার্যকর, মাটি শক্তকরণ ও পানি ছিটানোর গাড়ি ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘শহুরে বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ পুরনো ও উচ্চমাত্রার ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পুরনো যানবাহন অপসারণ ও নতুন ২৫০টি পরিবেশবান্ধব যানবাহন যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া, নির্গমন মান বজায় রাখতে ১০টি স্বয়ংক্রিয় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করবে বিআরটিএ।’
দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে চীনা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘সঠিক তথ্য ও বিশ্লেষণ ছাড়া কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব নয়। এজন্য একটি উন্নত বায়ু নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন, বৈশ্বিক মান অনুসারে নির্গমন মান উন্নয়ন, স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও বর্জ্য ইনসিনারেশন প্ল্যান্ট চালু ও রান্নার জন্য এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণে কর প্রণোদনাও বিবেচনায় রয়েছে।’
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্পের আওতায় উচ্চ দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে অব্যাহত নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করবে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং দেশজুড়ে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এদিকে, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) শহরে সড়কে বেড়া বসানো ও ৫০টি বৈদ্যুতিক যানবাহন চালুর মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব পরিবহনব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে।
জাইকা সহায়তাপ্রাপ্ত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আটটি বাস্তবভিত্তিক বায়ু গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যা প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বিইএসটি প্রকল্পও বাস্তবায়িত হবে।
এ সময় চীনা বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা বাংলাদেশের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরকারের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট—পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, অতিরিক্ত সচিব মো: খায়রুল ইসলাম, নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনুষদের নির্বাহী ডিন অধ্যাপক ইউ ঝাও, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানজিং-হেলসিঙ্কি ইনস্টিটিউটের উপ-ডিন অধ্যাপক হাইকুন ওয়াং এবং বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক টেংইউ লিউ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুদূষণ) মো. জিয়াউল হক প্রমুখ।
বৈঠকে জাতীয় নির্গমন ইনভেন্টরি ও রাসায়নিক বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়, যা দেশের বায়ুদূষণের উৎস চিহ্নিত করে বিজ্ঞানভিত্তিক টার্গেটেড হস্তক্ষেপের ভিত্তি তৈরি করবে।
মন্তব্য