ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক জরুরি সভায় নতুন কমিটির জন্য সম্মেলন করার দাবি জানানোয় হাতিহাতি হয়েছে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা ডাকা হয় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে।
সভায় উপিস্থত ছাত্রলীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা নিউজবাংলাকে জানান, সভার এক পর্যায়ে অনেকেই মেয়াদ উত্তীর্ণ বর্তমান কমিটি ভেঙে দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান। এ জন্য ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে অনুরোধ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, সভার শুরুতে নির্ধারিত বিষয়েই আলোচনা হয়। এর এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ সভাপতি জয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সম্মেলন নিয়ে আলোচনার অনুরোধ করেন সহসম্পাদক মেশকাত হোসেন। এর পর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান ইমরানও সম্মেলনসহ বেশ কিছু সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় কমিটিতে নতুন করে পদ পাওয়া নোবেল ও ‘চারু সোহাগ’ তাকে বাধা দেন। তখন ইমরান বর্ধিত কমিটিতে অনেক বিতর্কিতকে আনার অভিযোগ করলে হাতাহাতি শুরু হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইরমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সভায় আমি ছাত্রলীগের সম্মেলন কবে হবে জানতে চাই। এর আগে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকই সম্মেলনের প্রসঙ্গ ওঠান। আমি সভাপতি- সাধারণ সম্পাদককে বলেছি, আপনারা সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সম্মেলনের বিষয়ে নেত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। নেত্রী কমিটি বহাল রাখতে বললে আমরা মেনে নেব।
‘তখন কমিটিতে নতুন সহসভাপতির পদ পাওয়া নোবেল আমাকে কথা বলতে বাধা দেন ও বসতে বলেন। এ সময় আমি নোবেলের প্রসঙ্গ টেনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বলি, ছাত্রদল করা ছেলেরা কীভাবে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হন?’
ইমরান বলেন, ‘এ কথা বলার সঙ্গেসঙ্গে নোবেল ও কমিটির আরেক নতুন সহসভাপতি সাগর হোসেন সোহাগ (চারু সোহাগ) আমার দিকে ধেয়ে আসেন। এ সময় আমাদের মধ্যে হাতিহাতির মাধ্যমে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সংগঠনের সিনিয়র নেতারা সবাইকে শান্ত করেন। এরপর সভা আবার শুরু হয় এবং ভালোভাবেই শেষ হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, সভায় অনেক নেতাই সম্মেলনের বিষয়টি সামনে আনেন। তারা দ্রুত সম্মেলন দিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে সংগঠনের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন।
তখন ছাত্রলীগ সভাাপতি-সাধারণ সম্পাদক কী বলেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা বলেছেন, নেত্রী চাইলে অবশ্যই সম্মেলন হবে। আমরা বিষয়টি দেখছি।’
এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সহসভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সভায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বলেছি, বর্তমানে কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ। তাই কেন্দ্রীয় নেতাদের দাবি অনুযায়ী টিম করে সম্মেলনের জন্য নেত্রীর (শেখ হাসিনা) কাছে যান। নেত্রীর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন। এর পর নেত্রী যা বলবেন আমরা সেটাই মেনে নেব।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ছাত্রলীগ সভাপতি জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখকের মোবাইলে কয়েকবার ফোন করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানী ছাত্রলীগের দায়িত্ব পাওয়ার এক বছর পর ২০১৯ সালের ১৩ মে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরপরই অভিযোগ ওঠে কমিটিতে যোগ্যদের স্থান না দিয়ে রাখা হয়েছে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি, মাদকসেবী, বিএনপি-জামায়াত ও রাজাকার পরিবারের সন্তানদের। কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজিতে যুক্ত, বিবাহিত, সংগঠনে নিষ্ক্রিয় এবং অছাত্ররাও।
এছাড়া সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন ছাত্রলীগের বঞ্চিত ও পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা।
এমন প্রেক্ষাপটে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের আগেই ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এই দুই নেতা। তাদের অব্যাহতির পর সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য।
পরের বছর সংগঠনের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাদের পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন:দীর্ঘ আড়াই বছর পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কেওক্রাডং। ফলে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যটক সমাগম ঘটেছে এই পর্বতশৃঙ্গে। বৃহস্পতিবার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডং পর্বতের অবস্থান বান্দরবানের রুমায়। নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রায় আড়াই বছর অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ভ্রমণ পিপাসুরা এই পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ১ অক্টোবর থেকে উন্মুক্ত হওয়ায় ব্যাপক পর্যটকের সমাগম ঘটে কেন্দ্রটিতে।
রুমা টুরিস্ট গাইডের লাইনম্যান লাল রৌকল বম জানান, ‘কেওক্রাডং পর্বত ভ্রমণ করতে ৬৩০ জন পর্যটক গিয়েছিলেন। আজ দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫০০’র বেশি পর্যটক গমন করেছে। দিনের বাকি অংশে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কেওক্রাডং পর্বত কেন্দ্রটি আরও জনপ্রিয় এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ওই এলাকায় বিশ্রামাগার, শৌচাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার সীমিত ও বগালেক পরবর্তী অংশে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধকরণে বর্তমান ছুটি পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
ভোলার লালমোহনে একটি ব্রিজের জন্য দুই ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। দেড় বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
সরেজমিনে জানা যায়, ৩০ বছর আগে উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তরুল্লা সেন্টার ও বিশ্বাসের পাড় এলাকার মধ্যবর্তী নাজিরপুর খালের ওপর প্রায় ৩০ মিটার লম্বা আয়রন ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় দেড় বছর আগে ব্রিজটির সামনের অংশ ভেঙে গেছে। আর এতে করে চরমভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কালমা ইউনিয়নের চর ছকিনা, তরুল্লা সেন্টার, বিশ্বাসের পাড় ও বদরপুর ইউনিয়নের চর টিটিয়া গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
কালমা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শাহ আলম জানান, এ ব্রিজ দিয়ে অনেক ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে। বিশেষ করে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল বোরাক, টেম্পু ও নসিমন। কয়েক বছর আগে ব্রিজটির মধ্যবর্তী দুটি অংশ ভেঙে বড় গর্তে পরিণত হয়। পরে স্থানীয়রা কাঠ দিয়ে গর্ত আটকে দেয়। ব্রিজের রেলিং ভেঙে গেছে। প্রায় দেড় বছর আগে ব্রিজটির সামনের অংশ ভেঙে গেছে। এখন ব্রিজ দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
তারা আরো জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার এখন মানুষ পায়ে হেঁটে পারাপারও ঝুঁকি হয়ে পড়েছে। অনেকে ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে পরে গিয়ে আহত হয়েছেন।
বিশ্বাসের পাড় গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল বিশ্বাস জানান, লালমোহন থেকে তাদের এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। ব্রিজ পার হয়ে আমাদের যাতায়াত করতে যেতে হয়। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার তারা এখন ব্রিজের কাছে এসে পায়ে হেঁটে বাড়িতে যেতে হয়। বাড়ির জন্য বাজার ও চাউলের বস্তা নিয়ে যেতে তাদের অনেক কষ্ট হয়।
একই এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল হক জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার তাদের গ্রামের রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে না পারায় ভোগান্তিতে পরতে হয়। অনেক সময় রোগীদের বাড়িতে থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ভাঙা ব্রিজ পার হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।
স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার জানায়, প্রতিদিন ভাঙা ব্রিজ পার হয় স্কুলে যেতে হয়। ভয় নিয়েও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় আমাদের।
মো. মানিক হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি ভাঙা অবস্থায় মরণফাঁদে পরিণত হলেও সংস্কার কিংবা নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের। দ্রুত ভাঙা ব্রিজটি অপসরণ করে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলার এলজিইডির উপজেলার প্রকৌশলী রাজীব সাহা জানান, ওই আয়রন ব্রিজসহ লালমোহন উপজেলার আরও কয়েকটি ব্রিজ নতুন করে নির্মাণের জন্য তারা প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণ করে জনগণের ভোগান্তি দূর করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে বজ্রপাতে নজর আলী মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী জুলেখা বেগম (৪০) গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার মোক্তারামপুর কান্দাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মাঝে বাড়ির পাশে ডোবা থেকে নজর আলী ও তার স্ত্রী কচুরিপানা তুলছিলেন। ওইসময় বজ্রপাতে তারা দুজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে সলিমগঞ্জ অলিউর রহমান জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নজর আলী মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। তার স্ত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, নিহত ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। তার স্ত্রীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
টানা বর্ষণ ও উত্তাল সাগরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিরামহীন বৃষ্টিপাতে দ্বীপটির পাঁচটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত দুই শতাধিক ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় সংকট, খাদ্য সংকট ও পানিবন্দি দুর্ভোগে পড়েছেন। গত বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। জোয়ারের পানির সঙ্গে ঢেউ বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া, মাঝেরপাড়া, নজরুলপাড়া ও কোনাপাড়া পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে গেছে।
মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের ঘর পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। রান্নার সুযোগ নেই, পরিবারের কেউ খেয়ে উঠতে পারেনি। ঘর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ারও জায়গা নেই। এমন দুর্ভোগের কথা জানান দ্বীপের আরও অনেকে।’
সেন্টমার্টিন ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে টানা দুদিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দ্বীপের মানুষ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘টানা বর্ষণে দ্বীপের পাঁচটি গ্রামে কয়েকশ ঘর পানিবন্দি হয়েছে। পাশাপাশি জোয়ারের ধাক্কায় ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং ট্রলারও ডুবে গেছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম বলেন, ‘আমি কোনো স্লুইসগেট বন্ধ করিনি। আমার পাশের বাড়ির খলিল নামের এক ব্যক্তি সীমানা দেওয়ার সময় গেট বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা দ্রুত তা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
দ্বীপবাসীরা বলছেন, ঝড়-বৃষ্টি বা জলোচ্ছ্বাস এলেই এমন পানিবন্দি দুর্ভোগ নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। তবে এবার স্লুইসগেট বন্ধ থাকায় অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিনে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। মূলত স্লুইসগেট বন্ধ থাকায় এ ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে গেট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। বৃষ্টি থামলে আশা করি পানি নেমে যাবে।’
মাদারীপুরে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না, অন্য বিভাগে যাব না-ব্যানার ও স্লোগানে এক উম্মুক্ত আলোচনা সভা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদারীপুর পৌর কমিনিউটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী, মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ ৪ উপজেলার মানুষ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে নবগঠিত ফরিদপুর জেলার সাথে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন গণমাধ্যম, পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন উম্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মাদারীপুর জেলা বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা থেকে ১৯৮৪ সালে স্বতন্ত্র একটি আলাদা জেলা হিসেবে গঠিত হয়েছিল। তখন থেকে মাদারীপুর একটি সম্পূর্ণ আলাদা জেলা। এ জেলার মানুষের চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিসিয়াল কাজ-কর্ম, সংস্কৃতি সবই ঢাকার সাথে হয়ে থাকে। মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরে এ জেলার মানুষের তেমন কোনো চলাচল নেই। পদ্মা ব্রিজ মাদারীপুর অংশ থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ৩৭ কি. মি. এবং মাদারীপুরের শেষাংশ টেকেরহাট বন্দর থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব ৫০ কি.মি.। আলোচনায় বক্তারা আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই আমরা মাদারীপুরবাসী ফরিদপুর বিভাগে যাব না, আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকব, প্রয়োজনে এ জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত। তারা আরও বলেন, এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না এলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব, প্রয়োজনে রক্তও যদি দিতে হয় তবে তাই দেব- ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুই পরিবারের স্বেচ্ছাচারিতায় রাস্তা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক পরিবার। বাধ্য হয়ে রাস্তা খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদ আলী প্রধান প্লাজার সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিল। মানববন্ধন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি আব্দুল্লাহপুর গ্রাম থেকে শুরু হয়ে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা দোলোয়ার হোসেন, শুধু দুটি পরিবারের জন্য আমরা প্রায় একশটি পরিবারের ছয় শতাধিক সদস্য অবর্ণীয় দুর্ভোগে রয়েছি। বারবার তাদের রাস্তার জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হলেও তারা আমাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন জনগণের রাস্তার জায়গা বন্ধ করে ওই জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে তাই বাধ্য হয়ে আমাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মাত্র দুটি পরিবারের জন্য একশ পরিবারের মানুষ জিম্মি হয়ে রয়েছে। দুটি পরিবারে আপত্তিতে ১০০০ ফুট রাস্তার ৮২ ফুট বাদে বাকি অংশের কাজ শেষ হয়েছে দীর্ঘদিন। আমাদের অবস্থা এ রকম একজন মানুষ মারা গেলে তার খাটিয়া বের করা যায় না। একজন লোক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাস্তার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।’
প্রসঙ্গত ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাউশিয়া বহুমুখী উন্নয়ন সমিতি মার্কেটের পিছনে যারা বসতি তৈরি করেছেন তারা মূলত বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা মানুষ। শুরুতে বিক্ষিপ্তভাবে বসতি তৈরি করলেও বর্তমানে এটি একটি গ্রাম যার নাম আব্দুল্লাহপুর। সম্প্রতি ওই দুই পরিবারের সদস্যরা রাস্তাটির এই অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে থাকলে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মন্তব্য