ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিদ্রোহের মুখে কেন্দ্রীয় কমিটির ৩২টি পদ শূন্য ঘোষণা করা হয় ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। এরপরও বিতর্ক ও নানা কারণে ফাঁকা হয় আরও কিছু পদ।
এক বছরের বেশি সময় পর রোববার পূরণ করা হয় ৬৮ শূন্য পদ। তবে অভিযোগ আছে, এসব পদে ফের স্থান পেয়েছেন বিতর্কিতরা। নিষ্ক্রিয়, বেশি বয়স, ছাত্রদলের সাবেক কর্মী, সহিংসতা ও অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে।
বিতর্কিতদের একজন আমানুল্লাহ আমান, তিনি গ্রন্থনা ও প্রকাশনাবিষয়ক উপসম্পাদক হয়েছেন।
অভিযোগ আছে, ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচিতে দেখা না গেলেও ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল চালক হওয়ার সুবাদে তাকে গ্রন্থনা ও প্রকাশনাবিষয়ক উপসম্পাদক করা হয়েছে।
আল নাহিয়ান খান জয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। একই হলে থাকেন আমানুল্লাহ আমান, যিনি প্রতিদিন জয়কে নিজ বাইকে মধুর ক্যান্টিন, টিএসসিসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান।
এর আগে তিনি সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর মোটরসাইকেল চালকও ছিলেন বলে জানা গেছে। রাব্বানীকে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর জয়ের অনুসারী হন।
সংগঠনের একাধিক নেতার অভিযোগ, আমানুল্লাহ আমানকে ছাত্রলীগের কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। এ ছাড়া, এর আগে তিনি কখনো ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন না।
ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনিকে করা হয়েছে ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক। রনির এসএসসির মার্কশিট অনুযায়ী, তার জন্ম তারিখ ১৯৮৭ সালের ২২ জুন। সে হিসাবে তার বয়স হয়েছে ৩৩ বছর ৭ মাস ১১ দিন৷
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫-এর ক উপধারায় বলা হয়েছে, অনূর্ধ্ব ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃত যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র বা ছাত্রী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রাথমিক সদস্য হতে পারেন।
দেবাশীষ সিদ্ধার্থ হয়েছেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকির সই জাল করে ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে দুই ছাত্রকে ভর্তি করাতে গিয়ে ধরা পড়েন এই নেতা। পরে তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ওই সময় তিনি ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের ছাত্র ও স্কুলবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন, তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলাও রয়েছে।
নতুন সহসভাপতি শুভ্রদেব হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আরও গুরুতর। তাকে নিয়ে অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাকে ডাকাতি ও ছিনতাই করা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের হোতা তিনি।
এ নিয়ে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রতিবেদনও করেছে। যেখানে পিবিআইও বলেছে, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক থাকা অবস্থায় শুভ্রদেব ওই চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করতেন।
প্রতিবেদনে পিবিআই কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়, একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তারা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী মেহেদী হাসান ও আশিক পারভেজকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে স্বাধীন ও আলমগীর খাঁ নামের আরও দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে মেহেদী হাসান ছাড়া বাকি তিন জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিন জনই তাদের জবানবন্দিতে র্যাবের পোশাকে টাকা লুটের একটি ঘটনার পরিকল্পনাকারী হিসেবে শুভ্রদেবের কথা উল্লেখ করেন।
আরেক সহসভাপতি জিয়াসমিন শান্তাকে নিয়েও আছে বিতর্ক। এর আগে তিনি শামসুন নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
সম্প্রতি ছাত্রলীগের নেত্রী ফাল্গুনী দাস তন্বীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া হলে সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর, ক্যান্টিন ও হলের সামনের দোকান থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
উপপ্রচার সম্পাদক হয়েছেন ফেরদৌস মাহমুদ পলাশ৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এর প্রমাণ হিসেবে, তার দেওয়া ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট রয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাছে৷
অভিযোগ নিয়ে যা বলেছেন নতুন পদ পাওয়া নেতারা
অভিযোগের বিষয়ে আমানুল্লাহ আমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা খুবই অদ্ভুত, ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা প্রোগ্রামে আমি উপস্থিত ছিলাম এবং প্রতিটি প্রোগ্রামের পেছনের কাজগুলো আমিই করেছি।’
কোনো পদে না থেকেও বিভিন্ন কর্মসূচির পেছনে কাজ করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কর্মী হিসেবে আমি তো এসব কাজ করতেই পারি।’
ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি করছি। সংগঠনের বিরুদ্ধে কখনো বিদ্রোহ করিনি। হয়তো এ কারণে আমাকে পদোন্নতি দিয়ে মূল্যায়ন করেছে।’
বেশি বয়সের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে, দেবাশীষ সিদ্ধার্থ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ রকম একটি মামলা করেছিল। তবে সে মামলায় আমি জয়যুক্ত হয়েছি।
‘তারা এ রকম কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই মহামান্য আদালত আমাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। সেটির প্রমাণ আমার কাছে আছে।’
প্রমাণ দেখতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার কাছে ডকুমেন্টটা নেই। আমি পরে আপনাকে পাঠিয়ে দেব।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাকে ছিনতাইয়ের অভিযোগ বিষয়ে শুভ্রদেব হালদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কে বা কারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটি আমার নামে করেছে।
‘আমি ঢাকা কলেজে ১১ বছর রাজনীতি করেছি। এই সময়ে আমার সঙ্গে অনেক ছোট ভাই রাজনীতি করেছে। তাদের কেউ যদি অপরাধ করে, সে দায় আমার না।’
অপরাধীদের জবানবন্দির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিছে, তাদের আমি চিনিও না। আর তারাও মনে হয় না আমাকে দেখলে চিনবে। এই জবানবন্দি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
উপপ্রচার সম্পাদক পলাশ আগে ছাত্রদল করার অভিযোগ নাকচ করেছেন। তিনি দাবি করেন, তার নামে ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে সেখানকার বিভিন্ন স্ক্রিনশট ছড়ানো হচ্ছে।
আর জিয়াসমিন শান্তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর অব্যাহতি দেওয়া হয় ছাত্রলীগের তখনকার সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে। এরপর সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য।
তিন মাস ভারপ্রাপ্ত থাকার পর ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাদের পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটির ২১ জনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দিয়ে এসব পদ শূন্য ঘোষণা করেন জয়-লেখক। এ ছাড়া ১১ জন স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন।
এরপর দীর্ঘ সময় নিয়ে পূরণ করা শূন্যপদে বিতর্কিতরা ফের কীভাবে স্থান পেলেন, জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেবাশীষ সিদ্ধার্থ মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। আর ইন্দ্রনীল দেব শর্মা আগে থেকেই কমিটির সদস্য ছিলেন। সদস্য থেকে তাকে দপ্তর সম্পাদক হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নতুন করে রাজনীতিতে প্রশ্নবোধক চিহ্ন তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয় আইন-আদালত বা সরকারি সিদ্ধান্ত নয়, এই সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জনগণ। গণহত্যাকারী, গুম-খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আজহার-শফিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিচারের জন্য বিএনপি সোচ্চার। গণহত্যাকারী যারা আদেশ দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী হোক আর অতি উৎসাহী যেই হোক– বিএনপি বারবার বলেছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। আইন-আদালত করবে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত, বিএনপির বক্তব্য পরিষ্কার। সব সময়ই তা বলে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত কথা বলে, কিন্তু তাদের ২৪-এর গণহত্যা নিয়ে কোনও অনুশোচনা নেই। আয়নাঘর, লুটপাট যারা করেছে, প্রতিহিংসা যারা করেছে, দিনের ভোট রাতে যারা করেছে, তাদের কোনো অনুশোচনা আছে? তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিঃশর্তভাবে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, তাদের ক্ষমা করবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত জনগণ নেবে।
ডা. জাহিদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের একটি সম্ভাবনা রয়েছে, আমরা চাই সেটা হোক। জনগণ দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের সেই সুযোগটা আসুক।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ভাবতে হবে এই সমাজটা আমাদের সবার। এই ভাবনাটা যদি না আসে তাহলে কিন্তু ইনক্লুসিভনেস তৈরি হবে না। আর তা তৈরি না হলে সমাজে সাস্টেনেবিলিটি আসবে না। সমাজের প্রবীণ মানুষদের জন্য আলাদা উইন্ডো তৈরি করার জন্য একটা চিন্তা দরকার। তাদের জন্য সামান্য বাজেট রাখা দরকার।
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দফায় ১২ দিনের যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নতুন কর্মসূচি হিসেবে ৫ দফা গণদাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে গণসংযোগ পালন করা হবে। এ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা, গোলটেবিল বৈঠক, সেমিনার ইত্যাদি আয়োজন করা হবে। ১০ অক্টোবর রাজধানীসহ সকল বিভাগীয় শহরে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে এবং ১২ অক্টোবর সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে।
জামায়াতের ৫ দফা দাবি হলো:
১. জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
২. নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে।
৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪. গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হতে হবে।
৫. বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোমাইন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মূসা প্রমুখ।
হেফাজতে ইসলামের অসুস্থ এক নেতার খোঁজখবর নিয়েছে বিএনপির নেতারা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এবং জামিয়া কাসিমিয়া আশরাফুল উলুম ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল খতিবে বাংলার আল্লামা জুনায়েদ আল হাবীবের শারীরিক খোঁজখবর নিতে রোববার হাসপাতালে যান বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।
বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেইজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ ইকবালের নির্দেশক্রমে ফরিদপুর মহানগর জিয়া মঞ্চের নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুরের জিয়ার সৈনিক, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার মোহাম্মদ কাইয়ুম মিয়াকে আহ্বায়ক ও এনামুল করিমকে সদস্য সচিব করে ২২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোববার জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দপ্তর সম্পাদকের চলতি দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মো. জামাল হোসেনের স্বাক্ষরীত এক পত্রে ফরিদপুর মহানগর জিয়া মঞ্চের ২২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবর রহমান দিলীপ, যুগ্ম আহ্বায়ক নাইম আক্তার মুকুল, মাহবুবুর রহমান আজাদ, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, ফরিদ হোসেন, কিবরিয়া জামান, সম্রাট আলম, আসাদুজ্জামান, ডা. মোফাজ্জুল হোসেন চৌধুরী, সদস্য মোহাম্মদ নাসির মিয়া, উজ্জল মিয়া, শেখ আব্দুল আলীম মুক্তি, মাসুদ খান, নয়ন শেখ, তুষার আহমেদ, আব্দুর রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান আরিফ, ইউসুফ শেখ ও শহীদ আলম চৌধুরী ফরহাদ।
এদিকে জিয়া মঞ্চ ফরিদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন মহানগর জিয়া মঞ্চের নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, তারুণ্যদীপ্ত নতুন এই কমিটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আর্দশকে বুকে ধারণ করে আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করে তোলবে। এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচনব্যবস্থা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের অবৈধ ও অসাংবিধানিক আবদার মেনে জাতিকে সংকটে ফেলা যাবে না। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো দাবি মেনে নিলে তা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ব্রিটিশ ল স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
পিআর পদ্ধতি কার্যকর হলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত হবে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, পিআর মানে হচ্ছে, ‘পারমানেন্ট রেস্টলেসনেস’ (স্থায়ী অস্থিরতা)।
উদাহরণ টেনে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পিআর চালুর পর দেখা গেছে, সরকার গঠন করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। কোথাও এক বছর বা দেড় বছর পর সরকার গঠিত হয়েছে। আবার সরকার গঠনের পর তা টেকসই হয়নি। কয়েক মাস বা এক বছরের মধ্যেই সরকার ভেঙে গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতি চালুর মূল উদ্দেশ্য স্রেফ সংসদীয় আসনের সংখ্যা বাড়ানো নয়, বরং ঘন ঘন রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করা। এতে লাভবান হবে সেই শক্তি, যারা চায়, দেশ সব সময় অনিশ্চয়তায় থাকুক।
পিআর নিয়ে যেসব জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ মানুষ পিআর বোঝে না। আবার অন্য জরিপে দাবি করা হয়েছে, ৭০ শতাংশ মানুষ পিআর চায়। এটা জাতিকে বিভ্রান্ত করার শামিল।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জনগণ যদি আগে থেকে জানতে না পারে, তাদের ভোটে কোন প্রার্থী নির্বাচিত হবেন, তাহলে জনগণের সরাসরি গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ কোথায় রইল? এতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহি দুর্বল হয়ে পড়বে।
সংবিধান ও আইনের শাসনের বাইরে গিয়ে কোনো সংস্কার দেশের জন্য শুভ হবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় থাকতে চাই। কোনো রাজনৈতিক দলের অবৈধ, অসাংবিধানিক আবদার মেনে জাতিকে সংকটে ফেলা যাবে না।’
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও রাগিব রউফ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ওয়াসি পারভেজ তাহসিন।
নিউইয়র্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেউ লাঞ্ছিত করেননি বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, নিউইয়র্কে মির্জা ফখরুলকে কেউ লাঞ্ছিত করেননি। তাকে নিয়ে নানা অপপ্রচার শুরু হয়েছে। সবকিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নবনির্বাচিত পিরোজপুর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তী সরকার দক্ষতা দেখাতে পারলে ফ্যাসিবাদের দোসররা এমন কর্মকাণ্ড ঘটানোর সাহস পেত না। সরকার কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় দোসরদের প্রেতাত্মারা দেশে নামতে পারছে, বিদেশের মাটিতে কার্যক্রম চালাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের সঙ্গে বিএনপির কোনো আতাঁত নেই।
ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের প্রতীক শেখ হাসিনা। বহু ধরনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাস্টারপ্ল্যান চলছে। জুলাই শহীদদের রক্ত যেন বৃথা না যায়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখনো অর্থ লুটপাটকারীদের টাকা দেশে ফেরত আনতে পারেনি, বিচারও করতে পারেনি।
বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য কোনো আসনে বা কোনো প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সম্প্রতি ‘প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দিচ্ছে বিএনপি’ সংবাদ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। রিজভী জানিয়েছেন, সবুজ সংকেত সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোকে মনগড়া।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান রুহুল কবির রিজভী।
নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তিনি বলেন, ‘বিএনপির মনোনয়নের নামে নাম প্রকাশ করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্ত তৈরির চেষ্টা করছে একটি মহল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। উপযুক্ত সময়েই দলের নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই যাচাই-বাছাই করে যোগ্য ও সর্বোপরি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় প্রার্থীকেই বেছে নিয়ে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে।’
প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে রিজভী বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্ব পার্লামেন্টারি বোর্ড পালন করে এবং এ ব্যাপারে বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়।
তাই তফসিল ঘোষণার পরেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা বিএনপির কেন্দ্র থেকে ঘোষণা ব্যতিত পত্রিকায় প্রকাশিত কোন মনগড়া সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সারা দেশের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
মন্তব্য