সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে ‘গরিব’ বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দাবি করেছেন, তার নেত্রী এখন বাসা ভাড়াও পরিশোধ করতে পারেন না। তাই বাড়িওয়ালা নোটিশ দেয়।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান তার পরিবারের জন্য কিছুই রেখে যাননি দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, নিজের বাড়ি নেই বলে তাদের নেত্রীকে এখন অন্যের বাড়িতে থাকতে হয়।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের এক মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছিলেন গয়েশ্বর। পুরান ঢাকার বংশালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে করা স্কুলের নাম পাল্টানোর প্রতিবাদে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
গয়েশ্বর বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রূপকার হলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু তার আজকে কিছুই নাই। তিনি কিছু রেখে যান নাই। বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার চেয়ে আর গরিব কেউ নেই। নিজের একটা বাড়ি নেই। ভাড়া বাড়িতে থাকেন। প্রায়ই নোটিশ দেয় ভাড়া পরিশোধ করার।’
বিএনপি দাবি করে আসছে, দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হওয়ার পর থেকে তার বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়েছে।
বিএনপি নেত্রী গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়িতে থাকছেন, যার নাম ফিরোজা। ২০১০ সালে মাসিক ১০ লাখ টাকায় বাড়িটি ভাড়ায় ব্যবহার করছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব। ২০১১ সালে তিন বছরের জন্য বাড়িটি ভাড়া নেন বিএনপি নেতা মোছাদ্দেক আলী ফালু। যার ভাড়া ঠিক হয় তির লাখ টাকা। ভাড়া বাড়ি হিসেবে প্রথম দফায় তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৩ সালে। এরপর কয়েক দফায় নবায়ন করা হয় বাড়িটির চুক্তি।
খালেদা জিয়ার নিজের নামেও একটি বাড়ি আছে। সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮২ সালে ১৯৬ গুলশান এভিনিউয়ে দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত বাড়ি বরাদ্দ দেন বিএনপি নেত্রীকে। সেটি তিনি ভাড়া দিয়ে রেখেছেন।
বিএনপি নেত্রীর আরও একটি বাড়ি ছিল, যেটির দখল তিনি হারিয়েছেন। ১৯৮১ সালের ১৩ জুন এরশাদ সেনাপ্রধান থাকাকালে ঢাকা সেনানিবাসে প্রায় ৯ বিঘা (২ দশমিক ৭২ একর) জমির ওপর নির্মিত বাড়ি খালেদা জিয়ার নামে বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে আইনি লড়াইয়ে হেরে ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর সে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হন বিএনপি নেত্রী। তখন তিনি গিয়ে ফিরোজায় উঠেন।
গয়েশ্বর জানান, বিশেষ বিবেচনায় মুক্ত তার নেত্রী মাসে ৫০ হাজার টাকার বেশি ব্যাংক থেকে তুলতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে একটি দলের নেত্রী খলেদা জিয়ার মত মানুষ কি ৫০ হাজার টাকায় চলতে পারে? তার চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে পারে?’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন খালেদা জিয়ার যা সম্পত্তি আছে তা বৈধ বলে সার্টিফিকেট দিয়েছে। তাইলে তার একাউন্ট কেন সিজ করা হয়? কেনো তিনি একাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকার বেশি উঠাতে পারেন না?’
দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মির্জা আব্বাস, ইকবাল হোসেন টিপু, নজরুল ইসলাম খান, কামাল ইউসুফসহ অনেকেই করোনা আক্রান্ত জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, তিনি নিজেও ভীত।
তার পরেও রাজপথে আসার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘এই শেখ হাসিনার জন্য ঘরে থাকা যায় না। রাজপথে নেমে আসতে হয়। করোনার চেয়ে মারাত্মক ভয়ংকর আজকের সরকার।’
তিনি বলেন, ‘করোনা দল মত জাতি ধর্ম বোঝে না। কিন্তু হাসিনা নামক করোনা এদেশে দল মত জাতি ধর্ম বোঝে। তার যাকে ইচ্ছা তাকে খুশি আক্রমণ করে। এই ভয়াবহ করোনার হাত থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হবে।’
জিয়ার নামে স্কুলের নাম পাল্টানোর সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তার নাম মোছা ইতিহাসকে বিকৃত করার অপচেষ্টা। এই কাজ করে জনগণের হৃদয়ে যে আঘাত করছেন, এই আঘাতের পাল্টা আঘাত পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখনও একটা বিশাল মাঠ আছে সিলেটের মৌলভীবাজারে; গান্ধী মাঠ, নোয়াখালীতে আশ্রম আছে তার নামে। জিন্নাহর নামে রাস্তা আছে। পাকিস্তানীরা যে এত বর্বর তারাও কিন্তু গান্ধীর নাম মুছে নাই।’
মানববন্ধনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো মানুষকে সম্মান করে না। তারা মওলানা হামিদ খান ভাসানীকে সম্মান দেয়নি, কামাল হোসেনকে দেয়নি। তারা দিয়েছে একজনকেই। তিনি হলেন তাদের ঘরজামাই এরশাদ। এরশাদের চিন্তা-চেতনাতে তাদের সঙ্গে খুব মিল ছিল। আর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাদের কথা শুনেই চলেছেন।’
সোহেল বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের নামে কালি দিলে আপনাদের কাউকে ছাড়া হবে না। খুঁজে বের করে আমরা কালি দিয়ে দেব আপনাদের মুখে।’
আরও পড়ুন:ভোটে জিতে কাউন্সিলর হওয়ার একদিন পর ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাতে বের হয়ে হেরে যাওয়া প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীর এক কাউন্সিলরের সমর্থকরা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড় দেওড়া পুরোনো মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে টঙ্গীর পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) শাহ আলম।
ভোটে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের আহত সমর্থকরা হলেন ৩৩ বছর বয়সী আলমাস, ১৯ বছরের শাহজালাল মোল্লা, ২৬ বছর বয়সী আজাহার, ৩২ বছর বয়সী হেলাল উদ্দিন, ২৫ বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম সাগর, ২৪ বছরের নিয়ামত, ২১ বছরের তানভীর ও ৩১ বছর বয়সী মর্জিনা আক্তার।
বিজয়ী কাউন্সিলর সোলেমান হায়দারের আহত সমর্থকরা হলেন ৩২ বছর বয়সী রাজিব হায়দার সাদিম, ৩৫ বছর বয়সী আজিম হায়দার আদিম, ৩০ বছর বয়সী ঝলক হায়দার, ২৮ বছরের বিজয় হায়দার ও আরিফ মণ্ডল।
আহতদের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঠেলাগাড়ি প্রতীকে সেলিম হোসেন ও লাটিম প্রতীকে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে সেলিম হোসেনকে পরাজিত করে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
নির্বাচনে জয়ের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় ভোটার ও সমর্থকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে বের হন কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার। এ সময় বড় দেওড়া আদর্শপাড়া এলাকায় পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের সমর্থক আলমাসের সঙ্গে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ঝগড়া হয়। পরে তা সংঘাতে রূপ নেয়।
এক পর্যায়ে সেলিম হোসেনের ভাই মামুন ও তাদের সমর্থক হারুন, অনিক ও মানিকসহ বেশ কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে ওই এলাকার পুরোনো মসজিদের সামনে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এ সময় সাদিম, আদিম, ঝলক, বিজয় ও আরিফ আহত হন।
এ নিয়ে জানতে চাইলে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমার লোকেদের মারধর করে আহত করা হয়েছে। আমি এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করব।’
এ বিষয়ে কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার বলেন, ‘ভোটে হেরে সেলিমের লোকজন এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেছি। আহতরা সুস্থ হয়ে ফিরলেই সালিশের মাধ্যমে এর সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা করা নতুন ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জন্য এই লজ্জা বহন করে এনেছে। এই সরকার বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধক।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শনিবার এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে এই সমাবেশ হয়। রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। এর মাধ্যমে ১৯ মে শুরু হওয়া সারাদেশে মহানগর ও জেলায় চারদিনের যে সমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়েছিল তা শনিবার ১৫ জেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো।
নয়াপল্টনের সমাবেশে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে যে বাংলাদেশে আগামীতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যে নির্বাচন, তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যারা বাধা দেবে তাদেরকে তারা ভিসা দেবে না। তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
‘এই বাংলাদেশে গণতন্ত্র অথবা জনগণের ভোট এবং সুষ্ঠু নির্বাচনকে যারা বাধা দিয়েছে ও দিচ্ছে তারা হচ্ছে বর্তমান সরকার। আজ আমেরিকা বলেছে যে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবে তাদেরকে তারা ভিসা দেবে না। অর্থাৎ তারাও এদেরকে (সরকার) প্রত্যাখ্যান করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। আমরা ঘোষণা করেছি যে শেখ হাসিনার অধীনে অতীতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলনে আছে তারাও শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
আন্তর্জাতিকভাবেই দাবি উঠেছে যে নির্বাচন হতে হবে অংশগ্রহণমূলক। আমরা যদি নির্বাচনে না যাই তাহলে তা অংশগ্রহণমূলক হবে না। অতএব, এই সরকার যত কথাই বলুক না কেন, এদেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়।’
বিএনপির এই বর্ষীয়াণ নেতা বলেন, ‘এ ধরনের স্বৈরাচার সরকার নিজে থেকে আপসে সরে দাঁড়াবে না। এই সরকারকে হটাতে হবে। সেজন্য গণঅভ্যুত্থানের বিকল্প নেই। দেশের মানুষ প্রস্তুত।
এদেশের মানুষ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বৈরাচার সরকারকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে হটিয়েছে। তার স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েছে। পাকিস্তান আমলে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের মতো স্বৈরাচারকে হটাতে পেরেছে। অচিরেই গণআন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে বিদায় করতে হবে।’
বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন সাবেক এই স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার গায়ের জোরের সরকার। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাদের অন্যায় আবদার, অন্যায় নির্দেশ আপনাদের মানার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। অতিউৎসাহী হয়ে যারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছেন, তারা এই অবৈধ সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে জনগণের পক্ষে আসুন। আপনাদেরকে কেউ কিছু বলবে না।’
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, নাসির উদ্দিন অসীম, রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদল নেতা সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত নতুন ভিসা নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ নয়, বরং বিএনপি বেকায়দায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক একইসঙ্গে দাবি করেছেন, এই ভিসা নীতিতে আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি নেই।
শনিবার রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিতে আমাদের একটা লাভ হয়েছে। এতোদিন তারা (বিএনপি) নালিশ করেছে আমেরিকার দরবারে- নিষেধাজ্ঞা আসবে; নিষেধাজ্ঞা কই? নিষেধাজ্ঞা এখন তাদের বিরুদ্ধে নতুন ভিসা নীতিতে। নির্বাচনে গোলমাল করলে, ভাঙচুর ও মানুষ পোড়ালে, বাস পোড়ালে…। যারা জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি করবে, আগুন-সন্ত্রাস করবে, তারাই আজ ভয় পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমেরিকার নতুন ভিসা নীতিতে বিএনপির গলা বসে গেছে, মুখ শুকিয়ে গেছে। আমেরিকা যে ভিসা নীতি প্রকাশ করেছে তাতে নির্বাচনে বাধা দিলে খবর আছে। সেজন্য বিএনপি নতুন কৌশল নিয়েছে। নাটক-নাটক খেলা শুরু হয়ে গেছে।
‘ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে বিএনপির নাটক ধরা খেয়েছে। কেরানীগঞ্জে নাটক, খাগড়াছড়িতেও নাটক। আওয়ামী লীগকে আক্রমণকারী হিসেবে সাজাতে তারা নাটক বানাচ্ছে। বস্তুত, বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায় না, ভয় পায় এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগকে।’
ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘সরকার অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কাজেই দেশি-বিদেশি কাউকে আমরা ভয় পাই না। আমরা আমাদের নীতিতে অটল থেকে নির্বাচন চাইছি। খেলা হবে, ফাইনাল খেলা; আমরা প্রস্তুত। আগামী নির্বাচনে নৌকা বনাম ধানের শীষ খেলা হবে। বাংলার মানুষ ধানের শীষ চায় না। তৈরি হয়ে যান, প্রস্তুত হয়ে যান।’
কাদের আরও বলেন, ‘সবশেষ গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন করে দেখিয়ে দিয়েছি যে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করব। কাজেই বাইরে কে নিষেধাজ্ঞা দিল, ভিসা বন্ধ করে দিল তা নিয়ে শেখ হাসিনার মাথাব্যথা নেই। আসন্ন চার সিটি করপোরেশনসহ আগামী জাতীয় নির্বাচনও আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করব।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতারা।
আরও পড়ুন:চলমান সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী অংশ নেবে না বলে আনু্ষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে দাঁড়ানো একাধিক নেতা-নেত্রী।
তুমুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি আমার প্রাণের সংগঠন। যে সংগঠনকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছি, সেই সংগঠনের ক্ষতি হোক আমি এটা চাই না। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’
বরিশালেও দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিএনপির পাঁচজন মেয়র প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় না। তবে সিটি নির্বাচনের শুরু থেকেই নেতা-কর্মীদের নির্বাচনে কোনোভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার কথা বলছে বিএনপি। এমনকি নির্বাচনে অংশ নিলে দল থেকে আজীবন বহিষ্কারেরও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
সেসব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই বরিশাল সিটিতে সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিতে নাছোড়বান্দা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন দলটির ১৬ নেতা-নেত্রী। তাদের মধ্যে ৭ জন বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। অপর ৯ জন ওয়ার্ড বিএনপির পদধারীসহ সাবেক নেতা।
এদের মধ্যে মেয়র পদে বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা আহসান হাবীব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রুপনও রয়েছেন। তিনি নিজেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সদস্য হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। নির্বাচনী লিফলেটেও তিনি নিজেকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তবে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মীর জাহিদুল কবিরের দাবি, রুপন বিএনপির কেউ নন।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কেউ অমান্য করবে না। এ সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে পালন করা হবে। গাজীপুরে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, এখানেও সেই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সবার জন্য একই ব্যবস্থা- আজীবন বহিষ্কার।’
বিসিসি নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপি নেতারা হলেন- নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান টিপু, ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হারুন অর রশিদ, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. আমিনুল ইসলাম, মহানগর কমিটির সদস্য ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম হাওলাদার, সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জাহানারা বেগম, ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সেলিনা বেগম ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে রাশিদা পারভীন।
এছাড়াও রয়েছেন- নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ড শাখার সদস্য সচিব জিয়াউল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম এবং ছাত্রদলের সাবেক জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জোবায়ের আব্দুল্লাহ সাদি।
পদ না থাকলেও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ওই ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ফারুক, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মো. ইউনুস, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ফরিদউদ্দিন হাওলাদার, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে হুমায়ন কবির ও সংরক্ষিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মহিলা দল নেত্রী মজিদা বোরহান।
আরও পড়ুন:চাঁদা না পেয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে অপহরণের অভিযোগে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার শেষে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তারা হলেন-জনি হাসান ও এস এম শফিক।
ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাস (নর্থ হল) থেকে শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগের ওই দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে রাজধানীর নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। শনিবার তাদেরকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন জানালে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল গনি সাবু বলেন, ‘একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে অপহরণের মামলায় ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে পাঠালে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।’
এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অয়ন সিগমাইন্ড নামের সিসি ক্যামেরা স্থাপনের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করেন ভুক্তভোগী মো. মেহেদী হাসান। অভিযুক্তরা ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করেন। বেশ কিছুদিন থেকে ভুক্তভোগী মেহেদীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন তারা৷ কিন্তু তা না দেয়ায় গত ২৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকা থেকে তারা প্রতিষ্ঠানটির লাগানো সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যান।
রাতে সিয়াম ও রমজান মেহেদীকে ফোন করে বিষয়টি জানান এবং খুলে নিয়ে আসা ক্যামেরা ফেরত পেতে হলে তাদেরকে ঢাকা কলেজে যেতে বলেন। পরে তৌকির নামে এক কর্মচারীকে ঢাকা কলেজে পাঠান মেহেদী। এ সময় তৌকিরকে জিম্মি করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অভিযুক্তরা। এমনকি টাকা না পেলে তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়৷
পরে ভুক্তভেগী মেহেদী ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসে এলে তাকেও জিম্মি করা হয়। মেহেদী ও তৌকিরকে হলে আটকে রেখে নির্যাতন করেন তারা। এ সময় তাদের কাছে থাকা টাকা ও এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেন আসামিরা৷
রাতে মারধর করে তৌকিরকে ছেড়ে দিলেও মেহেদীকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে মেহেদী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে নিউ মার্কেটের গাউছিয়া মোড়ে ফেলে রেখে যান তারা। খবর পেয়ে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মেহেদী জনি হাসান ও এস এম শফিকসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই দুইজন ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্ণব, রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, রায়হান, মাসুম, ফাহিম ও শাহীন৷
আরও পড়ুন:ছাত্রদলের দুই নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রী শিরিন সুলতানাকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নরসিংদী সদর মডেল থানার এসআই অভিজিৎ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন নরসিংদী শহরতলির চিনিশপুরে বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। এ সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির গুলিতে প্রাণ হারান ছাত্রদল নেতা ৩২ বছর বয়সী সাদেকুর রহমান ও ২০ বছরের আশরাফুল ইসলাম।
নিহত সাদেকুর রহমানের ভাই আলতাফ হোসেন ওই ঘটনায় শুক্রবার রাতে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বৃহস্পতিবার বিকেলে চিনিশপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয় এলাকায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় সংঘবদ্ধ হামলা চালায়। এ সময় ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল ইসলামকে গুলি করা হয়।
ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাদেকুর রহমান মারা যান। আর শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আশরাফুল ইসলাম।
নিহত সাদেকুর রহমান সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে। আর আশরাফুল পৌর শহরের সাটিরপাড়া এলাকার নাজমুল হকের ছেলে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি, মাইনুদ্দিন ভুইয়াকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের (আংশিক) জেলা কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন সংগঠনের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। এর জের ধরে খায়রুল কবীর খোকনের চিনিশপুরের বাসভবনে একাধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটে। সবশেষ ২৫ মে বৃহস্পতিবার জেলা বিএনপি কার্যালয় এলাকায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতারা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়ার সময় সংঘর্ষ ও গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন:আগামী জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপির নেতারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন- এমন অভিযোগ তুলে তাদের বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজসহ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ এ. আরাফাত।
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির এই সদস্য বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার প্রেক্ষাপটে এই চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নীতি বিএনপির এই নেতাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে আরাফাত লিখেছেন, “আমি যে চিঠি পাঠিয়েছি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের কাছে..., আপনাদের সম্প্রতি ঘোষিত ভিসা নীতি অনুসারে (এবং আপনি যে চিঠিটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন) যেখানে আপনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, ‘এই নীতি বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবৃত প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে এবং যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশি নাগরিক বা যে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তারা যখন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে তখন তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে।
“এখানে আমি কিছু ভিডিও ফুটেজ সংযুক্ত করেছি যেখানে আপনি দেখতে পাবেন যে বিএনপির কিছু শীর্ষ নেতা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন। আমি আশা করি, আপনার ভিসা নীতি বিএনপির এই নেতাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।”
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন ওই ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িতদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক বিবৃতিতে এই নীতি ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন ঘোষিত ভিসা নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য