স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার থেকে উত্তরার বাসায় তিনি কোয়ারেন্টিন শুরু করেন। আগামী ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, উত্তরার বাসায় থাকা শ্যালক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ফখরুল।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহাসচিব স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে আছেন। তার নিকটাত্মীয় করোনায় আক্রান্ত। তাই তিনি ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা ছিল ফখরুলের। কিন্তু তিনি সশরীরে না গিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম গুলশানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ভিডিও কনফারেন্সে ফখরুল বলেন, ‘আমি দুঃখিত যে আপনাদের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারিনি। কারণ এখন আমার বাসায় করোনা ধরা পড়েছে। তাই আমাকে ১৪ দিনের আইসোলেশনে থাকতে হচ্ছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি মহাসচিবের শ্যালক কাজী একরামুল রশীদ ফখরুলের উত্তরার বাসাতেই থাকতেন। তার করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। অসুস্থ হওয়ার পর রশীদকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাই স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ফখরুলও কোয়ারেন্টিনে চলে যান।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কোভিড-১৯ এখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের সিনিয়র লিডার মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসসহ অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক নেতাকে আমরা এই করোনায় হারিয়েছি।
‘আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, এ রকম অনেক নেতাকে ইতিমধ্যে আমরা করোনার কারণে হারিয়েছি।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি অনুরোধ করব সবাইকে, এখন একটা কঠিন সময়; একটা দুঃসময়। এই দুঃসময়ে আমাদের কিন্তু জেগে উঠতে হবে এবং জেগে উঠতে হবে মনের দিক থেকে।’
আরও পড়ুন:গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেরে গেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান। সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত এই মেয়র প্রার্থীর পরাজয় অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়ে যা বেরিয়ে এসেছে মোদ্দা কথায় তা হলো- আওয়ামী লীগের একাংশের অসহযোগিতা আর প্রতারণার বলি হয়েছেন নৌকার এই প্রার্থী।
দলীয় কোন্দল, দল থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মেয়র (বরখাস্ত) জাহাঙ্গীর আলমের বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক, গাজীপুর মহানগরে আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকা, কেন্দ্রীয় প্রচার প্রতিনিধি দলের কার্যকর ভূমিকা না থাকা, নৌকার এজেন্ট সেজে প্রতারণা- এসব কারণে আজমত হেরে গেছেন বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।
আজমত উল্লা খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, মূলত নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই হেরেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পাশাপাশি জাহাঙ্গীরের অবৈধ টাকা এবং এর সুবিধাভোগীদের দলীয় প্রার্থীকে অসহযোগিতার কারণে ভোটে ইতিবাচক ফল আসেনি।
তিনি বলেন, গাছা ও টঙ্গী এলাকাকে গাজীপুরে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অথচ গাছাতেই হেরে গেছেন আজমত। পাশাপাশি গাজীপুর মহিলা লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকীর এলাকা কালীগঞ্জেও হেরেছেন দলীয় প্রার্থী।
উদাহরণ তুলে ধরে তিনি জানান, গাছায় মোট প্রদত্ত ভোটের মধ্যে নৌকা পেয়েছে ২২ হাজার ৭৮৩। সেখানে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৪৫৫। একইভাবে সদরে নৌকা ২১ হাজার ৫৪৭ ভোট পেয়েছে। এর বিপরীতে টেবিল ঘড়িতে গেছে ৪১ হাজার ৯৭৭ ভোট। এই দুই এলাকার সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ দলীয় এবং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। কালীগঞ্জে নৌকা পেয়েছে ১৫ হাজার ৫০৪ ভোট। আর টেবিল ঘড়ি পেয়েছে ২০ হাজার ১৪৩ ভোট।
গাজীপুরের সন্তান প্রভাবশালী ওই নেতা বলেন, ‘এই জেলায় আওয়ামী লীগে চারটি ভাগ। একটি স্বয়ং আজমত উল্লা খান। আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের। অপরটি ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের এবং একটি সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের।
‘এ নির্বাচনে আজমত উল্লা ও মোজাম্মেল হকের অংশ কাজ করলেও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর অংশ যে সঠিকভাবে কাজ করেনি তা ভোটের অংকেই প্রমাণিত। আর জাহাঙ্গীরের কথা বলাই বাহুল্য।’
প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পান ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। সে হিসাবে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে জায়েদা খাতুন মেয়র নির্বাচিত হন।
জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তবে তিনি এখন দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও আজমত উল্লা খানের নির্বাচনী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ওসমান আলী বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের তেমন এজেন্ট ছিল না। জাহাঙ্গীর আলমের কর্মী-সমর্থকরা নৌকার ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে টেবিল ঘড়ির পক্ষে কাজ করেছেন।
‘দৃশ্যত তারা ছিলেন নৌকার কর্মী। কিন্ত কাজ করেছেন জায়েদা খাতুনের পক্ষে। আর এটা হয়েছে এ কারণে যে তারা জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে সুবিধাভোগী। সেটা মেয়র থাকাকালীন এবং ব্যবসাগত কারণে। অনেকে নৌকার ব্যাজ পরে কেন্দ্রে গোপনে জাহাঙ্গীরের এজেন্টের কাজ করেছেন। আসলে সমস্যা শুধু নেতাকর্মীরাই নয়, সমস্যা জাহাঙ্গীরের অনেক টাকাও। টাকায় ভোট কিনে নিয়েছেন তিনি।’
ওসমান আলীর এ বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা টিমের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘বড় কারণ দলের বিরাট অংশ আমাদের প্রার্থীকে ভোট দেয়নি। আর একটি কারণ হলো বিএনপির পুরো ভোটই বিজয়ী প্রার্থী পেয়েছেন।’
সাবেক কাউন্সিলর ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা নিউজবাংলাকে জানান, বাহ্যিকভাবে অনেক কেন্দ্রে টেবিল ঘড়ির এজেন্ট ছিলো না। তবে বাস্তবে ওইসব কেন্দ্রে নৌকারই এজেন্ট ছিলো না। কেননা নৌকার এজেন্ট সেজে অনেকেই টেবিল ঘড়ির পক্ষে কাজ করেছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীল এক নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা সর্বজনবিদিত যে জাহাঙ্গীর যতটা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন তার চেয়েও বেশি সম্পর্ক রাখতে জামায়াত ও হেফাজতের সঙ্গে। এবার সেসব ভোট তার মা পেয়েছেন। সেসঙ্গে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় তাদের ভোটও সব পেয়েছেন তিনি।
‘গাজীপুরে কাজ করতে গিয়ে মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমন্বয়ের অভাব শেষ পর্যন্ত দূর করা সম্ভব হয়নি।’
আরও পড়ুন:সরকার অমানবিকভাবে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের খেলায় মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, নিশি রাতের এই সরকার বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে কারান্তরীণের মাধ্যমে গোটা দেশকেই কারাগারে রূপান্তরিত করেছে।
রোববার বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে রোববার তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ বর্তমান আওয়ামী অবৈধ সরকার এখন দিশেহারা। আর তাই বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং হত্যা ও গুম অব্যাহত রেখেছে।’
মির্জা ফখরুল রোববার রাজধানীর একটি হোটেল থেকে নোয়াখালী জেলা বিএনপির ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এ ধরনের অপকর্ম সরকারের চলমান প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। আব্দুর রহমান চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার সেই চলমান প্রক্রিয়ারই অংশ। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
‘বিএনপি বিদেশিদের কাছে আওয়ামী লীগকে আক্রমণকারী হিসেবে দেখাতে চায়। আর সেজন্য দলটি আক্রমণের নাটক সাজাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমন অভিযোগ করেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোববার এক যৌথ সভায় বক্তব্য দেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো অবস্থাতেই আক্রমণকারী হবে না। তবে আক্রমণের শিকার হলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিতে বলা হচ্ছে, আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার পথে অন্তরায় কেউ যেন বাধা দিতে না পারে। এটা প্রমিন্যান্ট দিক। এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।
‘আইন করে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছি। সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়। তবে তাতে বাধা দেবে বিএনপি। ইতোমধ্যে তারা ঘোষণা দিয়ে বাধা দিচ্ছে। কেরানীগঞ্জ ও খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
‘আমরাও দেখব কী হয়, আর কী না হয়। ভিসা নীতিতে তো তত্ত্বাবধায়ক নেই, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ নেই, সংসদের বিলুপ্তি নেই। ওদের বিচার করুক।’
দলীয় কর্মসূচিতে সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এই অন্যতম নীতিনির্ধারক।
তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত সারাদেশে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। প্রয়োজনে ওয়ার্ড পর্যন্ত কর্মসূচি দিতে হবে।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, ‘আক্রমণ করব না। কিন্তু আক্রমণ করলে ছেড়ে দেব না। অনেক সহ্য করেছি, অনেক বাড়াবাড়ি করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘নোংরা রাজনীতি তারাই করে যাদের রাজনীতি নোংরা। এই নষ্ট রাজনীতি, অপশক্তির হাতে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। এই অপশক্তির হাতে এত রক্তের বিনিময় অর্জিত বাংলাদেশকে তুলে দিতে পারি না।
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশে দেশে যাচ্ছেন দেশের প্রয়োজনে, নিজের জন্য নয়। জাপান, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বাজেট সহযোগিতা দিচ্ছে। কাতারের আমির জ্বালানি সরবরাহে সহযোগিতা দিতে চেয়েছেন।
‘প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে বাংলাদেশের ঘরে যা আসছে, আজকে বাজেট সহযোগিতার যে আশ্বাস মিলছে সেটা বিএনপি নামক দলটির অন্তর্জ্বালার কারণ। কারণ দলটি বাংলাদেশের ভালো চায় না।’
যৌথ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর এবং মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।
আরও পড়ুন:সভা-সমাবেশে যারা বাধা দেবে, তাদের ছবি তুলে নাম লিখে রাখতে বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে ময়মনসিংহ উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, ‘আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য বা আওয়ামী লীগের কেউ যদি গণতান্ত্রিক চর্চায় সভা-সমাবেশে বাধা দেয় বা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তাহলে তাদের ছবি তুলে নাম লিখে রাখুন। তাদের বিরুদ্ধে দেশেও ব্যবস্থা হবে, বিদেশেও হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এদের (বাধা দানকারীর) ভিসা বাতিল করা হবে। শুধু আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞা নয়, আমরাও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেব।’
জনসভায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন ও শরীফুল আলম।
আরও পড়ুন:খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি দেশের জন্য লজ্জার হলেও বিএনপি তাতে খুশি। বিএনপি দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করে না। তারা শুধু জ্বালাও-পোড়াও পছন্দ করে।
রোববার দুপুরে নওগাঁর পোরশা উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘কৃষকের জন্য সরকার ভর্তুকি মূল্যে সার দিচ্ছে। বিনামূল্যে বীজ ও কৃষি উপকরণ দিচ্ছে। অথচ বিএনপির আমলে সার চেয়ে কৃষক গুলি খেয়েছিল।’
অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এর আগে তিনি কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানে পোরশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা আক্তার সভাপতিত্ব করেন।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপেজলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী, ওসি জহিরুল ইসলাম ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সরকার।
আরও পড়ুন:ভোটে জিতে কাউন্সিলর হওয়ার একদিন পর ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাতে বের হয়ে হেরে যাওয়া প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীর এক কাউন্সিলরের সমর্থকরা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড় দেওড়া পুরোনো মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে টঙ্গীর পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) শাহ আলম।
ভোটে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের আহত সমর্থকরা হলেন ৩৩ বছর বয়সী আলমাস, ১৯ বছরের শাহজালাল মোল্লা, ২৬ বছর বয়সী আজাহার, ৩২ বছর বয়সী হেলাল উদ্দিন, ২৫ বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম সাগর, ২৪ বছরের নিয়ামত, ২১ বছরের তানভীর ও ৩১ বছর বয়সী মর্জিনা আক্তার।
বিজয়ী কাউন্সিলর সোলেমান হায়দারের আহত সমর্থকরা হলেন ৩২ বছর বয়সী রাজিব হায়দার সাদিম, ৩৫ বছর বয়সী আজিম হায়দার আদিম, ৩০ বছর বয়সী ঝলক হায়দার, ২৮ বছরের বিজয় হায়দার ও আরিফ মণ্ডল।
আহতদের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঠেলাগাড়ি প্রতীকে সেলিম হোসেন ও লাটিম প্রতীকে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে সেলিম হোসেনকে পরাজিত করে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
নির্বাচনে জয়ের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় ভোটার ও সমর্থকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে বের হন কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার। এ সময় বড় দেওড়া আদর্শপাড়া এলাকায় পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের সমর্থক আলমাসের সঙ্গে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ঝগড়া হয়। পরে তা সংঘাতে রূপ নেয়।
এক পর্যায়ে সেলিম হোসেনের ভাই মামুন ও তাদের সমর্থক হারুন, অনিক ও মানিকসহ বেশ কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে ওই এলাকার পুরোনো মসজিদের সামনে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এ সময় সাদিম, আদিম, ঝলক, বিজয় ও আরিফ আহত হন।
এ নিয়ে জানতে চাইলে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমার লোকেদের মারধর করে আহত করা হয়েছে। আমি এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করব।’
এ বিষয়ে কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার বলেন, ‘ভোটে হেরে সেলিমের লোকজন এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেছি। আহতরা সুস্থ হয়ে ফিরলেই সালিশের মাধ্যমে এর সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা করা নতুন ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জন্য এই লজ্জা বহন করে এনেছে। এই সরকার বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধক।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শনিবার এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে এই সমাবেশ হয়। রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। এর মাধ্যমে ১৯ মে শুরু হওয়া সারাদেশে মহানগর ও জেলায় চারদিনের যে সমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়েছিল তা শনিবার ১৫ জেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো।
নয়াপল্টনের সমাবেশে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে যে বাংলাদেশে আগামীতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যে নির্বাচন, তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যারা বাধা দেবে তাদেরকে তারা ভিসা দেবে না। তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
‘এই বাংলাদেশে গণতন্ত্র অথবা জনগণের ভোট এবং সুষ্ঠু নির্বাচনকে যারা বাধা দিয়েছে ও দিচ্ছে তারা হচ্ছে বর্তমান সরকার। আজ আমেরিকা বলেছে যে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবে তাদেরকে তারা ভিসা দেবে না। অর্থাৎ তারাও এদেরকে (সরকার) প্রত্যাখ্যান করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। আমরা ঘোষণা করেছি যে শেখ হাসিনার অধীনে অতীতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলনে আছে তারাও শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
আন্তর্জাতিকভাবেই দাবি উঠেছে যে নির্বাচন হতে হবে অংশগ্রহণমূলক। আমরা যদি নির্বাচনে না যাই তাহলে তা অংশগ্রহণমূলক হবে না। অতএব, এই সরকার যত কথাই বলুক না কেন, এদেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়।’
বিএনপির এই বর্ষীয়াণ নেতা বলেন, ‘এ ধরনের স্বৈরাচার সরকার নিজে থেকে আপসে সরে দাঁড়াবে না। এই সরকারকে হটাতে হবে। সেজন্য গণঅভ্যুত্থানের বিকল্প নেই। দেশের মানুষ প্রস্তুত।
এদেশের মানুষ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বৈরাচার সরকারকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে হটিয়েছে। তার স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েছে। পাকিস্তান আমলে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের মতো স্বৈরাচারকে হটাতে পেরেছে। অচিরেই গণআন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে বিদায় করতে হবে।’
বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন সাবেক এই স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার গায়ের জোরের সরকার। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাদের অন্যায় আবদার, অন্যায় নির্দেশ আপনাদের মানার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। অতিউৎসাহী হয়ে যারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছেন, তারা এই অবৈধ সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে জনগণের পক্ষে আসুন। আপনাদেরকে কেউ কিছু বলবে না।’
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, নাসির উদ্দিন অসীম, রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদল নেতা সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য