ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টি টিকে থাকবে জানিয়ে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ বা বিএনপির এক দল ঝরে যাবে।
বুধবার বনানী কার্যালয়ে এসে সিলেটের দুই শতাধিক ব্যক্তির দলে যোগদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত এইচ এম এরশাদের ভাই।
জেলা জাতীয় পার্টির নেতা কুনু মিয়ার মধ্যস্ততায় ব্যবসায়ী মো. আলী হোসেন সরকার, সুধীন্দ্র শুভ্রসহ বেশ কয়েকজন রাজনীতিতে যোগ দিলেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে এদেশ থেকে অনেক রাজনৈতিক দল হারিয়ে গেছে। তিনটি দল টিকে রয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। অদূর ভবিষ্যতে এখান থেকেও কেউ ঝরে পড়বে। জাতীয় পার্টি টিকে থাকতে চায়।’
রাজনৈতিকভাবে জাপা অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে দাবি করে সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, ‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগ জনগণের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে।’
জাতীয় পার্টিতে স্বাগত জানিয়ে দলের চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজনীতিতে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিতে হলে সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ থেকে অনেক নেতা দলছুট হচ্ছেন। কিন্তু জাপা থেকে এখন আর কেউ দলছুট হচ্ছেন না, বরং যারা চলে গিয়েছিলেন তারা আবার আসা শুরু করেছেন।’
সুশাসনের অবনতির কারণে সমাজে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা বাড়ছে দাবি করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘যার প্রভাবে সব ক্ষেত্রে দলীয়করণ ও প্রশাসনে ক্ষমতাসীনরা প্রভাব বিস্তার করে। যা এরশাদ শাসনামলে ছিল না।’
সভায় সরকারের সমালোচনা করে জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘জনগণ সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। যার প্রমাণ সম্প্রতি নির্বাচনগুলো। সরকার বলছে, জনগণের সিংহভাগই আওয়ামী লীগের সমর্থনে রয়েছে, অথচ ভোটই পড়ে ৫ থেকে ১০ শতাংশ। তাহলে সরকারের সমর্থকরা কোথায়?’
বাবলু বলেন, সরকারের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীরা, দুর্নীতিবাজরা আজ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে কারা আটক হচ্ছে? এদের প্রশয়দাতা কারা?
রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে (বিডিপি) নিবন্ধন দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা (এব্যাসিলিউট) করে বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আদালতের এই রায় বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী।
এর আগে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে (বিডিপি) নিবন্ধন দিতে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। নিবন্ধন চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন দলটির চেয়ারম্যান এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম।
২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। দলের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম ইসির কাছে নথিসহ আবেদনপত্র জমা দেন।
জাতীয় স্বার্থে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই ব্যর্থ হবে। আল্লাহ তাদেরকে ব্যর্থ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।
রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলানায়তনে বুধবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার বার্ষিক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের পরিচালনায় অধিবেশনে নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ও মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনের নামে প্রহসন করায় দেশের মানুষ ভোটের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। অসংখ্য যুবক-যুবতীর বয়স হয়েছে ভোট দেয়ার। কিন্তু তারা ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচনের প্রতি তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। এজন্য আমরা যৌক্তিক সময় দেয়ার পক্ষে।
‘বিলম্বিত বা দীর্ঘায়িত সময় নয়, যৌক্তিক সময় দিতে চাই। পাশাপাশি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে প্রবাসী ভাইয়েরা আমাদের সঙ্গে সমান তালে যুদ্ধ করেছেন। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদেরকেও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ যখন পরিবর্তনের ইতিবাচক ধারায় রয়েছে তখন লক্ষ্য করছি, দেশকে অশান্ত করার জন্য পতিত স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা দেশ-বিদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা সমাজকে অস্থিতিশীল করতে চায়। বাংলাদেশের বিচক্ষণ দেশপ্রেমিক জনতা তাদের পালস বুঝতে পেরে তাদেরকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।
‘তাদের এই অপপ্রয়াস জাতিকে আরেকবার ঐক্যবদ্ধ হতে সহযোগিতা করেছে। এই দেশের মানুষ আর কারও কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করবে না এবং কোনো রক্তচক্ষুকে পরোয়া করবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ মানবিক, দুর্নীতিমুক্ত দেশ চাই। সুবিচারপূর্ণ একটি সমাজ চাই। আমরা যুবকদেরকে এদেশের উন্নয়নের কারিগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সমাজ পরিচালনার দায়িত্ব ক্রমান্বয়ে তাদের হাতে তুলে দিতে চাই। আমরা আশাবাদী, প্রিয় দেশবাসীর সহযোগিতা পেলে একটা কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন:ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে যাত্রা করা বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠনের লংমার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছে।
বুধবার বিকেল ৪টার দিকে লংমার্চের বহর স্থলবন্দর মাঠে এসে পৌঁছে। সেখানে সমাবেশের মধ্য দিয়ে লংমার্চ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে সকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সকাল ৯টার দিকে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী আনুষ্ঠানিক লংমার্চ শুরু করেন।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকার অবমাননাসহ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপির তিন সংগঠন।
কর্মসূচি ঘিরে স্থলবন্দর এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। আখাউড়া স্থলবন্দরে গ্রামপুলিশ, থানা–পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে সংগঠন তিনটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরা মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে এবং হাতে ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দিতে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছেন।
লংমার্চ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের পথসভায় বক্তব্য দেন নেতারা।
এদিকে স্থলবন্দর মাঠ থেকে আধ কিলোমিটার আগেই জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লার নেতৃত্বে নেতা–কর্মীসহ সব মানুষের যানবাহন থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। সেখানে একটি ফাঁকা জায়গায় নেতা–কর্মীদের পাঁচ হাজার যানবাহন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরে বিজিবির পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে লংমার্চ শুরুর আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় রিজভীসহ তিনটি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। তারা ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমের আধিপত্যবাদী মনোভাব এবং মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানান।
পরে কয়েক শ’ গাড়ি, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে করে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন থেকে কাঁচপুরের দিকে লংমার্চ শুরু করেন।
লংমার্চের গাড়িবহরটি ফকিরাপুল, মতিঝিল ও ইত্তেফাক মোড় ও হানিফ ফ্লাইওভার অতিক্রম করে যাত্রাপথে এগিয়ে যায়।
কাঁচপুর থেকে ভৈরবের দিকে যাত্রা করে আগরতলার কাছে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছানোর আগে একটি পথসভা করবে বিএনপির এই তিন সহযোগী সংগঠন।
কর্মসূচিতে যোগ দিতে বুধবার সকাল ৭টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন।
এর আগে রোববার বিক্ষোভ মিছিলের পর ভারতীয় হাইকমিশনে স্মারকলিপি দেয় বিএনপির তিনটি সংগঠন।
এর একদিন পর তারা আগরতলা অভিমুখে লংমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন:বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ তার জনগণের কথায় চলুক, সেটি চায় না ভারত।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বুধবার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-আগরতলা লংমার্চ শুরুর আগে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘ভারত নিজেরা গণতান্ত্রিক দেশ, কিন্তু তারা চায় না বাংলাদেশ এর জনগণের কথায় চলুক। বাংলাদেশের মানুষের রক্তের যে তেজ, আত্মশক্তি, বীরত্ব, এটা দিল্লির শাসকরা বুঝতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি। এই স্বাধীনতা আমরা বিক্রি করে দেব? আমরা পিন্ডির কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। দিল্লির কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করব?’
ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ভারত সীমান্ত অভিমুখে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের ‘লংমার্চ’ উদ্বোধন করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ লংমার্চ করছে তিন সংগঠন।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাতটার পর থেকে বিএনপির তিন সংগঠনের নেতা-কর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন।
সংগঠন তিনটির নেতা-কর্মীরা মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে এবং হাতে ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বিএনপির তিন সংগঠনের আয়োজনে এই লংমার্চ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন।
আরও পড়ুন:জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জনগণের জন্য জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করবে বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কুমিল্লার ফান টাউন পার্ক মিলনায়তনে মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ততা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা হলো দেশের মানুষের কাছে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন করা; যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। তাহলে দেশের সব সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হবো পর্যায়ক্রমে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কী করবে তার বর্ণনা হলো রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১-দফা। সংস্কার প্রস্তাব শুধু দলীয় কর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, প্রতিটি জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। ৩১ দফায় কারও আপত্তি বা কোনো প্রস্তাবনা থাকলে সংস্কার কিংবা সংযোজন করা হবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘যখন অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইতো না যে স্বৈরাচারের বিদায় হবে, আমরা সেই সময় এই দফা দিয়েছিলাম। সেটা প্রায় দুই বছর আগে। আমরা প্রথমে এটা ২৭ দফা দিয়েছিলাম, পরবর্তীতে ৩১ দফা হয়েছে। কারণ আমাদের সঙ্গে অনেক গণতান্ত্রিক দল স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছিল। তাদের মতামত যুক্ত করা হয়েছে এখানে।’
বিতর্কিত কাজ থেকে নেতা-কর্মীদের বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘দলের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, জনগণের আস্থা নষ্ট হয় এমন কাজ করা যাবে না। জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে। স্বৈরাচারীরা দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে। এখনও সময় আছে। আসুন, আমরা দেশ ও মানুষের কাজে সময় ব্যয় করি। মানুষ এখন বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।’
দেশ ও মানুষের জন্য জিয়া পরিবারের অবদানের উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমার বাবা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে গিয়েই ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে জীবন দিয়েছেন। আমার মা বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষের পক্ষে থাকার কারণে কীভাবে নির্যাতিত হয়েছেন তা আপনারা দেখেছেন। আমার ভাই আরাফাত রহমান ষড়যন্ত্রকারীদের অত্যাচারে শহীদ হয়েছেন। বাংলাদেশের বহু বিএনপি নেতাকর্মীর পরিবারের কাহিনী আমার পরিবারের মতোই।’
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি কীভাবে গত ১৫ বছরে পলাতক স্বৈরাচার সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। কীভাবে দেশকে দুর্নীতিতে ডুবিয়ে দিয়েছে। কীভাবে অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে।
‘তারা দুর্নীতির ওপর টিকে থাকতে চেয়েছিল এবং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। এই দুর্নীতি থেকে যদি দেশকে রক্ষা করতে হয় তাহলে প্রাইমারি স্কুল থেকেই শিক্ষার্থীদেরকে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে।’
কর্মশালায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশায় নিযুক্ত নেতাকর্মীরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করেন। তারেক রহমান এবং কর্মশালার প্রশিক্ষকরা তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে। দেশের যানজট একটি প্রধান সমস্যা। এ সমস্যা মোকাবিলা করতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের নামে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করা হবে।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানো যাবে না। যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় অবধারিত বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। পলাতক সরকারের কিছু লোক ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। তারা দেশে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করবে। দেশের মানুষ এসব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে।
বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।
কর্মশালায় অংশ নেন কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি, মহানগর এবং পৌরসভার শীর্ষ নেতারা।
সভা শেষে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ সময় নেতাকর্মীরা আগামী দিনে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত হবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেন।
আরও পড়ুন:দেশীয় সংস্কৃতির প্রচারের লক্ষ্যে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সূচনা করেছে বিএনপি।
রাজধানীর গুলশান-১ এ উদয় টাওয়ারে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এই প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দিয়েছেন।
‘সবার আগে বাংলাদেশ’-এর আহ্বায়ক এ্যানী বলেন, এই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে দেশের মানুষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর নতুন পরিবেশে নতুনভাবে বিজয়ের মাস উদযাপনের সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, “গত ১৬-১৭ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা নিজেদের মতো করে বিজয় দিবস পালন ও উদযাপন করতে পারিনি। এবার বিজয় দিবসে আমরা নতুন প্রত্যাশা নিয়ে, নতুনভাবে বাংলাদেশের জনগণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে হাজির হব। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা থেকে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে এই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে।
“বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ ১৬ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে ব্যাপক কর্মসূচি ও কার্যক্রম প্রণয়ন করেছে।”
এই কনসার্টে বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও ব্যান্ডদলের মধ্যে- সৈয়দ আব্দুল হাদী, খুরশীদ আলম, বেবী নাজনীন, মনির খান, কনক চাঁপা, দিলশাদ নাহার কনা, ইমরান মাহমুদুল, প্রীতম, জেফার, মৌসুমী, নগর বাউল (জেমস), ডিফারেন্ট টাচ, অর্ক, সোলস, শিরোনামহীন, আর্টসেল, এভয়েডরাফা এবং সোনার বাংলা সার্কাস অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ সংগঠনটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানি ও যুবদল সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সন্দেহ করছি- সংস্কারের নামে একটি মহল নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। এই সরকারকে দিয়ে সম্পূর্ণ মেরামত সম্ভব নয়। পুরো সংস্কারের জন্য দলীয় সরকার প্রয়োজন। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি কুমিল্লা বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভুইয়ার সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কর্মশালা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।
কুমিল্লা বিভাগীয় এই কর্মশালায় অংশ নেন কুমিল্লার ছয়টি জেলা বিএনপি, মহানগর ও পৌরসভার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া ছেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার বানু, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলি, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর সাত্তার পাটোয়ারী ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবা হাবিব।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য