গৃহশ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও সুরক্ষার জন্য সরকার নীতি প্রণয়ন করলেও ১০ বছরে বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ নেই। ‘কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ প্রবচনের মতোই নীতিমালা রয়ে গেছে মলাটবন্দি। এমনকি নিয়োগকর্তা থেকে শুরু করে গৃহশ্রমিকদের প্রায় কারও জানা নেই এসব নীতি। ফলে কোনো হেরফের ঘটেনি দেশের সবচেয়ে অবহেলিত এ পেশায়। বেসরকারিভাবে কিছু পাইলট প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও এক বছর ধরে সেখানেও চলছে সংকট।
গৃহশ্রমিকের কাজের পরিবেশ, মজুরি, ছুটি, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর ‘গৃহকর্মী কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতি’ অনুমোদন দেয় সে সময়কার আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভা। এরপর ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি জারি হয় গেজেট।
গৃহশ্রমিকের সংজ্ঞা থেকে শুরু করে মজুরি, কর্মঘণ্টা, নিয়োগত্রের ব্যবহার, নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উপায়, সরকারের দায়িত্ব ও তদারকি সেল গঠন, গৃহকর্মী-নিয়োগকর্তা-সরকারের দায়িত্বসহ অনেকগুলো দিক সুনির্দিষ্ট রয়েছে নীতিমালায়। তবে এক দশকেও এর বাস্তব প্রয়োগ ঘটেনি। গেজেট পেপারের ছাপার অক্ষরেই আটকে আছে নীতিমালা। আগের মতোই চলছে গৃহ শ্রমিক নির্যাতন। তাদের জন্য নির্ধারণ হয়নি মজুরি কাঠামো এবং কর্মঘণ্টা, এমনকি পেশা হিসেবেও বাস্তব পরিসরে স্বীকৃতি পায়নি গৃহশ্রম।
মানবাধিকার ও গৃহশ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন এবং বিশ্লেষকেরা এর জন্য দায়ী করছেন সরকারের সদিচ্ছাকে। পাশাপাশি আরও কিছু প্রতিবন্ধকতাও সামনে এসেছে বিভিন্ন গবেষণায়। গৃহশ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে, আইনের বাধ্যতামূলক প্রয়োগ না থাকা, তদারকি ব্যবস্থাপনার অভাব, গৃহশ্রমিকদের সক্রিয় সংগঠনের অপ্রতুলতা, অধিকার নিয়ে প্রচার এবং সচেতনতার অভাব এবং তীব্র শ্রেণিবৈষম্য প্রতিকূল পরিস্থিতি বজায় রাখতে ভূমিকা রাখছে।
সরকারিভাবে প্রচারের অভাবে নিয়োগকর্তা এবং গৃহশ্রমিকদের প্রায় কেউই নীতিমালার বিষয়টি জানেন না। এজন্য সরকারের আন্তরিকতাকেই দায়ী করছেন গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক-এর সমন্বয়কারী আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ’যেকোনো জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে সরকার ব্যপক প্রচার চালাবে সেটাই নিয়ম। স্বাস্থ্যসেবা এমনকি সচেতনতামূলক যেকোনো বিষয়েই আমরা নিয়মিত পত্রিকা, টেলিভিশন, রেডিওতে সরকারি ক্যাম্পেইন দেখতে পাই। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে গৃহকর্মী কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রচার নেই।’
তিনি বলেন, ‘এখন তো স্যোশাল মিডিয়ার যুগ। সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। এখন চাইলে প্রচার চালানো অনেক সহজ। সরকার চাইলেই স্যোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার চালাতে পারে, কিন্তু সদিচ্ছা নেই বলে তা হচ্ছে না।’
তবে এ অভিযোগ মানতে রাজি নয় শ্রম অধিদপ্তর। এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক শাহ্ আবদুল তারিক দাবি করছেন, নীতিমালাটি অনুমোদনের পর থেকেই প্রচার করা হচ্ছে। জনসাধারণকে সচেতন করতে তারা বিভিন্ন উদ্যোগও নিয়েছেন। কীভাবে প্রচার চলছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নীতিমালাটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে দেশের প্রতিটি বিভাগ এবং জেলায় আলাদা আলদা কমিটি করা হয়েছে। তারা লিফলেট বিতরণসহ যখন যেমন প্রয়োজন তেমন প্রচার চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রতিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আলাদা করে নির্দেশনা দেয়া আছে। তারা তাদের আওতাধীন এলাকার বাসাবাড়ির গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষার বিষয়টি তদারকি করেছেন।’
তবে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন নিয়োগকর্তা এবং গৃহশ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে তাদের কেউ নীতিমালা সম্পর্কে জানেন না। স্থানীয় থানাও এ বিষয়ে কোনো তদারকি করছে না। বিষয়টি তুলে ধরে সংবাদমাধ্যম, স্যোশাল মিডিয়ায় প্রচার চালানোর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে শ্রম অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ‘স্যোশাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন চালানোর বিষয়টি ভালো উদ্যোগ হতে পারে। আমরা সংবাদমাধ্যম এবং স্যোশাল মিডিয়াকে কীভাবে কাজে লাগাতে পারি তা নিয়ে অবশ্যই পরবর্তী মিটিংয়ে আলোচনা করব।’
ক্ষমতার পালাবদলে সংকটে পাইলট প্রকল্প
গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে সরকারি উদ্যোগের অভাবের মধ্যেও কিছু পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহযোগিতায় নাগরিক সংগঠনের অংশগ্রহণে জনপরিসর সম্প্রসারণ ও সুশাসন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ (এক্সপ্যান্ডিং সিভিক স্পেস থ্রু অ্যাক্টিভ পার্টিসিপেশন অ্যান্ড স্ট্রেনদেন গভার্নেন্স সিস্টেম ইন বাংলাদেশ- ইসিসেপ) নামে চলছে এমনই একটি প্রকল্প। নারী গৃহশ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, তাদের জন্য সম্মানজনক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, শোষণ ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষা দেয়া এবং মর্যাদা ও সামাজিক স্বীকৃতি বাড়াতে সম্মিলিতভাবে প্রকল্পটি পরিচালনা করছে ক্রিশ্চিয়ান এইড, আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এর আওতায় ‘নারী মৈত্রী’ নামের একটি সংগঠন গৃহশ্রমে নিয়োগপত্রের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে গৃহশ্রমিক ও নিয়োগদাতাদের মাঝে প্রচার চালাচ্ছে। পাইলট প্রকল্পের আওতায় পাঁচজন নারী গৃহশ্রমিক নিয়োগপত্র পেয়ে উদাহরণও সৃষ্টি করেছেন। নিয়োগপত্রটি এমনভাবে তৈরি যেখানে উভয়পক্ষের স্বার্থ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। সেই সঙ্গে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে প্রতি মাসের বেতন যায় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। সেটি সম্ভব না হলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেতন দিতে নিয়োগদাতাদের উৎসাহিত করা হয়।
আমরাই পারি জোটের এই উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে প্রকল্পে রাজধানীর মোহম্মদপুর, কল্যাণপুর এবং শের-ই-বাংলা নগর এলাকার সাড়ে তিন হাজার এবং কামরাঙ্গীরচর এলাকায় আড়াই হাজার গৃহশ্রমিককে অন্তর্ভুক্ত করেছে নারী মৈত্রী ও সহায়ক দুটি সংস্থা। অন্তত এক লাখ মানুষের মাঝে গৃহশ্রমিকের অধিকার ও নির্যাতন প্রতিরোধের পদক্ষেপ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে সংগঠনগুলো। পাশাপাশি গৃহশ্রমিকের দক্ষতা ও কার্যক্ষমতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হচ্ছে। তাদের গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজ শেখানোর পাশাপাশি ঘরে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্র যেমন ওয়াশিং মেশিন, ওভেন, ইলেক্ট্রিক চুলা, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ইত্যাদি ব্যবহারের প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে।
প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো গৃহশ্রমিকের মধ্যে একতা তৈরি করা এবং সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে তাদের একটি নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দুই বছর মেয়াদি প্রকল্পটির সামনে তৈরি হয়েছে চ্যালেঞ্জ। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না থাকা এবং নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হতে যাওয়া প্রকল্পটির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ নাও করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গৃহশ্রমিকের মাঝে একতার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করাকে প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং শক্তিশালী দিক হিসেবে বিবেচনা করছেন নারী মৈত্রীর ট্রেইনিং কো-অর্ডিনেটর নাহিদ সুলতানা। তবে মাঠ পর্যায়ে গত এক বছরে বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ার কথা জানান তিনি।
নাহিদ সুলতানা বলেন, ’আমরা চাইছি গৃহকর্মীদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক থাকুক, যাতে তারা নিজেদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারেন। এজন্য আমরা এরিয়াভিত্তিক ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ করে তাদের একেক জন নেতা নির্বাচন করার চেষ্টা করছি। তবে সমস্যা হলো এখানে রাজনৈতিক প্রভাব আছে। আগে দেখা গেছে যারা একটি রাজনৈতিক দলের মিটিং মিছিলে যেতেন তারা এখন কোণঠাসা। এখন যারা অন্য দলের মিটিং মিছিলে যাচ্ছেন তারা তাদের কমিউনিটিতে ভালো অবস্থায় আছেন। যার নেতৃত্বগুণ ভালো এমন একজনকে আমরা একটি গ্রুপের লিডার নির্বাচিত করলাম, কিন্তু দেখা গেল তিনি হয়ত আগে একটি রাজনৈতিক দলের অনুসারী ছিলেন, তাই এখন অন্য দলের অনুসারীরা তার নেতৃত্ব মানছেন না। আবার অনেক ক্ষেত্রে এমনও হচ্ছে, আগের রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের একজন লিডারের তার কমিউনিটিতে খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা ছিল, কিন্তু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর কমিউনিটিতে অনুপস্থিতির কারণে তার অনুসারীদের এখন প্রকল্পে যুক্ত করা যাচ্ছে না ’
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতি প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রমকে জটিল করে তুলেছে বলেও জানান নাহিদ সুলতানা। তিনি বলেন, ‘কোনো ওয়ার্ডে কাউন্সিলর না থাকার কারণে আমাদের মাঠ প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রকল্পের ভালো ফল আনতে হলে নিয়োগকর্তা এবং গৃহকর্মীদের সচেতন করার কোনো বিকল্প নেই। আর এ কাজটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সরাসরি সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই করা সম্ভব নয়।’
আমরাই পারি জোটের প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক মনে করেন, জনসম্পৃক্ত যেকোনো কাজের জন্য দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকা অত্যন্ত জরুরি। সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে থাকলে তাদের অধিকার নিয়ে ভালোভাবে কাজ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে যে পাইলট প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে তার মূল উদ্দেশ্যই হলো- এর ফলাফলের ভিত্তিতে সরকার এবং দাতা সংস্থাগুলো যেন বড় পরিসরে কাজ করতে পারে। কিন্তু প্রকল্প মেয়াদের প্রায় পুরোটা সময় ধরে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। গৃহশ্রমিকের সুরক্ষার জন্য পাইলট প্রকল্পটির কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে হলে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো প্রয়োজন। রাজনৈতির অস্থিরতার কারণে আমরা সেটি ভালোভাবে করতে পারছি না। তাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য অর্জন কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে আমাদেরও প্রশ্ন আছে।’
এনসিসি ব্যাংক সম্মানিত গ্রাহকবৃন্দদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে প্রবর্তিত এবং পুরোপুরি দেশীয় মধ্যস্থতায় পরিচালিত জাতীয় ডেবিট কার্ড ‘টাকা পে’ চালু করেছে। এটি হবে ভিসা, মাস্টারকার্ড ও অ্যামেক্সের মতো আন্তর্জাতিক কার্ড সেবার একটি স্থানীয় বিকল্প।
সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত ঢাকা অঞ্চলের শাখা সমূহের ব্যবসায়িক পর্যালোচনা সভায় চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম, ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চাকলাদার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. শামসুল আরেফিন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. খোরশেদ আলম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালকরা মো. জাকির আনাম, মো. মাহবুব আলম, মো. মনিরুল আলম ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, আইসিটি বিভাগের এসভিপি মো. সাজ্জাদুল ইসলাম, হেড অব কার্ডস মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এবং ডিএফএস বিজনেস প্রধান মো. সাইফুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা ‘টাকা পে’ ডেবিট কার্ডটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য যে, ন্যাশনাল পেমেন্ট স্কিম (এনপিএসবি) এর অধীনে ইস্যু করা এই কার্ডটি দেশের অভ্যন্তরে বাংলাদেশি টাকায় লেনদেন সহজ, সাশ্রয়ী ও সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে। এর আকর্ষণীয় এবং উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, এনসিসি ব্যাংকের বিস্তৃত এটিএম নেটওয়ার্ক, কিউ-ক্যাশ ও অন্যান্য ব্যাংকের এনপিএসবি নেটওয়ার্ক সম্বলিত এটিএম থেকে চার্জ ছাড়াই নগদ উত্তোলনের সুবিধা। এছাড়াও, দেশের সর্বত্র নিরবচ্ছিন্ন পিওএস (পয়েন্ট অব সেলস) লেনদেনের সুযোগ। আরো থাকছে, এক হাজারেরও বেশি সহযোগী মার্চেন্ট আউটলেটে সারা বছর আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও অন্যান্য সুবিধা।
এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম বলেন, ‘টাকা পে’ কার্ডটি এনসিসি ব্যাংকের সকল প্রকার সঞ্চয়ী হিসাবধারী তথা কনভেনশনাল ও ইসলামিক এর জন্য প্রযোজ্য। এটি ব্যাংকের বিদ্যমান ভিসা ডেবিট কার্ডের পাশাপাশি চালু থাকবে। কার্ডটি গ্রাহকদের সহজ ও দ্রুততম উপায়ে নিরবচ্ছিন্ন আর্থিক লেনদেনের নিশ্চয়তা প্রদানে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. শামসুল আরেফিন বলেন, ‘টাকা পে’ শুধুমাত্র একটি কার্ড নয়; এটি একটি জাতীয় গর্বের প্রতীক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ স্বনির্ভর ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ এই কার্ডটি কার্ডহোল্ডারদের আরও নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় অভ্যন্তরীণ লেনদেন করতে সাহায্য করবে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট নেটওয়ার্কগুলোর উপর নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং দেশের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ১১তম বার্ষিক সাধারণ সভা হাইব্রিড সিস্টেমে ব্যাংকুয়েট হল, কুর্মিটোলা গল্ফ ক্লাবে গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বতন্ত্র পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জামাল মোল্লা, স্বতন্ত্র পরিচালক ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম খলিফা, স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক আবু হেনা রেজা হাসান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র পরিচালক মু. মাহমুদ হোসেন এফসিএ, শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আতাউস সামাদ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি করিম ও এ. এফ. সাব্বির আহমদ, কোম্পানি সচিব মো. মনজুর হোসেন। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডাররা ও ব্যাংকের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) আনুষ্ঠানিকভাবে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন ২০২ মেধাবী শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদের ওইসব শিক্ষার্থীদের সফলতার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে ডিনস অ্যাওয়ার্ড সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠান শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মো. ইমারুল হক জোয়ার্দ্দার।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যে অধ্যবসায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে পড়াশোনা করছেন, তার স্বীকৃতি আজ এই ডিনস অ্যাওয়ার্ড। আশা করি এটি আপনাদের আরো উচ্চ লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রেরণা জোগাবে।’
অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউবিটি ট্রাস্টের সম্মানিত চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘একাডেমিক স্বীকৃতি শুধু অর্জনের আনন্দ নয়, বরং এটি আপনাদেরকে আরো কঠোর পরিশ্রম এবং নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর প্রেরণা দেবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ বি এম শওকত আলী। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই সাফল্য প্রমাণ করে যে অধ্যবসায় ও সততা প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মিলিত হলে যে কোনো লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। ডিনস অ্যাওয়ার্ড একটি মূল্যবান স্বীকৃতি, যা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে আরো সমৃদ্ধ করবে।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউবিটি ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা প্রফেসর মো. আবু সালেহ।
ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এর ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির ১০৬তম সভা গতকাল সোমবার করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির ১০৫তম সভার সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং ২০২৪-২০২৫ অর্থবছর এবং ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জন নিয়ে আলোচনা করা হয়।
ওই সভায় আইসিবির পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নূরুল হুদা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও আইসিবির মহাব্যবস্থাপকরা, সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা, প্রধান কার্যালয় ও স্থানীয় কার্যালয়ের সকল উপমহাব্যবস্থাপক/সিস্টেম ম্যানেজার, সহকারী মহাব্যবস্থাপক/সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট, বিভাগীয় প্রধান ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের অতিরিক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর পাশাপাশি শাখা অফিসসমূহের শাখা প্রধানরা অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।
দেশব্যাপী আট শতাধিক কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা কার্ডধারী পরিবারকে দুই কোটি টাকারও বেশি আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে দেশের সর্ববৃহৎ ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তি পণ্য বিক্রয় এবং সেবা প্রদানকারি প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ালটন প্লাজা’। আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সুরক্ষা কার্ডধারী মৃত গ্রাহকের পরিবারদের সমুদয় বকেয়া কিস্তির টাকাও মওকুফ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। মওকুফকৃত বকেয়া কিস্তির পরিমাণও প্রায় দুই কোটি টাকা।
ওয়ালটন প্লাজার ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষানীতির’ আওতায় সুরক্ষা কার্ডধারী গ্রাহকের পরিবারকে এই আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। কিস্তিতে পণ্য ক্রয়কারী গ্রাহকদের জন্য এই সুরক্ষানীতি চালু করে ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষ। এই সুরক্ষা নীতির আওতায় দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে পণ্য ক্রয়কারীদের কিস্তি সুরক্ষা কার্ড প্রদান করা হয়। ক্রয়কৃত পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে কিস্তি চলমান থাকা অবস্থায় ক্রেতার মৃত্যু হলে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ এবং তার পরিবারের কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও সুরক্ষা কার্ডধারীর মৃত্যুকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট পণ্যের অনাদায়ী কিস্তির টাকাও মওকুফ করে দিচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ওয়ালটন প্লাজার কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষানীতি।
ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ রায়হান বলেন, শুধু মুনাফা অর্জনই ওয়ালটন প্লাজার লক্ষ্য নয়। ক্রেতাদের কারণেই ওয়ালটন আজ দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড। তাই ক্রেতাদের প্রতি আমাদের অনেক কর্তব্য রয়েছে। তাদেরকে উচ্চমানের পণ্য ও সঠিক সেবা দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ওয়ালটন পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা আরো বৃদ্ধি, গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করার লক্ষ্যেই ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষানীতি’ চালু করা হয়। এর আওতায় কোনো কিস্তি সুরক্ষা কার্ডধারী মৃত্যুবরণ করলে দাফনের জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ালটন প্লাজা থেকে তৎক্ষনাৎ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও পণ্য মূল্যের ভিত্তিতে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সমুদয় বকেয়া কিস্তির টাকা মওকুফ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী আট শতাধিক কিস্তি সুরক্ষা কার্ডধারীর পরিবারকে দুই কোটি টাকারও বেশি আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। এছাড়াও আর্থিক সহায়তা গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছে আরো বেশ কিছু পরিবার।
তিনি জানান, শুধু আর্থিক সহায়তাই প্রদান করা হচ্ছে না; মৃত সুরক্ষা কার্ডধারী পরিবারের যোগ্যতাসম্পন্ন সদস্যের জন্য ওয়ালটনের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিশ্বে একমাত্র ওয়ালটনই কিস্তিতে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের এমন সুরক্ষা ও সুবিধা প্রদান করছে। এই মহৎ উদ্যোগের ফলে একদিকে ওয়ালটন প্লাজার সুনাম ও ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ গ্রাহক পরিবারগুলোও উপকৃত হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা কার্ডধারীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি দেশের স্বনামধন্য হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জীবন বীমা, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ সেবা ও মূল্যছাড়সহ বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে ওয়ালটন প্লাজা। কিস্তি ক্রেতারা যেন জীবদ্দশাতেই খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন খাতে বিশেষ সুবিধা পান সেজন্যেই এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে। যা চলমান থাকবে এবং এর আওতা পর্যায়ক্রমে আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানায় ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও জোরদার করার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল ১৭ রোববার ‘কোরিয়ান সাংস্কৃতিক দিবস’ উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ চত্বরে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি এন্ড লিডারশিপ বিভাগ, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট এবং কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা) বাংলাদেশ যৌথভাবে এই দিবস উদযাপন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি এন্ড লিডারশিপ বিভাগের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত কোইকার কান্ট্রি ডিরেক্টর তাইয়ং কিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবছার কামাল এবং কোইকা বাংলাদেশ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মোছা. নাসিমা বেগম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এ ধরনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে উভয় দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিনিময়ের ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হবে। তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
এই দিবস উপলক্ষে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ চত্বরে বিভিন্ন স্টল স্থাপন করা হয়। এসব স্টলে কোরিয়ান পোশাক, খাদ্য, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়।
মন্তব্য