আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সেনা কর্মকর্তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে সেনা হেফাজতে থাকা ১৫ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারোয়ার বলেন, গত ৮ অক্টোবর তিনটি মামলায় ট্রাইব্যুনালে তিনটি আদেশ হয়েছে। সেই তিনটি মামলায় সাবেক-বর্তমান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর এসব কর্মকর্তাকে এটাচ (হেফাজতে নেওয়া) করে সেনা কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ সেনা সদরের হেফাজতে রাখা হয়। আজ ওই তিনটি মামলার নির্ধারিত তারিখ ছিল।
তিনি আরও বলেন, এই তারিখে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন তারা। আমাদের ওকালতনামা স্বাক্ষর করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আমরা তিনটি আবেদন করেছি। আবেদনগুলা পরবর্তী তারিখে শুনানি হবে। এর মধ্যে একটি জামিনের আবেদন রয়েছে। এছাড়া প্রিভিলেজ কমিউনিকেশন ও তাদের যেন সাবজেলে রাখা হয়।
সাবজেল নিয়ে এই আইনজীবী বলেন, এ ব্যাপারটি জেল কর্তৃপক্ষ দেখবেন। যারা পলাতক রয়েছেন তাদের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির জন্য একটা তারিখ আছে। শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছে ২০ নভেম্বর। এখন তাদের সেনানিবাসে যে সাব জেল (উপ কারাগার) ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, টেকনিক্যালি প্রসিকিউশন বলেছে গ্রেপ্তার। তবে আমরা বলি আত্মসমর্পণ। কারণ তারা আজ সকালে স্বেচ্ছায় এখানে এসেছেন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সুবিধার জন্য তাদের একটা গাড়িতে আনা হয়েছে। নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক সুবিধার কারণে এই ফ্যাসিলিটিটা ব্যবহার করা হয়েছে। তারা প্রকৃতপক্ষে আত্মসমর্পণ করেছে।
এদিন সকাল ৮টার পর তিন মামলার ওপর শুনানি হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে আদালতে হাজির হওয়া ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল।
এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আজ তিনটি মামলার মোট ১৫ আসামিকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে র্যাবের টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৭ আসামির ১০ জনকে আনা হয়। পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের হাজির হওয়ার জন্য দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সাতদিন তথা ২৯ অক্টোবরের মধ্যে এ বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। একইসঙ্গে আগামী ২০ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।
জেআইসি বা জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে গুমের অভিযোগে আরেকটি মামলায় ১৩ আসামির তিনজনকে হাজির করা হয়। তাদের বিরুদ্ধেও একই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পলাতকদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। এ মামলায় পরবর্তী শুনানিও একই দিন ঠিক করা হয়।
এছাড়া জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাজির হওয়া দুজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। তবে পলাতক দুই আসামি হাজির না হওয়ায় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৫ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে, ৮ অক্টোবর পৃথক এ তিন মামলায় মোট ৩৪ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পাশাপাশি শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এর একটিতে ১৭, আরেকটিতে ১৩ ও অন্যটিতে ৪ জনকে আসামি করা হয়। তবে দুটিতেই শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। এর মধ্যে সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন ২৫ জন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর ১১ অক্টোবর ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে সেনাসদর।
১৫ সেনা কর্মকর্তা হলেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম। ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা উপলক্ষ্যে রাজধানীর কাকরাইল, মৎস্য ভবন, পল্টনসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোর থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালসহ হাইকোর্টের মাজারগেট এলাকা। এখানে পুলিশ-র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি-সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও দেখা গেছে। সবমিলিয়ে বাড়ানো হয় ব্যাপক নিরাপত্তা।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সিরাজ মিয়া (৬৫) কমিউনিটি পেট্রোলিং বন টহল দলের সদস্য (সিপিজি) নিহত হয়েছেন। নিহত সিরাজ মিয়া শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের ডলুছড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার (২২ অক্টোবর) ভোরে লাউয়াছড়া বন বিটের আওতাধীন জানকিছড়া ক্যাম্পের রাতের ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় দ্রুতগামী গাড়ির চাপায় তার মৃত্যু হয়।
জানা যায়,কমলগঞ্জ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকার ডলুছড়া বন টহল দলের (সিপিজি) একজন সদস্য হিসেবে দীর্ঘ সময় থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
স্থানীয় ও বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মত রাতের ডিউটির দায়িত্ব পালন শেষে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া এলাকায় শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ সড়কে পায়ে হেটে মো. সিরাজ মিয়া বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় একটি দ্রুতগামী গাড়ি তাকে পেছন থেকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে বন বিভাগ, কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেন।
এবিষয়ে জানতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সহ ব্যাবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ জনক দেববর্মা বলেন, দূর্ঘটনার খবর পেয়ে বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সহ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। আমরা লাউয়াছড়া সহ-ব্যাবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির সকল সদস্য ও বনবিভাগ নিহত সিরাজ মিয়ার পরিবারের পাশে আছি। এসময় তাৎক্ষণিক ভাবে সিরাজ মিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহযোগীতা করা হয়।
বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জাফর মো মাহফুজুল কবির বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ দেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন।
আজ বিকেল সোয়া ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এরপর সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মেদ বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এই ধারাবাহিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারালো পুলিশ সদস্য নাজমুল (২৮)।
সে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার চরমান্দার কান্দি এলাকার রাজু মিয়ার ছেলে।
টাঙ্গাইল জেলার গোড়াই থানা হাইওয়ে থেকে ২০২৪ সালের ৪ অক্টোবর ভৈরব থানায় যোগ দেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত। তার স্ত্রী ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কালিকাপ্রসাদ এলাকায় এই দুর্ঘটনায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব হাইওয়ে থানার এএসআই বিল্লাল হোসেন, নাজমুল, আনিসুর রহমান, শাহ আহসান হাবিবসহ রাত্রীকালীন জরুরী ডিউটি চলাকালীন ভৈরব থানাধীন কালিকা প্রসাদ বাজারের দক্ষিণ পাশে কিশোরগঞ্জ ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কের ভৈরব গামী লেনের পাশে দাঁড়িয়ে ঢাকা মেট্রো ড-১২-৫৮১৫ ট্রাকের চালকের সাথে কথা বলার সময় ভৈরবগামী দ্রুত বেপরোয়া গতিতে অজ্ঞাতনামা একটি ট্রাক এসে পুলিশ পিকআপ ভ্যানের ডানপাশে সজরে ধাক্কা দিলে পিকআপ ভ্যানটি বাম পাশে নিচে পড়ে যায়। এসময় গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে পুলিশ সদস্য নাজমুল মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এবিষয়ে ভৈরব হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, গতকাল রাতে কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে জরুরি ডিউটি চলাকালীন সময়ে বেপরোয়া একটি অজ্ঞাতনামা একটি ট্রাকের ধাক্কায় পুলিশ সদস্য নাজমুল গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
ঢাকা শহরের অতি সন্নিকটে রূপগঞ্জ, অথচ রূপগঞ্জ থেকে ঢাকা শহরে যাতায়াতের নাই কোন গণপরিবহন। এমনকি জেলা সদরে যেতেও সিএনজি আর অটোই ভরসা। ঢাকা শহরে যাতায়াত করতে অনেকে নৌকা বা ট্রলার ব্যবহার করে থাকেন। মামলা সংক্রান্ত কাজে আদালতে যেতে হয়, যা নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত। সরাসরি গণপরিবহন না থাকায় রূপগঞ্জের মানুষ অটো বা সিএনজিতে যাতায়াত করতে হয়। রূপগঞ্জ থেকে ঢাকা শহরে অনেকেই চাকরি ব্যবসা বাণিজ্য করেন। কিন্তু পরিবহন সংকটের কারণে প্রায় সঠিক সময় গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না।
শিল্পাঞ্চল খ্যাত রূপগঞ্জ। কয়েক হাজার শিল্প কারখানা,পূর্বাচল উপশহর সহ বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের কারণে রূপগঞ্জ হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। তবে জেলার সঙ্গে এই উপজেলায় যোগাযোগের সরাসরি কোনো গণপরিবহন ব্যবস্থা নেই। ফলে দুর্ভোগ নিয়েই প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হচ্ছে এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের।
নগরায়ণের এ যুগে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাস পরিবহনের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
নারায়ণগঞ্জ আদালতে কর্মরত নারায়ণ সরকার বলেন, প্রতিদিনই আমাকে ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন গাড়ি পরিবর্তন করে আসা-যাওয়া করতে হয়। যদি রূপগঞ্জ থেকে সরাসরি একটি বাস সার্ভিস নারায়ণগঞ্জে চলাচল করতো তাহলে আমাদের জন্য ভালো হতো। এখন সময় যেমন বেশি লাগে, তেমনি অতিরিক্ত খরচও হয়।
ব্যবসায়ী মিজান মিয়া জানান, রূপগঞ্জের মানুষকে শহরে যেতে হলে একাধিক গাড়ি বদল করে যেতে হয়। যে কারণে কর্মজীবী যাত্রী সাধারণকে ভেঙে ভেঙে অথবা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যানবাহন রিজার্ভ নিয়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে হয়। সরাসরি গণপরিবহণ চালু না হওয়াটা খুবই দুঃখজনক।
তারাব পৌর এলাকার বাসিন্দা রাহুল পরাজী আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, জমি জমা নিয়ে বিরোধের জেরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে তার একটি মামলা চলমান রয়েছে। এ কারণে মাসে একাধিকবার তাকে জেলা সদরে যেতে হয়।
তিনি বলেন, গণপরিবহণের ব্যবস্থা করা হলে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে নারায়ণগঞ্জের অফিস আদালতের কাজ করতে পারবে।
এডভোকেট আবুল বাশার রুবেল জানান, তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। প্রতিদিনই তাকে সিএনজি রিজার্ভ করে আর না হয় বিভিন্ন গাড়ি বদল করে যাতায়াত করতে হয়। বৃষ্টির দিনে ঝামেলা পোহাতে হয় অনেক বেশি। এ বিরম্ভনা থেকে মুক্তি পেতে নারায়ণগঞ্জেই বাসা বাড়া করে থাকেন এখন।
রূপগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরের সরাসরি পরিবহন সেবা চালু হওয়া জরুরি বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পরিবহন ব্যবসায়ী ও শুভসংঘ বাস সার্ভিসের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মকবুল হোসেন বলেন, রূপগঞ্জের মানুষের সরকারি সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নানাবিধ কাজে, প্রতিনিয়তই নারায়ণগঞ্জ শহরে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু রূপগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে সরাসরি কোনো গণপরিবহন চালু না থাকায় এ জনপদের বাসিন্দাদের ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শুভসংঘ বাস সার্ভিস থেকে ভৈরব রোডে আমাদের বেশ কিছু গাড়ি চলাচল করছে। শুভসংঘ বাস সার্ভিসের পক্ষ থেকে ভুলতা গাউছিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু করার বিষয়ে কাজ চলছে।
রূপগঞ্জের বর্তমান অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, এই উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস চালু করতে হলে স্থানীয় উদ্যোক্তাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘কনসিকন্সিয়াল’ (গুরুত্বপূর্ণ পরিণতিযুক্ত) উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) প্রস্তুত থাকার এবং কারো পক্ষে কাজ না করার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি)। এছাড়া অস্তিত্বের প্রশ্নে হিম্মতের সঙ্গে কাজ করতেও তিনি ইউএনওদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বুধবার (২২ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে ইউএনওদের এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
এ সময় অস্তিত্বের প্রশ্নে হিম্মত ও সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান ইসি আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
ইসি সানাউল্লাহ মনে করেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির স্বার্থে ইউএনওদের এখনই প্রস্তুত থাকতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এই সুযোগ কাজে লাগানোরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে কনসিকন্সিয়াল নির্বাচন’ হিসেবে উল্লেখ করেন ইসি সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, পরিবেশ তৈরির স্বার্থে আগে থেকেই ইউএনওদের প্রস্তুত থাকতে হবে, কারো পক্ষে কাজ করা যাবে না। এ সরকার এই সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, ইসি আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সরকারি কর্মকর্তাদের মনোবল ও সততার বিষয়ে জোর দেন। তিনি স্বীকার করেন, ৫ আগস্টের পর কিছুদিন অস্থিতিশীল ছিল, অমুক তমুক এর কথায় অনেক কিছু হয়েছে। কর্মকর্তাদের এখন আর সে ভয় নেই।
তিনি বলেন, দুইটা কেয়ারটেকার সরকারের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষমতায় স্বাধীনতা পেয়েছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তৈরির আবহ হচ্ছে দেখছি। আপনাদের ভয় নেই, আমরা পাশে আছি।
সরকারি কর্মকর্তাদের মান ভূলুণ্ঠিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি এই নির্বাচনকে ‘এই সরকারের অধীনে সততা নিষ্ঠা দেখানোর সুযোগ’ হিসেবে দেখেন। আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ভয় পাওয়া যাবে না, হিম্মতের সঙ্গে কাজ করতে হবে অস্তিত্বের প্রশ্নে।’
তিনি ইউএনওদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শিডিউল ঘোষণার পর দেখবেন আশেপাশে কেউ নেই।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দু'পক্ষ থেকে ধরতে হবে, ধরলে ছাড়া যাবে না নির্বাচনের আগে। মোবাইল কোর্ট স্বচ্ছ হতে হবে। মোবাইল কোর্ট নিয়মিত করতে হবে।
ঢাকার বায়ুদূষণের মূল উপাদান হলো বাতাসে থাকা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (PM ২.৫)। আজ সকালে এই পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মানদণ্ডের চেয়ে ১৬.৫ গুণ বেশি পরিমাপ করা হয়েছে।
ঢাকার মধ্যে আজ সবচেয়ে দূষিত বাতাস বিরাজ করছে মিরপুরের পল্লবি এলাকায়।
এরপরের স্থানে রয়েছে—মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকা
তেজগাঁও শান্তা ফোরাম, পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ি, মাদানি সরণির বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গুলশানের গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল
উল্লিখিত সব এলাকায় আজ বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
আজ বিশ্বের বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলো হলো— দিল্লি, ভারত – বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ লাহোর, পাকিস্তান – বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’
কিনশাসা, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র – বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’, কলকাতা, ভারত – বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’
ঢাকার অবস্থান পঞ্চম স্থানে থাকলেও বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি স্কোর মানদণ্ড : ০–৫০: ভালো, ৫১–১০০: মাঝারি/সহনীয়, ১০১–১৫০: সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১–২০০: অস্বাস্থ্যকর, ২০১–৩০০: খুবই অস্বাস্থ্যকর।
ঢাকার বর্তমান স্কোর ১৭০ হওয়ায় এটি অস্বাস্থ্যকর শ্রেণীতে পড়ে।
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা একটি বাসের চাপায় মোতালেব হোসেন (৩৫) নামে এক ইজিবাইক চালক নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের ইকরচালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মোতালেব নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। এ ঘটনায় গুরুতর আহত একজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা সৈয়দপুরগামী ভাই ভাই মুরাদ ক্লাসিক পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ইকরচালী বাসস্ট্যান্ডে এসে হঠাৎ উল্টো পথে ঢুকে পড়ে। এ সময় মহাসড়কের বিপরীত দিক থেকে আসা ইজিবাইকটিকে চাপা দিয়ে সড়কের পাশে থাকা দোকানের সামনে থাকা পিলারে আটকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক মোতালেব হোসেন মারা যান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসটি বাম দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও ডান দিকে সড়কের ধারে রাখা পিলারে আটকে আছে। উৎসুক লোকজন, স্কুল শিক্ষার্থীরা বাসটি ঘিরে রেখেছেন। এতে সড়কের একাংশ সংকুচিত হওয়ায় আবারও দুর্ঘটনা শঙ্কা রয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেখানে কোনো পুলিশ সদস্য দেখা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ভাতের দোকানদার আতিয়ার রহমান বলেন, আমার দোকানের সামনেই ঘটনা। সকালে দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি বাসটা বাম থেকে ডান দিকের লেনে হাই স্পিডে ঢুকে যায়। এ সময় ডান দিক থেকে আসা অটো গাড়ির নিচে চাপা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে একজন মারা যায়।
পাশের আরেক দোকান মালিক জিয়াউর প্রামনিক বলেন, প্রায়ই দেখি উল্টো পাশ দিয়ে গাড়ি এই স্ট্যান্ডে ওভারটেক করে। এর আগেও এমন দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অনেক মানুষের। কিন্তু এগুলো বন্ধ করার উপায় নাই।
তারাগঞ্জ হাইওয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অটোরিকশা চালক মোতালেব হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা ও মুরাদ পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হয়েছে। বাসটি সড়ক থেকে সরিয়ে নিতে হবে। বাসচালক পালিয়ে গেছে।
মন্তব্য