গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ব্রিজের নিচের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে বাঁধ অপসারনে স্বস্তি প্রকাশ করেছে দুর্ভোগে থাকা পানিবন্দি অর্ধশতাধিক পরিবার।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে উপজেলা সহকারি কমিশিনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ কান্দি ইউনিয়নের লেবুবাড়ি গ্রামে এক অভিযান চালিয়ে ব্রিজের নিচের এই বাঁধ অপসারণ করেন।
এ সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম, কোটালীপাড়া থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের নিচে অবৈধভাবে পাকা দেওয়াল দেওয়ায় পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পরে অর্ধশতাধিক পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানিবন্দী একাধিক ভূক্তভোগী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছি প্রভাবশালী ঘের মালিকদের কাছে। ভয়ে আমরা কিছু বলতেও সাহস পাইনি। বাধ্য হয়ে বাঁধ অপসারনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন জানাই।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, ব্রিজের নিচে পাকা দেয়াল দিয়ে পানি আটকিয়ে বর্ষা মৌসুমে জলাভূমিকে ঘের বানিয়ে মাছ চাষ করে আসছিল স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। এতে জলাভূমির মাঝে বসত করা প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরে। মাছের ঘেরের কারনে এ সকল বাড়ির পাড়গুলো দিন দিন ভেঙে পড়ছিল। বর্ষার পানি কমে গেলেও ব্রিজের নিচে পাকা বাঁধ থাকার কারনে জলাভূমির পানি না কমায় দূর্ভোগে পরে ঘেরের ভিতরে বসবাস করা পরিবারগুলো।
অভিযান পরিচালনাকারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভূক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক স্যারের নির্দেশনায় সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ব্রিজের নিচে পানি আটকিয়ে রাখা পাকা ইটের দেওয়াল ভেঙ্গে দেওয়া হয়। জনদুর্ভোগ রোধে উপজেলা প্রশাসন সবসময়ই তৎপর রয়েছে।
গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমান্বয়ে দানবে পরিণত হওয়ার কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন পর্বে বিগত প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি একথা বলেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমান্বয়ে দানবে পরিণত হয়েছিল। প্রথমে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তারা আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ডটাকে ভেঙ্গে দেয়। পরবর্তীতে গুম-খুনের কালচার চালু করে। এরপর তারা আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়। তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা বাতিল করে দেওয়া হয়। দেশে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ পায়। এ সবের মাধ্যমেই তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ক্রমান্বয়ে একটা দানবীয় সরকারে পরিণত হয়েছিল।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আরো বলেন, ‘জনগণকে নির্যাতন করা, হত্যা করা ও একটা ভয়ের রাজত্ব কায়েম করা ছিলো তাদের (আওয়ামী লীগ সরকারের) টার্গেট। এই দানবীয় শাসকই একটা পর্যায়ে ২০২৪ সালে আমাদের তরুণ-তরতাজা প্রজন্মের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ চালায়।’
আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের আগে গত বুধবার এই মামলার শেষ সাক্ষী (৫৪তম) তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষ হলে, যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
ঐতিহাসিক এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বমোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন সাক্ষী।
এই মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করছেন।
সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত থাকেন।
পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীতে এই মামলার রাজসাক্ষী হয়ে সাক্ষ্য দেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে।
অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে। সূত্র: বাসস
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আসন্ন নির্বাচনে বিরত রাখা হবে। তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এ কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
উপদেষ্টা আজ দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুনর্নিধারণকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে, সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও নিরাপদ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণসহ একগুচ্ছ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন,সুষ্ঠু ভোটপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যাতে কোন আইন বহির্ভূত কাজ না করে সে বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সকল ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন
না ঘটে, সেজন্য নিরাপত্তা বাহিনীর টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা হবে। আপনারা জানেন, এ প্রশিক্ষণ চলছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ২৮টি ব্যাচে তিনদিন মেয়াদী প্রশিক্ষণ সারাদেশে (জেলা, মহানগর ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান) ১৩০ টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনের জন্য পুলিশের চূড়ান্ত (৪র্থ পর্যাযের) প্রশিক্ষণ গত ৫ অক্টোবর শুরু হয়েছে এবং আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ এ সকল ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্য 'প্রাক নির্বাচনী প্রশিক্ষণ' শিরোনামে প্রতি কেন্দ্রে ১৩ জন হারে আনুমানিক ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এরমধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জনকে অস্ত্রসহ ও ৪ লাখ ৫০ হাজার জনকে অস্ত্রবিহীন প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আগামী জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ প্রশিক্ষণ শেষ হবে।
উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১১শ’ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ইতোমধ্যে ৬০% নির্বাচনী প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজিবি'র প্রশিক্ষণ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তাছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বিক্রয় ও বিপণন কর্মকর্তাদের সংগঠন ইলেকট্রনিক মিডিয়া মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েশন(ইমার) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মোহনা টেলিভিশনের সিইও এবং হেড অব মার্কেটিং তছলিম চৌধুরী। আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জিটিভির হেড অব সেলস এন্ড মার্কেটিং ফেরদৌস নাঈম পরাগ। শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ইমার বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রধান কমিশনার সহিদুল ইসলাম এবং নির্বাচন কমিশনার মিনহাজ উদ্দিন ও ডক্টর আল আমিন আগামী দুবছরের জন্য ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। এতে সহ-সভাপতি পদে ইটিভির জাকারিয়া হোসেন জয়, চ্যানেল আইয়ের জিয়াউল হক সুমন, স্টার নিউজের জহিরুল ইসলাম ও ; যুগ্ম সম্পাদকের দুই পদে গ্লোবাল টিভির রফিকুল রহমান নিক্সন ও বিজয় টিভির মাহামুদুল হাসান, অর্থ সম্পাদক এটিএন বাংলার আবদুল মালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক দুরন্ত টেলিভিশনের আশিকুর রহমান অভী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জিটিভির দীন ইসলাম তপু, প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক এখন টিভির সরকার হানিফ রাফি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক চ্যানেল আইয়ের লিমা আক্তার শিমু, আইন সম্পাদক এটিএন নিউজের কারিন কামাল এবং দপ্তর সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন চ্যানেল নাইনের সাইফুল আলম তপু। এছাড়া নির্বাহী সদস্যের সাতটি পদে নির্বাচিত হয়েছেন মাছরাঙ্গা টিভির আবদুস সালাম সোহাগ, একাত্তর টিভির সোহাগ হোসেন, দেশ টিভির আরিফুল ইসলাম রাজীব, এস এ টিভির শাকিলুর রহমান, এশিয়ান টিভির মাহমুদ জনি, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির এস এম জুবায়ের ও ডিবিসি নিউজের কে এম রাশেদুল। সবার সহযোগিতায় সংগঠনকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় জানান ইমার নব-নির্বাচিত সভাপতি তছলিম চৌধুরী।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, গত ০৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংঘটিত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে আনসার সদস্যদের ভূমিকা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ ধরনের প্রচার সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর ।
উল্লেখিত তারিখে সকাল আনুমানিক ১০:৩০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার ভবনে আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবার জন্য আগত সেবা প্রত্যাশীদের মধ্যে আল্ট্রাসনোগ্রামের দৈনিক সীমা পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এসময় দায়িত্বরত রেডক্রিসেন্ট কর্মীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যগণ তাৎক্ষণিকভাবে উভয় পক্ষকে পৃথক করে পরিস্থিতি শান্ত রাখেন।
পরবর্তীতে কিছু ব্যক্তি হাসপাতালের রেজিস্ট্রার মহোদয়ের কক্ষে অনধিকার প্রবেশ করে উত্তেজনাপূর্ণ আচরণ করেন এবং মব সৃষ্টির চেষ্টা করেন। রেজিস্ট্রার মহোদয়ের অনুরোধে আনসার সদস্যরা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে মব নিয়ন্ত্রণে আনেন ও চিহ্নিত দুইজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন।
এ ঘটনায় দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পেশাদারিত্ব, ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দিয়েছেন। কোনো সাংবাদিককে বাধা প্রদান বা সংবাদ প্রচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়নি—এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অসত্য।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি স্থাপনা, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট স্থানে আনসার সদস্যরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন এবং ভবিষ্যতেও জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।
সুতরাং,বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে যে বিভ্রান্তিকর তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে এবং সেসব অসত্য সংবাদ প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হচ্ছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত সেপ্টেম্বর-২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৭১ কোটি ৬০ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ৬ কেজি ৩৫৬ গ্রাম স্বর্ণ, ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম রূপা, ৯,২৪৮টি শাড়ী, ১৩,৫৫৮টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ১১,৪৬১টি তৈরী পোশাক, ১,২৮৬ মিটার থান কাপড়, ৩,৯১,৭৯৩টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ২,৯৫২ পিস ইমিটেশন গহনা, ১৩,৬১,২৭৬টি আতশবাজি, ৪,২০২ ঘনফুট কাঠ, ২,০৩৫ কেজি চা পাতা, ১১,৩৭৭ কেজি সুপারি, ৮১,৭৮০ কেজি কয়লা, ৭৩৫ ঘনফুট পাথর, ৪,৬৩০ ঘনফুট বালু, ৬,৩৪৯ কেজি সুতা/কারেন্ট/দুয়ারি জাল, ৩৭৯টি মোবাইল, ৩,৪৪৩টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৩৫,০৬২টি চশমা, ১৭,২৬৯ পিস যানবাহনের যন্ত্রাংশ, ৩২,৭৭৮ কেজি জিরা, ১৭,৬৪১ কেজি চিনি, ৯,৪৫১ কেজি পিয়াজ, ১৩০ কেজি রসুন, ১৩,২৭৬ কেজি সার,
৪,১৬৪ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ১,৫৮১ প্যাকেট কীটনাশক, ১৮৯ লিটার ডিজেল, ৪,৩৯,০৩৪ পিস চকোলেট, ৭৩,৫৪০ ভারতীয় রূপি, ৩০ হাজার ইউএস ডলার, ১,৫২৫টি গরু/মহিষ ১৯টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ১২টি পিকআপ/মহেন্দ্র, ১টি ট্রাক্টর, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৬টি ট্রলি, ১৩০টি নৌকা, ৩৬টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৬৬টি মোটরসাইকেল এবং ৬৭টি বাইসাইকেল/ভ্যান।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ২টি দেশী/দেশীয় পিস্তল, ০২টি ম্যাগাজিন, ১০০ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং ৩টি অন্যান্য অস্ত্র।
এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ২০,৮৭,১৪৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪ কেজি ৬৬৩ গ্রাম হেরোইন, ৪,৪৯১ বোতল ফেনসিডিল, ১২,১১৩ বোতল বিদেশী মদ, ৩৮৪ লিটার বাংলা মদ, ১,১০৮ ক্যান বিয়ার, ১,২৯৮ কেজি গাঁজা, ২,২৪,৮১১ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ১০ কেজি তামাক পাতা, ৫৭,৭৪৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৪,৩৮৪ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ১২,২৪৯টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, এম কফিডিল ৪০টি, এবং ৭,৫৪,২৫৮পিস বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও অন্যান্য ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৮ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১১৯৭ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ০৯ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৮০৫ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পুলিশ কনস্টেবল পাপেল হাসানের (বিপি-৯৩১৩১৬৯২৮২) বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, যৌতুক দাবি এবং স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তুলে তৃতীয় স্ত্রী হাফিজা আক্তার আঁখি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বদলগাছীর বিষ্ণুপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে হাফিজা আক্তার বলেন, ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর পারিবারিকভাবে পাপেল হাসানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার পরিবারের কাছ থেকে বাড়ি মেরামতের কথা বলে ৭ লাখ টাকা যৌতুক নেওয়া হয়। বিয়ের পর পাপেল কর্মস্থল বগুড়ায় থাকাকালীন তারা ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে সুস্থ হওয়ার পর তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে ভাড়া বাসা ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, সাত মাস পর পাপেলের নতুন কর্মস্থল বগুড়ার সারিয়াকন্দির চন্দন বাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ওঠার পর সংসার শুরু হলেও সেখানে কোনো খরচ দিতেননা পাপেল। এরপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। বিষয়টি জানিয়ে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
হাফিজা আক্তারের দাবি, পরে পাপেল আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় মারধর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং ভরণপোষণ বন্ধ করে দেন। এরপর তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। কিছুদিন পর হাফিজা জানতে পারেন, পাপেল এর আগেও দুটি বিয়ে করেছেন এবং যৌতুকের জন্য তাদেরও তালাক দিয়েছেন। একই কৌশলে তাকে গোপনে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন।
তিনি জানান, এসব ঘটনায় তিনি বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার, পাবনা পুলিশ সুপার, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টারেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো পক্ষই এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বরং তাকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা করতে করতে বলেছেন।
পাপেলের প্রথম স্ত্রী সোনালী আক্তার বলেন, পাপেলের পরিবারের অবস্থা ভালো ছিল না। পুলিশে চাকরির জন্য তার বাবার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নেওয়ার পর তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু কিছুদিন পরই পাপেল তালাক দিয়ে নতুন জীবন শুরু করেন। তিনি দাবি করেন, পাপেল একজন অর্থলোভী মানুষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনস্টেবল পাপেল হাসান মুঠোফানে বলেন, আমি সরকারি চাকরি করি, কেন ভরণপোষণ দিব না? আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু বলবোনা।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজা আক্তারের বাবা রকিব উদ্দিন, চাচা রফিকুল ইসলাম, চাচাতো ভাই জহুরুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নওগাঁর বদলগাছীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশুদের নিয়ে প্রাণবন্ত ‘শিশু সমাবেশ’। শনিবার (১১ অক্টোবর ২০২৫) সকালে বদলগাছী কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিসম)-এর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানটি হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর রহমান।সম্মানিত বক্তা ছিলেন ফটোসাংবাদিক মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং সোহানি ইসলাম সমাপ্তি, বিসম অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রতিনিধি। অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা সমাজকল্যাণ সংস্থা-এর প্রকাশনা সম্পাদক আলেয়া বেগম আলো।
ফটোসাংবাদিক সাজ্জাদ বলেন, “শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ— তাদের সঠিক পথে এগিয়ে নিতে পরিবার ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ত্ব করেন মিস অন্নি ইসলাম, অ্যাক্রেডিটেড মেডিয়েটর ও কিউনিটি মেডিয়েশন সেন্টারের যুগ্ম সম্পাদক।মডারেটর ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন জনাব এস. এন. ঘোষামী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও বিসম-এর চেয়ারম্যান।অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুদের হাতে জাতীয় পতাকা, খাতা ও শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। বক্তারা শিশুদের দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও স্বপ্নমুখী জীবনের গুরুত্ব সম্পর্কে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন।অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য