বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চরম জনবল সংকটে পড়েছে। উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষের একমাত্র ভরসার এই সরকারি হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যার জন্য ৩১ চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র চারজন। ফলে প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে ধার-কর্জ করে পটুয়াখালী, বরিশাল বা ঢাকায় চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা স্থানীয় আবুল কালাম বলেন, ‘গত বছর মেয়ে অসুস্থ হইলে কিস্তি কইরা বরিশাল নিয়া চিকিৎসা করাইতে হইছে। গরিব মানুষরে চিকিৎসা নেই, আমরা নাপা খাইয়া ঘরে বইসা থাকি।’
উপজেলা সদর ছাড়াও ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কুকুয়া ইউনিয়নের আজিমপুর বাজারে একটি ১০ শয্যার হাসপাতাল, আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর বাজারে ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী বাজারে একটি করে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং হলদিয়া ইউনিয়নের সেনের হাটে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। তবে চিকিৎসক সংকটের কারণে এসব কেন্দ্র কার্যত অচল।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতিদিন শত শত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি চিকিৎসাসেবাও দিচ্ছেন।
চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি কর্মচারী সংকটও ভয়াবহ। হাসপাতালের ৮৮টি তৃতীয় শ্রেণির পদের মধ্যে ৫২টি, ৩৪টি চতুর্থ শ্রেণির পদের মধ্যে ১৬টি শূন্য। ফলে প্রশাসনিক কাজ, পরিচ্ছন্নতা ও অন্যান্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা অভিযোগ করেন, নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। কিছু নার্সের অসৌজন্যমূলক আচরণ রোগীদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।
জনবল না থাকার কারণে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি অচল। প্রতিদিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বা অন্য জেলায় রেফার হচ্ছেন। ফলে উপকূলীয় দরিদ্র মানুষের জন্য বাড়তি বোঝা তৈরি হচ্ছে।
মানবাধিকারকর্মী জোসেফ মাহতাব বলেন, আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনবল সংকট কেবল প্রশাসনিক সমস্যা নয়, এটি একটি মানবিক সংকট। তবে আমতলীসহ উপকূলীয় এলাকায় দ্রুত চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিলে মানুষের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দারিদ্র্য এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি। এখানে চিকিৎসাসেবা শক্তিশালী করা মানে শুধু হাসপাতাল সচল রাখা নয়, এটি মানুষের মানবিক মর্যাদা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার বিষয় ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে জরুরি বিভাগসহ সব দিক সামলাতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক চেয়েছি।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. আবুল ফাত্তাহ জানান, আমরা বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানিয়েছি এবং দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের জন্য অনুরোধ করেছি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান প্রসিকিউটরের তথ্য উদ্ধৃত করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সশস্ত্র বাহিনীর আর কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কোনো পরিকল্পনা নেই।
শনিবার বাসসকে প্রেস সচিব বলেন, দআমরা আইসিটির প্রধান প্রসিকিউটরের দপ্তর থেকে জানতে পেরেছি যে এই মুহূর্তে সশস্ত্র বাহিনীর আর কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরিকল্পনা নেই।’
শতাধিক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে শফিকুল আলম বলেন, ‘এই খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া গুজব।’
তিনি জনগণকে এসব বিভ্রান্তিকর তথ্য বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই ধরনের অপপ্রচার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছে।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যেই এসব অসৎ গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’
প্রেস সচিব স্পষ্ট করে জানান, সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) বিলুপ্ত করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্থাটির সীমান্তবর্তী ও বহিঃদেশীয় গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে সরকার সংস্কারমূলক পদক্ষেপ বিবেচনা করছে।’ সূত্র: বাসস
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার চাপাতলা গ্রামের খালের পানিতে গোসলের সময় এক সাথে পানিতে ডুবে একই পরিবারের তিন কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এলাকায় শোকের মাতম চলছে।
মারা যাওয়া শিশুরা হলো মহম্মদপুর চাপাতলা গ্রামের তিন সহোদর আনারুলের মেয়ে তারিন (৯), সাজ্জাদের মেয়ে সিনথিয়া (৮) ও মো: তরীকুলের মেয়ে তানহা (৯) বছর।
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন জানান, শনিবার দুপুরে গোসলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে শিশু তিনটি বেরিয়ে যায়। পরে দুপুর ২টার দিকে চাপাতলা খালের পানিতে শিশু তিনটি গোসল করতে নামে। খালে প্রচন্ড গভীর ছিল এবং পানিতে প্রচুর স্রোত থাকায় তারা একে একে পানিতে ডুবে যায় । পানিতে পাট ধোয়ার কাজে ব্যাস্ত থাকা কয়েকজন হঠাৎ জানতে পারে একটি বাচ্চা পানিতে ডুবে গেছে । পরে তারা তাকে খুজে পায় এবং আরও জানতে পারে ২টি বাচ্চাকেউ পাওয়া যাচ্ছেনা। এর পর লোকজন পানিতে নেমে ৩টি শিশুকেই উদ্ধার করেন। দ্রুত তাদের মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরএমও ডা. আসাদুর রহমান তিনটি শিশুকেই মৃত ঘোষনা করেন।
স্থানীয় ও শিশুদের প্রতিবেশীরা বলেন, শিশু তিনটি সাতার জানতো তবে পানিতে প্রচন্ড স্রোত থাকায় এবং গভীরতা বেশি হওয়ায় তারা পানিতে ডুবে যায় এবং মারা যায় । ঘটনাটি নিয়ে মুহুর্তেই এলাকায় ও পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি জেনেছি এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার পেছনে কারও কোনো হাত না থাকলে এবং পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের দলাগাঁও গ্রামে এক ভিক্ষুকের মৃত্যুর পর তার ঘর থেকে মিলেছে এক বস্তা ভর্তি টাকা! এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নাসির মিয়া (৬৫) দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৯ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পরের দিন তার পরিবারের সদস্যরা ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি বস্তা দেখতে পান। কৌতূহলবশত বস্তাটি খুললে দেখা যায়, ভেতরে গুচ্ছ গুচ্ছ টাকাভর্তি নোট। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের উপস্থিতিতে টাকা গুনে দেখা যায়, মোট ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা রয়েছে বস্তাটিতে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কেউ কেউ মনে করছেন, নাসির মিয়া জীবনের বহু বছর ধরে ভিক্ষা ও মানুষের দেয়া সাহায্যের টাকা অল্প অল্প করে জমিয়ে রেখেছিলেন। আবার কেউ কেউ ধারণা করছেন, তিনি হয়তো কাউকে বিশ্বাস করতে না পেরে সেই টাকাগুলো ঘরেই লুকিয়ে রেখেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নাসির মিয়া ছিলেন অত্যন্ত মিতব্যয়ী ও সৎ মানুষ। কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এত টাকা তিনি ঘরে রেখে গেছেন, অথচ কেউ জানত না!
বহরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, ঘটনাটি সত্যি এবং এটি পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। কেউই বিশ্বাস করতে পারছে না, একজন ভিক্ষুকের ঘরে এত টাকা থাকতে পারে!
ঘটনাটি এখন দলাগাঁও গ্রামসহ পুরো মাধবপুরজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ১৫ অক্টোবরের (বুধবার) পরিবর্তে ১৭ অক্টোবর (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বৈঠক শেষে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানান, জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আগ্রহী জনগণের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে অনুষ্ঠানটি ১৭ অক্টোবর, শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। যদিও এর আগে কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল যে ১৫ অক্টোবর বুধবার বিকেলে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হবে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার প্রতিনিধিদের এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। সূত্র: বাসস
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিটঘর (উত্তর) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রেহেনা পারভীন চাকরি জীবনের সফল পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে অবসরে গেছেন। এই উপলক্ষে শনিবার সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাকে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী জাফর দস্তগীর।প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আতিক মাষ্টার ও মেজবা উদ্দিন।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, দানবীর মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোস্তফা কামাল, বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি পুলিশের উপপরিদর্শক নোমান মুন্সী, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আলী খান মাষ্টার,বিদায়ী প্রধান শিক্ষিকা রেহেনা পারভীন ও তার স্বামী নুরুল আমিন মাষ্টার,বিটঘর (দক্ষিণ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা বেগম,ব্যবসায়ী মোঃ জসিম উদ্দিন সেলিম, মাহমুদ আক্তার, ইকবাল হোসেন, ডা. শামিম হাসনাইন ভূইঁয়া, ডা. সুমির সাহা, কামরুল হাসান শিমুল ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ রতন প্রমুখ।
বক্তারা বিদায়ী প্রধান শিক্ষিকার চার দশকের কর্মজীবনের নিষ্ঠা, দক্ষতা ও অবদান তুলে ধরে তার আদর্শিক জীবনদর্শন থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষাগ্রহণের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠান শেষে রাজকীয় আয়োজনে ঘোড়ার গাড়িতে করে রেহেনা পারভীনকে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন। এ সময় উপস্থিত সবাই এক আবেগঘন পরিবেশে তাকে শেষ বিদায় জানান।
আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের ‘নোবেল পুরস্কার’ হিসেবে পরিচিত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার ২০২৫-এর জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের তরুণ সমাজকর্মী মাহবুব। তিনি পরিবেশ ও জলবায়ু কার্যক্রম, শিক্ষা, এবং স্বাস্থ্যসেবা এই তিনটি ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছেন।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংস্থা কিডস রাইটস ফাউন্ডেশন প্রতিবছর শিশুদের অধিকার ও মানবতার জন্য সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করা একজন শিশুকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রদান করে থাকে। এ বছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট ১৭২ জন শিশুকে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
১৭ বছর বয়সী মাহবুব কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের শোলাকিয়া এলাকার বাসিন্দা। শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে কাজের উদ্দেশ্যে তিনি ২০২২ সালে ‘দি চ্যাঞ্জ বাংলাদেশ’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটির মাধ্যমে তিনি শিশুদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি, বৃক্ষরোপণ, এবং গাছের চারা, খাতা, কলম ও পেন্সিল বিতরণের মতো নানা উদ্যোগ পরিচালনা করছেন।
এছাড়া হাওর এলাকার শিশুদের শিক্ষার অধিকার রক্ষায়ও তিনি নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন।
শিশু অধিকার রক্ষায় নিবেদিতপ্রাণ মাহবুব অসুস্থ শিশুদের রক্তের সংকট মোকাবিলায় ‘ব্লাড খুজি’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তিনি শিশু রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় রক্ত জোগাড়ে সহায়তা করে থাকেন।
শুধু তাই নয়, হাওর অঞ্চলের শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে তিনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। নিজের প্রেরণা সম্পর্কে মাহবুব বলেন, “শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। এই ভবিষ্যৎকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করে যেতে হবে।”
নানা আয়োজনে শনিবার সকালে নড়াইল জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে সংস্কৃতি পরিষদ বাংলাদেশের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে । অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনের মধ্যে ছিল শিশুদের চিত্র প্রদর্শনী,সাধারণ সভা, প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক প্রতিবেদন উপস্থাপন,আলোচনা সভা। দ্বিতীয় অধিবেশনে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নড়াইলের সারেগামাপা সঙ্গীত বিদ্যালয়ের শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করে । সম্মেলনে সংস্কৃতি পরিষদের ১০১টি সঙ্গীত বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন ।
নড়াইল শিল্পকলা অ্যাকাডেমির খোলা মঞ্চে শিশুদের আকা শতাধিক ছবি প্রদর্শণ করা হয় । বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের শিষ্য ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান (ড্রইং ও পেইন্ট)শিল্পী বিমানেশ বিশ্বাস চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ।
পরে শিল্পকলা অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে শুরু হয় সাধারণ সভা । সংগঠনের সভাপতি বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অর্ধেন্দু ব্যাণার্জি সভায় সভাপতিত্ব করেন । সাধারণ সম্পাদক পান্নালাল দে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ।
অনুষ্ঠানে চিত্রশিল্পী বিমানেশ বিশ্বাস তার বক্তব্যে বলেন,চারুকলা এবং সঙ্গীত অনেকটা একই সূত্রে গাথা । এই অনুষ্ঠানে শিশুদের আকা ছবি গুরুত্ব বহন করে । তিনি বলেন,বরেণ্য শিল্পী এস এম সুলতানের পরবর্তী প্রজন্ম বর্তমানে চারুকলা এবং সঙ্গীতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে । দেশের বিভিন্ন জেলাসহ সমাজের তৃণমুল প্রান্তে গড়ে উঠছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান । তিনি মনে করেন,দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সন্তানরা এদিক থেকে এগিয়ে আছে । ছোটরা ক্যানভাসে ছবি আকছে । নড়াইলের শিল্পাঞ্জলীর শিশুরা পাচ বছর ধরে ৬ হাজার বর্গফুট ছবি একেছে ফেলেছে । যা ওয়েবসাইটে যাবার পথে ।
তিনি বলেন, দেশের নাম করা প্রতিষ্ঠান সঙস্কৃতি পরিষদ বাংলাদেশ নড়াইলে এমন একটি প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান করেছে এর গুরুত্ব বহন করে ।
মন্তব্য