দুটি ছোট কক্ষ, সামনে খোলা বারান্দা, মাথার ওপরে টিনের ছাউনি। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। এ যেন রোগীদের জন্য নয়, দুর্ভোগেরই আরেক নাম- কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল।
এই হাসপাতালের বহির্বিভাগে মাত্র দুটি কক্ষে বসেন মেডিসিন বিভাগের ৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। একজন চিকিৎসক প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ১০০ জন রোগী দেখেন। কিন্তু চিকিৎসকের বসার জায়গা পর্যন্ত নেই, রোগীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত চেয়ার বা পর্যবেক্ষণ বেড। এত রোগীর চাপ থাকলেও লোকবল সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে রোগী ও তাদের স্বজনদের যেমন সমস্যা হয়, তেমনি চিকিৎসায় মনোযোগ দিতে পারছেন না চিকিৎসকরা। এ নিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগের শেষ নেই।
জানা গেছে, কুমিল্লা জেনালে হাসপাতালটি দেড়শ বছরের পুরোনো হলেও বাড়েনি অবকাঠামোগত উন্নয়ন। তথ্য মোতাবেক ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘কুমিল্লা চ্যারিটেবল ডিসপেনসারি বাই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’। ১৮৭১ সালের দিকে কুমিল্লা দাতব্য চিকিৎসালয়ের নামে প্রতিষ্ঠানটিতে রোগী ভর্তি শুরু করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠানটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পরিণত হয়। যা বর্তমানে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল বা সদর হাসপাতাল নামে পরিচিত। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রোগী দেখেন চিকিৎসকরা। মাত্র ৫০ শয্যার হলেও জেলার অন্যতম সরকারি হাসপাতালটির বহির্বিভাগে বছরে চিকিৎসা নেন কয়েক লাখ মানুষ। তবে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় দিন দিন সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অবকাঠামগত সংকটে শয্যা না থাকায় একটি কক্ষে যেমন চারটি বিভাগের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে, তেমনি দিন দিন অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁতিপূর্ণ হয়ে পড়ছে হাসপাতালের ভবনগুলো।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগের সামনে সহস্রাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন টিকিটের জন্য। কেউ কেউ পাশের গাছের নিচে বসে অপেক্ষা করছিলেন কখন তার ডাক আসবে টিকিটের জন্য।
পায়ের গোড়ালি সমস্যা নিয়ে আসমা বেগম (৬০) জানালেন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা-ব্যথা হয়ে গেছে। তাই তার মেয়েকে সিরিয়ালে দাঁড় করিয়ে দিয়ে তিনি পাশের গাছ তলায় অপেক্ষা করছেন। এদিকে বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করা রাজন আহমেদ এক দিনের জন্য ছুটি নিয়েছেন অফিস থেকে। তার স্ত্রীর থাইরয়েড সমস্যা। তিনি স্ত্রীর জন্য টিকিট নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। আক্ষেপ করে রাজন বলেন, ‘টিকিট কাটতেই আধা ঘণ্টা সময় লাগছে। ডাক্তার দেখিয়ে আবার শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে বাড়ি কখন যাব।’
নাম না প্রকাশ করার শর্তে আবাসিক ও বহির্বিভাগের অন্তত ৩ জন চিকিৎসক জানান, এত রোগীর চাপ, অথচ সে অনুযায়ী লোকবল নেই। প্রতিনিদই দেড় হাজার থেকে দুই হাজার রোগী দেখতে হয়। অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। সব মিলিয়ে চিকিৎসার মতো এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে এই পরিবেশে মনোযোগ ধরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবদুল করিম খন্দকার জানান, হাসপাতালটিতে দিনের পর দিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবকাঠামোগত সমস্যার পাশাপাশি রয়েছে লোকবলের সমস্যাও।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন নানা সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন মন্ত্রণালয়ে আড়াইশ বেড হাসপাতালে উন্নতি করার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
কুমিল্লাসহ আশেপাশের জেলার মানুষজনও জেনারেল হাসপাতালে আসেন সেবা নিতে। এখানে মেডিসিন, সার্জারি, শিশু ও গাইনি, অর্থোপেডিকসহ মোট নয়টি ইউনিটে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে। আই সি ইউসহ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা দিচ্ছেন শতাধিক চিকিৎসক ও নার্স। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি হাসপাতালটিকে আড়াইশ শয্যায় উন্নীতকরণের জন্য আবেদন করা হয়েছে মন্ত্রণালয়। যত দ্রুত এই প্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়ন হবে কুমিল্লাসহ আশেপাশের জেলার মানুষজন তত ভালো সেবা পাবেন।
আগামী ১৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে। এদিন বেলা ৩টায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে ৩০ রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের পাঁচটি বৈঠকে প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করা হয়। বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়, বিশেষজ্ঞরা রাজনৈতিক দলসমূহ থেকে প্রাপ্ত অভিমতসমূহ বিশ্লেষণ করে খুব শিগগিরই বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশ এবং চূড়ান্ত করা জুলাই সনদ সরকারের কাছে জমা দেবেন।
বৈঠকে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার সভায় অংশ নেন।
রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে গঠিত ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে দুই ধাপে সংলাপ করে। দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি হয়। তবে, সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য এখনো পুরোপুরি দূর হয়নি।
এর আগে বুধবার সংলাপের শেষ দিন জানানো হয়, রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামত বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারকে একটি প্যাকেজ সুপারিশ করবে কমিশন। ওই সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গতকাল বৃহস্পতিবার কমিশন সভা হয়। তবে সেখানে প্যাকেজ সুপারিশের চেয়ে জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠানের বিষয়ে বেশি আলোচনা হয়। পরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আগামী ১৫ অক্টোবর বেলা ৩টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষর অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানটি করার কথা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
সনদ সই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সংলাপে অংশ নেওয়া ৩০ রাজনৈতিক দল ও জোটকে দুজন করে প্রতিনিধির নাম পাঠাতে বলেছে কমিশন। এরই মধ্যে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নাম পাঠিয়েছে। অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দলের সঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং দলগুলো ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
বুধবার রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে কমিশনের আলোচনার তৃতীয় পর্যায়ের পঞ্চম দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর দেয়া মতামত সমন্বয় করে কমিশন আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে আলোচনা করে সরকারকে পরামর্শ দেবে।
তিনি জানান, যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কমিশন জুলাই সনদ প্রণয়নের এ পর্যায়ে এসেছে তার একটি বিশেষ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হবে এবং খুব দ্রুতই কমিশন সংশ্লিষ্ট দল ও জোটগুলোকে এ বিষয়ে অবহিত করবে। সেইসঙ্গে আগামী ১৫ অক্টোবর কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘আগামী ১৫ অক্টোবর কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে কমিশনের বেশ কিছু কাজ রয়েছে। ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’-এর ব্যাপারে আমরা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। আশা করছি, কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারব।’
তিনি জানান, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল সনদ স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রস্তুত। আমরা চাই, ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই এই ঐতিহাসিক দলিলের আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হোক।
আলী রিয়াজ বলেন, শুধু সনদ স্বাক্ষর নয়, একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে। আমরা আশা করছি ১৮-১৯ অক্টোবরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারব। এতে জুলাই সনদ প্রণয়নের পুরো প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক দলগুলোর জমাকৃত দলিল অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তিনি জানান, ৫ অক্টোবরের বৈঠকে কমিশন সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়-‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়নে গণভোটের ব্যবস্থা করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার আলোচনার মূল বিষয় ছিল-গণভোট কীভাবে এবং কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নির্ধারণ করা। আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছি, পরামর্শ ও মতামতের জন্য গতকাল বৈঠকের আগেও তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
আলী রিয়াজ আরও জানান, বিশেষজ্ঞরা আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন-একটি আদেশ জারি করে গণভোট আয়োজন করতে হবে। এতে দুটি ভাগ থাকবে—একটি অংশে বৃহত্তম ঐকমত্যের বিষয়গুলো এবং অন্য অংশে নোট অব ডিসেন্ট (লিখিত ভিন্নমত) থাকা বিষয়গুলো থাকবে। পরে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ গঠন করা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গণভোটের অনুমোদন পেলে জুলাই সনদে বর্ণিত সংবিধান সংশ্লিষ্ট সংশোধনগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আগামী ১৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় হবে।
ঐতিহাসিক এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন।
আজ জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয় বলে কমিশন থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বৈঠকে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া, ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সভায় অংশ নেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, আজকের সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের ৫টি বৈঠকে প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করা হয়।
এসময় বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করে বলেন, বিশেষজ্ঞগণ এবং রাজনৈতিক দলসমূহ থেকে প্রাপ্ত অভিমতসমূহ বিশ্লেষণ করে খুব শিগগিরই বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশ এবং চূড়ান্তকৃত জুলাই সনদ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে। সূত্র: বাসস
বিএনপির বিরুদ্ধে প্রবাসী সাংবাদিক ইউটিউবার ইলিয়াসের পরিকল্পিত অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজ সাংবাদিক ইলিয়াস হুসাইন পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতা বিরোধী একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে নেমেছে। এর সাথে আমাদের দলেরই একজন নব্য উদিত হওয়া মনোনয়ন প্রতাশ্যী ও তার চাচা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তারা বিশেষ দল ও গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়া-নেয়ার পাঁয়তারা করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশজুড়ে যেখানেই বিএনপির মাঠ ভালো, যেখানেই বিএনপির জেতার সম্ভাবনা রয়েছে সেখানেই একটি দল বিষদাগার করার চেষ্টা করছে। মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছেন। ইলিয়াস বিএনপির সেসব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার অপপ্রচারে নেমেছে। শরীফুজ্জামান শরীফ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দলের কাউন্সিলরদের ভোটে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনিপর নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। বিএনপির এই নেতা ও তার ভাই সাহিদুজ্জামান টরিকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফুন নাহার রিনা, জেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক মোমিন মালিতাসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর ইলিয়াস হোসাইনের ইউটিউব চ্যানেলে ‘দুই ভাই মিলে বাংলা সিনেমার স্টাইলে চাঁদাবাজি করছে’ শিরোনামে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও তার অনুসারীদের নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ায় এখন টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান হোসাইন জিয়াদ ও চিত্র সাংবাদিক পারভেজ রহমান এর ওপর সন্ত্রাসি হামলার প্রতিবাদ ও আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে নওগাঁ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁয় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের আয়োজনে শহরের মুক্তির মোড় শহীদ মিনারের পাশে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধনে সাপ্তাহিক প্রজন্মের আলোর সম্পাদক আব্দুর রহমান রিজভী’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা সভাপতি ও বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি মোফাজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও ডিবিসি’ জেলা প্রতিনিধি একে সাজু, ইনডিপেনডেন্ট টিভির জেলা প্রতিনিধি সাদেকুল ইসলাম, সকালের সময় এর প্রতিনিধি মাহমুদুন নবী বেলাল, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও বাংলা টিভির জেলা প্রতিনিধি আশরাফুল নয়ন, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি সবুজ হোসেন , দপ্তর সম্পাদক মাহাবুল আলম মারুফ ও
এখন টিভির জেলা প্রতিনিধি আব্বাস আলী সহ অন্যরা। মানববন্ধনে জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন- সংবাদ সংগ্রহের সময় স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে ক্যামেরা ভাঙচুর সহ অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলার সংবাদিক সংগঠনগুলো ঘটনার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচী পালন করছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনগুলো। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের এখনো পুলিশ গ্রেফতার করছে না। পুলিশ প্রশাসনের নীবর ভূমিকা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। অবিলম্বে হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানানো হয়।
‘তরুণ প্রজন্মের প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনগণের মাঝে পৌঁছে দিতে গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ এবং ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যাগে কালাই সরকারি মহিলা কলেজ থেকে পাঁচশিরা বাজার পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
গণমিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সচিব ও বিএনপি নেতা মো. আব্দুল বারী বলেন, দল থেকে যদি আমাকে নমিনেশন দেওয়া হয় এবং জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে আমি এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করবো। আমার নির্বাচনী এলাকায় কোন অফিসে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ চলবেনা। আমি নিজে চাকরি জীবনে শতভাগ সততার সাথে কাজ করেছি এবং আমার অফিস ছিল ঘুষ দূর্নীতি মুক্ত। আমার কাছে কোন অনিয়মের প্রশ্রয় নেই। বিশেষত ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ভয়ের সংস্কৃতি এখানে থাকবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান সুইট, ক্ষেতলাল উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান, ক্ষেতলাল পৌর বিএনপির সভাপতি ক্ষেতলাল পৌর বিএনপির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আব্দুল আলীম, আক্কেলপুর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আরিফ ইফতেখার আহম্মেদ রানা, কালাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মৌদুদ আলম সরকার, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান এলান, আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বজলুর রহমান, উদয়পুর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক আব্দুল আলীম, পুনট ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহম্মেদ সিদ্দিকী রিপন, জিন্দারপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফিরোজ কবিরসহ উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
পুরো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বিএনপির ৩১ দফা কর্মপরিকল্পনার লিফলেট সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেন এবং আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর প্যানেল ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ ইশতেহার ঘোষণা করেছে। নিয়মিত চাকসু নির্বাচন জারি রাখা, নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার আদায়ে কাজ করার অঙ্গীকার করে ইশতেহার ঘোষণা করেন প্যানেলটির জিএস প্রার্থী সুদর্শন চাকমা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
ইশতেহারে আরো উল্লেখ করা হয়, আবাসন, পরিবহন, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ, শিক্ষা ও গবেষণা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া, জাতিগত বৈচিত্র্যে ও নারীবান্ধব ক্যাম্পাস, গণতন্ত্র, স্বায়ত্তশাসন ও মানবাধিকার নিয়ে বৈচিত্র্যের ঐক্য প্যানেল কাজ করে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে বৈচিত্র্যের ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা আজ আমাদের প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা করছি। আমরা ইতিহাসের সব গণসংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস ধারণ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণে আমাদের চলমান সংগ্রাম জারি রাখবো। নিয়মিত চাকসু নির্বাচন জারি রাখা, নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার আদায়ে আমরা কাজ করব।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব মুক্ত নিরাপদ একাডেমিক পরিবেশ নির্মাণে কাজ করব। মব ভায়োলেন্স, মোরাল পুলিশিং এর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ করে নারীর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণ-প্রকৃৃতি ও মানুষের নিরাপদ সহাবস্থান নিশ্চিত করব।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বৈচিত্র্যের ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ধ্রুব বড়ুয়া, জিএস প্রার্থী সুদর্শন চাকমা, এজিএস প্রার্থী জশদ জাকিরসহ প্যানেলের অন্যান্য সদস্যরা।
প্রায় তিনযুগ পর আগামী ১৫ অক্টোবর সপ্তমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চাকসু নির্বাচন। এ নির্বাচনে প্রার্থী রয়েছেন ৯০৮ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪১৫ জন, হল সংসদে ৪৭৩ জন এবং হোস্টেল সংসদে ২০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন ২৭ হাজার ৫২১ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৬ হাজার ৮৪ জন ও ছাত্রী ১১ হাজার ৩২৯ জন। নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণ চলবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
’গবেষণা ও মেডিকেল শিক্ষা: উদ্ভাবনের অনুপ্রেরনা, এক্রিডিটেশনের নিশ্চয়তা’ কেন্দ্রীয় বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আগামী ১৮ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দিনব্যাপী অনুষ্টিতব্য বৈজ্ঞানিক সিম্পোজিয়ামের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ফেডারেশ অব মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) কর্তৃক ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ আমাদের পার্শ্ববর্তী প্রায় সকল দেশের মেডিকেল কলেজগুলো বৈশ্বিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশে এই মুহুর্তে মেডিকেল শিক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজ হল বৈশ্বিক স্বীকৃতি। ইতোমধ্যে সরকার এই কাজের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল এডুকেশন এক্রিডিটেশন কাউন্সিল (বিএমইএসি) যেই সংস্থা মূলত সরকারী বেসরকারী মেডিকেল কলেজগুলোর ডব্লিউএফএমই কর্তৃক স্বীকৃতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই সিম্পাজিয়ামের অন্যতম মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল ডব্লিউএফএমই কর্র্তৃক বৈশ্বিক স্বীকৃতির জন্য মেডিকেল শিক্ষার মান উন্নয়ন।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ ও চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল নার্সিং কলেজ এর যৌথ উদ্যেগে আয়োজিত এ সিম্পোজিয়াম কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে। রেজিষ্ট্রেশনের কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সিম্পোজিয়াম অর্গানাইজিং কমিটির সম্মানিত চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন এক্সিকিউটিভ কমিটির সেক্রটারী ও অর্গানাইজিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. মুসলিম উদ্দিন সবুজ, কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মো. পারভেজ ইশবাল শরীফের পরিচালনায় উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের অধ্যাক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আকরাম পারভেজ চৌধুরী, অধ্যাদপক ডা. মনসরুল আলম, অধ্যাপক ডা. আলী হোসাইন, অধ্যাপক ডা. আসমা কবির সোমা, অধ্যাপক ডা. মুসলিনা আক্তার, ডা. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, নার্সিং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ মিসেস সানজিদা বিনতে আলম। আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সিম্পোজিয়ামের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান থাকবে।
মন্তব্য