গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গবাদিপশুর তড়কা রোগ (অ্যানথ্রাক্স) প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। কিন্তু ভয় দেখিয়ে সরকার নির্ধারিত ৮০ পয়সার ভ্যাকসিনের দাম নেয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। ফলে সরকারি দামের অতিরিক্ত কয়েক লাখ টাকা লুট করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
খামারিদের অভিযোগ, গত কয়েক দিনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে অ্যানথ্রাক্স। এ পর্যন্ত শতাধিক গবাদিপশু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আর এই সুযোগে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের লোকজন ভ্যাকসিনের সরকারি দামের থেকে ২০-৩০ টাকা বেশি নিচ্ছেন। দূর্যোগের সময় সেবার পরিবর্তে টাকা লুটে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ খামারিদের।
জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী রংপুর জেলার পীরগাছা ঘেঁষে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা। তড়কা রোগে এ পর্যন্ত পীরগাছায় মারা গেছেন ২ এবং আক্রান্ত আছেন ৭ জন ব্যাক্তি। আর এ রোগের জীবাণু ছড়ায় অসুস্থ গবাদিপশুর মাংস থেকে। পীরগাছা উপজেলা ঘেঁষা সুন্দরগঞ্জেও এ পর্যন্ত শতাধিক গরু মারা গেছে। প্রতিনিয়ত জবাই করা হচ্ছে আক্রান্ত গরু। আর এ সকল গরুর মাংস কেটে অসুস্থ আছেন প্রায় অর্ধশত লোক। এ সংক্রান্ত নিউজ হলে নড়েচড়ে বসে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। গবাদিপশু গুলোকে ভ্যাকসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় জরুরি এক বৈঠকে। সেই থেকে চলছে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম। এতে বিভিন্ন কৌশল ও হয়রানির ভয়ভীতি দেখিয়ে ৮০ পয়সার ভ্যাকসিন নেয়া হচ্ছে ২০-৩০ টাকা। সচেতনতায় কোনো প্রচারণা না থাকায় এখনো ৯০ শতাংশ গবাদিপশু ভ্যাকসিনের বাহিরে আছে। এ উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ গবাদিপশুর মধ্যে ভ্যাকসিন পাবে প্রায় ২ লাখ। তাতে অর্ধ কোটির অধিক টাকা লুটে নিবেন ভ্যাকসিন কার্যক্রমে জড়িতরা। এ দূর্যোগপূর্ণ সময়ে তাদের মানবিক হওয়ার দাবি জানিয়েছেন পশুমালিকরা।
এদিকে, আড়াই লাখ গবাদিপশুর বিপরীতে ভ্যাকসিন এসেছে মাত্র ২৬ হাজার ৪০০। ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছে ২২ হাজার গবাদিপশু। অবশিষ্ট ৪ হাজার দিয়ে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রেখে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। তবে, নতুন করে আরও ৫০ হাজার ভ্যাকসিন চেয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আড়াই লাখ গবাদিপশুর বিপরীতে মাত্র ২৬ হাজার ভ্যাকসিন বরাদ্দ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খামারিরা।
বামনডাঙ্গার দিনমজুর আজহার মিয়া জানান, আমার ৪ টা গরু এবং ২ টা ছাগল। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দুইজন এসে বললো তড়কার ভ্যাকসিন নেন। জিজ্ঞেস করলাম কতো করে দিতে হবে। তখন তারা ২০ টাকা দাবি করেন। কম করে নিতে বললাম, তখন তারা জানালো ২০ টাকায় দিতে হবে। প্রাণিসম্পদ অফিসে গেলে আরও বেশি লাগবে। তখন আর আমাদের খুজে পাবেন না। আমি বাধ্য হয়ে ২০ টাকা করে দিয়েছি।
মনমথ গ্রামের ভ্যান চালক মজিবর রহমান বলেন, এটেতো সবাই বসি আছি। ওমরা মটর সাইকোল নিয়া আসিয়া কয় ভ্যাকসিন নেও গরুর। কনু বলে কতো করি নেন। তকন কয় বিশ টেকা করি নেই। দশ টেকা করি দিবার চাইনো তাক কয় না। বাজারোত ফুরি আইনো ম্যালা গরু। বিশ টেকা করি ওমরা সবাই দিছে। পরে ২০ ট্যাকা দিয়া একটা গরুর টিকা নিছোম।
সোনারায় ইউনিয়নের পূর্ব সোনারায় গ্রামের মো. রফিক মিয়া বলেন, 'আমি শুনলাম গরুর নতুন একটা রোগ ছড়াইছে। হামার বাড়িত ৫ টা গরু আছে। এখন টিকা কই আছে, কি ভাবে পাওয়া যাবে কিছুই জানি না।'
খামারি সেজে কথা হয় ভ্যাকসিনেটর চন্দন কুমার রায়ের সাথে। তিনি বলেন, ‘পশু প্রতি ২০ টাকা করে নিচ্ছি। আর এ টাকা আমাদের অফিসে জমা দিতে হয়। ভ্যাকসিনের দাম ৮০ পয়সা সরকারি নির্ধারিত হলেও কেন বেশি নিচ্ছেন জানতে চাইলে বলেন- আমাদের অফিসের আনুষঙ্গিক কিছু খরচ আছে সেগুলো এখান থেকে তুলতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিপ্লব কুমার দে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আনুষাঙ্গিক কিছু খরচ থাকায় ১০ টাকা করে নিতে বলা হয়েছে। এর বেশি নিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো গবাদিপশুর মালিককে ভয় দেখিয়ে নয় বরং কেউ টাকা দিতে অক্ষম হলেও তাকে ভ্যাকসিন দেয়ায় নির্দেশনা দেয়া আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস প্রতি ভ্যাকসিন ৮০ পয়সা বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, 'ভ্যাকসিন প্রতি কতো টাকা নেয়া যাবে বিষয়টি প্রাণিসম্পদ ভালো বলতে পারবে। তবে আমি যতটুকু জানি তাতে টিকা প্রতি ১০ টাকা করে নিচ্ছেন তারা। তবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত, এখানে আমাদের বলার কিছু নাই বলেও জানান ইউএনও।'
আন্তর্জাতিক র্যাংকিং সিস্টেম Times Higher Education (THE) 2026 র্যাংকিং-এ গবেষণার মান সূচকে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বে ৭৪৬ তম স্থান অর্জন করেছে।
এ বছরের মার্চ মাসে প্রথমবারের মত সংশ্লিষ্ট কমিটি এ র্যাংকিং সিস্টেম জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদি প্রদান করে। সংস্থাটি গবেষণার মান ও পরিবেশ, শিক্ষকতার মান, ইন্ডাস্ট্রি থেকে আয় ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টি ভঙ্গি এ পাঁচটি প্রধান সূচক বিবেচনা করেছে। যেখানে দেশের পাবলিক ও বেসরকারীসহ ১৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় এতে স্থান পেয়েছে।
২০২৬ সালের তালিকায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দশম (১০ তম) ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টি ভঙ্গি সূচকে সপ্তম ( ৭ তম) স্থান অর্জন করেছে ।
প্রায় সপ্তাহকাল ছুটি শেষে গত মঙ্গলবার প্রথম কর্মদিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ারুল আজীম আখন্দ দুপুরে তাঁর অফিসে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং কমিটিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন আমাদের র্যাংকিং যাত্রায় প্রাথমিক এ অর্জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং এ পরিবারের সবার। যেকল শিক্ষক-শিক্ষিকামন্ডলী শিক্ষকতা ও দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মেধাবী শিক্ষার্থী ও তরুণ গবেষকদেরকে মানসম্মত গবেষণা পরিচালনা করছেন তাদেরকে তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
তিনি জানান Quacquarelli Symonds (QS) র্যাংকিং ও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচির উপর ভিত্তি করে টাইমস হায়ার এডুকেশন কর্তৃক প্রদত্ত ইমপ্যাক্ট র্যাংকিং নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ালিটি রিভিউ ও র্যাংকিং কমিটি এ বছরের শুরু থেকে কাজ করে আসছে।
সম্প্রতি এ কমিটি কিউএস র্যাংকিং সিস্টেম এর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়া শাখার ম্যানেজার রামি আওয়াদ কে নিয়ে ওয়েবিনার আয়োজন করে। সবার সম্মিলিত প্রয়াস থাকলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো সম্মানজনক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ালিটি রিভিউ ও র্যাংকিং কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মোঃ মতিউর রহমান এ অর্জনকে সামনে এগিয়ে নিতে সবাইকে একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার মি. পাওনকুমার তুলসিদাস বাদে ও দ্বিতীয় সেক্রেটারি মি. গৌরব কুমার আগারওয়াল বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার সময় বেনাপোল স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। পরে তিনি বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক মোঃ শামীম হোসেন রেজা সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং নবনির্মিত কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল ঘুরে ঘুরে দেখেন। এ সময় দুই দেশের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও সীমান্ত বাণিজ্যের সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়।
সৌজন্য সাক্ষাৎ ও পরিদর্শন শেষে ডেপুটি হাইকমিশনার ও দ্বিতীয় সেক্রেটারি বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন।
পরিদর্শনকালে বেনাপোল স্থলবন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও ইমিগ্রেশন অফিসারগণ উপস্থিত ছিলেন।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন রেজা জানান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার এবং দ্বিতীয় সেক্রেটারি ভারতে যাওয়ার জন্য বেনাপোলে আসেন। এরই ফাঁকে তিনি এবং দ্বিতীয় সেক্রেটারি বেনাপোল বন্দর ও নবনির্মিত কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি ঘুরে ঘুরে দেখেন। পরে বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
জামালপুরে ১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমান (৫২) কে গ্রেফতারের দাবিতে ও সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে শহরের দড়িপাড়া বাইপাস মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে মানববন্ধন করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম,বজলু মোল্লা,সাখাওয়াত হোসোন শুভ, আমির উদ্দিন সহ আরো অনেকে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে দড়িপাড়া এলাকায় শিশুটির বাবা-মা বাসায় না থাকার সুযোগে প্রতিবেশী সিদ্দিক শিশুটিকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা বিলকিছ বেগম বাদী হয়ে জামালপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা হলেও এখন পর্যন্ত ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আসামি গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয়রা প্রায় এক ঘণ্টা জামালপুর–টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে, এতে উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় সাখাওয়াত হোসেন শুভ জানান, আগামী চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আসামীকে গ্রেফতার করতে না পারলে আবারও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এ সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে এলাকাবাসী অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে ‘তারুণ্যনির্ভর আগামীর নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার থানার মোড় এলাকায় উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাচ্চু মোল্লা বলেন, “জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এই কর্মী সম্মেলন থেকেই আমরা আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই আসনে বিএনপিকে বিজয়ী করার অঙ্গীকার করছি।”
তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের তারুণ্যনির্ভর নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেনসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন থেকে কয়েক শতাধিক নেতৃস্থানীয় নেতাকর্মী ও দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ায় এখন টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান হোসাইন জিয়াদ ও চিত্র সাংবাদিক পারভেজ রহমান এর ওপর সন্ত্রাসি হামলার প্রতিবাদ ও আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে নওগাঁ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁয় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের আয়োজনে শহরের মুক্তির মোড় শহীদ মিনারের পাশে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচী পালিত হয়।
মানববন্ধনে সাপ্তাহিক প্রজন্মের আলোর সম্পাদক আব্দুর রহমান রিজভী’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা সভাপতি ও বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি মোফাজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও ডিবিসি’ জেলা প্রতিনিধি একে সাজু, ইনডিপেনডেন্ট টিভির জেলা প্রতিনিধি সাদেকুল ইসলাম, সকালের সময় এর প্রতিনিধি মাহমুদুন নবী বেলাল, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও বাংলা টিভির জেলা প্রতিনিধি আশরাফুল নয়ন, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি সবুজ হোসেন , দপ্তর সম্পাদক মাহাবুল আলম মারুফ ও
এখন টিভির জেলা প্রতিনিধি আব্বাস আলী সহ অন্যরা। মানববন্ধনে জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন- সংবাদ সংগ্রহের সময় স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে ক্যামেরা ভাঙচুর সহ অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলার সংবাদিক সংগঠনগুলো ঘটনার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচী পালন করছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনগুলো। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের এখনো পুলিশ গ্রেফতার করছে না। পুলিশ প্রশাসনের নীবর ভূমিকা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। অবিলম্বে হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানানো হয়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা সভাপতি ও বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, সাংবাদিকরা জনগণের স্বার্থ রক্ষায় তথ্য সংগ্রহ ও কলম ধরতে পারছে না। দূর্নীতির বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা কলম ধরলে বিভিন্ন ভাবে হেনস্তা হতে হচ্ছে। অনেকের প্রাণ চলে যাচ্ছে। এসময় সরকার কেন নীরব। বিষয়টি তদন্তপূর্বক দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানাই। শুধু এখন টিভির সাংবাদিক না, সাগর রুনি সহ যত সাংবাদিককে হত্যা ও নির্যাতন করা হয়েছে সবগুলোর বিচার হওয়া দরকার। শুধু আইনের আওতায় নিয়ে আসলে হবে না, শাস্তি দিতে হবে যেন আগামীতে কেউ সাংবাদিকদের ওপর হামলা করার সাহস দেখাতে না পারে।
সাপ্তাহিক প্রজন্মের আলোর সম্পাদক আব্দুর রহমান রিজভী বলেন- সমাজের রন্ধে রন্ধে দূর্নীতি। এসব দূর্নীতি যখন সামনে নিয়ে আসা হয় তখনই সাংবাদিকের ওপর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয় এবং হামলা চালানো হয়। সঠিক বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা বার বার হামলা করে পার পেয়ে যায়। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে রাষ্ট্র ব্যবস্থা এক সময় ভঙ্গুর হয়ে যাবে।
গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বেপরোয়া বাইক চালিয়ে পড়ে যান মামুন (২২) মিয়া, ততক্ষনাৎ একটি প্রাইভেটকার তার মাথায় চাপা দেয়। স্পটেই মারা যান মামুন মিয়া। পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সড়কসহ রূপগঞ্জের এসিয়ান হাইওয়ে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কগুলো এখন এক ভয়ংকর মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। পুলিশ বলছে বেপরোয়া গতিই ক্ষতির কারন। গতিই প্রতিনিয়নত কেড়ে নিচ্ছে তাজা তাজা প্রাণ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, গত মাসে শুধু ৩০০’শ ফুট সড়কেই প্রাণ হারিয়েছে ১১ জনেরও বেশি। সড়কটিতে মোটরসাইকেল চালকদের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে বেশি বেশি। গত পাঁচ বছরে সড়কটিতে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মারা যান ১৭৫ জন। পুলিশ বলছে, এসবের ৯০ শতাংশই মোটরসাইকেলে ঘটেছে।
স্থানীয় জনগন ও পুলিশের ভাষ্যমতে, রাত যত গভীর হয়, বাইকাররা তত বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠে সড়কে। যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের কারণে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলাচল বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। অভিযান বন্ধ হওয়ার পর আবারও শুরু হয়েছে বেপরোয়া গতিতে বাইক চলাচল। সড়কে কয়েকটি চেকপোস্ট থাকলেও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বেপরোয়া বাইক চলাচল।
সড়কের এই নৈরাজ্য বন্ধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি জানিয়ে স্থানীয়রা বলছে, দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই এখানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার খবর জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এছাড়াও কিশোর-তরুণদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল রেসের কারণেও অহরহ সড়কে অকালে প্রাণ ঝরছে। গত ১৬ সেপ্টম্বর রাতে স্কুল ছাত্র কাব্য তার বন্ধু সুজানাকে নিয়ে ঘুরতে আসে পূর্বাচলের এই সড়কে। বউরারটেক এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লেকে ডুবে যায়। ১৭ তারিখে সুজানার মরদেহ এবং ১৮ তারিখ কাব্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ১৮ তারিখে এই সড়কের সুলফিনা ভূঁইয়াবাড়ি ব্রিজে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে মারা যান আব্দুর রউফ ও সিপন নামের দুই ব্যবসায়ী।
শুধু দুর্ঘটনাই নয়, এসব সড়ক ঘিরে রয়েছে আরো নানা অনিয়ম। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, উল্টো পথে যানবাহন চলা থামছে না। হকারদের অবৈধ দখলদারিও রয়েছে এখানে। সেই সঙ্গে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করার চিত্র চোখে পড়ছে নিয়মিত। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় না, যা নিরাপত্তাহীনতা আরো বাড়িয়ে তুলছে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সড়কের আশপাশে খোলা বাজার থাকায় সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তিদের ভিড় থাকে। এ সময়ে রাজধানী ও আশপাশের এলাকার কিশোররা মাতাল অবস্থায় প্রতিযোগিতামূলকভাবে গাড়ি চালায় এই সড়কে। চেকপোস্টের অভাব ও প্রশাসনের নজরদারির শিথিলতার সুযোগেই তারা এমন ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসারইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের লোকবলের সঙ্কট রয়েছে। তারপরও আমরা স্বাধ্যমত চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। টহল পুলিশ এসব সড়কে রাতে সক্রিয় থাকে। আগের চেয়ে অনেকটা দুর্ঘটনা কমে আসছে। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
মেহেরপুরে সার সংকটে কৃষক দিশেহারা। বিভিন্ন ডিলারদের কাছে থেকেও সরকারি মুল্যে সার কিনতে পারছেননা। অথচ, ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের যোগসাজসে কালোবাজারে সেই সার পাচার হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর ) সকালে গাংনী উপজেলার বিএডিসির ডিলারের সার খুচরা ব্যবসায়ীর মাধ্যমে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহে পাচারের সময় জনতার আটক করেন। স্থানীয় জনতা গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসকে খবর দেন। উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে আসেন। পরে সার ব্যবস্থাপনা সংশোধনী আইন ২০১৮ এর ৪ ধারায় দোষী সাবস্থ হওয়ায় খুচরা সার ব্যবসায়ী মের্সাস আলীম ট্রেডার্সের মালিক বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মাহাবুব হাসানকে ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড ও উদ্ধার হওয়া ১২ বস্তা টিএসপি সার স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সরকারি মূল্যে তাৎক্ষণিক বিক্রি করেন।
এদিকে খুচরা সার ব্যবসায়ী মাহবুব হোসেন জানান, সে মুলত কীটনাশক ব্যবসায়ী। স্থানীয় বিসিআইসি সার ডিলার এনআর ট্রেডার্সরে মালিক এনামুল হকের কাছ থেকে গোপনে ১২ বস্তা সার কিনে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের খুচরা সার ব্যবসায়ী লাল মোহাম্মদের কাছে বিক্রি করেছি। তিনি আরও জানান,প্রত্যেকটা ডিলার আমাদের মত খুচরা সার ব্যবসায়ীদের কাছে গোপনে সার বিক্রি কেরেন। আমরা কৃষকদের কাছ থেকে তাদের এনআইডি কার্ড জমা নিয়ে সার বিক্রি করি।
এদিকে স্থানীয়রা এলাকার জন্য বরাদ্দকৃত সার অন্যস্থানে কালোবাজারীর মাধ্যমে পাচার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, আমরা ডিলারদের কাছে ধর্ণা দিয়েও সরকারি মূল্যে সার কিনতে পারছিনা। কিন্তু খুচরা দোকানে গেলে ১৪ শ টাকা বস্তার টিএসপি সার সাড়ে ২২ শ বা ২৩ শ টাকা দিলে দিচ্ছে। আবার গাংনীর সার কালোবাজারীর মাধ্যমে মেহেরপুর ও মুজিবনগর উপজেলার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাচ্ছে। মার খাচ্ছে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।
জানা গেছে, সার ডিলার এনামুল হকের বাড়ি গাংনী উপজেলা শহরে হলেও তিনি ধানখোলা ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এনামুল হক সার কৃষকদের মাঝে সরকারি মুল্যে বিক্রি না করে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় কালোবাজারে বিক্রি করে থাকেন।িইতোমধ্যে এলাকার ভূক্তভোগী কৃষকরা তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি বিভাগে লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্ত অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরণের ব্যবস্থা নেইনি জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
সার কালোবাজারী সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য কৃষি বিভাগ চেষ্টা করছে বলে জানালেন, গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার
ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি যেসব ডিলার সার কালোবাজারে দিচ্ছেন তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য