স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও স্থানীয় সরকার বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সাবেক সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণার অন্যতম অগ্রদূত। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে ২০২৪ সালে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উন্নয়নে গঠনমূলক ও বাস্তবসম্মত প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন, যা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ স্থানীয় সরকার ও সমবায় বিষয়ক একজন লব্ধপ্রতিষ্ঠ গবেষক ও লেখক। তিনি সারা জীবন দেশের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে তাঁর রচিত প্রায় ২০টি গ্রন্থ ও দেশী বিদেশী জার্নাল ও পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত অসংখ্য প্রবন্ধ, যা যুগের পর যুগ ধরে আমাদের জ্ঞানচর্চাকে সমৃদ্ধ করবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক অধ্যাপক জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিতে (বাংলাদেশ) স্থানীয় শাসন উপদেষ্টা হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন সৎ, প্রজ্ঞাবান ও নিবেদিতপ্রাণ গবেষককে হারালো।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বেপরোয়া বাইক চালিয়ে পড়ে যান মামুন (২২) মিয়া, ততক্ষনাৎ একটি প্রাইভেটকার তার মাথায় চাপা দেয়। স্পটেই মারা যান মামুন মিয়া। পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সড়কসহ রূপগঞ্জের এসিয়ান হাইওয়ে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কগুলো এখন এক ভয়ংকর মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। পুলিশ বলছে বেপরোয়া গতিই ক্ষতির কারন। গতিই প্রতিনিয়নত কেড়ে নিচ্ছে তাজা তাজা প্রাণ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, গত মাসে শুধু ৩০০’শ ফুট সড়কেই প্রাণ হারিয়েছে ১১ জনেরও বেশি। সড়কটিতে মোটরসাইকেল চালকদের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে বেশি বেশি। গত পাঁচ বছরে সড়কটিতে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মারা যান ১৭৫ জন। পুলিশ বলছে, এসবের ৯০ শতাংশই মোটরসাইকেলে ঘটেছে।
স্থানীয় জনগন ও পুলিশের ভাষ্যমতে, রাত যত গভীর হয়, বাইকাররা তত বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠে সড়কে। যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের কারণে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলাচল বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। অভিযান বন্ধ হওয়ার পর আবারও শুরু হয়েছে বেপরোয়া গতিতে বাইক চলাচল। সড়কে কয়েকটি চেকপোস্ট থাকলেও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বেপরোয়া বাইক চলাচল।
সড়কের এই নৈরাজ্য বন্ধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি জানিয়ে স্থানীয়রা বলছে, দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই এখানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার খবর জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এছাড়াও কিশোর-তরুণদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল রেসের কারণেও অহরহ সড়কে অকালে প্রাণ ঝরছে। গত ১৬ সেপ্টম্বর রাতে স্কুল ছাত্র কাব্য তার বন্ধু সুজানাকে নিয়ে ঘুরতে আসে পূর্বাচলের এই সড়কে। বউরারটেক এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লেকে ডুবে যায়। ১৭ তারিখে সুজানার মরদেহ এবং ১৮ তারিখ কাব্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ১৮ তারিখে এই সড়কের সুলফিনা ভূঁইয়াবাড়ি ব্রিজে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে মারা যান আব্দুর রউফ ও সিপন নামের দুই ব্যবসায়ী।
শুধু দুর্ঘটনাই নয়, এসব সড়ক ঘিরে রয়েছে আরো নানা অনিয়ম। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, উল্টো পথে যানবাহন চলা থামছে না। হকারদের অবৈধ দখলদারিও রয়েছে এখানে। সেই সঙ্গে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করার চিত্র চোখে পড়ছে নিয়মিত। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় না, যা নিরাপত্তাহীনতা আরো বাড়িয়ে তুলছে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সড়কের আশপাশে খোলা বাজার থাকায় সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তিদের ভিড় থাকে। এ সময়ে রাজধানী ও আশপাশের এলাকার কিশোররা মাতাল অবস্থায় প্রতিযোগিতামূলকভাবে গাড়ি চালায় এই সড়কে। চেকপোস্টের অভাব ও প্রশাসনের নজরদারির শিথিলতার সুযোগেই তারা এমন ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসারইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের লোকবলের সঙ্কট রয়েছে। তারপরও আমরা স্বাধ্যমত চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। টহল পুলিশ এসব সড়কে রাতে সক্রিয় থাকে। আগের চেয়ে অনেকটা দুর্ঘটনা কমে আসছে। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
মেহেরপুরে সার সংকটে কৃষক দিশেহারা। বিভিন্ন ডিলারদের কাছে থেকেও সরকারি মুল্যে সার কিনতে পারছেননা। অথচ, ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের যোগসাজসে কালোবাজারে সেই সার পাচার হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর ) সকালে গাংনী উপজেলার বিএডিসির ডিলারের সার খুচরা ব্যবসায়ীর মাধ্যমে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহে পাচারের সময় জনতার আটক করেন। স্থানীয় জনতা গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসকে খবর দেন। উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে আসেন। পরে সার ব্যবস্থাপনা সংশোধনী আইন ২০১৮ এর ৪ ধারায় দোষী সাবস্থ হওয়ায় খুচরা সার ব্যবসায়ী মের্সাস আলীম ট্রেডার্সের মালিক বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মাহাবুব হাসানকে ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড ও উদ্ধার হওয়া ১২ বস্তা টিএসপি সার স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সরকারি মূল্যে তাৎক্ষণিক বিক্রি করেন।
এদিকে খুচরা সার ব্যবসায়ী মাহবুব হোসেন জানান, সে মুলত কীটনাশক ব্যবসায়ী। স্থানীয় বিসিআইসি সার ডিলার এনআর ট্রেডার্সরে মালিক এনামুল হকের কাছ থেকে গোপনে ১২ বস্তা সার কিনে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের খুচরা সার ব্যবসায়ী লাল মোহাম্মদের কাছে বিক্রি করেছি। তিনি আরও জানান,প্রত্যেকটা ডিলার আমাদের মত খুচরা সার ব্যবসায়ীদের কাছে গোপনে সার বিক্রি কেরেন। আমরা কৃষকদের কাছ থেকে তাদের এনআইডি কার্ড জমা নিয়ে সার বিক্রি করি।
এদিকে স্থানীয়রা এলাকার জন্য বরাদ্দকৃত সার অন্যস্থানে কালোবাজারীর মাধ্যমে পাচার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, আমরা ডিলারদের কাছে ধর্ণা দিয়েও সরকারি মূল্যে সার কিনতে পারছিনা। কিন্তু খুচরা দোকানে গেলে ১৪ শ টাকা বস্তার টিএসপি সার সাড়ে ২২ শ বা ২৩ শ টাকা দিলে দিচ্ছে। আবার গাংনীর সার কালোবাজারীর মাধ্যমে মেহেরপুর ও মুজিবনগর উপজেলার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাচ্ছে। মার খাচ্ছে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।
জানা গেছে, সার ডিলার এনামুল হকের বাড়ি গাংনী উপজেলা শহরে হলেও তিনি ধানখোলা ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এনামুল হক সার কৃষকদের মাঝে সরকারি মুল্যে বিক্রি না করে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় কালোবাজারে বিক্রি করে থাকেন।িইতোমধ্যে এলাকার ভূক্তভোগী কৃষকরা তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি বিভাগে লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্ত অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরণের ব্যবস্থা নেইনি জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
সার কালোবাজারী সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য কৃষি বিভাগ চেষ্টা করছে বলে জানালেন, গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার
ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি যেসব ডিলার সার কালোবাজারে দিচ্ছেন তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর দেয়া মতামত সমন্বয় করে কমিশন আগামী দু-এক দিনের মধ্যে আলোচনা করে সরকারকে পরামর্শ দেবে।
তিনি জানান, যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কমিশন জুলাই সনদ প্রণয়নের এ পর্যায়ে এসেছে তার একটি বিশেষ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হবে এবং খুব দ্রুতই কমিশন সংশ্লিষ্ট দল ও জোটগুলোকে এ বিষয়ে অবহিত করবে। সেইসঙ্গে আগামী ১৫ অক্টোবর কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
বুধবার রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে কমিশনের আলোচনার তৃতীয় পর্যায়ের পঞ্চম দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘আগামী ১৫ অক্টোবর কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে কমিশনের বেশ কিছু কাজ রয়েছে। ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’-এর ব্যাপারে আমরা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। আশা করছি, কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারব।’
তিনি জানান, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল সনদ স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রস্তুত। আমরা চাই, ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই এই ঐতিহাসিক দলিলের আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হোক।
সহ-সভাপতি বলেন, শুধু সনদ স্বাক্ষর নয়, একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে। আমরা আশা করছি ১৮-১৯ অক্টোবরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারব। এতে জুলাই সনদ প্রণয়নের পুরো প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক দলগুলোর জমাকৃত দলিল অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তিনি জানান, ৫ অক্টোবরের বৈঠকে কমিশন সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়-‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়নে গণভোটের ব্যবস্থা করা হবে। আজকের (গতকাল) আলোচনার মূল বিষয় ছিল-গণভোট কীভাবে এবং কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নির্ধারণ করা। আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছি, পরামর্শ ও মতামতের জন্য আজ (গতকাল) বৈঠকের আগেও তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিশেষজ্ঞরা আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন-একটি আদেশ জারি করে গণভোট আয়োজন করতে হবে। এতে দু’টি ভাগ থাকবে—একটি অংশে বৃহত্তম ঐকমত্যের বিষয়গুলো এবং অন্য অংশে নোট অব ডিসেন্ট (লিখিত ভিন্নমত) থাকা বিষয়গুলো থাকবে। পরে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ গঠন করা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গণভোটের অনুমোদন পেলে জুলাই সনদে বর্ণিত সংবিধান সংশ্লিষ্ট সংশোধনগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ড. রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেউ কেউ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই পৃথক ভোটে গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছে। আবার কিছু দল জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কমিশন মনে করছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য তৈরি হয়েছে যে, ত্রয়োদশ সংসদকে ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’ বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংবিধানের মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তনের ক্ষমতা দিতে হবে। দল ও জোটগুলো চাইছে, রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের সমন্বয়ে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে পরামর্শ দিক।
কমিশন প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখন সনদটি স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিষয়ে আমরা দীর্ঘ পথ এগিয়েছি। সমস্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন কমিশন প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কমিশনের সঙ্গে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রেখেছেন। কাজের দিক থেকে কতটা অগ্রসর হওয়া গেছে সেটা তিনি সবসময় খোঁজ-খবর রেখেছেন। সেই সঙ্গে কোথাও কোন ভাবে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু করণীয় আছে কিনা তা তিনি সব সময় জানতে চেয়েছেন। তিনি বিভিন্ন প্রকার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এ কমিশনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন।’
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা হচ্ছে তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হবে—এ আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সকলের একটি দায় ও দায়িত্ব আছে। শুধু একটি সনদ স্বাক্ষর করা যথেষ্ট নয়, আমাদের সকলের সামনে আরো দীর্ঘ পথ চলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, আসুন আমরা সকলে মিলে সে পথ চলা অব্যাহত রাখি। আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জনটি হয়েছে জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে গত বছর ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানো। আমাদের এ জাতীয় ঐক্য অক্ষুণ্ন রাখতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। আপনারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিযোগিতা করবেন কিন্তু ঐক্য বজায় রেখেই সেটা করতে হবে। সেটা আপনাদের দ্বারা সম্ভব বলে আমরা মনে করি।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় পর্যায়ের পঞ্চম বৈঠকে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি, এবি পার্টিসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। এতে আরও অংশ নেনে কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া।
এছাড়া ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও সভায় অংশ নেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গবাদিপশুর তড়কা রোগ (অ্যানথ্রাক্স) প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। কিন্তু ভয় দেখিয়ে সরকার নির্ধারিত ৮০ পয়সার ভ্যাকসিনের দাম নেয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। ফলে সরকারি দামের অতিরিক্ত কয়েক লাখ টাকা লুট করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
খামারিদের অভিযোগ, গত কয়েক দিনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে অ্যানথ্রাক্স। এ পর্যন্ত শতাধিক গবাদিপশু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আর এই সুযোগে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের লোকজন ভ্যাকসিনের সরকারি দামের থেকে ২০-৩০ টাকা বেশি নিচ্ছেন। দূর্যোগের সময় সেবার পরিবর্তে টাকা লুটে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ খামারিদের।
জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী রংপুর জেলার পীরগাছা ঘেঁষে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা। তড়কা রোগে এ পর্যন্ত পীরগাছায় মারা গেছেন ২ এবং আক্রান্ত আছেন ৭ জন ব্যাক্তি। আর এ রোগের জীবাণু ছড়ায় অসুস্থ গবাদিপশুর মাংস থেকে। পীরগাছা উপজেলা ঘেঁষা সুন্দরগঞ্জেও এ পর্যন্ত শতাধিক গরু মারা গেছে। প্রতিনিয়ত জবাই করা হচ্ছে আক্রান্ত গরু। আর এ সকল গরুর মাংস কেটে অসুস্থ আছেন প্রায় অর্ধশত লোক। এ সংক্রান্ত নিউজ হলে নড়েচড়ে বসে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। গবাদিপশু গুলোকে ভ্যাকসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় জরুরি এক বৈঠকে। সেই থেকে চলছে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম। এতে বিভিন্ন কৌশল ও হয়রানির ভয়ভীতি দেখিয়ে ৮০ পয়সার ভ্যাকসিন নেয়া হচ্ছে ২০-৩০ টাকা। সচেতনতায় কোনো প্রচারণা না থাকায় এখনো ৯০ শতাংশ গবাদিপশু ভ্যাকসিনের বাহিরে আছে। এ উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ গবাদিপশুর মধ্যে ভ্যাকসিন পাবে প্রায় ২ লাখ। তাতে অর্ধ কোটির অধিক টাকা লুটে নিবেন ভ্যাকসিন কার্যক্রমে জড়িতরা। এ দূর্যোগপূর্ণ সময়ে তাদের মানবিক হওয়ার দাবি জানিয়েছেন পশুমালিকরা।
এদিকে, আড়াই লাখ গবাদিপশুর বিপরীতে ভ্যাকসিন এসেছে মাত্র ২৬ হাজার ৪০০। ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছে ২২ হাজার গবাদিপশু। অবশিষ্ট ৪ হাজার দিয়ে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রেখে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। তবে, নতুন করে আরও ৫০ হাজার ভ্যাকসিন চেয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আড়াই লাখ গবাদিপশুর বিপরীতে মাত্র ২৬ হাজার ভ্যাকসিন বরাদ্দ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খামারিরা।
বামনডাঙ্গার দিনমজুর আজহার মিয়া জানান, আমার ৪ টা গরু এবং ২ টা ছাগল। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দুইজন এসে বললো তড়কার ভ্যাকসিন নেন। জিজ্ঞেস করলাম কতো করে দিতে হবে। তখন তারা ২০ টাকা দাবি করেন। কম করে নিতে বললাম, তখন তারা জানালো ২০ টাকায় দিতে হবে। প্রাণিসম্পদ অফিসে গেলে আরও বেশি লাগবে। তখন আর আমাদের খুজে পাবেন না। আমি বাধ্য হয়ে ২০ টাকা করে দিয়েছি।
মনমথ গ্রামের ভ্যান চালক মজিবর রহমান বলেন, এটেতো সবাই বসি আছি। ওমরা মটর সাইকোল নিয়া আসিয়া কয় ভ্যাকসিন নেও গরুর। কনু বলে কতো করি নেন। তকন কয় বিশ টেকা করি নেই। দশ টেকা করি দিবার চাইনো তাক কয় না। বাজারোত ফুরি আইনো ম্যালা গরু। বিশ টেকা করি ওমরা সবাই দিছে। পরে ২০ ট্যাকা দিয়া একটা গরুর টিকা নিছোম।
সোনারায় ইউনিয়নের পূর্ব সোনারায় গ্রামের মো. রফিক মিয়া বলেন, 'আমি শুনলাম গরুর নতুন একটা রোগ ছড়াইছে। হামার বাড়িত ৫ টা গরু আছে। এখন টিকা কই আছে, কি ভাবে পাওয়া যাবে কিছুই জানি না।'
খামারি সেজে কথা হয় ভ্যাকসিনেটর চন্দন কুমার রায়ের সাথে। তিনি বলেন, ‘পশু প্রতি ২০ টাকা করে নিচ্ছি। আর এ টাকা আমাদের অফিসে জমা দিতে হয়। ভ্যাকসিনের দাম ৮০ পয়সা সরকারি নির্ধারিত হলেও কেন বেশি নিচ্ছেন জানতে চাইলে বলেন- আমাদের অফিসের আনুষঙ্গিক কিছু খরচ আছে সেগুলো এখান থেকে তুলতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিপ্লব কুমার দে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আনুষাঙ্গিক কিছু খরচ থাকায় ১০ টাকা করে নিতে বলা হয়েছে। এর বেশি নিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো গবাদিপশুর মালিককে ভয় দেখিয়ে নয় বরং কেউ টাকা দিতে অক্ষম হলেও তাকে ভ্যাকসিন দেয়ায় নির্দেশনা দেয়া আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস প্রতি ভ্যাকসিন ৮০ পয়সা বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, 'ভ্যাকসিন প্রতি কতো টাকা নেয়া যাবে বিষয়টি প্রাণিসম্পদ ভালো বলতে পারবে। তবে আমি যতটুকু জানি তাতে টিকা প্রতি ১০ টাকা করে নিচ্ছেন তারা। তবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত, এখানে আমাদের বলার কিছু নাই বলেও জানান ইউএনও।'
এমপি কোটায় আনা ৩০টি পাজেরো গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে সরকারি পরিবহন অধিদফতরে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রতিটি গাড়ির মূল্য ১২ কোটি টাকা করে হলেও নিলামে মাত্র ১ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা দর তোলায় এনবিআর এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গাড়িগুলো হস্তান্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনবিআরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে দেওয়া হয়েছে চিঠি।
আর কোনো জটিলতা নয়, রাষ্ট্রের অনুকূলেই যাচ্ছে এমপি কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩০টি ল্যান্ড ক্রুজার পাজেরো গাড়ি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া দ্বাদশ সংসদের সদস্যরাই আমদানি করেছিল এসব গাড়ি। কিন্তু বন্দর থেকে ছাড় করার আগেই সরকারের পতন হওয়ায় গাড়িগুলো নিয়ে সৃষ্ট হয় নানা জটিলতা। এই অবস্থায় জটিলতা নিরসনে চিঠি দিয়ে নিজেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার এইচ এম কবীর বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়িগুলো যানবাহন অধিদফতরে হস্তান্তর করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। ৩০টির মতো গাড়ি রয়েছে, যেগুলো বিধিমালা অনুযায়ী হস্তান্তর করা হবে।
জাপানে প্রস্তুতকৃত ২০২২ মডেলের এসব গাড়ির প্রতিটির আমদানি মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা হলেও ৮০০ শতাংশ শুল্কের কারণে বাংলাদেশে বাজারমূল্য ১২ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু সংসদ সদস্য হওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িগুলো আমদানি করা হয়েছিল। অথচ চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের প্রথম নিলামে কৌশল করে বিডারদের পক্ষ থেকে গাড়ির দর তোলা হয়েছিল মাত্র ১ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা। আর তাই রাজস্ব বাঁচাতে ভিন্ন পন্থা নিতে বাধ্য হয় এনবিআর।
চট্টগ্রাম কাস্টমস বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, ‘প্রথম নিলামে ৬০ শতাংশ দাম কভার করা হলে আমরা গাড়ি কিনতে পারতাম না, আবার বাজারেও বিক্রি করা সম্ভব হত না। তাই বিডাররা দ্বিতীয় নিলামের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু আশ্বাস দিতে দিতে এক-দেড় বছর পর এসে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেল। নিলামের মাধ্যমে যে রাজস্ব আসত, এখন সেটা সরকার কোথায় পাবে?’
অবশ্য, নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিলামের ভিত্তি মূল্য ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকায় ৫টি গাড়ি কিনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে আগ্রহ দেখিয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গাড়ি কিনতে না পারলেও এক বছরের বেশি সময় ধরে গাড়িগুলো শেডে নিরাপদ রাখায় চট্টগ্রাম বন্দরকে ফ্রেইট চার্জ এবং ওয়ারফেজ চার্জ পরিশোধের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘এটি সরকারের সিদ্ধান্ত। বন্দরের কোনো আপত্তি নেই। তবে এতদিন গাড়ি রাখার খরচ কাস্টমস থেকে নেওয়া হবে।’
শুধুই যে এমপি কোটার ৩০টি গাড়ি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল, তা কিন্তু নয়। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আটকে আছে আরও অন্তত ৩০০ গাড়ি। আর তাই এমপি কোটার গাড়ির মতো অন্যান্য গাড়িগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির কথা বলছেন বারভিডার সাবেক সহ-সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত দাম পাবে না ভেবে কাস্টমস পণ্য নিষ্পত্তি করে না। গাড়িগুলো স্ক্র্যাপ হিসেবে পড়ে থাকায় পরে দাম কমে যায়। যদি ভালো কন্ডিশনে থাকা অবস্থায় এগুলো নিষ্পত্তি করা যেত, তাহলে বন্দর অনেক বেশি রাজস্ব আয় করতে পারত।’
অবশ্য সরকার পতনের ঠিক আগ মুহূর্তে অর্থাৎ জুলাই মাসে গাড়ি ছাড় করে নিয়েছিল ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনসহ অন্তত ৭ জন। আর আটকা পড়াদের মধ্যে রয়েছে অভিনেত্রী তারানা হালিম, জান্নাত আরা হেনরী, ময়মনসিংহের আবদুল ওয়াহেদ, জামালপুরের আবুল কালাম আজাদ, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এস আল মামুন, বাঁশখালীর মুজিবুর রহমান, খুলনার এস এম কামাল হোসাইন, নওগাঁর সুরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, গাইবান্ধার শাহ সারোয়ার কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এস এ কে একরামুজ্জামান, নেত্রকোনার সাজ্জাদুল হাসান, ঝিনাইদহের নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, যশোরের তৌহিদুজ্জামান এবং সুনামগঞ্জের মুহাম্মদ সাদিকের গাড়ি।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ সাক্ষ্য দেবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুক ওয়ালে দেওয়া পোস্টে একথা জানান তিনি।
এদিকে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধেও আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।
এ মামলার গ্রেফতার চার আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।
রাজধানীর আকাশ আজ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে হতে পারে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়—আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে সেইসঙ্গে হতে পারে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি। এ ছাড়া দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এ সময় দক্ষিণ বা দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ০৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৭ শতাংশ। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে সবশেষ সারা দেশের জন্য দেওয়া ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে—আজ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
মন্তব্য