ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ভিসা নীতি শিথিল করবে না যুক্তরাজ্য। ভারত সফরে যাওয়ার আগে এ কথা বলেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে দুই দিনের সফরে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। গতকাল বুধবার তিনি ভারতে পৌঁছান।
এ সফরে স্টারমার উদ্যোক্তা, সাংস্কৃতিক নেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শতাধিক ব্যক্তির একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার এ সফরের লক্ষ্য যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও দেশটির ধীরগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উন্নয়নে কাজ করা।
স্টারমার বলেন, ভারতের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ‘বিস্তৃত সুযোগ’ রয়েছে। তবে ভারতীয় শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যের ভিসার পাওয়ার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আলোচনা ভিসা নিয়ে নয়, আলোচনা হবে ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব, বিনিয়োগ, চাকরি ও যুক্তরাজ্যের সমৃদ্ধি বৃদ্ধি নিয়ে।
কয়েক বছর ধরে আলোচনার পর গত জুলাইয়ে ভারতের সঙ্গে একটি বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাজ্য।
চুক্তির লক্ষ্য, লাখ কোটি পাউন্ডের বাণিজ্য সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের গাড়ি ও হুইস্কি সস্তায় ভারতে রপ্তানি করা এবং ভারতীয় পোশাক ও গয়না সস্তায় যুক্তরাজ্যে আমদানি করা।
এছাড়া চুক্তির অংশ হিসেবে যেসব ভারতীয় স্বল্পমেয়াদি ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে কাজ করবেন, তারা সামাজিক নিরাপত্তা (সোশ্যাল সিকিউরিটি) ব্যয়ে তিন বছরের জন্য ছাড় পাবেন।
তবে মন্ত্রীরা জোর দিয়ে বলেছেন, অভিবাসননীতিতে কোনো বিস্তৃত পরিবর্তন আনা হয়নি।
যুক্তরাজ্যের বর্তমান লেবার সরকার দেশটিতে অভিবাসন কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে। গত সপ্তাহে দলীয় সম্মেলনে বিদেশিদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি কঠোর করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ভারতে যাওয়ার পথে উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের স্টারমার বলেন, ভারতের সঙ্গে এই বাণিজ্য চুক্তিতে ভিসার কোনো ভূমিকা নেই। ভিসা নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
সেখানে স্টারমারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির দক্ষ কর্মী ভিসা (এইচ-১বি) আবেদনে ফি আরোপের পর, বিশেষ করে প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের নিয়ে আসতে যুক্তরাজ্য নিজেদের ভিসা নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে কি না।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্য সারা বিশ্বের ‘শীর্ষ মেধাবীদের’ আকর্ষণ করতে চায়, যেন তারা দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারেন।
তবে স্টারমার বারবার এটাও বলেছেন, ভারতীয়দের জন্য যুক্তরাজ্যের ভিসা পাওয়ার নতুন পথ চালুর কোনো পরিকল্পনা তার সরকারের নেই।
দুই দিনের এ সফরে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
স্টারমার সফরে আসার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
তিনি এমন কিছু করবেন না বলে জানিয়েছেন স্টারমার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে গেলে, আমি পুতিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাইনি। এমন কোনো কিছু আমি করতেও যাচ্ছি না। আমার মনে হয় না, এতে কেউ আশ্চর্য হবেন।’
রাশিয়ার তেল কেনার কারণে তিনি নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্টারমার বলেন, তেলের ট্যাংকারের যেসব বহর ছদ্মবেশে রাশিয়ার তেল বহন করে, যুক্তরাজ্যের নজর তাদের দিকে।
সূত্র: বিবিসি
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গবাদিপশুর তড়কা রোগ (অ্যানথ্রাক্স) প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। কিন্তু ভয় দেখিয়ে সরকার নির্ধারিত ৮০ পয়সার ভ্যাকসিনের দাম নেয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। ফলে সরকারি দামের অতিরিক্ত কয়েক লাখ টাকা লুট করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
খামারিদের অভিযোগ, গত কয়েক দিনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে অ্যানথ্রাক্স। এ পর্যন্ত শতাধিক গবাদিপশু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আর এই সুযোগে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের লোকজন ভ্যাকসিনের সরকারি দামের থেকে ২০-৩০ টাকা বেশি নিচ্ছেন। দূর্যোগের সময় সেবার পরিবর্তে টাকা লুটে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ খামারিদের।
জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী রংপুর জেলার পীরগাছা ঘেঁষে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা। তড়কা রোগে এ পর্যন্ত পীরগাছায় মারা গেছেন ২ এবং আক্রান্ত আছেন ৭ জন ব্যাক্তি। আর এ রোগের জীবাণু ছড়ায় অসুস্থ গবাদিপশুর মাংস থেকে। পীরগাছা উপজেলা ঘেঁষা সুন্দরগঞ্জেও এ পর্যন্ত শতাধিক গরু মারা গেছে। প্রতিনিয়ত জবাই করা হচ্ছে আক্রান্ত গরু। আর এ সকল গরুর মাংস কেটে অসুস্থ আছেন প্রায় অর্ধশত লোক। এ সংক্রান্ত নিউজ হলে নড়েচড়ে বসে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। গবাদিপশু গুলোকে ভ্যাকসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় জরুরি এক বৈঠকে। সেই থেকে চলছে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম। এতে বিভিন্ন কৌশল ও হয়রানির ভয়ভীতি দেখিয়ে ৮০ পয়সার ভ্যাকসিন নেয়া হচ্ছে ২০-৩০ টাকা। সচেতনতায় কোনো প্রচারণা না থাকায় এখনো ৯০ শতাংশ গবাদিপশু ভ্যাকসিনের বাহিরে আছে। এ উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ গবাদিপশুর মধ্যে ভ্যাকসিন পাবে প্রায় ২ লাখ। তাতে অর্ধ কোটির অধিক টাকা লুটে নিবেন ভ্যাকসিন কার্যক্রমে জড়িতরা। এ দূর্যোগপূর্ণ সময়ে তাদের মানবিক হওয়ার দাবি জানিয়েছেন পশুমালিকরা।
এদিকে, আড়াই লাখ গবাদিপশুর বিপরীতে ভ্যাকসিন এসেছে মাত্র ২৬ হাজার ৪০০। ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছে ২২ হাজার গবাদিপশু। অবশিষ্ট ৪ হাজার দিয়ে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রেখে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। তবে, নতুন করে আরও ৫০ হাজার ভ্যাকসিন চেয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আড়াই লাখ গবাদিপশুর বিপরীতে মাত্র ২৬ হাজার ভ্যাকসিন বরাদ্দ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খামারিরা।
বামনডাঙ্গার দিনমজুর আজহার মিয়া জানান, আমার ৪ টা গরু এবং ২ টা ছাগল। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দুইজন এসে বললো তড়কার ভ্যাকসিন নেন। জিজ্ঞেস করলাম কতো করে দিতে হবে। তখন তারা ২০ টাকা দাবি করেন। কম করে নিতে বললাম, তখন তারা জানালো ২০ টাকায় দিতে হবে। প্রাণিসম্পদ অফিসে গেলে আরও বেশি লাগবে। তখন আর আমাদের খুজে পাবেন না। আমি বাধ্য হয়ে ২০ টাকা করে দিয়েছি।
মনমথ গ্রামের ভ্যান চালক মজিবর রহমান বলেন, এটেতো সবাই বসি আছি। ওমরা মটর সাইকোল নিয়া আসিয়া কয় ভ্যাকসিন নেও গরুর। কনু বলে কতো করি নেন। তকন কয় বিশ টেকা করি নেই। দশ টেকা করি দিবার চাইনো তাক কয় না। বাজারোত ফুরি আইনো ম্যালা গরু। বিশ টেকা করি ওমরা সবাই দিছে। পরে ২০ ট্যাকা দিয়া একটা গরুর টিকা নিছোম।
সোনারায় ইউনিয়নের পূর্ব সোনারায় গ্রামের মো. রফিক মিয়া বলেন, 'আমি শুনলাম গরুর নতুন একটা রোগ ছড়াইছে। হামার বাড়িত ৫ টা গরু আছে। এখন টিকা কই আছে, কি ভাবে পাওয়া যাবে কিছুই জানি না।'
খামারি সেজে কথা হয় ভ্যাকসিনেটর চন্দন কুমার রায়ের সাথে। তিনি বলেন, ‘পশু প্রতি ২০ টাকা করে নিচ্ছি। আর এ টাকা আমাদের অফিসে জমা দিতে হয়। ভ্যাকসিনের দাম ৮০ পয়সা সরকারি নির্ধারিত হলেও কেন বেশি নিচ্ছেন জানতে চাইলে বলেন- আমাদের অফিসের আনুষঙ্গিক কিছু খরচ আছে সেগুলো এখান থেকে তুলতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিপ্লব কুমার দে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আনুষাঙ্গিক কিছু খরচ থাকায় ১০ টাকা করে নিতে বলা হয়েছে। এর বেশি নিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো গবাদিপশুর মালিককে ভয় দেখিয়ে নয় বরং কেউ টাকা দিতে অক্ষম হলেও তাকে ভ্যাকসিন দেয়ায় নির্দেশনা দেয়া আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস প্রতি ভ্যাকসিন ৮০ পয়সা বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, 'ভ্যাকসিন প্রতি কতো টাকা নেয়া যাবে বিষয়টি প্রাণিসম্পদ ভালো বলতে পারবে। তবে আমি যতটুকু জানি তাতে টিকা প্রতি ১০ টাকা করে নিচ্ছেন তারা। তবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত, এখানে আমাদের বলার কিছু নাই বলেও জানান ইউএনও।'
এমপি কোটায় আনা ৩০টি পাজেরো গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে সরকারি পরিবহন অধিদফতরে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রতিটি গাড়ির মূল্য ১২ কোটি টাকা করে হলেও নিলামে মাত্র ১ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা দর তোলায় এনবিআর এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গাড়িগুলো হস্তান্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনবিআরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে দেওয়া হয়েছে চিঠি।
আর কোনো জটিলতা নয়, রাষ্ট্রের অনুকূলেই যাচ্ছে এমপি কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩০টি ল্যান্ড ক্রুজার পাজেরো গাড়ি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া দ্বাদশ সংসদের সদস্যরাই আমদানি করেছিল এসব গাড়ি। কিন্তু বন্দর থেকে ছাড় করার আগেই সরকারের পতন হওয়ায় গাড়িগুলো নিয়ে সৃষ্ট হয় নানা জটিলতা। এই অবস্থায় জটিলতা নিরসনে চিঠি দিয়ে নিজেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার এইচ এম কবীর বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়িগুলো যানবাহন অধিদফতরে হস্তান্তর করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। ৩০টির মতো গাড়ি রয়েছে, যেগুলো বিধিমালা অনুযায়ী হস্তান্তর করা হবে।
জাপানে প্রস্তুতকৃত ২০২২ মডেলের এসব গাড়ির প্রতিটির আমদানি মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা হলেও ৮০০ শতাংশ শুল্কের কারণে বাংলাদেশে বাজারমূল্য ১২ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু সংসদ সদস্য হওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িগুলো আমদানি করা হয়েছিল। অথচ চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের প্রথম নিলামে কৌশল করে বিডারদের পক্ষ থেকে গাড়ির দর তোলা হয়েছিল মাত্র ১ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা। আর তাই রাজস্ব বাঁচাতে ভিন্ন পন্থা নিতে বাধ্য হয় এনবিআর।
চট্টগ্রাম কাস্টমস বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, ‘প্রথম নিলামে ৬০ শতাংশ দাম কভার করা হলে আমরা গাড়ি কিনতে পারতাম না, আবার বাজারেও বিক্রি করা সম্ভব হত না। তাই বিডাররা দ্বিতীয় নিলামের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু আশ্বাস দিতে দিতে এক-দেড় বছর পর এসে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেল। নিলামের মাধ্যমে যে রাজস্ব আসত, এখন সেটা সরকার কোথায় পাবে?’
অবশ্য, নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিলামের ভিত্তি মূল্য ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকায় ৫টি গাড়ি কিনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে আগ্রহ দেখিয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গাড়ি কিনতে না পারলেও এক বছরের বেশি সময় ধরে গাড়িগুলো শেডে নিরাপদ রাখায় চট্টগ্রাম বন্দরকে ফ্রেইট চার্জ এবং ওয়ারফেজ চার্জ পরিশোধের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘এটি সরকারের সিদ্ধান্ত। বন্দরের কোনো আপত্তি নেই। তবে এতদিন গাড়ি রাখার খরচ কাস্টমস থেকে নেওয়া হবে।’
শুধুই যে এমপি কোটার ৩০টি গাড়ি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল, তা কিন্তু নয়। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আটকে আছে আরও অন্তত ৩০০ গাড়ি। আর তাই এমপি কোটার গাড়ির মতো অন্যান্য গাড়িগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির কথা বলছেন বারভিডার সাবেক সহ-সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত দাম পাবে না ভেবে কাস্টমস পণ্য নিষ্পত্তি করে না। গাড়িগুলো স্ক্র্যাপ হিসেবে পড়ে থাকায় পরে দাম কমে যায়। যদি ভালো কন্ডিশনে থাকা অবস্থায় এগুলো নিষ্পত্তি করা যেত, তাহলে বন্দর অনেক বেশি রাজস্ব আয় করতে পারত।’
অবশ্য সরকার পতনের ঠিক আগ মুহূর্তে অর্থাৎ জুলাই মাসে গাড়ি ছাড় করে নিয়েছিল ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনসহ অন্তত ৭ জন। আর আটকা পড়াদের মধ্যে রয়েছে অভিনেত্রী তারানা হালিম, জান্নাত আরা হেনরী, ময়মনসিংহের আবদুল ওয়াহেদ, জামালপুরের আবুল কালাম আজাদ, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এস আল মামুন, বাঁশখালীর মুজিবুর রহমান, খুলনার এস এম কামাল হোসাইন, নওগাঁর সুরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, গাইবান্ধার শাহ সারোয়ার কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এস এ কে একরামুজ্জামান, নেত্রকোনার সাজ্জাদুল হাসান, ঝিনাইদহের নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, যশোরের তৌহিদুজ্জামান এবং সুনামগঞ্জের মুহাম্মদ সাদিকের গাড়ি।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ সাক্ষ্য দেবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুক ওয়ালে দেওয়া পোস্টে একথা জানান তিনি।
এদিকে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধেও আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।
এ মামলার গ্রেফতার চার আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।
রাজধানীর আকাশ আজ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে হতে পারে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়—আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে সেইসঙ্গে হতে পারে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি। এ ছাড়া দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এ সময় দক্ষিণ বা দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ০৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৭ শতাংশ। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে সবশেষ সারা দেশের জন্য দেওয়া ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে—আজ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েল ও হামাস রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের মালিকানাধীন সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘শান্তি চুক্তির অর্থ হল খুব শীঘ্রই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের সৈন্যদের প্রত্যাহার করবে। এটি শক্তিশালী, টেকসই এবং চিরস্থায়ী শান্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ।’ খবর আল জাজিরা, বিবিসির।
এর আগে, ট্রাম্প আরও বলেছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করতে এই সপ্তাহের শেষে মিশরে যেতে পারেন।
গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইতিবাচক সাড়া দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
বুধবার (৮ অক্টোবর) মিসরে তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তারা আলোচনা করেন। এদিন আলোচনায় যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী মধ্যস্থতাকারীরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান ইব্রাহিম কালিন।
এদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সামাজিকমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা ঘোষণা করেছেন যে, গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের ‘সমস্ত বিধান এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া’ সম্পর্কে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে উভয় পক্ষ। এর ফলে যুদ্ধের অবসান হবে। এই চুক্তির ফলে ইসরায়েলি জিম্মিরা দেশে ফিরে যাবে। ফিলিস্তিনি বন্দীরা মুক্তি পাবে। গাজা উপত্যকায় খাবারও প্রবেশ করবে।’
এদিকে বিবৃতি দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি বলছে, ‘চুক্তিটি গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটাবে। দখলদার বাহিনীর সব সৈন্য প্রত্যাহার নিশ্চিত করবে। এই চুক্তির ফলে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি পাবে। উভয় পক্ষের বন্দিবিনিময় বাস্তবায়ন করবে।’
বিবিসির মার্কিন সংবাদ অংশীদার সিবিএস জানিয়েছে, শান্তিতে মধ্যস্থতা করায় কাতার, মিশর, তুরস্ক ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানায় হামাস। ট্রাম্প ও অন্য পক্ষকে ইসরায়েলি দখলদার সরকার চুক্তির শর্তাবলী পুরোপুরি মেনে চলে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
ফিলিস্তিনের পুরোপুরি স্বাধীনতা অর্জন করা পর্যন্ত আমরা লড়াই করে যাব বলে বিবৃতিতে জানায় হামাস।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের জন্য আজ মহান দিন। এর ফলে জিম্মিরা তাদের বাড়ি ফিরে আসবে।’
চুক্তি হওয়ায় তিনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনও জিম্মি। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে, ওই দিন থেকেই গাজায় টানা বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হন। এর মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯ জন শিশু।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও স্থানীয় সরকার বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সাবেক সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণার অন্যতম অগ্রদূত। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে ২০২৪ সালে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উন্নয়নে গঠনমূলক ও বাস্তবসম্মত প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন, যা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ স্থানীয় সরকার ও সমবায় বিষয়ক একজন লব্ধপ্রতিষ্ঠ গবেষক ও লেখক। তিনি সারা জীবন দেশের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে তাঁর রচিত প্রায় ২০টি গ্রন্থ ও দেশী বিদেশী জার্নাল ও পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত অসংখ্য প্রবন্ধ, যা যুগের পর যুগ ধরে আমাদের জ্ঞানচর্চাকে সমৃদ্ধ করবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক অধ্যাপক জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিতে (বাংলাদেশ) স্থানীয় শাসন উপদেষ্টা হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন সৎ, প্রজ্ঞাবান ও নিবেদিতপ্রাণ গবেষককে হারালো।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আগামী মাসেই গণভোট চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে অর্থাৎ নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের পক্ষে তাদের অবস্থান।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ চলাকালে সভা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে দলীয় অবস্থান প্রকাশ করেন জামায়াতের নায়েবে আমির।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর স্ট্যান্ডিং পরিষ্কার- ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে এবং নভেম্বরের ভেতরেই জুলাই চার্টারের ওপরে আমাদের গণভোট হবে। দেশ অত্যন্ত স্থিরতা, দৃঢ়তা, স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে ৫৪ বছরের ভেতরে সবচেয়ে বেশি জন- অংশগ্রহণমূলক আনন্দ-উৎসবের নির্বাচনে যাবে।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হলেও তা কবে হবে, তা নিয়ে মতভেদ কাটেনি। বিএনপি ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটে রাজি হলেও তাতে আপত্তি রয়েছে জামায়াতের।
সৈয়দ আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘এখন আমরা সবাই একমত হয়েছি যে গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই চার্টার এক্সেপ্টেড হবে...। অনেকে বলেছেন গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে। আমরা বলেছি, না, গণভোট একটি আলাদা বিষয়, জাতীয় নির্বাচন একটি আলাদা বিষয়।
গণভোট ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে হলে তা জটিলতা তৈরি করবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দুটি ইলেকশন একসঙ্গে হওয়ার একটা ভালো দিক আছে, কিন্তু মন্দ দিক আছে অনেক বেশি... আপার হাউসের মতো কিছু ইস্যু আছে, যা আগামী নির্বাচনের অংশ হবে। যদি একইদিন করেন, তাহলে জনগণ গ্রহণ করবে কী করবে না- এটা আনডিসাইডেড রয়ে গেল।’
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদাহরণ টেনে সৈয়দ আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত তিনটা-চারটা পর্যন্ত আমাদের টেনশনে ঘুম আসে নাই... জাহাঙ্গীরনগর নির্বাচনে ৪৮ ঘণ্টা পরে রায় দিয়েছে...তাহলে দুটি নির্বাচন আমাদের এ রকম একটি আশঙ্কা দেয়।’
‘ইলেকশন (নির্বাচন) যদি প্রশ্নবোধক হয়, তাহলে আপনার গণভোটের চার্টারও প্রশ্নবোধক হয়ে যাবে,’ সতর্ক করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের কি আলাদাভাবে দুটি নির্বাচন করার আর্থিক সক্ষমতা আছে কি না- এ প্রশ্নে জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি আমাদের নিতে হবে...এটা আমি মনে করি মোটেই খুব বড় খরচ নয়, বরং জাতিকে স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।’
বিএনপির ভিন্ন অবস্থান নিয়ে সৈয়দ তাহের বলেন, ‘মূলত একটি দলই কিছুটা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে- বিএনপি। তারা মানুষকে বলছে সংস্কার মানে কিন্তু আবার অফিসিয়ালি নোট অব ডিসেন্ট দিচ্ছে। তাহলে জাতিকে পরিষ্কার করার জন্য তাদের বলতে হবে, মানে কি না।’
নোট অব ডিসেন্টকে অতটা গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন না তিনি। তাহের বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্ট ইজ নট আ পার্ট অব ডিসিশন- ইউ মাস্ট মেক শিউর। কনসাস কমিটির পক্ষ থেকে যদি কোনো নোট অব ডিসেন্ট থাকত, তাহলে সেটা আমরা গণভোটে সাবজেক্ট করে মানুষের কাছে নিয়ে যেতাম... কিন্তু একটা দলের নোট অব ডিসেন্ট তো জাতির ভোটের ম্যান্ডেটের জন্য কোনো সাবজেক্ট হতে পারে না।’
উদাহরণ টেনে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘যেমন হাইকোর্টে তিনজনের বেঞ্চে দুজন যদি রায় দেন, সেটাই রায়। আরেকজন নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারেন, সেটা ইতিহাসে রেকর্ড থাকবে। সুতরাং নোট অব ডিসেন্ট মানে সিদ্ধান্ত নয়।’
মন্তব্য