জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ‘চূড়ান্ত রোডম্যাপ’ আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে সরকারকে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। ফলে এখনকার পরিস্থিতিটা হচ্ছে, গণভোটের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি, যেটা নিশ্চিত করে যে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমতের অংশগুলোও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে বলে জানান তিনি।
আলী রিয়াজ বলেন, সব দল একভাবে সম্মতি না দিলেও জনগণের চূড়ান্ত মত নেওয়ার সময় এসব আপত্তির বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদে যে বিষয়গুলো আছে সেখানে যেহেতু কিছু ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আছে, সেটাকে আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। সবগুলোই একভাবে বিবেচনা করা যাবে তা আমরা মনে করছি না। কারণ হচ্ছে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন তারা তাদের অবস্থানের দিক থেকে দিয়েছেন, তাদের শুধু দলীয় অবস্থান নয়, আমরা আশা করি যে তারা অন্যান্য বিবেচনা থেকেও দিয়েছেন।’
আলী রীয়াজ বলেন, জনগণের সম্মতি নিশ্চিত করার সময় এসব ভিন্নমত যেন যথাযথভাবে জানানো হয়, সেটিই হবে গণভোটের মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেখতে হবে যে জনগণের যে সম্মতি, সে সম্মতির ক্ষেত্রে যেন তারা এটা জেনে শুনেই সম্মতি নিতে পারেন যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে।’
অধ্যাপক রীয়াজ জানান, কমিশন চায় সব দলের মতামত ও আপত্তির পর্যালোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি করে সরকারকে তা সুপারিশ করতে।
তিনি জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মৌলিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, এবং কমিশন এখন চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণে কাজ করছে।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমাদের এই প্রচেষ্টায় অনেকদূর অগ্রগতি হয়েছে এই অর্থে যে গণভোটের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই একমত জায়গায় আসতে পেরেছি।’
অধ্যাপক রীয়াজ আরও জানান, ১০ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের কাছে কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেওয়া হবে এবং ১৫ থেকে ১৬ অক্টোবরের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘যখন আমরা ১১ সেপ্টেম্বর প্রথম বসি, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় ছিল আমরা এক জায়গায় আসতে পারব কিনা…। কিন্তু আমরা অনেকদূর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছি। বাকি পথটা আমরা সকলে মিলে নিঃসন্দেহে অতিক্রম করে এক জায়গায় পৌঁছাতে পারব।’
কমিশনের এই আলোচনায় দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। এর লক্ষ্য- জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নে সর্বসম্মত রোডম্যাপ তৈরি করে তা সরকারের কাছে পেশ করা।
উপদেষ্টাদের মধ্যে কারা সেফ এক্সিট (নিরাপদ প্রস্থান) নিতে চান, এ বিষয়গুলো নাহিদ ইসলামকেই পরিষ্কার করতে হবে। উনি যদি কখনো পরিষ্কার করেন, তখন সেটি নিয়ে সরকারের বক্তব্যের কথা আসে। এর আগে এটি নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবতেছে’- সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তার এ বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে। গতকাল বুধবার ওই বক্তব্যের বিষয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন।
জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলের মতো নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সরকারের ভালো একটা ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ (কাজের সম্পর্ক) আছে। এটা উনি অভিমান থেকে বলেছেন নাকি ওনার কোনো বিষয়ে গ্রিভেন্স (দুঃখবোধ) আছে। এ বিষয়গুলো ওনাকেই পরিষ্কার করতে হবে। উনি যদি কখনো পরিষ্কার করেন, তখন সেটা নিয়ে সরকারের বক্তব্যের কথা আসে। সেটির আগে সরকারের বক্তব্যের কোনো সুযোগ নেই।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘নাহিদ ইসলামের বক্তব্য তাকেই খণ্ডন করতে হবে, আমার খণ্ডানোর বিষয় নয়। বক্তব্যটা স্পেসিফিক (সুনির্দিষ্ট) হলে হয়তো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কথা বলা হতো। এটা হয়তো তাদের ধারণা, তারা মনে করে এটি বক্তব্য হিসেবে বলেছে। এখানে সরকারের অবস্থান নেওয়ার তো কোনো সুযোগ নেই। সরকারের বক্তব্য দেওয়ার তো কোনো সুযোগ নেই।’
আসলেই কী উপদেষ্টারা এক্সিট খুঁজছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমি একদম কোনো এক্সিট খুঁজছি না। দেশেই ছিলাম, এর আগেও বহু ঝড়ঝঞ্ঝা এসেছে। সেসব ঝড়ঝঞ্ঝা প্রতিহত করে দেশেই থেকেছি। বাকিটা জীবনও বাংলাদেশেই কাটিয়ে যাব।’
নাহিদ ইসলামের বক্তব্য নিয়ে সরকারের মধ্যে কোনো আলোচনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এ উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রতিনিয়ত কথা বলে যাচ্ছেন, এটি তো তাদের অধিকার। এটাই তো গণতন্ত্রের চর্চা। এখন প্রতিটি বিষয় নিয়েই যদি আমরা প্রতিক্রিয়া দেখাই, চিন্তা করি, তাহলে আমরা মন্ত্রণালয়গুলো কখন চালাব? যখন কোনো বিষয় সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে, তখন অবশ্যই সরকার সে বিষয়ে কথা বলবে। অনানুষ্ঠানিক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।’
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশের পরিস্থিতি একদমই স্থিতিশীল আছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা শুধু অন্তর্বর্তী সরকারই বলেছে তা নয়, সব রাজনৈতিক দলও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পক্ষে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, এখানে আর কোনো প্রশ্নবোধক চিহ্ন তোলার সুযোগ বা অবকাশ আছে বলে আমরা (সরকার) মনে করছি না,’ বলেন তিনি।
নির্বাচনের আগে ছোট আকারে আরেকটা নির্বাচনকালীন সরকার হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারই নির্বাচন করবে। এখন পর্যন্ত এটাই হচ্ছে অবস্থা এবং অবস্থান।
সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সংস্কার, বিচার- এগুলো চলমান প্রক্রিয়া। বিচার বিচারের গতিতে চলছে। বিচার কীভাবে চলছে এটা প্রত্যেকে প্রত্যক্ষ করতে পারছেন।
বিচারের ক্ষেত্রে যে প্রতিশ্রুতি, সেটি সরকার দেখিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটা ট্রাইব্যুনালের ওপর চাপ বেশি হয়ে যাওয়ায় আরেকটা ট্রাইব্যুনাল বাড়িয়েছি। আমরা বিচারকে প্রাধান্য দিচ্ছি। প্রাধান্য দিয়ে সে মোতাবেক কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা অবশ্যই চাই যে সুবিচার নিশ্চিত হোক। সেজন্য যে পদ্ধতি অনুসরণ করা দরকার, সেটি করা হচ্ছে।’
সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ঐকমত্য হয়নি এ কথাটা ঠিক না। ঐকমত্য তো হয়েছে। অনেক বড় বড় বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এখন যে সমস্ত বিষয়ে সংস্কারকেন্দ্রিক ঐকমত্য হয়েছে, সেই সমস্ত ঐকমত্যের বাস্তবায়নটা কেমন করে হবে সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বাস্তবায়নের বিভিন্ন অপশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুয়েকটা অপশনের দিকে রাজনৈতিক দলগুলো বেশি সমর্থন দিচ্ছে। একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার রাজনৈতিক পদ্ধতিতে সমাধান করতে গেলে আপস অ্যান্ড ডাউনস (উত্থানপতন) হবেই। এটিতে স্মুথ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে পদ্ধতিটা স্মুথ যাচ্ছে। যেখানে সবাই আলোচনায় আসছেন, মতামত দিচ্ছেন। এটা তো একটা স্মুথ প্রসেসে হচ্ছে।’
পরিবর্তন চাপিয়ে দিলে টেকসই হবে না মন্তব্য করে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পরিবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক ডিবেট (বিতর্ক) থাকবেই। সেখানে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। সংস্কার নিয়ে সরকারের প্রক্রিয়া অনুসরণের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘এইজন্য যে এটি (পরিবর্তন) কোনো চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় না। চাপিয়ে দিলে কোনো কিছুই আর টেকসই হবে না। যেটা আমরা আগেও দেখেছি। তিন দলীয় রূপরেখা ওয়ান ইলেভেনের সময় দেখেছি। তাই চাপিয়ে না দিয়ে সকলে একমত হয়ে যেটুকু করতে চাইবে আমরা সেটুকু সংস্কারের ঐকমত্য এবং পদ্ধতির ঐকমত্যের দিকেই যাব। একটা রাজনৈতিক আলোচনায় উত্তাপ থাকবে, একমত থাকবে। এটা খুবই স্বাভাবিক।’
বিচার কবে নাগাদ হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিচার কখন হবে সেটা তো আসলে পুরো শুনানি প্রক্রিয়া, সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে বলা যাবে। আগে বলা সম্ভব নয়। এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে বলা যাবে। যে মামলাগুলো বিচারাধীন আছে, সেগুলোর বিচার প্রক্রিয়া শেষ হলেই হবে। দেড় বছরে বিচারের রায় হয় এত অসম্ভব কিছু না। এর আগে তো দেখেছি যে দেড় বছরে বিচারের রায় হয়।
সরকার একটা ভালো, ইনক্লুসিভ (অন্তর্ভুক্তিমূলক) নির্বাচন করতে চায় এমনটা বলছে। ইনক্লুসিভ নির্বাচনের সংজ্ঞা কী এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার প্রথম থেকে বলেছে, একটা স্বচ্ছ নির্বাচন চায়। জনগণ যে নির্বাচন অংশগ্রহণ করবে সেই নির্বাচনটা চাই। জনগণের অংশগ্রহণের পথে যাতে কোনো অন্তরায় না হয়, সেজন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে যতোভাবে সহায়তা দেওয়া যায়, ততোভাবে সহায়তা দেবে। কোনো রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়টা আইনি হতে পারে। অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়টা তাদের পলিটিক্যাল ওয়েটেজ (গুরুত্ব) অনুযায়ী ডিসাইডেড (নির্ধারিত) হবে।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে সমতল এলাকায় বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে মধুপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের ব্যবস্থাপনায় এ বিতরণ কার্যক্রম হয়।
উপজেলার গাছাবাড়ি মিশনারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মধুপুরের সহকারি কমিশনার ভূমি রিফাত আনজুম পিয়া। মধুপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার ডা. শহিদুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন। এর আগেও এ প্রকল্পের কর্মসূচিতে প্রশিক্ষণসহ জীবনমান উন্নয়নে হাঁস, মুরগী, ভেড়া, গরু, ছাগল বিতরণও করা হয়েছে। সুবিধাভোগীরা এবার ছাগল পালনে এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সমতল এলাকার লাল মাটিতে গারো, কোচ, বর্মণদের বসবাস। এ এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর গারো কোচ বর্মণদের জীবনমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে সরকারের প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাণীসম্পদ বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে । আলোচনা সভা ও বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মধুপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শহিদুজ্জামান, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় এ মৃ, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন একাংশের সভাপতি রঞ্জিত নকরেক, মধুপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান ও জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক দলের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পবিত্র সিমসাং প্রমুখ।
পরে এ প্রকল্পের ১৫০ জন সুবিধাভোগীর মধ্যে ৫০ জনকে দুইটি করে ছাগল বিতরণ করে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় সুবিধাভোগীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গবাদিপশুর তড়কা রোগের ভ্যাকসিন প্রদান ও সচেতনতা লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম করা হয়।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য প্রস্তুতের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২টি বেকারিকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারাশী গ্রামের লোকনাথ বেকারি ও শ্রী দুর্গা বেকারিতে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ।
জানা যায়, বেকারি ২টিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন করা হচ্ছিল। শ্রমিকরা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কাজ করে আসছিল। উৎপাদন কক্ষে খোলা জায়গায় পাওয়া যায ময়লা-আবর্জনা ও ধুলাবালিযুক্ত কাঁচামাল এবং ছত্রাকযুক্ত ট্রে ।
এ অবস্থায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ও খাদ্য নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী লোকনাথ বেকারিকে ৮০ হাজার টাকা এবং শ্রী দুর্গা বেকারিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযান পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। কোনোভাবেই খাদ্যপণ্যে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বরদাশত করা হবে না। ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রেখে খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করতে হবে।’
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (চজ) নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুষ্টিয়া জেলা শাখা। দলটির নেতারা মনে করেন, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোটারদের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটবে, সংখ্যালঘু ও নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। বুধবার দিকে কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব মত প্রকাশ করেন জেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য ও যশোর অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যক্ষ খন্দকার এ.কে.এম আলী মুহসিন।
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের প্রচার-মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক ও কুষ্টিয়া শহর জামায়াতের আমীর এনামুল হকের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও কুষ্টিয়া-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আব্দুল গফুর, ইসলামি চিন্তাবিদ ও জামায়াত মনোনীত কুষ্টিয়া সদর-৩ আসনের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মুফতি আমীর হামজা, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজা উদ্দিন জোয়ারদার, কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হুসাইন, দৌলতপুর উপজেলা আমীর ও জামায়াত মনোনীত কুষ্টিয়া-১ আসনের প্রার্থী অধ্যক্ষ বেলাল উদ্দীন, কুষ্টিয়া-৪ আসনের প্রার্থী আফজাল হোসেন এবং কেন্দ্রীয় সূরা সদস্য হাফেজ মাওলানা রফিকুল ইসলাম।
এ সময় কুষ্টিয়ার সাংবাদিক নেতারা, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিষয়েও নেতাদের প্রতি দাবি জানান সাংবাদিকরা।
সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা আংশিক) আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচন করতে হবে এবং আওয়ামী স্টাইলে নির্বাচন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হবে স্বাধীনতার পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তির মধ্যে নির্বাচন। বুধবার বিকেলে একটি মোটরসাইকেল বহর নিয়ে তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও জনসংযোগকালে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী নির্বাচনে শিক্ষিত ও মেধাসম্পন্ন নেতা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা কোরআন হাদিসের মিথ্যা ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে যে ঘোরাচ্ছে তারা কি আসলে ইসলামের পক্ষে নাকি বিপক্ষে! ৭১-এর সময় যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে কাজ করেছে সেই বিরোধী শক্তিকে যদি আমরা মোকাবিলা করতে চাই তাহলে আমি মনে করি আমরা যারা প্রার্থী আছি আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে একজন যোগ্য প্রার্থীর জন্য কাজ করা উচিৎ এবং দলেরও দেওয়া উচিৎ। তাহলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করতে পারবো। এ সময় দলের চাওয়া অনুযায়ী তিনি যোগ্যপ্রার্থী উল্লেখ করে বলেন, আমার বিশ্বাস আগামী নির্বাচন নিয়ে মাঠে যে জরিপ হচ্ছে সেই জরিপে আমি এগিয়ে থাকব। এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
এর আগে তিনি দুপুরে তাড়াশ থেকে ৫শতাধিক মোটরসাইকেলসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি বিশাল শোডাউন বের করেন ও পথে নিমগাছি, রায়গঞ্জ এবং পাঙ্গাসী বাজারে পথসভা করেন। এ সময় তিনি তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মহিষের দই বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে। মহিষ দেশের সম্পদ, কিন্তু দীর্ঘদিন অবহেলিত থেকেছে-এ অবহেলা যেন আর না হয়, সরকারের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, মহিষের দুধ থেকে শুধু দই নয়, চিজসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে খামারিদের আয়ের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসব পণ্য রপ্তানিযোগ্য হিসেবেও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
উপদেষ্টা সাভারের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘বৈজ্ঞানিক সম্মেলন-২০২৫’- এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মিলিয়েই খাদ্য উৎপাদন গড়ে ওঠে। কিন্তু অনেকেই খাদ্য উৎপাদন বলতে কেবল কৃষিকেই বোঝেন। কৃষিতে কীটনাশক ও আগাছানাশকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় গরু, ছাগল, মহিষ ঘাস খেতে পারছে না। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির নামে মহিষের চারণভূমি হ্রাস পাচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয়।
বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক।
সম্মেলনে ড. প্রীতিশ ভারতের হরিয়ানায় প্রান্তিক কৃষকের দৃষ্টিকোণ থেকে মুরাহ মহিষ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এ সময় স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন ড. গৌতম কুমার দেব।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞানী, সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কৃষ্ণক প্রতিনিধি এবং মহিষ সেবাদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। এরপর দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা সাভারে অবস্থিত কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার চত্বরে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরির উদ্বোধন করেন এবং উদ্বোধন শেষে উপদেষ্টা ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করেন এবং এর বিভিন্ন কার্যক্রম ও আধুনিক সুবিধা ঘুরে দেখেন। এ সময় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের পরিচালক মো. শাহজামান খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য