আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (চজ) নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুষ্টিয়া জেলা শাখা। দলটির নেতারা মনে করেন, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোটারদের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটবে, সংখ্যালঘু ও নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। বুধবার দিকে কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব মত প্রকাশ করেন জেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য ও যশোর অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যক্ষ খন্দকার এ.কে.এম আলী মুহসিন।
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের প্রচার-মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক ও কুষ্টিয়া শহর জামায়াতের আমীর এনামুল হকের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও কুষ্টিয়া-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আব্দুল গফুর, ইসলামি চিন্তাবিদ ও জামায়াত মনোনীত কুষ্টিয়া সদর-৩ আসনের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মুফতি আমীর হামজা, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজা উদ্দিন জোয়ারদার, কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হুসাইন, দৌলতপুর উপজেলা আমীর ও জামায়াত মনোনীত কুষ্টিয়া-১ আসনের প্রার্থী অধ্যক্ষ বেলাল উদ্দীন, কুষ্টিয়া-৪ আসনের প্রার্থী আফজাল হোসেন এবং কেন্দ্রীয় সূরা সদস্য হাফেজ মাওলানা রফিকুল ইসলাম।
এ সময় কুষ্টিয়ার সাংবাদিক নেতারা, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিষয়েও নেতাদের প্রতি দাবি জানান সাংবাদিকরা।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে সমতল এলাকায় বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে মধুপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের ব্যবস্থাপনায় এ বিতরণ কার্যক্রম হয়।
উপজেলার গাছাবাড়ি মিশনারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মধুপুরের সহকারি কমিশনার ভূমি রিফাত আনজুম পিয়া। মধুপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার ডা. শহিদুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন। এর আগেও এ প্রকল্পের কর্মসূচিতে প্রশিক্ষণসহ জীবনমান উন্নয়নে হাঁস, মুরগী, ভেড়া, গরু, ছাগল বিতরণও করা হয়েছে। সুবিধাভোগীরা এবার ছাগল পালনে এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সমতল এলাকার লাল মাটিতে গারো, কোচ, বর্মণদের বসবাস। এ এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর গারো কোচ বর্মণদের জীবনমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে সরকারের প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাণীসম্পদ বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে । আলোচনা সভা ও বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মধুপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শহিদুজ্জামান, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় এ মৃ, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন একাংশের সভাপতি রঞ্জিত নকরেক, মধুপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান ও জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক দলের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পবিত্র সিমসাং প্রমুখ।
পরে এ প্রকল্পের ১৫০ জন সুবিধাভোগীর মধ্যে ৫০ জনকে দুইটি করে ছাগল বিতরণ করে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় সুবিধাভোগীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গবাদিপশুর তড়কা রোগের ভ্যাকসিন প্রদান ও সচেতনতা লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম করা হয়।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য প্রস্তুতের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২টি বেকারিকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারাশী গ্রামের লোকনাথ বেকারি ও শ্রী দুর্গা বেকারিতে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ।
জানা যায়, বেকারি ২টিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন করা হচ্ছিল। শ্রমিকরা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কাজ করে আসছিল। উৎপাদন কক্ষে খোলা জায়গায় পাওয়া যায ময়লা-আবর্জনা ও ধুলাবালিযুক্ত কাঁচামাল এবং ছত্রাকযুক্ত ট্রে ।
এ অবস্থায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ও খাদ্য নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী লোকনাথ বেকারিকে ৮০ হাজার টাকা এবং শ্রী দুর্গা বেকারিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযান পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। কোনোভাবেই খাদ্যপণ্যে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বরদাশত করা হবে না। ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রেখে খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করতে হবে।’
সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা আংশিক) আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচন করতে হবে এবং আওয়ামী স্টাইলে নির্বাচন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হবে স্বাধীনতার পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তির মধ্যে নির্বাচন। বুধবার বিকেলে একটি মোটরসাইকেল বহর নিয়ে তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও জনসংযোগকালে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী নির্বাচনে শিক্ষিত ও মেধাসম্পন্ন নেতা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা কোরআন হাদিসের মিথ্যা ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে যে ঘোরাচ্ছে তারা কি আসলে ইসলামের পক্ষে নাকি বিপক্ষে! ৭১-এর সময় যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে কাজ করেছে সেই বিরোধী শক্তিকে যদি আমরা মোকাবিলা করতে চাই তাহলে আমি মনে করি আমরা যারা প্রার্থী আছি আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে একজন যোগ্য প্রার্থীর জন্য কাজ করা উচিৎ এবং দলেরও দেওয়া উচিৎ। তাহলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করতে পারবো। এ সময় দলের চাওয়া অনুযায়ী তিনি যোগ্যপ্রার্থী উল্লেখ করে বলেন, আমার বিশ্বাস আগামী নির্বাচন নিয়ে মাঠে যে জরিপ হচ্ছে সেই জরিপে আমি এগিয়ে থাকব। এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
এর আগে তিনি দুপুরে তাড়াশ থেকে ৫শতাধিক মোটরসাইকেলসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি বিশাল শোডাউন বের করেন ও পথে নিমগাছি, রায়গঞ্জ এবং পাঙ্গাসী বাজারে পথসভা করেন। এ সময় তিনি তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মহিষের দই বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে। মহিষ দেশের সম্পদ, কিন্তু দীর্ঘদিন অবহেলিত থেকেছে-এ অবহেলা যেন আর না হয়, সরকারের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, মহিষের দুধ থেকে শুধু দই নয়, চিজসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে খামারিদের আয়ের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসব পণ্য রপ্তানিযোগ্য হিসেবেও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
উপদেষ্টা সাভারের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘বৈজ্ঞানিক সম্মেলন-২০২৫’- এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মিলিয়েই খাদ্য উৎপাদন গড়ে ওঠে। কিন্তু অনেকেই খাদ্য উৎপাদন বলতে কেবল কৃষিকেই বোঝেন। কৃষিতে কীটনাশক ও আগাছানাশকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় গরু, ছাগল, মহিষ ঘাস খেতে পারছে না। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির নামে মহিষের চারণভূমি হ্রাস পাচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয়।
বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক।
সম্মেলনে ড. প্রীতিশ ভারতের হরিয়ানায় প্রান্তিক কৃষকের দৃষ্টিকোণ থেকে মুরাহ মহিষ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এ সময় স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন ড. গৌতম কুমার দেব।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞানী, সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কৃষ্ণক প্রতিনিধি এবং মহিষ সেবাদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। এরপর দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা সাভারে অবস্থিত কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার চত্বরে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরির উদ্বোধন করেন এবং উদ্বোধন শেষে উপদেষ্টা ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করেন এবং এর বিভিন্ন কার্যক্রম ও আধুনিক সুবিধা ঘুরে দেখেন। এ সময় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের পরিচালক মো. শাহজামান খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লার মুরাদনগরে ৫২তম জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরিশিক্ষা ক্রীড়া সমিতির গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে উপজেলা স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরিশিক্ষা ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে কবি নজরুল মিনার প্রাঙ্গণে এ পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাছান খাঁন।
সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিন কাদের খাঁন, একাডেমিক সুপারভাইজার কোহিনুর বেগম, কাজী নোমান আহমেদ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান, সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম, নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাছিনা আক্তারসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা।
কুষ্টিয়ার মিরপুরে বারি পানি কচু-১ জাতের লতি কচুর চাষ করে নারী উদ্যোক্তা আসমা খাতুনের ভাগ্য বদলে গেছে। বর্ষার পানিতে ডুবে যাওয়া নিচু জমিতে সাধারণত কৃষকের চাষাবাদের আগ্রহ থাকে না। তবে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের খাঁড়ারা গ্রামের সেই জমিগুলোতে এখন সার্থকভাবে চাষ হচ্ছে লতি কচু। স্যাঁতসেতে নিচুও পানিযুক্ত জমিতে লতি কচুর আবাদ করে নিজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও এলাকার কৃষককে চাষে উদ্বুদ্ধ করতে প্রেরণা জোগাচ্ছে আসমা খাতুন। এলাকাটি ভেড়ামারা উপজেলা লাগোয়া হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরাও তাদের নিচু জমিতে লতি কচু আবাদের জন্য আগ্রহ দেখিয়ে আসমা খাতুনের সরণাপন্ন হচ্ছেন।
যশোর অঞ্চলের টেকসহ কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বাণিজ্যিকভাবে লতি কচু চাষে উদ্যোগ নেন তিনি। গত ২০ মার্চ মিরপুর কৃষি অফিসের মাধ্যমে উন্নত জাতের বারি পানি কচু-১ এর চারা সংগ্রহ করে খাঁড়ারা ব্লকে ২০ শতক জমিতে তিনি এর চাষাবাদ শুরু করেন। অল্প সময়ে ভালো ফলন আর সুস্বাদু ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন খরচের চেয়ে লতি কচু চাষে খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় কচু চাষে অনেক ভালো সাফল্য পেয়েছেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আসমা খাতুন খুবই খুশি। মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে তিনি এই কচু চাষ করে অন্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি কচুর লতি বিক্রি করছেন। প্রতি সপ্তাহে দুবার করে কচুর লতি বিক্রি করেন তিনি। প্রতিবারে ৫০ কেজি করে তিনি কচুর লতি বাজারে নিয়ে যান। প্রতি কেজি ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকা দরে তিনি এ কচুর লতি বিক্রি করে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা এনেছেন।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকার কচুর লতি বিক্রি করেছি বিক্রি করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও ১ লাখ টাকা কচু বিক্রির করার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
বারি পানি কচু-১ জাতের কচু আবাদ করছেন আমাদের গ্রামের আসমা খাতুন নামের একজন নারী। এই জাতের কচু চাষ করে তিনি নারী উদ্যোক্তা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন, এখন অনেক নারীই আসমা খাতুনের দেখা দেখি এই লতি কচুর চাষ করছেন।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, লতি কচুর ফলন ভালো, স্বাদ উন্নত এবং বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অল্প খরচে অধিক মুনাফার জন্য ক্রমে কৃষকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
মিরপুর উপজেলার উপসহকারী কৃষি অফিসার ময়নুল ইসলাম বলেন, উপজেলার বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের খাঁড়ারা ব্লকে জমিতে লতি কচুর চাষ হচ্ছে এবং প্রতি বছরই এখানে আবাদ বাড়ছে। সাধারণ কৃষক ছাড়াও নারীরা এই লতি কচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, বর্ষায় নিচু জমিতে লতি কচুর চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। সরকারিভাবে যশোর অঞ্চলের টেকসহ কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কৃষকরা এখন এই ফসলকে অর্থকরী সবজি হিসেবে বিবেচনা করছে। সঠিক পরিচর্যায় অতি দ্রুত এর ফলন পাওয়া যায়। পুরুষদের পাশাপাশি এখন অনেক নারী উদ্যোক্তাও তৈরি হচ্ছে।
মন্তব্য