ভারত মহানন্দা নদীর ফুলবাড়ী বাঁধের ৯টি গেট এক সাথে খুলে দেয়ায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের ঝাড়ুয়াপাড়া এলাকায় মহানন্দা নদীর তীররক্ষা বাঁধের প্রায় ১ কিলো মিটার নদীর দুই পাশ্বের সাইট ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
গত রবিবার ভোররাতে অতি বর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢলে মহানন্দার পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যায়। এতে ভারত শিলিগুড়ি শহরের ফুলবাড়ি নামক স্থানে মহানন্দা নদীর ওপর নির্মিত বাঁধের ৯টি গেট একসংগে খুলে দেয়। এতে ১৫-২০ ফুট উঁচু থেকে পানি মহানন্দার বুকে আছড়ে পড়ে বাংলাদেশ সীমানায় নদীর তীরে আঘাত হানে।
ভারত দুপুরের পর পুনরায় বাঁধের গেট বন্ধ করে দিলে নদীর পানি কমে যায়। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তের ঝাড়ুয়াপাড়া নামক এলাকায় তীররক্ষা বাঁধের তীব্র ভাঙন দেখা দেয়।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগে মহানন্দা নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০০৩-০৪ সালে নির্মিত সিসি ব্লক বাঁধের প্রায় ১ কিলোমিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
এছাড়া আরও কয়েক কিলোমিটার নদী তীররক্ষা সিসি ব্লক বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। এ সময় সীমান্তের ওপর লাগানো গাছপালা ও একটি টিনের ঘর ভেসে যায়। এতে ঝাড়ুয়াপাড়া, কাশিমগঞ্জ ও সন্ন্যাসীপাড়া গ্রামবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
ভারত পুনরায় বাঁধের গেট খুলে দিলে নদী ভাঙন তীব্র আকার করার আতঙ্কে অনেক পরিবার নির্ঘুম রাত কাটিয়েছিল। বর্তমানে ভারতের বাঁধের গেট বন্ধ রয়েছে ফলে মহানন্দা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। স্থানীয় এলাকাবাসীদের আতঙ্ক অনেকটা কেটে গেছে বলে জানান তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আফরোজ শাহীন খসরু।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আফরোজ শাহীন খসরু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
রংপুর বিভাগীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ড. মোঃ শফরাজ বান্ডা নদীতীর ভাঙন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে ভাঙনরোধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন। গত সোমবার সকাল থেকে ভাঙন কবলিত এলাকায় সাময়িক রক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার জিও ব্যাগে বালি ভরে ফেলানো শুরু হয়েছে পঞ্চগড় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশুতোষ বর্মণ জানান।
ঝাড়ুয়াপাড়া গ্রামের দুলাল, নাজির, নুর আলম ও রাশেদ জানান, ভারত ৯০ দশকের পর তাদের গ্রামের সহ তিনটি বিদ্যুতের স্টিল পোল স্থাপন করে নদীর পানি প্রবাহ ঘুরিয়ে দেন। তখন থেকে মহানন্দা নদীর পানি ওই গ্রোয়েন বাঁধে আঘাত পেয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত তীরে আছড়ে পড়ে এবং তখন থেকে নদীর পাড়ের ফসলি জমি ভাঙতে শুরু হয়।
এছাড়া তাদের প্রয়োজনে কোন রকম সতর্কতা বার্তা ছাড়াই গেট খুলে আমাদের পানিতে ডুবিয়ে মারছে যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। আমরা বর্তমান সরকারের মাধ্যমে ভারতের এ আগ্রাসী মনোভাব থেকে রক্ষার জোর দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, আমি ভাঙন কবলিত এলাকায় গত রবিবার এবং সোমবার পরিদর্শন করেছি। ইতোমধ্যে জিও ব্যাগে বালি ভরে প্রাথমিক ভাবে বাধ রক্ষার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশুতোষ বর্মণ বলেন, মহানন্দা নদীর পুর্বের দেয়া সিসি ব্লক বাঁধ ভাঙন এলাকা পরিদর্শ করেছি। প্রাথমিকভাবে ১০ হতে ১৫ হাজার জিও ব্যাগে বালি ভরে বাধ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা মাপজোঁক করে প্রকল্প বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রনালয়ের হতে বরাদ্দ এলে পুনাঙ্গ ভাবে কাজ শুরু করা হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, আবরার ফাহাদের শাহাদত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। তাঁর শাহাদতের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা শিক্ষার্থীরা কাজে লাগিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে শহীদ আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী পর্বে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
বিগত সরকারের ১৬ বছরের দুঃশাসনের সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, ওই সময় আবরার ফাহাদের মতো হাজারো শিক্ষার্থী নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। অনেকে মৃতপ্রায় অবস্থায় বেঁচে গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু সদস্য নিজেই শিক্ষার্থীদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। কারাগারে ভিন্ন মতাবলম্বী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। হলগুলো থেকে শিবিরের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করে বের করে দেওয়া হতো।
তিনি বলেন, আবরার ফাহাদের শাহাদতের গভীর তাৎপর্য রয়েছে, যা অনুধাবন করা জরুরি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘শেখ হাসিনা যে ভুল করেছেন, আমরা সেই ভুল করতে চাই না। ফ্যাসিজম যে প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়, আমরা সেই পথে যেতে চাই না।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজনকে অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিভাজন এড়িয়ে নাগরিকদের জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র ও সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।
নিজেকে রাষ্ট্র গড়ার পক্ষের লোক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার বিপরীতে জনগণের সামনে একটি ভালো বিকল্প উপস্থাপন করতে হবে। তা না হলে জনগণ আবার পুরাতন ব্যবস্থায় ফিরে যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের দীর্ঘ সাংস্কৃতিক লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি ও বহু ঐতিহ্যের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘২০১৯ সালে বুয়েটে ছাত্রলীগের গুণ্ডারা আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছে। তারা ভেবেছিল, তাঁকে হত্যা করে আধিপত্যবিরোধী কণ্ঠ স্তব্ধ করা যাবে। কিন্তু ইতিহাস বলে, এমন কণ্ঠ কখনো স্তব্ধ হয় না।’
তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকে আবরার ফাহাদের হৃৎস্পন্দন ধারণ করেছেন। তিনি তাঁর আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ন্যারেটিভ তৈরির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ের অন্যতম কাজ হলো জুলাইয়ের ন্যারেটিভ তৈরি করা। পাশাপাশি বিগত সরকারের ১৬ বছরের দুঃশাসনের ন্যারেটিভও তৈরি করতে হবে। সাংস্কৃতিক বৈষম্যকে ফ্যাসিবাদের অন্যতম কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্ম ও রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে কাউকে আলাদা করা যাবে না। সকল জাতিগোষ্ঠীকে একত্রিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যা ইতিহাসের সব অধ্যায়কে ধারণ করবে। তিনি ‘বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশপন্থা’য় এক থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। সন্ধ্যায় একই স্থানে ‘চলচ্চিত্রে জুলাই’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, এতে অংশ নেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে নির্মিত ও নির্মিতব্য চলচ্চিত্রের নির্মাতা ও কলাকুশলীরা। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ আজ (৭ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে সচিব মহোদয় প্রকল্পের স্টেক ইয়ার্ড-৪ বাইপাইল এর সম্মেলন কক্ষে প্রকল্প পরিচালক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন।
মতবিনিময় সভায় সচিব সেতু বিভাগ প্রকল্পের গুণগতমান নিশ্চিত করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প সম্পন্ন করার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। প্রকল্পের চ্যালেঞ্জসমূহ দ্রুত নিরসনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে প্রকল্পের কাজ সম্পন্নের উপর তাগিদ প্রদান করেন। চলতি অর্থবছরে প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার ও কাজের অগ্রগতি বৃদ্ধি কারার জন্য প্রকল্প পরিচালককে নির্দেশনা প্রদান করেন।
সচিব মহোদয় সভায় আরও বলেন, মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এর ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের জন্য বিশেষ দিকনির্দেশনা রয়েছে। প্রকল্পের কাজের কারণে মানুষের ভোগান্তি লাঘবের লক্ষ্যে অতিরিক্ত জনবল নিযুক্ত করে যথাযথভাবে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে সচিব মহোদয় গুরুত্ব আরোপ করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগের যেকোনো ভার্সন বাংলাদেশে তৈরির অপচেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। ভার্সন কাকে নিয়ে বানাবেন? আওয়ামী লীগের ওই মন্ত্রী, এমপি, জেলা, উপজেলার যারা সভাপতি সেক্রেটারি ছিল বড় বড় যারা চেয়ারম্যান ছিল তাদের নিয়ে? আপনি তো আর ইউনিয়নের মেম্বারকে আওয়ামী লীগের সভাপতি বানিয়ে দেবেন না। এরা প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, এরা প্রত্যেকেই ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সঙ্গে জড়িত, এরা কী করছে তা আপনারা প্রত্যেকেই ভালো করে জানেন। সুতরাং তাদের মধ্যে মন্দের ভালো খোজা, যারা একেক জন হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা বানাল, সেই সুযোগ তাদের দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের ভালো মানুষরা একত্র হয়ে যদি আরেকটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চায় করুক, এতে আমাদের কোনো সমস্যা থাকবে না। মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এনসিপির জেলা ও উপজেলা সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, যেহেতু প্রতীক নিয়ে আইনগত কোনো বাধা নেই সুতরাং এনসিপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে শাপলা প্রতীক নিয়েই অংশগ্রহণ করবে। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীকের ব্যাপারে পজেটিভ ছাড়া পাচ্ছি। আশা করি নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আস্থা ধরে রাখার কাজ করবে। এনসিপি এককভাবে নির্বাচনে যাবে নাকি, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে, সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে যখন অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একই পথে হাঁটবে, তখন দাবি, চিন্তা-ভাবনা, দেশ এবং জনগণের স্বার্থে কাজ করার বিষয়গুলো মিলে যায় তখন হতেই পারে জনগণের হয়ে একসাথে কোনো দলের সঙ্গে নির্বাচনে যাওয়ার। এনসিপি এ বিষয়গুলোকে পজিটিভভাবেই দেখছে। কিন্তু এনসিপি থেকে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
সমন্বয় সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমনসহ এনসিপির জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে জার্মানি আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির নবনিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে বাণিজ্য বহুমুখীকরণ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে জার্মানি বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান কার্যক্রম গতিশীল রাখবে।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিরও প্রশংসা করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
জার্মানিকে আরও বেশি পরিমাণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, ওষুধ, প্লাস্টিক পণ্য, পাদুকা, সাইকেল এবং চামড়াজাত পণ্য আমদানির আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ এবং জার্মানির মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ক জোরদার করতে উভয় দেশের বাণিজ্যকে বহুমুখী করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে উভয় দেশের লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে জার্মানি বাংলাদেশি পণ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য, যা আমাদের মোট রপ্তানি আয়ের ১০.৯৬ শতাংশ। এ সময় উপদেষ্টা জার্মানির আমদানিকারকদের প্রতি আরও বেশি পরিমাণে এ দেশের তৈরি পোষাক, হোম টেক্সটাইল, ওষুধ, প্লাস্টিক পণ্য, পাদুকা, সাইকেল এবং চামড়াজাত পণ্য আমদানির আহ্বান জানান।
জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ বলেন, বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে জার্মানি একসাথে কাজ করতে আগ্রহী। অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে বাণিজ্য বহুমুখীকরণ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তার দেশ বাংলাদেশের সাথে চলমান কার্যক্রম গতিশীল রাখবে।এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিরও প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে জার্মানিতে ৪ হাজার ৮৫০ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং আমদানি মূল্য পরিশোধ করেছে ৯৪০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান ও জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন এনজা ক্রিস্টেন উপস্থিত ছিলেন।
মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলা অভিযানে প্রায় ৩ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
অভিযান চলাকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জনি হোসেন (৩০) নামের এক অসাধু জেলেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমেদ। পরে জব্দকৃত জালগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এর আগে মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে আরও ৫ হাজার মিটার অবৈধ জাল ধ্বংস করা হয়েছিল।
অভিযানে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমদ, দৌলতপুর থানা পুলিশের সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমদ বলেন, “মা ইলিশ রক্ষায় বর্তমানে পদ্মা নদীতে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আজকের অভিযানে ৩ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। জালগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এসম এক জেলেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় আমাদের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্যানেলকে সমর্থন জানিয়ে সরে দাঁড়ালেন সর্বজনীন শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের দুই প্রার্থী। তারা হলেন, ভিপি প্রার্থী সাঈদ মোহাম্মদ রেদওয়ান ও দপ্তর সম্পাদক প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সালমান। তারা উভয়ই শাখা ছাত্রদল কর্মী। মঙ্গলবার চাকসু ভবনে বিকেল ৪টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিদ্ধান্তটি জানান এই দুই প্রার্থী।
লিখিত বক্তব্যে সাঈদ মোহাম্মদ রেদওয়ান বলেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রতিটি শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন, আর ৩৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য ছিল গর্বের বিষয়। ছাত্রদলের সঙ্গে আমার আত্মিক বন্ধন রয়েছে। আমি এই সংগঠনকে হৃদয়ে ধারণ করি এবং সংগঠনের আদর্শ ও সিদ্ধান্তকে সর্বোচ্চ সম্মান করি। তাই আমার সংগঠন কর্তৃক মনোনীত ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় ভাইয়ের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে আমি আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিচ্ছি।’
বক্তব্যে সাখাওয়াত হোসেন সালমান বলেন, ‘আজকের এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করছি, ব্যক্তির চেয়ে দল কতখানি বড়।
ছাত্রদলের সঙ্গে আমার আত্মিক বন্ধন রয়েছে। আমি এই সংগঠনকে হৃদয়ে ধারণ করি এবং সংগঠনের আদর্শ ও সিদ্ধান্তকে সর্বোচ্চ সম্মান করি। তাই আমার সংগঠন কর্তৃক মনোনীত দপ্তর সম্পাদক প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম ভাইয়ের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে, আমি আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, দল থেকে কোনো চাপ নয়, বরং ব্যক্তিগত কারণে তারা নির্বাচন থেকে সরে এসেছেন। দীর্ঘদিন পর চাকসু নির্বাচনে দল থেকে তারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু প্যানেলে স্থান না পাওয়ায় তারা স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দলের বৃহত্তর স্বার্থে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এই দুই প্রার্থী।
তারা আরো জানান, তাদের প্যানেল থেকে শুধু তারাই সরে এসেছেন। বাকিরা নির্বাচন করবে কি করবে না, সেটা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল।
“টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫” উপলক্ষে সংবাদকর্মীদের জন্য এক ওরিয়েন্টেশন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে মাদারীপুর সমন্বিত সরকারি অফিস ভবনে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে এ সভার আয়োজন করা হয়। ওরিয়েন্টেশনে অংশ গ্রহন করেন জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৬০ জন প্রতিনিধি।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোছাঃ ইয়াসমিন আক্তার।
ওরিয়েন্টেশনে জেলা প্রশাসক বলেন, জনকল্যাণে ইউনিসেফের সহায়তায় এবং সরকার কর্তৃক গৃহীত এ বিষয়টিকে আপনারা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে গণমাধ্যমে তুলে ধরে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিবেন, তাহলে সবচেয়ে বেশী উপকৃত আপনাদের মাদারীপুরবাসি। আমরা চাই ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিশু টাইফয়েড এর টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় আসুক, কেউ যেনো টিকা থেকে বাদ না যায় এবং টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিকলাঙ্গ পঙ্গু অথবা মৃত্যুবরণ না করে।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন জেলা তথ্য অফিসার মোঃ বেনজীর আহম্মেদ এবং মোঃ দেলোয়ার হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগে (এলজিইডি) এর উপ-সচিব ও মাদারীপুর পৌরসভা প্রশাসক হাবিবুল আলম, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ খলিলুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিগার সুলতানা, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকতা মোঃ শহীদুল ইসলাম মুন্সী, মাদারীপুর জেলায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
অনুষ্ঠানে টাইফয়েড জ্বরের টিকার কার্যকারিতাসহ বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব ও ব্যাখ্যা দেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ খলিলুর রহমান। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে ডিজিটাল পর্দায় ভার্চুয়ালি ঢাকা থেকে যোগদান করেন গণসংযোগ অধিদপ্তর (কারিগরি ও প্রশিক্ষণ) এর উপ-পরিচালক কাজী শাম্মিনাজ আলম।
মন্তব্য