ওমরাহ পালন সবসময়ই মুসলিমদের জন্য স্বপ্নের সফর। তবে ভিসা, হোটেল বুকিং ও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় জটিলতা অনেক সময় ভ্রমণকারীদের বিপাকে ফেলে। অনেকে এজেন্টের ওপর নির্ভর করেন, আবার কেউ কেউ পর্যটক ভিসায় গিয়ে ওমরাহ পালন করে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি সৌদি আরব নতুন নিয়ম চালু করেছে, যা ভ্রমণ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল করবে।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে খালিজ টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন থেকে ভিসা আবেদন থেকে শুরু করে হোটেল, পরিবহন সবকিছুই সরকারি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করতে হবে। এমন বেশ কিছু শর্ত মানতে হবে ওমরাহ করতে ইচ্ছুক মুসল্লিদের।
১. ভিসার সময় হোটেল বুকিং বাধ্যতামূলক
এখন থেকে ভিসার আবেদন করার সময়ই হোটেল বুক করতে হবে। অনুমোদিত হোটেল মাসার সিস্টেম বা নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে বেছে নিতে হবে।
আরব আমিরাত ভিত্তিক আসা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী কায়সার মাহমুদ বলেন, ‘হোটেল ও পরিবহণ ব্যবস্থা সৌদি আরবের ‘মাসার’ নামক ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত। এমনকি ট্যাক্সিও পোর্টালের মাধ্যমে বুক করতে হয়, যাতে শুধু অনুমোদিত পরিষেবা ব্যবহার করা যায়।’
২. আত্মীয়ের বাসায় থাকলে সৌদি আইডি লাগবে
পরিবার বা আত্মীয়ের বাসায় থাকার ক্ষেত্রে হোস্টের ইউনিফাইড সৌদি আইডি ভিসার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। সময় পরিবর্তন বা সফর পিছালেও একই আইডি সিস্টেমে হালনাগাদ করতে হবে।
৩. পর্যটক ভিসায় ওমরাহ নয়
এখন থেকে পর্যটক ভিসায় ওমরাহ পালন সম্ভব নয়। যারা চেষ্টা করবেন, তাদের থামিয়ে দেয়া হতে পারে এবং মদিনার রিয়াজুল জান্নাতেও প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
৪. ওমরাহ ভিসা বাধ্যতামূলক
বাধ্যতামূলক ওমরাহ ভিসা সকল হজযাত্রীদের নুসুক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একটি ডেডিকেটেড ওমরাহ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে, হয় ই-ভিসা হিসেবে অথবা অনুমোদিত অপারেটরদের মাধ্যমে প্যাকেজ বুকিং করে।
৫. কঠোর ভ্রমণসূচি নিয়ম
ভিসার সঙ্গে সফরসূচি জমা দিতে হবে, যা পরে পরিবর্তন বা স্থগিত করা যাবে না। নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান করলে জরিমানা দিতে হবে।
মাহমুদ বলেন,‘আপনি যদি অনুমোদিত পরিকল্পনার বাইরে আপনার অবস্থান বাড়াতে চান, তাহলে তা করা যাবে না। যদি ফেরার যাত্রা স্থগিত করা হয়, তাহলে এজেন্টদের ব্যক্তি প্রতি ৭৫০ রিয়াল থেকে শুরু করে জরিমানা করা হয় এবং এমনকি সিস্টেম ব্লকেজের সম্মুখীন হতে পারে।’
৬. কিছু দেশের জন্য ভিসা অন অ্যারাইভাল
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বা শেনজেন দেশগুলোর ভিসাধারীরা শর্তসাপেক্ষে ভিসা অন অ্যারাইভাল পাবেন। শর্ত হলো, আগে এসব দেশে অন্তত একবার ভ্রমণ করতে হবে এবং এবং ভিসার মেয়াদ এক বছর হতে হবে।
৭. বিমানবন্দরে বুকিং যাচাই
আগমনের পর বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষ নুসুক বা মাসার সিস্টেমে থাকা হোটেল ও পরিবহন বুকিং যাচাই করবে। কোনো কিছু অনুপস্থিত থাকলে জরিমানা বা ভ্রমণে বাধা দেয়া হতে পারে।
৮. অনুমোদিত ট্যাক্সি ও পরিবহণ ব্যবহার বাধ্যতামূলক
পথচারী ট্যাক্সি বা যে কোনো গাড়ি নেওয়া যাবে না। শুধুমাত্র নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে অনুমোদিত ট্যাক্সি, বাস বা ট্রেন ব্যবহার করতে হবে।
৯. হারামাইন ট্রেনের নির্দিষ্ট সময়
হারামাইন এক্সপ্রেস ট্রেন রাত ৯টার পর আর চলে না। তাই এ সময়ের পর আসলে আগে থেকেই অনুমোদিত পরিবহন বুক করতে হবে। অন্যথায় হজযাত্রীরা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
১০. নিয়ম ভাঙলে কড়া জরিমানা
যে কোনো নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য ভারি জরিমানা রয়েছে। নিয়ম ভঙ্গের জন্য কর্তৃপক্ষ হজযাত্রী এবং এজেন্ট উভয়ের উপরই বড় ধরনের জরিমানা আরোপ করতে পারে।
‘শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল, জেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরাসহ শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন।
সেসময় বক্তারা বলেন, শিক্ষকদের হাতেই গড়ে ওঠে জাতির ভবিষ্যৎ। তাই তাদের মর্যাদা রক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তারা আরও বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর যুগে শিক্ষকদের দায়িত্ব আরও বেড়েছে—শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও মানবিকতায় গড়ে তোলাই এখন মূল লক্ষ্য। তাই শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবিকতায় গড়ে তুলতে প্রতিটি শিক্ষককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় এবার আশানুরূপ হয়েছে আলুর ফলন। গতবার বাজার চড়া থাকায় চাহিদার চেয়ে আবাদ হয়েছে অনেক বেশি। কিন্ত কাঙ্খিত দাম না পেয়ে অনেকটাই হতাশ আলু চাষীরা। দাম না বাড়লে বড় ধরনের লোকশানের আশংকা করছেন তারা। বিশেষ করে উপজেলার ব্রাক,সিদ্দিক ও হিমালয় (কোল্ডস্টোর) আলুর হিমাগারে রয়েছে পর্যাপ্ত মজুদ। কৃষকরা জানান উৎপাদন খরচ উঠাতেই তারা উৎকণ্ঠিত। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস জানায়,এবার আলুর উৎপাদন বেশি থাকায় দাম অনেকটাই কম।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন।
উপজেলার নতুন ফেরিঘাট এলাকায় অবস্থিত ব্র্যাক, হিমালয় ও সিদ্দিক এই তিনটি কোল্ডস্টোরে (হিমাগারে) বর্তমানে ১৮ হাজার ৪১৫ মেট্রিক টন খাবার ও বীজ আলু মজুত আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তিনটি হিমাগারের মোট ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি হিমাগারের শেডের মেঝেতে বিছানো শত শত মণ আলু। ভিতরে বস্তায় বস্তায় আলু সংরক্ষিত আছে। নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা পচে যাওয়া আলু আলাদা করে ফেলে দিচ্ছেন। নামমাত্র বিক্রি থাকায় হিমাগার থেকে খুচরা বাজারে আলু যাচ্ছে খুবই কম বলছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
শ্রীরায়ের চর গ্রামের কৃষক সন্তোষ সরকার জানান,প্রতিবছর ভুট্টা চাষে ভালো লাভ হতো। এবার আলু চাষ করে বিপদ ডেকে এনেছি। উৎপাদনের খরচই তুলতে পারছি না। ফলন ভালো হলেও বিক্রি করতে গেলে মাথায় হাত।
চর চাষি গ্রামের আলু ব্যবসায়ী জামসেদ আলী হতাশা প্রকাশ করে বলেন,খুচরা বাজারে দাম কিছুটা ভালো হলেও হিমাগারে ন্যায্যমূল্য মিলছে না। প্রতি কেজি আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণে খরচ ২৫–৩০ টাকা, অথচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১২–১৩ টাকায়। এতে কেজিপ্রতি ১২–১৫ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
দৌলতপুর ইউনিয়নের কৃষক আবু হাসান বলেন,আগস্টে কৃষি মন্ত্রণালয় হিমাগার থেকে প্রতি কেজি ২২ টাকায় আলু বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিল এবং সরকার ৫০ হাজার টন আলু কেনার সিদ্ধান্তও নেয়। কিন্তু বাস্তবে সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না। হিমাগারে রাখা ৪ হাজার বস্তার মধ্যে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৫০ বস্তা তাও তিনগুণ লোকসানে।
ব্র্যাক কোল্ডস্টোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর তারেক মাসুদ বলেন,বীজ আলু ছাড়া এখন সব আলু বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দাম কমে যাওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে পারছেন না। তাদের লোকসানের কথা ভেবে আমরা কোল্ডস্টোর ভাড়া কমিয়ে দিয়েছি, তবুও ক্ষতি এড়ানো কঠিন।
দাউদকান্দি উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এ বছর আলুর উৎপাদন চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। তবে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার শিগগিরই সরকারি ক্রয় ও সংরক্ষণ কার্যক্রম বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে। আশা করছি, কৃষকরা লোকসান থেকে কিছুটা হলেও বাঁচতে পারবেন।
খুব শিগগিরই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
রোববার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ কথা জানান তিনি।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে জুলাই সনদের বিষয়বস্তু ও এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাব ও এবিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের অবস্থান সম্পর্কে সভাকে অবহিত করা হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্য কমিশনের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশন সকল রাজনৈতিক দল থেকে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা পেয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যমগুলো ঐকমত্য কমিশনকে অকল্পনীয় সমর্থন দিয়েছে।
কমিশন সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস কমিশনের সকল সদস্যদের ধন্যবাদ ও শুভ কামনা জানিয়েছেন। কমিশনের কাজের চুড়ান্ত অগ্রগতি সম্পর্কে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আজকের বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ, কমিশন সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
পাশাপাশি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আসিফ নজরুল ও আদিলুর রহমান খান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলে বাস উল্টে দুর্ঘটনায় মো. ফয়সাল (৪৭) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (০৫ অক্টোবর) রাত ২টার দিকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এঘটনায় নিহত ফয়সালের স্ত্রী রাণী আকতার (৩১) সহ আরও ৪জন গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানে চিকিৎসাধীন আছে।
এর আগে, শনিবার ৪ অক্টোবর দুপুর ১টার দিকে টানেলের পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা প্রান্তে যাওয়ার সময় বরযাত্রীবাহী বাসটি অতিরিক্ত গতির কারণে এ দূর্ঘটনা ঘটনা ঘটে।
নিহত ফয়সাল নগরীর পতেঙ্গা থানার নিজাম মার্কেট এলাকার হোসেন আহমেদের ছেলে। তার দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে।
নিহত ফয়সালের ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন জানান, শনিবার দুপুরে একটি বিবাব অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বাস চালক দ্রুত গতিতে বাস চালানো কারণে টানেলের মাঝে পথে বাসটি উল্টে যায়। এসময় বাসে থাকা ৩০ যাত্রীর মধ্যে ১২ জন আহত হয়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলে তাদের নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে বড় ভাই ফয়সালের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, এঘটনায় বড় ভাই ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও ৪জন গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। বাস চালকের অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে আমরা এরকম দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি।
আনোয়ারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, টানেলে দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় ৬ জনকে আনা হয়। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুনেছি তাদের মধ্যে ফয়সাল নামের একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল ২১ বছর বয়সী যুবক রামেলের। এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে স্তব্ধ এলাকাবাসী। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো গ্রামে। বাবা-মায়ের আহাজারি যেন থামছেই না। নিহত মো. রামেলের বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার জিনারি গ্রামে।
জিনারি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনসুর আহমেদ জানান, কিছুদিন পূর্বে রামেলের বাড়ির পাশে বসে মাদক সেবন করছিলেন পাশ্ববর্তী তেতুলিয়া গ্রামের নাঈমসহ (২২) কয়েক যুবক। এ সময় প্রতিবাদ করেন রামেল ও তার চাচাতো ভাই মো. রিফাত। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে শুরু হয় বিরোধ। ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে বেলতৈল স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে রামেল ও রিফাতের গতিরোধ হামলা চালায় নাঈম, তারেক, সাগর, রায়হানসহ বেশ কয়েকজন। এক পর্যায়ে রামেলকে করা হয় ছুরিকাঘাত। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত রামেলকে প্রথমে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩ টায় তার মৃত্যু হয়।
জিনারি গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ বুলবুল জানান, এ ঘটনায় ৩ অক্টোবর নিহত রামেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে নাঈমসহ ৭ জনের নামোউল্লেখ করে হোসেনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারিনি পুলিশ।
রামেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে খুব একটা পড়াশোনা করতে পারেননি রামেল। সংসারের হাল ধরতে ঢাকায় গিয়ে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। পরিবারে তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিই ছিলেন রামেল। শুধুমাত্র মাদকের প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। রামেলের হত্যকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
রামেলের মা যমুনা বেগম জানান, রামেলের স্বপ্ন ছিল কুয়েতে গিয়ে উপার্জন করে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাবেন। সে অনুযায়ী ঋণ করে ৫ লাখ টাকা ও পাসপোর্ট জমা দেওয়া ছিল একটা এজেন্সিতে। আর কদিন পরেই প্রবাসে পাড়ি জমানোর কথা ছিল রামেলের। তার আগেই চলে গেল পরপারে।
রামেলের চাচী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, রামেলের মতো এত নম্র-ভদ্র ছেলেই হয় না। খুব অল্প বয়সেই পরিবারের হাল ধরেছিল ছেলেটি।
রামেল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শনিবার বিকেলে জিনারি গ্রামে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন এলাকাবাসী। পুলিশ রামেলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না করে আশ্রয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন বলেন "ঘটনার পর থেকেই আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। খুব দ্রুতই আমরা তাদের ধরতে পারব।”
পূজার ছুটিতে স্থলবন্দর বন্ধ থাকার অযুহাতে কৃষি নির্ভর মেহেরপুরে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে দ্বিগুন হয়ে গিয়েছিলো। আর এক ছুটি শেষে কাঁচা মরিচ আমদানির খবরে দাম কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে।
দাম কমে যাওয়াতে ক্রেতাদারের মাঝে স্বশ্তি ফিরলেও চাষিদের মাঝে অস্বস্তি কাজ করছে। কৃষকদের দাবি দাম কমে যাওয়ায় তাদের লাভের চেয়ে লোকশানের পাল্লা ভারি হতে চলেছে।
জেলার কাঁচা মরিচ বাজার ঘুরে দেখা যায়, গেল চারদিন আগেও মেহেরপুর জেলায় পাইকারী বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আর খুচরো বাজারে তা বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা করে।
পূজার ছুটির কারনে আমদানির বন্ধের অযুহাতে সেই কাঁচা মরিচ গত দুইদিন আগে পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা, আর খুচরো বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩৭০ টাকা থেকে ৩৯০ টাকা পযর্ন্ত।
কাঁচা মরিচ আমদানির কথা শুনে সেই মরিচ আজ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা ১৬০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারেও পড়েছে এর প্রভাব। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পযর্ন্ত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুইদিন আগে দাম বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা পক্ক কিংবা অপরিপক্ক সব ধরনের কাঁচা মরিচ তুলে বাজারে নিয়ে আসছিল। আমদানিও ভালো ছিলো। আজ দাম কমে যাওয়ার কথা শুনে হাটে কাঁচা মরিচ আমদানি ও কমে গেছে। আমদানি কমে গেলে বিপরীতে আবার দাম বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।
চাষিরা বলছেন,অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় মরিচ গাছ এমনিতেই মরে গেছে। যাতে করে আমাদের লোকশানে পড়তে হবে। হঠাৎ দাম বাড়াই লোকশান পুশিয়ে নেয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমদানির কারনে চাষিরা লোকশানে পড়তে পারে। যার ফলে কাঁচা মরিচ চাষে আগ্রহ হারাবে।
মরিচ চাষি মজি বলেন, আমাদের মাঠ সব পানিতে ডুবে গেছে। এই পানি মাঠ থেকে নামতে একমাস সময় লাগবে। জলাবদ্ধতার কারনে মাঠে মরিচ গাছ অর্ধেক মরে গেছে। যার ফলে আমাদের এবার লোকশানে পড়তে হবে। গত দুদিন আগে মরিচের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় ভেবে ছিলাম। এবার মরিচ উৎপাদন কম হলেও দামে পুশিয়ে যেতো। আবার আজ থেকে আগের দামে চলে এসেছে,এতে করে আমাদের লাভের চেয়ে লোকশানের পাল্লা ভারি হয়ে যাবে।
আরেক মরিচ চাষি বেল্টু বলেন, মাঠে এমনিতেই গাছের সংখ্যা কমে গেছে। আবার একজন লেবারে সারাদিনে বিশ কেজি মরিচ তুলতে পারবে। আর তার মুজুরি খরচ ৪"শ টাকা। দাম কমে যাওয়ায় খরচ খরচা বাদ দিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
কাঁচা মরিচ ব্যাবসায়ী আকাশ বলেন, তিনদিন আগে এই মরিচ কিনেছি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা করে। আর আজ পাইকারি কিনছি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা করে। আবার বাজার কাঁচা মরিচ আমদানি কমে গেছে। ডিজিটাল যুগে চাষিরা আমদানি রপ্তানির খোঁজ এক মিনিটের মধ্যে পেয়ে যাচ্ছে।
কাঁচা মরিচ হাট ইজারাদার তারিক আহমেদ বলেন, আমরা মরিচের হাট সরকারি ভাবে নিলামের মাধ্যমে বছর চুক্তিতে নিয়ে থাকি। বাজারে যতবেশি চাষি ও ব্যাবসায়ী আসবে আমাদের ততো লাভ। অথচ আজ মরিচ আমদানির কথা শুনে কাঁচা মরিচ চাষি অর্ধেকের কম এসেছে। আমাদের বাজারে যতো আমদানি হবে ততো বেশি খাজনা আদায় হবে।
ইয়েমেন থেকে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। যার ফলে তেলআবিবে ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
আরব ও ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা মেহের রোববার সকালে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, তারা ইয়েমেন থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শনাক্ত করেছে।
একই সময়ে জায়নিস্ট সরকারের গণমাধ্যম জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বিভিন্ন এলাকায় সতর্কতা সাইরেন বেজে ওঠে।
ইসরাইলি চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়েছে এবং বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) দাবি, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র তারা সফলভাবে ভূপাতিত করেছে।
সংবাদ মাধ্যমটি আরও জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর ইসরাইলের মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ পশ্চিম তীরের কিছু এলাকায় সাইরেন বেজে ওঠে। সতর্কতামূলক সাইরেন বাজলেও এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি, হতাহতের ঘটনা বা আঘাতের খবর পাওয়া যায়নি।
আইডিএফ জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ থেকে, যখন গাজায় হামাসবিরোধী অভিযান আবার শুরু হয়, তখন থেকে হুথি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনি বাহিনী ইসরাইলের দিকে মোট ৯১টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। একই সময়ে অন্তত ৪১টি ড্রোন ইসরাইলের দিকে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া, চলতি বছরের জানুয়ারিতে হামাস-ইসরাইলের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতির আগে ইয়েমেনিরা ইসরাইলের দিকে ৪০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।
উল্লেখ্য, ইসরাইল গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করার পর থেকেই ইয়েমেন ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি তাদের প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়ে আসছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইয়েমেন বারবার ইসরাইলবিরোধী অভিযানে অংশ নিচ্ছে।
মন্তব্য