দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চার দিনের ছুটি শেষ হচ্ছে আজ। কর্মস্থলে যোগ দিতে অনেকেই শহরে ফিরেছেন। ফলে রাজধানীর টার্মিনালগুলোতে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। তবে প্রধান সড়কগুলোতে তেমন যানজট দেখা যায়নি।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, পল্টন, কাকরাইল এলাকায় সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়।
বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা কিশোর অধিকারী রংপুর থেকে ট্রেনে ফিরেছেন ঢাকায়। তিনি জানান, বছরে একটি ঈদ আর পূজায় বাড়ি যাওয়া হয়। পূজার সময় আত্মীয়-স্বজন সবাই বাড়িতে আসে। গত মঙ্গলবার অফিস করে বাড়ি গিয়েছি। আগামীকাল আবার অফিসে যেতে হবে, তাই আজ চলে এসেছি। যাওয়া-আসায় তেমন কষ্ট হয়নি। আনন্দ নিয়েই পূজা উদযাপন করতে পেরেছি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বোরহান উদ্দিন চাঁদপুর থেকে ফিরেছেন সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে। তিনি জানান, ঈদের মতোই ঢাকা ফিরতি যাত্রীর চাপ রয়েছে। দুর্ভোগ এড়াতে সকাল সকাল ঢাকায় ফিরেছি। আগামীকাল অফিস করতে হবে, তাই আজ চলে এসেছি।
এ দিকে সরেজমিনে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যানজট দেখা যায়নি। মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, পল্টনে ছুটির দিনের মতোই যাত্রীবাহী গাড়ির চাপ কম। তবে অটোরিকশার পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। তবে সায়দাবাদ, দয়াগঞ্জ, ধোলাইপাড় এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে।
সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে দুর্গাপূজার ছুটি মিলিয়ে গত বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ছুটি রয়েছে সরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ১ ও ২ অক্টোবর (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) দুর্গাপূজার ছুটি এবং ৩ ও ৪ অক্টোবর (শুক্রবার ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। তাই সরকারি অফিস আগামীকাল রোববার (৫ অক্টোবর) থেকে পুনরায় শুরু হবে।
অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের রাস্তা ও বাড়ির আঙিনা। ফলে তাদের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টির ফলে ওই এলাকার মানুষের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মার্স ফিড নামে একটি কোম্পানির অপরিকল্পিত বালু ভরাট করে চারিদিকে ঘিরে ওই এলাকার পানি নদীতে নামতে না পাড়ায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। এ জলাবদ্ধতায় পানিবন্ধী হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে ওই এলাকার লোকজন। এলাকাবাসী অবিলম্বে এর স্থায়ী নিরসন চায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সাতভাইয়া পাড়া গ্রামে পাশে পশু খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘মার্স ফি’ নামের একটি কোম্পানি গড়ে উঠে। এ কোম্পানি গড়ে উঠার পর থেকে এ এলাকার মানুষ বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেই বসবাস করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে এ কোম্পানির পশু খাদ্য তৈরির কাঁচামালের দুগর্ন্ধে এ এলাকায় বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও এ কোম্পানি অপরিকল্পিতভাবে বালু ভরাট করার ফলে এ এলাকার পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই। গত কয়েকদিনে অতি বৃষ্টির কারণে পানি জমে রাস্তা ও বাড়িঘর তলিয়ে গিয়ে এলাকার প্রায় ২ শতাধিক মানুষের ঘরে পানি ঢুকে যায়। ফলে পানি বন্দি হয়ে পড়ে মানুষ।
সরেজমিনের গিয়ে দেখা যায়, সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পানি জমে আছে। অনেক ঘরে পানি ঢুকে তাদের আসবাবপত্র, কাপড় চোপড় নষ্ট হয়ে আছে। এমনকি রান্নাঘর ও বসবাসের ঘরেও হাঁটু সমান পানি উঠে গেছে। ওই এলাকার বাসিন্দরাও ঘরে উঠা নষ্ট পানিতে থালা বাটি ধৈত করছেন। ওই এলাকার মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছেন। বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি জমে ময়লা ও আবর্জনায় পরিনত হয়েছে ওই এলাকার প্রতিটি ঘরবাড়ির চারপাশ। সকলেই পানি দিয়ে হেঁটে প্রয়োজনীয় কাজে ও গন্তব্যস্থলে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারনে পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। পানির দুর্গন্ধে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ওই এলাকার লোকজন। এলাকাবাসী তাদের কষ্টের পরিত্রাণ চায়।
সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের আব্দুল কালাম জানান, আমরা এ পানি নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত অনেক কষ্টে আছি। বৃষ্টির সময় আসলে এ গ্রামের মানুষজন জলাবদ্ধতায় শিকার হই। কেউ আমাদের কষ্ট দেখছে না, এলাকায় যেন লোক নেই। চেয়ারম্যান, মেম্বার কেউ দেখে না। ভোটের সময় আসলেই তারা আসে।
সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের গৃহবধূ পুজা রানী জানান, কোম্পানির বালু ভরাট করায় এ অঞ্চলের বৃষ্টির পানি নদীতে নামতে না পারায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে এ পানি ঘরে ঢুকে পড়েছে। ফলে আমাদের ঘরের আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় মালপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে বালু ভরাট করলে এ সমস্যার সৃষ্টি হতো না।
ওই গ্রামের বৃদ্ধ সামসুল ইসলাম জানান, এ কোম্পানি হওয়ার আগে আমাদের জলাবদ্ধতার কোন সমস্যা ছিল না। বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি মেঘনা নদীতে নেমে যেত। বর্তমানে বালু ভরাট করায় আমাদের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমাদের রান্না বান্না, বাথরুমসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের বিসু সরকার, নিপা রানী সরকার জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ঘরে পানি উঠে আমাদের খাবার দাবার, রান্না বান্না করা যাচ্ছে না। আমাদের না খেয়ে শিশুরা অনেক কষ্ট করছে।
মার্স ফিডের জেনারেল ম্যানেজার জসিম উদ্দিন জানান, আমাদের জায়গা ভরাট করলে যদি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে আমাদের কিছুর করার থাকে না। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ড্রেন নির্মান করে দেয়া হবে।
বৈদ্যেরবাজারে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা মটরের মাধ্যমে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশন কাজ শুরু করেছি। দ্রুত এর স্থায়ী নিরসন করা হবে।
রাজা হলে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রে পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছেন প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়াম। অ্যাপল টিভি+ এর দ্য রিলাকটেন্ট ট্রাভেলার অনুষ্ঠানের জন্য অভিনেতা ইউজিন লেভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি খোলামেলা অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
কথোপকথনের এক পর্যায়ে রাজা হিসাবে ভবিষ্যৎ ভূমিকা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে উইলিয়াম বলেন, ‘পরিবর্তন যে আমার এজেন্ডার মধ্যে আছে তা নিশ্চিন্তে বলা যায়। ভালোর জন্য পরিবর্তন- আমি একে সাধুবাদ জানাই। কিছু পরিবর্তন আনতে পারব এই ভাবনা আমাকে উদ্দীপ্ত করে। তবে একেবারে আমূল নয়, প্রয়োজনীয় পরিবর্তনই হবে।’
উইন্ডসর প্রাসাদ ঘুরে দেখাতে দেখাতে এই আলাপ হয়। অভিনেতার সঙ্গে দেখা করতে বৈদ্যুতিক স্কুটারে করে আসেন উইলিয়াম, যা তিনি সাধারণত প্রাসাদ ঘোরার সময় ব্যবহার করেন। তিনি জানান, তিনি আমেরিকান পাই চলচ্চিত্র সিরিজের ভক্ত, যেখানে লেভি দীর্ঘদিন বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
আলোচনায় পারিবারিক ইতিহাস নিয়েও কথা বলেন উইলিয়াম। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি সতর্ক না হন, তাহলে ইতিহাস আপনার ওপর ভার হয়ে আসতে পারে। তাই বর্তমানে বাস করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
৪৩ বছর বয়সি এ উত্তরাধিকারী জানান, ঐতিহ্যের গুরুত্ব থাকলেও তিনি রাজতন্ত্রকে প্রাসঙ্গিক রাখার প্রশ্ন তুলতে ভয় পান না।
সাক্ষাৎকারে উঠে আসে পরিবার, সন্তান, গণমাধ্যমের হস্তক্ষেপ ও অ্যাস্টন ভিলা ফুটবল ক্লাবের প্রসঙ্গ। তিনি বারবার উল্লেখ করেন বাবা চার্লস এবং স্ত্রী কেট মিডলটনের ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের বিষয়টি। উইলিয়াম জানান, সন্তানরা এই কঠিন সময় ভালোভাবে সামলেছে।
প্রিন্স অভিনেতাকে নিয়ে প্রাসাদের কাছের একটি পাবে যান। সেখানে অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন তিনি। তবে ভাই প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে সম্পর্কের প্রসঙ্গ সরাসরি আসেনি। এক জায়গায় শুধু বলেন, ‘অতীতে যেসব পরিস্থিতির মধ্যে হ্যারি আর আমি বড় হয়েছি, সেসব যেন আর ফিরতে না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে আমি সব করব।’
পরে বিবিসিকে লেভি জানান, প্রিন্সকে এতটা খোলামেলা আলাপ করতে দেখে তিনি অবাক হয়েছেন। ‘আমার কাছে এটি ছিল কেবল এক কথোপকথন, কোনো স্কুপ বের করার চেষ্টা নয়। দিনটি আমার জন্য ছিল একেবারেই পরাবাস্তব।’
সাক্ষাৎকারের শেষদিকে উইলিয়াম বলেন, তিনি এমন একটি পৃথিবী গড়তে চান যা তার ছেলেকে গর্বিত করবে। ‘জীবন আমাদের পরীক্ষা নেয়, কখনো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। সেগুলো উৎরে যাওয়ার মাধ্যমেই আমরা তৈরি হই। আমি আমার স্ত্রী, বাবাকে এবং সন্তানদের নিয়ে গর্বিত।’
মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) কর্মরত পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সুচিকিৎসার জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের বহির্বিভাগ উদ্বোধন করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
গতকাল শুক্রবার মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট পুলিশ লাইন্সে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সার্বিক সহযোগিতায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. সরওয়ার-এর তত্ত্বাবধানে পুলিশ সদস্যদের জন্য এই সুবিধা চালু করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে এটি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। এর ফলে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে রোগীর চাপ কমার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা একই স্থানে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারবেন এবং রোগ নির্ণয়ে প্রয়োজনীয় নমুনাও সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া অন্যান্য সেবার মধ্যে থাকবে সরকারি বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ, ফিজিওথেরাপি এবং অবজারভেশন সুবিধা।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক (ডিআইজি) মো. সায়েদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. জিললুর রহমানসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রোববার (৫ অক্টোবর) থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক (এসইউপি) সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করা এসব পণ্য বন্ধে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
শনিবার (৪ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, সচিবালয়ের সব প্রবেশপথে চেকিং করা হবে। ভেতরে পলিথিন বা একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পাওয়া গেলে তার ব্যবহার রোধ করা হবে।
যাদের কাছে নিষিদ্ধ ব্যাগ পাওয়া যাবে, তাদের কাগজের তৈরি ব্যাগ দেওয়া হবে। প্রবেশপথসহ সচিবালয়ের বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতার জন্য সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে মনিটরিং টিম কাজ করছে বলে জানানো হয়।
এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে। সচিবালয়ে এসইউপি ব্যবহার বন্ধ করে পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী নিশ্চিত করতে হবে। সভা-সেমিনারে বোতল, কাপ, প্লেট ও চামচের মতো একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক আর ব্যবহার করা যাবে না। তার পরিবর্তে পাটজাত, কাপড়ের বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
একইসঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এসইউপি ব্যবহার বন্ধে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সভা-সেমিনারে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব খাবারের প্যাকেট দেওয়া হবে। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে ব্যবহারের জন্য বিকল্প সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পারসন (নির্ধারিত প্রতিনিধি) নিয়োগ ও মনিটরিং কমিটি গঠন করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আগামীকাল থেকে সচিবালয়ে এসইউপি মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।
ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত চট্টগ্রামের প্রায় চার শতাধিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত ও ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন কর্মকর্তারা। চাকরিতে পুনর্বহালসহ ছয় দফা দাবিতে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের ফৌজদার হাট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের শত শত কর্মকর্তা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এরপর পৌনে ১২টার দিকে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করেন। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক অবরোধের কারণে দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাতায়াতকারী লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। এতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন, পরিবার নিয়ে পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।
এর আগে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলন করে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা রবিবার থেকে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে শনিবার সকাল থেকেই মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের আন্দোলন শুরু হয়।
আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের প্রতিনিধি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৪০০ জন কর্মকর্তাকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল, ওএসডি প্রত্যাহারসহ মোট ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছি।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মিজানুর রহমান নামের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে আমাদের স্যালারি অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে। আমাদের অ্যাকাউন্টে থাকা বেতনের টাকাও আমরা তুলতে পারছি না। এ ছাড়া আইডি কার্ড ব্লক করার পাশাপাশি আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। চাকরি হারিয়ে আমরা এখন পথে বসে গেছি।’
৬ দফা দাবি হলো
১. চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. প্রহসনমূলক পরীক্ষা বয়কটের জন্য আমাদের কর্মকর্তাদের যে পানিশমেন্ট ট্রান্সফার দেওয়া হচ্ছে, তা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৩. বৈষম্যহীন ও রাজনীতিমুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
৪. শর্ত আরোপ করে সব ধরনের অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট বন্ধ করতে হবে।
৫. চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের ওপর চালানো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং পুনরায় কর্মস্থলে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।
৬. পরীক্ষা বর্জনের জন্য আমাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও সাইবার ক্রাইমে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে, তা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে টানা পাঁচ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার সকাল থেকে দু'দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হওয়ায় দু'বন্দরে কর্মচঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস এর কার্গো সুপারিনটেনডেন্ট আবু তাহের ।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী বলেন, “শারদীয় দুর্গাপূজায় ২৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে ০২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত পেট্রাপোল - বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে আজ শনিবার সকাল থেকে দুই দেশে মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে বান্দর এলাকায়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, পূজার ছুটি শেষে আজ সকাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। তবে পেট্রাপোল বন্দরে সিএন্ডএফ অফিসের স্টাফদের উপস্থিতি কম থাকায় আমদানী রপ্তানি বাণিজ্যের গতি অন্যান্য দিনের চেয়ে কম।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে পাঁচ দিন সরকারি ছুটি ছিল । ৫ দিন সরকারি ছুটি থাকার কারণে এ পাঁচ দিন বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে আজ শনিবার (৪ অক্টোবর )সকাল থেকে দু'দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে উভয় বন্দর এলাকায়। তবে বন্ধের এ কয়দিন বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বেনাপোল বন্দর সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালু রেখে শুল্কায়ন কার্যক্রম চালু সহ ও বন্দরে লোড আনলোডের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর।
মন্তব্য