গত বছর ঠিক একই সময়ের তুলনায় এখন চাল-তেল থেকে শুরু করে মাছ-মাংসসহ অনেক নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সাধারণ নিম্নআয়ের মানুষের ব্যয় বেড়েছে।
রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় বাজারে মানভেদে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, তেল, মাছ ও মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে একই সময়ে পেঁয়াজ, রসুন ও ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। পাশাপাশি সব ধরনের শাক-সবজির দাম বেশি গত বছরের তুলনায়।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি চিকন চাল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর আগে একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৬৪ থেকে ৮০ টাকা। এ হিসাবে প্রতি কেজি চিকন চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ থেকে ১১ টাকা পর্যন্ত। একইভাবে মাঝারি মানের চাল কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের কেজিতে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডালের দামের মধ্যে মোটা ডালের দাম কিছুটা কমলেও মাঝারি ও ছোট দানার ডালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
টিসিবির তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি বড় দানার মসুর ডাল ৯৫ থেকে ১১০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। যার গত বছর এ সময়ে দাম ছিল ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। মাঝারি মানের মসুর ডালের কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর একই সময়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় পাওয়া যেত। ছোট দানার মসুর ডালের কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় অ্যাংকর ডালের কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে বলে টিসিবি তথ্য দিচ্ছে। প্রতি কেজি অ্যাংকর ডাল ৬০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
আটা ও ময়দার মধ্যে খোলা আটার কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫২ টাকায়। যা গত বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। খোলা ময়দার কেজিতে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্যাকেট আটার কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ময়দার কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। যা গত বছর এ সময়ে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা।
আলোচ্য সময়ে ভোজ্যতেলের মধ্যে সব ধরনের তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭৮ টাকা। যা গত বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ১৫১ থেকে ১৫৫ টাকা। এ হিসাবে প্রতি লিটার খোলা তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ থেকে ২৩ টাকা। আর বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৮ থেকে ১৯০ টাকায়। যা গত বছর ছিল ১৬৭ টাকা বা তারও কম। আর বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৮৯০ থেকে ৯২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খোলা পাম অয়েলের লিটারে ১৬ থেকে ১৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫৩ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সুপার পাম অয়েলের লিটারে ১০ থেকে ১৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫৫ থেকে ১৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর রাইস ব্রান তেলের ৫ লিটার গত বছর যেখানে ৯০০ টাকায় পাওয়া যেত এখন সেই তেল কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৩০ টাকা বা তারও বেশি দামে।
তবে চাল, ডাল, তেল ও আটা-ময়দার দাম বেশি থাকলেও গত বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে মসলাজাত পণ্যের দাম কমেছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যা গত বছর এ সময়ে ছিল ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। দেশি রসুনের কেজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকা। গত বছর ছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকা। আমদানি রসুনের কেজি ১৩০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর একই সময়ে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
মাছের মধ্যে প্রায় সব মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশের ভরা মৌসুমেও মাছটির দাম সাধারণের হাতের নাগালের বাইরে। ছোট আকারের (৪ পিসে কেজি) ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। যা গত বছর ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায় পাওয়া গেছে। আর আকারভেদে এক কেজি বা তারও বেশি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশের দাম ছিল ১ হাজার ৮০০ থেকে শুরু করে ২ হাজার ৫০০ বা তারও বেশি। যা গত বছর একই সময়ে ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায় পাওয়া গেছে।
এদিকে, ইলিশ মৌসুমে দাম না কমায় রুই-কাতলাসহ অন্যান্য মাছের দামও বেশি। প্রতি কেজি রুই-কাতলা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর এ সময়ে ২৮০ থেকে ৪০০ টাকায় পাওয়া গেছে। এছাড়া রাজধানীর এলাকাভেদে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে, ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা বা তারও বেশি দামে। যা গত বছর ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
তবে গত বছরের তুলনায় বাজারে প্রতি হালি ফার্মের ডিমের দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। প্রতি হালি ফার্মের (লাল বা বাদামি) ডিম বিক্রি হচ্ছে, ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
নিত্যপণ্যের সঙ্গে বাজারে সব ধরনের শাক-সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। শিমের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। বাজারে সবচেয়ে বেশি সংকট ও দাম বাড়তি দেখা গেছে কাঁচামরিচের। মসলাজাতীয় এই পণ্যটির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকায় উঠেছে।
ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত চট্টগ্রামের প্রায় চার শতাধিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত ও ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন কর্মকর্তারা। চাকরিতে পুনর্বহালসহ ছয় দফা দাবিতে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের ফৌজদার হাট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের শত শত কর্মকর্তা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এরপর পৌনে ১২টার দিকে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করেন। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক অবরোধের কারণে দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাতায়াতকারী লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। এতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন, পরিবার নিয়ে পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।
এর আগে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলন করে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা রবিবার থেকে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে শনিবার সকাল থেকেই মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের আন্দোলন শুরু হয়।
আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের প্রতিনিধি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৪০০ জন কর্মকর্তাকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল, ওএসডি প্রত্যাহারসহ মোট ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছি।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মিজানুর রহমান নামের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে আমাদের স্যালারি অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে। আমাদের অ্যাকাউন্টে থাকা বেতনের টাকাও আমরা তুলতে পারছি না। এ ছাড়া আইডি কার্ড ব্লক করার পাশাপাশি আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। চাকরি হারিয়ে আমরা এখন পথে বসে গেছি।’
৬ দফা দাবি হলো
১. চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. প্রহসনমূলক পরীক্ষা বয়কটের জন্য আমাদের কর্মকর্তাদের যে পানিশমেন্ট ট্রান্সফার দেওয়া হচ্ছে, তা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৩. বৈষম্যহীন ও রাজনীতিমুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
৪. শর্ত আরোপ করে সব ধরনের অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট বন্ধ করতে হবে।
৫. চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের ওপর চালানো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং পুনরায় কর্মস্থলে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।
৬. পরীক্ষা বর্জনের জন্য আমাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও সাইবার ক্রাইমে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে, তা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চার দিনের ছুটি শেষ হচ্ছে আজ। কর্মস্থলে যোগ দিতে অনেকেই শহরে ফিরেছেন। ফলে রাজধানীর টার্মিনালগুলোতে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। তবে প্রধান সড়কগুলোতে তেমন যানজট দেখা যায়নি।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, পল্টন, কাকরাইল এলাকায় সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়।
বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা কিশোর অধিকারী রংপুর থেকে ট্রেনে ফিরেছেন ঢাকায়। তিনি জানান, বছরে একটি ঈদ আর পূজায় বাড়ি যাওয়া হয়। পূজার সময় আত্মীয়-স্বজন সবাই বাড়িতে আসে। গত মঙ্গলবার অফিস করে বাড়ি গিয়েছি। আগামীকাল আবার অফিসে যেতে হবে, তাই আজ চলে এসেছি। যাওয়া-আসায় তেমন কষ্ট হয়নি। আনন্দ নিয়েই পূজা উদযাপন করতে পেরেছি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বোরহান উদ্দিন চাঁদপুর থেকে ফিরেছেন সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে। তিনি জানান, ঈদের মতোই ঢাকা ফিরতি যাত্রীর চাপ রয়েছে। দুর্ভোগ এড়াতে সকাল সকাল ঢাকায় ফিরেছি। আগামীকাল অফিস করতে হবে, তাই আজ চলে এসেছি।
এ দিকে সরেজমিনে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যানজট দেখা যায়নি। মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, পল্টনে ছুটির দিনের মতোই যাত্রীবাহী গাড়ির চাপ কম। তবে অটোরিকশার পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। তবে সায়দাবাদ, দয়াগঞ্জ, ধোলাইপাড় এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে।
সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে দুর্গাপূজার ছুটি মিলিয়ে গত বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ছুটি রয়েছে সরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ১ ও ২ অক্টোবর (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) দুর্গাপূজার ছুটি এবং ৩ ও ৪ অক্টোবর (শুক্রবার ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। তাই সরকারি অফিস আগামীকাল রোববার (৫ অক্টোবর) থেকে পুনরায় শুরু হবে।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে টানা পাঁচ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার সকাল থেকে দু'দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হওয়ায় দু'বন্দরে কর্মচঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস এর কার্গো সুপারিনটেনডেন্ট আবু তাহের ।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী বলেন, “শারদীয় দুর্গাপূজায় ২৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে ০২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত পেট্রাপোল - বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে আজ শনিবার সকাল থেকে দুই দেশে মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে বান্দর এলাকায়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, পূজার ছুটি শেষে আজ সকাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। তবে পেট্রাপোল বন্দরে সিএন্ডএফ অফিসের স্টাফদের উপস্থিতি কম থাকায় আমদানী রপ্তানি বাণিজ্যের গতি অন্যান্য দিনের চেয়ে কম।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে পাঁচ দিন সরকারি ছুটি ছিল । ৫ দিন সরকারি ছুটি থাকার কারণে এ পাঁচ দিন বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে আজ শনিবার (৪ অক্টোবর )সকাল থেকে দু'দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে উভয় বন্দর এলাকায়। তবে বন্ধের এ কয়দিন বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বেনাপোল বন্দর সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালু রেখে শুল্কায়ন কার্যক্রম চালু সহ ও বন্দরে লোড আনলোডের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর।
উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড় মাটি ও আবহাওয়ার কারণে চা চাষের জন্য ইতিমধ্যেই তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
শুধু চা নয়, বাণিজ্যিকভাবে নানা রকম ফল ও ফসল চাষ হচ্ছে এ জেলায়। এরই ধারাবাহিকতায় বোদা উপজেলায় দেশি মালটা চাষেরও ব্যাপক সাফল্য দেখা যাচ্ছে।
পঞ্চগড় বোদা উপজেলার ২ নং ময়দানদিঘী ইউনিয়নের ভিমপুকুর এলাকার সাদেকুল ইসলাম নিজস্ব দুই বিঘা জমিতে ২১৭ টি মালটা গাছ রোপণ করেন। প্রতিটি গাছে দেশি মালটা ফলন হয়, ৫০ থেকে ৮০ কেজি, রোপণ করার দুই বছরের মধ্যে বিক্রি করেন দুই লক্ষ টাকা,এ বছরে ৪ লক্ষ টাকার বিক্রি করার আশা করেন।
সাদেকুল আরও জানান গত ১/১/২০২২ সালে বোদা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২১৭ টি দেশি মালটা গাছ ফ্রী পান এবং রাসায়নিক সার সহ কিভাবে পরিচর্যা করবেন সেই বিষয় ট্রেনিং করান।
উপজেলার ৩ নং বনগ্রাম বেংহাড়ী ইউনিয়নের তেপুখুরিয়া টোকরা পাড়া এলাকায় শাহিনুর তিনি জানান ২১ একর জায়গায় দেশি মালটার চাষ করি, এবং দেশি মালটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নভেম্বর মাসে ২৫০০ টাকা মণ বিক্রি যাওয়ার কথা, প্রতি বছর এ মাসে ফলের দাম বেশি থাকে, তাই আমি নভেম্বর মাসে বিক্রি করবো।
আহমেদ রাশেদ উন -নবী , উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, মাটি ও আবহাওয়া মালটা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তারা কৃষকদের মালটা ও অন্যান্য বাণিজ্যিক ফলের চাষে উৎসাহিত করছেন। এতে কৃষকদের আয় যেমন বাড়ছে, তেমনি স্থানীয় বাজারে দেশি ফলের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। এ বছর ৪৭ হেক্টর জায়গায় মালটা চাষ হচ্ছে বোদা উপজেলায়।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে জোনায়েদ শেখ নামের ১৪ বছর বয়সী মাদ্রাসাপড়ুয় এক শিশু আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার তারাশী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জোনায়েদ তারাশী গ্রামের মৃদুল শেখের ছেলে ও পিনজুরী কওমী মাদ্রাসার তৃতীয় জামাতের ছাত্র।
শুক্রবার বিকেল ফাঁকা ঘরে দরজা বন্ধ করে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেয় জোনায়েদ। বিকেল ৫ টার দিকে জোনায়েদের মা আছিয়া বেগম ঘরের বন্ধ দেখে ও কারো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের নিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় জোনায়েদ কে দেখতে পান। দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
নিহত জোনায়েদের চাচা রাসেল শেখ বলেন, কয়েকদিন আগে জোনায়েদ মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আসে। এরপর আর মাদ্রাসায় যেতে চাচ্ছিল না। এ নিয়ে মায়ের সাথে তার মনোমালিন্য ছিল। ধারণা করা হচ্ছে মায়ের উপর অভিমান করে হয়তো এই ঘটনা ঘটেছে।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, পরিবার ও এলাকাবাসীর কোন অভিযোগ না থাকায় উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার সকালে তারাশী কবরস্থানে শিশু জোনায়েদের দাফন সম্পন্ন হয়।
গাজাগামী ত্রাণবহর ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়ায় বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমের সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘গাজাগামী ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমের পদক্ষেপ কেবল সংহতি প্রকাশ নয়, এটি বিবেকের গর্জন। বাংলাদেশের পতাকা বহন করে তিনি বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে এদেশের মানুষ কখনও নিপীড়ন ও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না।’
তিনি আরও লিখেছেন, বিএনপি সবসময় শহিদুল আলম ও ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
দেশের প্রবীণ এই আলোকচিত্রীকে বহনকারী জাহাজটি ইসরাইলি বাহিনী আটকে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ফেসবুকে এই পোস্ট দেন তারেক রহমান। সেখানে তিনি শহিদুল আলমের প্রতি বিএনপির সমর্থন জানান।
গাজায় তথ্য ও সংবাদ অবরোধ ভাঙার উদ্যোগে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শহিদুল আলম ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)’র মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সাগর নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয়ে বেপরোয়া চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাগর রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ও রামগতি বাজারের ইলেকট্রনিক ব্যাবসায়ী।
ভুক্তভোগী বড়খেরী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মোঃ মেহেরাজ অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে সাগর নিজেকে কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কখনো সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকাতে বিভিন্নভাবে চাঁদা দাবি করে যাচ্ছে। তিনি নিজেই একজন ভুক্তভোগী। সাধারণ মানুষকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। তার ভয়ে রামগতি মাছঘাটের সাধারণ মাছ ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সবসময় আতঙ্ক থাকেন।
আরেক ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম মাছ ব্যাপারী বলেন, সাগরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ মানুষ। সাগর কিছুদিন আগে তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। তার চাহিদা মাফিক চাঁদা না দেওয়ায় তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হেনস্তা করেন। বিশেষ করে মাছঘাটের ব্যবসায়ীরা তার যন্ত্রণায় তটস্থ। সে নিজেকে সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। মুলত ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করাই সাগরের মুল উদ্দেশ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে জানান, ৫ আগস্টের পর বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের রামগতি বাজার, রামগতি মাছঘাট এলাকার সাধারণ জেলে ও মাছ ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত সাগর। সাগরের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অনেকটা অসহায় তারা। এমন অবস্থায় সাগরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাধারণ মানুষ।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাগর বলেন, অভিযোগকারী কাউকে আমি চিনিনা। তারা কেন এসব মিথ্যা অভিযোগ করলো? তাছাড়া আমি তো এলাকায় থাকিনা। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে বিশেষ অনুরোধ জানান তিনি।
রামগতি সেনাক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, সেনাবাহিনীর কোন সোর্স নেই। এগুলো এক প্রকার প্রতারণা। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ কবির হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এই ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
মন্তব্য