পাকিস্তানকে কাছে টানছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত কেবল তাকিয়েই দেখছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্ক দ্রুত ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। আর তাতে ভারতের ওপর কূটনৈতিকভাবে চাপ বাড়ছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও সেনাপ্রধান আসিম মুনির ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি, খনিজ ও কৃষি খাতে বিনিয়োগসহ কৌশলগত
হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, মুনির ট্রাম্পকে বিরল খনিজে ভরা একটি বাক্স উপহার দেন।
এর আগে জুলাইতে পাকিস্তানের জন্য শুল্ক কমানোর চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র, যার প্রশংসা করেন শাহবাজ। তিনি ট্রাম্পকে ‘শান্তির মানুষ’ আখ্যা দিয়ে গত মে মাসের ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামাতে ভূমিকা রাখার কৃতিত্বও দেন। মুনির তো ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য বলেও মন্তব্য করেছেন।
তবে ভারত এসব দাবি অস্বীকার করে বলেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্প কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং ট্রাম্প ওই সময় ভারতের উদ্দেশে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘একদিন হয়তো ভারত পাকিস্তানের তেল কিনবে।’ এতে নয়াদিল্লি আরও অস্বস্তিতে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে ভাটা
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখা গেলেও এবার সম্পর্ক তলানিতে। ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে রাশিয়ার তেল আমদানির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এতে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে ওয়াশিংটনের প্রতি ভারতের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
ভারতীয় বিশ্লেষক হর্ষ পন্ত মনে করেন, মার্কিন কৌশল যদি পাকিস্তানকে কেন্দ্র করে এগোয়, তবে ভারত তার ইন্দো-প্যাসিফিক নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে বাধ্য হবে। এতে কোয়াডের মতো মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সহযোগিতাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
পাকিস্তানের নতুন সমীকরণ
সম্প্রতি পাকিস্তান সৌদি আরবের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘যেকোনো এক দেশের ওপর আক্রমণ মানেই উভয়ের ওপর আক্রমণ।’
এটি ভারতের জন্য একটি বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান কেবল অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে তাৎক্ষণিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছে।
ট্রাম্পের লেনদেনভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি
ভারতের সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মীরা শংকর বলেন, ট্রাম্প ভারত ও পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক লেনদেনের চোখে দেখেন, কৌশলগত মিত্র হিসেবে নয়। পাকিস্তান ছোটোখাটো ছাড় দিয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, তবে এ সম্পর্ক অস্থায়ী এবং অবিশ্বস্ত।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিতাভ মট্টুর মতে, ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠতা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে চক্রাকারে ঘটে। স্নায়ুযুদ্ধ, সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের পর এখন আবার পশ্চিম এশিয়া–মধ্য এশিয়ার অস্থিরতায় পাকিস্তানকে কাজে লাগাতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এবার তারা পাকিস্তানের দ্বিচারিতা সম্পর্কে বেশি সচেতন এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে ভারতের প্রতি বিনিয়োগ আগের চেয়ে গভীর।
শারদীয়া দুর্গাপূজা ঘিরে কেউ অসাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডে জড়াতে চাইলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান। তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি জানান- তাদের বিশেষ ইন্টেলিজেন্স টিমের মাধ্যমে দুর্বৃত্তদের তথ্য দ্রুত পৌছে যাবে এবং ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মঙ্গলবার মহাঅষ্টমিতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামটস্থ পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জেলা বাস মালিক সমিতি ও জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির দুটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন র্যাব কর্মকর্তা মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান। পরে তিনি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এ সময় তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেরা যাতে নিরাপদে এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে পূজা উদযাপন করতে পারে তার জন্য অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের প্রথমস্তরে পেট্রোল টিম প্রতিটি পূজামন্ডপ পরিদর্শন করছে।
তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয়স্তরের বিশেষ ইন্টেলিজেন্স টিম মন্ডপের আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে৷ কেউ যদি কোন প্রকার অসাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডে জড়াতে চায়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় তাহলে সেই তথ্য দ্রুত পেয়ে যাব এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন, জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান সিদ্দিকী, ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের স্কোয়াড্রন লিডার তারিকুল ইসলাম, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, জেলা বাসমালিক পূজামণ্ডপের সভাপতি সূর্যনাথ দাস, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার ঘোষ, কোষাধক্ষ্য মানিক চৌধুরী মিঠু, মিনিবাস মালিক সমিতির পূজামণ্ডপের সভাপতি মৃত্যঞ্জয় দাস মনা, সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ সাহা পিয়াস উপস্থিত ছিলেন।
পূজার মতো উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেই। আমরা আর পশ্চাতে যেতে পারব না। আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক অর্থনীতিকে যাতে সমৃদ্ধির দিকে নিতে পারি সেটার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা নিয়োজিত আছি। আজকের (মঙ্গলবার) এই পূজার মতো উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করব।
তিনি বলেন, যার যা দায়িত্ব তা আমরা পালন করব। সার্বিক দায়িত্ব ভোটে অংশগ্রহণ করা। যা এই সময়ের একটি অনিবার্য প্রেক্ষিত। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেই দিকে এগিয়ে যেতে চাই।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর জে এম সেন হলে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের পূজা পরিদর্শনে শেষে এক অনুষ্ঠানে বলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা এসব কথা।
বাঙালির জাতীয় চেতনার মধ্যে দুর্গোৎসব অনাদিকাল থেকে জীবনের অংশ মন্তব্য করে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, এবারের আয়োজনকে সাবলীল করতে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়েছে। এটার সার্বিক একটা রূপ আছে। যেমন ধর্মীয় আছে, তেমনি নানা ধর্মের মানুষ উৎসব আয়োজনে শামিল হয়।
উপদেষ্টা বলেন, সকাল থেকে আমি কয়েকটি মণ্ডপ পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে কাঠগড়ে একটি মণ্ডপে গিয়েছি। পরিসর সংকীর্ণ হলেও তাদের হৃদয় প্রসারিত এবং আনন্দের উচ্ছ্বাসও উপলব্ধি করা গেছে। আগ্রাবাদে একটি মণ্ডপে গিয়েছি। একতা গোষ্ঠী, তারা সম্প্রীতির এক অনন্য প্রদর্শনী আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা, জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে অষ্টমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অঞ্জলী দেন ভক্তরা। তারা সকাল থেকে উপবাস করে পূজার অঞ্জলি দেন, তারপর চরণামৃত ও প্রসাদ নিয়েছেন। এ সময় নগরের বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপগুলোয় দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে।
‘আসেন আসেন, হাতে বোনা, টেকসই, মসলিনের বিকল্প বাংলার ঐতিহ্য আসল জামদানি শাড়ি, আমরাই বেচি। নিয়ে নেন, সুলভ মূল্যে, অরিজিনাল জামদানি নেন, বিভিন্ন স্থান থেকে নকল শাড়ি কিনে ঠকবেন না। আমাগোডা একেবারেই খাঁটি হাতে বোনা জামদানি, নেন ভাই নেন। শাড়িতেই নারী, না কিনলে ফস্তাবেন। প্রতিটা নারীর বহুল কাঙ্কিত এ জামদানি, নেন ভাই। এমন হাঁকডাকে মুখর পুরো জামদানির হাট।
শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে রূপগঞ্জের তারাব পৌর এলাকার নয়াপাড়ায় জামদানি হাটটি মধ্যরাতের পর শুরু হয়ে সূর্যোদয়ের আগেই শেষ। অনেকের কাছেই এটি অবিশ্বাস মনে হবে।
এটি আহামরি কোন হাট নয়। তারপরও প্রতি হাটে কোটি টাকার জামদানি কাপড় লেনদেন হয়। হাটে সেড নেই। ঠায় দাঁড়িয়ে কিংবা মাটিতে চট বিছিয়ে শাড়ি বেচাকেনা চলে। হাটের নিজস্ব কোন জায়গা নেই। নয়াপাড়া জামদানি পল্লীর মাঠেই এ হাট বসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বহু আগে রূপগঞ্জের নোয়াপাড়ায় প্রতি মঙ্গলবার জামদানির হাট বসত। নানা প্রতিকূলতার কারণে তা এক সময় চলে আসে ডেমরা বাজারে। বর্তমানে আবার এ হাট নোয়াপাড়ায় বসে প্রতি শুক্রবার। মধ্যরাত থেকে ক্রেতা বিক্রেতা আসতে শুরু করে। বেচাকেনা শুরু হয় ৩টার পর থেকে। পার্শ্ববর্তী এলাকার জামদানি তাঁতীরা এর বিক্রেতা। নির্জন রাত গাড়ি ঘোড়া কিছুই চলে না। হেঁটে কিংবা নৌকায় চড়ে তাঁতীরা চলে আসেন হাটে। পাইকারদের কেউ কেউ আগে থেকেই হাটে অবস্থান নেয়। সারাদেশ থেকে দল বেধে আসেন অনেক পাইকার।
তাঁতীদের সবার হাতে থাকে ২/১ টি জামদানি শাড়ি। ওরা নিজেরাই এ শাড়ির শিল্পী। পার্শ্ববর্তী নোয়াপাড়া, রূপসী, মৈকুলী, খাদুন, পবনকুল, কাজীপাড়া, মোগরাকুল, সোনারগাও ও সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আসেন তাঁতীরা। ক্রেতারা আসেন সারা দেশ থেকে। তবে অধিকাংশ ক্রেতাই রাজধানী ঢাকার কাপড় ব্যবসায়ী। স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ীরাও এখানে হাট করতে আসেন। এক একটি শাড়ি দেড় হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিকায় এখানে। জামদানি শাড়ি ছাড়া অন্য কোন কাপড় কিংবা পন্য এ হাটে মিলে না।
ভোর ৪টায় পুরো জমজমাট হয়ে ওঠে হাট। তখন ফঁড়িয়া, দালাল, জামদানি তাঁতী, ব্যবসায়ীতে পূর্ণ থাকে। দাড়িয়ে পায়চারি করে তাঁতীদের শাড়ি প্রদর্শন করতে হয়। কেউ কেউ ৩ সপ্তাহ বোনা শাড়ি আবার কেউ ৪ সপ্তাহ বোনা শাড়ি বলে হাকডাক দিয়ে থাকেন। পছন্দ হলেই ক্রেতারা তা দরদাম করে কিনে নেন। প্রতি হাটে এখানে বিক্রি হয় ৫ থেকে ৭ হাজার পিস শাড়ি। লেনদেন হয় প্রায় এক কোটি টাকার ওপরে। শাড়ি পিছু ইজারা দিতে হয় ৫০ থেকে ১শ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর বেশিও আদায় করা হয়।
বেচাকেনার জন্য নির্দিষ্ট স্থান কিংবা শেড নির্মাণ করা হয়নি। ফলে খোলা আকাশের নিচে হাকডাক দিয়ে তাঁতীদের শাড়ি বিক্রি করতে হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই ক্রেতা বিক্রেতারা ভিজে একাকার হন। কখনও দামি সব শাড়ি ভিজে নষ্ট হয়।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ আজ মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ নরসিংদী জেলার মাধবদি থানার শ্রী শ্রী গৌরি-নিতাই আখড়া ধাম পূজা মণ্ডপ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার চীনতলা চণ্ডী মন্দির সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। শারদীয় দুর্গাপূজা–২০২৫ উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবেই এ পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়। শারদীয় দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। যেকোনো উসকানি ও গুজব প্রতিহত করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা হয়েছে।
নরসিংদীতে পরিদর্শনকালে মহাপরিচালক পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তিনি দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার-ভিডিপি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং দায়িত্ব পালনে সতর্কতা, পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। এসময় তিনি বলেন, “আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য যেকোনো ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে আনসার-ভিডিপি সর্বদা সজাগভাবে দায়িত্ব পালন করছে।”
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বাংলাদেশের ঐতিহ্য হিসেবে উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, “সম্প্রীতির বন্ধন এবং সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেকোনো ষড়যন্ত্র ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।” আনসার মহাপরিচালক এবং স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্থানীয়দের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
নরসিংদীতে কর্মসূচি শেষে মহাপরিচালক নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চীনতলা চণ্ডী মন্দির সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাধারণ জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি সার্বিক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় উসকানি ও গুজব ছড়ানোর যেকোনো প্রচেষ্টা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত পদক্ষেপে প্রতিহত করা হয়েছে এবং কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হতে পারেনি।
তিনি আরও জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও এই সম্মিলিত নিরাপত্তা প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জনগণের বাহিনী হিসেবে সকল নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে একযোগে যেকোনো নিরাপত্তাবিঘ্নকারী প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে সক্ষম হবে। মহাপরিচালক আশা প্রকাশ করেন যে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘ্নে শারদীয় দুর্গাপূজার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।
মহাপরিচালকের এ পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন উপ-মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. সাইফুল্লাহ রাসেল, উপ-মহাপরিচালক (ঢাকা রেঞ্জ) মো. আশরাফুল আলম, নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম, মেজর এ কে এম রিয়াদুল ইসলাম (উপ-অধিনায়ক, ৫১ এমএলআরএস রেজিমেন্ট আর্টিলারি), নারায়ণগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট কানিজ ফারজানা শান্তা, নরসিংদী জেলা কমান্ড্যান্ট এস. এম. আকতারুজ্জামান এবং অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি দাবি করেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে তিন মাস আগেই মনোনয়ন দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বরিশাল বিভাগে কারা কারা মনোনয়ন পেতে পারেন সেসব নামের একটি তালিকাও তার কাছে চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। গত সোমবার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের মাজহার উদ্দিন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন ।
নূরুল ইসলাম মনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে পাথরঘাটায় মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ কারও আসেনি। এখন যে সুযোগ এসেছে, তা কেউ যেন হাতছাড়া না করেন। আপনারা আমাকে নির্বাচিত করলে আমি আমৃত্যু পর্যন্ত আপনাদের জন্য কাজ করে যাব।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি আরও কিছু বিতর্কিত প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি জানতে চান দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে কি জান্নাতে যাওয়া যাবে? আর না দিলে কি জাহান্নামে যেতে হবে? এছাড়া তিনি প্রশ্ন রাখেন কোনো স্ত্রী যদি স্বামীর কথা না মেনে ইসলামিক দলের প্রতীকে ভোট না দিয়ে অন্য প্রতীকে ভোট দেন , তবে কি সেই নারী জাহান্নামে যাবে?
প্রশ্নের জবাবে ‘আলেমরা বলেন কোনো দলের প্রতীকের উপরে নির্ভর করে জান্নাত নির্ধারণ করা এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, প্রতীক কেবল নমুনা নিজেকে ইমান ও আমলের মধ্যে রেখে আত্মসমর্পণ করার মধ্যেই জান্নাত নিহিত রয়েছে।
আরও বলেন, ভিডিওতে দেখলাম, হাতপাখায় ভোট দিলে নাকি ভোট যাবে আল্লাহর রাসুলের কাছে। এসব দল চাচ্ছে বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে। তারা চায় সময়মতো নির্বাচন না হোক । আর যদি নির্বাচন বিলম্ব হয়, তাহলে ফাঁক দিয়ে ভারত ঢুকে পড়বে।
এই অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি, সম্পাদকসহ কয়েক শতাধিক ওলামা উপস্থিত ছিলেন। সভায় তারা পরস্পরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। এ সময় বরগুনা জেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা শাহজালাল রুমি বলেন, পিআর পদ্ধতি ইসলাম কখনো সমর্থন করেনি। কিছু নেতা তাদের স্বার্থ অনুযায়ী ইসলামকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা গত সোমবার রাতে রাঙামাটি জেলা শহরের গর্জনতলী ও তবলছড়ি কালীমন্দিরসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। তিনি দুর্গাপূজার সার্বিক আয়োজন ও নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
পূজা আয়োজকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে উৎসব উদযাপনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব আমাদের শান্তি, ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির প্রতীক। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে এই উৎসব আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক।
পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের টেকসই শান্তি ও উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক সচ্ছলতা এবং গুণগত শিক্ষা অপরিহার্য।
উপদেষ্টা আরও বলেন, পাহাড়ের মানুষ যদি শিক্ষিত ও সচেতন হতো, তাহলে এত সমস্যা হতো না। আমাদের দরকার কোয়ালিটি অ্যাডুকেশন, যা মানুষকে ভালো-মন্দ বোঝতে শেখাবে এবং প্ররোচনার বাইরে রাখবে। আমি চাই পাহাড়িদের মধ্যে গুণগত শিক্ষা ছড়িয়ে পড়ুক। তাহলেই তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।
এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (উপসচিব) খন্দকার মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন, রাঙামাটি জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিমসহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে বিলুপ্ত প্রজাতির সাড়ে ১৪ কেজি ওজনের একটি ঢাঁই মাছ। মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া মৎস্য আড়তে উন্মুক্ত নিলামে উঠলে মাছটি দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. চান্দু মোল্লা কিনে নেন। এসময় মাছটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করে।
তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো জাফরগঞ্জরের জেলে সুনাই হালদার মধ্যরাতে তার ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও তার সহযোগীদের নিয়ে পদ্মা নদীর উজানে মাছ ধরতে যায়। ভোররাতে জাল তুলতেই দেখতে পায় বড় একটি ঢাই মাছ ধরা পড়েছে। পরে সাড়ে ১৪ কেজি ওজনের ঢাই মাছটি সকালে দৌলতদিয়া আনো খাঁর মৎস্য আড়তে আনলে উন্মুক্ত নিলাম উঠলে চান্দু মোল্লা প্রতি কেজি ৪১০০শ টাকা কেজি দরে কিনে নেন নিয়ে ফেরিঘাটে তার আড়তঘরে নিয়ে আসেন।
তিনি আরও বলেন, মাছটি সর্বমোট আমি ৫৯ হাজার ৪৫০ টাকায় কিনে নেই। মাছটি বিক্রয়ের জন্য আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করছি। আজ মাছটি কিনতে পেরে আমার সবচেয়ে ভালো লাগছে। মাছটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা লাভে বিক্রি করে দেব।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের স্থানীয়া মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, পদ্মার এ ধরনের বড় মাছ নিলামে উঠলে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে যায়। দাম যতোই বেশি হোক, মাছটি কেনার চেস্টা করে সবাই। তাছাড়া ঢাই মাছ অনেক সুস্বাদু।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, ঢাই মাছ এখন খুবই কম দেখা যায়, তাছাড়া এটি বিলুপ্তির পথে। মাছগুলো খেতেও অনেক সুস্বাদু। পদ্মার এ ধরনের মাছ আকারে বড় হয়ে থাকে। এই মাছের দামও তুলনামূলক বেশি। এ ধরনের মাছ কিনতে বড় বড় ব্যবসায়ী, প্রবাসীদের চাহিদা থাকে।
মন্তব্য