পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে পাবনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ১৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে মোট ৬৮ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে তাবাসসুম, বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের সহকারী পরিচালক আলতাফ হোসেন, মোটরযান পরিদর্শক এস এম ফরিদুর রহিমসহ জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩ জনের পরিবারের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা এবং আহত ৩ জনের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়। এই অনুদান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি তাদের মানসিক শক্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপস্থিত কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা একটি জাতীয় সমস্যা। এ ধরনের দুর্ঘটনা কমাতে সকলের সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রয়োজন। তবে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এই আর্থিক সহায়তা তাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।’
বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আলতাফ হোসেন জানান, বিআরটিএ ট্রাস্টি বোর্ড নিয়মিতভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান করে আসছে। তিনি সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল চালক ও পথচারীদের সতর্কতার সাথে চলাচলের আহ্বান জানান।
অনুদান গ্রহণকারী পরিবারগুলো এই সহায়তার জন্য সরকার ও বিআরটিএ’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা এই অর্থ তাদের জীবনযাত্রা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যয় করবেন বলে জানান। বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আরও বলেন আমরা সড়কের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। ফলে আমরা যানবাহন তথা চলাচলকারীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি ও অবৈধ যানবাহনের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আশা করি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা নিরাপদ সড়কের পাশাপাশি দুর্ঘটনা রোধ করতে পারব বলে মনে করি।
জুলাই আন্দোলনের সময় সারা দেশে পুলিশ মোট তিন লাখ ৫ হাজার ৩১১ রাউন্ড গুলি ছুড়েছিল। মধ্যে ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় ঢাকা মহানগরে।
গতকাল সোমবার জুলাই আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫৪তম সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এ তথ্য উপস্থাপন করেন।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের দেওয়া ২১৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য তুলে ধরেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এ সময় আদালতে উপস্থিতি ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম, তানভীর হাসান জোহা ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান। আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, আন্দোলন দমনের জন্য সারাদেশে ওই সরকার যে হিসাব করেছিলেন তিন লাখ ৫ হাজারের বেশি রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছিল। তার মধ্যে ৯৫ হাজারের বেশি রাউন্ড গুলি ঢাকা মহানগরে।
এর আগে শনিবার প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম জানান, শেখ হাসিনার মামলার সর্বশেষ ও ৫৪তম সাক্ষী হিসেবে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেবেন। তার জবানবন্দির অংশবিশেষ ও জব্দকৃত ভিডিও প্রদর্শনী সরাসরি সম্পচার করা হবে।
গত বুধবার ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন এ মামলার বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা।
তিনি জানান, শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং ৩টি মোবাইল নম্বরের সিডিআর জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ফোনালাপ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ৫৩তম সাক্ষী উপস্থাপনের সময় বাজিয়ে শোনানো হয়েছে। যেটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার এই চারটির ফোনালাপের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও তার আত্মীয় শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে একটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দুটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এএসএম মাকসুদ কামালের একটি ফোনালাপ রয়েছে।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্ত করেন উপপরিচালক মো. আলমগীর। সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ দেওয়া হয়। ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।
গত ১০ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুন নিজেকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেছেন, তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম বলেছেন, দুর্গাপূজায় কোনো দুষ্কৃতিকারী পূজার পরিবেশ বিরাজমান পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে যেকোনো মূল্যের বিনিময়ে প্রতিহত করা হবে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা নরসিংদী। উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের লক্ষ্যে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের পূজায় কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই।
তিনি আরও বলেন, এ বছর নরসিংদী জেলায় মোট ৩৫১টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এসব মণ্ডপে দিনরাত পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত থাকবে। সিসিক্যামেরার মাধ্যমে মণ্ডপ ও আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূর্ববর্তী যেকোনো সময়ের তুলনায় এ বছর অধিকতর সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে নরসিংদীতে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি গত রোববার রাতে নরসিংদী শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কলিমুল্লাহ, বিপিএম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন, নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক দীপক কুমার বর্মন প্রিন্স, সদস্য সচিব মিঠু রঞ্জন ধর, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজল সাহা, কৃষ্ণকান্ত সাহা, আসিস চক্রবর্তী প্রমুখ।
এ সময় নরসিংদী শহরেরর মধ্যকান্দা পাড়ার বাগবিতান ক্লাব, অগ্রবাণী এবং সেবা সংঘ দুর্গাবাড়ির পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন।
দিনাজপুর জেলায় ১ হাজার ৮৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৩৮টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষাদানও ব্যাহত হচ্ছে। সহকারি শিক্ষকরা এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ক্লাসে পাঠদানে মনোযোগ হারাচ্ছেন।
দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৩টি উপজেলায় ১ হাজার ৮৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৯৩৮টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সদর উপজেলায় ১৮৬টির মধ্যে ৫৪টি, কাহারোল উপজেলার ১২০টির মধ্যে ৭১টি, খানাসামা উপজেলায় ১৪৩টির মধ্যে ৬৭টি, ঘোড়াঘাট উপজেলায় ৬৭টির মধ্যে ৪১টি, চিরিরবন্দর উপজেলায় ১৯৮টির মধ্যে ১১৫টি, নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৪৯টির মধ্যে ৭৫টি, পার্বতীপুর উপজেলায় ২০৬টির মধ্যে ১০৫টি, ফুলবাড়ী উপজেলায় ১০৯টির মধ্যে ৬৫টি, বিরল উপজেলায় ১৬৭টির মধ্যে ৮০টি, বিরামপুর উপজেলায় ১১৬টির মধ্যে ৬৮টি, বীরগঞ্জ উপজেলার ২৩০টির মধ্যে ১১৮টি, বোচাগঞ্জ উপজেলায় ১৩২টির মধ্যে ৫৯টি ও হাকিমপুর উপজেলায় ৪৬টির মধ্যে ২০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালা অনুযায়ী ৩৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষক সরাসরি নিয়োগ হয় ও ৬৫ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে হয়। বর্তমানে সরাসরি নিয়োগ হওয়া প্রধান শিক্ষকের মধ্যে অনেকেই অবসরে চলে গেছেন। অপরদিকে মামলার কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় থাকায় ২০০৯ সাল থেকে পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ করা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন থেকে পদোন্নতি বন্ধ থাকায় শিক্ষকরাও পাঠদান কার্যক্রমে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। আবার ৩৫ শতাংশ সরাসরি নিয়োগ পক্রিয়াতে রয়েছে গাফিলতি।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. মতিয়ার রহমান জানান, যারা ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করছেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের পদোন্নতি না দিয়ে নতুনদের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। আইনি জটিলতার কারণে চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান ব্যাহত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সদিচ্ছাই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এরই মধ্যে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় সহকারী শিক্ষকরা হতাশ হয়েছেন। তার মতে অবিলম্বে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে শতভাগ পদোন্নতি দেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. গোলাম ফারুক জানান, চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের কথা অন্য শিক্ষকরা মানতে চান না। কারণ সবাই একই পদমর্যাদার সহকারী শিক্ষক হিসেবে গণ্য। এতে করে পাঠদান ব্যাহত হয় ও প্রশাসনিক কাজেও জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যার সমাধানে দ্রুত প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা জরুরি।
দিনাজপুর শহরের পুলহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন জানান, মামলাজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নতুনভাবে পদোন্নতিও বন্ধ। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার মান চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। তাদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে।
সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এটিএম তোফায়েল হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। আর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা কেউই মানতে চান না। উভয়ই একই পদে হওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া জরুরি।
এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিমা আক্তার বলে, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে আমি কোনো দিন হেড স্যার দেখিনি। হেড স্যার না থাকায় আমাদের সমস্যা হয়। আমাদের বিদ্যালয়ে একজন হেড স্যার থাকলে আমাদের পড়ালেখা আরও ভালো হবে।’
দিনাজপুর সদরের স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের অভিভাবক সাবিনা আলী হোসেন বলেন, এই স্কুলের ৫টি পদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এই বিদ্যালয়ে মাত্র ৪ জন শিক্ষকের পক্ষে প্রতিটি ক্লাস পরিচালনা করা কষ্টকর। এছাড়া এখানে মাত্র ৩টি শ্রেণিকক্ষ। বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান উন্নয়নের জন্য দ্রুত শিক্ষক-স্বল্পতা দূর করা দরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুজ্জামান জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রধান শিক্ষকের পদে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মামলা নিষ্পত্তি হলে পদোন্নতির মাধ্যমে এসব শূন্যপদ পূরণ করা যাবে।
এবারের দুর্গাপূজায় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পূজামণ্ডপগুলোতে মিলেনি সরকারি বরাদ্দের চাল, মিলেছে চাল বিক্রির অর্ধেক টাকা। আর বাকি টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে গেছে সিন্ডিকেট। এমন অভিযোগ প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপ থেকেই পাওয়া গেছে।
১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় প্রশাসন। বাজারমূল্য অনুযায়ী বরাদ্দের ৫০০ কেজি চাল থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু সিন্ডিকেটের থাবায় তারা পেয়েছেন মাত্র ১৫ হাজার টাকা। এতে করে ৪২টি পূজামণ্ডপ থেকে সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রশাসন ১৪ সেপ্টেম্বর চাল বরাদ্দ দিলেও খাদ্য কর্মকর্তারা কালোবাজারিদের সঙ্গে মিলে ইচ্ছাকৃতভাবে চাল বিতরণে বিলম্ব করেছেন। পরে তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন মণ্ডপের সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদককে খাদ্যগুদামে ডেকে এনে ফাঁকা রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর রেখে ডিও প্রতি ১৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন। এ কাজে খাদ্য কর্মকর্তা ও কালোবাজারিদের হয়ে কাজ করেছেন পূজা উদযাপন কমিটির বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।
বর্মনপাড়া পূজামণ্ডপের সভাপতি শীতল চন্দ্র বর্মণ বলেন, বরাদ্দের ডিও নিয়ে খাদ্য গুদামে যাওয়ার পরে কর্মকর্তা বলেন স্বাক্ষর করে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। এ সময় উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিমাই বাবুও তাই বললেন। তখন টাকা নেওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিল না। বরাদ্দের চালগুলো তাকে দেখার সুযোগও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আনন্দময়ী যুব সংঘের সভাপতি উষা রঞ্জন সরকার বলেন, পূজার ব্যস্ততার মাঝেই বরাদ্দ আসে। এমন সময় চাল বুঝে নেওয়া কঠিন, তাই বাধ্য হয়েই বিক্রি করে দেন বলে জানান তিনি।
ফুটন্ত কলি যুব সংঘের সভাপতি লিটন রবি দাস বলেন, ‘ইউএনও সাহেব মিটিংয়ে চাল বরাদ্দের কথা জানান। পরে গুদামে গিয়ে দেখি কিছু লোক ১৫ হাজার টাকা ধরে সবার ডিও কিনে নিচ্ছে। পাশের জেলায় একই চাল ২২-২৫ হাজারে বিক্রি হলেও, আমরা ১৫ হাজারেই দিতে বাধ্য হই।’
কটিয়াদী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতিটি পূজামণ্ডপে আগত ভক্তদের আহার্য (খাবার) বাবৎ বিতরণের জন্য ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পূজামণ্ডপের সভাপতি/সম্পাদক এসে বরাদ্দকৃত চালের ডিও সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। এরপর বাকি কাজ খাদ্য বিভাগের।
খাদ্যগুদামের ভিতরে চালের পরিবর্তে টাকা লেনদেনের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কনক কান্তি দেবনাথ।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি পূজামণ্ডপে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চালের পরিবর্তে টাকা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।
উল্লেখ্য, জেলায় ৩৯৪টি পূজামণ্ডপে এবার ১৯৭ মেট্রিক চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। এরমধ্যে কটিয়াদী উপজেলার ৪২টি পূজামণ্ডপে বরাদ্দ সাড়ে ২১ মেট্রিক টন চাল।
পূজার পবিত্রতায় সিন্ডিকেটের এই থাবা রোধে প্রশাসনের আরও কঠোর ভূমিকা কামনা করছেন এলাকাবাসী।
মাগুরায় ভূমিদস্যু বিপ্লবের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভায়না চোপদার পাড়া এলাকাবাসী।
সোমবার দুপুরে গোরস্থান রোডে ভায়না চোপদারপাড়ার এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানববন্ধনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন হাজি নওয়াবুল ইসলাম, শাওন চোপদার ও হাসিনা বেগম। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কিছু দুষ্কৃতির সহযোগিতায় ভূমিদস্যু বিপ্লব এলাকায় বিভিন্ন সময় ত্রাসের সৃষ্টি করে। বিপ্লব ভুয়া জমির কাগজপত্র তৈরি করে চোপদার পাড়ার বিভিন্ন মানুষের জমি দখল করে আসছে।
ভুক্তভোগী হাজি নওয়াবুল ইসলাম বলেন, ভূমিদস্যু বিপ্লব ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে আমার ২৭ শতক জমি দখল করেছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভূমিদস্যু বিপ্লব বিভিন্ন সময় আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে। আমার পরিবার নিয়ে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। দুদিন আগে রাতে আমার বাড়িতে ভূমিধসে বিপ্লব ইট মেরে হামলা চালিয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে তার সঠিক বিচার চাই।
ভুক্তভোগী হাসিনা বেগম বলেন, বিপ্লব আমার বড় ভাসুরের ছেলে। সে আমার কাছ থেকে দুই শতক জমি জোর জবরদস্তি করে লিখে নিয়েছে। বিভিন্ন সময় এলাকার মানুষের উপর করছে নানা ধরনের অত্যাচার ও নির্যাতন। আমি এ ভূমিদস্যু বিপ্লবের বিচার চাই।
গত ০২ জুলাই ২০২৫ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থায় মাসিক ভিত্তিতে গণশুনানি আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিমানবন্দর ব্যবহারকারীদের জন্য সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কর্তৃক সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আজ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সোমবার দুপুর ০২:১৫ ঘটিকায় গণশুনানির আয়োজন করা হয়।
এই গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব জনাব এস এম লাবলুর রহমান (S M Lablur Rahman)। গণশুনানিতে সম্মানিত যাত্রীসাধারণ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিসহ সকল স্টেকহোল্ডার অংশগ্রহণ করেন।
যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে আগ্রহী যাত্রীসাধারণসহ উপস্থিত সকলের কাছ থেকে পরামর্শ/মতামত ও ভবিষ্যৎ সেবার মান উন্নয়নে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। মতামত প্রাপ্তির ভিত্তিতে যেসকল সমস্যা তাৎক্ষণিক সমাধানযোগ্য তা সমাধানের জন্য প্রধনি অতিথি বিমানবন্দর ব্যবস্থাপকে অনুরোধ করেন এবং যে সকল সমস্যাগুলো দীর্ঘমেয়াদি ও নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সেগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সৈয়দপুর হতে ঢাকাগামী বিমানের ভাড়ার অস্বাভাবিক ওঠানামা এবং টিকেট সিন্ডিকেট সমস্যার বিষয়েও আলোচনা হয়।
মন্তব্য