কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মালবোঝাই পিকআপ ছিনতাই করার সময় তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃত ছিনতাইকারীরা হলেন, মামুন (৩০), সোহান (২৪) ও আকাশ (২৫)। তাঁরা সবাই ভৈরব পৌর শহরের গাছতলাঘাটের বাসিন্দা।
গতকাল রোববার রাতে উপজেলার আগানগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় আশুগঞ্জের একটি রাইস মিল থেকে বস্তা বোঝাই করে গাড়িটি ভৈরবের একটি চিড়ার মিলে যাচ্ছিল। গাড়িটি ভৈরব শহরের গাছতলাঘাট এলাকায় পৌঁছালে ওই তিন ছিনতাইকারী চালককে ভুল পথ দেখিয়ে প্রত্যন্ত এলাকা ভৈরব উপজেলার আগানগর গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে ছিনতাইকারীরা চালককে মারধর করে এবং জোরপূর্বক পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্য নিজেই গাড়ি চালিয়ে ভৈরব দুর্জয়মোড় পার হয়ে বেলাব উপজেলার বারৈচা পৌঁছালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
গাড়ির মালিক তৌহিদ মিয়া জানান, ছিনতাইকারীরা চালককে মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার পরপরই চালক দ্রুত ভৈরব থানায় এসে পুলিশকে ঘটনাটি অবগত করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান শুরু করে এবং রাত ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারৈচা থেকে তিন ছিনতাইকারীকে পিকআপসহ আটক করে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তালেব জানান, আটককৃত তিন যুবকই চিহ্নিত ছিনতাইকারী। তিনি বলেন, ‘গাড়ি ছিনতাইয়ের বিষয়ে অবগত হয়ে আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে বারৈচা থেকে গাড়ি উদ্ধারসহ জড়িত তিনজনকে আটক করি। আটকের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এঘটনায় গাড়ির মালিক তৌহিদ মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আটককৃতদের আজ সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাঘবেড়-গজারিয়া সড়কের গোহালিয়া খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ওই কাঁচা সড়কটি ও ভাঙ্গাচোরা নড়বড়ে কাঠের সাঁকোটি পাকাকরণের। কিন্তু, সে দাবি এখনও পূরণ হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে জনসাধারণের।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোহালিয়া খালের উত্তরের শেষ সীমানায় কাঠের সাঁকোটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে ভ্যান গাড়িসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলে না। মালামাল পরিবহন করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীর।
ওই গ্রামের অজুফা খাতুন বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। সরকার যদি আমাদের ব্রীজটা তাড়াতাড়ি করে দিতো, তাহলে খুব উপকার হতো।
কে.জি.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া বলেন, বর্ষাকালে এই সাঁকোটা পানির নিচে ডুবে থাকে। তখন ঝুঁকি নিয়েই আমাদের পারাপার হতে হয়। অনেক সময় আমাদের স্কুলে যাওয়া হয়না। এতে আমরা পড়াশুনায় পিছিয়ে যাই।
গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, ব্রীজ না থাকায় আমাদের হাঁটে বাজারে যেতে কষ্ট হয়। এমনকি কোন রোগী হাসপাতালে নেওয়া আরও কষ্ট হয়ে যায়। এই এলাকার কৃষিপণ্য ধান, সবজি, কলা এগুলো বিক্রি করার জন্য ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে বাজারে যেতে হয়।
বাঘবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, খালের ওই পাড়ে আমাদের স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী আছে। এই সাঁকোটা বিভিন্ন সময় বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সাঁকোটার যদি স্থায়ী একটা সমাধান হতো, তাহলে ছেলে মেয়েরা নিরাপদে স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারতো।
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, বাঘবেড়-গোহালিয়া খালের উপর সাঁকোটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ওই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি পাকা হবে।
সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, গোহালিয়া খালের উপর যে কাঠের সাঁকোটি রয়েছে, বর্তমানে এলজিইডির কোন প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত নেই। এটা ভবিষ্যতে নির্মাণের জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কারিগরি রিপোর্ট প্রদান করবো। আশা করি অনুমোদন সাপেক্ষে পরবর্তীতে উন্নয়ন কাজ সাধিত হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ্ আল রনী বলেন, স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সাথে কথা দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি পাকা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগে সোহেল মেম্বার (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া স্ট্যান্ড বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল মেম্বার উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে সোহেল মেম্বার অজ্ঞাত তিনজন সহযোগীকে নিয়ে বালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাফেজ সাহেবের ছেলে শরিফের বাড়িতে চাঁদা আদায়ের জন্য যায়। এসময় শরিফের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সোহেল মেম্বারের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শরিফের পরিবার স্থানীয়দের সহায়তায় সোহেল মেম্বারকে আটক করে এবং গ্রামবাসীকে খবর দেয় ।
খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সোহেল মেম্বারকে হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তিন সহযোগী পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পরে মরদেহ নারায়ণগঞ্জ সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়।
আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দীন জানান, “ আমরা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করি। তবে কি কারণে তাকে মারা হলো বিষয়টা এখনও জানা যায়নি।প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”
প্রসঙ্গত, সোহেল মেম্বার আড়াইহাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক, অপহরণ, চুরি ও হত্যা চেষ্টাসহ অন্তত ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে। গত ১৩ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রিজ টোল প্লাজা এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-১১ তাকে সহযোগী ফজলুল হক ফজু সহ গ্রেপ্তার করেছিল।
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বিনামূল্যের টাইফয়েড ভ্যাকসিন নিবন্ধনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী ও শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড ভ্যাকসিনের টিকা দিবে সরকার। টিকা নিতে প্রত্যেক শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। এতে গত আগস্ট মাসে প্রধান শিক্ষকদের সভা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দেন ইউএনও। পহেলা আগস্ট থেকে এই নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিনামূল্যে এই নিবন্ধন করার নির্দেশ দিলেও রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নিয়ে নিবন্ধন করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শ্রেণি শিক্ষকরা এসব টাকা উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুককের হাতে তুলে দেন।
এদিকে অনলাইনে একজন শিশুর টিকার নিবন্ধন করে প্রিন্ট দিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা খরচ হয়। যা বিদ্যালয়ের বহন করার কথা। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে ৫০ টাকা করে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক তিনজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থীর নিবন্ধন করতে ১২ হাজার টাকা আদায় করছেন প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক। তাহলে বিদ্যালয়ে সরকার প্রদত্ত বছরে লাখ টাকা কোথায় যায়। সরকার থেকে টিআর কাবিখা সহ উন্নয়নের নামে নানা প্রকল্প এনে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে।
এদিকে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষিকা সালমা সুলতানা রিমার স্বামী স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় স্কুলে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে রেখেছেন রিমা। স্কুলে অনুপস্থিত থাকা সহ নানান ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে শিশুদের ফেল করার হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক। তাই ভয়ে কেউ সরাসরি প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসকে টাকা দিতে হয়। এজন্য আমি ৫০ টাকা করে নিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মু.সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, বিনামূল্যে টিকা দিবে সরকার। এতে কোন টাকা পয়শা নেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। আমার নাম বিক্রি করে টাকা নিলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খাগড়াছড়িতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে ডাকা অবরোধ কর্মসূচি শিথিল করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম এবং খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ কর্মসূচি শিথিল ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মনোতোষ ত্রিপুরা বলেন, ‘এটা সুনির্দিষ্ট দুটি প্রধান সড়কের জন্য। তিনজনের সৎকার শেষে আবারও অবরোধ বহাল হবে।'
অবরোধ শিথিলের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক রোকন চৌধুরী বলেন, ‘এইসিদ্ধান্ত অত্যন্ত বিবেচনাপ্রসূত। আটকে থাকা যাত্রীদের পরিবহনে কাউন্টারগুলোতে গাড়ি রাখা হয়েছে।’
রোববার গুইমারায় গুলিতে নিহত নিহত তিনজনের মরদেহ হিমাগারে রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলাসদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পী চাকমা। তিনি বলেন, ‘তিন মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন এবং নাম ঠিকানা না পাওয়ায় এখনও পোস্টমর্টেম করা সম্ভব হয়নি।’
খাগড়াছড়িতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে চারদিন ধরে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে ‘জুম্ম ছাত্র–জনতা'। এই অবরোধ চলাকালে রোববার খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে তিনজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ ১৩ সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিন পুলিশ সদস্য এবং স্থানীয়দের অনেকে আহত হন।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে তিনজনের মৃত্যু খবর নিশ্চিত করা হলেও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিনজন পাহাড়ি নিহত হয়েছেন।’
চটপটি ও ফুসকা বিক্রেতার দুই ছেলে-মেয়ে পড়ছে দেশের সেরা দুই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানে এবং মেয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ (মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) বিষয়ে প্রথম বর্ষে অধ্যায়ন করছে। দু’সন্তানের অনাগত ভবিষ্যত গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে আত্মবিশ্বাসী এই চটপটি বিক্রেতা ও তার স্ত্রী দিন-রাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছেন। তারপরও চোখে-মূখে নেই ক্লান্তির ছাপ। রোজগারের একমাত্র অবলম্বন টচপটি বিক্রির উপর চলে তাদের জীবন-জীবিকা।বর্তমানে সংসারের খরচ এবং দুই সন্তানের পড়ালেখার খরচ জোগাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত খরচ জোগানো নিয়ে অজানা শংকা পেয়ে বসছে তাদের।
যশোরের মণিরামপুরের পৌরসভার তাহেরপুর গ্রামের চটপটি বিক্রেতার দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ে জয়ন্তী দাস বড় এবং ছেলে জয় দাস ছোট। প্রখর মেধাবী দুই ভাই-বোন ছোট থেকেই প্রতি শ্রেনিতে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। দু’সন্তানকে লেখা-পড়ার খরচ জোগাতে চটপটি বিক্রেতা দীপক দাস ও তার স্ত্রী শম্পা দাস হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করে চলেছেন। যেখানেই কোন অনুষ্ঠান, মেলা কিংবা ওয়াজ মাহফিল হয় সেখানেই স্ত্রী শম্পা দাসকে সাথে নিয়ে চটপটি বিক্রি করতে চলে যান দীপক দাস। অনুষ্ঠানে না গেলে পৌরশহরের রাজগঞ্জ মোড়স্থ নতুন সেতুর পশ্চিম মাথায় দুপুরের পর থেকে নিয়মিত চটপটি বিক্রি করেন। ভাড়া বাড়িতে থেকে শুধু এই চটপটি বিক্রির উপর চলে সংসার এবং জোগাতে হয় দু’সন্তানের লেখাপড়ার খরচ। বেলা উঠার আগেই বাড়িতে চলে চটপটি রান্নার প্রস্তুতি। দুপুরের পর ভ্যান নিয়ে চলে যান বিক্রি করতে। রাত ৯ টা থেকে ১১টা অবধি চলে এই চটপটি বিক্রি। স্ত্রীর গহনা বন্ধক রেখে এবং এনজিও, সমিতি থেকে ধার-দেনা করে দু’সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। এখন আরও খরচ টানতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
দীপক দাস জানান, তার মন-মনন জুড়ে রয়েছে শুধুই দু’সন্তানের অনাগত সুন্দর ভবিষ্যত নির্মান। তাদের ঘিরেই সব স্বপ্ন। তার ছেলে ও মেয়ে পিঠা-পিঠি (বছর খানেক বয়সের ব্যবধান) হওয়ায় একই শ্রেনিতে ভর্তি করান। মেয়ে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ- ৫ পেয়ে ২০২১ সালে এসএসসি ও ২০২৩ সালে এইচএসসি পাশ করে। ছেলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে একই শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ২০২৩-২৪ শিক্ষা বর্ষে ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং মেয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।
শম্পা দাস তার দুই সন্তানের জন্য আশির্বাদ প্রার্থনা করেন। তারা শুধু পড়ালেখায় নয়; যেন ভাল মানুষ হতে পারে।
দূর্গা পুজার ছুটিতে বাড়ি এসেছেন দুই ভাই-বোন জয়ন্তী দাস ও জয় দাস। তারা জানান, বুঝতে শেখার পর থেকেই দেখছেন তাদের বাবা-মা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছেন। বাবা-মায়ের আত্মত্যাগ কোনভাবেই শোধ হওয়ার নয়। তবে, ভবিষ্যতে তাদের মূখে হাসি ফোটাবার প্রাণপণ চেষ্টা থাকবে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় নুরাল পাগলার লাশের উপর খড়ি দেয়ার দায়ে মোঃ রাসেল মন্ডল (২০)নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।
গ্রেফতারকৃত রাসেল মন্ডল গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম সরকার পাড়া আঃ সামাদ মন্ডলের ছেলে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তাকে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।
তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে নজরুল মন্ডল নুরাল পাগলার মরদেহ পোড়ানোর জন্য খড়ি দিচ্ছে। ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে নুরাল পাগলার দরবারের ভক্ত রাসেলের পিতা আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় গুরুতর জখম, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, কবর থেকে লাশ উত্তোলন, পোড়ানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নজরুল মন্ডলকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জনতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার বাড়ি ও দরবারে হামলা চালায়। এ সময় রাসেল মোল্লা নামে নুরাল পাগলার এক ভক্ত তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় জনতার হামলায় গুরুতর আহত হন রাসেল মোল্লা। পরে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। নুরাল পাগলের লাশ পোড়ানো, হত্যাকান্ড, হামলা, ভাঙচুর লুন্ঠনের ঘটনায় রাসেলের বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৩৫'শ হতে ৪ হাজার অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
মন্তব্য