গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল চালক মামুন হত্যাকাণ্ডের পর থেকে দীঘিনালা ও রাঙামাটিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এবং এর অঙ্গসংগঠনসমূহ সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে তিনজন নিহত ও বহু সাধারণ মানুষ আহত হয়।
গত বছরের এই ঘটনায় এক বছর পূর্তির লগ্নে, ইউপিডিএফ এবং এর সহযোগী সংগঠনসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করে এবং অনুরূপ সহিংসতা পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালা এলাকায় এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ইউপিডিএফ-এর সন্দেহভাজন সদস্য শয়ন শীলকে পরদিন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
তবে শয়ন শীল গ্রেফতার হওয়ার পরও ইউপিডিএফ-এর অঙ্গসংগঠন পিসিপি’র নেতা উখ্যানু মারমা ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’ ব্যানারে সেদিনই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন ডাকে। পরদিন খাগড়াছড়িতে আধাবেলা হরতাল পালন করা হয়। অনলাইনে কিছু ব্লগার ও স্থানীয় দায়িত্বশীলরা বাঙালিদের উদ্দেশ্যে অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়।
২৬ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফ’র প্ররোচনায় এবং সামাজিক মাধ্যমে উস্কানির ফলে খাগড়াছড়িতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অবরোধ চলাকালে এক পর্যায়ে ইউপিডিএফ কর্মীরা সেনাবাহিনীর উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, ফলে তিন সেনা সদস্য আহত হয়। সেনাবাহিনী অত্যন্ত ধৈর্য্য ও মানবিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এবং বল প্রয়োগ থেকে বিরত থাকে।
গতকাল ইউপিডিএফ ও তার অঙ্গসংগঠন আবারো বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করে, বাঙালিসহ সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালায়, রাস্তা অবরোধ ও নাশকতা চালায়। খাগড়াছড়ি পৌরসভায় এই সংঘর্ষ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রূপ নেয়। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ধৈর্য্য ও কঠোর পরিশ্রম করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ রোববার সকালে ইউপিডিএফ ও অঙ্গসংগঠন গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ মানুষকে উসকে তোলে। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তাদের সাথে বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে ইউপিডিএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র, ইটপাটকেল ও লাঠি নিয়ে সেনাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ৩ অফিসারসহ ১০ সেনা সদস্য আহত হয়। বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং সদস্যরাও আহত হন।
রামসু বাজারের পাহাড় থেকে ইউপিডিএফ সশস্ত্র সদস্যরা অটোমেটিক অস্ত্র দিয়ে সেনা ও সাধারণ মানুষের ওপর প্রায় ১০০-১৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। সেনাবাহিনী দ্রুত তাদের ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীরা এলাকা ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে ইউপিডিএফ এর দুষ্কৃতিকারীরা রামসু বাজার ও আশপাশে অগ্নিসংযোগ করে এবং বাঙালিদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চালায়। বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সেনাবাহিনী জানায়, ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থিতিশীলতা ভঙ্গ করার জন্য নারীদের ও স্কুলছাত্রীদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করছে। বহিরাগত সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারীদের পার্বত্য অঞ্চলে আনার চেষ্টা চলছে।
আজ বিকেলে বিজিবির কাপ্তাই ব্যাটালিয়ন বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে অস্ত্র জব্দ করে।
গত ১৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খাগড়াছড়ি ও গুইমারা এলাকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণে স্পষ্ট হয়েছে এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। সেনাবাহিনী পার্বত্য অঞ্চলের সকল জাতিগোষ্ঠী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনসাধারণকে শান্তি বজায় রাখতে আহ্বান জানায়। সেনাবাহিনী এই অঞ্চলের অখন্ডতা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
চটপটি ও ফুসকা বিক্রেতার দুই ছেলে-মেয়ে পড়ছে দেশের সেরা দুই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানে এবং মেয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ (মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) বিষয়ে প্রথম বর্ষে অধ্যায়ন করছে। দু’সন্তানের অনাগত ভবিষ্যত গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে আত্মবিশ্বাসী এই চটপটি বিক্রেতা ও তার স্ত্রী দিন-রাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছেন। তারপরও চোখে-মূখে নেই ক্লান্তির ছাপ। রোজগারের একমাত্র অবলম্বন টচপটি বিক্রির উপর চলে তাদের জীবন-জীবিকা।বর্তমানে সংসারের খরচ এবং দুই সন্তানের পড়ালেখার খরচ জোগাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত খরচ জোগানো নিয়ে অজানা শংকা পেয়ে বসছে তাদের।
যশোরের মণিরামপুরের পৌরসভার তাহেরপুর গ্রামের চটপটি বিক্রেতার দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ে জয়ন্তী দাস বড় এবং ছেলে জয় দাস ছোট। প্রখর মেধাবী দুই ভাই-বোন ছোট থেকেই প্রতি শ্রেনিতে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। দু’সন্তানকে লেখা-পড়ার খরচ জোগাতে চটপটি বিক্রেতা দীপক দাস ও তার স্ত্রী শম্পা দাস হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করে চলেছেন। যেখানেই কোন অনুষ্ঠান, মেলা কিংবা ওয়াজ মাহফিল হয় সেখানেই স্ত্রী শম্পা দাসকে সাথে নিয়ে চটপটি বিক্রি করতে চলে যান দীপক দাস। অনুষ্ঠানে না গেলে পৌরশহরের রাজগঞ্জ মোড়স্থ নতুন সেতুর পশ্চিম মাথায় দুপুরের পর থেকে নিয়মিত চটপটি বিক্রি করেন। ভাড়া বাড়িতে থেকে শুধু এই চটপটি বিক্রির উপর চলে সংসার এবং জোগাতে হয় দু’সন্তানের লেখাপড়ার খরচ। বেলা উঠার আগেই বাড়িতে চলে চটপটি রান্নার প্রস্তুতি। দুপুরের পর ভ্যান নিয়ে চলে যান বিক্রি করতে। রাত ৯ টা থেকে ১১টা অবধি চলে এই চটপটি বিক্রি। স্ত্রীর গহনা বন্ধক রেখে এবং এনজিও, সমিতি থেকে ধার-দেনা করে দু’সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। এখন আরও খরচ টানতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
দীপক দাস জানান, তার মন-মনন জুড়ে রয়েছে শুধুই দু’সন্তানের অনাগত সুন্দর ভবিষ্যত নির্মান। তাদের ঘিরেই সব স্বপ্ন। তার ছেলে ও মেয়ে পিঠা-পিঠি (বছর খানেক বয়সের ব্যবধান) হওয়ায় একই শ্রেনিতে ভর্তি করান। মেয়ে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ- ৫ পেয়ে ২০২১ সালে এসএসসি ও ২০২৩ সালে এইচএসসি পাশ করে। ছেলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে একই শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ২০২৩-২৪ শিক্ষা বর্ষে ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং মেয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।
শম্পা দাস তার দুই সন্তানের জন্য আশির্বাদ প্রার্থনা করেন। তারা শুধু পড়ালেখায় নয়; যেন ভাল মানুষ হতে পারে।
দূর্গা পুজার ছুটিতে বাড়ি এসেছেন দুই ভাই-বোন জয়ন্তী দাস ও জয় দাস। তারা জানান, বুঝতে শেখার পর থেকেই দেখছেন তাদের বাবা-মা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছেন। বাবা-মায়ের আত্মত্যাগ কোনভাবেই শোধ হওয়ার নয়। তবে, ভবিষ্যতে তাদের মূখে হাসি ফোটাবার প্রাণপণ চেষ্টা থাকবে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মালবোঝাই পিকআপ ছিনতাই করার সময় তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃত ছিনতাইকারীরা হলেন, মামুন (৩০), সোহান (২৪) ও আকাশ (২৫)। তাঁরা সবাই ভৈরব পৌর শহরের গাছতলাঘাটের বাসিন্দা।
গতকাল রোববার রাতে উপজেলার আগানগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় আশুগঞ্জের একটি রাইস মিল থেকে বস্তা বোঝাই করে গাড়িটি ভৈরবের একটি চিড়ার মিলে যাচ্ছিল। গাড়িটি ভৈরব শহরের গাছতলাঘাট এলাকায় পৌঁছালে ওই তিন ছিনতাইকারী চালককে ভুল পথ দেখিয়ে প্রত্যন্ত এলাকা ভৈরব উপজেলার আগানগর গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে ছিনতাইকারীরা চালককে মারধর করে এবং জোরপূর্বক পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্য নিজেই গাড়ি চালিয়ে ভৈরব দুর্জয়মোড় পার হয়ে বেলাব উপজেলার বারৈচা পৌঁছালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
গাড়ির মালিক তৌহিদ মিয়া জানান, ছিনতাইকারীরা চালককে মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার পরপরই চালক দ্রুত ভৈরব থানায় এসে পুলিশকে ঘটনাটি অবগত করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান শুরু করে এবং রাত ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারৈচা থেকে তিন ছিনতাইকারীকে পিকআপসহ আটক করে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তালেব জানান, আটককৃত তিন যুবকই চিহ্নিত ছিনতাইকারী। তিনি বলেন, ‘গাড়ি ছিনতাইয়ের বিষয়ে অবগত হয়ে আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে বারৈচা থেকে গাড়ি উদ্ধারসহ জড়িত তিনজনকে আটক করি। আটকের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এঘটনায় গাড়ির মালিক তৌহিদ মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আটককৃতদের আজ সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় নুরাল পাগলার লাশের উপর খড়ি দেয়ার দায়ে মোঃ রাসেল মন্ডল (২০)নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।
গ্রেফতারকৃত রাসেল মন্ডল গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম সরকার পাড়া আঃ সামাদ মন্ডলের ছেলে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তাকে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।
তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে নজরুল মন্ডল নুরাল পাগলার মরদেহ পোড়ানোর জন্য খড়ি দিচ্ছে। ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে নুরাল পাগলার দরবারের ভক্ত রাসেলের পিতা আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় গুরুতর জখম, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, কবর থেকে লাশ উত্তোলন, পোড়ানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নজরুল মন্ডলকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জনতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার বাড়ি ও দরবারে হামলা চালায়। এ সময় রাসেল মোল্লা নামে নুরাল পাগলার এক ভক্ত তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় জনতার হামলায় গুরুতর আহত হন রাসেল মোল্লা। পরে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। নুরাল পাগলের লাশ পোড়ানো, হত্যাকান্ড, হামলা, ভাঙচুর লুন্ঠনের ঘটনায় রাসেলের বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৩৫'শ হতে ৪ হাজার অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
রাজধানীর উত্তরার কবি জসীমউদ্দীন রোডে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরবাইক চালক নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আরমান মির্জা (২১) নামের ওই তরুণ কলেজ শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা আহত আরমানকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে মারা যান।
নিহতের খালা নাজনীন আক্তার জানান, ‘খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে এসে আমার ভাগিনা আরমানের মরদেহ দেখতে পাই। সে আব্দুল্লাহপুরের নবাব হাবিবুল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। গভীর রাতে আরমান মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় জসিম উদ্দিন রোডে বেপরোয়া গতির একটি বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও জানান, আরমানের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার পূর্ব হাতিআলা গ্রামে।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে এসি বিস্ফোরণে একই পরিবারের দগ্ধ চারজনের মধ্যে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল ৭টায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে মারা যায় দগ্ধ তানভীর (৯)। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তানভীরের শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। সোমবার সকালে সে মারা যায়। গত ২৪ সেপ্টেম্বর মারা যান তানভীরের বাবা তুহিন হোসেন (৩৮)। তার শরীরের ৪৭ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
বর্তমানে দুইজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন— মা ইবা আক্তার (৩০) ও তার ছেলে তাওহীদ (৭)
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন ধলপুর বউবাজার এলাকায় সাত তালা ভবনের একটি বাসায় এসি বিস্ফোরণ ঘটলে দগ্ধ হন একই পরিবারের চারজন। তাদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৭ টিটিপি সদস্য নিহত হয়। এর মধ্যে ছিল ফয়সাল হোসেন মোড়লও। দর্শখেলের শাহ সেলিম থানার কাছে সেনাবাহিনীর চালানো অভিযানে ওই যুবক নিহত হয়। গতকাল রোববার এ খবর জানাজানি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত বাংলাদেশি তরুণের বাড়ি মাদারীপুরের কালিকাপুর ইউনিয়নের চরনাচনা গ্রামে। ফয়সাল হোসেন ওই গ্রামের আউয়াল মোড়লের ছেলে। দুই বছর আগে পরিবারের কাছে বায়না ধরে দুবাই যাওয়ার। পরিবার অর্থের জোগান দিতে না পারায় হঠাৎ নিখোঁজ হয়। এর প্রায় ছয় মাস পর ফয়সালের বড় ভাইকে মোবাইল ফোনে জানায়, সে দুবাই অবস্থান করছে। যে কোনোভাবে টাকা সংগ্রহ করে সে দুবাই চলে গেছে। সেখানে ভালো আছে। বিস্তারিত জানার জন্য প্রশ্ন করলে জবাব দিত না সে।
নিহত ফয়সালের ছবি দেখে খবর নিশ্চিত করেন তার চাচা আব্দুল হালিম মোড়ল। তবে ফয়সালের বাবার সঙ্গে যোগযোগ করতে চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ফয়সালের বয়স ২১-২২ বছর। পরিবারের সহযোগিতায় দুবাই যেতে চেয়েছিল। পরিবার সম্মত হয়নি। ২০২৪ সালের মার্চে দেশ ছেড়েছে সে। দেশে থাকতে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলা ফয়সাল হাটবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তাসবিহ, টুপি, আতরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সরঞ্জাম বিক্রি করত।
গত ঈদুল আজহার সময় মাদারীপুরের গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা খোঁজখবর নিতে তাদের বাড়ি যান। তখন পরিবার জানতে পারে, ফয়সাল আফগানিস্তান আছে। গতকাল সকালে ফয়সালের পরিবার পাকিস্তানে তার মৃত্যুর খবর জানতে পারে।
ফয়সালের চাচা হালিম মোড়ল বলেন, ‘ভাতিজার বিষয়ে জানতে পারি গত ঈদুল আজহার সময়। গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, সে আফগানিস্তান আছে। ২০২৪-এর মার্চে দেশ ছাড়ার প্রায় ৬ মাস পরে বড় ভাই আরমান মোড়লের কাছে মোবাইল ফোনে কল করে জানায়, দুবাই আছে এবং ভালো আছে। তবে বিস্তারিত জানতে চাইলে জবাব দিত না সে।’
পাকিস্তানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নিহত বাংলাদেশির কাছ থেকে পরিচয়পত্র, টাকা এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। অভিযানে ১৭ জঙ্গি নিহত হয়।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে এবার ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। রপ্তানি শুরুর প্রথম ১২ দিনে (১৬-২৭ সেপ্টেম্বর) এরইমধ্যে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গেছে ৯৯ টন ইলিশ। আর আখাউড়া বন্দর দিয়ে গেছে আরও ৩৭ টন।
মূলত, আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে ইলিশ রপ্তানির সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। হাতে মাত্র এক সপ্তাহ থাকায় অনুমতির সম্পূর্ণ পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় রপ্তানির পরিমাণও কম। প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ৫২৫ টাকা।
রপ্তানিকারকরা মনে করেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে পুরো চালান রপ্তানি করা কঠিন। গত বছর ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে, শেষ পর্যন্ত বেনাপোল ও আখাউড়া বন্দর দিয়ে মাত্র ৬৩৬ টন রপ্তানি হয়।
উল্লেখ্য, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেক কম হলেও বিশেষ বিবেচনায় সরকার ২০১৯ সাল থেকে দুর্গাপূজার সময় ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছে।
মন্তব্য