শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ নির্বিঘ্নে সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল অধিদপ্তর ও সংস্থার প্রায় ৮০ হাজার সদস্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সারাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় একাধিক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল অধিদপ্তর ও সংস্থার প্রায় ৮০ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত থাকবেন।
উল্লেখযোগ্য প্রস্তুতি হিসেবে:
🔹 পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: এবারে দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিটি পূজামণ্ডপে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে মন্ডপ ভিত্তিক পূজা বাস্তবায়ন কমিটির সাথে পূজা মন্ডপে উপস্থিত থেকে পূজা মন্ডপের শৃঙ্খলা রক্ষায় আগত দর্শনার্থীদের সহযোগিতা করবেন। পূজা মন্ডপে আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য বিভাগের প্রতিনিধিদের সাথে সমন্বিত সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নারী, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
🔹 নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্ক: সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পূজামণ্ডপে মনিটরিং টিমের কার্যক্রমে সমন্বয় করে “সহায়তা ডেস্ক”স্থাপন করা হবে। এখানে নারী ও শিশুরা যে কোনো প্রয়োজনে সহায়তা পাবে। জরুরি প্রয়োজনে হটলাইন নম্বর-১০৯৮ এবং ১০৯ এর পাশাপাশি কন্ট্রোলরুমের টেলিফোন নম্বর ০১৮১৮২১১৭৬৩, ০১৯২০৯৫০১৫২,
০১৭৪৯৮১৯৪২২,
০১৭১১০৫৯৮০৭,
০১৯৫৮১৯৩২৪১ চালু থাকবে।
🔹 আর্থিক সহায়তা: সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে স্বল্প আয়ের হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপসমূহে অনুদান প্রদান করা হয়েছে, যাতে তারা পূজা আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে।
🔹জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম: নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা রোধে পূজাকে ঘিরে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালু করা হয়েছে।
🔹 অভিযোগ গ্রহণ ব্যবস্থা: যদি কোনো নারী বা শিশু পূজা চলাকালীন মণ্ডপে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় হয়রানির শিকার হন, সে জন্য অভিযোগ গ্রহণের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এক প্রেরিত বিবৃতিতে বলেন, “ধর্মীয় উৎসবের আনন্দ সবাই মিলে ভাগ করে নেওয়ার অধিকার সকল নাগরিকের আছে। নারী ও শিশুর নিরাপত্তা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার।”
উপদেষ্টা জানান, “সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সরকারের পক্ষ থেকে সকল সহায়তা অব্যাহত থাকবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় সরকার সবসময় সচেষ্ট।”
এই বছর সারাদেশে প্রায় ৩৩ হাজার ৩৫৫টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে, যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ১১৯টি বেশি। পূজা উদযাপন পরিষদ এই তথ্য জানিয়েছে, এবং ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৫৮ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পানি সংকটসহ নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। ডাক্তার এবং জনবল সংকটের অজুহাতে রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে হাসপাতালের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখা যায়।
মাগুরা সদর উপজেলার জাগলা বাটিকাবাড়ি গ্রাম থেকে গত বুধবার মাথার যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হওয়া নুরজাহান বেগম অভিযোগ করেন, বুধবার রাত থেকেই হাসপাতালের চতুর্থ তলাসহ সবখানেই ছিল পানি সংকট। বাইরে থেকে পানি কিনে এনে খাবার এবং টয়লেটের কাজ সারতে হচ্ছে। টানা চার দিন হাসপাতালে পানি না থাকায় রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ওয়ার্ডের নার্স এবং ওয়ার্ডবয়দের মাধ্যমে জানা গেছে পানির লাইনের কাজ শুরু হলেও মধ্যে ঠিক হতে কিছু সময় লাগবে।
একই ফ্লোরে ভর্তি হওয়া আরেক রোগী সুমাইয়া জানান, বাথরুমে পানি না থাকায় বাইরে থেকে পানি কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতালের ভেতরে নোংরা পরিবেশ, দুর্গন্ধ, মশা, মাছি এবং তেলাপোকার অত্যাচার নিত্যদিনের। ফ্লোরে রোগীদের আরো বেশি সমস্যা। ডেঙ্গু রোগী, শিশু, নারী-পুরুষ একই ওয়ার্ড গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। কিছু জায়গায় ফ্যান, লাইট না থাকায় গরমে কষ্ট করতে হচ্ছে।
পানি না থাকার বিষয়টি কয়েকটি বাথরুমে যেয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন ফ্লোরে রোগীদের বেডের আশেপাশে মশা মাছি এবং তেলাপোকার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
মাগুরা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহেদ হাসান টগর অভিযোগ করেন, পানি সংকট ছাড়াও দুটি লিফট অধিকাংশ সময়ই থাকে নষ্ট। রোগী ও স্বজনরা সিঁড়ি বেয়ে উঠানামা করতে হয়। ডাক্তার এবং জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নিজেদের দায় এড়িয়ে চলেন। ডাক্তার এবং নার্সদের আন্তরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ সাধারণ রোগীদের। অধিকাংশ ইমারজেন্সি রোগীদের ভর্তির পর পরই ফরিদপুর এবং ঢাকা রেফার করা হয়। সরকারি বিনামূল্যের ওষুধ রোগীদের নামমাত্র দেওয়া হলেও বাইরে থেকেই কিনতে হয় বেশি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় মো. মোহসিন উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিজে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে আরএমওর সাথে কথা বলতে বলেন।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মামুন-উর-রশিদ বলেন, পানির দুটি পুরাতন মোটর রয়েছে যা প্রায় নষ্ট হয়। গত বৃহস্পতিবার গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের বাথরুমের পানির ট্যাবগুলো বিভিন্ন সময় চুরি হয়ে যাওয়ায় ট্যাংকির পানি শেষ হয়ে যায়। ফলে রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। বাড়তি রোগীর চাপে ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হয়। ডাক্তার এবং জনবল সংকট দীর্ঘদিনের। খাতা-কলমে আড়াইশ বেড হলেও একশত বেডের জনবল এবং জিনিসপত্র দিয়ে প্রায় ৩৫০ জন রোগীকে আবাসিক চিকিৎসা দিতে হয়।
এছাড়া আউটডোরে প্রতিদিন সাত থেকে আটশ রুগীর সেবা দিতে হয়। গত এক বছর আউট
সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগকৃত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। ফলে তাদের দিয়ে কাজ করানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ পারভেজ জানান, শুক্রবার দোকানপাট বন্ধ থাকায় পানির লাইনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে কাজ সম্পন্ন হয় নাই যা শিগগিরই সম্পন্ন হবে। হাসপাতালের ৫৬টি সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও পানির ট্যাপ প্রায় চুরি হচ্ছে এটা কর্তৃপক্ষের সচেতন হওয়া উচিত।
আজ রোববার থেকে ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে উলুধ্বনিতে ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে।
এদিকে সারাদেশের ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন প্রশাসন। গত বছর সারাদেশের ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৮৯৪টি দুর্গাপূজা বেশি হচ্ছে।
দৈনিক বাংলার ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
আহসান হাবিবুল আলম, চট্টগ্রাম: ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে উলুধ্বনিতে ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আজ থেকে। ধূপ-ধুনুচি, পঞ্চপ্রদীপ, উলুধ্বনি, শাঁখের আওয়াজ আর ঢাকের তালে মুখরিত হয়ে উঠেছে পূজামণ্ডপগুলো। গত ২১ সেপ্টেম্বর রোববার ছিল শুভ মহালয়া। মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের শুরু হয়। পঞ্চমীর দিনে মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল দেবীর বরণ ও চণ্ডীপাঠ। দুর্গাতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। আজ থেকে ষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হলো মূল উৎসব। গত বছরের চেয়ে ১৯টি বেড়ে চট্টগ্রাম জেলায় ও নগরে এবার সর্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপের সংখ্যা ১ হাজার ৯০৬টি। যার মধ্যে জেলায় ১ হাজার ৬১৪টি ও নগরীতে ২৯২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি দুর্গাপূজা হচ্ছে বেশ কিছু পারিবারিক মণ্ডপেও।
দুর্গাপূজা উদযাপনকে নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি। চট্টগ্রামের প্রতিটি পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য প্রশাসন, পুলিশ, রাজনৈতিক দলের নেতা এবং পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্যদের নিয়ে এরই মধ্যে প্রস্তুতিমূলক সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা বিবেচনায় এবার পূজামণ্ডপকে তিনভাগে ভাগ করে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৪০টি পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। বাকিগুলোতেও কঠোর নজরদারি রাখা হবে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ১৭ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৩২০-১০৮৩৯৮ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্যের এক অনন্য প্রতীক। পূজা উদযাপন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় মজুমদার দোলন বলেন, ‘এবার জেলায় সর্বজনীন মণ্ডপের সংখ্যা ১৯টি বেড়ে ১ হাজার ৬১৪টি হয়েছে। পূজা উদযাপনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, সুন্দরভাবে পূজা সম্পন্ন হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ জানান, এবার সর্বজনীন পূজামণ্ডপের সংখ্যা ২৯২টি। আমরা ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, সিএমপি কমিশনার, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মিটিং করেছি। সেখানে সুন্দরভাবে দুর্গোৎসব ও প্রতিমা বিসর্জনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি হবে।
পূজার কেনাকাটায় জমজমাট চট্টগ্রামের মার্কেট: দুর্গাপূজা উপলক্ষে কেনাকাটায় জমে উঠেছে চট্টগ্রামে চট্টগ্রামের মার্কেটগুলো। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন বিপণিবিতান, বাজার ও শপিংমলে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এবার পণ্যের দাম বেশি হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম গত বছরের মতোই রয়েছে। কিছু কিছু পণ্যে দাম বেড়েছে। অনেকে এবার ভারতীয় কাপড় চাইছেন, যার দাম স্থানীয় কাপড়ের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই বেশি।
পূজার কেনাকাটায় জামা-কাপড় ও অলংকারে আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। কিশোরী ও তরুণীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে নতুন ডিজাইনের শাড়ি, থ্রি-পিস ও গয়না। পুরুষদের পাঞ্জাবি, শার্ট, জিন্স ও ফ্যাশনেবল জুতো বিক্রি হচ্ছে ব্যাপকহারে। নগরীর নিউমার্কেট, টেরিবাজার, মিমি সুপার মার্কেট, আফমী প্লাজা, সানমার ওশান সিটি ও রিয়াজ উদ্দিন বাজারে ক্রেতাদের ভিড় তুলনামূলক বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পূজা উপলক্ষে বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা গেছে, পূজামণ্ডপগুলোতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক মণ্ডপগুলোর খোঁজ-খবর নিচ্ছেন পুলিশ। এছাড়া প্রতিটি পূজামণ্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে কাজ করেছেন উপজেলা প্রশাসন। একই সাথে প্রতিদিন একজন করে সরকারি কর্মকর্তা এসব মণ্ডপগুলো মনিটরিং করার কথা রয়েছে।
এ বছর ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ৬৫টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। স্বাচ্ছন্দ্যে পূজা পালনের জন্য পুলিশ মণ্ডপগুলোকে সাধারণ, গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ তিনটি স্তরে ভাগ করে নিরাপত্তার চাদরে ডেকে রেখেছেন। অধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সার্বক্ষণিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া পুলিশের মোবাইল টিম আছে তারাও নিয়মিত তদারকি করবেন। একই সাথে প্রতিটি মণ্ডপে ৬ জন করে আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: বাসস
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, এ বছর নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা নিয়ে কোথাও কোনো শঙ্কা নেই।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মোট ২ লাখ ৩ হাজার ৫৬৪ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়া ৭০ হাজার পুলিশ, ১ লক্ষ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও ৪৩০ প্লাটুন বিজিবি'র সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়াও প্রত্যেকটি পূজা মণ্ডপে মনিটরিং কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পার্বত্য এলাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতির সমাধানে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় থেকে অনেক স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’
এ সময় পূজাকে ঘিরে গুজব ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, কোর কমিটির বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, খাগড়াছড়ির উদ্ভূত পরিস্থিতি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস লুটপাট আর সন্ত্রাসের ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস চুরি আর অর্থ পাচারের ইতিহাস। তাদের ইতিহাস গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস।
গতকাল শনিবার বিকেলে কুমিল্লার টাউন হল মাঠে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, চব্বিশের আন্দোলনে ১৪০০ মানুষকে আওয়ামী লীগ হত্যা করেছে। ২০ হাজারের বেশি মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এত রক্ত এত ত্যাগের মধ্য দিয়ে হাসিনার পতনের পর আজ আমরা এখানে আসতে পেরেছি। আমরা যেন আমাদের রক্তাক্ত ইতিহাস ভুলে না যাই।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ইতিহাস সংস্থারের ইতিহাস। বিএনপির ইতিহাস রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে ধারণ করার ইতিহাস। বিএনপির ইতিহাস এ দেশে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইতিহাস।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ধর্ম নিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসা চলবে না। ইসলাম রাজনৈতিক বাক্স নয়। ইসলামের নামে যারা রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় তাদের রাজনৈতিকভাবে ভোটের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে। একাত্তরের চেতনার ব্যবসা করতে করতে হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছে। চেতনা ব্যবসা করতে করতে হাসিনার মৃত্যু হয়েছে ঢাকায় আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে। সুতরাং একাত্তরের চেতনা ব্যবসা যেমন চলবে না, এই দেশে ধর্ম নিয়ে ব্যবসাও চলবে না। তেমনিভাবে জুলাই বিক্রি করেও ব্যবসা চলবে না। জনগণ এখন সচেতন। কোনো চেতনা ব্যবসায়ীকে প্রশ্রয় দেবে না।
তিনি আরও বলেন, কারা যেন জান্নাতের টিকিট বিক্রি করতে চায়। কেউ কি জান্নাতের টিকিট বিক্রি করতে পারে? যারা বিক্রি করতে চায় তারা ধর্ম ব্যবসায়ী।
সংস্কার প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তারা যে সংস্কারের কথা বলে, তারা জানে না বর্তমানে সংস্কারের জনক তারেক রহমান। তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফাই এ দেশের প্রকৃত সংস্কার। আমরা ৩১ দফা সিলগালা করে দেই নাই। কেউ যদি আরও যৌক্তিক কোনো সংস্থার আনে তাও যুক্ত করা হবে। সংস্কার শেষ হয় না, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। কেউ বলছে বিচার, সংস্কার না হলে নির্বাচন হবে না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার আসবে আমার বিশ্বাস।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ থাকতে হবে। সকল অপপ্রচারের জবাব আপনাদের দিতে হবে। প্রতিনিয়ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ অপপ্রচারের জবাব দিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ থাকতে হবে ও এর বিরুদ্ধে সত্যটুকু তুলে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা বিচার চাই, যারা গণহত্যা করেছে গুম খুন করেছে তাদের বিচার অবশ্যই হতে হোক। বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল বৃদ্ধি করতে হবে। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গেই চলতে পারে।
এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম, কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন ও সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি একেবারে নিচে নেমে গিয়েছিল। আপনাদের রেমিট্যান্সই তা বাঁচিয়েছে। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পেছনে আপনাদের রেমিট্যান্সই মূল চালিকা শক্তি।’
শনিবার ম্যানহাটনের নিউইয়র্ক মেরিয়ট মার্কুইসে (১৫৩৫ ব্রডওয়ে) অনুষ্ঠিত ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ আয়োজনে অংশ নেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী।
তরুণদের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত তরুণ জনশক্তি রয়েছে। বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তর করে এ মানবসম্পদ কাজে লাগাতে এবং বাংলাদেশকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এখন বাংলাদেশের অংশ। আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিনিয়োগ ও ধারণা নিয়ে আসুন।’
তিনি আশ্বাস দেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে।
আঞ্চলিক অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নেপাল, ভুটান ও ভারতের সাত রাজ্য সমুদ্রবন্দরের অভাবে স্থলবেষ্টিত। যদি আমরা তাদের জন্য সমুদ্র উন্মুক্ত করি, সবাই উপকৃত হবে। সুযোগ নিশ্চিত হলে সবাই বাংলাদেশমুখী হবে।’
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস জানান, ইতোমধ্যে সামুদ্রিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বহু অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রস্তুত।’
পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন। তিনি জানান, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গৃহীত পদক্ষেপের ফলে মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে। গত এক বছরে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) দ্বিগুণ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আশিক চৌধুরী ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রবাসীদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ‘হারনেসিং ডায়াসপোরা অ্যাজ আ ন্যাশনাল অ্যাসেট’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এটি পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
আলোচনায় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের সম্পদ এবং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তারা বড় ভূমিকা রেখেছেন।
আরেকটি প্যানেল সেশন পরিচালনা করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। আলোচনায় বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, জামায়াত নেতা মোহাম্মদ নকীবুর রহমান এবং এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ড. তাসনিম জারা বক্তব্য দেন।
তাসনিম জারা তার বক্তৃতায় নারী ও তরুণদের সম্পৃক্ত করে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার ওপর জোর দেন, যেখানে সবার অংশগ্রহণ ও মতামত থাকবে। তিনি বলেন, ‘যখন সবাই একসঙ্গে কাজ করে, ইতিহাস বদলায়। আমরা একসঙ্গে ইতিহাস বদলাবো।’
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটি নানা আয়োজনমুখর ছিল। এতে ছিল প্লেনারি সেশন, নতুন ডিজিটাল অ্যাপ উদ্বোধন এবং প্রবাসী সম্পৃক্ততা। এতে প্রবাসীরা তাদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও উদ্বেগ ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি নীতিনির্ধারক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংলাপের সুযোগ পান। অনুষ্ঠানে ‘শুভেচ্ছা অ্যাপ’ উদ্বোধন করা হয়।
‘এনআরবি কানেক্ট ডে’ ছিল এক বিশেষ সমাবেশ, যেখানে ব্যবসা, একাডেমিয়া, স্বাস্থ্যসেবা, প্রযুক্তি ও সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি একত্রিত হন। এতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনুসন্ধান, নাগরিক সেবা গ্রহণ এবং টেকসই সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব সৃষ্টির মাধ্যমে প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা জোরদারের সুযোগ তৈরি হয়।
চীনের পরিচিত আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান টপপে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। আজ ২৭ সেপ্টেম্বর গুলশান-১ এ টপপের অফিসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য সহজ, ঝামেলাহীন ও সুবিধাজনক মোবাইল কেনার সুযোগ করে দেবে।
টপপের মূল লক্ষ্য হলো সহজ পেমেন্ট সুবিধার মাধ্যমে বেশি মানুষের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করা। তাদের কার্ড ছাড়াই ইএমআই (কিস্তি) সেবার মাধ্যমে গ্রাহকরা খুব সহজ কিস্তিতে মোবাইল ফোন কিনতে পারবেন। এতে ক্রেডিট কার্ডের দরকার হবে না এবং হঠাৎ বড় অঙ্কের টাকা দেওয়ার ঝামেলাও কমে যাবে। ফলে আধুনিক স্মার্টফোন আরও সহজলভ্য হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টপপে, মোবাইল ব্র্যান্ড অপো, রিয়েলমি ও ওয়ানপ্লাসের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ঘোষণা দেয়। এতে গ্রাহকরা সহজ কিস্তিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফোন কিনতে পারবেন এবং চাইলে নিয়মিত ডিভাইসও আপগ্রেড করতে পারবেন। বিশেষ করে তরুণ ও পেশাজীবীদের জন্য এটি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারকে আরও সহজ করবে।
এ সময় টপপের সিইও চেনফেই বলেন –“আমরা ইতোমধ্যে ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি এবং আগামী কয়েক বছরে আরও ২,৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা আছে। আমাদের লক্ষ্য আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ১৫ লাখের বেশি গ্রাহককে সেবা দেওয়া। শুধু মোবাইল ফাইন্যান্সিং নয়, ভবিষ্যতে আমরা আর্থিক সেবা, পেমেন্ট, সামাজিক দায়িত্ব ও দাতব্য কাজেও যুক্ত হবো।”
বাংলাদেশে টপপে কেবল মোবাইল কেনার পদ্ধতিই বদলাবে না; বরং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরেও ভূমিকা রাখবে। সহজ কিস্তিতে ফোন কেনা সম্ভব হলে আরও বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে। এতে ডিজিটাল সেবার ব্যবহার বাড়বে এবং সংযুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ গড়ে উঠবে।
টপপের এই উদ্যোগ দেখায় যে তারা শুধু ব্যবসা নয়, বরং বাংলাদেশের টেক ইকোসিস্টেম ও গ্রাহকদের পরিবর্তিত চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে এগোতে চায়।
মন্তব্য