ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন মোট ৩১ কি. মি. দৈর্ঘ্যের ৩৩টি রোড মিডিয়ানে বৃক্ষরোপণ ও সবুজায়নের উদ্বোধন করলেন ডিএসসিসি প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
জিরো সয়েল কার্যক্রমের আওতায় ২টি পর্যায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৮টি মিডিয়ানে এবং বন অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৫টি মিডিয়ানে শোভাবর্ধক ফুলের গাছ ও ঘাস রোপণের মাধ্যমে সবুজায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ২টি পর্যায়ে মোট ১০,৬৪৫টি শোভাবর্ধন ফুলের চারা হিসেবে রাধাচূড়া, বাগানবিলাস, টগর, শিউলি, করবী, চেরি, বকুল, সোনালু, টিকুমা, জারুল, মুসেন্ডা এবং রোড মিডিয়ানের দুই পাশে হেজ বা বর্ডার হিসেবে থাকবে মোট ৮১,১০০টি মিনি টগর, রং চিতা, মিনি রঙ্গন রোপণ করা হবে। এছাড়া সম্পূর্ণ মিডিয়ান জুড়ে সবুজায়নের জন্য থাকবে বার্মুডা ঘাস, লন ঘাস, আইভি লতা এবং অডেলিয়া।
১ম পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন ১৩টি মিডিয়ানের মধ্যে মিরপুর রোড, আব্দুল গনি রোড, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি, সিটি কলেজ হয়ে সীমান্ত স্কয়ার ও শহিদ ফারহান ফাইয়াজ সড়কের মিডিয়ান অংশে বৃক্ষরোপণের উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন ডিএসসিসি প্রশাসক। এ সময় প্রশাসক বলেন,
"নগরীর সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে ডিএসসিসির আওতাধীন সড়ক মিডিয়ানে বৃক্ষরোপণ ও সবুজায়ন করা হচ্ছে।" মাননীয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা ও মাননীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টার সার্বিক নির্দেশনায় ডিএসসিসি নিজে ও বন অধিদপ্তরের সাথে যৌথভাবে এ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের কেশবপুর উপজেলায় মৃৎশিল্পীরা শারদীয় দুর্গোৎসবে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। মনের মাধুরী মিশিয়ে ভালবাসার আঁচড়ে চলছে দিন রাত রং তুলি ও সাজ-সজ্জার কাজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষ ঘরে ঘরে দেবী দুর্গার শারদীয় দুর্গোৎস দুর্গোৎসব আগমনী বার্তা বয়ে বেড়াচ্ছে। দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানাতে উপজেলার হিন্দু এলাকায় প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎশিল্পীরা। এবার কেশবপুর উপজেলায় ৯৭টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। উপজেলায় জমজমাট শারদীয় দুর্গাপূজা আয়োজনে দেখা যায় মৃৎশিল্পীরা কাদামাটি, খড় কাঠ সংগ্রহের কাজ শেষ করে বিভিন্ন রং তুলির আচড়ে, আবার কোথাও শাড়ি ও কাপড়, স্বর্ণালংকার এ সাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে এই কার্যক্রম। এখন শারদীয় দুর্গোৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এই উৎসবকে ঘিরে মৃৎশিল্পীদের মাঝে দেখা দিয়েছে কর্মব্যস্ততা। দিনরাত কাজ করে শিল্পীদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। কাল রোববার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গা উৎসব ও দেবী দুর্গাকে বরণ করার জাঁকজমকপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা। পরবর্তী মন্ডপে মন্ডপে চলছে বরণের প্রস্তুতি। দিনগুলোতে একের পর এক অনুষ্ঠিত হবে সপ্তমী, অষ্টমী নবমী, আর ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসজনের মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হবে এই মহোৎসব।
উপজেলার পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দুলাল চন্দ্র সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সুকুমার সাহা জানান, পূজার সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে প্রতিমা কারিগরদের ব্যস্ততা। আর পুজাকে ঘিরে উপজেলায় চলছে রাতদিন প্রতিমা সাজ সজ্জার কাজ।
কেশবপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন জানান, প্রত্যেকটি পূজামন্ডপে আলাদা আলাদা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে ও কমিটি গঠন করা হয়েছে। পূজা মন্ডবে সি সি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকবে এবং শারদীয় দুর্গোৎসব সুষ্ঠুভাবে পালন করা যায় সেদিকে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের কাচিকাটা গ্রামের নিজ বাড়ী থেকে ৬০ বছরের বৃদ্ধা রেনু বেগমের গলাকাটা রক্তাক্ত লাশ গত ২১ সেপ্টেম্বর উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যার মোটিভ শনাক্তে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করে এবং গোয়েন্দা সূত্রের ভিত্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে র্যাব-৪ (সিপিসি), মাদারীপুরের একটি টিম ও পুলিশর একটি সমেত শিবচর থানাধীন পাচ্চর এলাকা থেকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাজী মাহমুদ রাসেল সবুজ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সবুজ জানায়, সে একাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। সবুজ বলেন, তাকে ও তার স্ত্রীকে দেয়া চোরের অপবাদের প্রতিশোধ নিতেই এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে।
শুক্রবার সবুজের পাচ্চরের বাসায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি (হাসুয়া/কাঁচি) উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় আসামি সবুজের খাটের নীচে লুকিয়ে রাখা ছুরির সাথে রেনু বেগমের বাসা থেকে চুরি হওয়া একটি রাইস কুকার, দুটি মোবাইলের একটি (স্যামসাং বাটন ফোন) উদ্ধার করা হয়। অপর একটি স্মার্ট ফোন (রিয়েলমি) হত্যাকারী সবুজ খুলনায় মোবাইলের দোকানে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিলে, সেটিও খুলনা থেকে উদ্ধার করে পুলিশের আরেকটি টিম।
ভিকটিম রেনুর কানের স্বর্ণের দুল ১৪ হাজার টাকায় শিবচরের একটি জুয়েলারি দোকানে বিক্রি করা হলেও উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও রেনু বেগমের আলমারী থেকে লুট করে নেয়া ১৫৩০/- টাকাও উদ্ধার করা হয় আসামি সবুজের নিকট থেকে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আসামি সবুজকে শুক্রবার বিকালে বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে সে রেনু বেগমকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
মেঘনা ও ভুলুয়া নদীর তীব্র জোয়ারের আঘাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের বয়ারচরের তেগাছিয়া বাজারে অবস্থিত একটি পুলিশ ফাঁড়ি ভেঙে পড়েছে খালে। ভাঙনের মুখে রয়েছে তেগাছিয়া নামক একটি বাজারও। ইতোমধ্যে ওই বাজারের ১৫টি দোকান খালে ভেঙে পড়েছে। রামগতি-বয়ারচর সড়কের তেগাছিয়া বাজার অংশ ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে স্থানীয় মেম্বার শেখ ফরিদ নিজ উদ্যোগে কাঠের সাঁকো তৈরি করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখেন। বর্তমানে ওই বাজারের প্রায় ২ শতাধিক ঘরমালিক ও ব্যবসায়ীরা আতঙ্ক রয়েছে। বাজারের পশ্চিম পাশের গাবতলীর খালের অংশ ভাঙছে প্রতিনিয়ত। এইভাবে চলতে থাকলে ১ মাসের মধ্যে বয়ারচরের গুরুত্বপূর্ণ এ বাজারটি তলিয়ে যাবে জোয়ারের পানিতে। বাজার ব্যবসায়ীরা রয়েছে চরম আতঙ্কে। কখন কার দোকান ভাঙবে সে চিন্তায় তাদের ঘুম নেই।
স্থানীয়রা জানান, বয়ারচরের দক্ষিণে ভুলুয়া নদী আর পশ্চিমে মেঘনা নদী। এই দুই নদীর পানি চলাচলের জন্য মাঝখানে গাবতলী নামে একটি বড় খাল রয়েছে। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সকল পানি ভুলুয়া নদী দিয়ে গাবতলীর খালে এসে মেঘনা নদীতে পড়ে। এতে গাবতলীর খালের তেগাছিয়া বাজার অংশে পানির স্রোতের ধাক্কা লেগে তেগাছিয়া পুলিশ ফাঁড়ি ভেঙে যায়। ভাঙতে শুরু করছে বাজারটিও।
লক্ষ্মীপুর পাউবো কর্তৃপক্ষ ও রামগতির ইউএনও সরেজমিন পরিদর্শন করে তেগাছিয়া বাজার রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ৩ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ভাঙতে শুরু করছে বাজারটি। ইতোমধ্যে ১৫টি দোকান ও রামগতি-তেগাছিয়া সড়ক ভেঙে পড়ে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ নিজ উদ্যোগে কাঠ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখেন।
তেগাছিয়া বাজারের ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম, মো. নুরশাদ, ডাক্তার কামাল উদ্দিন ও সাবু ব্যাপারী জানান, তেগাছিয়া বাজারটি বয়ারচরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ছিল একটি পুলিশ ফাঁড়ি। আশেপাশে প্রায় ২০ হাজার লোকের বসবাস। মেঘনা ও ভুলুয়া নদীর প্রচণ্ড জোয়ারের আঘাতে পুলিশ ফাঁড়িটি ভেঙে যায়। পরে সেখান থেকে পুলিশকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এখন বাজারটি মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। যেকোনো সময় গুরুত্বপূর্ণ এই বাজারটি ভেঙে যাবে। তাই দ্রুত ব্লক দিয়ে বাজার রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।
চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শেখ ফরিদ বলেন, প্রচণ্ড ঢেউয়ের আঘাতে মেঘনা ও ভুলুয়া নদীর পানির স্রোতে গাবতলী খালের বিভিন্ন এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। গত ৩ মাসে তেগাছিয়া বাজারের প্রায় দেড়শ ফুট ভেতরে পানি ঢুকে গেছে। এতে ওই বাজারের ১৫টি দোকান ভেঙে গেছে। বর্তমানে বাজারটি ভাঙনের মুখে। কিছুদিন আগে একটি পুলিশ ফাঁড়ি তলিয়ে গেছে খালে।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, নদীর জোয়ারে তেগাছিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ঘর ভেঙে যাওয়ায় আমরা পুলিশ ফাঁড়ির আসবাবপত্র আপাতত অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে রেখেছি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছেন। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, স্পিডবোট আর কার্গো জাহাজের ভিড়ে এককালের দাপুটে বৈঠার নৌকা এখন স্মৃতির পাতায়। ইঞ্জিনচালিত নৌযানগুলো কাঠের নৌকার চেয়ে অনেক দ্রুত এবং কম সময়ে বেশি পণ্য বা যাত্রী পরিবহন করতে পারা এর প্রধান কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এলাকাবাসী বলছেন, আধুনিক জীবনযাত্রার দ্রুতগতির সঙ্গে তাল মেলাতে কাঠের নৌকা তাই পিছিয়ে পড়েছে। একটি কাঠের নৌকা তৈরি করা যেমন সময় সাপেক্ষ, তেমনই এর রক্ষণাবেক্ষণও ব্যয়বহুল। কাঠ সংগ্রহ, নকশা তৈরি এবং নিয়মিত মেরামত বাবদ খরচ অনেক বেশি। অন্যদিকে, ফাইবারগ্লাস বা লোহার তৈরি নৌযানগুলো তুলনামূলকভাবে কম রক্ষণাবেক্ষণ চায়।
তারা বলেন, একসময় নদী ছিল মানুষের জীবনরেখা। নদী ছিল পথ, নৌকা ছিল বাহন, আর মাঝি ছিল সাহসী পথপ্রদর্শক। সেতু-সড়কহীন সেই সময়ে মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীতে বিভিন্ন ধরনের নৌকার প্রচলন ছিল যেমন ছিপ, বজরা, ময়ূরপঙ্খী, গয়না, পানসি, কোষা, ডিঙ্গি, ছৈওয়ালা, পাতাম, বাচারি, রপ্তানি, বউপলানোসহ ইত্যাদি নামের বাহারি সব নৌকা। নব্বই দশক থেকে বাংলাদেশে নৌকায় ইঞ্জিন লাগানো শুরু হয়। তখন থেকে নৌকা একটি যান্ত্রিক বাহনে পরিণত হয়। এ যান্ত্রিক নৌকাগুলো শ্যালো নৌকা নামেও পরিচিত।
ঘাটের মাঝি হেলু মিয়া বলেন, ‘আমাগো জীবন আর চলে না। ইঞ্জিন পাইয়া বৈডার নাওয়ে মানুষ ওঠে না। আয় রোগারও নাই। চাল কিনলে ডাল কিনতে পারি না। ইঞ্জিনের নাও কিনতে অনেক টেহা লাগে, হেডাও তো নাই। না খাইয়া মরার বাও অইছে আমগো।,
একটা সময় নদীমাতৃক বাংলাদেশে যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম ছিল কাঠের নৌকা। ঢেউয়ের তালে দুলতে দুলতে ভাটিয়ালি সুরে মাঝিদের বৈঠা বাওয়া, দূর-দূরান্তের হাটে পণ্য পরিবহন, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য- এ সবই ছিল আমাদের গ্রামবাংলার চিরচেনা দৃশ্য। খালে-বিলে বালু ফেলে ভরাট করে ফেলছে, নৌকা চলবই কেমনে মুড়াপাড়া ঘাটে কথাগুলো বলেন মাঝি কাইয়ুম মিয়া।
আধুনিক যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে কাঠের নৌকা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। কাঠের নৌকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি আর গ্রামীণ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাঝির ভাটিয়ালি গান, সারি গান, বা পালতোলা নৌকায় মেলা দেখতে যাওয়ার আনন্দ- এ সবই যেন আজ ধূসর স্মৃতি। এই শিল্পের বিলুপ্তি কেবল একটি জলযানের বিলুপ্তি নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের বিলুপ্তি।
ঘাটের মাঝি নিতাই বলেন, ‘সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগী না হয়, তবে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে কাঠের নৌকা কেবল জাদুঘরের প্রদর্শনীতে বা বইয়ের পাতায় স্থান পাবে। আমাদের আগামী প্রজন্ম হয়তো কেবল ছবিতেই দেখবে, একসময় এই বাংলার বুকে ঢেউ তুলে দাপিয়ে বেড়াত কাঠের নৌকা। এই নীরব বিদায় কি রোধ করা সম্ভব নয়?’
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, পরিবর্তনের ছোঁয়ায় আধুনিক যুগে কাঠের নৌকা বৈঠা হারিয়ে যাচ্ছে। কাঠের তৈরি নৌকা বৈঠা পরিবেশবান্ধব। চাঁদনী রাতে নদীতে নৌকা নিয়ে ঘোরার মজাই আলাদা। ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে সময় বাঁচে, বিকট শব্দে পরিবেশ দূষণ হয়।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন ।
জানাগেছে, পূজা মন্ডপ গুলোতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক মন্ডপগুলোর খোঁজ খবর নিচ্ছেন পুলিশ । এছাড়াও প্রতিটি পূজা মন্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে কাজ করেছেন উপজেলা প্রশাসন। একইসাথে প্রতিদিন একজন করে সরকারি কর্মকর্তা এসব মন্ডপগুলো মনিটরিং করার কথা রয়েছে।
এবছর ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ৬৫ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। সাচ্ছন্দ্যে পূজা পালনের জন্য পুলিশ মন্ডপগুলোকে সাধারণ, গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ তিনটি স্তরে ভাগ করে নিরাপত্তার চাদরে ডেকে রেখেছেন। অধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সার্বক্ষণিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও পুলিশের মোবাইল টিম আছে তারাও নিয়মিত তদারকি করবেন। একইসাথে প্রতিটি মন্ডপে ৬ জন করে আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।
শ্রী অভিলাস চন্দ্র পাল বলেন,এবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রসাশন আমাদের মুহুর্মুহু খবর নিচ্ছেন। অতীতের তুলনায় এবছর প্রশাসন সর্বোচ্চ তদারকি করছেন।
বাংলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সভাপতি সঞ্জিব জানান, বরবরের চেয়ে এবার আমাদের বেশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৯ তারিখ থেকে পূজার মূল কার্যক্রম শুরু হবে। পূজার ৪ দিন আগে থেকেই এবার আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশের একটি টিম ৩ ঘন্টা পরপর মন্ডপগুলোর খোঁজ খবর নিচ্ছেন। প্রশাসনের এমন নিরাপত্তা কার্যক্রমে আমরা তাদের প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন,দূর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাদা পোশাকেও রয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত আমাদের এই তদারকি অব্যাহত থাকবে। কেউ যদি অপ্রীতিকর ঘটনার চেষ্টা করে, তাকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। কাজেই কোন প্রকার হুমকি নেই। এসময় তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের ব্যাপারেও আশ্বস্ত করছেন।
“ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ডে, ২০২৫” উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ মেরিটাইম ল' সোসাইটি (BMLS) “আওয়ার ওশান, আওয়ার অবলিগেশন, আওয়ার অপরচুনিটি” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানটি গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকেল ৩টায় সিআইআরডিএপি আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি এ.এফ.এম. আব্দুর রহমান (অব.), বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের (হাইকোর্ট বিভাগ) সাবেক বিচারপতি। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রিয়ার অ্যাডমিরাল ড. খন্দকার আখতার হোসেন, এনইউপি, এনডিসি, পিএসসি, পিএইচডি, উপাচার্য, বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন কমোডর সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন আহমেদ (অব.), মহাপরিচালক, BIMRAD এবং মি. এস. এম. মইনুল ইসলাম, কান্ট্রি ম্যানেজার, Tyser Group Services Ltd., লন্ডন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মি. মোহিউদ্দিন আব্দুল কাদির, সভাপতি, BMLS ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী; মি. মোহাম্মদ আব্দুল হাই, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত, থাইল্যান্ড; এবং ড. মীর তারেক আলী, অধ্যাপক, NAME, বুয়েট। বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট শ্বেতা মিশ্র, প্রধান, MCLaw Services Ltd. এবং কমোডর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম (অব.), সাবেক মহাপরিচালক, নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও প্রজেক্ট লিড, MACN
সেমিনারে বিচারক, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, জাহাজ মালিক, বন্দর কর্তৃপক্ষ, সামুদ্রিক বীমা বিশেষজ্ঞ, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার, কার্গো স্টেকহোল্ডারসহ সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এসব সংস্থার মধ্যে ছিল নৌপরিবহন অধিদপ্তর, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ ও রিভার পুলিশ।
উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি দেশের মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তি, এআই, রোবটিক্স, অটোমেশন, চ্যাটজিপিটি প্রভৃতির ব্যবহারের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। এলক্ষ্যে তিনি মেরিটাইম সেক্টরে দক্ষ জনবল তৈরী, মেরিটাইম পেশাজীবিদের উক্ত প্রযুক্তিসমূহে দক্ষতা উন্নয়ন এবং এই সেক্টরের উন্নয়নে একাডেমিশিয়ান, শিল্প প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, আইনজীবীসহ সকল মেরিটাইম স্টেকহোল্ডারদের একযোগে কাজ করার প্রতি গুরুত্বারোপ
করেন।
আলোচনায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় সামুদ্রিক আইন ও টেকসই মহাসাগর শাসনব্যবস্থার ভূমিকার ওপর। অংশগ্রহণকারীরা একমত হন যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মহাসাগরকে সুরক্ষিত রাখা সকলের যৌথ দায়িত্ব।
রাজশাহীতে ট্রাফিক মামলার জরিমানা আদায় আরও সহজ ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) এবং কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকেল ৪টায় রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভারভিউ চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সম্মেলন কক্ষে এ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি বিনিময় করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান এবং কমিউনিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) কিমিয়া সাআদত। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, পিপিএম (বার), পিএইচডি।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাফিক মামলার জরিমানা আদায়ের কার্যক্রম উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “ট্রাফিক মামলার জরিমানার অর্থ প্রদানে গ্রাহক হয়রানি কমানো, ভোগান্তি লাঘব এবং সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন থেকে নগদ অর্থের পাশাপাশি কমিউনিটি ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং বিকাশের মাধ্যমে জরিমানা প্রদান করা যাবে। এতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আরও গতিশীল হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আরএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর), অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, পিপিএম; উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো: নূর আলম সিদ্দিকীসহ আরএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়া কমিউনিটি ব্যাংকের হেড অব করপোরেট ব্যাংকিং ও হেড অব বিজনেস (ব্রাঞ্চ) ড. মো. আরিফুল ইসলাম, হেড অব কার্ড জনাব জাহির আহমেদ, হেড অব এডিসি ও হেড অব এমডি'স কো-অর্ডিনেশন টিমের প্রধান মো: মামুন উর রহমানসহ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১১টায় ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার, রাজশাহীতে "ই-ট্রাফিক পরিচালনা ও জরিমানা আদায়" কার্যক্রম সহজীকরণের লক্ষ্যে আরএমপি ও জেলা পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্টদের নিয়ে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য