পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৩ নং সদর ইউনিয়নের মোলানী পাড়া ও পূর্ব শিং পাড়া এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুর্ভোগে ভুগছেন। প্রায় দশ হাজার মানুষের বসবাস থাকা সত্ত্বেও এ দুইটি গ্রামের প্রধান সড়ক এখনো পাকা হয়নি। ফলে প্রতিদিনের যাতায়াতে নানান ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির দিনে কাঁচা রাস্তাগুলো কর্দমাক্ত হয়ে যায়। হাঁটাচলা করা তো দূরের কথা, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রোগী ও গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় চরম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। শুকনো মৌসুমে ধুলাবালিতে নাক-মুখে শ্বাসকষ্টসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়।
এলাকার কয়েজন জানান প্রতিবার নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি মিললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
মোলানী পাড়ার বাসিন্দা এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা বহু বছর ধরে এই সড়ক পাকাকরণের দাবি জানাচ্ছি। গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষ প্রতিদিন এ রাস্তায় চলাচল করে। কিন্তু এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটা আমাদের জন্য খুব কষ্টকর।
স্থানীয় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রতিদিন স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। বর্ষায় কাদা আর শুকনো মৌসুমে ধুলার কারণে আমাদের পড়াশোনায় প্রভাব পড়ে।’
অবিলম্বে এই সড়কগুলো পাকা করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ। তাদের মতে, যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হলে শিক্ষা, চিকিৎসা ও স্থানীয় অর্থনীতিতেও নতুন গতি আসবে।
মো. আব্দুল লতিফ প্রধান জানান, ৩ নং সদর ইউনিয়ন অনেক পুরাতন ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের কিছু অংশ পৌরসভায় চলে যায়। ১৯৮৪ সালে পঞ্চগড় পৌরসভা স্থাপণ হয়। মাহি পাম থেকে মোলানী, পূর্ব শিং পাড়া থেকে ব্যারিস্টার বাজার পৌরসভা এবং জেলার বিভিন্ন জায়গায় হইতে এ রাস্তা যাতায়াত করা হয়। পঞ্চগড় সদর উপজেলা এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী কৃষ্ণ চন্দ্র রায় তিনি জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ রাস্তার বিষয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
আগামী ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে সেন্ট মার্টিন। এ সময় প্রতিদিন ২ হাজার করে পর্যটক সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে চলতি বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পর্যটন মৌসুম।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
তিনি জানান, ১ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য সেন্ট মার্টিন খোলা থাকবে। তবে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে শুধু দিনের বেলা সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করা যাবে। আর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে রাতে অবস্থান করতে পারবেন পর্যটকরা।
উপদেষ্টা আরো জানান, প্রতিদিন ২ হাজার করে পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন। পর্যটকদের যাওয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে এই সফটওয়্যার পরিচালিত হবে।
এর আগে সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে যৌথ কমিটি গঠন করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
এতে সিদ্ধান্ত হয়, সেন্ট মার্টিনে যেতে হলে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানা বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। যদিও এরপর নয় মাস ভ্রমণের জন্য সেন্টমার্টিনে যাওয়া যাবে না বলে মর্মে সিদ্ধান্ত দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সেসময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছিলেন, সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতেই ভ্রমণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, সেন্ট মার্টিনকে স্থানীয় জনগণ কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্রে রূপ দেয়া হবে। তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাঁচানোর প্রয়াসকে ভিত্তিহীন কথা দিয়ে ভিন্নপথে পরচালিত করার সুযোগ নেই, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাঁচাতে বন্ধ রাখা হচ্ছে। সরকার নতুন কিছু নয় বরং বহু পুরনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে।
এর আগে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মাসের জন্য বন্ধ হয় সেন্ট মার্টিনে পর্যটক ভ্রমণ। যার প্রভাব পড়েছে দ্বীপের পর্যটন খাতে। বন্ধ রয়েছে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত বন্ধ হওয়ায় সুনশান নীরবতা জেটিঘাটে। জাহাজে বেকার সময় পার করছেন কর্মচারীরা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদের) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে ‘আনুষ্ঠানিক অভিযোগ’ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তার বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন পর্যায়ে উসকানি, ষড়যন্ত্র, হত্যা, আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র প্রয়োগ ও নিপীড়নমূলক কৌশলে সমর্থনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২-এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন। শুনানির পর তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
এই ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।
অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি ৩৯ পৃষ্ঠার। চারটি ভলিউমে এক হাজার ৬৭৯ পৃষ্ঠার ডকুমেন্টারি এভিডেন্স আমরা দাখিল করেছি। সঙ্গে তিনটি অডিও ও ছয়টি ভিডিও দাখিল করা হয়েছে। এই মামলায় ২০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। মামলার একমাত্র আসামি হাসানুল হক ইনু। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখাতে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
প্রথম অভিযোগ (গণমাধ্যমে প্ররোচনা): জুলাই আন্দোলনকারীদের বিএনপি-জামায়াত, সন্ত্রাসী ট্যাগ দিয়ে আন্দোলন দমন এবং আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আসামি হাসানুল হক ইনু জাসদের প্রধান হিসেবে গত বছর ১৮ জুলাই ‘মিরর নাও’ নামের একটি ভারতীয় গণমাধ্যমে উসকানি দিয়েছেন।
দ্বিতীয় অভিযোগ (দেখামাত্র গুলি) : গত বছর ১৯ জুলাই গণভবনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ১৪ দলীয় জোটের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ইনু উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে দেশব্যাপী সেনা মোতায়েন, কারফিউ জারি এবং আন্দোলনকারীদের ‘শুট অ্যাট সাইট’ অর্থাৎ দেখামাত্র গুলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসানুল হক ইনু ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বাস্তবায়নে প্ররোচনা ও উসকানি দেওয়ার পাশাপাশি তাতে সহায়তা করেছেন।
তৃতীয় অভিযোগ (কুষ্টিয়ায় দমন-পীড়ন): গত বছর ২০ জুলাই হাসানুল হক ইনু তার নিজ জেলা কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারকে ফোন করে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছাত্র-জনতার ছবি দেখে তালিকা তৈরি এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের ফলে কুষ্টিয়া পুলিশের একটি অংশ এবং ১৪ দলীয় জোটের সশস্ত্র ক্যাডাররা গত বছর ৫ আগস্ট পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালালে ছয়জন নিহত হন।
চতুর্থ অভিযোগ (লিথাল উয়েপন): সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে আন্দোলন দমনে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহার, ছত্রীসেনা নামিয়ে ও হেলিকপ্টার দিয়ে বোম্বিং করে আন্দোলনকারীদের হত্যা ও নির্যাতনের ষড়যন্ত্র করেন ইনু। গত বছর ২০ জুলাই তিনি এ নিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
পঞ্চম অভিযোগ (টিভি চ্যানেলে উসকানি): গত বছরের ২৭ জুলাই আসামি হাসানুল হক ইনু নিউজ টোয়েন্টিফোর চ্যানেলে আন্দোলনকারীদের বিএনপি, জামায়াত, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি আখ্যা দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ওইসময় তিনি দেশে সরকারের কারফিউ জারি, আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার ও নির্যাতনের কৌশলকে সমর্থন করেন তিনি।
ষষ্ঠ অভিযোগ (জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব): গত বছর ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত ১৪ দলীয় জোটের সভায় হাসানুল হক ইনু আন্দোলনকারীদের বিএনপি, জামায়াত, সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক বলে আখ্যা দেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী জোটের ক্যাডারদের পরিচালিত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনকে বৈধতা দেন।
সপ্তম অভিযোগ (কারফিউ ও গুলিবর্ষণে সমর্থন): গত বছর ৪ আগস্ট বিকেলে শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে আন্দোলন দমনে কারফিউ জারি ও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের সিদ্ধান্ত সমর্থন ব্যক্ত করে তার দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন ইনু।
অষ্টম অভিযোগ (কুষ্টিয়ায় আন্দোলনে হত্যা): সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হাসানুল হক ইনুর ষড়যন্ত্র ও নির্দেশে গত বছর ৫ আগস্ট কুষ্টিয়ায় ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা পুলিশের উপস্থিতিতে নিরীহ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। তাদের গুলিতে শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুস্তাকিন, মো. উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী এবং চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ শহীদ হন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিচার অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে গত বুধবার ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে সংস্থার সদর দপ্তরে দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ এবং এর আগে গত বুধবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব ও কসোভোর প্রেসিডেন্ট ভিওসা ওসমানির সঙ্গে বৈঠক করেন।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনমান অনুসরণ করেই এই বিচার পরিচালিত হচ্ছে। বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও তিনি (হাসিনা) উসকানিমূলক ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী মন্তব্য করছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা প্রত্যর্পণ চেয়েছি।’
বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, জাতিসংঘ সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আসিয়ানভুক্তির প্রচেষ্টা, শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার এবং নেপাল-ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ পাওয়ার উদ্যোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘গত ১৪ মাসে আমরা (অন্তর্বর্তী সরকার) অভূতপূর্ব আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছি।’
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমাদের জনগণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখন তারা ফেব্রুয়ারির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।’
বাংলাদেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার চলছে এবং রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই চার্টারে সই করবে বলে আশা করা হচ্ছে বলেও ফিনিশ প্রেসিডেন্টকে জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠক ও শেহবাজ শরীফের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই নেতা বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম, পাকিস্তানে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিধ্বংসী বন্যা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস পাকিস্তানে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্যায় এক হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির জন্য গভীর শোক প্রকাশ এবং আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শরীফ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে এ ধরনের বিপর্যয়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি মাসে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি ১১টি কমিশনের প্রস্তাবিত গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার দেশকে অর্থবহ রাজনৈতিক রূপান্তরের দিকে নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং দলগুলো ‘জুলাই সনদে’ স্বাক্ষর করবে, যেখানে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়বস্তুগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
উভয় নেতা আলোচনা করেন যে সম্প্রতি কয়েক বছরে সার্ক কার্যত নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিকল্প উপায় অনুসন্ধান করা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী শরীফ ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস ইতালি-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম গঠনের প্রস্তাব দেন, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশে ইতালিয়ান বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করা।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং বলেন দুই দেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বিস্তারের বড় সম্ভাবনা রয়ে গেছে।
উভয় নেতা বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন, অভিবাসন চ্যালেঞ্জ, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং আগামী ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মেলোনির বাংলাদেশে সম্ভাব্য সফর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অভিবাসন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি ইতালির পক্ষ থেকে ঢাকার সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন, যাতে দুদেশের জন্য নিরাপদ অভিবাসনের পথ নিশ্চিত করা যায়।
তিনি মানবপাচারের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেন, যা ভূমধ্যসাগরে শত শত মানুষের প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জানান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যেই মানবপাচারের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ এবং নিরাপদ অভিবাসনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ কার্যকর করেছে।
তিনি বলেন, ‘মানবপাচার রোধে আরও সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রয়োজন।’
বাংলাদেশে রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দেশ ফেব্রুয়ারি মাসে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের পথে রয়েছে, এরপর তিনি তার পূর্ববর্তী ভূমিকায় ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
প্রধানমন্ত্রী মেলোনি অধ্যাপক ইউনূসের গত ১৪ মাসের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বের প্রশংসা এবং নিশ্চিত করেন যে ইতালি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম দেশ যারা বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সমর্থন জানাবে।
দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও গঠনমূলক আলোচনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী মেলোনি আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা সংকটবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠানোর অঙ্গীকার করেন।
সূত্র: বাসস/ইউএনবি
কুমিল্লা-৬ (সদর-সদর দক্ষিণ) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী, কুমিল্লা মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেছেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশ সবার। মুসলমানদের মতো অন্য ধর্মের ভাইয়েরাও যেন সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করতে পারে, সে লক্ষ্যেই জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে।
বাংলাদেশের ঐতিহ্য হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। শত শত বছর ধরে ভিন্ন ধর্ম ও ভিন্ন মতাবলম্বীরা এখানে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার- এই চেতনা ধারণ করেই শান্তিপূর্ণ ও উন্নত সমাজ গঠন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, সমাজের প্রতিটি স্তরে ধর্মীয় সহনশীলতা, মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতার চর্চা বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলেই সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা ২ নং উত্তর দুর্গাপুর ইউনিয়ন আড়াইওরা নমুসতপাড়া আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময় ও উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা মহানগরীর জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক এ. কে. এম. এমদাদুল হক মামুন। ওই সময় আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সবুজ, যুব বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম পাটোয়ারী, জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবুল কাশেষ শামিম প্রমুখ।
‘ক্লিন নড়াইল-ড্রিম নড়াইল।’ এটি শহরের ময়লা-অবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন প্রকল্পের একটি প্ল্যাটফর্ম। এই প্রকল্পের কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকায়। ফলে ময়লার দুর্গন্ধ পথচারীরা এখন বিরক্ত হয়ে পড়ছে। এই প্রকল্প সম্পন্ন করতে অন্যত্র সরিয়ে নিতে যাওয়ার জন্য এলাকাবাসীরা দাবি জানিয়েছেন। তারা ময়লা-আবর্জনা দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে চায়।
নড়াইল পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে স্থাপিত নড়াইল পৌরসভা। ৮০ দশকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নতি হয়েছে। দেরিতে হলেও নড়াইল পৌর এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে গড়ে তোলা হয় ‘ক্লিন নড়াইল, ড্রিম নড়াইল’ নামে একটি বিশেষ প্রকল্প। যার কাজ হলো শহরের প্রতিটি বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা নিয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে জমা করা। বি আই আর ডি (বোর্ড ফর ইন্টিগ্রেটেড রুলার ডেভেলপমেন্ট) নামে একটি বেসরকারি সংস্থাকে কাজটি করার জন্য দায়িত্ব দেয় নড়াইল পৌরসভা। আর এসব কাজ যৌথভাবে তদারকি করবে জেলা প্রশাসন এবং পৌরসভা।
নাগরিকদের প্রয়োজনের তাগিদে যে কথা সেই কাজ। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকেই কাজ শুরু হয়। কাজের শুরুতে জেলা প্রশাসন নড়াইল-যশোর সড়কের নতুন বাস টার্মিনালের সামনের গর্তে ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। বি আই আর ডি, এ জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়োগ করে। ময়লা-আবর্জনা বহনের জন্য ১৩টি ভ্যানগাড়ি ব্যবহার করা হয়। টার্মিনালের সামনের গর্তে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে আশপাশের বাসিন্দাসহ টার্মিনালে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের রাত যাপনে দুর্বিষহ হয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর তদারকিতে শহরের রাস্তা প্রশস্ত করণ কাজ শুরু হলে ওই গর্ত থেকে ময়লা-আবর্জনা অন্যত্র নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জেলা প্রশাসন নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর সেতুর পশ্চিম পাশ বেছে নিয়ে জমি অধিগ্রহণ করে সেখানেই ময়লা-আবর্জনা ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ময়লার দুর্গন্ধে সীতারামপুর গ্রামের বাসিন্দাদেরও একই অবস্থা শুরু হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর এলাকায় পৌর ভাগাড় বানিয়ে সেখানে শহরের যত ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ সেতুর পশ্চিম পাশে ময়লা-আবর্জনা আর পূর্বপাশে শুকরের মলমূত্রের দুর্গন্ধে কৃষি জমিতে কাজ করা যায় না। মাছের ঘেরে খাবার দিতে অসুবিধা হচ্ছে। কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদনসহ খাল-বিলে মাছ মারা ও ধরা যায় না। তাদের দাবি ভাগাড় এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে এলাকার মানুষকে মুক্ত বাতাসে বসবাস করার সুযোগ করে দিন ।
সীতারামপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘যারা এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার অনুমতি দিয়েছেন তারা হয়তো সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখেননি। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কেমন করে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড় বানিয়ে দিলেন বোধগম্য হয় না।’ তিনি দাবি করেন, দ্রুত এখান থেকে ময়লার ভাগাড় অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে এলাকার মানুষকে মুক্ত বাতাসে বসবাস করার সুযোগ করে দেবেন ।
মুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য অজিত কবিরাজ বলেন, ‘এখানে ময়লার ভাগাড় করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর গ্রামের মাছের ঘেরসংলগ্ন ভাগাড় বানিয়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। যে কারণে এলাকাবাসীর বসবাসে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে এলাকার কৃষক ও মৎস্যচাষীদের কাজ করতে চরম অসুবিধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে । অন্য কোনো ফাঁকা স্থান বেছে নিয়ে সেখানে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় নির্মাণে প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।’
জানতে চাইলে নড়াইল পৌর প্রশাসক জুলিয়া সুকায়না বলেন এ বিষয়ে এলাকাবাসী অথবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কেউ কোনো আবেদন করেননি। আবেদন পেলে বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পার। তা ছাড়া অর্থ বরাদ্দসাপেক্ষে অন্যত্র ফাঁকা স্থান দেখে ভাগাড় নির্মাণে পরিকল্পনা করা হতে পারে।
মীরসরাইয়ে ওয়ারেন্টভূক্ত ও মাদক মামলার আসামিসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মীরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূর্ব পোল মোগরা এলাকার মৃত অলিউর রহমানের ছেলে রেজাউল করিম (৪৮), মঘাদিয়া ইউনিয়নের সরকারটোলা এলাকার ওয়াহেদুর রহমানের ছেলে ওমর ফারুক (২১), করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগরের আবুল কালামের ছেলে মো. নাজমুল হামিদ (২১), সীতাকুণ্ড উপজেলার পশ্চিম আমিরাবাদ এলাকার জয়নাল আবেদীনের সাজ্জাদ হোসেন সাকিব (২২), মীরসরাই পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম আমবাড়িয়া এলাকার মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে কায়সার সিদ্দিক ফাহাদ (২২), মীরসরাই সদর ইউনিয়নের উত্তর তালবাড়িয়া এলাকার নুরুল করিমের ছেলে তারেক হোসেন (২০) ও মীরসরাই পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের গোভনীয়া এলাকার শামছুদ্দিনের ছেলে বাবুল (২৭)। বাবুল মীরসরাই থানার ওয়ারেন্টভূক্ত রেজাউল করিমের নামে একজনের নামে মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রয়েছে।
মীরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, ‘মীরসরাই থানার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার আসামিসহ সাতজনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে তাদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের জিমখানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। এদের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। গত বুধবার রাতে জিমখানা লেকপার্ক এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সাজাপ্রাপ্ত ৫ জন হলেন- মো. ফয়সাল (২১), রিফাত (২০), জুবায়ের ভূইয়া রানা (৩৬), মো. মোস্তফা হোসেন (২৬) ও অভিনন্দী (৩০)। তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া আটককৃত আরও ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জনকে সদর মডেল থানায় যাচাই বাছাইয়ের জন্য নেওয়া হয়েছে। তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এছাড়া অপর তিনজনের কাছ থেকে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলেন- আলম চাঁন, পারভীন আক্তার ও আফরিনা ওরফে হাসি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার জিমখানা এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে জিমখানা এলাকার মাদক কারবারী আলম চাঁনকে আটক করা হয়। এছাড়া আলম চাঁন এর নিজ বসতঘর তল্লাশি করে প্রায় দেড় কেজি গাঁজা, ২৫০ মিলি বিদেশি মদ, ৩টি বড় ছোড়া, ১টি স্টীলের চাপাতি, ১টি টেটা, ২টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও অস্ত্র আইনে নিয়মিত মামলা করা হবে। এছাড়া আলম চাঁন এর বিরুদ্ধে সদর থানায় ১০টি মাদক মামলা রয়েছে।
এছাড়া পারভীন আক্তার এর কাছ থেকে ২৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও আফরিনা ওরফে হাসি এর কাছ থেকে ৩৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার সহ তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হবে।
এদিকে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে গাঁজা রাখা ও সেবনের অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে ৫ জনকে সাজা প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টি এম রাহসিন কবির। এদের মধ্যে মো. ফয়সাল ও রিফাতকে ১২ দিন, জুবায়ের ভূইয়া রানাকে ২০ দিন, মো. মোস্তফা হোসেনকে ১৪ দিন এবং অভিনন্দীকে ৭ দিন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মন্তব্য