ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজের জন্য প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নিয়ে এবার নিজেদের উদ্বেগের কথা জানাল ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্ররা। কলেজের ১৮৪ বছরের ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ার করেছে—বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামোর কোনো পরিবর্তন বা সংকোচন যা উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তা তারা মেনে নেবে না। এসব বিষয় ভেবে দেখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার ঢাকা কলেজ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে কলেজটির উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলে। শিক্ষার্থীরা বলেছে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পরবর্তী সময়ে কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ভবিষ্যৎ কী হবে—এই বিষয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এর আগে গত বুধবার ঢাকার এ সাতটি কলেজের কয়েকশ শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে মানববন্ধন করেন এবং ইউজিসি চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। শিক্ষকেরা কলেজগুলোর জন্য প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চান না। তাদের আশঙ্কা, এই কাঠামো বাস্তবায়িত হলে কলেজগুলোর শিক্ষাব্যবস্থা ক্ষতির মুখে পড়বে। শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ কমে যাবে, শিক্ষকদের পদ-পদবি নিয়েও জটিলতা দেখা দেবে। ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে নারীশিক্ষার সুযোগও হুমকির মুখে পড়বে। এ জন্য শিক্ষকেরা বলছেন, সাতটি কলেজ ক্যাম্পাসকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়ার পরিবর্তে পৃথক ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো) স্থাপন করে কলেজগুলোকে এর অধিভুক্ত করা উচিত। যাতে বর্তমান ব্যবস্থা বহাল থাকে। নাম ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ থাকলেও আপত্তি নেই।
অন্যদিকে, প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করতে দ্রুত অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আন্দোলন করে আসা ওই সব কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসব শিক্ষার্থীর দাবি—আজ সোমবারের মধ্যে অধ্যাদেশ জারির বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে, না হলে বড় কর্মসূচিতে যাবে তারা। এ অবস্থায় এখন ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের উদ্বেগ জানিয়েছে। তবে এই ছাত্ররা বলেছে তারা সাত কলেজের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে না।
ঢাকার এই সাত কলেজ একসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছিল। ২০১৭ সালে এগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। সরকারি সাত কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে এই সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সাত কলেজের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনকার মতো প্রতিটি কলেজে সব বিষয় পড়ানো হবে না। সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে (অনুষদের মতো) বিভক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে স্কুল অব সায়েন্সের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাস; স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের জন্য সরকারি বাঙলা কলেজ এবং স্কুল অব বিজনেসের জন্য সরকারি তিতুমীর কলেজ; স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিসের জন্য কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে আর ৬০ শতাংশ ক্লাস হবে সশরীর। তবে সব ধরনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সশরীর।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিজেদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের একজন ছাত্র। এ সময় বেশকিছুসংখ্যক ছাত্র উপস্থিত ছিল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে, সেই বিবেচনায় এই কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরাও অংশীজন। কিন্তু দুঃখর বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো প্রক্রিয়ার কোথাও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম মতামত নেওয়া হয়নি। তারা রাষ্ট্রের এই অযৌক্তিক আচরণের নিন্দা জানায়। ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’–এর স্কুল অব সায়েন্স প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। এটি হলে স্নাতকের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজ নামের প্রতিষ্ঠানের কোনো সংযোগ থাকছে না। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের নামফলকে ঢাকা কলেজ সরিয়ে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখার দাবি করা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা বলে ধরা যায়, যা হবে ঢাকা কলেজের অস্তিত্বের পরিপন্থী। আবার ‘টাইম শেয়ারিং’ মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিকের ক্লাস এবং এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস নেওয়া কতটা বাস্তবসম্মত হবে সেটি নিয়ে তাদের উদ্বেগ আছে। তাদের আশঙ্কা— ভবিষ্যতে যখন উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে, তখন এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক বিলুপ্তির দাবি জানাতে পারে। এছাড়া একই ক্যাম্পাসে দুটি কাঠামো সমস্যাজনক একটি বিষয়। আবার কলেজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর কোন কর্তৃপক্ষের অধীন হবে, তা–ও স্পষ্ট নয়। উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন স্থানে কার্যক্রম পরিচালনায় রাজি নয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার ইউজিসিতে গিয়ে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু ইউজিসি এ বিষয়ে আইনি সীমাবদ্ধতার কথা বলেছে এবং জানিয়েছে এটি তাদের এখতিয়ার–বহির্ভূত। ইউজিসি বিভিন্নভাবে তাদের আশ্বস্ত করেছে। কিন্তু তাতে তারা আশ্বস্ত হতে পারছে না। কারণ, তাদের কথায় কোনো আইনি ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে তারা অভিভাবক হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এসব বিষয় দেখার অনুরোধ জানিয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ পাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তালিকা থেকে তাদের বিকল্প প্রতীক নিতে হবে বলে জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রতীকের তালিকা ভেটিং হয়ে এসেছে। সেই তালিকায় শাপলা প্রতীক নেই, ইসি সচিব জানান।
এ বছর জুলাইয়ে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’কে বিধিমালার তপশিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এর আগে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের গড়া রাজনৈতিক দল এনসিপি নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করে এবং প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ চায়। এনসিপির আবেদনে পছন্দের প্রতীকের তালিকায় শাপলা ছাড়াও ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’ রাখা হয়েছে।
৯ জুলাই নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানান, শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তফসিলভুক্ত করা হবে না মর্মে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, অতীতেও কোনো কোনো দল শাপলা প্রতীক চেয়েছিল, কিন্তু দেওয়া হয়নি। জাতীয় প্রতীক ও জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার্থে আইন আছে। তবে জাতীয় ফুল বা ফলের বিষয়ে আইন করা হয়নি। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তপশিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরা (বডিক্যাম) কেনার প্রস্তাব অনুমোদন কর হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরিকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডিক্যাম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইউএনডিপির মাধ্যমে এসব ক্যামেরা কেনা হবে। এর জন্য কত খরচ হবে তা নিদির্ষ্ট করে না বললেও কয়েকশত কোটি টাকা ব্যায় হবে বলে তিনি জানান।
এর আগে গত ৯ আগষ্ট রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক উচ্চপর্যায়ের সভায় বডি ওর্ন ক্যামেরা কেনা নিয়ে আলোচনা হয়। এর পরের দিন প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে দ্রুত এসব ক্যামেরা কেনার তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরী ও ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ওই সময় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বডিক্যামগুলো দ্রুত ক্রয় ও হাজার হাজার পুলিশ সদস্যের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা (যা সাধারণত বডিক্যাম নামে পরিচিত) সংগ্রহের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই ডিভাইসগুলো হাজার হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করবে।
জয়পুরহাটে সদর উপজেলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভুয়া পরিচয় দেওয়ায় দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার আমদই ইউনিয়নের মাধাইনগর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তাদের কাছ থেকে পুলিশের লোগো সম্বলিত একটি সেফটি ভেস্ট ও হ্যান্ডকাপ উদ্ধার করা হয়েছে।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তামবিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আটকরা হলেন- জয়পুরহাট সদর উপজেলার আমদই ইউনিয়নের মাধাইনগর গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে মশিউর রহমান (৪০) ও জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের দেওগ্রামের মোজাম্মেল মণ্ডলের ছেলে মজনু মণ্ডল (৩৯)।
পুলিশ ও মাধাইনগর বাজারের লোকজন সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার পর মশিউর ও মজনু বাজারে এসে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে লোকজনদের ভয়ভীতি দেখায়। তাদের কাছে পুলিশের লোগো সম্বলিত একটি সেফটি ভেস্ট ও হ্যান্ডকাপ ছিল। তাদের কর্মকাণ্ড সন্দেহ হলে বাজারের লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এ সময় দুইজনই এলোমেলো কথাবার্তা বলতে শুরু করেন এবং ডিবি পুলিশের পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে তাদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
দৈনিক বাংলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে কোটালীপাড়া-গোপালগঞ্জ খালের ঘাঘর মুখে থাকা বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম বিল্লাহ উপস্থিত থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় খালের এই বাঁধ অপসারণ করেন। এসময় কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার হাফিজুর রহমান, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওলিয়ার রহমান হাওলাদার ও বাঁধ স্থাপনকারী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
জানাগেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ১৫ কোটি ৪৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা ব্যয়ে পয়সারহাট-গোপালগঞ্জ খাল খনন শুরু হয় গত বছরের ১ আগস্ট থেকে। কাজের সমাপ্তি হবে ২০২৭ সালের ০৫ সেপ্টেম্বর। আতাউর রহমান খান লিমিটেড নামে বগুড়ার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খালটি খননের লক্ষে ঘাঘর নদীর মোহনায় বাঁধ দেয় এক বছর আগে। বর্ষা মৌসুম থাকায় খাল খননের কাজ এখন বন্ধ থাকলেও বাঁধ অপসারণ না করায় খাল দিয়ে যাতায়াত সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে যায়। খালে বাঁধ থাকায় আসন্ন দুর্গাপূজায় বিজয়াদশমীর দিনে ঘাঘর নদীতে প্রতীমা বির্সজন নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়।
বিষয়টি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর দৈনিক বাংলায় `ঘাঘর নদীর মোহনায় বাঁধ অপসারণের দাবি ‘ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম বিল্লাহ বাঁধটি অপসারনের উদ্যোগ নেন।
উপজেলার তারাশী কর্মকার বাড়ী সর্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপের সভাপতি গোশাই কর্মকার বলেন, বাঁধটি অপসারণ করায় প্রতীমা বিসর্জন নিয়ে আমাদের যে শঙ্কা ছিল তা দূর হয়েছে। এজন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দৈনিক বাংলাকে ধন্যবাদ জানাই।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, খালটিতে বাঁধ থাকার কারনে প্রতীমা বির্সজনে প্রতিবন্ধকতা হতে পারে এই সংবাদ পাওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ অপসারনের ব্যবস্থা করেছি। আসন্ন দুর্গাপূজা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয় সে লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য কোনো আসনে বা কোনো প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সম্প্রতি ‘প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দিচ্ছে বিএনপি’ সংবাদ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। রিজভী জানিয়েছেন, সবুজ সংকেত সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোকে মনগড়া।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান রুহুল কবির রিজভী।
নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তিনি বলেন, ‘বিএনপির মনোনয়নের নামে নাম প্রকাশ করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্ত তৈরির চেষ্টা করছে একটি মহল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। উপযুক্ত সময়েই দলের নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই যাচাই-বাছাই করে যোগ্য ও সর্বোপরি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় প্রার্থীকেই বেছে নিয়ে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে।’
প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে রিজভী বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্ব পার্লামেন্টারি বোর্ড পালন করে এবং এ ব্যাপারে বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়।
তাই তফসিল ঘোষণার পরেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা বিএনপির কেন্দ্র থেকে ঘোষণা ব্যতিত পত্রিকায় প্রকাশিত কোন মনগড়া সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সারা দেশের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. আরাফাত মোল্লা (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে।
নিহত আরাফাত মোল্লা উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কালাম মোল্লার ছেলে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নতুন ব্রিজে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরাফাত রাজবাড়ী জেলা জাকের পার্টি ছাত্রফ্রন্টের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং গোয়ালন্দ ব্লাড ডোনার ক্লাবের সদস্য ও রক্তদাতা ছিলেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১১টার দিকে আরাফাত মোটরসাইকেল যোগে উপজেলার মাখন রায়ের পাড়া এলাকায় নতুন ব্রিজ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেলে তার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে হলে আরাফাতের মাথা ও দেহ নতুন ব্রিজের রেলিং এর সাথে সজোড়ে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হয়। এসময় স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে, পরে সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসাপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় তার মরদেহ নিজ বাড়িতে আনা হয়। পরে বিকাল ৩টার দিকে বাড়ির পাশে পূর্ব তেনাপঁচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাযা নামাজ শেষে কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি তদন্ত মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল দুটি থানায় রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।
এদিকে, আরাফাত মোল্লার মৃত্যুতে জাকের পার্টির জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মী ও গোয়ালন্দ ব্লাড ডোনার ক্লাবের সদস্যসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে সবাই শোক জানিয়েছে।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকায় মারা যায় জয়ন্তী মন্ডল (৩৩) এবং সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জয়ন্তী মন্ডলের মেয়ে প্রতিভা মন্ডল (৩)।
তারা রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বাঘুটিয়া গ্রামের সমির মন্ডলের স্ত্রী জয়ন্তী মন্ডল ও তার মেয়ে প্রতিভা মন্ডল।
জয়ন্তী মন্ডলের ভাতিজা বিপুল মন্ডল বলেন, সমির মন্ডল স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। সেখান থেকে গত বুধবার জ্বরে আক্রান্ত হয় জয়ন্তী মন্ডল ও তার মেয়ে প্রতিভা মন্ডল। অসুস্থ অবস্থায় তাদের ঢাকার মহাখালি আয়েশা মেমোরিয়াল স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকালে জয়ন্তী মন্ডল মারা যান। একদিন পর সোমবার সন্ধ্যায় তার কন্যা প্রতিভা মন্ডল মারা যায়।
তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাসুদ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি।জয়ন্তী মন্ডল ও তার কন্যা প্রতিভা মন্ডল ঢাকাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
মন্তব্য