নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ২১নং দক্ষিণবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিকান্ত সরকার দীপকের নানা অনিয়ম, স্কুলে অনুপস্থিত, শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সাথে দুর্ব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে তার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।
রোববার উপজেলার দক্ষিণবাগ এলাকায় বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে শতাধিক অভিভাবক ও স্থানীয়রা এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিকান্ত সরকার দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছেন, অনিয়মের মাধ্যমে স্কুলকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছেন, এবং সংবাদ প্রকাশ করতে গেলে সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছিত করছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৫ জুলাই দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধি নাজমুল হোসেনকে প্রকাশ্যে গালিগালাজ ও হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক হরিকান্ত সরকার। এ সময় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত হয়ে ওই শিক্ষক সাংবাদিককে ‘বেয়াদবের বাচ্চা’ বলে গালি দেন এবং মারধরের হুমকি দেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, হরিকান্ত সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তারা দ্রুত তার অপসারণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা হুঁশিয়ার দিয়ে আরও বলেন, দ্রুত প্রধান শিক্ষকের অপসারণ না করা হলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আরও কঠোর অবস্থান নেবেন।
ফেনীতে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সংগঠনের বার্ষিক হিসাব উপস্থাপন করা হয় এবং জেলায় কর্মরত ডিপ্লোমা কৃষিবিদরা তাদের পেশাগত বিভিন্ন সমস্যা সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে তুলে ধরেন। গত শনিবার বিকালে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন ফেনী জেলা শাখার আয়োজনে ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিতি ছিলেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সভাপতি মো. জিয়াউল হায়দার পলাশ। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মহাসচিব সৈয়দ জাহীদ হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (ডিকেআইবি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির (চট্টগ্রাম বিভাগ) সহসভাপতি মো. শামছুল আলম, ডিকেআইবি (চট্টগ্রাম অঞ্চল) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, ডিকেআইবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি হাবিবুর রহমান, ডিকেআইবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কাউছার।
বাংলাদেশ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন ফেনী জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আবু তৈয়বের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ছালেহ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সোনাগাজী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আজমীর হোসেন, দাগনভূঞা উপজেলা সদস্য সাইফুল ইসলাম, ফেনী সদর উপজেলা সদস্য মাহমুদুল করিম, পরশুরাম উপজেলা সভাপতি দেবাঞ্জন বনিক, ছাগলনাইয়া উপজেলা সভাপতি রনি মজুমদার, ফুলগাজী উপজেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সোনাগাজী উপজেলা সিনিয়র সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম পাটোয়ারী, দাগনভূঞা উপজেলা সহসভাপতি এমদাদুল হক, ফেনী সদর সাধারণ সম্পাদক সেলিনা বেগমসহ ডিকেআইবির বিভিন্ন উপজেলা নেতারা, জেলা কমিটির নেতারা, অঞ্চল কমিটির নেতারা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
বার্ষিক সাধারণ সভায় বন্যা পরবর্তী ফেনী জেলায় কৃষিকাজের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কর্মপরিবেশ বজায় রাখা, ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদানে জটিলতা নিরসন, দশম গ্রেড গেজেটেড পদমর্যাদা প্রদান, ৩ বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমাধারী, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দশম গ্রেড প্রাপ্যতার জটিলতা নিরসন, নিজ জেলায় পদায়নসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এ সময় সংগঠনের অন্যান্য সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আজকে (শনিবার) অনেকেই বলছেন পিআর ছাড়া নাকি নির্বাচন হবে না? পিআর ছাড়া নাকি শাসক স্বৈরাচার হয়ে যাবে। আমার জানতে ইচ্ছে করে সংবিধানে কোথাও কি স্বৈরাচার হওয়ার কথা লিখা ছিল। সংবিধানের তো কোনো দোষ নেই, দোষ হচ্ছে যারা রাতের ভোট দিনে করেছেন। যারা বিনাভোটে নির্বাচন করেছেন। দেশটাকে নিজেদের পৈতিক সম্পত্তির মতো ব্যবহারের চেষ্টা করেছেন। দোষ তো তাদের। দোষ তো সংবিধানরে নয়।
গত শনিবার বিকালে মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমিতে পৌর বিএনপির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পিআর চান, খুব ভালো কথা। পিআরের কথা বলে জনগণের কাছে যান। জনগণকে বোঝান, জনগণ মেনে নিলে আলহামদুলিল্লাহ। জনগণ যে রায় দেবে, তা সবাই মেনে নেবে। বর্তমানে আলোচনা চলা অবস্থায়, ঐকমত্য কমিশন সবার সঙ্গে কথা বলেছে, ওই সময় আপনারা রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে চলে গেলেন। আপনারা কী চান, সংঘাতের দিকে কি যেতে চান। আলোচনার টেবিলকে কি অবিশ্বাস করতে চান। নাকি অন্য কিছু চান। নির্বাচন পিছিয়ে যাক সেটি চান?
মৌলভীবাজার পৌর বিএনিপির আহ্বায়ক সৈয়দ মমসাদ আহমদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন। সম্মেলনে জেলা ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের ফুরোমন পাড়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত এলজিআইসির আওতায় গ্র্যাভিটি ফ্লো সিস্টেম (GFS) ভিত্তিক রাঙামাটিতে সৌরচালিত ভূপৃষ্ঠস্থ পানি পরিশোধন ও সররাহ ব্যবস্থার উদ্বোধন করা হয়েছে। গত শনিবার এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. মোবারক হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আসমা।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন এলজিইডি রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রকৌশলী প্রণব রায় চৌধুরী এবং রাঙামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সুব্রত বড়ুয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুল্লাহ বলেন,‘বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গ্রামীণ জনগণের জন্য টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এই সৌরচালিত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা শুধু বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পূরণ করবে না, বরং স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সময় সাশ্রয় ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় জনগণকে এই প্রকল্পের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও সচেতনভাবে ব্যবহার করতে হবে।’
উল্লেখ্য, প্রকল্পটির মোট ধারণক্ষমতা ১০ হাজার লিটার। এর মধ্যে ৫ হাজার লিটার সুপেয় পানি এবং ৫ হাজার লিটার দৈনিক ব্যবহারযোগ্য পানি। এতে ১২টি ট্যাপ স্ট্যান্ডের মাধ্যমে ৪৫টি পরিবারসহ প্রায় ১৮৬ জন মানুষ উপকৃত হবেন।
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা তিনটি পৃথক মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আরো ৯ জন।
মামলা তিনটিতে অভিযুক্তের তালিকায় আরো আছেন, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
আজ ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে পৃথক তিন মামলায় তারা সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য শেষে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
এর মধ্যে শেখ রেহানা, শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন চারজন। তারা হলেন, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের নির্বাহী মহা-ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফরহাদুজ্জামান, অপারেটিভ ডাইরেক্টর শেখ শমসের আলী, অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ হিমেল চন্দ্র দাস এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্তার জাহান।
আজমিনা সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন চারজন। তারা হলেন, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের নির্বাহী মহা-ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফরহাদুজ্জামান, অপারেটিভ ডাইরেক্টর শেখ শমসের আলী, অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ হিমেল চন্দ্র দাস এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্তার জাহান।
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্তার জাহান।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ সালাম বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ রেহানার বিরুদ্ধে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন।
মামলায় টিউলিপ, রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়।
আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে একই দিনে অপর একটি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
একই অভিযোগে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একই দিন অন্য একটি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
ঢাকার কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া-কামরাঙ্গীরচর ঘাট। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত অবধি হাজারো মানুষ এখানে ভিড় করেন নদী পারাপারের জন্য। বুড়িগঙ্গার মতো বিশাল নদীতে আশপাশের ১০/১৫ কিলোমিটার এলাকায় নেই কোনো ব্রিজ। এই এলাকায় চলাচলে একমাত্র ভরসা নৌকা। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। মাঝেমধ্যেই বালুবাহী বালহেটের সঙ্গে নৌকার সংঘর্ষে ঘটে প্রাণহানির ঘটনাও। অথচ দীর্ঘ ৫৪ বছরেও এখানে স্থায়ী ব্রিজ হয়নি।
দুই পাড়ের অনেকে কম বেতনে চাকরি করতে। স্কুল-কলেজে পড়তে যায় এলাকার ছেলে-মেয়েরা। কিন্তু গরীব মানুষের অর্ধেক টাকাই খরচ হয়ে যায় নদী পারাপারেই। শুধু তাই নয়, প্রতিদিনই ইজারাদারদের সঙ্গে যাত্রীদের ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকে। যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, ইজারাদাররা ভাড়া নিয়ে টানাহেঁচড়া করে, বাজে ব্যবহার করে, এমনকি অনেক সময় হয়রানির শিকারও হতে হয়।অথচ তারা নামমাত্র মূল্যে ঘাটের ইজারা নেয়।
খোলামোড়ার তরুণ আরিফ বলেন, ব্রিজ হবে শুনে বড় হয়েছি, কিন্তু পাইনি। প্রতিদিন নদী পার হয়ে স্কুল-কলেজে যেতে যে কষ্ট, তা ভাষায় বোঝানো যায় না। তাছাড়া ইজারাদারদের ব্যবহার খুবই খারাপ। ৫/ ৭ বছরের বাচ্চাদেরও ইজারার টাকা ছাড়া বের হতে দেয়না। ব্রিজটা খুবই জরুরি।
গৃহবধূ সাদিয়া অফরিন বলেন, এক পাশে বাবার অন্য পাশে শ্বশুরবাড়ী, যাতায়াতের সময় তিন বাচ্চাকে নিয়ে নৌকায় উঠতে বুক কাঁপে। কখন যে দুর্ঘটনা ঘটে বলা যায় না। তার ওপর ইজারাদারদের খামখেয়ালি আচরণে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নৌকায় মালামাল আনা-নেওয়া করতে গিয়ে কত ক্ষতি হয়েছে। দুর্ঘটনায় মানুষ মরেছে, মালামাল নষ্ট হয়েছে। ব্রিজ হলে শুধু যোগাযোগই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যও এগিয়ে যাবে। কিন্তু এত বছরেও হয়নি।
কেরানীগঞ্জের সাবেক এমপি আমান উল্লাহ আমান জানান, বাবুবাজার ব্রিজ, বসিলা ব্রিজ আমরাই করেছি, এটাও আমরাই করব। বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবার আগে খোলামোড়া-কামরাঙ্গীরচর ব্রিজ হবে।
স্থানীয়রা মনে করেন, পোস্তগোলা, বাবুবাজার ও বসিলা ব্রিজ কেরানীগঞ্জের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এবং নবাবগঞ্জ, দোহার, মুন্সীগঞ্জসহ দক্ষিণবঙ্গের ১০/১২টি জেলার রাজধানীতে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই নতুন একটি স্থায়ী ব্রিজ সময়ের দাবি।
খোলামোড়া ও কামরাঙ্গীরচরের দুই পাড়ের কয়েক লাখ মানুষের একটাই প্রশ্ন—আসলেই কি হবে এই ব্রিজ? আর না হলে বাধাটা কোথায়? প্রতিশ্রুতি নয়, তারা এখন দেখতে চান বাস্তবায়ন।
কৃষি নির্ভর মেহেরপুর জেলার প্রান কেন্দ্র বাণিজ্যিক এলাকা বামন্দী ইউনিয়নে একত্রিশ বছর পূর্বে স্থাপন করা হয় গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপকেন্দ্র পশু হাসপাতাল।
এই এলাটিতেই অবস্থিত খুলনা বিভাগের ঐতিহ্যবাহী বামন্দী পশুহাট। যেখানে বিভাগের কয়েকটি জেলার হাজার পশুপালনকারি খামারি ও ব্যবসায়ীদের আনাগোনা এই বামন্দীতে।
এসব দিক বিবেচনা করেই ১৯৯১-১৯৯২ সালের দিকে নির্মাণ করা এই গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপকেন্দ্র পশু হাসপাতাল। এটি নির্মাণের ঠিক তিন থেকে চার বছর পরই বন্ধ হয়ে যায় উপকেন্দ্রটি।
এরপর থেকে তিন দশক ধরে এভাবেই পড়ে রয়েছে হাসপাতালটি। এর মধ্যে দেখা মেলেনি কোনো প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তার। উপায় না পেয়ে পশুর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য যেতে হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে। এতে একদিকে যেমন বেড়ে যায় ব্যয়, তেমনি বাড়ে কষ্ট।
আর বতর্মান চিত্র আরো ভয়াবহ, হাসপাতালটির প্রবেশ পথের সামনে রাখা হয়েছে বালুর স্তূপ। এখানে সারাদিন ধরে বালির ব্যবসা, আর রাতে পরিনত হয় মাদকসেবীদের আকড়া।
স্থানীয় খামারিদের দাবি, দ্রুত এই পশু হাসপাতালটি চালু করা হোক, কর্তৃপক্ষের কাছে এটিই চাওয়া।
বামন্দী পশুহাট মালিকদের দাবি, জেলার সবচেয়ে বেশি ভ্যাট দিয়ে থাকে বামন্দী পশুহাট কর্তৃপক্ষ। তাই এই পশু হাসপাতালটি চালু করা খুব দরকার।
এদিকে গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে বলা হয়েছে, অতিদ্রুতই-এর কাগজপত্র প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
স্থানীয় জনি আহমেদ বলেন, আমার বয়স পঁচিশ বছরের মতো হবে। আমি জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে আছে। এত দিন ধরে পড়ে থাকার কারণে পশু হাসপাতালটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু দাঁড়িয়ে আছে ঘরটি। হারিয়ে গেছে পশু চিকিৎসার সরঞ্জাম ও দরজা-জানালা।
মানুষ এখন এটির সামনে বালি রেখে ব্যবসা করে এটিকে বালির ঘাট বানিয়ে ফেলেছে। তবে দ্রুত এ ঘরটি সংস্কার করে নতুনভাবে চালু করা হোক।
বামন্দী ব্যবসায়ীক সমিতির সভাপতি ও ঐতিহ্যবাহী বামন্দী পশুহাট ইজারাদার মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে একেবারে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। তাই আমাদের জোর দাবি, এই পশু হাসপাতালটি চালু করা হোক।
আমরা এই হাটটি থেকে বছরে জেলার সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদান করে থাকি। আমাদের শুক্র ও সোমবার এই দুদিন হাটে ৮ থেকে ১০ হাজার পিস গরু ছাগল আমদানি হয়ে থাকে। এই পশু যেকোনো সময় অসুস্থ হতে পারে। পশু হাসপাতালটি চালু হলে খামারি ও ব্যবসায়ীরা অনেক উপকৃত হবে। কেননা খামারিদের পশু অসুস্থ হলে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য উপজেলায় যেতে হয়। এটা অত্যন্ত কষ্টকর।
খামারি আ. জাব্বার বলেন, আমরা খামারে গরু পালন করি আর পশু অসুস্থ হলে দশ কিলোমিটার দূরে উপজেলা প্রাণিসম্পদে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। আর আমাদের বামন্দী পশু হাসপাতালের ডাক্তার ডেকে আনতে গেলে টাকা দিয়ে নিয়ে আসা লাগে। তাই এই হাসপাতালটি চালু হলে আমরা গরু চাষিরা অনেক উপকৃত হবো।
স্থানীয় পশু চিকিৎসক ইউসুফ আলী বলেন স্থানীয় গবাদিপশু পালনকারিদের কথা ভেবে, আমিসহ আরও কিছু লোক টাকাপয়সা তুলে এই জমি ক্রয় করেছিলাম। পরে উপজেলা পরিষদের টাকা দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল। আমিও চাই পশু হাসপাতালটি আবার চালু করা হোক।
গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মোত্তালেব আলী বলেন, বামন্দীর উপকেন্দ্র পশু হাসপাতালটি ১৯৯০ অথবা ১৯৯১ সালের দিকে নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ ৩১ বছর পড়ে থাকায় নানা সমস্যায় জর্জরিত উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসের উপকেন্দ্রটি। এটি বামন্দী ইউনিয়নে অবস্থিত। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পশু হাসপাতালটি নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
মোত্তালেব আলী আরও বলেন, বিষয়টি জানার পরই আমরা সরেজমিনে পরিদর্শনও করেছি। সেখানে তিনটি রুম বিশিষ্ট ঘর ছাড়া আর অবশিষ্ট কিছুই নেই। কোনো জানালা, দরজা বা চিকিৎসার সরঞ্জাম দেখতে পাইনি। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিভিন্ন দপ্তরে যেতে হচ্ছে।
মন্তব্য