প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী এবং ধর্ম, মত বা অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে কাউকে কোনোভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। পুরো জাতি একটি পরিবার। পরিবারের ভেতরে মতভেদ থাকতে পারে, ব্যবহারের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু পরিবার একটি অটুট জিনিস—এটাকে কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা যেন জাতি হিসেবে এই অটুট পরিবার হয়ে দাঁড়াতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
আজ রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। এর আগে তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যত ধর্মীয় পার্থক্য থাকুক, মতের পার্থক্য থাকুক, রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই বৈষম্য করার। রাষ্ট্র দায়িত্ববদ্ধ সবাইকে সমান মর্যাদা দেওয়ার জন্য। সে যেই ধর্মেই বিশ্বাস করুক, যে মতবাদেই বিশ্বাস করুক, ধনী হোক কিংবা গরিব—রাষ্ট্রের কাছে সে একজন নাগরিক। নাগরিকের সকল অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র আমাদের তালিকা করে দিয়েছে আমার প্রাপ্য কী। কোনো সরকারের অধিকার নেই কাউকে বঞ্চিত করার, সামান্যতম পরিমাণেও নয়। আমরা নাগরিক—আমাদের প্রতি কোনো রকম বৈষম্য করা যাবে না। এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সবসময় সোচ্চার থাকতে হবে।’
নাগরিক অধিকার প্রসঙ্গে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যত কথাই বলুন, তার মধ্যে বারে বারে বলুন—আমি এ দেশের নাগরিক, আমার সংবিধান প্রদত্ত সকল অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তখন দেখবেন সবাই আপনাদের সঙ্গী হবে। সারা দেশের মানুষ একসঙ্গে থাকবে, কারণ সবার সমস্যাই একই—নিজের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।’
নাগরিক অধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা বারবার লাঞ্ছিত হই, অপমানিত হই, নানা বৈষম্যের শিকার হই। কেন? কারণ নাগরিক অধিকারের প্রশ্নে আমরা হতাশ হয়ে গেছি। এখন আর হতাশ হওয়া চলবে না। নতুন বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো—সবার নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা।’
প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই না নিরাপত্তা বাহিনীর ঘেরাটোপে থেকে ধর্ম পালন করতে। আমরা চাই নাগরিক হিসেবে মুক্তভাবে যার যার ধর্ম পালন করতে। এ অধিকার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ভূমিকা পালন করছে, আমরা এজন্য কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের ধর্মীয় উৎসব পালনে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ঘেরাটোপের প্রয়োজন হবে না।’
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তার ব্যক্তিগত অনুভূতির কথাও ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এবার হয়তো আমাকে এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা হবে। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। আমি বললাম, যাবই। এই আনন্দ থেকে আমি নিজেকে দূরে রাখতে চাইনি। যদিও শারদীয় দুর্গাপূজার সময়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে সরকার প্রধান হিসেবে আমাকে থাকতে হবে, তাই আমি আগেভাগে এসেছি আপনাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতবার যখন এখানে এসেছিলাম, তখনও বলেছিলাম—আমরা সবাই একটি পরিবার। পারিবারিক মতভেদ থাকবেই, কিন্তু পরিবার ভাঙবে না।’
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড.আ ফ ম খালিদ হোসেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দে প্রমূখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
মধুপুরের প্রধান অর্থকরি ফসল হিসেবে আনারস কলার পরেই পেঁপে তৃতীয় স্থান দখল করে নিয়েছে। এক সময় আনারস ছিল প্রধান অর্থকরি ফসলের তালিকায় সেরা।
কলার পরেই এখন পেঁপে। পেঁপে দীর্ঘদিন চাষাবাদ হলেও অন্যান্য ফসলকে টপকাতে
পারেনি। উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁপের বীজ বাজারে আসার পরেই সূচক এগিয়ে যায়। এক লাফেই এগিয়ে যায় কয়েকধাপ।এখন চাষিরা মনে করছে কলাকে পিছনে ফেলে যেতে পারে পেঁপে চাষ। কারণ হিসেবে কৃষকরা মনে করছে পেঁপে নানাভাবে আবাদ করা যায়।
একক ফসল হিসেবেও চাষে ফলন ও দামে কোন প্রভাব পড়ে না। অল্প সময়ে কম খরচে কয়েকগুণ লাভ আসে। রোগ জীবাণু কম হওয়ায় ফলন হয় বেশি। কেজি দামে বিক্রির সুযোগ থাকায় ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনাটাও কমে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে সবজি হিসেবে বাজারে ভালো দাম আসে। সব দিক চিন্তা করে লাল মাটির মধুপুর গড় অঞ্চলে উচ্চ ফলনশীল জাতের থাই টপলেডি পেঁপে কৃষকের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা দখল করে দিচ্ছে অধিক লাভ। সবুজ হলুদ রংয়ের পেঁপেতে কৃষকরা হচ্ছে লাল। রঙিন স্বাবলম্বী জীবনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে কৃষি ও কৃষক এমনটাই জানিয়েছে কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, চলছি মৌসুমে ১ হাজার ৫৬ হেক্টর জমি পেঁপে চাষ হয়েছে।
উন্নত হাতের পেঁপে এ সময়ে জনপ্রিয়তা লাভ করছে।ফলে স্থানীয় অর্থনীতির চাকাকে বেগবান করছে। লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
সরজমিনে মধুপুরের ২৫ মাইল বাজার থেকে দোখলা সড়ক দিয়ে এগিয়ে গেলে চোখে পড়ে আনারসের বাগানে থোকায় থোকায় গাছে ঝুলে থাকা পেপে দৃশ্য।
গাছাবাড়ি বিট অফিসের সামনেই বড় বড় পেঁপের বাগান। সবজু গাছে গাছে গোড়া থেকে আগ পর্যন্ত পেঁপে আর পেঁপে।
গাছাবাড়ি গ্রামের গিয়ে কথা আব্দুল হক নামের এক কৃষকের সাথে। গাছাবাড়ি গ্রামের আব্দুল হক (৫০) জানান, সে এ বছর ৩২ বিঘা জমিতে আনারস চাষ করেছে। সাথে মিশ্র ফসল হিসেবে টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছে।
পেঁপে পরিপক্ব হয়ে গেছে। শুধু বাগান থেকেই পেঁপেই বিক্রি করেছে প্রায় কোটি টাকার উপরে। সামনে বছর আনারস বিক্রি করবে। বাড়তি ফসল থেকে এ বছর কোটি টাকার উপরে পেয়েছে পেঁপে থেকেই।
আরেক গ্রামের শাজাহান আলী, এ বছর ২৪ বিঘা জমিতে আনারসের সাথে সাথী হিসেবে আদা পেঁপে কচু চাষ করেছে। মফিজ উদ্দিন (৪৮) সে তার ৩২ বিঘা জমিতে মিশ্র ফসল চাষ করেছে। আনারসের সাথে পেঁপে চাষ করেছে। তাদের মতো মধুপুরের অনেক কৃষক বাণিজ্যিক ভাবে পেঁপে চাষ করেছে। আবহাওয়া ও ফলন দাম ভালো পাচ্ছে। তাদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
সামনে এগিয়ে গেলেই দেখা যায় ২৫ মাইল- শোলাকুড়ি পাকা সড়কের পাশে বসে কয়েকজন শ্রমিক বসে বসে খবরের কাগজ দিয়ে পাকা পেপে মোড়াচ্ছ। পাশেই বাগান। কেউ কেউ বাগান থেকে খাচি দিয়ে পাকা পেঁপে নিয়ে আসছে। কেউ কেটে দিচ্ছে। হাগুড়াকুড়ি গ্রামের শাকিব (৩০) জানালেন তারা পাইকার মোফাজ্জলের কেনা পেঁপের বাগানে নিয়মতি কাজ করে। নটাকুড়ি গ্রামের আব্দুল হাকিম (৩২) জানান, খবরের কাগজ দিয়ে মোড়ালে পেঁপেগুলো ভালো থাকে, নষ্ট হয় না। শোলাকুড়ি গ্রামের মফিজুল জানালেন,তাদের ব্যাপারী প্রায় চার কোটি টাকার পেঁপের বাগান কিনেছে।এভাবে পেপারে মুড়িয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের
বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছে। ৬০-৯০ টাকা কেজি দামে মোকামে বিক্রি হয়ে থাকে বলে জানালেন তারা।
তবে শুধু এখানেই নয় এমন দৃশ্য এখন মধুপুর গড়ের বিভিন্ন গ্রামেই দেখা যায়।
কৃষক পাইকার ব্যাপারী ফড়িয়া ট্রাক শ্রমিক লেবারদের ব্যস্ত সময় পার করছে বলেও জানালেন স্থানীয় কৃষকরা।
লাল মাটির গড় অঞ্চল কৃষি ফসল চাষের জন্য উর্বর এলাকা। বর্তমান ব্যাগিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফলে পেঁপে নষ্ট হয় না, ভালো ফলন ও সুফল পাচ্ছে কৃষকরা।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রকিব আল রানা বলেন, মধুপুরের মাটি ও আবহাওয়া সব ফসলের জন্যই বিশেষ উপযোগী। আনারস কলার পাশাপাশি অর্থকরী ফসলের মধ্যে পেঁপে এগিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকি কম এবং লাভ বেশির কারণে সাথী ফসল হিসেবে পেঁপে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। তিনি বলেন, উন্নত জাতের টপ লেডি, রেড লেডি, সুইট লেডি আবাদের ফলে আর্থিক লাভ বেশি পাচ্ছে। এ বছর ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার পেঁপের বাণিজ্যের সম্ভাবনার কথা জানান তিনি।
চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চলা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষী জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, দ্রুত সময়ে ন্যায়বিচার পাবো।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম আজ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন সরকারের যে নৃশংসতা ছাত্র-জনতার ওপর হয়েছিল, অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম দাবি ছিল এই বিচার প্রক্রিয়া যাতে যথাসময়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয়। আমরা আশা করছি যে দ্রুত সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার পাবো। শেখ হাসিনার এ মামলায় হয়তো আমি শেষ সাক্ষী। আমার সাক্ষ্য নেওয়ার পর এ মামলা রায়ের দিকে যাবে।’
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, তবে শুধু এই মামলাটিই নয়, সারা দেশে আরও নির্যাতন, নিপিড়ন, গুম-খুন হয়েছিল তার অনেক মামলা রয়েছে। ফলে এ বিচারপ্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ সময় চলবে। নির্বাচনের পরেও যাতে এ বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না হয়, বিচারপ্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে, সেই প্রতিশ্রুতির জন্য একটা রোডম্যাপের দাবি জানিয়েছি। সকল রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে যেন সেই প্রতিশ্রুতি থাকে এটাই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।
এদিকে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামীম বলেন, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ না হওয়ায় আজকে নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে না। আশা করি আগামীকাল নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি ট্রাইব্যুনাল গ্রহণ করবেন।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই মামলার ৪৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীতে এই মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ সব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ওয়েস্টিন পারনাস হোটেলে আজ থেকে ০৩(তিন) দিনব্যাপী (১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কো-অপারেশন কনফারেন্স (জিআইসিসি)-২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে সেতু সচিব সেতু বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেতু সচিব প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্পে কোরিয়ান ইডিসিএফ/ইডিপিএফ (EDCF/EDPF) অর্থানয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
জিআইসিসি-২০২৫ সম্মেলনের লক্ষ্য কোরিয়ান নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের প্রকল্প বাস্থবায়নকারীদের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি মূলত একটি বিজনেস-টু-বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো বিদেশী সরকার, প্রজেক্ট ডেভেলপার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সম্মেলনে প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ৩০টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির কর্মকর্তারা রয়েছেন।
এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো: বিভিন্ন দেশের আসন্ন অবকাঠামো প্রজেক্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, নতুন প্রজেক্টে অংশগ্রহণের জন্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কোরিয়ান উন্নত প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট সিটি, হাই-স্পিড রেল, এবং স্মার্ট পোর্ট সিস্টেমের সাথে পরিচিতি করা।
এছাড়াও সম্মেলনের বাকী অংশে বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট ব্রিফিং, ব্যক্তিগত বিজনেস মিটিং, কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২ দিনব্যাপী ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ১ম বর্ষ শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয়ভাবে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর ‘ফ্রেশার্স রিসিপশন-২৫’ নামে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রথমদিনে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ এবং দ্বিতীয় দিনে দার্শনিক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান উপস্থিত থাকবেন।
মঙ্গলবার ফ্রেশার্স রিসিপশন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি ও অধ্যাপক ড. আ.ব.ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, প্রথম দিনে (২০ সেপ্টেম্বর) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, আইন অনুষদ ও বিজ্ঞানভুক্ত তিন অনুষদের নবীন শিক্ষার্থীদের এবং ২১ সেপ্টেম্বর থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, কলা অনুষদ ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি ইউনিটে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান করা হবে এবং সকল নবীনদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে থাকছেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো. তানজীম উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
এ সময় ফ্রেশার্স রিসিপশন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি জানান, ‘আমাদের আয়োজন সম্পন্ন, আমরা চমৎকার একটা অনুষ্ঠান উপহার দিব। ইতোমধ্যে ১ টি সেন্ট্রাল কমিটির অধীনে ৬ টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের সরসপুর গ্রামের ‘ছায়া নীড় সেবাকেন্দ্রে’ আশ্রিত ঠিকানাহীন এক বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনকে আসামি হিসেবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক পারভীন আক্তার। ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পারভীন আক্তার অভিযোগ করেন প্রায় আট মাস ধরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার ও কাপাসিয়া থানার ওসির কাছে ধর্ণা দিয়েও এ বিষয়ে কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না।
পারভীন আক্তার জানান, গত বছরের ডিসেম্বরের ১২ তারিখ সন্ধ্যার পর তিনি ওই প্রতিবন্ধী যুবতীকে রাতের ভাত রান্না হয়েছে কিনা তা দেখতে পার্শ্ববর্তী রান্নাঘরে পাঠানোর পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সে ঘরে ফিরে আসেনি। এ সময় তিনি রান্নাঘরে গিয়ে তাকে খুঁজে পাননি। এ সময় আশপাশের বাসা বাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজারে খোজ নিয়েও তার কোনো সন্ধান পাননি। দুদিন পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী তরুল গ্রামের কাজলের স্ত্রী নামে একজন ফোনে তাকে ওই মেয়েটি তাদের বাড়িতে আছে বলে জানান। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি তার প্রতিবেশি দেবর ও তার আশ্রমে কর্মরত দিনমজুর মোশারফ হোসেনকে ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে আশ্রমে নিয়ে আসার জন্য পাঠান।
পরে আশ্রমে নিয়ে এসে নিখোঁজের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই মেয়েটি জানায়, তরুল গ্রামের শামসুল হকের ছেলে সিয়াম (১৯), নাজিমউদ্দিনের ছেলে খোকন মিয়া (২৫) ও কামাল হোসেনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩০) ওই রাতে তাকে রান্নাঘরের পাশ থেকে জোর করে তুলে নিয়ে সিয়ামদের বাড়ির পাশে একটি ভাঙ্গা ঘরে নিয়ে যায় এবং দুই রাতে তারা তিনজন পালাক্রমে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ বিষয়ে তিনি কাপাসিয়া থানায় ওই তিনজনের নামে একটি মামলা করলে পুলিশ সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে এবং বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।
কিন্তু পরে ওই প্রতিবন্ধী তার আশ্রমের এক সাথীর কাছে জানায়, মোশারফ হোসেন আশ্রমে নিয়ে আসার সময় এক জঙ্গলে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে এ কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেছিল। এবং বিষয়টি প্রকাশ হলে তাকে মেরেও ফেলার হুমকি দিয়েছিল। এ বিষয়টি জানতে পেরে তিনি থানা পলিশকে মোশারফের নাম আসামিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করলেও তার কথা আমলে নিচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে হাজির হয়ে বিষয়টি জানালে তিনি থানায় ফোন করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। অভিযুক্ত মোশারফ পার্শ্ববর্তী কড়িহাতা ইউনিয়নের পাকিয়াব গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনের মোবাইল নম্বারে একাধিকবার কল দিয়েও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কাপাসিয়া থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এ মামলাটি তিনি কাপাসিয়া থানায় যোগদানের অনেক আগেই হয়েছে। একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ মামলার বাদি যদি আর কোনো আসামি অর্ন্তভুক্ত করার আবেদন জানান, তবে আইনগতভাবে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নির্বাচিত সরকার না থাকলে দেশের অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্য আসবে না। তাই অতি দ্রুত দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় ভৈরব কেবি মডেল পাইলট হাই স্কুল প্রাঙ্গণে ভৈরবে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক সাধারণ সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন।
এ সময় ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভৈরব বাজার থেকে মেন্দিপুর পর্যন্ত মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি পূর্বাঞ্চলকে ইকোনমিক জোন ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, মাদক ও ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের পাশাপাশি এলাকার প্রবীণ ও যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাধারণ সভার আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করেন, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক শবনম শারমিন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।
এছাড়া ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ জাহিদুল হক জাবেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.এইচ.এম আজিমুল হক, ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশন সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, চেম্বার সদস্য ও ভৈরব উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি মো. মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল কোরআন তেলাওয়াত। স্বাগত বক্তব্য, বিগত সভার প্রস্তাব পাঠ ও অনুমোদন, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাৎসরিক নিরীক্ষিত অডিট রিপোর্ট আলোচনা ও অনুমোদন, সম্মানিত চেম্বার সদস্যবৃন্দদের সাধারণ আলোচনা ও উন্নয়ন প্রস্তাব, চেম্বারের সকল সম্মানিত সদস্যদের সম্মানে সম্মাননা স্মারক প্রদান, সেরা করদাতা, নারী উদোক্তাদের সম্মাননা প্রদান ও মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে ।
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে গত এক মাস ধরে অবস্থান করছে একদল বন্যহাতি। ১৭ সদস্যের এই হাতির দলে সম্প্রতি দুটি নতুন শাবকেরও জন্ম হয়েছে। তবে এদের তাণ্ডবে বাগানের শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, চা গাছপালা এবং বাগানের ভেতরের কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বাগানের ২ নম্বর সেকশনে বসবাসকারী বহু শ্রমিক ইতিমধ্যেই বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী জানান, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এ সময় তিনি, তার স্ত্রী ও সন্তানরা কোনোমতে ঘর থেকে পালিয়ে ইঞ্জিনচালিত বোটে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, ‘মঙ্গলবার গভীর রাতে হাতির গর্জন শুনতে পাই। হঠাৎ একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা করে ভেতরে ঢুকতে চাইছিল। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে কোনোমতে ঘরের পেছন দিয়ে বের হয়ে বোটে উঠে এপারে চলে আসি।’
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা জানান, প্রায় প্রতিদিনই হাতির দল বাগানে হানা দিচ্ছে। কখনো পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ করেই আবার বাগানে নেমে এসে গাছপালা ও বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে শ্রমিকরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, ‘হাতিরা শান্তিপ্রিয় প্রাণী। তারা নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। বাদ্য-বাজনা, বাঁশির সুর কিংবা উচ্চ শব্দ তারা সহ্য করতে পারে না। গত সোমবার শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশি বাজানো হলে হাতির দল চা বাগান ছেড়ে গভীর বাঁশবনে চলে যায়।’
এ বিষয়ে কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, ‘দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার কারণে তারা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তাই আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল সংরক্ষণ করা।’
মন্তব্য