মৌলভীবাজারে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের আয়োজনে ‘গণমাধ্যমে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধ এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন’ শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মৌলভীবাজার সার্কিট হাউজ কনফারেন্স রুমে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিনা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম। তিনি বলেন, অপসাংবাদিকতা গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে। সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল থেকে জনগণের কাছে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপন করতে হবে।
কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন ছিলেন প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. আব্দুস সবুর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল খায়ের।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় মৌলভীবাজার জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন। শেষে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। বক্তারা সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা, তথ্য যাচাইয়ের গুরুত্ব ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
‘ফজরের নামাজের পর হাটতে বের হলে শিয়াল কুকুরের জ্বালায় কোথাও যেতে পারি না। একটু নিরিবীলি জায়গা পেলেই দলবেধে ওরা এসে কামড়ে দেয়ার চেষ্টা করে। গত শুক্রবার ভোরে জলসিঁড়ির বালুতে হাটতে গেলে একদল শিয়াল আক্রমণ করে বসে, কোনো রকমে প্রাণপনে দৌড়ে রক্ষা পাই। এমনি করে কথাগুলো বলেন কাজী আবুল হোসেন।
মহসিন মিয়া বলেন, রাতের আধারে আমার খামারে শিয়ালের দল ডুকে ৪টা ছাগলকে কামড়ে মেরে ফেলেছে। এতে আমার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। দিনে কুকুরে কামড়ায় আর রাতে শিয়ালে। এ থেকে আমাগো কেউ বাঁচান।
‘কি আর কমু গো ভাই? নগর পাড়া ব্রিজ, কেওডালা ব্রিজ অদৃশ্য শক্তির ছোয়ায় আটকে আছে। ভয়ঙ্কর ঝুকিপূর্ণ চনপাড়া সেতুর মেরামত হচ্ছে না একযুগ ধরে। আমরা রূপগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরের বাসিন্দারা অনেক বিপদে আছি। আমাগো দেখার কেউ নেই। আমরা নিজ দেশে পরবাসীর মত। নদীতে পচা পানি। দুর্গন্ধে ঘরে থাকা যায় না। মশার জ্বালার কথা আর কি কমু? দিনে দুপুরেই কামড়ায়। রাত হলে তো কথাই নাই। একটু বাতাস ছুটলে বালির জ্বালায় ঘরে বাহিরে থাকা দায়। এরওপর নতুন আরো জ্বালা, দিনে কুকুরের জ্বালা আর রাতের বেলায় শিয়ালের খেলা/ উপদ্রব। আর ভালো লাগে না। আল্লাহ ছাড়া আমাগো দেখার আর কেউ নাই।’ এমনি করে মনের দুঃখে কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার আমজাদ হোসেন।
দিনে কুকুর আর রাতে শিয়ালের উপদ্রবে অতিষ্ঠ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জবাসী। জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কুকুরকে ভ্যাকসিন দেয়া হলেও কুকুরের কামড়ে আহত হওয়ার শঙ্কায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। বেশি আতঙ্ক ছোট শিশুদের নিয়ে। ছোট্ট শিশু নুশাইবা বলেন, কুকুরের ভয়ে দিনের বেলায় ঘর থেকে বের হতে পারি না। দলবেধে যেভাবে খা খা করে এগিয়ে আসে ভয়েই সামনে দিয়ে যাওয়া যায় না। আরেকজন হামিম বলেন, বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কি কারণে জানি না দলবদ্ধ কুকুর ভয়ঙ্কর আচরণ করছে। বিগত ১ মাসে ২০ জনকে কামড়েছে এ কুকুর। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১২টি ছাগলকেও কামড়ে দিয়েছে ভয়ঙ্কর কুকুরদল।
এ তো গেল দিনের চিত্র, রাতের চিত্র ভিন্ন। উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের নানী দাদীরা ছোট শিশুদের ঘুম পাড়াতে রাক্ষস-খোক্কস, দৈত্য-দানবের গল্প না বলে শেয়ালের গল্প বলছে। শুধু গল্প নয়, শঙ্কাও আছে। এখানে সন্ধ্যা নামলেই শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে যায়। দল বেঁধে শেয়াল বাড়ি-ঘরের আনাচে কানাচে ঘোরাফেরা শুরু করে। এতে হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল এমনকি ছোট শিশুদের নিয়েও ভয়ে আছে বাসিন্দারা। সন্ধ্যার আগেই গবাদিপশু ও ছোট শিশুদের নিয়ে ঘরে চলে আসতে হয়।
শেয়াল-কুকুরের উপদ্রব নিয়ে সিয়াম মিয়া বলেন, কী আর করমু ভাই, দিনের বেলা কুত্তা আর রাইতে হিয়ালের (শিয়াল) তা-বে আমরা আছি বড়ই যন্ত্রণায়। এসবের কারণে পশু-পাখিসহ বাচ্চাদের নিয়ে সারাদিন দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।
উপজেলার তালাশকুট এলাকার সারমিন আক্তার নামের এক গৃহবধূ বলেন, ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে ভয়ে থাকি। যে পরিমাণ শেয়াল-কুকুর বেড়েছে এলাকায়, না জানি কখন কাকে কামড়ে দেয়! সন্ধ্যার পর শেয়াল বেড়ে যায়। বেশ কিছু দিন আগে উপজেলার খামারপাড়া এলাকার এক মাদ্রাসার ছাত্র শিয়ালের কামড়ে ভোগে অবশেষে মৃত্যুবরণ করে।
রূপগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকাগুলোতে কুকুর বেশি থাকলেও শেয়াল তেমন একটা নেই। তবে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া, নগরপাড়া, কামসাইর, দেইলপাড়া, বাঘবাড়ী, পিরুলিয়া, ছনেরটেক, কায়েতপাড়া সহ বিভিন্ন গ্রামে শেয়াল-কুকুরের উপদ্রব বেশি।
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের ডা. আইভী ফেরদৌস বলেন, শিয়াল কুকুরের কামড়েরর রোগী আসে। আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা করি। ওষুধ সাপ্লাই স্বল্পতা রয়েছে। আর এ চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে নেয়াই ভাল।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস বলেন, ভাদ্র মাসে কুকুরের উপদ্রব একটু বেড়ে যায়। মানুষকেও কামড়ে দেয়। শুনেছি শিয়ালের উপদ্রবও বেড়ে গেছে। তাই আমরা উপজেলার প্রতিটি এলাকায় কুকুরকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। ভয়ের কিছু নেই। সচেতন থাকতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, শেয়াল কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি সত্যিই আতঙ্কের বিষয়। বিশেষ করে শিশুরা অনেক ভয়ে থাকে। প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে বিষয়টি সমাধানে কথা বলব। তবে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সর্বক্ষেত্রেই সচেতনতার বিকল্প নেই।
কেরানীগঞ্জের তালেপুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে কার্যত সেবা বন্ধনের মধ্যে পড়ে আছে। হাসপাতালের ভেতরে ও মাঠে জমে থাকে কোমর থেকে হাঁটু সমান পানি। সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই রোগীরা আসেন না তেমন। হাসপাতাল দেখে মনে হয় হাসপাতাল নিজেই রোগী।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা দিতে ডাক্তার আসেন সপ্তাহে মাত্র তিন দিন। ডাক্তার আঞ্জুমান আরা দুয়েল ওই তিন দিনে রোগী দেখেন। বাকি দিনগুলোতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শারমিন এবং ফার্মাসিস্ট অজিৎ কুমার দাস সীমিত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী রোগীরা বলছেন, এখানে কোনো ওষুধ দেওয়া হয় না, শুধু প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দেন। গরিব রোগীরা বাধ্য হয়ে বাইরের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে নেন। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে সেবা দেওয়ার ফলে রোগীরা সুস্থ হওয়ার বদলে আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
রোগী সালেহা বেগম জানান, বাড়ির কাছে সরকারি হাসপাতাল ভালো মনে করে আসতে আসতে দেখি কোন ডাক্তার নাই, নেই কোনো ওষুধ। আগে এখানে সব ওষুধ পাওয়া যেত, ডাক্তারও আসত কয়েকজন। এখন শুধু কাগজে প্রেসক্রিপশন।
অবকাঠামোর অবস্থা এতটাই খারাপ যে সেবা দিতে হচ্ছে হাসপাতাল ছেড়ে সামান্য দূরের একটি যাত্রী ছাউনিতে। সেখানে ধুলাবালি, যানবাহনের শব্দ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রোগীদের ভোগান্তি আরও বাড়াচ্ছে।
স্থানীয় খাইরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালটি এমন অবস্থায় পড়ে আছে যে কোনো দিন এটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এত বড় জায়গা, মাঠ, একাধিক বিল্ডিং সবই নষ্ট হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। দীর্ঘদিন কোনো মাটি পড়েনি, কোন নতুন বিল্ডিংও হয়নি।
দুই দশক আগে উপজেলার কলাতিয়া ইউনিয়ন ও তার আশেপাশের এলাকার সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের মাঝে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে আশির দশকের মাঝামাঝি এলাকার কৃতি সন্তান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক ব্রি. জেনারেল ডা. হেদায়েত নিজ গ্রাম তালেপুরে স্থাপন করেন একটি দাতব্য চিকিৎসালয়। উদ্দেশ্য ছিল এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা। শুরুতে চোখের অপারেশন, ছোট ও মাঝারি সার্জারি, টিকা এবং ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হতো।
বর্তমানে এটি শুধুই রোগীর দুর্ভোগের জায়গা। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, অবিলম্বে হাসপাতালের সংস্কার, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, নিয়মিত ডাক্তার নিয়োগ এবং পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। না হলে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র কেবলই অকার্যকর ভবনের খোলস হয়ে থাকবে।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোকাদ্দেস হোসেন জানান, এ বছরের মধ্যেই এটিকে সাময়িক সংস্কার করা হবে। হাসপাতালটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে গেছেন এবং আগামী বছর আশা করি এখানে ৮ তলা বিল্ডিং হবে যার পরিকল্পনাও ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ন্যাশনাল ইপিআই ড্রাই স্টোর হবে। আর আগামী মাসের ৩ তারিখ থেকে ওষুধ পাওয়া যাবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়দের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি। সভায় সনাতন ধর্মালম্বী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহন করেন।
শনিবার জেলা শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক মিলন কুমার ঘোষ। জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সদস্য সচিব সমীর কুমার হালদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, সিনিয়র সহ সভাপতি আক্তারুজ্জামান, সহ সভাপতি মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান পপ্পু, ঝিনাইদহ পৌর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান লাকী, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুর রহমান শেখর, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক তপন বিশ্বাস, সদস্য সচিব প্রহল্লাদ সরকার ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক চন্দন বসু মুক্ত ।
প্রধান অতিথি এম এ মজিদ বলেন, সম্প্রীতির এই বাংলাদেশ কারো একার পক্ষে স্বাধীন করা সম্ভব হয়নি। মুসলিমদের যেমন স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান আছে, তেমনি আছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানদের। সবার মিলিত প্রচেষ্টার ফসল আজকের বাংলাদেশ।
তিনি বলেন এই দেশকে নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করে তারা কখনোই সফল হয়নি। শেখ হাসিনা এই বাংলাদেশকে ভারতের কদর রাজ্য করতে চেয়েছিল কিন্তু এদেশের মানুষ তার সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে।
বিএনপির এই তরুণ নেতা বলেন, আসন্ন দূর্গা পূজা নির্বিঘ্ন করতে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ।
আজ এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং আমার নিজের পক্ষ থেকেও আমি নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার নিয়োগে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, নেপালের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন হিসেবে সুশীলা কার্কির দায়িত্বগ্রহণকে বাংলাদেশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
তিনি বলেন, ‘একজন দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার দক্ষ নেতৃত্বে নেপাল ও এর দৃঢ়চেতা জনগণ শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাবে।’
প্রধান উপদেষ্টা নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলীতে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন।
বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত ও পূর্ণ আরোগ্য কামনা করি।’
অধ্যাপক ইউনূস আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক তাঁর নেতৃত্বে আরও জোরদার হবে।
তিনি সুশীলা কার্কির সুস্বাস্থ্য ও সফলতা এবং নেপালের জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বন বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিহিংসামূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থানীয় সাংবাদিকদের উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেন জেলার জ্যেষ্ঠ ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। তারা জানান, দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম জুয়েল, নয়া দিগন্তের আসাদুজ্জামান ফজলু, মানবকণ্ঠের শফিকুল ইসলাম ও গ্লোবাল টিভির শাহিদুজ্জামান সবুজের বিরুদ্ধে বন বিভাগ কর্তৃক দায়ের করা মামলাটি সম্পূর্ণ হয়রানিমূলক ও প্রতিহিংসার অংশ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ভালুকা রেঞ্জের বিট অফিসার আনোয়ার হোসেন ও হারুন অর রশিদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তাদের প্রভাব খাটিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকরা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দায়িত্বশীলভাবে সংবাদ প্রকাশ করেছেন।
বক্তারা আরও বলেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলেই এ ধরনের মামলা দায়ের করা গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের অপচেষ্টা। অতীতে এমন চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবে।
মানববন্ধনে অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
যশোরের কেশবপুরে ভবদহ অঞ্চলে পরিবেশ বান্ধব টেকসই মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে পড়েছে ঘের ব্যবসায়ীরা। মাছ রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে মালিকরা প্রাকৃতিক খাদ্য সরবরাহে ঘেরে শ্যাওলার ব্যবহারে ঝুকে পড়ছে। মৎস্য অধিদপ্তর এটি একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছে।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮ টি, মণিরামপুরে ৪ হাজার ৮৮৯ টি ও অভয়নগরে ১ হাজার ২০৫টি মাছের ঘের রয়েছে। বর্তমানে ঘের মালিকরা উপজেলার বিভিন্ন জলাবদ্ধ বিল থেকে পাটা শ্যাওলাসহ জলজ জাতীয় উদ্ভিদ সংগ্রহ করে মাছের ঘেরে ব্যবহার করছে। প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে শ্যাওলা ব্যবহার করায় ঘের মালিকদের বাণিজ্যিক খাদ্যের খরচও কম হচ্ছে। এ সকল উপজেলায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯০২ বিঘা জমিতে মোট ১০ হাজার ৭৫২টি মৎস্য ঘের রয়েছে।
সরেজমিন কেশবপুর, মণিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন জলাবদ্ধ বিল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঘের মালিকদের পাটা নামক এক প্রকার চিকন শ্যাওলা সংগ্রহ করতে। পাঁজিয়া জলাবদ্ধ বিল থেকে শ্যাওলা সংগ্রহ করার সময় বাগডাঙ্গা এলাকার ঘের ব্যবসায়ী পরেশ মন্ডল বলেন, ঘেরের মাছ মোটাতাজাসহ রোগ বালাই থেকে রক্ষা করতে শ্যাওলা খুবই উপকারী। মণিরামপুরের গৌরীপুর বিল থেকে শ্যাওলা সংগ্রহ করাকালীন ঘের ব্যবসায়ীর শ্রমিক তাজুল ইসলাম বলেন, ঘের মালিকরা মাছ চাষে বিলের শ্যাওলা ব্যবহার করায় তারা প্রতিদিন কাজ পাচ্ছে। মণিরামপুর উপজেলার হাসাডাঙ্গা গ্রামের মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী সুলতান হোসেন বলেন, ঘেরে প্রাকৃতিক খাদ্য সরবরাহ করা গেলে মাছ সতেজ হয়ে উঠে। শ্যাওলা ব্যবহারে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয় না। তাছাড়া যে সমস্ত বিল থেকে শ্যাওলা তোলা হয় সে সমস্ত বিলেও দেশী প্রজাতি মাছ সহজে চলা ফেরা করে প্রজননে সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তুলতে পারে। অভয়নগরের ভবদহ এলাকার ঘের ব্যবসায়ি মোস্তাক হোসেন বলেন, মাছের খাদ্য হিসেবে পাটা শ্যাওলা এখন খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই শ্যাওলা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে মাছের রোগ বালাই এয় না। তা ছাড়া বানিজ্যিক খাদ্যের খরচের হাত থেকেও অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়। জলাবদ্ধ বিল থেকে শ্যাওলা সংগ্রহ করে ঘের মালিকরা প্রতিদিন মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। পাটা শ্যাওলা মাছো শ্যাওলা নামেও পরিচিত। চিংড়ি মাছ ছাড়া সব ধরণের সাদা মাছের প্রিয় খাদ্য শ্যাওলা।
এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার সুদীপ বিশ্বাস বলেন, বিল থেকে শ্যাওলা তুলে ঘেরে মাছকে খেতে দেওয়ায় মাছের বৃদ্ধি ঘটে। এ পদ্ধতি পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই। ঘেরে প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবহার করতে পারলে মালিকদের বাণিজ্যিক খাদ্যের খরচ কম হয়। এ পদ্ধতি ব্যবহার করায় প্রতিদিন শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান হয়। এটি স্থানীয় মৎস্যজীবীদের আয় বৃদ্ধিসহ মাছ উৎপাদনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। শ্যাওলা মাছের খুবই পুষ্টিকর খাদ্য।
মন্তব্য