× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Khaleda Zias imprisonment day is today
google_news print-icon

খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস আজ

খালেদা-জিয়ার-কারামুক্তি-দিবস-আজ

অভিবাদন গণতন্ত্রের মা

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ১৮তম কারামুক্তি দিবস আজ। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সেনাসমর্থিত সরকার ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের বাড়ি থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী-দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে ক্যান্টনমেন্টের শহীদ মইনুল রোডের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সংসদ ভবনের বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এরপর থেকে মুক্তির এ দিনটিকে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখলকারী এক-এগারোর সরকার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করলেও বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ও আস্থার কারণে ষড়যন্ত্রকারীদের সকল কূটকৌশল ব্যর্থ হয়ে যায় এবং তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

উল্লেখ করা প্রয়োজন, এর আগে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব) তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোনো পরোয়ানা, মামলা, জিডি, এমনকি সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই সেদিনের মঈনউদ্দিন-ফখরুউদ্দিনের সরকার জরুরি বিধিমালায় গ্রেপ্তার করে।

মহান স্বাধীনতার ঘোষক, উন্নয়নের রাজনীতির রূপকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর ষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের কেড়ে নেওয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে শহীদ জিয়ার আদর্শের রাজনীতিকে সমুন্নত রাখতে রাজনৈতিক মঞ্চে বেগম খালেদা জিয়ার আগমন ঘটে। সেই থেকে তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সফল ব্যক্তিত্ব। সাধারণ গৃহবধূ থেকে হয়ে ওঠেন একজন তুখোড়-প্রাজ্ঞ রাজনীতিক, অন্দর থেকে সদর্পে আসীন হন বিশ্বের রাজনৈতিক মঞ্চে।

স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে তিনি গণতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিটি আন্দোলনে সফল হয়েছেন। দীর্ঘ ৯ বছরের সামরিক শাসনবিরোধী নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলনে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে তিনি দেশে সাংবিধানিক গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার সাহসিকতা, দেশপ্রেম, আদর্শিক দৃঢ়তা, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে দেশের মানুষ তাকে আপসহীন নেত্রীর অভিধায় অভিষিক্ত করেছে।

গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় অনমনীয় ও দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্ব বেগম খালেদা জিয়া। কোনো চক্রান্তকারী শক্তি তাকে পরাভূত করতে পারেনি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তার নাম স্বমহিমায় মহিমান্বিত হয়ে আলোর দ্যুতি ছড়াচ্ছে।

এক-এগারোর সেনা-সমর্থিত সরকার ও তার পরবর্তী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু অপশক্তির রোষানলে পড়ে জিয়া পরিবার। ফরখরুদ্দিন-মঈনদ্দিনের সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বারবার দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তাকে রাজি করতে পারেনি। তিনি বিদেশে যাননি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে নানাভাবে প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন খালেদা জিয়া। শত অমানবিক অত্যাচারের শিকার হয়েও তিনি দেশ ছেড়ে যাননি।

স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বরণের পর নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যদিয়ে ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া বিএনপিতে একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় তিনি প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে পার্টির চেয়ারপারসন নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

১৯৮৩ সালে সাত দলীয় ঐক্যজোটের মাধ্যমে এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। একই সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন অপর জোট যৌথভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। ১৯৮৬ সালের এরশাদের পাতানো নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন, ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে কেউ যাবেন না। যারা যাবে তারা জাতীয় বেইমান হিসেবে চিহ্নিত হবে। সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনা গিয়ে জাতির কাছে জাতীয় বেইমান হন। আর সাধারণ নির্বাচনে না গিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র-জনতা তাকে আপসহীন নেত্রী উপাধিতে ভূষিত করে।

১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া এরশাদ হটাও এক দফার আন্দোলন শুরু করেন। ফলে সংসদ ভেঙে দেন জেনারেল এরশাদ। পুনরায় শুরু হয় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। অবশেষে দীর্ঘ ৮ বছর একটানা নিরলস ও আপসহীন সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিএনপি। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া রাজধানীর ঢাকার দুটি আসনসহ মোট পাঁচটি আসনে অংশ নিয়ে পাঁচটিতেই জয়লাভ করেন।

১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ বেগম খালেদা জিয়া পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি হলেন বাংলাদেশের প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী। তার সরকার দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার কায়েম করে।

১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে। খালেদা জিয়া তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে দলে যোগ দেওয়ার পর থেকে মোট পাঁচবার তিনি গ্রেপ্তার হন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর প্রথম গ্রেপ্তার হন। এরপর ১৯৮৪ সালের ৩ মে দ্বিতীয়বার, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তৃতীয়বারের মতো গ্রেপ্তার হন। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখে গ্রেপ্তার হয়ে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তিলাভ করেন।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি আদালত একটি সাজানো মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেয়। ওইদিনই তাকে আদালতের পাশে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিত্যক্ত ওই কারাগারে একমাত্র বন্দি ছিলেন তিনি। কোনো অপরাধ না করেও শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বছরের পর বছর তাকে কারাবন্দি থাকতে হয়। কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে তার ওপরে চালানো হয় অবর্ণনীয় মানসিক নির্যাতন।

তবে চব্বিশের জুলাই-আগস্টের প্রবল গণআন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন। দেড় দশকের ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটে। এরপর দুই মামলার দণ্ড থেকে গত ৬ আগস্ট মুক্তি পান গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া। আমাদের বিশ্বাস তার লড়াই-সংগ্রাম আর আত্মত্যাগে অনুপ্রাণিত হবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবসে তার প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা ও অভিবাদন।

কেবল দীর্ঘকাল ধরে কারারুদ্ধ করে রাখাই নয়, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে, হত্যার উদ্দেশ্যে হাসিনা সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল। সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে সাজা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য আটক করে রাখা হয়েছিল। অবরুদ্ধ অবস্থায় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি।

জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এক-এগারোর বিতর্কিত সরকার ও শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার স্বাধীনতার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর ওপরও অত্যাচার নির্যাতনের স্টিমরোলার চালায়।

২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারা গ্রেপ্তার হন। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান আরাফাত রহমান কোকো। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই তার জীবনের সমাপ্তি ঘটে। আওয়ামী লীগ সরকারের চোখ রাঙানি সত্ত্বেও ঢাকায় তার জানাজায় পঁচিশ লক্ষাধিক লোক শরিক হয়। এতে প্রমাণিত হয় জিয়া পরিবারের প্রতি মানুষের কী পরিমাণ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

আর ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির বিপুল বিজয়ের পর তারেক রহমান ষড়যন্ত্রকারীদের টার্গেট হন। তাকে শুধু রাজনৈতিক ময়দান থেকে নয় দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। তাকে নিয়ে চলে গোয়েবলসীয় কায়দার মিথ্যাচার।

এক-এগারোয় সরকারের হাতে গ্রেপ্তারের পর তারেক রহমানের ওপর পুলিশ রিমান্ড ও কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হয়। একটানা ৫৫৪ দিন বা ১৮ মাস কারাবাস করতে হয় তাকে। এরপর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি পিজি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তি পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান।

সুচিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন দেশে আসতে না পারলেও বিদেশে থেকেই তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সাথে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। দলকে সুসংগঠিত করে স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তার নেতৃত্বে দল আজ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক শক্তিশালী। আগামী নির্বাচনে দেশবাসীর প্রিয় নেতা তারেক রহমানের সফল নেতৃত্বে বিএনপি বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে বলে সকলের প্রত্যাশা।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Three policemen were injured in the firing of mischief in Maheshkhali

মহেশখালীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত

মহেশখালীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত

কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুর্বৃত্ত গুলিতে পুলিশের ৩সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প সংলগ্ন কোহেলিয়া সেতুর পাশে এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন, মহেশখালী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ সেলিম (৩৬), কনস্টেবল সোহেল (৪৪) ও কনস্টেবল মো. মাসুদ (৩৬)। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে নিয়মিত চোরাই মালামাল বের হয়। এসব মালামাল বহনকারী গাড়ি আটকিয়ে একদল ডাকাত দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে। মঙ্গলবার রাতেও ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়।

খবর পেয়ে পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের দ্রুত বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আহত পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাধীন আছেন, ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Padma river breaks

ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন

ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে বেশ কয়েক স্থানে অতি সম্প্রতিকালে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়েজুল্লাপুর, হাটখোলাপাড়া এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিসহ হিন্দুদের ব্যবহৃত শ্মশানঘাটও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।এতে ৭০--৮০ জনের পান চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে এবং তাদের ৩০০০ পান বরজের সারি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর, হাটখোলাপাড়া ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুরে গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পাদদেশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জুনিয়াদহ ইউপি'র ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে পদ্মা নদী রক্ষা বাঁধের রায়টা-মহিষকুন্ডি বেরিবাঁধের দূরত্ব ৫০ মিটারেরও কিছুটা কম।ভাঙ্গনে হুমকিতে রয়েছে উক্ত এলাকার বসতবাড়িসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে ভাঙ্গন নিয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে।এলাকাবাসীর দাবি, এমনি অবস্হা চলতে থাকলে আরো মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। অন্যদিকে বাহাদুরপুরের মাধবপুরের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় রয়েছে কৃষিজ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ বিস্তীর্ণ প্রান্তিক চাষিদের পান বরজ।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে ৭০-৮০ জন পান চাষির প্রায় ৩০০০ পিলি পান বরজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাছাড়া এ অঞ্চলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সৎকারে ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশান ঘাটটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

আমিরুল নামের এক কৃষক জানান,তার ভাই আরজেত ও তার পুত্রদের ৭/৮ বিঘা জমির প্রায় ৮০০ পিলি পানের বরজ নদীতে বিলীন হয়েছে ।তাদের একমাত্র উৎস পান বরজ হারিয়ে তারা দিশেহারা ও পাগলপ্রায়। উপার্জনের জায়গা হারিয়ে তারা এখন পথের ফকির।

মবির পন্ডিত,রেজাউল, জামশেদ, রাব্বি, রহমান, কাশেম, নুরা,নাসির, আনেজ,আজগর,আবু,শিহাব নামের কৃষক এরা সকলেই ১০০ পিলি করে পানের বরজ হারিয়েছেন।

পানচাষি আবুল আলী জানান, মাধবপুর এলাকায় গত দুই বছর আগে এই সমস্ত বরজ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।এবার তা পদ্মা নদী গ্রাস করলো। আমরা কৃষকরা খুবই অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছি।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।অতি শীঘ্রই আমরা সেখানে পরিদর্শনে যাবো। এছাড়া বসতবাড়ি থাকার কারণে জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুরে নদীর পানি কমে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য অঞ্চলগুলোতেও পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু হবে।

ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা জেনেছি।ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Allegedly murdered a truck driver in Jamalpur

জামালপুরে গরুচুরির অপবাদে ট্রাকচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

জামালপুরে গরুচুরির অপবাদে ট্রাকচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

জামালপুরে ট্রাকচালক রিপন মিয়াকে (৪২) গরুচুরির অপবাদে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের পলাশী বাজারে পরিবার ও স্থানীয়রা এই মানববন্ধন কর্মসুচির আয়োজন করে।

ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে নিহতের ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়া, শাহীন, ফুপু মঞ্জুয়ারা, ভাবী নার্গীসসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা বলেন, উপজেলার রেহাই পলাশতলা এলাকার মৃত কছর আলীর ছেলে প্রবাসী মওলানা (৩৫) সৌদি আরবে থাকাকালীন চার বছর আগে তার স্ত্রীর সাথে ট্রাকচালক রিপন মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে রিপন মিয়া ঢাকায় চলে যায় এবং গত ৬ মাস আগে রিপন মিয়া আবার নিজ এলাকায় ফিরে আসে। এরই মধ্যে মওলনা দেশে আসেন। এরপর তাদের প্রেমের বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী মওলনার সাথে রিপন মিয়ার একাধিকবার কথা কাটাকাটি হয় এবং তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আক্রোশের জেরে ট্রাকচালক রিপন মিয়া গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার পথে একই এলাকার মৃত কছর উদ্দিনের চার ছেলে মওলনা, বুরহান, রাজু, দিলুসহ তাদের লোকজন পরিকল্পিতভাবে রিপন মিয়াকে টেনেহিচড়ে বুরহানের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখে। এ সময় প্রতিবেশীরা ছুটে এলে গরুচুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে বাধা অবস্থায় তাকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এ সময় রিপন মিয়ার চিৎকারে তার বাবা মোজাম্মেল হক (৬০), ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়াসহ পরিবার ও স্বজনরা তাকে উদ্ধারের জন্য গেলে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়। পরে তারা মেলান্দহ থানায় গিয়ে রিপন মিয়াকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ গিয়ে রিপন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পরের দিন ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার কথা বলেন। মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন বক্তারা। পরে বিক্ষোভ করে স্থানীয় এলাকাবাসী।

উল্লেখ্য, এই ঘটনায় নিহতের বাবা মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জামালপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Nepal helicopters rope ministers last shelter in the Zen Jade movement

জেন-জেডদের আন্দোলনে বিপর্যস্ত নেপাল, হেলিকপ্টারের দড়ি মন্ত্রীদের শেষ আশ্রয়

জেন-জেডদের আন্দোলনে বিপর্যস্ত নেপাল, হেলিকপ্টারের দড়ি মন্ত্রীদের শেষ আশ্রয়

নেপালে সরকারবিরোধী আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে পড়ে দেশটির একাধিক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রীও প্রাণে বাঁচতে বাধ্য হয়েছেন হেলিকপ্টারের দড়ি আঁকড়ে ধরতে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, সামরিক।হেলিকপ্টার থেকে ঝোলানো দড়ি ধরে মন্ত্রী ও তাদের পরিবার মরিয়া হয়ে পালাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন স্থানে একযোগে সরকারি কর্মকর্তা, মন্ত্রী এবং এমপিদের বাসভবনে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। তাদের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথী সুব্বা গুরুঙ্গের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের বাড়িতে ভাঙচুর এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকসহ আরও কয়েকজনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গভর্নর বিশ্ব পাউডেলের বাসভবনও রক্ষা পায়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তেজিত জনতা রাস্তায় ধাওয়া দিয়ে অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলকে মারধর করছে। আরেক ভিডিওতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালি কংগ্রেস প্রধান শের বাহাদুর দেউবা ও তার স্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু রানা দেউবাকে বিক্ষোভকারীদের হাতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। সেনারা পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে।

এ সময় পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহার করে কয়েকজন মন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তাকে রেসকিউ করা হয়। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দড়ি বেয়ে বা রেসকিউ বাস্কেটে ঝুলে মন্ত্রীদের এক হোটেলের ছাদে নামিয়ে দিচ্ছে সেনারা। আকাশে তখন ভাসছিল ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী।

বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ঘিরে। তবে তা দ্রুত দেশজুড়ে সহিংসতায় রূপ নেয়। রাজধানী কাঠমান্ডুতে সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও সংসদ ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়।

শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভের তীব্রতায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। বুধবার সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল শুরু করে এবং জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়।

এদিকে, বিক্ষোভে সহিংসতায় জেন-জেড প্রজন্মের অংশগ্রহণ এবং মন্ত্রীদের হেলিকপ্টারের দড়ি ধরে পালানোর ভিডিও দেশজুড়ে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Belal Moller changed the fate of the wasted eggs in Joypurhat

জয়পুরহাটে নষ্ট ডিমের খোসার পাউডারে ভাগ্য বদল বেলাল মোল্লার

জয়পুরহাটে নষ্ট ডিমের খোসার পাউডারে ভাগ্য বদল বেলাল মোল্লার

জয়পুরহাটে ডিমের নষ্ট ও পরিত্যাক্ত খোসা থেকে পাউডার তৈরী করে সাড়া ফেলেছেন এক উদ্যোক্তা। এই পাউডার ব্যবহার হচ্ছে মাছ, মুরগি, গরুর খাবারের ক্যালসিয়াম হিসেবে ও জমির জৈব সার হিসেবে। জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি-হ্যাচারি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করে এই পাউডার তৈরি করা হয়। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে ভাগ্য বদলেছে উদ্যোক্তা বেলাল মোল্লার। আর এই পাউডার নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জানা যায়, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেলতলী গ্রামের বাসিন্দা বেলাল মোল্লা ১০-১২ বছর থেকে জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারি থেকে পরিত্যক্ত ডিমের খোসা সংগ্রহ করতেন। সেই খোসা তিনি বগুড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করতেন। এরপর জানতে পারেন সেই খোসা দিয়ে পাউডার তৈরী করে বিক্রি করা হয়। সেই ভাবনা থেকে ২০২৪ সালে স্থাপন করেন ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরির কারখানা। এরপর থেকে তাকে আর পেঁছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ছোট কারখানায় প্রতিদিন ডিমের খোসার পাউডার তৈরি করে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছেন। আর এ পাউডার ব্যবহার হচ্ছে জৈব সার হিসেবে। এছাড়া গরু, মাছ ও মুরগির জোগান দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের। উপকার পেয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিমের পাউডার নিতে আসছেন কৃষক ও মৎসচাষীরা। ৫০ কেজির পাউডার বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে তার লাভ থাকছে ২০ হাজার টাকা।

উদ্যোক্তা বেলাল মোল্লা বলেন, আগে বিভিন্ন হ্যাচারি ও পোল্ট্রি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করতাম। পাউডারের বিষয়ে জানতে পেরে নিজে কারখানা স্থাপন করেছি। আমার এখানে ৫ জন কাজ করে। এই পাউডারের প্রচুর চাহিদা। বর্তমান জয়পুরহাটসহ আরও ১৫টি জেলায় এই পাউডার সরবরাহ করছি। চাহিদা মতো সরবরাহ দিতে পারছিনা।

কারখানার শ্রমিক আব্দুল খালেক বলেন, ডিসের খোসা পরিস্কার করে মেশিনের ভেতর দেওয়ার পর তা পাউডার হয়ে বের হয়ে আসে। তারপর এখান থেকে বাজারজাত করা হয়। আমরা এখানে ৫ জন কাজ করি। এখান থেকে যে বেতন পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার ভাল মতো চলে।

সদর উপজেলার জামালগঞ্জ এলাকার হাবিব হাসান বলেন, এতোদিন জানতাম ডিমের খোসা অপ্রয়োজনীয় জিনিস। কখনো ভাবিনি যে এটা কোন কাজে লাগতে পারে। এখন দেখছি এখান থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে তা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কেউ জমির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

সদর উপজেলার বেতলী গ্রামের বিপ্লব হোসেন বলেন, আমাদের এলাকাতে ডিমের খোসা থেকে যে পাউডার তৈরী হচ্ছে সেটা অনেক ভাল বিষয়। এমন উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে তেমন বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।

কালাই উপজেলার মাদাই গ্রামের মকবুল হোসেন বলেন, আমি একজন মাছ চাষী। এখান থেকে ডিমের পাউডার কিনে দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে মাছকে খাইয়েছি। এতে দেখছি, মাছ যে পরিমাণ বাড়ার কথা ছিল, তার চেয়ে একটু বেশি বেড়েছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান বলেন, এই ডিমের খোসার পাউডার অনেক কৃষক জমিতে ব্যবহার করছে। ডিমের খোসাতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার এই জাতীয় উপাদানগুলো পাওয়া যায়। যেটা কোন গাছের খাদ্য উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এটাকে আমরা যদি গাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে নিশ্চিতভাবে উপকারে আসবে। বেলাল মোল্লা যে পাউডার উৎপাদন করছেন সেটাতে কি পরিমাণ কোন উপাদান আছে সেটা যদি পরীক্ষা করা হয়, তাহলে জমিতে কি পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে তার একটা মাত্রা নির্ধারণ করা যাবে। এ ব্যাপারে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, জয়পুরহাট জেলায় পোল্ট্রি অধ্যষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার প্রচুর ডিম বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া হতো। এখন সেই ডিমের খোসা থেকে বেলাল মোল্লা পাউডার তৈরি করছেন। এই পাউডার মৎস্য, পোল্ট্রি ও কৃষি জমিতে ব্যবহার হচ্ছে। ডিমের খোসায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাংগানিজ, বোরন, জিংকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই খোসা ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের খাদ্যের মিনারেলের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে। এই উপাদানগুলো আমাদের আমদানি করতে হয়, যখন আমরা এর উৎপাদন বাড়াতে পারবো, তখন আমদানি পরিমাণ কমে আসবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Lisa and Rakib who made a job in the police at Tk 120

১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি, স্বপ্ন পূরণ লিজা ও রাকিবের

১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি, স্বপ্ন পূরণ লিজা ও রাকিবের

মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বিলকিস সুলতানার, বাবা-মায়ের আদর–স্নেহ না পেয়ে বেড়ে ওঠা বিলকিস সুলতানা সরকারি চাকরি পেয়ে এবার নিজেই নিজের স্বপ্ন পূরণ করবেন। একই সাথে নাজমিন নাহার লিজা তার বাবা ইসমাইল কারিগর বহু বছর আগে মারা গেছেন। অভাবের সংসারে অতি কষ্টে লেখাপড়া করেছেন লিজা। বাবার স্নেহ–ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে মায়ের আশ্রয়ে বেড়ে উঠেছেন তিনি। এবারের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি পেয়েছেন নাজমিন নাহার লিজা (১৮)।

নিজের যোগ্যতায় সরকারি চাকরি হওয়ায় স্বপ্ন পূরণের আনন্দে চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে লিজার। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা গ্রামের লিজা বলেন, “নানা–নানীর সংসারে থেকে লেখাপড়া করেছি। সেভাবে বাবা-মায়ের আদর পাইনি, তারা থেকেও যেন নেই। আমার চলার পথ সহজ ছিল না। স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বর্তমানে কলেজে পড়ছি। আমি ভাবিনি সরকারি চাকরি হবে। বাড়ি থেকে একাই পুলিশ লাইন্সে এসেছি পরীক্ষা দিতে, আমার সাথে কেউ আসেনি। এখন সবাইকে ফোন করে চাকরির বিষয়টি জানাচ্ছি। মাত্র ১২০ টাকায় চাকরি পেয়ে আমি অনেক খুশি এখন থেকে আমার আনন্দের সময় শুরু।

শুধু লিজা নন, সাতক্ষীরায় এবার মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ২৮ জন চাকরিপ্রার্থী। তাদের মধ্যে ২৬ জন ছেলে ও ২ জন মেয়ে। কোন তদবির বা অনৈতিক লেনদেন ছাড়াই, শুধুমাত্র শারীরিক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়ে এসব তরুণ–তরুণীরা বেশ উচ্ছ্বসিত। বুধবার (১১ আগস্ট) রাতে জেলার পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্তভাবে বাছাইকৃতদের নাম ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

সাতক্ষীরার রাকিব রায়হান (১৯) পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। তিনি জানান এর আগে আরও দুইবার পরীক্ষা দিয়েছিলাম। দেখেছি, সবারই নিজ নিজ যোগ্যতায় চাকরি হয়েছে। তাই হাল ছাড়িনি, এবার তৃতীয়বারের মতো পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার চাকরি হয়েছে, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই—আলহামদুলিল্লাহ। আমি ব্র্যাক স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণী পাশ করে আমার এলাকার হাইস্কুলে পড়েছি। কখনো ভাবিনি ঘুষ ছাড়া চাকরি হবে। কিন্তু টাকা ছাড়া চাকরি পেয়ে সত্যিই আজ আমি আনন্দে আত্মহারা।”

বাবুল, আনোয়ার হোসেন (১৮), তাপসী (২০) ছাড়াও আরও কয়েকজন নিয়োগপ্রাপ্ত বলেন, “এত স্বচ্ছ নিয়োগ হবে জানতাম না। ভাবতাম পুলিশে চাকরি নিতে অনেক তদবির করতে হয়, লাখ লাখ টাকা ঘুষ লাগে। চাকরি হবে কিনা সংশয় ছিলাম, তবুও পুলিশ লাইন্সে এসেছি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে। কোন অনিয়ম, দুর্নীতি, তদবির ও লেনদেন ছাড়াই মাত্র ১২০ টাকায় যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি হয়েছে।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন ২৪ জুলাইয়ের বিপ্লব তথা ৫ আগস্টের পর সাধারণ মানুষ যে জনআকাঙ্ক্ষার পুলিশ চায়, সেই পুলিশ গড়ে তুলতে হলে সবার আগে স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থা দরকার। সারাদেশে এভাবেই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুলিশে নিয়োগ হচ্ছে। আমরা অভিভাবকদের আহ্বান জানাবো, তারা যেন তাদের সন্তানদের পুলিশে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেন।”

ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে এবার প্রায় ১৯ শত জন আবেদন করেন। যাচাই–বাছাই শেষে তাদের মধ্যে ৩৪৪ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে ৫৮ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে মোট ২৮ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। এছাড়া অপেক্ষমান রয়েছেন আরও ৬ জন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Seminar on Disability Care and Rehabilitation at Southeast University

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে প্রতিবন্ধী যত্ন ও পুনর্বাসন বিষয়ক সেমিনার

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে প্রতিবন্ধী যত্ন ও পুনর্বাসন বিষয়ক সেমিনার

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির (এসইইউ) ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (আইআরটি) এর আয়োজনে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস হলে “দি নিড ফর রিহেবিলেশন অ্যাজ এ মেজর পার্ট অব ডিজেবল কেয়ার” শীর্ষক একটি বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিআরপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক ভ্যালেরি এ. টেইলর, যিনি বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী মানুষের যত্ন ও পুনর্বাসনে আজীবন অবদান রেখে অসংখ্য মানুষের জীবন পরিবর্তন করেছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণে পুনর্বাসন কার্যক্রমকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে নতুন ও স্বল্প খরচের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করতে সিআরপি অত্যন্ত আগ্রহী।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, যিনি শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার ও সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে আহ্বান জানান।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন আইআরটি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. হাসনাত এম. আলমগীর। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রযুক্তি ও নীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

পুরো আয়োজনটি অংশগ্রহণকারীদের কাছে এক অনুপ্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধী যত্ন ও পুনর্বাসন খাতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

মন্তব্য

p
উপরে