× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Yanabi Salamu Alaika
google_news print-icon

ইয়ানবী সালামু আলাইকা

সৈয়দ এনাম-উল-আজিম
ইয়ানবী-সালামু-আলাইকা

আজ সেই মহিমান্বিত দিন। সারা জাহানের মুসলমানদের জন্য অতি আনন্দ আর রহমতের দিন। দোজাহানের শান্তি ও কল্যাণের দূত নবীকুল শিরোমণি , আখেরি জমানার শেষ নবী, হাবিব এ খোদা, মহানবী হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পৃথিবীর বুকে আগমণ ও ইন্তেকালের অবিস্মরণীয় দিন ১২ রবিউল আউয়াল। মুসলমানদের কাছে বিশেষ মর্যাদা আর গুরুত্ববহ, সব ঈদের সেরা ঈদ ‘ঈদ এ মিলাদুন নবী’ বা নবী দিবসের আনন্দের দিন।

দিনটি শুধু মুসলমানদের কাছে নয়, সমস্ত পৃথিবীর মানবজাতির কল্যাণ ও পরকালের মুক্তির দূত হিসেবে মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত স্বরূপ তিনি ধরা পৃষ্টে অবতীর্ণ হন। মহান আল্লাহ সব নবীদের উদ্দেশ্য যাকে আল্লাহর রহমত বা রহমাতুল্লিল আলামীন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তার শান আর কুদরতকে সবার সমগ্র মানবজাতির পথ প্রদর্শক ও পরকালীন মুক্তির জন্য শাফায়াতকারী হিসেবে খোদার পক্ষ থেকে স্বীকৃত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ।

আজ সেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মহামানব, দোজাহানের শান্তি ও মুক্তির কান্ডারি হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম তিথিতে সমস্ত প্রকৃতি ও মানব সমাজ যেন সমস্বরে গাইছে:

ইয়ানবী সালামু আলাইকা

ইয়া রাসুল সালামু আলাইকা

ইয়া হাবীব সালামু আলাইকা

সালাওয়া তুল্লা আলাইকা।

অনেকগুলো কারণেই নবীজির জন্মদিনটি তামাম পৃথিবীতে, সমগ্র মানবজাতির জন্য একটি মহিমান্বিত দিন।

হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা আমেনার কোল আলোকিত করে যখন আরবের ধূসর মরুভূমিতে শান্তির বারি হয়ে ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দের ২৯ আগস্ট, সোমবার, চন্দ্রমাসের ১২ রবিউল আউয়ালে জন্ম গ্রহণ করেন তখন সমগ্র আরব দেশ ও আরব জাতি ছিল জঘন্য বর্বরতা আর পাপাচারে নির্মগ্ন। পৃথিবীর ইতিহাসের ওই সময়টাকে বলা হতো- আইয়ামে জাহেলিয়া বা অন্ধকার যুগ। গোত্র বিদ্বেষ, বর্ণবিরোধ, হানাহানি, খুনখারাপি, কন্যা শিশু হত্যা, ব্যাভিচার, পরস্পরের প্রতি সম্মান, সহানুভূতি, মানবতা প্রদর্শন না করা ছিল নৈমিত্তিক কাণ্ড। বিশেষত পোত্তলিকতা আর নারীবিদ্বেষ ছিল চরম পর্যায়ের। তারা পূর্ববর্তী নবীদের দেখানো পথ থেকে দূরে সরে গিয়ে একেশ্বরবাদীতার স্থলে বহু ঈশ্বর বাদীতায় লিপ্ত হয়ে পরকাল ভুলে গিয়ে ছিল। খোদার শাস্তির কথা মনে না রাখায় কঠিন কঠিন পাপের বোঝায় তারা লিপ্ত হয়ে যায়। আরব ও বিশ্ববাসীর এমন এক পঙ্কিল সময়ে বিশ্বমানবতা আর পরকালের মুক্তির দূত হিসেবে মহান রাব্বুল আলামিন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেন মা আমেনার কোলে সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর রহমত ও হেদায়েত হিসেবে। আলহামদুলিল্লাহ। একটা অন্ধকার যুগে আলোর প্রদীপ হয়ে জন্ম নেয়া এই মহা মানবের আবির্ভাবের দিনটি তাই সমগ মুসলিম জাহানে সব চেয়ে আনন্দের দিন। ঈদ এ মিলাদুন নবী।

যার আগমন ঘিরে এমন একটি শুভ ও আনন্দময় দিন আমরা পেলাম আজ সেই মহা মানবের জীবনী নিয়ে কিছু কথা বলার চেষ্টা করব।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) আমার প্রিয় নেতা। কেননা তিনি আইয়ামে জাহেলিয়ার সেই অন্ধকার যুগে এসেও আরবের বুকে সত্যের আলোকবর্তিকা জ্বালিয়ে সকল অন্ধকার দূর করেছেন। যখন মানবসমাজ এক চরম অধঃপতনে পৌঁছেছিল, তখন তিনি মুক্তির দ্যূত হয়ে এ ধরাধামে আগমন করেছিলেন। মানব কল্যাণে তার অবদান অতুলনীয়।

জন্ম ও বংশ পরিচয়:

৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ আগস্ট সোমবার সুবহে সাদেকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীতে প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। আরবের সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশের কুল শ্রেষ্ঠ হাশেমী গোত্রে তার জন্ম।

আদর্শ সমাজ সংস্কারক নেতা মহানবী (সা.):

মানব সভ্যতার ইতিহাসে মহানবী (সা.) বিশ্বের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নেতা ও আদর্শ সমাজ সংস্কারক তা সর্বজনস্বীকৃত। একটি অধঃপতিত আরব জাতিকে সুসভ্য জাতিতে পরিণত করার বিরল কৃতিত্ব কেবল তারই।

জাহেলিয়াতের ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত আরব সমাজকে তিনি সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক নানামুখী সংস্কারের মাধ্যমে একটি আদর্শ সমাজে পরিণত করতে সক্ষম হন। একটি আদর্শ সমাজ নির্মাণে মহানবী (সা.) যেসব গুণ অর্জন ও সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন তা নিচে উপস্থাপন করা হলো:

আল আমীন উপাধি লাভ:

একজন আদর্শ নেতার প্রধান গুণ সততা। আর ছোটকাল থেকেই হজরত মুহাম্মদ (সা.) এ গুণের অধিকারী ছিলেন। সততা, মহত্ত্ব, ন্যায়পরায়ণতা ও বিশ্বস্ততার কারণে আরববাসী তাকে ‘আল আমীন’ বলে ডাকত।

মদিনায় হিজরত:

কুরাইশদের অত্যাচারের মাত্রা যখন অসহনীয় হয়ে ওঠে, তখন মহানবী (সা.) আল্লাহর নির্দেশে স্বদেশ ত্যাগ করে মদিনায় হিজরত করেন। ফলে ইসলাম প্রচারে যোগ হয় নতুন মাত্রা। শুরু হয় মহানবী (সা.)-এর মাদানী জীবন।

রাজনীতিবিদ:

মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সেরা রাজনীতিবিদ। বিশৃঙ্খলাপূর্ণ আরব সমাজে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক সংস্কার সাধন করেন। মদিনায় রাষ্ট্র গঠন, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা, মদিনা সনদ, হোদায়বিয়ার সন্ধি প্রভৃতি তার রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচায়ক।

কয়েকটি যুদ্ধ:

মদিনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধিতে মক্কার কুরাইশরা শঙ্কিত ও ঈর্ষান্বিত হয়ে ওঠে। ইসলামী প্রজাতন্ত্র গঠন ও মুসলমানদের আধিপত্য বিস্তার প্রতিরোধকল্পে বিধর্মীরা ইসলাম এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কয়েকটি যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) এর জীবন অনেক বৈচিত্রময়। যেমন পূর্ণময় আর পবিত্র তেমনি অমানবিক কষ্ট আর লাঞ্ছনার। নবুয়ত্ব লাভের পর থেকে ইসলাম প্রতিষ্ঠা, প্রচার ও প্রসারের জন্য নবীজির প্রাণান্তর প্রচেষ্টা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। তিনি নবুয়ত প্রাপ্তির আগ থেকেই যেমন ছিলেন নিষ্পাপ, বিশ্বাসী আর ঈমানদার। নবুয়ত প্রাপ্তির পর সেটা আরও বেড়ে যায়। মহান আল্লাহর প্রতি মানুষের বিশ্বাস আর পরকালের আজাবের প্রতি ভিতি তৈরির কাজটা ওই কাফের আর জাহেলিয়াত যুগে খুব সহজ ছিল না। নিজের এবং সাহাবীদের জীবন বাজী রেখে তাকে ইসলাম প্রচার ও প্রসার ঘটাতে হয়েছে। সে জন্য শারীরিক ও মানসিক আঘাতের কোনো কমতি ছিল না। সব সহ্য করে নবীজি ইসলামকে আরব মরুভূমিতে সভ্যতার , মানবতা আর পরকালের মুক্তির প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

তার এই ত্যাগ আর আলোকিত জীবনকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখতে পৃথিবীতে এই দিনটিকে মুসলমানরা বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উদযাপন করে। এই উপলক্ষে দোয়া-দরুদ, মিলাদ মাহফিল, নফল রোজা রাখার পাশাপাশি আনন্দ মিছিল বা জসনে জুলুসে বের হয়। এই ধরনের উদযাপন নিয়ে মুসলমানদের মাঝে তাই মত-বিরোধও ইদানীং লক্ষণীয়। কারণ, নবী সাহাবা বা খেলাফত যুগে দিবসটি এভাবে পালিত হতো না। তখন সোমবার দিন বা ১২ রবিউল আউয়ালে নবীজির মতো রোজা রাখা হতো। আর ছিল দোয়া-দরুদ। সালাম। কিন্তু ১২০০ শতাব্দীর পর থেকে মিসর ও তুরস্ক ও কিছু আরব ভূমিতে দিনটিকে ঈদের মর্যাদা দিয়ে উদযাপন শুরু হয়। কাল ক্রমে এটি অন্যান্য মুসলিম দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আনন্দ মিছিল বা জসনে জুলুস বের করার প্রবণতা এখন বাংলাদেশসহ পাকিস্তান, ভারত, আফগান, ইরান, ইরাকসহ অনেক মুসলিম দেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যার সঙ্গে দ্বিমত করছেন বহু আলেম ও স্কলারস। তাদের বক্তব্য হচ্ছে নবীজি যা করেননি বা করতে বলেননি তা ইসলামে জায়েজ নয়। ইসলামে বহু নবী-রাসুলের আগমন ঘটেছে কিন্তু কারোরই জন্মদিন পালনের নজীর নেই।

অন্যপক্ষ মনে করেন ১২ রবিউল আউয়াল, সোমবার নবীজির তিরোধান দিবসও বটে। পৃথিবীকে পূর্ণতার আলোয় ভরিয়ে দিতে যে নবীজি এলেন সেই নবী সমগ্র মানবজাতিকে এতিম করে, কাঁদিয়ে যেদিন চির বিদায় নিলেন সেই দিনটি আনন্দের হয় কী করে?

সে যাক আমরা কোনো তর্কে না গিয়ে বলতে পারি যে প্রক্রিয়ায় নবীজিকে উপযুক্ত মর্যাদা আর শান্তির প্রতীক হিসেবে সবার শীর্ষে আসীন রাখা যায় আমাদের সেই পথটাই অনুসরণ করতে হবে। এমন কিছুতেই উৎসাহিত করা ঠিক না যা নবীর মেহনত ও ইসলামের মর্যাদাকে খাটো করতে পারে।

আমাদের বিশ্বাস করতেই হবে যে, বড় সমাজ সংস্কারক, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, মানবাধিকারের প্রবক্তা বিশ্বে আর দ্বিতীয় কেউ নেই। এ জন্য বিশ্বের বরেণ্য ব্যক্তিরাও একথা স্বীকার করেছেন, রাসূল (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ মানুষ। বর্তমানেও তার এ নীতি অনুসরণের মাধ্যমেই কেবল পৃথিবীর যেকোনো সমাজকে আদর্শ সমাজে পরিণত করা সম্ভব।

আমরা সব সময় বলি:

‘তুমি না এলে দুনিয়ায়, আঁধারে ডুবত সবি।’ মহান আল্লাহ আমাদের সেই প্রিয় নবীর সঠিক মর্যাদা আর ইসলামকে সমুন্বত রাখার তৈফিক দিন। আমিন।

পরিশেষে দরুদ সেই পবিত্র স্বত্বার নবী মোহাম্মদের প্রতি:

বালাগাল উলা বি কামালিহি

কাসা ফাদ্দুজা বি জামালিহি

হাসানাত জামিয়্যু খেছালিহি

সাল্লা আলাইহি ওয়া আলিহি।

লেখক: কবি ও কলামিস্ট।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Red March for Justice of Students in protest of the attack on external

বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদ বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের রেড মার্চ ফর জাস্টিস

বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদ বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের রেড মার্চ ফর জাস্টিস

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ‘রেড মার্চ ফর জাস্টিস’ শিরোনামে এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আমতলা’ থেকে এই মৌন মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় আমতলায় এসে শেষ হয়। সেসময় শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল ক্ষোভ আর বিচারহীনতার বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩১আগস্ট ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস হামলা চালায়, যা তাদের নিরাপত্তাহীনতাকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, এমন একটি ন্যক্কারজনক ঘটনার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ওই নীরবতা তাদের হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।

এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ওই হামলা শুধু আমাদের ক্যাম্পাসের ইট-পাথরের উপর নয়- এটি আমাদের অস্তিত্ব, আমাদের স্বপ্ন এবং আমাদের নিরাপত্তার উপর সরাসরি আঘাত। যেখানে আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, সেখানে প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা এবং ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Students in class room crisis in 5 years of educational institutions

৭০ বছরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কক্ষ সংকট, বিপাকে শিক্ষার্থীরা

৭০ বছরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কক্ষ সংকট, বিপাকে শিক্ষার্থীরা

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা। ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি লাভ করে ১৯৮৫ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক এমপিওভুক্ত হয়। দীর্ঘ ৭০ বছরের পথচলায় প্রতিষ্ঠানটি সরকারি বহুতল ভবনের বরাদ্দ পায়নি।

জানা গেছে, বর্তমানে মাদরাসাটি পাবলিক দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র (কেন্দ্র কোড ৭৮৯, নাম-ত্রিশাল-২ বাগান কেন্দ্র) হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত ক্লাসরুম না থাকায় নিয়মিত পাঠদান ও পরীক্ষা পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত আবাসন, ক্লাসরুম, মেয়েদের কমনরুম, পৃথক নামাজ ও অজুখানা। সবচেয়ে নাজুক অবস্থা স্যানিটেশন ব্যবস্থায়। যা পরীক্ষা কেন্দ্র ও শিক্ষার্থীদের মারাত্মকভাবে বিপাকে পড়তে হয়।

শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বলেন, মাদরাসাটি অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত হলেও নেই কোন বহুতল ভবন। টিনসেট আর জরাজীর্ণ হাফ বিল্ডিংয়ে কোন প্রকার চলছে পাঠদান। সরকার যদি দ্রুত বহুতল ভবন দিতো তাহলে এই সমস্যা থাকত না।’

আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমরা তো আগামী বছর পরীক্ষা শেষ করে চলে যাবো অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হব। তবু চাই আমাদের পরবর্তী ভাই-বোনেরা যেন কষ্টে না পড়ে।’

মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফয়জুর রহমান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো বহুতল ভবনের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। পুরনো ভবনে পাঠদান করতে হচ্ছে।

ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম জানান, আমি আশাকরি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি বহুতল ভবন বরাদ্ধ দিবেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী জানান, অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে আমরা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করবো।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Comilla is associated with the existence of Bangladesh Professor Dr Amanullah

কুমিল্লা বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত: প্রফেসর ড. আমানুল্লাহ

কুমিল্লা বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত: প্রফেসর ড. আমানুল্লাহ

কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষ আর চট্টগ্রাম-গাজীপুর গিয়ে কাগজপত্র আনতে হবে না। পরীক্ষার খাতা জমা দিতে হবে না। এডমিশন টেস্টের খাতা দেওয়ার জন্য আর দৌড়াতে হবে না। আপনারা কুমিল্লায় বসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করতে পারবেন। এই আঞ্চলিক অফিস কুমিল্লাতে আমাদের আরো আগেই করা দরকার ছিল। শুক্রবার বেলা ১১টায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধনী সভায় এসব কথা বলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অডিটোরিয়াম এ উদ্বোধনী সভা হয়।

উদ্বোধনী সভার পর কুমিল্লা হাউজিং এস্টেট এলাকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। সেসময় কুমিল্লা অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষকে নিয়ে গবেষণা হতে পারে মন্তব্য করে ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, হাজার বছরের সংস্কৃতির শহর কুমিল্লা, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে জড়িত। কুমিল্লার সাংস্কৃতিক ইতিহাস, খাবার, মিষ্টান্ন ও কুমিল্লার মানুষদের নিয়ে শত শত পৃষ্ঠা লিখা যাবে। আমি কুমিল্লা নিয়ে গর্ববোধ করি। কুমিল্লার ছেলে মেয়েরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। তারা চমৎকার পারফর্ম করছে। শুধু বললে হবে না। আমি নিজের চোখে দেখেছি, তারা কতটা পরিশ্রমী। যারা পরিশ্রম করে তারা তো সফল হবেই।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল বাসার ভূঁঞার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আযম, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজিব আল মিঠু।

ড. এ এস এম আমানুল্লাহ আরো বলেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব স্থাপন হবে। যেখানে জাপানি, কুরিয়ান, ইংরেজি আরবি ভাষা শিক্ষা দেওয়া হবে। যার ফলে এই কলেজে শিক্ষার্থীদের ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। ভিক্টোরিয়া কলেজের জিয়া অডিটোরিয়াম সংস্কার করা দরকার। এ বিষয় নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বসবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Marriage in Manikganj Hospital Bedi

মানিকগঞ্জে হাসপাতাল বেডেই বিয়ে সম্পন্ন

মানিকগঞ্জে হাসপাতাল বেডেই বিয়ে সম্পন্ন

সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বিয়ের লগ্ন ঠিক রাখতে হাসপাতালের বেডে শুয়েই বিয়ে সম্পন্ন করলেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত শয্যাশায়ী অভিজিৎ সাহা। গত বৃহস্পতিবার রাতে মানিকগঞ্জ শহরের আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে মানিকগঞ্জ শহরের চাঁন মিয়া লেন এলাকার অভিজিৎ সাহার সঙ্গে পারিবারিকভাবে ঘিওরের বানিয়াজুরী এলাকার অর্পিতা সাহার বিয়ে সর্ম্পন্ন হয়। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ায় বর-কনেসহ উভয়ের পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত।

জানা যায়, কয়েকমাস পূর্বে পারিবারিকভাবে মানিকগঞ্জ শহরের চাঁন মিয়া লেন এলাকার অরবিন্দ সাহার বড় ছেলে অভিজিৎ সাহার সঙ্গে ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী এলাকার সুবোধ সাহার মেয়ের অর্পিতা সাহার বিয়ে ঠিক করা হয়। কিন্তু প্রায় দুমাস আগে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকার ধামরাইয় এলাকায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হন অভিজিৎ সাহা। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় চিকিৎসা করানো হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থা একটু উন্নতি হলে ঢাকায় থেকে গত দুই সপ্তাহ আগে তাকে মানিকগঞ্জ আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার সন্ধা ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ছিল বিয়ের লগ্ন। অপরদিকে দুর্ঘটনায় আহত হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে যন্ত্রনায় বেডে কাতরাচ্ছেন শয্যাশায়ী অভিজিৎ সাহা। এরপর বর-কনের পরিবারের সিন্ধান্তে সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বিয়ের লগ্ন ঠিক রাখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে হাসপাতালের ৩ তলার কিছু অংশ ফাঁকা করে সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

দেখা যায়, হাসপাতালের ৩তলার ৪নম্বর বেডে হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ পড়ে শুয়ে আছে বর অভিজিৎ সাহা আর বেডের পাশেই বসে আছে কনে। বেডের পাশেই বসে ও দাড়িয়ে বর-কনের পরিবারের সদস্যরা। সাধারণ বিয়ের মতো বরের বেডকে ফুল দিয়ে সাজানো হয়।

বরের বাবা অরবিন্দ সাহা জানান, ধর্মীয় রীতিনীতি ও বিয়ের লগ্ন অনুযায়ী বর ও কনেকে সাজানো হয়। এরপর পুরোহিত উভয় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে পরানো হয়। যদিও দুর্ঘটনায় আহত ছেলের জন্য মন খারাপ। তারপরও বিয়েতে অনেক আনন্দ হয়েছে। নববধু অর্পিতা সাহা জানান, মানুষের জীবনে ভালমন্দ যাই হবে, সেটা ভগবানের পক্ষ থেকেই হবে। সেটা মেনে নিয়েছি। সবাই আমাদের নতুন সংসার ও আমার স্বামীর সুস্থতার জন্য আশির্বাদ করবেন।

হাসপাতালের মেডিকেল অ্যান্ড ইউনিট ডে ডা. সিরাজুল ইসলাম জানান, আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আমরা সঠিকভাবে চিকিৎসা দিয়ে আসছি। এরপর রোগীর পরিবার বিয়ের কথা বলায় উর্দ্বোতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিয়ের জন্য রোগীর বেডের পাশে কিছু জায়গা খালি করে দেই এবং আমাদের সাধ্যমত তাদের বিয়ের জন্য ব্যবস্থা করে দেই। এমন ঘটনায় আমরাও অনেক আনন্দিত।

তবে সাধারণত! বাঙালী সনাতন ধর্মীয়দের বিয়ের অনুষ্ঠানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আচার হল সাত পাকে বাঁধা। বিয়ের দিন ছাদনাতলায় বর এলে কনেকে পিঁড়িতে বসিয়ে নিয়ে আসা হয়। কনের মুখ পান পাতা দিয়ে ঢাকা থাকে। বরের চারপাশে কনেকে ঘোরানো হয় সাতবার। এক্ষেত্রে অভিজিৎ সাহা পিঁড়িতে নয়, হাসপাতাল বেডে শুয়েই সাতপাঁক উপভোগ করলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Farmers are disappointed as the price of drinking water is low in Bhola Charfashion

ভোলার চরফ্যাশনে পানের দাম কম হওয়ায় হতাশ কৃষকরা

ভোলার চরফ্যাশনে পানের দাম কম হওয়ায় হতাশ কৃষকরা

দেশের কয়েকটি অঞ্চলে মিষ্টি পান চাষাবাদ করা হয়। তার মধ্যে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়ও এই মিষ্টি পান চাষাবাদ করছেন কৃষকরা। এখানকার মিষ্টি পান শুধু ভোলাতেই খ্যাতি তা নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও এর খ্যাতি রয়েছে। বিগত সময়ে দেশের বাহিরেও এই পান রপ্তানি করা হয়েছে। বিশেষ করে বিয়ে ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের অতিথি আপ্যায়নে এই মিষ্টি পান বিবেচিত হয়ে থাকে। এছাড়া অনেকেই বেড়াতে গেলে কয়েক বিড়া পান সঙ্গে নিয়ে যান প্রিয়জনদের বাড়িতে।

চরফ্যাশন উপজেলায় পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে পান চাষে ভালো ফলন হলেও বাজারে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় পান বিক্রি করে তারা যে দাম পাচ্ছেন, তা চরমভাবে হতাশাজনক বলে তারা মনে করেন। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা সাধারণত আবাদি-অনাবাদি ও বাড়ির পাশে পান চাষাবাদ করেন। পান চাষ করেই অনেক অসহায় ও হতদরিদ্র কৃষকরা স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চরফ্যাশন সদরে পানের পাইকারি হাটে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা পানের পাই সাজিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাইকারদের অপেক্ষায়। চাষিরা বিভিন্ন বাহনে করে এই হাটে পান নিয়ে আসেন। সপ্তাহ শনিবার ও বৃহস্পতিবার চরফ্যাশন সদরে পানের হাট বসে। এখান থেকেই পাইকাররা পান কিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পান সরবরাহ করেন।

কৃষকরা জানান, ৭২টি পানে এক বিড়া। ১২ বিড়া পানে এক পাই। তাদের কাছ থেকে পাইকাররা পাই হিসেবেই পান কিনছেন। এক সময়ে তাদের উৎপাদিত এই পান দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হত। তবে ৫ আগস্ট ২০২৪ এর পর এই পান আর বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে না। এছাড়া পানের দাম কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত এই ৬ মাস পান উৎপাদন বেশি হয়। চলতি মৌসুমে ১০৫ হেক্টর জমিতে পান চাষাবাদ হচ্ছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন কৃষক পান চাষাবাদ করছেন। এর মধ্যে নীলকমল, নুরাবাদ, আহাম্মদপুর, এওয়াজপুর ও ওসমানগঞ্জ ইউনিয়ন পান চাষ বেশি হয়। কৃষি অফিস বলছে, বর্ষার মৌসুমে পানের দাম কিছুটা কম থাকে। তবে শীত মৌসুমে পানের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে কৃষকরা তখন তাদের লোকসান পুষিয়ে নিতে পারেন। পান চাষিদের দাবি, তারা বিগত বছরগুলোতে বর্ষার মৌসুমে পান বিক্রি করে লোকসানে পড়েনি। অন্তত তাদের খরচ পুষিয়ে কিছুটা লাভবান হয়েছেন। তবে এই বছর একেবারেই লোকসানে রয়েছে তারা।

উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের পানচাষি লিটন বিশ্বাস বলেন, ‘আমি চলতি মৌসুমে এক একর জমিতে পান চাষ করছি। এতে আমার প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ধার-দেনা করে প্রতি বছরেই পান চাষ করি। তবে বিগত বছরগুলোতে খরচ পুষিয়ে লাভবান হয়েছি। অন্য কোনো আয়ের উৎস নেই, পান বিক্রি করে যে আয় হয় তা দিয়েই চলে সংসার। তবে এই বছরে এখনো পর্যন্ত ২ লাখ টাকার পান বিক্রি করে লোকসানে রয়েছি। এদিকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’ নুরাবাদ ইউনিয়নের চাষি নিমাই বৈরাগী বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই পান চাষাবাদ করে আসছি। চলতি মৌসুমে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ২ একর জমিতে ৯৫০টি বড় পান চাষ করছি। এক পাই পান যেখানে ১ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি হয়েছে, সেই পান এখন ৬০০ টাকা বিক্রি হয়। সার-ওষুধের দাম অনেক, খরচের সঙ্গে আয়-ব্যয়ের হিসেব মিলছে না। সরকার অন্যান্য কৃষিতে কৃষকদের সার-বীজসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে থাকেন। এই পান নিত্য প্রয়োজনীয়, তবে আমরা পান চাষিরা সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজমুল হুদা জানান, ‘বিভিন্ন কারণে পানচাষিরা বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছরে দাম কিছুটা কম পাচ্ছে। তবে আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে কথা বলে জেনেছি যদি পান বিদেশেও রপ্তানি বাড়ানো যায় তাহলে কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাবে। এছাড়া সরকার মাঠ ফসলের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিয়ে থাকে। তবে পানচাষিদের জন্য প্রণোদনার সুযোগ নেই। ভবিষ্যতে যদি সরকার পানচাষিদের জন্য কোনো বরাদ্দ দেয় তাহলে আমরা তাদের সহায়তা করতে পারব।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bangladesh sent urgent relief assistance to Afghanistan

আফগানিস্তানে জরুরি ত্রাণ সহায়তা পাঠাল বাংলাদেশ

আফগানিস্তানে জরুরি ত্রাণ সহায়তা পাঠাল বাংলাদেশ

আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর খাদ্য, পানি, বাসস্থান এবং জরুরি চিকিৎসার অভাবে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বন্ধুপ্রতিম দেশটির এই মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত মর্মাহত।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে ভূমিকম্পে সৃষ্ট আকস্মিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আফগান জনগণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সকাল ৮টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি পরিবহন বিমান জরুরি ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কাবুলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

শুক্রবার ১১.২২৭ টন ত্রাণ সহায়তার মধ্যে রয়েছে তাঁবু, কম্বল, শীতবস্ত্র, খাবার পানি, শুকনো খাবার, কাপড়, বিস্কুট, মিল্ক পাউডার, নুডলস ও ওষুধ। এসব ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর শেষে বিমান বাহিনীর পরিবহন বিমানটি আজই দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অপারেশন ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন বিমানটি বাংলাদেশ ত্যাগের পূর্বে এ উপলক্ষ্যে প্রেস ব্রিফিং করেন। সেসময় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বাস করে, সরকারের পাঠানো এই মানবিক সহায়তা আফগানিস্তানের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের দুর্ভোগ কমাতে সহায়ক হবে। আগামী দিনগুলোতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বৈশ্বিক যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আত্মনিয়োগের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭মিনিটে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬.০ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২ হাজার ২০৫ জন নিহত এবং ৩ হাজার ৬৪০ জন আহত হন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Six members of the cycle were arrested in the temptation of the job

চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

অনলাইনে চাকরির প্রলোভন ও টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা চালানো সংঘবদ্ধ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চক্রের মূলহোতা আকাশ (২২), রাশাদ (২৮) এবং তাদের সহযোগী আসাদ (৩০)।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সিআইডি সাইবার ক্রাইম অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন অপারেশনের একটি টিম তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও অনলাইন গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে রাজধানীর ধানমন্ডি, ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।

সিআইডির তদন্তে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা ভুয়া খণ্ডকালীন চাকরি ও বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো। টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে কয়েক লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে স্বল্প সময়ে কয়েকগুণ মুনাফার প্রলোভন দেখাতো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ চক্রের সঙ্গে দেশি বিদেশি আরও অনেক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন এবং ছদ্মনামে ব্যবহৃত বিভিন্ন সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সিআইডি জানিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে এ প্রতারণা চক্রের মূল রহস্য উন্মোচন করা হবে। জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

মন্তব্য

p
উপরে