অবৈধ ‘সাপ্লিমেন্ট’ কেনার অভিযোগের পর মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন জাপানের অন্যতম পরিচিত ব্যবসায়ী সান্টোরি হোল্ডিংসের সিইও তাকেশি নিনামি।
টোকিও থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।
জিজি সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে একটি অবৈধ ওষুধ মামলায় একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার পর নিনামির বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত শুরু হয়।
আগস্টে পুলিশ তার বাড়ি তল্লাশি চালায়, তবে নিনামি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তল্লাশি করে কোনো অবৈধ ওষুধও পাওয়া যায়নি।
সান্টোরির সভাপতি নোবুহিরো তোরি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি যে সাপ্লিমেন্টগুলো কিনেছিলেন, তা বৈধ বলে বিশ্বাস করেছিলেন এবং সেগুলো নিয়ে তদন্তও করা হয়েছে।
দেশের ব্যবসায়িক লবি হিসাবে দায়িত্বে থাকা নিনামি ২০১৪ সালে সান্টোরি হোল্ডিংসে যোগ দেন।
এর আগে তিনি ল’সন কনভেনিয়েন্স স্টোর চেইনের সিইও ছিলেন।
সান্টোরি ডিসেম্বরে নিনামির স্থলে নতুন একজন সভাপতি নিযুক্ত করেন। সান্টেরি বিশ্বখ্যাত হুইস্কির জন্য পরিচিত।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পতিত স্বৈরাচার প্রশাসনের প্রনীত গবেষণা নীতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর তিন দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন শেষে উপাচার্যের কার্যালয়ে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা।
তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, পতিত স্বৈরাচার প্রশাসনের প্রণীত গবেষণা নীতি অবিলম্বে বাতিল করা, ঢাবি প্রণীত নীতিমালার সঙ্গে সমন্বয় করে ইবির নতুন গবেষণা নীতি প্রণয়ন করা, বিদ্যমান ভর্তি পরীক্ষা নীতি বাতিল করে নতুন নীতি প্রনয়ন এবং পুনরায় এম.ফিল ও পিএইচ.ডি ভর্তির সুযোগ দেওয়া।
সে সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সভাপতি নূর আলম ও সাধারণ সম্পাদক আহমাদ গালিব, সহসভাপতি মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বল, সাংগঠনিক সম্পাদক তাহমিদ হাসানসহ আরও অনেকে।
মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ গালিব বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এম. ফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষায় সিজিপিএ রাখা হয় ৩.৫০ পয়েন্ট। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শর্ত আরোপ থাকে ৩.০০ পয়েন্ট এবং বিশেষ ক্ষেত্রে ২.৫০ ও দেখেছি। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পতিত স্বৈরাচার প্রশাসনের প্রণীত নীতিমালার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের বৃহৎ অংশকে গবেষণার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার এক সুস্পষ্ট নীল নকশা। এই নীল নকশা প্রত্যাখ্যান করে নতুন নীতি প্রনয়ন করতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আমরা রিসার্চটাকে কোনভাবে নষ্ট করতে চাইনা। যেহেতু এটা এমফিল পিএইচডি সেহেতু কিভাবে মানসম্মত রিসার্চ ডিগ্রি দেওয়া যায় সেই পথ তৈরির চেষ্টা করতেছি।
থাকার কষ্ট, খাবারের কষ্ট, বর্ষা কিংবা বৃষ্টি এলেই ভাঙা চালে বৃষ্টির পানি। ৬০ বছরের বৃদ্ধা ফজিলা বেগমের জীবনের প্রতিদিনই যেন একেকটি সংগ্রাম। খাবার জোটে অন্যের দান-খয়রাতে, আর বৃষ্টি এলে ভাঙা ঘরে শোয়ার জায়গাটুকুও থাকে না।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মৃত ওমর ফারুকের স্ত্রী ফজিলা বেগম এক যুগ আগে স্বামীহারা হন। দাম্পত্য জীবনে তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ইফতিখার ও মেঝো ছেলে সোহেল মারা গেছেন। একমাত্র জীবিত ছেলে জুয়েলও প্রতিবন্ধী। নাতনি জান্নাতকে (১০) নিয়ে জরাজীর্ণ একটি ঘরেই চলছে ফজিলার জীবন। ফজিলা বেগম জানান, গত ২২ বছর ধরে স্বামীর রেখে যাওয়া একমাত্র ঘরে বসবাস করছেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘরের টিনের চাল মরিচা ধরে ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি ঠেকাতে ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে পলিথিন ও পুরোনো কম্বল। ভাঙাচোরা দরজা-জানালা ও বেড়ায় পানি ঢুকে ঘরটিকে করে তুলেছে আরও অস্বাস্থ্যকর। একই অবস্থা শৌচাগারেরও।
ফজিলা বেগম বলেন, ‘একটা থাকার মতো ঘর পেলে জীবনের শেষ বয়সে শান্তিতে মরতে পারতাম। আশপাশের মানুষ খাবার দিলে খাই, না দিলে না খেয়েই থাকি। প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা বা নাতনিকে ভালো খাবার খাওয়ানো কোনোদিন সম্ভব হয়নি।’
তিনি জানান, মেঝো ছেলে মারা যাওয়ার পর তার রেখে যাওয়া একমাত্র কন্যা জান্নাতকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছেন। কিন্তু পড়াশোনার খরচ বা খাবারের ব্যবস্থা করতে না পারায় দিন কাটছে কষ্টে। এর মধ্যেই গত ৩১ আগস্ট রাতে তার ভাঙা ঘর থেকে চাল ও একটি মোবাইল চুরি হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন সিকদার বলেন, তার খুব অসহায় অবস্থায় দিন যাচ্ছে। ভাঙা ঘরে বৃষ্টি-বাদল ও শীতকালে ভোগান্তি বাড়ে। তার জন্য দ্রুত একটি ঘরের ব্যবস্থা করা জরুরি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ জানান, ‘বৃদ্ধা ফজিলার ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই তার বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি ঘর নির্মাণে অর্থ সহায়তার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা হবে।
শিক্ষা হোক আলোর পথ, আগামীর বাংলাদেশ গড়ুক যথোপযুক্ত- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় ৬ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে ১ বছরের পড়ালেখার খরচ বহনে করার জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেছে জসিম উদ্দীন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। গত সোমবার নোয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ বৃত্তি অনুষ্ঠান হয়। এতে রাউজানের প্রায় ১৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ রফিক। ফরিদুল ইসলাম আনসারী ও সাংবাদিক এস এম ইউসুফ উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ। আর ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দিয়ে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন। প্রধান আলোচক ছিলেন জেলা শিক্ষক সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মাস্টার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার অং ছিং মারমা, রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া, একাডেমিক সুপারভাইজার সজল চন্দ্র চন্দ, ফাউন্ডেশনটির পরিচালক মোখতার আহমদ, আবু তাহের, ইয়াসিনুল হক, ফারুকে আজম, সরোয়ার হোসাইন, আহমদুল হক, খসরুল আমিন চৌধুরী, জাহেদুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া জসিম উদ্দিন স্মৃতি বৃত্তি প্রকল্পের সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের থেকে এইচএসএসি এবং আলিম পরীক্ষায় সারা রাউজানে সর্বোচ্চ বেশি নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষার সহায়তার জন্য ৩ লাখ টাকা, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ২ লাখ টাকা এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ১ লাখ এবং এসএসসিতে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ২ লাখ টাকা,দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পওয়া শিক্ষার্থীকে দেড় লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ তৃতীয় নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ১ লাখ টাকার এক কালীন বৃত্তি প্রদান করা হবে।
নড়াইল সদর উপজেলার সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনেই খেলার মাঠ। একটি নালার অভাবে (ড্রেন) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সারা বছরই খেলার মাঠটি বর্ষার পানিতে তলিয়ে থাকে। যে কারণে বিদ্যালয়সহ এলাকার কোমলমতি শিশুরা খেলাধূলা করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকার মানুষের দাবি মাঠ থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে শিশুদের খেলাধূলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।
সরেজমিন দেখা গেছে, সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতারামপুর সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠ। দ্যিালয় সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে ইটের সোলিংয়ের ভাঙ্গাচোরা রাস্তা। পশ্চিম পাশ দিয়ে পিচের রাস্তা। রাস্তা থেকে মাঠটি প্রায় ৬ ফুট নিচে যা পানিতে তলিয়ে আছে। বন্ জঙ্গলে ভরে আছে মাঠটি। যে কারণে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা এই মাঠে খেলাধূলা করার কোন সুযোগ পাচ্ছে না। বিকেল বেলাতেও এলাকার ছেলে মেয়েরা খেলতে পারছে না।
খেলার সুযোগ না পেয়ে কোমলমতি শিশুরা ফেসবুকে বুদ হয়ে পড়ে থাকছে। মাঠে হাটু সমান পানি থাকার কারণে এলাকার মানুষ সেখানে কৈ ও তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চাষ করেছে। রাস্তা নির্মাণের বেশ কয়েটি পিলার মাঠের পানির মধ্যে দাড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বিকেল বেলায় বেশ কিছু শিশু বরশি নিয়ে দুজনে কাপড় অথবা গামছা লম্বালম্বি ধরে সেখানে মাছ ধরতে দেখা যাচ্ছে। বর্ষার কারণে গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে আছে। শিশুসহ বয়ষ্ক মানুষদের ঠান্ডা-জ্বরে ভুগতে হচ্ছে।
সীতারামপুর বিদ্যালয় সংলগ্ন দোকানী তুষার রায় জানান,ছেলেমেয়েরা জলাশয়ের পাড়ে খেলতে গিয়ে অনেক সময় পানিতে পড়ে যায়। বাধ্য হয়ে ওই শিশুদের পানি থেকে তুলে আনতে হয়। তিনি বলেন,রাস্তা থেকে মাঠটি অনেক নিচে। চারপাশে রাস্তা থাকার কারণে বর্ষার পানি নিষ্কাশণ না হওয়ায় মাঠটি তলিয়ে থাকে। স্কুলের ছেলেমেয়েরা খেলাধূলা করতে পারছে না।
সীতারামপুর গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিপ্লব পোদ্দার বলেন,যেহেতু সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠ এটি। মাঠের পানি নিষ্কাশনের ব্যাপারে সরকারিভাবে এগিয়ে আসা উচিৎ। তিনি বলেন,বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে থাকে। এই পানি বের হ্ওয়ার কোন নর্দমা না থাকায় এই অবস্থাতেই সারা বছর পড়ে থাকে। ফলে মাঠের পাশের বাসিন্দাদের জ্বর-সর্দ্দি সব সময় লেগেই থাকে। মাঠের পানি বের করার সুব্যবস্থা করা হলে বিদ্যালয়ের পরিবেশটা ভালোভাবে ফিরে আসবে।
সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাম্মাৎ সবেদা খাতুন বলেন, মাঠটি সরকারি খাস জমির ওপর। বিদ্যালয়ের শিশুরা ছাড়াও সীতারামপুরসহ আশপাশের ছেলেমেয়েরা এই মাঠে খেলাধূলা করে থাকে। তিনি বলেন,পানি নিষ্কাশনের ব্যাপারে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস একবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দিয়ে মাঠের দক্ষিণ কোনার ঢালু জায়গায় রিংস্লাপ বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পানি বের হবার মত কোন সুযোগ না থাকায় প্রতিবেশিদের বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় এলাকার মানুষ সেই রিংস্লাপের দুই পাশে মাঠি দিয়ে ভরে দেন। ফলে পানি বের হতে না পারায় আজ মাঠের এই অবস্থা। তিনি বলেন,ক্লাস শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের কোন জায়গা না থাকায় শ্রেনীকক্ষেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করানো হয়। এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেন,পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় মাঠের অবস্থা খুবই করুন। সব সময় পানি জমে থাকে। বনজঙ্গলে ভরে গেছে। তিনি দাবি করেন,মাঠ সংস্কারসহ মাটি ভরাটের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অথবা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন পেলে পানি নিষ্কাশনসহ মাঠে বালু দেবার প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া যেতে পারে।
নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে। আহত শতাধিক। এদের মধ্যে ৫ জন গুরুতর আহত অবস্থায় নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে পুরো ইপিজেড এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ইপিজেডের এভারগ্রীণ কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত হাবিব উত্তরা ইপিজেডের ইকু প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিক ও কাজিরহাট এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে বলে জানান শ্রমিকরা।
জানা যায়, এভারগ্রিণ কোম্পানির শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিলেন। মঙ্গলবার এভারগ্রিণ কোম্পানি ঘোষণা করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তারই জের ধরে মঙ্গলবার সকালে ইপিজেডের মূল গেটে অবস্থান নেয় শ্রমিকরা। ইপিজেডের অন্য কোম্পানির শ্রমিকদের কাজে যোগদান বাধা প্রদান করতে থাকে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে হাবিব নামে এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়। পড়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইপিজেডের শ্রমিক মমিনুর রহমান বলেন, ‘আমরা অন্য কারখানার কোনো শ্রমিককেই প্রবেশে বাধা দেইনি। বরং তারাই আমাদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদের সঙ্গে অবস্থান নেয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রধান গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা অমানবিকভাবে এক নারী শ্রমিককে মারধর করতেছিল। তখন আমরা সব শ্রমিকরা এগিয়ে গেলে তারা আমাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে তিনি মারা যান।’
আরেক শ্রমিক মো. রায়হান বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করছি। কিন্তু আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা চালাল কেন? আমরা তো কোনো রাজনৈতিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামিনি। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছি।’
লিপি আক্তার নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা ডিউটি করতে গেছি। যায়া দেখি গেট বন্ধ। হঠাৎ করে সেনাবাহিনী-পুলিশ আমাদের ওপর হামলা ও গুলি চালায়। তারা কার অনুমতি নিয়ে আমাদের ওপর গুলি চালাল। আমাদের এক ভাই নিহত হইল। এর দায়ভার কে নেবে। সরকারকে জবাব দিতে হবে।’
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানে মোট ৬ জনকে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে হাবিব নামে একজন ব্যক্তি ছিল তাকে আমরা মৃত অবস্থায় পাই। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
৫৬-বিজিবি নীলফামারীর অধিনায়ক লে. কর্নেল এস.এম বদরুদ্দোজা বলেন, ‘বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো ধরনের মব সৃষ্টির সুযোগ নেই। প্রশাসনিক পর্যায়ে কাজ চলছে। বর্তমানে ইপিজেডের সকল কোম্পানি বন্ধ রয়েছে।
এই রিপোর্টলেখা পর্যন্ত উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ, এভারগ্রীণ কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক চলমান থাকায় তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল ‘সোনালি আঁশ’ খ্যাত পাট এখন ওঠতে শুরু করেছে নওগাঁ জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। মৌসুমের শুরুতে সন্তোষজনক দাম পেয়ে আংশিক খুশি কৃষকরা। তবে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে পাটের দাম কমেছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত, যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
জেলার মান্দা উপজেলার সাপ্তাহিক সতিহাটে মঙ্গলবার ছিল পাটের জমজমাট বেচাকেনা। এই হাটটিকে জেলার সবচেয়ে বড় পাটহাট হিসেবে এলাকার মানুষের কাছে পরিচিত। এই পাটের হাটটিতে মঙ্গলবার ভোর থেকেই কৃষকদের ভ্যান, সাইকেল ও ভটভটি করে পাট নিয়ে আসতে দেখা গেছে। ওই হাটটিতে সকাল ৮টার মধ্যেই বেচাকেনা শেষ হয়ে যায়।
মঙ্গলবার প্রকারভেদে প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে কৃষকরা বলছেন, আগের সপ্তাহে এ দাম ছিল ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকা। ফলে দাম কমে যাওয়ায় কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন চাষিরা। তাদের মতে, কিছু ব্যবসায়ীর ‘সিন্ডিকেটের’ কারণেই দাম কমানো হয়েছে।
পাট চাষিরা বলছেন, প্রতি বিঘা পাট চাষে হালচাষ, বীজ, সার, সেচ, শ্রমিক, কীটনাশক, জাগ দেওয়া ও কাটা-মাড়াইসহ মোট খরচ পড়ে ১১ থেকে ১৪ হাজার টাকা। সাধারণত বিঘাপ্রতি জমিতে ফলন হয় প্রায় ৭ থেকে ১০ মণ। গত বছর পাটের দাম ছিল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা মণ। সেই তুলনায় এবার কিছুটা ভালো দাম মিললেও বাজারে অনিশ্চয়তা থাকায় চাষিরা সন্তুষ্ট নন।
মান্দার বাঙ্গালপাড়া গ্রামের চাষি বেলাল হোসেন বলেন, ‘গত সপ্তাহে পাট বিক্রি করেছি ৩ হাজার ৭০০ টাকা মণ দরে। আর এক সপ্তাহ পরেই ৩ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে হলো। এভাবে দাম কমতে থাকলে আমরা লোকসানে পড়ব। কারণ পাট চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুটিই বেশি।’
মহাদেবপুর থেকে আসা আরেক চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে কিছু কিছু এলাকায় পাট খেত নষ্ট হয়েছে। তবে ভালো ফলন পেয়েছি, বিঘায় ৮ মণ হয়েছে। দাম পেয়েছি ৩ হাজার ৭০০ টাকা মণ, যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা ভালো।
বাজারের অবস্থা নিয়ে পাট ব্যবসায়ী শামিম আহমেদ জানান, ‘বাজারে আসা পাট কিছুটা ভেজা থাকায় দাম কম। এছাড়া রাজধানীর মোকামে দাম কমে যাওয়ায় এখান থেকেও কম দামে কিনতে হচ্ছে। গত সপ্তাহে প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকায় কিনেছি। এবার হাটে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার পাট লেনদেন হয়েছে।’
পাটের ভবিষ্যৎ এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শ: জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. খলিলুর রহমান জানান, পানি স্বল্পতা, আঁশ ছাড়ানোর জটিলতা ও শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকরা ধীরে ধীরে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে জেলার পাট আবাদ গত ৫ বছরে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর কমেছে।
তিনি আরও জানান, এ বছর জেলায় ৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯ হাজার ৬৮৫ টন পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো গেলে পাটের চাহিদা এবং দাম উভয়ই বাড়বে। এতে কৃষকরা উৎসাহিত হবেন এবং পাটের হারানো গৌরব ফিরে আসবে।
পাটের আবাদ, উৎপাদন ও বিপণনে একাধিক চ্যালেঞ্জ থাকলেও মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে। বাজার ব্যবস্থাপনা ও সরকারি সহযোগিতা পেলে কৃষকরা আবারও পাটচাষে আগ্রহী হতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ১০ হাজার ৫০০ জন কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে উন্নত জাতের পাট বীজ ও রাসায়নিক সার প্রদান করা হয়েছে। পাটের ন্যায্য দাম ও আঁশ ছাড়ানো সুবিধা বাড়ানো গেলে আগামীতে চাষাবাদ বাড়বে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনে সে অনুযায়ী আমরা পাট চাষ বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
নওগাঁ পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘পাটের বাজারমূল্য এবং আঁশ ছাড়ানোর আধুনিক কৌশল সুবিধা যদি বাড়ানো যায় তাহলে পাটের হারানো গৌরব ফিরে পাওয়া সম্ভব।
জেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর তিন হাজার ৪১০ হেক্টর জমি থেকে ৯ হাজার ৬৮৫ টন পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার বাজারমূল্য অন্তত ৭২ কোটি ৬৩ লাখ টাকার বেশি।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকেল ৫টায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে অংশ নেন- এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
এরআগে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি’র সঙ্গে বৈঠক করেন।
ধারাবাহিক এই বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য