আজ ১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের এই দিনে বিএনপি গঠন করেন। তিনি ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান শহীদ হন। এরপর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির হাল ধরেন তার সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দলের চেয়ারপারসন। ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে এবং মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। তিনি ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই দক্ষতার সঙ্গে দল পরিচালনা করছেন তিনি।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল ছয়টায় বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বেলা ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ করা হবে। জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এতে অংশ নেবেন বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। এদিন দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি হবে।
দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে দেওয়া এক বাণীতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের অধিকার আদায়, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই বর্তমানে বিএনপির মূল লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী আদর্শের সঙ্গে জনগণকে একত্রিত করার লক্ষ্যে মহান স্বাধীনতার ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। দিনটি বাংলাদেশি মানুষের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। দলটি দেশের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং শক্তিশালী সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার নীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনতার পরপরই একদলীয় বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা গণতন্ত্রকে হত্যা করে। সেই সময়ের আওয়ামী শাসন ব্যবস্থায় সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে ১০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। তৎকালীন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বাকশাল কায়েম করে স্বৈরশাসনকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করে এবং বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে।
শহীদ জিয়াউর রহমান পুনরায় বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত করেন এবং নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি বিগত ৪৭ বছরে কয়েকবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম-এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘নানামুখী চক্রান্তের মধ্যেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপি অতন্দ্র প্রহরীর মতো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। নির্বাসিত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অসংখ্য নেতাকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন।’
তিনি ৮০’র দশকে ৯ বছরের সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির আপসহীন ভূমিকার কথা স্মরণ করেন। ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করে দেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান দৃঢ় করা হয়।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি বারবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তাই আজ বিএনপি সমধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দলের আদর্শিক ভিত্তি উদারনীতি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতি উদারপন্থি রাজনীতির দ্বারা অনুপ্রাণিত। দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, ব্যাংক ঋণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স ব্যবস্থায় যুগান্তকারী অগ্রগতি এনেছে। এর ফলে দেশীয় অর্থনীতি শক্ত ভিত্তিতে দাঁড়াতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের আস্থা অটুট রেখে বিএনপি দেশের সেবায় নিবেদিত থাকবে। যারা দলের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে আইনের শাসন, স্বাধীন মত প্রকাশ, সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই বিএনপির অঙ্গীকার।’
তারেক রহমান দেশের গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতা, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি রোধেও গুরুত্বারোপ করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ঢামেকে পৌঁছান এবং নুরুল হক নুরের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের বিষয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি নুরুল হক নুরসহ অন্যান্য আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, নুরুল হক নুরসহ আহতদেরকে উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান উপদেষ্টাকে জানান আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য একটি বিশেষায়িত মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাঁদের সর্বোচ্চ মানের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
নুরুল হক নুরের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এই ঘৃণ্য হামলার ঘটনায় গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি এ জঘন্য হামলায় জড়িতদের সরকারের পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে মর্মেও তিনি আশ্বস্ত করেন।
এ সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান ও অন্যান্য চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।
টানা তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে জেলে, বনজীবী ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য খুলছে সুন্দরবনের দ্বার।
বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে আজ থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সরব উপস্থিতিতে কোলাহলপূর্ণ হয়ে উঠবে সুন্দরবন।
দীর্ঘ সময়ের নিষেধাজ্ঞা শেষে সুন্দরবনের দ্বার খোলায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন পর্যটন ব্যবসায়ী ও জেলেরা। সেই লক্ষ্যে শরণখোলা উপজেলার জেলে পল্লীতে ফিরে এসেছে চিরচেনা রূপ। জেলে পল্লীতে ঠুকঠাক শব্দে নৌকা ও ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শেষে প্রথম দিনেই সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য নিরলস পরিশ্রম করছেন তারা।
এদিকে, পর্যটন ব্যবসায়ীরাও তাদের ট্যুরিস্ট বোটগুলো মেরামত ও রঙ দিয়ে প্রস্তুত করে তুলেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর তারা আশা করছেন, পর্যটকদের আগমন সুন্দরবনের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনবে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৎস্য ও বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম হওয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
অন্যদিকে, টানা নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিপাকে পড়েছেন সুন্দরবনের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল জেলেরা। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় অনেকেই পাড়ি জমিয়েছেন শহরে।
কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ ও শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলেরা বলেন, তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের চরম অভাব-অনটনে দিন কাটাতে হয়েছে। বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করলে জেলে পরিবারগুলোতে দারিদ্র্যতা থেকে যাবে। নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা তিন মাস থেকে কমিয়ে দুই মাসে আনা উচিত বলে দাবি করেন তারা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি পাবেন জেলে ও পর্যটকরা। এ উপলক্ষে গত ২৭ আগস্ট বুধবার সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল পেশাজীবীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়, যেখানে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মেহেরপুরের গাংনীতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে একাধিক মামলার এক আসামিকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার গোলাম মোস্তফা ওরফে ডাকু (৫০) উপজেলার চৌগাছা গ্রামের মৃত আজিজুল হকের ছেলে।
আজ সোমবার ভোরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১২, মেহেরপুর সিপিসি-৩ অভিযানিক দল গাংনী সেনাবাহিনীর সহায়তায় আসামির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
পরে সকাল ১০টার দিকে র্যাব-১২ কোম্পানি কমান্ডারের কার্যালয়, ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-৩ থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১২ ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-৩ এর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ওয়াহিদুজ্জামান জানান, আসামির বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে গাংনী থানায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
পাবনার সাঁথিয়া শশুর মোজাম (৭০) কে পুত্র বধু রুমি কর্তৃক বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে পৌরসভাধীন কলেজ পাড়া গ্রামে। রোববার রাতে দিকে এ ঘটনা ঘটে। মোজামের বাড়ি নাড়িয়াগদাই গ্রামে হলেও প্রায় ৪০ বছর ধরে সে সাঁথিয়া কলেজ পাড়াতে বসবাস করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া পৌরসভাধীন দক্ষিন বোয়াইলমারী ( কলেজ পাড়া) গ্রামের মোজামের ছেলে মিঠুর সাথে গত ৫ বছর আগে আফড়া গ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে রুমির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সে মানুষিক ভারসাম্যহীন রোগী ছিল বলে জানান তার পরিবার। সে ঢাকার মানুষিক চিকিৎসক ডা: শফিকুলের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিল। রোববার রাত আটার দিকে হঠাৎ রুমির হাতের কাছে বটি দা দিয়ে শশুর মোজামের পেটে ও পিঠে কোপ দিয়ে জখম করে। এ সময় তার পেটের নারিভূড়ি বের হয়ে যায়। এ সময় তিনি নিজেও নিজেকে আহত করে। পরে মোজামকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে সাঁথিয়া মেডিকেলে এবং অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল নেয়া হলে সে রাত ৩টার দিকে মারা যায়।
বিষয়টি জানতে নিহত মোজামের ছেলে মিঠুর সাথে যোগাযোগ করা হলে সে জানান আমরা স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন ।মাঝে মধ্যে সে পাগলের মত আচরণ করে ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনিসুর রহমান ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশের মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫৫ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ২৩০ জন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গতকাল রোববার ২০২৫ সালের সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পরবর্তী সময়ে উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসারদের মাধ্যমে নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি এবং মৃত বা অযোগ্য ভোটার কর্তন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
ইসি সচিব জানান, এই সময়ে মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪২ নতুন ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৯৪ হাজার ১৯২ জন, নারী ৪৩ হাজার ৪৪৪ জন এবং হিজড়া ৬ জন।
অন্যদিকে কর্তন করা হয়েছে ১ হাজার ৩৮ জন ভোটারকে। এর মধ্যে পুরুষ ৬৫৩ জন এবং নারী ৩৮৫ জন।
নির্বাচন কমিশন আশা করছে, নতুন অন্তর্ভুক্তি ও কর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল ও হালনাগাদ হবে।
দূষিত বায়ুদূষণ বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫ বছর ৫ মাস কমিয়ে দিচ্ছে। বিষাক্ত বায়ুর এই প্রভাব রাজধানী ঢাকায় বিশেষভাবে তীব্র। বায়ুদূষণ এই শহরের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৯ মাস কমিয়ে দেয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গত সপ্তাহের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশকে বায়ুদূষণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণ হলো আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বহিরাগত হুমকি। বাংলাদেশে, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।
রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশের ১৬ কোটির বেশি মানুষের সবাই এমন এলাকায় বাস করে, যেখানে বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট দূষণের বার্ষিক গড় মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা (৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) এবং দেশের জাতীয় সীমা (৩৫ মাইক্রোগ্রাম) উভয়ই ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার মতো জায়গায় এই মাত্রা ৭৬ মাইক্রোগ্রামের ওপরে দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা মেনে চললে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫.৫ বছর বেশি হতে পারে।’
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, সরকার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বায়ুর মান দ্রুত খারাপ হচ্ছে।
ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। আমার সন্দেহ আছে, বিশ্বের আর কোনো দেশ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষী আছে কিনা।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বায়ু দূষণ এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি শনাক্ত করার জন্য কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই, কারণ এটি খালি চোখেই দেখা যায়।’
বাংলাদেশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য ‘ধোঁয়াশা’ একটি নিত্যদিনের বাস্তবতা। প্রায় প্রতিদিন সকালেই তাদের ঢেকে রাখে এই ‘ধোঁয়াশা’। কিন্তু আরও বিপজ্জনক হলো, দূষণ যেগুলো চোখ দেখতে পায় না: কণা পদার্থ, PM2.5 — ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম প্রশস্ত বায়ুবাহিত ক্ষুদ্র কণা- এগুলো ফুসফুস এবং রক্তপ্রবাহের গভীরে প্রবেশ করে মারত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশে PM2.5-এর মাত্রা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ই কেবল এই মাত্রা কমেছিল। কিন্তু সেই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি।
ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘গত বছরের AQLI রিপোর্টে, আমাদের গড় আয়ু ৪.৮ বছর কমেছে, এবং এই বছর তা ৫.৫ বছর হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এটি দেখায় যে, রাষ্ট্র তার জনগণের সুরক্ষার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেনি, যার অর্থ বাংলাদেশ সরকারও এই প্রতিবেদনের ফলাফলের সঙ্গে একমত। রাষ্ট্র এখানে দায়িত্ব এড়াতে পারে না।’
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকে তালিকাভুক্ত করেন, বিশেষত ইটের জন্য কয়লা বা কাঠ পোড়ানো।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত ১ লাখ যানবাহন চলাচল করে। এই যানবাহনগুলোর অনেকগুলো যথাযথ ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই চলে। এটি বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। খোলা জায়গায় পোড়ানোসহ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবও একটি বড় কারণ।’
সর্বশেষ বায়ুদূষণ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার বছরের শেষ নাগাদ তার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও কাজটি সহজ নয়, তবুও পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ু মান ব্যবস্থাপনার পরিচালক ড. জিয়াউল হক স্বীকার করেছেন, ‘বায়ু দূষণের প্রতিটি উৎস’ বাংলাদেশের পরিবেশে বিদ্যমান।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই খাতে আমরা এখনো কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না।’
ড. জিয়াউল হক বলেন, ‘যেসব বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, আমরা তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনব। তাদের কারখানার চুল্লিতে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে এবং আমাদের কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্গমনের ফলাফল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কোনো বিচ্যুতি পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করব। ‘বাংলাদেশ পরিষ্কার বায়ু’ প্রকল্পের আওতায় আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে।’
যদিও দূষণের সমস্ত উৎস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তবুও কিছু উৎস এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে মোকাবিলা করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত দূষণ ৩০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার ৩৫ শতাংশ বায়ু দূষণ দেশের বাইরে থেকে আসে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকার বায়ু দূষণের ২৯ শতাংশই বর্জ্য এবং জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর কারণে হয়। আমরা এই সমস্যাটি সঠিকভাবে সমাধান করতে পারিনি। আমাদের প্রচেষ্টা সেখানেই আছে।’
সূত্র: আরব নিউজ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বছরের শেষ দিকে ভারত সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনাটি তিনি বাতিল করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইনে শনিবার প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে এ দাবি করা হয়েছে। কোয়াড সম্মেলনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশে সফরটির পরিকল্পনা ছিল।
নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণটির নাম ‘দ্য নোবেল প্রাইজ অ্যান্ড আ টেস্টি ফোন কল: হাউ দ্য ট্রাম্প-মোদি রিলেশনশিপ আনরাভেল্ড’ (নোবেল পুরস্কার ও এক তিক্ত ফোনকল: ট্রাম্প-মোদি সম্পর্কের যেভাবে অবনতি হলো)।
এই বিশ্লেষণে ট্রাম্পের সফরসূচির বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প (গত ১৭ জুন ফোনালাপে) মোদিকে বলেছিলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসবেন। কিন্তু শরতে ট্রাম্পের ভারত সফরের এই পরিকল্পনা এখন আর নেই।’
নিউইয়র্ক টাইমসের এই দাবির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা ভারতের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পরদিন কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক আয়োজন করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। সেই বৈঠকেই চলতি বছরের শেষের দিকে ভারতে কোয়াডের শীর্ষ বৈঠকের সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করা হয়েছিল।
কিন্তু গত কয়েক মাসে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এই বিশ্লেষণে ট্রাম্প ও মোদির সম্পর্ক কীভাবে অবনতি হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
ট্রাম্প বারবার দাবি করে আসছিলেন, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের চার দিনের সংঘাত বন্ধে তিনি মধ্যস্থতা করেছেন। পাকিস্তান ট্রাম্পের মধ্যস্থতার কথা স্বীকার করলেও ভারত তা অস্বীকার করে আসছিল। তা সত্ত্বেও গত ১৭ জুন মোদির সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্প সেই দাবির পুনরাবৃত্তি করেন। নিউইয়র্ক টাইমসের দাবি, এতে মোদির ধৈর্যচ্যুতি ঘটে।
এই ফোনালাপের আগে ওই মাসেই কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭–এর শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে মোদি-ট্রাম্প বৈঠক করার কথা ছিল। কিন্তু ট্রাম্প আগেভাগে দেশে ফেরায় তাদের পূর্বনির্ধারিত সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। মূলত এই নির্বারিত বৈঠক না হওয়ায় ১৭ জুন তারা ফোনালাপ করেছিলেন। কিন্তু ৩৫ মিনিটের এই ফোনালাপ দুই নেতার সম্পর্ক ভালো করার পরিবর্তে আরও তিক্ত করেছে।
তবে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পেছনে ভারতের পণ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্কও বড় ভূমিকা রেখেছে। গত বৃহস্পতিবার এই শুল্ক কার্যকর শুরু হয়েছে।
মন্তব্য