রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কক্সবাজারে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক অংশীজন সংলাপের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার বিদেশি কূটনীতিক, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং দেশের রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছেন।
প্রতিনিধিরা শিবিরে রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, খাদ্য সরবরাহ ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তারা বিশেষভাবে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) পরিচালিত খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্র, হাসপাতাল এবং ইউএনএইচসিআরের স্যানিটারি ন্যাপকিন উৎপাদন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। এ সময় তাঁরা রোহিঙ্গা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দৈনন্দিন চ্যালেঞ্জ, দীর্ঘ অনিশ্চয়তা ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা সম্পর্কে শোনেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে জানান, অংশগ্রহণকারীদের সরেজমিনে ঘুরে দেখানো হয়েছে যাতে তারা রোহিঙ্গাদের বাস্তব পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে এ শিবিরগুলোতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এজন্য আমরা দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর কাছে অর্থায়ন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা শুধু বাংলাদেশের ওপর নয়, আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
কক্সবাজারে কর্মরত বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রোগ্রাম পলিসি অফিসার শেখ রবিউল আলম জানান, বিদ্যমান তহবিল দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা চালানো সম্ভব হবে। কিন্তু এখনো নতুন অর্থায়নের কোনো প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি, যা ইতোমধ্যেই শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নতুন অর্থায়ন না এলে খাদ্য সহায়তার মতো গুরুত্বপূর্ণ মানবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।’
এদিকে শিবির পরিদর্শনে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি পুরো কার্যক্রমকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে। রাজনৈতিক নেতারা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কোনো একক সরকারের সমস্যা নয়, বরং এটি জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নেন। তাদের মতে, সব দলের সক্রিয় সম্পৃক্ততা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের অবস্থানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও শক্তিশালী করবে।
বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের অসাধারণ ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এটিকে বৈশ্বিক মানবিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেন। তারা মনে করেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত ও কার্যকর উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা সংলাপ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে। আশা করা হচ্ছে, বৈশ্বিক কূটনীতির এ প্ল্যাটফর্ম থেকে সংকট সমাধানে নতুন দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।
কক্সবাজারে আয়োজিত এ সংলাপে সরকার, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন, কূটনৈতিক মহল এবং রাজনৈতিক দলের সক্রিয় অংশগ্রহণ কক্সবাজারকে রূপ দিয়েছে বৈশ্বিক মানবিক কূটনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে। রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো তিন দিনের এ সংলাপ।
রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে জোরালোভাবে তুলে ধরতে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছিল ‘স্টেকহোল্ডার্স’ ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়েজ টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শীর্ষক এই সংলাপ।
জয়পুরহাট পৌরসভার দেবীপুর বাইপাস সড়ক এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়কজুড়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমে থাকছে। এতে প্রতিদিন স্থানীয় লোকজন ও যানবাহনের চালকেরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর এই সড়কের সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। পুরো বাইপাস সড়ক নষ্ট হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো সড়ক কর্দমাক্ত হয়ে যায়। অথচ তারা নিয়মিত পৌর কর দিচ্ছেন। কিন্তু কোনো উন্নয়ন পাচ্ছেন না। তবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছেন, ওই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা হবে। আপাতত বড়-বড় গর্তগুলো ভরাটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, দেবীপুর বাইপাস সড়কটি পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। অনেক আগেই সড়কের পিচ-খোয়া উঠে মাটি বের হয়েছে। পুরো সড়কজুড়ে খানাখন্দে ভরা। সড়কের বড়-বড় গর্তে পানি জমে আছে। লোকজন ও যানবাহন জমে থাকা পানি ভেঙে চলাচল করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জয়পুরহাট শহরের জামালগঞ্জ সড়ক থেকে পশ্চিম দিকে দেবীপুর রেলগেট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার বাইপাস সড়ক রয়েছে। পৌরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন সড়কটি অনেকে আগেই নষ্ট হয়েছে। সপ্তাহে শনিবার নতুনহাটে গো-হাটী বসে ওই শত-শত ট্রাক ও অনান্য যানবাহন বাইপাস সড়কে চলাচল করে। সড়কে বড় বড় গর্তে পানি জমে থাকায় যানবাহন অচল হয়ে পড়ে। এতে আরও দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
দেবীপুর বাইপাস সড়কের বাসিন্দা জয়পুরহাট শহরের মসজিদ মার্কেটের ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী মাহবুব আলম আলাল বলেন, বছরের পর বছর ধরে দেবীপুর বাইপাস সড়ক সংস্কার করা হয়নি। আমরা সড়কটি সংস্কারের জন্য একাধিক বার পৌরসভায় গিয়ে ধর্ণা দিয়েছি। শুধু আশ্বাস পেয়েছি। কোন কাজ হয়নি। এখন সড়কের যে অবস্থা পায়ে হেঁটে যাওয়া দুস্কর।
একই এলাকার বাসিন্দা রিফাত হোসেন বলেন, পৌরসভার দায়িত্বশীলরা শুধু আশ্বাস দেন, কিন্তু সংস্কারের কাজ শুরু করেন না। সড়কটি যেন অবহেলার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রাকচালক মইনুল ইসলাম বলেন, দেবীপুর বাইপাস সড়ক এত খারাপ সেটি আগে জানতাম না। এই সড়কে নতুনহাটে এসে আমার ট্রাক বিকল হয়েছে।
ইজিবাইক চালক আব্দুল রহিম বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে এখন দেবীপুর বাইপাস এলাকার কোন যাত্রীকে ইজিবাইকে তুলি না। কিছুদিন আগে গর্তে পড়ে আমার ইজিবাইক যাত্রীসহ উল্টে গিয়েছিল।
জয়পুরহাট পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সবুর আলী বলেন, দেবীপুর বাইপাস সড়কটি টেন্ডার হয়েছে। দ্রুত সড়কের কাজ শুরু হবে। আপাতত সড়কের বড়-বড় গর্তগুলো ভরাটের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দিন নেই, রাত নেই নড়াইলের গ্রাম প্রতিরক্ষার কাজে নিয়োজিত (গ্রাম পুলিশ) এমন
চারজন (ভিডিপির) গুণী মানুষকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। সম্মাননা স্বরুপ তাদের হাতে ক্রেষ্ট তুলে দেন প্রধান অতিথি নড়াইলের জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস।
সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন, ড্রিল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, মাহির মোল্যা, অলরাউন্ডার হিসেবে তানভীর শিকদার, অ্যাকসিলেন্স হিসেবে ইয়ামিন হাসান ও মাহামুদুল হাসান।
সোমবার (২৫ আগষ্ট) রাত ৭টার দিকে জেলা আনসার ও ভিডিপি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান ছিল গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর অগ্রীম প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠান। কর্মশালায় গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্যদের কর্মতৎপরতা আরো গতিশীল এবং সময়োপযোগি করতে কি কি করণীয় তার ওপর দিক নির্ধেশনা দেওয়া হয়। ২৮ দিন ব্যাপী এই কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাছাইকৃত ৫০ জন পুরুষ সদস্যকে সুযোগ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে কর্মদক্ষতায় সেরা এমন ৪ জন সদস্যকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।
সমাপনী দিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর জেলা কমাড্যান্ট মো. নুরুল আবছার। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের সার্কেল অ্যাডজুটেন্ট মমতাজ খানম, সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা ঈদুল তালুকদার, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র পাল, উপচেজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক শুভ মালাকারসহ অন্যরা।
ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টা বীজ কিনে প্রতারণার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
ভূক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্থ চাষী ও বীজ বিক্রেতা ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, মেসার্স ইয়াকুব ট্রেডার্স নামের ওই প্রতিষ্ঠান তাদের ভুল মৌসুমে ভুল জাতের বীজ দিয়ে প্রতারণা করেছে। এর দায়ভার কোম্পানিকে নিতে হবে।
তারা অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের পাশাপাশি অসাধু বীজ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। ক্ষতিপূরণ না পেলে আরো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধন শেষে কৃষকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে তারা জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধনে মাদারগঞ্জ, দোগাছী, লাহিরী, গিলাবাড়ি, চিলারং, রোড পল্লী বিদ্যুৎ, সেন্টার হাটসহ ঠাকুরগাঁও সদর ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কৃষকরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর এক সহযোগীকে আটক করেছে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন ।
মঙ্গলবার ২৬ আগস্ট সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
সুন্দরবনের কুখ্যাত ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর সদস্যরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে সুন্দরবনের শেলা নদী সংলগ্ন তাম্বুলবুনিয়া খাল এলাকায় রওনা করবে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মংগলবার সকাল ৬ টার দিকে কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা ওই এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে, এ সময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করে। পরবর্তীতে কোস্ট গার্ড এর আভিযানিক দলটি ধাওয়া করে ১ টি একনলা বন্দুক, ০২ রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ০৬ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজসহ সুন্দরবনের কুখ্যাত ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর ১ সহযোগীকে আটক করে।
আটককৃত ডাকাত আলমগীর হোসেন সাগর বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার বাসিন্দা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে সে দীর্ঘদিন যাবৎ করিম শরীফ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতি এবং ডাকাত দলকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহের মাধ্যমে সহযোগিতা করে আসছিলো।
আটককৃত ডাকাত ও জব্দকৃত আলামতের পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
সাতক্ষীরার তালার যুবদল নেতা এসএম শামীম আহম্মেদ হত্যার পরিকল্পনাকারী ও মূল আসামি তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি (৩০) ও শ্যালক ইমন হোসেন বাদল (১৮) কে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ ও র্যাব-৬ এর সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার বিকেলে খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার আঠারোমাইল এলাকায় শামীমের নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় বৃষ্টির স্বীকারোক্তিতে বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতিও উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা পুলিশের এএসপি সার্কেল আবির শুভ্রসহ পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এর আগে গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে নিজ বাড়ির তিন তলায় নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাতক্ষীরা তালার উথালী গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে ও ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক এসএম শামীম আহম্মেদ। এ'হত্যাকান্ডের প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহভাজন দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরদিন হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ততা না'পাওয়ায় পুলিশ তাদের নিজ পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।
নিহত যুবদল নেতা শামীমের মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রশিদা বেগম, গত রোববার কারো নাম উল্লেখ না করে ডুমুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ-হত্যাকান্ডের ক্লু উদঘাটনে পুলিশ ও র্যাবের একাধিক টিম তদন্তে নামে।
ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ মাসুদ রানা জানান, ‘শামীম হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে স্ত্রী ও শ্যালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনা জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবির শুভ্র জানান, পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রী বৃষ্টি আগে থেকেই স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি একটি চাপাতি সংগ্রহ করে রাখেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঘটনার রাতে বৃষ্টির ভাই বাদল চাপাতি দিয়ে শামীমকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের সময় বৃষ্টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পরে হত্যায় ব্যাবহৃত অস্ত্র পাশের একটি গর্তে ফেলে দেওয়া হয়। এএসপি আরও বলেন, বৃষ্টির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। এ'ঘটনায় অধিকতর তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের এক চালককে হত্যা করে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে সুবর্ণচরের চরজব্বার ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের নুর ইসলাম মিয়ার বাড়ির পাশ থেকে ওই চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত অটোরিকশা চালকের নাম মো.রফিকুল ইসলাম (৫৫)। তিনি সিরাজপুর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের ফজল হক মিয়ার বাড়ির আক্কেল আলীর ছেলে।
নিহতের পারিবার ও স্থানীয়রা জানান ,গত ২-৩ মাস আগে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কিনেন রফিকুল ইসলাম। সোমবার বাড়িতে দুপুরের খাবার খেয়ে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে যান তিনি। রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা একাধিকবার তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল করে বন্ধ পায়। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সুবর্ণচর উপজেলার নুর ইসলাম মিয়ার বাড়ির পাশে স্থানীয় লোকজন তার মরদেহ পড়ে থাকতে দাখে। তার গলায় ও শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে মরদেহ চরজব্বার ইউনিয়ন ৫নম্বর ওয়ার্ডে ফেলে অটোরিকশা ও মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। সকালে এলাকাবাসী মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া বলেন, প্রাথমিক ভাবে এটিকে হত্যাকান্ড মনে হচ্ছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায় নি। মরদেহের গলায় গোলাকার দড়ি পেঁছানো কালো একটি দাগ আছে, বাম হাতের আঙুল থেতলানো, পিঠের পিছনে ফোলা জখম। মুখের মধ্যে কি দিয়ে, নাক-মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। অন্য কোন পদার্থ কিনা দেখা হচ্ছে।
ওসি আরও বলেন, মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলোকদিয়ায় এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। নিহত তৈয়ব আলী (৪০) ও মিরাজ হোসেন (২০) একই এলাকার বাসিন্দা। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মিরাজের বাবা তৈয়ব আলীর সঙ্গে তার আপন ভাতিজা একই এলাকার বাবু ও ভাগ্নে রাজুর সাথে প্রায় দেড় কাঠা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধ মেটাতে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হলেও কোনো সমাধান হয়নি। একই বিরোধের জেরে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আলোকদিয়া তুফান মিয়ার গোডাউনের অদূরে পাট শুকানোর সময় মিরাজ ও তার বাবার উপর হামলা চালায় বাবু ও রাজু। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মিরাজ। গুরুতর আহত হন তার বাবা তৈয়ব আলী। আহত তৈয়বকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত বাবু ও রাজুকে আটক করা হয়েছে।
মন্তব্য