নিরাপদ সমুদ্র পর্যটনের জন্য জরুরি সতর্কবার্তা জারি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
সতর্কবার্তা অনুযায়ী লাল পতাকা চিহ্নিত জায়গা বিপজ্জনক। লাল পতাকা চিহ্নিত স্থানে পানিতে নামা যাবে না। জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মী ও লাইফ গার্ড সর্বদা পর্যটকদের সার্বিক সহযোগিতায় নিয়োজিত রয়েছে।
নিরাপদ সমুদ্রসীমার মধ্যে অবস্থান করা এবং লাইফগার্ড সার্ভিস বিদ্যমান রয়েছে এমন স্থান ব্যতীত অন্য কোথাও পানিতে না নামতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত এই সীমানার বাইরে পানিতে ডুবে গেলে কোনো সহায়তা পাওয়া যায় না।
পানিতে নামার আগে অবশ্যই জোয়ার-ভাটার সময় এবং সাগরের বিপদ সংকেত সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় পানিতে নামা থেকে বিরত থাকতে।
ভাটার টান চলাকালীন বেপরোয়াভাবে সাগরে না নামতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
এছাড়া সাঁতার জানা না থাকলে, সমুদ্রে নামা পরিহার করতে হবে। সকল হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজ ও রিসোর্টসমূহ আবশ্যিকভাবে পর্যটককে লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ/ব্যবহার করার সুযোগ প্রদান করতে হবে। লাইফগার্ড হিসেবে টিউব পরিহার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। লাইফ জ্যাকেট পরিধান ও শিশুদের সব সময় নিজের তত্ত্বাবধানে রাখতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সৈকত এলাকায় অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চা কিংবা শিশু নিয়ে আসলে অবশ্যই শিশুর ছবি মোবাইলে সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পানির তীব্র স্রোত, ঘূর্ণি স্রোত, উল্টো স্রোত ও নিম্নমুখী প্রবাহ বিপজ্জনক। সমুদ্রতটে বালি সরে গিয়ে ছোট-বড়ো কিছু গর্ত তৈরি হতে পারে, যা বিপজ্জনক; এই ধরনের প্রতিকূল আবহাওয়ায় পানিতে নামা থেকে বিরত থাকতে হবে।
অপ্রশিক্ষিত ব্যক্তি কর্তৃক উদ্ধার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কারণ এতে উদ্ধারকারীর জীবনও বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
রংপুরে বাল্যবিয়ে নিরসনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠিসহ অংশীজনদের মতামত নিয়ে তৈরী নির্দেশিকা ‘অ্যাডভোকেসি টুলকিট’ এর মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে আরডিআরএস বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে মোড়ক উন্মোচন করেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার। মালালা ফান্ডের সহযোগিতায় পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (পপি) ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন (বিডিওএসএন) এর উদ্যোগে অনুষ্ঠানে সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবি, ধর্মীয় নেতা, কাজী, মানবাধিকার কর্মী, শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পপি’র কনসোর্টিয়াম কো-অর্ডিনেটর কাজী আব্দুল্লাহ রিজভান জানান, সরকারী জরিপ অনুযায়ী রংপুর বিভাগে বাল্যবিয়ের হার ৫৭ দশমিক ৯ ভাগ। বাল্যবিয়ের জন্য চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে- দারিদ্রতা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, জেন্ডার অসমতা ও বৈষম্যমূলক মনোভাব, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ও হয়রানির আশংঙ্কা, যৌতুক নির্ভর বিয়ে ও সৌন্দর্য সংক্রান্ত ভ্রান্ত ধারণা, উপযুক্ত পাত্র হারানোর ভয়, সাংষ্কৃতিক ও ধর্মীয় অপব্যাখ্যা, আইনী বিধান সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, ডিজিটাল মাধ্যমের কুফল, আইনের ফাঁকফোকর ও দূর্বল প্রয়োগ, সমাজকর্মী ও সহায়তা সেবার অভাব, গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সীমিত অংশগ্রহণ, স্কুল থেকে ঝরে পড়া, পারিবারিক অবহেলা ও চাপ, বিয়ে নিবন্ধকের স্বল্পতা, সমন্বয় ও নজরদারীর অভাব, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অবহেলা বা নিস্ক্রিয়তা। এ থেকে উত্তরণে অ্যাডভোকেসি টুলকিটে দেয়া নির্দেশিকা অনুসারে একজন সচেতন নাগরিক বাল্যবিয়ে রোধ করতে পারে। সেই সাথে বাল্যবিয়ে রোধে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে এক সাথে কাজ করতে হবে। আরডিআরএসের অ্যাডমিন ও জেনারেল সার্ভিস বিভাগের প্রধান নজরুল গণি’র সভাপতিত্বে বাল্যবিয়ে রোধে নানা সুপারিশ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, রংপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আইনজীবি আফরোজা শারমিন কনা, স্বর্ণ নারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মঞ্জুশ্রী সাহা, সমাজকর্মী খ.ম. সম্রাট, কুড়িগ্রাম সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মুহা. হুমায়ুন কবীর, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সীডের প্রধান নির্বাহী সারথী রানী সাহা, রংপুর মডেল মসজিদের ইমাম জাহিদুল ইসলাম, শিক্ষক উত্তম চক্রবর্তী, সাংবাদিক শফি খান, মেরিনা লাভলী, ফরহাদুজ্জামান ফারুকসহ অন্যরা।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে বন বিভাগের পাঁচজন কর্মীর ওপর হামলা করে জব্দকৃত গাড়ি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বনের গাছসহ জব্দ করা একটি গাড়ি ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে খুটাখালী ইউনিয়নের সেগুনবাগিচা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের খুটাখালী বনবিটের কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম (৩১) এবং বনপ্রহরী অলিউল ইসলাম (৩৫), মো. হাসান (৩২), আয়াত উল্লাহ (৩৪) ও হাসান আলী (৩০)। তাঁরা চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
বন বিভাগের আহত কর্মীরা জানিয়েছেন, সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গাছের টুকরা নিয়ে একটি ইজিবাইক (টমটম) বের হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে বিট কর্মকর্তা নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে রাতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বনের গাছবোঝাই ইজিবাইকটি জব্দ করা হলে ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত অতর্কিত বনকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে গাছবোঝাই ইজিবাইকটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ঘটনায় আহত বনবিট কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গাছভর্তি ইজিবাইকটি জব্দ করার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন চিৎকার করে বলে, বিট কর্মকর্তাকে মাটিতে পুঁতে ফেল। এরপর দুর্বৃত্তরা আমাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা শুরু করে। খবর পেয়ে বিভিন্ন বনবিট থেকে আরও বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।’
ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রাশিক আহসান দৈনিক বাংলাকে বলেন, আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে রাতেই চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। সবাই এখন শঙ্কামুক্ত। তিনি বলেন, মূলত বনের গাছচোর চক্র বনকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। হামলাকারীদের নাম–পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। রেঞ্জ কর্মকর্তা রাশিক আহসান আরও বলেন, হামলাকারীরা গাছচোর চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। এ কারণে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে হামলা করেছে।
চকরিয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরেছি। এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে কৃষক কাঞ্চন মিয়া হত্যা মামলায় এক আসামিকে যাবজ্জীবন ও আরেকজনকে ২ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
আজ সোমবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সোহাগ রঞ্জন পাল এ রায় ঘোষনা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামি রফিকুল ইসলাম ওরফে জালাল, জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের চারিতলা গ্রামের বাসিন্দা। অপর দিকে ২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত মোবারক হোসেনও একই গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের ছেলে। এই মামলায় অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় ১১ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, আগের একটি মামলার বিরোধের জের ধরে ২০১৩ সালের ১৬ অক্টোবর চারিতলা গ্রামের কৃষক কাঞ্চন মিয়াকে পিটিয়ে ও বল্লম দিয়ে আঘাত করেন জালাল ও তার লোকজন। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে করিমগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে ২০১৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে আবারও একই বছরের ২৫ ফেব্রয়ারি তাকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৪ মাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাঞ্চন মিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত কাঞ্চনের বাবা মাহতাব উদ্দিন বাদী হয়ে ১৭ জনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে ১৭ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারকাজ চলার সময় ৪ আসামির মৃত্যু হলে তাদের অভিযোগ থেকে বাদ দেয়া হয়। বাকি ১৩ আসমির মধ্যে ১১ জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দড়ি চন্ডিবের বিলে ভাসছিলো অজ্ঞাত পরিচয়ে এক যুবকের মরদেহ । খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।
আজ সোমবার বেলা ১১ টায় পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের দড়ি চন্ডিবের এলাকার দক্ষিণপাড়ার একটি বিলে অজ্ঞাত পরিচয়ে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ভৈরব পৌর শহরের দড়ি চন্ডিবের দক্ষিণপাড়া এলাকার শামসু মিয়ার বাড়ির পিছনে বিলের পানি থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। পরে মরদেহটি সুরতাল রির্পোট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আবুল কালাম বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যাওয়ার সময় বাড়ির পিছনের বিলে একজনের মরদেহ পানিতে ভেসে আছে দেখতে পাই। পরে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে লাশটি উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো.মুছা মিয়া বলেন, সকালে লোকমুখে শুনে এসে দেখি দড়ি চন্ডিবের বিলে একজনের মরদেহ ভাসছে। তবে যেভাবে পড়ে আছে তা দেখে চেনার কোন উপায় নেই। থানা প্রশাসন এসে উদ্ধার করলে তার পরিচয় জানা যাবে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, খবর পেয়ে দড়ি চন্ডিবের এলাকার শামসু মিয়ার বাড়ির পিছনে বিলের পানি থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় নিহতের গায়ে একটি জিন্স প্যান্ট পরিহিত ছিলো। তার প্যান্টের পকেটে থেকে একটি মুঠোফোন ও মানিব্যাগে থাকা কাতারের একটি পারমিট কার্ড পাওয়া যায়। পারমিট কার্ডে মানিক রিয়াদ নাম লিখা রয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের অনুসন্ধান টিম কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
নওগাঁর বদলগাছীতে এক কিশোরীকে অপহরণ মামলায় উজ্জল হোসেন (৩২) নামে এক যুবককে চৌদ্দ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১১টায় নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন। জরিমানার অর্থ অপহরণের শিকার ওই কিশোরীকে প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারক।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত উজ্জল হোসেন জেলার মহাদেবপুর উপজেলার ব্যালট উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ জুলাই সকাল সাড়ে ৫টার দিকে উজ্জল হোসেন বদলগাছী উপজেলার বারাতৈল গ্রামের নানীর বাড়ি থেকে ওই কিশোরীকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে বোনের বাসায় আটক রাখে। পরে ওই কিশোরীর মা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামি উজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে সাত জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ বিচারক এই রায় দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষের সরকারী কৌঁশলী এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামি পক্ষের কৌঁশলি আশিক আল ইমরান হিল্লোল উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
মেহেরপুর জেলায় বিভিন্ন সময় হারানো ও চুরি হওয়া ১২২টি মোবাইল ও প্রতারণার মাধ্যমে ১০ লক্ষ ১৮ হাজর ৩শত টাকা উদ্ধার করে ভোক্তভোগীদের হাতে তুলে দিলেন মেহেরপুর জেলা পুলিশ।
আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যলয় প্রাঙ্গণে উদ্ধারকৃত মোবাইল ও টাকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকৃত মালিকের নিকট হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম।
জেলার সদর থানা, গাংনী থানা এবং মুজিবনগর থানা এলাকায় হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ও টাকা সংক্রান্তে ভুক্তভোগীদের জিডির বিপরীতে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল জুন ও জুলাই মাসে ১২২টি মোবাইল ও প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত ৯ লক্ষ ১৭ হাজার এবং বিকাশ ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এ ভুলক্রমে অন্য নম্বরে চলে যাওয়া ১ লক্ষ ১ হাজার ৩শত টাকা বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া মোবাইলের ভেতর সদর থানার ৪১টি, গাংনী থানার ৬৪টি এবং মুজিবনগর থানার ১৭টি সহ সর্বমোট ১২২টি এবং ১০ লক্ষ ১৮ হাজর ৩শত টাকা উদ্ধার করা হয়। এসময় ভুক্তভোগীরা জানান, আমরা অনেকেই মনে করতাম ফোন হারিয়ে গেলে বা টাকা ভুলক্রমে চলে গেলে তা আর পাওয়া যায় না বা ফেরৎ দেয় না। কিন্তু হারিয়ে যাওয়া ফোন পুলিশের মাধ্যমে আজ ফেরৎ পেয়ে আমাদের ধারণা পাল্টে গেছে। শখের মোবাইল ও টাকা পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। হঠাৎ এসপি অফিস থেকে ফোন করে ডেকে পুলিশ মোবাইল ও টাকা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। এতে আমরা অনেক খুশি।
পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম বলেন, মেহেরপুর জেলায় মোবাইল হারানো জিডি হলে ভুক্তভোগীদের তদবীর বা যোগাযোগ ব্যতিরেকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের সদস্যগণ এ উদ্ধার কাজ করে থাকেন। হারানো, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ও প্রতারণা বা ভুলক্রমে চলে যাওয়া টাকা ফিরে পাওয়া যায় না এমন ধারণা থেকে বের হয়ে এসে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার আহবান জানান তিনি। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিনুর রহমান খান (প্রশাসন ও অর্থ) আবদুল করিম (সদর সার্কেল) ডিবি পুলিশের ওসি গোপাল কুমারসহ পুলিশের বিভিন্ন শাখার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় সামুদা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি থেকে এসিডসহ বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত কেমিক্যাল পরিবহন করার সময় মাঝেমধ্যে তা রাস্তাঘাটে পড়ে যাচ্ছে। হাতে-পায়ে লেগে কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে বিষাক্ত এই কেমিক্যাল গ্রহণ করে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকাবাসী।
খবর নিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডসহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উৎপন্ন করে যা তৈরি করতে এসিডসহ বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যালের প্রয়োজন হয়। এ সকল রাসায়নিক পদার্থ এবং কেমিক্যাল গাড়িতে পরিবহন করার সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করার কথা থাকলেও বিষয়টিতে বরাবরই উদাসীন সামুদা কেমিক্যাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে সোমবার (২৫ আগস্ট) ভোর ছয়টার দিকেও কোম্পানির একটি গাড়ি থেকে রাস্তায় হাইড্রোক্লোরিক এসিড পড়ে যায়। কালো ধোঁয়া আর ঝাঁঝালো গন্ধে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে হোসেন্দী ইউনিয়নের সিকিরগাঁও এলাকায় গিয়ে দেখা যায় রাস্তায় পানি ছিটিয়ে হাইড্রোক্লোরিক এসিড পরিষ্কার করা হলেও এসিডের ঝাঁঝালো গন্ধ রয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানায়, গত এক-দেড় বছরে অন্তত পাঁচবার এইরকম ঘটনা ঘটেছে। সিকিরগাঁও থেকে জামালদী বাস স্ট্যান্ডে যাওয়া-আসার পথে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় বারংবার এসব বিষাক্ত কেমিক্যাল গাড়ি থেকে রাস্তায় পড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ' আজ সকালে কোম্পানির একটি গাড়ি জামালদী বাস স্ট্যান্ডের দিকে যাবার পথে গাড়ি থেকে বিষাক্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড রাস্তায় পড়ে যায়। এতে বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় চারপাশ আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ঝাঁঝালো গন্ধে দম বন্ধ হবার উপক্রম হয় এলাকাবাসীর। এর আগেও বেশ কয়েকবার এরকম অবস্থা তৈরি হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম কিন্তু কোন লাভ হয়নি'।
স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ' প্রায় দেখি তাদের গাড়ি থেকে রাস্তায় কেমিক্যাল পড়ে যায়। এসব কেমিক্যাল পরিবহনে যতটুকু সতর্কতা অবলম্বন করার কথা কোম্পানি তা করছে না'।
এ পথে নিয়মিত চলাচলকারী অটোরিকশা চালক আলী হোসেন বলেন, ' কয়দিন পর দেখি রাস্তায় বিষাক্ত কেমিক্যাল পড়ে যায়। নিঃশ্বাসের সাথে তা গ্রহণ করলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাতে-পায়ে লাগলে চামড়া উঠে যায়। আমরা চাই এই রাস্তায় কেমিক্যালের গাড়ি চলাচলের জন্য একটি সময় বেঁধে দেওয়া হোক'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মেডিকেল অফিসার ডা. খন্দকার আরশাদ কবির বলেন, 'হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ত্বকে এবং টিস্যুতে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এসিড গায়ে লাগলে দ্রুত প্রচুর পরিমাণ পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থানটি ধুতে হবে। পোশাকে যদি এসিড লাগে তা খুলে ফেলতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে'।
বিষয়টি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক ( মানব সম্পদ বিভাগ) মো.হাফিজুর রহমান বলেন, ' আজকের ঘটনায় আমাদের কোন অবহেলা ছিল না। রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়া একটি ড্রেজারের পাইপে লেগে আমাদের গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে রাস্তায় হাইড্রোক্লোরিক এসিড ছড়িয়ে পড়ে। তৎক্ষণাৎ আমাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় পানি ছিটিয়ে তা পরিষ্কার করে ফেলে। হাইড্রোক্লোরিক এসিড রাস্তায় পড়ে ধোঁয়া সৃষ্টি হলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে আমি বলবো ভয়ের কোন কারণ নেই'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, 'এরকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। যতটুকু জানতে পারলাম রাস্তার উপর দিয়ে একটি ড্রেজারের পাইপ দিয়েছিল যার কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা ড্রেজারের পাইপ অপসারণ করার নির্দেশ দিয়েছি। স্থানীয়রা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে এর আগেও এই প্রতিষ্ঠানটির গাড়ি থেকে রাসায়নিক রাস্তায় পড়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। বিষয়টি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছে'।
বিষয়টি সম্পর্কে পরিবেশ অধিদপ্তর মুন্সীগঞ্জের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ' বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। নিশ্চয়ই আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব'।
মন্তব্য