রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কক্সবাজারে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে এই সংলাপে যোগ দিতে কক্সবাজার পৌঁছান তিনি। এদিন ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়।
এতে মিয়ানমার ও আঞ্চলিক স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবস’ উপলক্ষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
এ সময় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে তাদের নিজ আবাসভূমিতে প্রত্যাবাসনের জন্য দৃশ্যমান আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা যা করছি, তা অব্যাহত রাখতে হবে।
রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রথম দিনের কর্মসূচিতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশেষ ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা গড়ে তোলার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম এ সেশনে অংশ নেন। এতে আরও অংশ নেন কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবির থেকে আসা রোহিঙ্গা প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা প্রবাসীরা।
সেশনটি পরিচালনা করেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ লাকি করিম, মোহাম্মদ রফিক (খিন মৌং) ও ওমর সালমা। এ সময় বক্তব্য রাখেন সয়েদুল্লাহ, ফুরকান মির্জা, আবদুল্লাহ, হুজ্জাউত উল্লাহ, সহাত জিয়া হিরো, আবদুল আমিন, জাইতুন নারা, জিহিন নূর, আবদুল্লাহ ও রো মুজিফ খান। রোহিঙ্গা প্রবাসীর সদস্যরাও আলোচনায় অংশ নেন। সেশনটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের জন্য নির্ধারিত থাকায় অন্য অংশগ্রহণকারীরা কেবল পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত থমাস এইচ অ্যান্ড্রুজ সেশনে যোগ দেন। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন, সংবাদমাধ্যম, বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সেশনে অংশ নেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) রানা ফ্লাওয়ার্স, মিয়ানমারের জন্য স্বাধীন তদন্ত সংস্থার প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান এবং ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুও।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণ অধিকার পরিষদসহ প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও এ সংলাপে অংশ নেন।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ভয়াবহ শিক্ষা সংকট তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় তহবিল সংকটের কারণে ক্যাম্পভিত্তিক লার্নিং সেন্টার বা অস্থায়ী স্কুলগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে লাখ লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে, যা শুধু মানবিক সংকট নয়, বরং ভবিষ্যতে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
৮ বছরের বাস্তুচ্যুতি, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ:
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন-নিপীড়নের মুখে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। গত সোমবার সেই ভয়াবহ বাস্তুচ্যুতির ৮ বছর পূর্ণ হলো। এর মধ্যে একাধিকবার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও, রাখাইন রাজ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে রয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রায় অর্ধেকই শিশু। তাদের জন্য অস্থায়ী শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা হয়েছিল, যাতে অন্তত প্রাথমিক শিক্ষা ও ন্যূনতম সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তহবিল সংকটের কারণে কেবল কক্সবাজারেই ২ লাখের বেশি শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) জানিয়েছে, বর্তমানে ১২ বছরের কম বয়সি কোনো রোহিঙ্গা শিশু পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে শিশুরা সারাদিন ঘোরাফেরা করছে ক্যাম্পের ভেতর ও বাইরে। অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে শ্রম, মাদক, জুয়া বা অন্যান্য অপরাধে। কেউ আবার পাচারের শিকার হচ্ছে। এভাবে পুরো একটি প্রজন্ম ধীরে ধীরে অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা নূর বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, ‘আমার মেয়েটা যখন স্কুলে যেত তখন অন্তত নিরাপদ থাকত। এখন সারাদিন ঘরে বসে থাকে বা বাইরে ঘুরে বেড়ায়। আমি সবসময় আতঙ্কে থাকি, যদি কোনো খারাপ কিছু ঘটে যায়।’
শিশু আবদু রহিম বলেন, ‘আগে আমিও আমার বন্ধুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করতাম। এখন কেউ কাজ করছে, কেউ দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে, আবার কেউ পাচারের শিকার হচ্ছে। যদি স্কুল খোলা থাকত, এসব বিপদে পড়তে হতো না।’
একজন রোহিঙ্গা মা জানালেন, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় মেয়েরা ঘরে বসে থাকে। তাই অনেক সময় অল্প বয়সেই বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। মিয়ানমারে সন্তানদের পড়াতে পারিনি, এখানে সুযোগ পেলেও এখন তা বন্ধ হয়ে গেছে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশুরা দীর্ঘসময় অনিশ্চিত পরিবেশে ঘোরাফেরা করছে। এতে তারা পাচারকারী ও অপরাধী চক্রের সহজ টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। বিভিন্ন এনজিওর পর্যবেক্ষণ বলছে, কিশোরী মেয়েদের যৌন হয়রানি, জোরপূর্বক বিয়ে এবং পাচারের ঘটনা বাড়ছে।
রোহিঙ্গা নেতা জুবায়ের বলেন, লার্নিং সেন্টারগুলো খোলা থাকলে আমরা শিশুদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতাম। এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এতে শুধু শিশুরা নয়, পুরো ক্যাম্পই ঝুঁকিতে পড়ছে।
রোহিঙ্গা শিক্ষক মো. সেলিম বলেন, ‘শিক্ষা শুধু পড়াশোনার জন্য নয়, শিশুদের সুরক্ষার জন্যও দরকার। স্কুল থাকলে অন্তত তারা কয়েক ঘণ্টা নিরাপদে কাটাতে পারত। এখন তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, যা তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছে।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষা বঞ্চিত রোহিঙ্গা প্রজন্ম শুধু মানবিক সংকটই নয়, ভবিষ্যতে পুরো অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। শিক্ষাহীন হয়ে তারা আরও বেশি অপরাধী চক্রে জড়িয়ে পড়বে, যা দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।
রোহিঙ্গা শিশুরা বারবার দাবি করছে, তাদের স্কুলগুলো আবার চালু করা হোক।
‘আমরা পড়াশোনায় ফিরতে চাই। আমাদের স্বপ্ন অন্ধকারে হারাক, তা চাই না- বলছে শিশুরা।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু
রোহিঙ্গা সংকট মেকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় টেকসই সমাধানের পথ খুঁজতে গতকাল রোববার বিকাল কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী সেনাবাহিনীর হোটেল বে-ওয়াচ মিলনায়তনে আয়োজিত তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।
সম্মেলনের প্রথম দিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে শত নারী-পুরুষকে নিয়েসে আনা হয়েছে সেখানে। আগত অতিথিরা এসব রোহিঙ্গাদের মতামত গ্রহণ করছেন। মূল স্বদেশ ফেরতে রোহিঙ্গা ভাবনা নিয়ে শোনা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ভাবনা।
সম্মেলনের অভ্যন্তরে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশ অনুমতি না থাকলেও দায়িত্বশীল একটি সূত্রে বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। যেখানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানসহ দেশি-বিদেশিরা অংশ নিচ্ছেন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ১০৭ দেশের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই সম্মেলনের প্রস্তুতি স্বরূপ কক্সবাজারের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে ৪০টি দেশের প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।
সেপ্টেম্বর মাসে উচ্চ আর্দ্রতা ও অবিরাম বৃষ্টিপাত মশার বিস্তারকে সহজতর করবে। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তির কারণে ডিএনসিসি ও ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলো ভারী চাপের মধ্যে থাকবে বলে ধারণা করা হয়েছে ডেঙ্গু পরিস্থিতির পূর্বাভাস প্রতিবেদনে।
রবিবার (২৪ আগস্ট) গুলশান-২-এ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কনফারেন্স রুমে ‘ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া সংলাপ আগস্ট ২০২৫: প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও নিরসন’-বিষয়ক সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
আগস্ট থেকে অক্টোবরের ডেঙ্গু পরিস্থিতির পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্টে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। এতে হাসপাতালগুলোতে ভর্তির চাপও বাড়তে পারে।
এ ছাড়া বিগত বছরের অভিজ্ঞতা অনুসারে, সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। উচ্চ আর্দ্রতা ও অবিরাম বৃষ্টিপাতে মশার বিস্তার বাড়বে, ফলে ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলোতে ভারী চাপের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে অক্টোবর মাসে বর্ষা শেষে সংক্রমণ কমার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও সুপ্ত কেস ও দ্বিতীয় দফায় প্রাদুর্ভাব চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এ সময়ও লার্ভিসাইডিং ও স্যানিটেশন কার্যক্রম জোরদার রাখার ওপর প্রতিবেদনে জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সভায় মশক নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে বলা হয়েছে, জনগণের সচেতনতার অভাব, সঠিকভাবে কীটনাশক প্রয়োগ না করা ও অপর্যাপ্ত সরকারি উদ্যোগ। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পানি নিষ্কাশন সমস্যা ও আবহাওয়ার প্রভাব মশার বংশবিস্তার বাড়াচ্ছে। বাসাবাড়িতে প্রবেশে বাধা ও কীটনাশকের প্রতি মশার প্রতিরোধ ক্ষমতাও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যাহত করছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতা ও ফগিংনির্ভর ভ্রান্ত ধারণা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে।
সভায় ডেঙ্গু রোধে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে, বর্ধিত ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিদিন লার্ভা ধ্বংস অভিযান চালানো, বিশেষ করে, ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডে। জনসমাগম ও নির্মাণস্থলে বিশেষ অভিযান ও ফেলে দেওয়া পাত্রের যথাযথ নিষ্কাশন নিশ্চিত করা। এসএমএস, সামাজিক ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো। নির্মাণস্থলে পানি জমা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কঠোর আইন প্রয়োগ ও জরিমানা আরোপ করা। প্রতি সপ্তাহে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো।
তা ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে রাজউক, সিভিল অ্যাভিয়েশন, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডসহ সংস্থাগুলোর সমন্বয় জোরদার করা। প্রাদুর্ভাব এলাকায় দ্রুত সাড়া দিতে ডিজিটাল রিপোর্টিং সিস্টেম চালু করা। হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু ওয়ার্ড, পর্যাপ্ত সরঞ্জাম, প্রশিক্ষিত কর্মী ও দক্ষ ট্রাইএজ সিস্টেম নিশ্চিত করে জাতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলা শুধু সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একক দায়িত্ব নয়, সবাইকে মিলেই কাজ করতে হবে। তিনি জানান, ঢাকায় হকার ও অনিয়ন্ত্রিত বাজারের কারণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় চাপ তৈরি হচ্ছে, যা মশার প্রজননে সহায়ক। তাই মশা নিধনের পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
এক দিনে আরও ৪৩০ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি
এদিকে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৩০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত তারা হাসপাতালে ভার্তি হন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন একজন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১১৫ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮ হাজার ৬৩২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য থেকে এসব জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, আগস্টে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৬৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মারা গেছেন ৩২ জন। সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ২৮১ ডেঙ্গুরোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৪১৪ জন। বাকি ৮৬৭ জন অন্যান্য বিভাগে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এ বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে-তে ১ হাজার ৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন এবং জুলাইয়ে ১০ হাজার ৬৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে-তে ৩ জন, জুনে ১৯ জন এবং জুলাইয়ে ৪১ জন মারা গেছেন।
হারিয়ে যাওয়া বা লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে তথ্যদাতাকে নগদ অর্থ পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা জানান ।
তিনি আরো জানান, পিস্তল ও শটগান উদ্ধারে তথ্য দিলে ৫০ হাজার টাকা, চায়না রাইফেল উদ্ধার করলে ১ লাখ, এসএমজি দেড় লাখ, এলএমজি ৫ লাখ ও প্রতি গুলির ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। এক্ষেত্রে তথ্যদাতাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি নির্ভর করছে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলের ওপর। তারা যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে তখন সমস্যা কমে যাবে। সবার সহযোগিতায় আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারবো । এখন দেখা যাচ্ছে আপনারা(সাংবাদিক), জনগণ ও রাজনৈতিক পার্টি নির্বাচনমুখী। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন একটি উৎসবমুখর পরিবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে নিয়োগ বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ এবং এ ব্যাপারে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কোথাও অনিয়ম দেখলে জানাবেন। আশা করছি সবসময় সত্য রিপোর্টিং করবেন, তবে ভুল রিপোর্টিং করবেন না। তবে আমরা দেখেছি আপনারা (সাংবাদিক) সব সময় সত্য রিপোর্টিং করছেন। বিদেশি কোন বিষয়েও আপনারা প্রকৃত সত্য তুলে ধরেছেন। সত্য প্রকাশ করেছেন।
গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারের আসা যাওয়ার সময় রাস্তা বন্ধ করে রাখার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং আইজিপি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বিষয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
সরকারি কর্মচারীদের জনসেবার মানসিকতা ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি বলেন, “জনসেবার জন্যই আমাদের নিয়োগ হয়েছে। তাই সবার মধ্যে সর্বদা সেবা দেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।
আজ রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এটুআই-এর যৌথ উদ্যোগে ন্যাশনাল ড্যাশবোর্ড বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ হিসেবে আয়োজিত হয়।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমাদের অ্যাডভান্টেজ তৈরি করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স ভবনকে আধুনিকায়ন করে একটি তথ্য হাব গড়ে তুলতে চাই, যেখানে দেশ-বিদেশের যেকোনো ব্যক্তি পার্বত্য অঞ্চলের উৎপাদিত পণ্যের তথ্য পেতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্গানিক ফল যেমন পাহাড়ি আম, আনারস, কলা ও ড্রাগন ফল এখন আগের চেয়ে বেশি উৎপাদিত হচ্ছে এবং এগুলো দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের কেমিক্যাল মুক্ত ফল ফলাদি আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত করতে চাই বললেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চিন্তা ও চেতনায় পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীরাও সম-অংশীদার হতে চায়। আমাদের ঐতিহ্য, সম্পদ ও সম্ভাবনা জাতীয় উন্নয়নের অংশ হতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, সবকিছুই হাতের মুঠোয় থাকতে হবে। ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে আমরা আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে সর্বদা আপডেট থাকতে পারবো। তিনি সরকারি চাকরির বিধি-বিধান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব মোঃ মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কঙ্কন চাকমা, যুগ্মসচিব অতুল সরকার, যুগ্মসচিব মো. মমিনুর রহমান, যুগ্মসচিব কাজী তোফায়েল আহমেদ। প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন এটুআই-এর রেজাল্ট ম্যানেজমেন্ট এনালিস্ট মোঃ আনোয়ারুল আরিফ খান, ডাটা কো-অর্ডিনেশন অফিসার মোঃ আশরাফুল ইসলাম, রিফাত-ই-জাহান সিদ্দিকী, অনিক কুমার পাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার ওয়াহিদ পলাশ, সহকারী রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী হাবিবুল্লাহ নাহিদ ও পল্টু চন্দ্র দাস। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও পার্বত্য চট্টগ্রাম শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স ও চিফ অ্যাকাউন্টস এন্ড ফিনান্স অফিসারের কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন।
বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে আরেকটি মাইলফলক ছুঁলো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) কর্তৃপক্ষ। রবিবার গাজীপুরে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের ১৮ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করা হয়েছে যা PPP মডেলের অধীনে বাস্তবায়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
সড়ক পরিবহন ও সেতু বিষয়ক উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান আনুষ্ঠানিকভাবে এই অংশের উদ্বোধন করেন। নতুন সড়কটি ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে সংযুক্ত করবে ফলে যাতায়াত সময় কমবে এবং যান চলাচলের সুবিধা বাড়বে।
PPP কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক এ কে এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ঢাকা বাইপাস প্রকল্প বাংলাদেশের PPP কাঠামোর সাফল্যের প্রমাণ। সরকারি ও বেসরকারি খাতের যৌথ উদ্যোগে আমরা আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করছি যা নাগরিকদের উপকারে আসবে এবং দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।”
সম্পূর্ণ উদ্বোধনের পর ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে রাজধানীর যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ করিডর হিসেবে কাজ করবে এবং শিল্পাঞ্চল ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সংযোগ আরও মজবুত করবে।
এই প্রকল্প PPP কর্তৃপক্ষের সেই ভিশনকে আরও শক্তিশালী করেছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ PPP বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এক বছরে দেশ নির্বাচন আয়োজন করার মতো যথেষ্ট প্রস্তুত ও স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে।
তিনি বলেন, আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের জায়গায় নির্বাচিত একটি সরকার দায়িত্ব নেবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগে’ যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে। এক বছর আগে আমরা দেশকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে ছাত্রদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এক হত্যাযজ্ঞের ভেতর দিয়ে গিয়েছি। এখন আমরা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি রূপান্তরের জন্য প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছি। ঠিক এক বছর আগে আমাদের অভ্যুত্থান হয়েছিল, আর দেশ এখন যথেষ্ট স্থিতিশীল এবং নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত।
এ সময় সরকারের প্রতিনিধি, জাতিসংঘ সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারে। সবাইকে এই সংকট নিরসনে কোনো বিলম্ব ছাড়াই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আপনাদের সোচ্চার হওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার আশা জাগাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান শুধু বাংলাদেশের একার দায়িত্ব নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও এখানে এগিয়ে আসতে হবে। সংকটের সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে ভাবা এবং তা বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখা সবার যৌথ দায়িত্ব।
যত দিন পর্যন্ত রোহিঙ্গারা নিজেদের আবাসভূমিতে ফিরে যেতে না পারেন, তত দিন পর্যন্ত তাদের বিষয়টি ও এর টেকসই সমাধানকে বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখার ওপর জোর দেন অধ্যাপক ইউনূস।
এর আগে, সোমবার সকালে এই সংলাপে যোগ দিতে কক্সবাজার পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। এদিন বেলা ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। এতে মিয়ানমার ও আঞ্চলিক স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
নিরাপদ সমুদ্র পর্যটনের জন্য জরুরি সতর্কবার্তা জারি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
সতর্কবার্তা অনুযায়ী লাল পতাকা চিহ্নিত জায়গা বিপজ্জনক। লাল পতাকা চিহ্নিত স্থানে পানিতে নামা যাবে না। জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মী ও লাইফ গার্ড সর্বদা পর্যটকদের সার্বিক সহযোগিতায় নিয়োজিত রয়েছে।
নিরাপদ সমুদ্রসীমার মধ্যে অবস্থান করা এবং লাইফগার্ড সার্ভিস বিদ্যমান রয়েছে এমন স্থান ব্যতীত অন্য কোথাও পানিতে না নামতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত এই সীমানার বাইরে পানিতে ডুবে গেলে কোনো সহায়তা পাওয়া যায় না।
পানিতে নামার আগে অবশ্যই জোয়ার-ভাটার সময় এবং সাগরের বিপদ সংকেত সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় পানিতে নামা থেকে বিরত থাকতে।
ভাটার টান চলাকালীন বেপরোয়াভাবে সাগরে না নামতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
এছাড়া সাঁতার জানা না থাকলে, সমুদ্রে নামা পরিহার করতে হবে। সকল হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজ ও রিসোর্টসমূহ আবশ্যিকভাবে পর্যটককে লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ/ব্যবহার করার সুযোগ প্রদান করতে হবে। লাইফগার্ড হিসেবে টিউব পরিহার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। লাইফ জ্যাকেট পরিধান ও শিশুদের সব সময় নিজের তত্ত্বাবধানে রাখতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সৈকত এলাকায় অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চা কিংবা শিশু নিয়ে আসলে অবশ্যই শিশুর ছবি মোবাইলে সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পানির তীব্র স্রোত, ঘূর্ণি স্রোত, উল্টো স্রোত ও নিম্নমুখী প্রবাহ বিপজ্জনক। সমুদ্রতটে বালি সরে গিয়ে ছোট-বড়ো কিছু গর্ত তৈরি হতে পারে, যা বিপজ্জনক; এই ধরনের প্রতিকূল আবহাওয়ায় পানিতে নামা থেকে বিরত থাকতে হবে।
অপ্রশিক্ষিত ব্যক্তি কর্তৃক উদ্ধার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কারণ এতে উদ্ধারকারীর জীবনও বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মন্তব্য