মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য দেশটির গ্র্যাজুয়েট প্লাস ভিসা চালুর সম্ভাবনা রয়েছে, যা হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েটকে সমৃদ্ধ অর্থনীতির এই দেশে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কুয়ালালামপুরে ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়ায়, মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী জাম্ব্রি আবদুল কাদিরের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়টি উত্থাপন করেন।
‘মন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। নীতিগতভাবে তিনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য গ্র্যাজুয়েট প্লাস ভিসা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। তবে নীতি কার্যকর হওয়ার আগে উভয় পক্ষকে কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে,’ বলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। অন্য দেশের শিক্ষার্থীরা যেখানে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ পায়, সেখানে এতদিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল।
এর আগে বুধবার, মালয়েশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রী ফাদলিনা বিনতি সিদেক কুয়ালালামপুরের একটি হোটেলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি বাড়ানোসহ শিক্ষায় সহযোগিতা জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিনিময় কর্মসূচি সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকা মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বাংলাদেশের ডিগ্রির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও চেয়েছে।
মালয়েশিয়ার মন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের ‘থ্রি জিরো’ প্রচারণায় গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন, যার লক্ষ্য বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা।
‘আপনি যদি দারিদ্র্যহীন পৃথিবী কল্পনা না করেন, তবে তা হবে না,’ মন্তব্য করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বিশ্বনেতাদের প্রতি আত্মবিধ্বংসী নয় এমন একটি সভ্যতা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রীকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার হয়।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ।
স্বামী নেই। তিন মেয়ের মধ্যে দুজনের বিয়ে হয়ে হয়েছে। অসুস্থ হয়েও সংসারের চালাতে চাকরি নেন একটি মিলে। তবে সংসারে অভাব দূর করতে পারেন নি। অসুস্থতা অভাব আর ঋণে জর্জরিত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় নমিতা রানী পাল (৪২) ও তার মেয়ে তন্বী রানী পাল(১৮)।
বুধবার সকাল ৯ টায় হৃদয়বিদারক এমন ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি আজিজুল হক জানান, মৃত জীবন চন্দ্র পালের স্ত্রী নমিতা রাণি পালের তিন মেয়ে ছিল। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে তন্বী এখনও অবিবাহিত ছিল। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন নমিতা রাণি, যিনি স্থানীয় দেবপুর স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন। তবে গত দুই মাস ধরে অসুস্থ থাকায় কাজে যেতে পারছিলেন না। এতে পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে যায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে তারা চরম মানসিক চাপে ছিলেন।
বুধবার সকালে মা ও মেয়ে দুজনেই বিষপান করেন। প্রতিবেশীরা দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল্লাহ প্রধান বলেন, “খবর পেয়ে বেলা আড়াইটায় আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি।”
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক আরো জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।
দেশের শতকরা ৯০ ভাগ বিরোধের উৎস্য ভূমি। এটা কিন্তু খুব কমই প্রতিকার নিতে পারছি আমরা। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আমারও দায়িত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে জনগণেরও সচেতনতা প্রয়োজন। ফেনীতে অনুষ্ঠিত অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পাইলট প্রকল্প হিসেবে এটি ফেনী থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
ফেনী জেলা প্রশাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো: এমদাদুল হক চৌধুরী, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প এর প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো: পারভেজ হাসান বিপিএএ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব, সাংবাদিক আবু তাহের, ফেনী আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নুরুল আমিন খান, ফেনী সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজিব তালুকদার, ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা নাসরিন কান্তা, ফেনী জেলা জামায়াতের আমীর মুফতি আব্দুল হান্নান, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, বৃহত্তর নোয়াখালীর ভূমি বিষয়ক সার্চ অফিসার সরোয়ার উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফাহমিদা হক প্রমূখ।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জেলার ভূমি বিভাগ, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র প্রতিনিধি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে একজনও নেই জনবল। সৃষ্ট ৬ টি পদ থাকলেও সবকয়টি পদই শূন্য। জনবলের অভাবে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত ইউনিয়নের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই ভঙ্গুর দশা নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি জনবল নিয়োগ দিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হউক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শ্রীকাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রটি বন্ধ। নেই কোনো চিকিৎসক। রোগী এসে ফেরত চলে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনেই মলমূত্র ত্যাগ করছেন মানুষ। প্রস্রাব ও আবর্জনার তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। রেগীরা সুস্থ হতে এসে আরো বেশি অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন।
শ্রীকাইল ইউনিয়নের ভূতাইল গ্রামের সুজন মুন্সি (২৮) বলেন, প্রতিদিন শতো শতো রোগী এসে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফেরত যায়। এদের মধ্যে বেশিরভাগ রোগী খুবই দরিদ্র। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার নাই। বাউন্ডারি নাই। দুটি ভবন পুরোপুরি পরিত্যাক্ত। চারদিকে খোলা মেলা ও ঝোপঝাড় থাকায় এটি এখন জনসাধারণের নিরাপদ প্রস্রাব কেন্দ্র।
তৃণমূলের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতলটি চালু করা খুবই জরুরি।
স্বাস্য কেন্দ্রের পাশের বাড়ীর তাজুল ইসলাম (৬০) জানান, যেকোনো রোগের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য শ্রীকাইল স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রই একমাত্র ভরসা। শ্রীকাইল থেকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। জেলার দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে তাকে উপজেলা কিংবা জেলায় পৌঁছানোর আগে মৃত্যুর কোলে ঢলে যায়।
সোনাকান্দা বহুমুখী কামিল মাদ্রাসার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মফিজুল ইসলাম জানান, ১ নং শ্রীকাইল ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। ইউনিয়নবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে স্বাধীনতার পূর্বে শ্রীকাইলে দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি চালু করা হয়। সময়ের পরিবর্তনের সাথে নামেরও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমান নাম ইউনিয়ন উপস্বাস্হ্য কেন্দ্র। চিকিৎসক না থাকায় কেন্দ্রটি প্রায়ই বন্ধ থাকে। একারণে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত থেকে হচ্ছে।
এদিকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের তিনটি ভবনই পরিত্যক্ত। ঝরাজীর্ণ একটি কক্ষে সপ্তাহে দুই দিন বসে রোগী দেখেন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মাজহারুল ইসলাম। তিনার কর্মস্থল রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র।
অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মাজহারুল ইসলাম জানান, রোগীর চাহিদা আছে। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত রোগী দেখেন। গড়ে প্রতিদিন ১'শ রোগী দেখা হয়। জনবলের অভাবে রোগীরা এসে ফিরে যায়। সরকার নতুন করে সৃষ্ট পদসমূহে জনবল দিলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়াও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি জনবল শূণ্য হওয়ায় চিকিৎসা সেবা ব্যবহত হচ্ছে। আমরা চাহিদা দিয়ে রাখছি। নিয়োগ হলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দির্ঘ ৬ ঘন্টা ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের পর এবার উত্তরবঙ্গের রেলপথ আটকে দিয়েছিলো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৩ আগষ্ট) সকাল ৯টায় জেলার উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় উত্তরাঞ্চলের রেলপথ আটকে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন তারা। টানা ৬ ঘন্টা আন্দোলনের পর বৃহস্পতিবার যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে মহা সড়ক ও রেলপথ বন্ধ করে দেয়ার হুশিয়ারি দিয়ে অবরোধ স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভকারীরা জানান, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে রোববার হাটিকুমরুল গোলচত্বরে এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই দিন ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। এরপরও সরকারের কোন পক্ষের ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। ৪৮ ঘণ্টা শেষ। আমাদের দেওয়া সময় শেষ হওয়ায় আজ বুধবার সকাল থেকে উল্লাপাড়া স্টেশনে শিক্ষার্থীরা অবস্থন নিয়ে রেলপথ ব্লকেড করা হয়।
জাকারিয়া ও হৃদয়সহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৮ বছরেও ক্যাম্পাস নির্মিত হয়নি, এটি দুর্ভাগ্যজনক। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ কর্মচারী-কর্মকর্তাদের চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা স্থায়ী ক্যাম্পাস চাই। ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরব না। এদিকে রেলপথ অবরোধ করায় উভয় প্রান্তে একাধিক ট্রেন আটকা পড়েছে।
উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মনিরুল ইসলাম জানান, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ৩৯ মিনিটে, চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস সকাল ১১টা ২৮ মিনিটে এবং ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে অবরোধের কারণে ট্রেনের শিডিউলে বিপর্যয় ঘটতে পারে। আপাতত ঢাকা-উত্তরবঙ্গের সাাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। দুই পাড়ে মোট ৫ টি ট্রেন আটকে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মনিরুল ইসলাম জানান, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ৩৯ মিনিটে, চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস সকাল ১১টা ২৮ মিনিটে এবং ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে অবরোধের কারণে ট্রেনের শিডিউলে বিপর্যয় ঘটতে পারে। আপাতত ঢাকা-উত্তরবঙ্গের সাাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক তপন ঘোষ জানান, জামতৈল স্টেশনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ও রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস লাহিড়ী মোহনপুর স্টেশনে আটকা পড়েছে। অন্যান্য স্টেশনেও আরও ট্রেন থাকতে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় রাঙামাটির পর্যটনের প্রধান আকর্ষণ ও জেলার আইকন খ্যাত ঝুলন্ত সেতুটি টানা ১৫ দিন ধরে পানির নিচে ডুবে রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুর উপর চলাচল নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক সেতুতে উঠতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরছেন।
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশন জানিয়েছেন, গত ৩০ জুলাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির ফলে সেতুটি পানিতে তলিয়ে যায়। বুধবার (১৩ আগস্ট) পর্যন্ত সেতুর পাটাতন ৬ ইঞ্চি পানির নিচে রয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি আরও ছাড়া হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেতুটি পানির উপরে উঠে আসতে পারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুতে পর্যটক কম থাকায় একপাশে সারিবদ্ধভাবে নোঙর করে রাখা হয়েছে পর্যটন বোটগুলো। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন বোটচালকরা। তবে সেতুতে উঠতে না পারলেও অনেকে সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন এবং বোটে করে আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আগত পর্যটকরা।
রাজশাহী থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক রুবিনা ও মাসুদ রানা বলেন, “অনেক দূর থেকে সেতু দেখতে এসেছি। কিন্তু উঠতে না পারায় খারাপ লাগছে। তবে রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে।”
চট্টগ্রাম থেকে আসা রাহুল বলেন, “ছবি ও টিভিতে দেখা এই সেতুটি দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সম্ভব হলো না, যদিও এটা প্রাকৃতিক ঘটনা, তাই কিছু করার নেই।”
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হ্রদের পানি উচ্চতা ১০৭.০৭ ফুট মিনস সি লেভেল। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট সচল রয়েছে এবং সর্বোচ্চ ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ।
এ প্রসঙ্গে সিএইচটি ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচার রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “সেতুটি নির্মাণের সময় পানির উচ্চতা বিবেচনা না করায় বর্ষায় প্রতি বছরই ডুবে যায়। এতে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিনেও কোনো সংস্কার হয়নি। নতুন বা আধুনিক সেতু নির্মাণে পর্যটন করপোরেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদ এগিয়ে আসা উচিত।”
পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক অলোক বিকাশ চাকমা বলেন, “সেতুটি ৪০ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। আধুনিক সেতু নির্মাণের জন্য উন্নয়ন বোর্ডে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলে পর্যটকদের জন্য উন্নত মানের ঝুলন্ত সেতু তৈরি করা হবে।”
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন কাপ্তাই হ্রদের উপর এই আইকনিক ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করে, যা রাঙামাটির পর্যটনের অন্যতম প্রতীক।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত সবুজ শিল্পায়নের পথে আরেকটি গৌরবোজ্জ্বল মাইলফলক স্পর্শ করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইউএসজিবিসি থেকে লিড সনদ পেয়েছে দেশের আরও পাঁচটি কারখানা।
এ নিয়ে দেশে মোট লিড সার্টিফায়েড কারখানার সংখ্যা দাঁড়াল ২৫৮টি, যার মধ্যে ১০৯টি প্লাটিনাম ও ১৩৩টি গোল্ড সনদপ্রাপ্ত কারখানা। এ অর্জনের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার সংখ্যায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
নতুন যে পাঁচটি কারখানা লিড সনদ পেয়েছে, সেগুলো হলো- ১. ঢাকার আশুলিয়ায় অবস্থিত সাউথ অ্যান্ড সুয়েটার কোং লিমিটেড, যা ৮৫ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে, ২. সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে অবস্থিত পুরবাণী ফ্যাশন লিমিটেড, যা ৮৩ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে, ৩. চট্টগ্রামের কেডিএস ফ্যাশন লিমিটেড, যা ৮৪ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে, ৪. ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত রাইদা কালেকশন, যা সবচেয়ে বেশি ৯০ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে, ৫. গাজীপুরে অবস্থিত টেক্সইউরোপ বিডি লিমিটেড, যা ৭০ পয়েন্ট পেয়ে গোল্ড সনদ অর্জন করেছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত শীর্ষ ১০০টি লিড সার্টিফায়েড ভবনের মধ্যে ৬৮টিই এখন বাংলাদেশে, যা বৈশ্বিক অঙ্গনে দেশের অসাধারণ সবুজ পারফরম্যান্সের প্রতিফলন।
এই অর্জন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, শিল্পের এই অর্জন এমন সময়ে এসেছে, যখন আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের চাপ এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যবসার ধারাবাহিকতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবুও উদ্যোক্তারা টেকসই অবকাঠামো ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদন পদ্ধতিতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছেন, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি ও স্থিতিশীলতার প্রমাণ।
তিনি বলেন, প্রতিটি লিড-সনদপ্রাপ্ত কারখানা কেবল একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নয়, বরং এটি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যতের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি। এমন নেতৃত্ব ও অগ্রযাত্রা আমাদের শুধু আশাবাদীই করে না, বরং বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে টেকসই শিল্পের রোল মডেল হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে রয়েছে, কিন্তু এই পদক্ষেপটি আমরা গত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উত্তরাধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, গত সরকারের সময়ে প্রকাশিত জিডিপি, ব্যক্তিগত আয়, মাতৃস্বাস্থ্য ও অন্যান্য সামাজিক সূচকগুলো বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বাস্তবিক অর্থে,স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
উপদেষ্টা আজ বুধবার (১৩ আগষ্ট) প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) কনফারেন্স রুমে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট আয়োজিত "বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন"- শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরিসংখ্যান বহন করলেও তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আগামী ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের দেশের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা গ্রহণের সময় আসবে, এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে তা অনুযায়ী নিয়ম মেনে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে শুল্ক ও জিএসপি সুবিধার প্রভাব কোথায় বৃদ্ধি পাবে এবং কোথায় হ্রাস পাবে, তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিদেশ থেকে স্বল্পমূল্যে গরুর মাংস আমদানি করলে দেশীয় গবাদিপশুর বাজারে প্রভাব পড়বে এবং লাখ লাখ খামারি, বিশেষ করে গরীব মহিলারা যারা গরু লালন-পালন করে উদ্যোক্তা হিসেবে অবদান রাখছেন, তাদের ক্ষতি হবে।
উপদেষ্টা বলেন, “আমরা বিদেশ থেকে মাংস আমদানি কমানোর জন্য চেষ্টা করছি। কারণ, আমদানি করা মাংসের মাধ্যমে জুনোটিক রোগ প্রবেশের ঝুঁকি রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, সাগরের সি উইড ও কুচিয়া রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি হ্রাস করতে হবে এবং দেশীয় উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
এসময় আরো বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের জেনেভা ভিত্তিক লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ও সিনিয়র রিসার্চার সানিয়া রিড স্মিথ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ মাসুদ, অ্যাডভোকেট তাসলিমা জাহান প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের কো-অর্ডিনেটর বারাকাত উল্লাহ মারুফ।
মন্তব্য