গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫–এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাতে নির্বাচন বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এটা চূড়ান্ত হলে নির্বাচনে কোনো আসনের ভোট নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ওই আসনের পুরো ভোট বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন।
পাশাপাশি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে না। তবে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ‘না’ ভোটের বিধান। গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মুলতবি কমিশন সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ।
এর আগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫, পাশাপাশি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫–এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, আবদুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ইসি সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আরপিওতে নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও বাতিল নিয়ে যে বিধানগুলো ছিল, যেখানে পুরো কনস্টিটিয়েন্সির (আসন) নির্বাচন বাতিল বা ফলাফল বাতিল করার যে সক্ষমতা, সেটাকে সীমিত করা হয়েছিল। সেটা আবার পুনঃস্থাপন করা হয়েছে, অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন অবস্থা বুঝে নির্বাচন স্থগিত করা, এক বা একাধিক বা সমস্ত কনস্টিটিয়েন্সির ফলাফল বাতিল করতে পারবে।’
মো. সানাউল্লাহ বলেন, কোনো আসনে একজন প্রার্থী থাকলে তিনি আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন না। এক্ষেত্রে না ভোটের সঙ্গে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। এক্ষেত্রে না ভোটের চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বেশি ভোট পেলেই কেবল তিনি নির্বাচিত হবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, যদি কোথাও একজন প্রার্থী হয়, যে বিনা ভোটে নির্বাচিত হবে, এক্ষেত্রে না ভোট থাকবে। যদি না ভোট বেশি হয়, তাহলে ফের নির্বাচন হবে। পরের নির্বাচনেও যদি একক প্রার্থী থাকে, তবে আর ভোট হবে না। ওই প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘না’ ভোটের বিধান ছিল সব আসনে। পরে নবম সংসদে তা বাদ দেওয়া হয়। এবার ‘না’ ভোটের বিধান চালুর প্রস্তাব ছিল সংস্কার কমিশনেরও।
তবে ইসি সব আসনে ‘না’ ভোটের বিধান চালু না করলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা রোধে শুধু একক প্রার্থী থাকলে তাকে ‘না’ ভোটের সঙ্গে লড়তে হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা রোধে এ ব্যবস্থা করেছে ইসি।
নির্বাচনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীসহ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে শামিল করার প্রস্তাব হয়েছে বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘যেহেতু ইভিএমের ব্যবহার হবে না মর্মে আমরা ইতোপূর্বেই কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাই ইভিএম–সংক্রান্ত যাবতীয় প্রভিশন বিলুপ্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের অবহেলাজনিত যে শাস্তিগুলো আছে, সে শাস্তিগুলো ক্লিয়ারলি ডিফাইন (সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত) করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তীতে এটা বিধান নিশ্চিত করা হয়েছে যে এটার ফিডব্যাক গৃহীত ব্যবস্থা সম্বন্ধে যেন কমিশনকে জানানো হয় এবং ভবিষ্যতে এটা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পার্সোনালের মধ্যে থাকবে।’
আরপিও সংশোধনে কমিশনের অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক ও সংবাদকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে মো. সানাউল্লাহ জানান। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকতে পারবেন। তবে শর্ত একই বলবৎ থাকবে সবার জন্য। ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যারা থাকতে চাইবেন, তাদের পুরাটা সময় থাকতে হবে। মাঝপথে বের হয়ে যাওয়া যাবে না।
একই আসনে সমান ভোট পেলে লটারিতে বিজয়ী ঘোষণা করার বিধান বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা রেখে ডিজিটাল বিলবোর্ডে আলোর ব্যবহারের সুযোগ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রার্থীর নির্বাচনে ব্যয়ের হিসাবের বিষয়টি আরও সুনির্দিষ্ট করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ জানান। তিনি বলেন, প্রার্থীদের ব্যয়ের অডিটের ব্যাপারটাকে আরও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং আরেকটু একনিষ্ঠভাবে দেখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যেগুলোতে ব্যত্যয় থাকতে পারে বলে মনে করে, সেগুলোকেই অডিট করবে। ইতিপূর্বে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যক্তি পর্যায় থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত এবং প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ৫০ লাখ পর্যন্ত অনুদান বা ডোনেশন নিতে পারত। এটাকে ৫০ লাখ করা হয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই শর্ত দেওয়া হয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই ট্রানজিকশন হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ট্যাক্স রিটার্নে এটা দেখাতে হবে।
এছাড়া তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের বদলির বিষয়ে ইসির ক্ষমতার আওতা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের মিথ্যাচার বা অপবাদ ছড়ানো ইত্যাদি ব্যাপারে প্রার্থী, দল, সংস্থা, গণমাধ্যম—সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
জয়পুরহাটে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার ভুয়া চালান দিয়ে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) গুদাম থেকে সার তোলার সময় ডিলারের ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে গুদামের হিসাব কর্মকর্তা এস এম হাসানুর রহমান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তার হাসিব আল মামুন (৩৪) বিসিআইসি ডিলার মেসার্স মামুন ব্রাদার্সের মালিক মামুনুর রশিদের ছেলে। তাদের বাড়ি পাঁচবিবি উপজেলার গোপালপুর গ্রামে। হাসিব ঠিকাদারের প্রতিনিধি হিসেবে বাফার গুদাম থেকে সার উত্তোলন করতেন।
বাফার গুদাম ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে হাসিব আল মামুন সার উত্তোলন করতে বাফার গুদামে আসেন। তিনি জনতা ব্যাংকের দুটি শাখার সাড়ে ১৬ লাখ টাকার জমা ভাউচারের চালান দাখিল করেন। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখার সাড়ে ৭ লাখ টাকা ও পাঁচবিবি শাখার ৯ লাখ টাকার জমা ভাউচারের চালান। বাফারের হিসাব কর্মকর্তা এস এম হাসানুর রহমান শুধু জনতা ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখার সাড়ে সাত লাখ টাকা জমার মুঠোফোনে খুদে বার্তা পান। জনতা ব্যাংকের পাঁচবিবি শাখার ৯ লাখ টাকা জমার খুদে বার্তা পাননি।
হাসিব আল মামুন দুটি জমা ভাউচারের চালানে দ্রুত সার নেওয়ার তাগাদা দিচ্ছিলেন। এতে হিসাব কর্মকর্তার সন্দেহ হয়। তিনি জনতা ব্যাংকের পাঁচবিবি শাখার ব্যবস্থাপকের কাছে ফোন করেন। ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ৯ লাখ টাকার কোনো জমা ভাউচার এ শাখা থেকে ইস্যু করা হয়নি বলে তাকে জানান। পরে হাসিব আল মামুনকে বাফার গুদামে আটকে রাখা হয়। তিনি গুদাম কর্মকর্তাদের কাছে জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন। রাত ১০টার দিকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তামবিরুল ইসলাম বলেন, ভুয়া চালানে সার তোলা চেষ্টা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
‘প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারত্বে অগ্রগতি’ প্রতিপাদ্যে নোয়াখালীতে উদযাপিত হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস।
দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, যুব ঋণের চেক বিতরণ, প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ, সফল আত্মকর্মী ও সফল যুব সংগঠকদের মধ্যে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল দশটায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে দিবসটির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর নোয়াখালীর উপ-পরিচালক মোঃ ইসহাকের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইয়াছিন, সহকারী পুলিশ সুপার (চাটখিল সার্কেল) মনীষ দাশ।
উদ্বোধন শেষে জেলার বিভিন্ন যুব সংগঠনের সংগঠকদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলার শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়।
র্যালি শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকদের মধ্যে যুব ঋণের চেক বিতরণ, সনদ বিতরণ এবং সফল যুব সংগঠকদের মধ্যে সনদ ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়।
আলোচনা সভায় নোয়াখালী জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, যুবরাই উন্নয়ন ও উৎপাদনের প্রধান হাতিয়ার। তারুণ্যের জয়যাত্রাকে কাজে লাগিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর যুবশক্তিকে মানবসম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে কর্মমুখী প্রশিক্ষণ, আত্মকর্মসংস্থান ঋণ, সংগঠনভিত্তিক স্বেচ্ছা ও সেবামূলক কাজে যুবদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে জংশনে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে থামিয়ে পু্লিশের অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ।
গতকাল সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পুর্ব দিকের আউটার সিগন্যালের নিকট থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় মাদকদ্রব্য গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
রেলওয়ে পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত নয়টার দিকে জানতে পারে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে বিপুল পরিমাণ গাঁজার একটি চালান যাচ্ছে। যেহেতু ট্রেনটি বিরতিহীন তাই রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে রাত সাড়ে নয়টার সময় ট্রেনটি থামানো হয়। এসময় চোরাকারবারিরা পুলিশের অভিযান টের পেয়ে গাঁজার বস্তাগুলো আউটার সিগন্যালের নিকট ফেলে দেয়। পরে পরে পুলিশ পরিত্যাক্ত অবস্থায় ২টি বস্তায় রক্ষিত ২৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন।
এবিষয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাঈদ আহমেদ জানান, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে মাদকের চালানের খবর পেয়ে ট্রেন থামিয়ে অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২ বস্তায় ২৮ কেজি মাদকদ্রব্য গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অভিযানের খবর পেয়ে চোরাকারবারিরা মাদকদ্রব্য ফেলে পালিয়ে যায় । এই ঘটনায় রেলওয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে বলে তিনি।
একজন মানবিক ও ডায়নামিক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম। ২০২৪ সালে পাবনা জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে নিয়োগ পান তিনি। যোগদানের পর থেকে পাবনার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ রাত-দিন তার সেবা পাচ্ছে। জেলার সামাজিক ও মানবিক কাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য জেলাবাসীর কাছে ইতোমধ্যে তিনি ‘মানবিক জেলা প্রশাসক’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম লোকজনের সাথে মনখোলা অবস্থায় কথা গুলো মনযোগ সহ শুনে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি বিকেল বা সন্ধ্যা ও রাতেও অফিসে উপস্থিত থাকেন। প্রায় সময় দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন ডিসির সাথে দেখা করে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম সমস্যা গুলি শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
একাধিক সময় তাকে অনুসরণ-অনুকরণের পুরাতন এই জেলার মাধ্যমে তার কাজের স্বচ্ছতা পাওয়া যায়। সৎ, নির্ভীক, কর্মঠ এবং নিরহঙ্কারী মানুষ তিনি। তিনি যেমন সময়ের প্রতি দায়িত্বশীল, তেমনি কাজের প্রতিও দায়িত্বশীল। জেলা প্রশাসকের সকল টিম সততার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। তার মতো জেলা প্রশাসক যদি আমাদের দেশের প্রত্যেক জেলায় দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে দেশের চেহারাটাই বদলে যেতো—এমনটাই ধারণা করছেন গুণীজনেরা।
তিনি বর্তমানে এ জেলার সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক। প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েও যে আমজনতার মাঝে মিশে যাওয়া যায়—তিনি দেখিয়ে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত তার কর্মদক্ষতা, সততা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে। ক্রমশ তিনি হয়ে উঠেছেন পাবনা জেলাবাসীর আইকন।
ইতালি সরকার ‘ফ্লুসি ডিক্রি’ কর্মসূচির অধীনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে মৌসুমি ও অমৌসুমি খাতে কর্মী নিয়োগ করে থাকে।
আট বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালে বাংলাদেশ পুনরায় এ কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়। এতে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ইতালিতে নতুন করে মৌসুমি কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকাস্থ ইতালীয় দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
ইতালীয় দূতাবাসে মুলতবি থাকা নুলা ওস্তা (ওয়ার্ক পারমিট) দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়টি দু’পক্ষই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। মে মাসের প্রথম দিকে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসির সফরসহ ইতালীয় রাষ্ট্রদূত এবং সফররত ইতালীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সকল বৈঠকে বিষয়টি অত্যন্ত জোরালোভাবে উত্থাপন করা হয়েছে। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমীমাংসিত ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘসূত্রিতা নিরসনে তাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
ইতালীয় দূতাবাসের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে ইতালি সরকার আইনিডিক্রি নং ১৪৫ জারি করে। এর আওতায় ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর পূর্বে ইস্যুকৃত সকল ওয়ার্ক পারমিট স্থগিত করা হয়। নতুন আইনের বিধান অনুযায়ী, কেবল প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষেই ঢাকাস্থ ইতালীয় দূতাবাস ভিসা অনুমোদন বা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ফলে স্থানীয় ইতালি দূতাবাস জমে থাকা ভিসা অনুমোদনের জন্য প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে, যা সময়সাপেক্ষ।
তা সত্ত্বেও, ইতোমধ্যে তারা প্রায় ৪০ হাজার মুলতবি আবেদনের মধ্যে ৮ হাজারেরও বেশি আবেদন নিষ্পত্তি করেছে। এছাড়া, আরও প্রায় ২০ হাজার সম্ভাব্য আবেদনকারীর ওয়ার্ক পারমিট এবং এ সম্পর্কিত ভিসা প্রক্রিয়াকরণের যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শীঘ্রই শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
২০২৪ সালের ২২ অক্টোবরের পর থেকে ইস্যুকৃত ওয়ার্ক পারমিটে কোন স্থগিতাদেশ না থাকায় ২০২৫ সালের ফ্লুসি ডিক্রির আওতায় ওই তারিখের পরে যারা আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে কয়েকশ’ বাংলাদেশি অভিবাসী ইতোমধ্যে ভিসা পেয়েছেন এবং আগামী মাসগুলোতে আরও অনেকে পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
এ প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রোমস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ঢাকাস্থ ইতালীয় দূতাবাস ও ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে। ফলে, ইতালি দূতাবাস ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে জনবল বৃদ্ধি করেছে।
তবে, এক বা একাধিক অসাধু চক্রের মাধ্যমে জাল ওয়ার্ক পারমিট এবং নকল নথিপত্র জমা পড়ায় আবেদনগুলোর যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগছে বলে জানা গেছে। ইতালিতে বর্তমানে এ সংক্রান্ত একাধিক ফৌজদারি তদন্তও চলমান রয়েছে।
জানা যায়, ইতালিতে অভিবাসনের জন্য আগ্রহীদের কেবলমাত্র সরকারি কনস্যুলার ও প্রশাসনিক ফি ছাড়া অন্য কিছু পরিশোধের প্রয়োজন নেই। যারা উল্লিখিত ফি ছাড়াও অসাধু ব্যক্তিদের লাখ লাখ টাকা পরিশোধ করছেন, তাদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, এই অর্থ ভিসা প্রক্রিয়াকে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রভাবিত করার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
ফলে তাদের ভিসা বাতিল হতে পারে এবং এমনকি আইনি জটিলতাও দেখা দিতে পারে।
তারও পরে সঠিক কাগজপত্র জমা দিয়েছেন বা দেবেন এমন আবেদনকারীদের কাগজপত্র বাছাই করতেও দীর্ঘ সময় লাগছে বা লাগতে পারে এবং এর দরুন ভিসা প্রদানে বিলম্ব ঘটছে বা ঘটতে পারে।
অন্যদিকে, গত ৬ মে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে অভিবাসন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এর মাধ্যমে বৈধ উপায়ে দক্ষ কর্মী প্রেরণের সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের পথ সুগম হয়েছে। এই চুক্তি বাংলাদেশ থেকে নিয়মিতভাবে ইতালিতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কর্মী পাঠানোর দ্বার উন্মোচন করবে।
ইতালিতে কর্মী হিসেবে যেতে আগ্রহী অথবা ইতোমধ্যে ওয়ার্ক পারমিট প্রাপ্ত প্রার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ এবং ইতালি সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অনুগ্রহপূর্বক ধৈর্যধারণ করা অনিবার্য। এ প্রক্রিয়া একটি স্বতন্ত্র প্রশাসনিক পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে, যার প্রতি সকলের আস্থা রাখা প্রয়োজন।
যেকোনো ধরনের নেতিবাচক প্রচার বা কার্যক্রম ইতালি সরকারের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে, যা বর্তমানে যারা ভিসাপ্রাপ্তির অপেক্ষায় রয়েছেন বা যারা ভিসার জন্য আবেদন করবেন তাদের আবেদন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের সম্ভাবনার ওপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, এ বিষয়ে সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।
“প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে যথাযথ মর্যাদায় রাজবাড়ীর পাংশায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস-২০২৫ পালিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য যুব র্যালি বের হয়ে উপজেলার সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উপজেলা পরিষদে এসে শেষ হয়। পরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা, সনদপত্র ও যুব ঋণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা দেওয়ান মুহ: জাহাঙ্গীর হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস. এম. আবু দারদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. এবাদত হোসেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পৃথ্বীজ কুমার দাস, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাঈদ আহমেদ। এসময় উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, এনজিও প্রতিনিধি ও বিভিন্ন এলাকার যুব উদ্যোক্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও পবিত্র গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে যুব উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে উদ্যোক্তাদের মাঝে মোট ৮ লাখ ২০ হাজার টাকার চেক এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীন মানুষের হার আরও বেড়েছে। গত বছরের অক্টোবরে ৩৮ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। ৮ মাস পর এখন ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষ বলছেন, কাকে ভোট দেবেন, সে বিষয়ে তারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি। কাকে ভোট দেবেন, তা বলতে চান না ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ মানুষ। আর ভোট দেবেন না বলেছেন ১ দশমিক ৭০ শতাংশ।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ‘পালস সার্ভে ৩’-এর ফলাফলে এমন চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা নিয়ে’ জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। বিআইজিডি ও সংস্কারবিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ভয়েস ফর রিফর্ম যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে ১২ শতাংশ বিএনপি, ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ জামায়াতে ইসলামী এবং ২ দশমিক ৮০ শতাংশ মানুষ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কথা বলেছেন। আট মাস আগে গত অক্টোবরে একই প্রশ্ন করা হলে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ বিএনপি, ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ জামায়াত ও ২ শতাংশ মানুষ এনসিপিকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। অর্থাৎ আট মাস পর বিএনপি ও জামায়াতের ভোট কিছুটা কমেছে আর এনসিপির ভোট সামান্য বেড়েছে।
জরিপে গত অক্টোবরে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগকে (এখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ভোট দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেটি এখন কমে হয়েছে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর বাইরে জাতীয় পার্টির ভোট শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ, অন্যান্য ইসলামি দলের ভোট ২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে নেমেছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ।
অবশ্য আপনার নির্বাচনী এলাকায় কোন দলের প্রার্থী জিতবে বলে মনে হয়—এমন প্রশ্নে ৩৮ শতাংশ মানুষ বিএনপির কথা বলেছেন। এই প্রশ্নের উত্তরে ১৩ শতাংশ মানুষ জামায়াত ও ১ শতাংশ এনসিপির কথা বলেছেন। আর আওয়ামী লীগের কথা বলেছেন ৭ শতাংশ মানুষ।
অনুষ্ঠানে জরিপের ফল তুলে ধরেন বিআইজিডির ফেলো অব প্র্যাক্টিস সৈয়দা সেলিনা আজিজ। তিনি জানান, জরিপের জন্য গ্রাম ও শহরের নানা শ্রেণিপেশার ৫ হাজার ৪৮৯ জন মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে। তাদের ৫৩ শতাংশ পুরুষ, ৪৭ শতাংশ নারী; ৭৩ শতাংশ গ্রামের ও ২৭ শতাংশ শহরের। জরিপে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, চলমান সমস্যা, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে টেলিফোনে প্রশ্ন করে মতামত জানতে চাওয়া হয়। গত ১ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত সময়ে এই জরিপ চালানো হয়। এর আগে গত অক্টোবরের তথ্যের ভিত্তিতে ডিসেম্বরে বিআইজিডির দ্বিতীয় পালস সার্ভের ফল প্রকাশ করা হয়েছিল।
জরিপে ৭০ শতাংশ মানুষ বলেন, তারা মনে করেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। সুষ্ঠু হবে না মনে করেন ১৫ শতাংশ আর এ বিষয়ে জানেন না বলেছেন ১৪ শতাংশ মানুষ।
বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আপনি কি মনে করেন বাংলাদেশ সঠিক পথে এগোচ্ছে, এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল বিআইজিডির জরিপে। এর উত্তরে ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন দেশ রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে আর ৪৫ শতাংশ মানুষের মত হলো দেশ অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে। গত বছরের অক্টোবরে ৫৬ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন দেশ রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে আর ৪৩ শতাংশ বলেছিলেন অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে। অর্থাৎ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মধ্যে আশাবাদ সামান্য বেড়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তা কমেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ পর্যন্ত যেসব প্রচেষ্টা, সেগুলোকে আপনি ১০০-তে কত নম্বর দেবেন, এই প্রশ্নে সরকারকে ৬৩ শতাংশ নম্বর দিয়েছেন উত্তরদাতারা। গত অক্টোবরে এটি ছিল ৬৮ শতাংশ।
ভালোভাবে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন চান ৫১ শতাংশ মানুষ। কিছু জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন চান ১৭ শতাংশ। সংস্কার বাদ দিয়ে নির্বাচন দেওয়া ভালো বলে মনে করেন ১৪ শতাংশ মানুষ। আর সংস্কার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বলেছেন ১৩ শতাংশ মানুষ।
কোন সংস্কারগুলো প্রয়োজন বলে মনে করেন, এই প্রশ্নে একাধিক উত্তর দেওয়ার সুযোগ ছিল। এর উত্তরে ৩০ শতাংশ মানুষ আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নের কথা বলেছেন। আইন ও বিচারব্যবস্থার উন্নতির কথা বলেছেন ১৬ শতাংশ। এ ছাড়া ১১ শতাংশ মানুষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ১৬ শতাংশ অর্থনীতি বা ব্যবসা চাঙা করা, ১৩ শতাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো, ১০ শতাংশ বেকারত্ব কমানো, ১৭ শতাংশ দুর্নীতি দমনের কথা বলেছেন। এর বাইরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অসহনশীলতা কমানো এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বলেছেন ১৯ শতাংশ করে মানুষ।
জাতীয় নির্বাচন কখন চান, এমন একটি প্রশ্নও করা হয়েছিল জরিপে। এর জবাবে ৩২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তাঁরা আগামী ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চান ১২ শতাংশ, জুনের মধ্যে ১১ শতাংশ আর ডিসেম্বর (২০২৬) অথবা পরে নির্বাচনের কথা বলেছেন ২৫ শতাংশ মানুষ।
জরিপের ফল প্রকাশের পর অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিআইজিডির জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক এ কে এম ফাহিম মাশরুর। আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আলোচকেরা।
মন্তব্য