বাক, শ্রবণ ও অন্ধ প্রতিবন্ধীদের আধুনিক প্রযুক্তিতে তাল মেলাতে বাংলা ভাষা ভিত্তিক একগুচ্ছ সফটওয়্যার নিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।
বাংলা ভাষায় স্ক্রিন রিডার, ব্রেইল কনভার্টার ও ইশারা ভাষা ডিজিটাইজেশন ভিত্তিক সফটওয়্যার শীঘ্রই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এছাড়াও ইশারা ভাষার একটি ডেটাসেট উন্মুক্ত করা হয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘প্রতিবন্ধিতা অতিক্রমণে প্রযুক্তি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ” প্রকল্পের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ফাউন্ডার ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী।
কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ক গবেষক, শিক্ষক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের প্রতিনিধি ও অংশীজন উপস্থিত ছিলেন।
শীষ হায়দার চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “প্রযুক্তিগত সমতা প্রতিষ্ঠায় অ্যাক্সেসিবিলিটি একটি মৌলিক বিষয়। প্রতিবন্ধিতাকে উপেক্ষা করে নয়, বরং প্রযুক্তির মাধ্যমে তা অতিক্রম করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এই প্রকল্পকে একটি ইন্ডাস্ট্রিতে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার ও একাডেমিয়াকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ জন্য উন্নয়নাধীন বাংলা ভাষায় স্ক্রিন রিডার, ব্রেইল কনভার্টার ও ইশারা ভাষা ডিজিটাইজেশন ভিত্তিক সফটওয়্যার খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। তিনি প্রযুক্তিকে কেবল ডিজিটাল অ্যাক্সেস নয়, বরং দক্ষতা, অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষমতায়নের একটি মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মনসুর আহমেদ চৌধুরী বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “আমি সাত বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারাই, তাই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি- দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল সংস্করণে অনুষ্ঠান সংক্রান্ত তথ্য প্রদান একটি আবশ্যকতা।” এছাড়া যত দ্রুত সম্ভব নির্মাণাধীন সফটওয়্যারগুলো উন্মুক্ত করার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
কর্মশালার উপস্থাপিত ধারণাপত্রে বলা হয়, মানব-কম্পিউটার যোগাযোগের (হিউম্যান-কম্পিউটার ইন্টারঅ্যাকশন) প্রেক্ষাপটে ব্যবহারকারী কেন্দ্রিক ডিজাইনের গুরুত্ব অপরিসীম। ধারণাপত্রে, বাংলা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ রিকগনিশন সিস্টেম, টেক্সট টু সাইন পাপেট, বাংলা টেক্সট টু ব্রেইল, স্ক্রিন রিডার “আলো” এবং টিটিএস ভিত্তিক অডিও বুক তৈরির সার্বিক অগ্রগতি ও অবস্থান উপস্থাপন করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব করিম বলেন, “বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সমঅধিকারের সুযোগ তৈরিই এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।
তিনি জানান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ভাষার ডিজিটাইজেশন, ইশারা ভাষা সফটওয়্যার এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি হচ্ছে, যা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রযুক্তি ব্যবহার ও যোগাযোগ আরও সহজতর করবে।
কর্মশালায় বাংলা ইশারা ভাষার ডেটাসেট এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয় যা https://huggingface.co/datasets/banglagov/Ban-Sign-Sent-9K-V1 এই ঠিকানা থেকে উন্মুক্তভাবে ব্যবহারের জন্য পাওয়া যাবে।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা ও নির্মাণাধীন সফটওয়্যারগুলো সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে ইশারা ভাষার দোভাষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আরাফাত সুলতানা লতা ও আরিফুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে ট্রেনে কাটা পড়ে মো. হাছান (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ১৮ মাস বয়সী এক শিশুরও মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের চুনতি হাফেজিয়া মাদ্রাসার উত্তরে রেলক্রসিংয়ের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে এবং আলী বাপের পাড়া এলাকার রেললাইন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হাসান চুনতি ইউনিয়নের পশ্চিম চুনতি হাদুর পাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ আহমেদের ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুল মাবুদ রয়েল জানান, ঘটনাস্থলের পাশে রেললাইনের মাঝখানে সাড়ে দশটার দিকে হাসানের মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। তবে, ট্রেনের কাটায় তার লাশ চারদিকে ছিড়ে ছিটকে পড়েছিল।
লোহাগাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারি স্টেশন মাস্টার মোঃ লোকমান বলেন , ট্রেনের কাটায় যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি।কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা সৈকত এক্সপ্রেস রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাচ্ছিল।
উল্লেখ্য এই ঘটনার মাত্র পাঁচ দিন আগে গত ২৬ জুলাই একই ইউনিয়নের নাজির পাড়া এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় তাওসিফ আলম ওয়ালিদ নামে ১৮ মাস বয়সী এক শিশুরও মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে একই এলাকার দুটি মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর চা বাগান লেক থেকে রামলাল রবিদাস (৭৫) নামে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে উপজেলার শমশেরনগর দেওছড়া চা বাগানের ১২ নম্বর সেকশনের একটি লেক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রামলাল রবিদাস শমশেরনগর চা বাগানের বজ্রনাথ রবিদাসের ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামলাল গোসল করতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি করে কোথাও পায়নি। পরে লেকের পাড়ে দেখতে পাওয়া যায় রামলালের গামছা, জুতা ও সাবান। গোসল করতে গিয়ে লেকে ডুবে মারা গেছেন এমন ধারনা থেকে শুক্রবার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ারসার্ভিসের ডুবুরি সিলেট থেকে এসে লেকের পানি থেকে লাশ উদ্ধার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মাসুদ আহমদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগানের লেকে রামলাল গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।পরে মরদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে জানিয়ে পরিবারের কাছে মরদেহ দেওয়া হয়েছে।’
ভাঙ্গতে শুরু করেছে নড়াইলের নবগঙ্গা নদী । ইতোমধ্যে কালিয়া উপজেলার নদী তীরবর্তী গ্রাম, বাজার,ফসলিজমি,ঘরবাড়ি ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলিণ হয়েছে। এতে পাল্টে যাচ্ছে এলাকার মানচিত্র। আতঙ্কে নির্ঘুম রাতযাপন করছে এলাকার মানুষ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারবৃন্দ।
জানাগেছে,গত ১৫ দিনের বিরামহীন বর্ষণে নদীতে পানি বৃদ্ধি এবং স্রোত বেড়ে যাওয়ায় কালিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বারইপাড়া, মাহাজন বাজার, বড়দিয়া নৌবন্দর বাজার,গৌড়ীয় মঠসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা ঝুকির মধ্যে রয়েছে। আতঙ্কে নির্ঘুম রাতযাপন করছেন নদী তীরবর্তী এলাকাবাসী।
সরজমিন দেখা যায়, কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর ও কালিয়া পৌরসভার উথলি গ্রামে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। নদীগর্ভে চলে গেছে ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে বারইপাড়া মাহাজন সড়ক, বসতভিটা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভেড়িবাধের ওপর নির্মিত সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হলে তলিয়ে যাবে আশপাশের ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার একর ফসলী জমি। ভেসে যাবে কয়েক হাজার মাছের ঘের। এই পানি চলে যাবে লোহাগড়া ও সদর উপজেলার ৩০টি গ্রামে।
কালিয়া পৌরসভার উথলি গ্রামের বাচ্চু শেখ,পান্নু শেখ,শামু শেখ,লিপি বেগমসহ ২০টি পরিবারের বাড়ীঘর,ফসলি জমি নদীতে বিলীণ হয়েছে। ঝুকির মধ্যে রয়েছে ৬০টি পরিবার। বাচ্চু শেখ,পান্নু শেখ,শামু শেখ,লিপি বেগম বলেন,আমাদের চোখের সামনে সবার বসতবাড়ি গাছপালা নদীতে চলে যেতে দেখেছি।রক্ষা করতে পারিনি। তারা বলেন,ঘরে খাবার নেই। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা ক্ষুধার জালায় কান্নাকাটি করছে। তাদের কান্না দেখে পাশের গ্রামের কয়েকজন মানুষ শুকনা খাবার দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
কালিয়া পৌরসভার উথলি গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু শেখ বলেন,আমাদের পুরানো বাড়িঘর সব নদীতে চলে গেছে। ভেড়িবাধের পাশে মাথা গোজার মত একটা ছোট কুড়ে ঘর ছিল তাও চলে গেল ।এখন আমার পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছি ।
একই এলাকার স্কুল শিক্ষক রোস্তম মোল্যা বলেন,নদীতে প্রচন্ড স্রোত বইছে। আমরা খুবই আতংকের মধ্যে দিন পার করছি। বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। ভেরিবাধের খুপড়ির মধ্যে বাস করছি।তিনি বলেন,এই বাধ ভেঙ্গে গেলে নড়াইল সদর ও লোহাগড়া উপজেলার ২০টি গ্রামে পানি ঢুকে যাবে। এতে এলাকার প্রায় লক্ষাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়বে। তিনি বলেন,
বাড়িঘর,ফসলি জমিসহ এলাকার প্রায় ৩০ হাজার পুকুর,মাছের ঘের ভেসে যাবে । এ বছর আর ফসল উৎপাদন হবে না। আমাদের এলাকার প্রায় সবাই কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ি হারিয়েূ সর্বশান্ত লিপি বেগম। তিনি বলেন ,আমার বাড়ি নদীতে চলে গেছে। বসতবাড়ি হারিয়ে এখন আমি সর্বশান্ত । কোথায় থাকবো কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না । ওই বাড়িটুকু ছাড়া আমার আর কোনো জায়গা জমি ছিল না । একটু মাথা গোজার মত জায়গা পাবো কোথায় । এখন আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোথায় থাকবো।
বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা শাবু শেখ আবেগঘন হয়ে বলেন, আমার সারাজীনের কষ্টের ফসল আমার এই বাড়ি টুকু তাও নদীতে চলে গেলো । অনেক কষ্টে আমি বাড়িটা করেছিলাম আমার আর কিছুই থাকলো না । জানিনা এখন পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো ।
আঙ্গিনার সবজি ক্ষেত ও বসতবাড়ি হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পথে আশ্রয় নেওয়া পান্নু শেখ। তিনি বলেন, আমার আর কিছুই নেই। সব নদীতে চলে গেছে । আশ্রয় নেয়ার মত এখন আমার রাস্তা ছাড়া আর কোথাও জায়গা নেই । রাতে ঘুম নেই খাবার নেই, কিভাবে দিন পার করছি আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না ।
সংবাদ পেয়ে নদী ভাঙ্গনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী অভিজিৎ সাহা । তিনি বলেন, কালিয়া পৌর এলাকার উথলি গ্রামে ৯৫ মিটার ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জরুরী ভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে ১২০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে তাৎক্ষনিত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । নদী ভাঙ্গণ এলাকা প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
পুলিশের বিতর্কিত সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের সময় অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে সত্যানুসন্ধান কমিটি। ভর্তির যোগ্যতা পূরণ না করেও তার ডিগ্রি নেওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে কমিটি।
গত ২০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে তথ্যানুসন্ধান কমিটি তাদের প্রতিবেদন তুলে ধরে। পরে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টি উচ্চতর তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তার ডক্টরেট ডিগ্রি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদকে আহ্বায়ক এবং রেজিস্ট্রার মুন্সি শামস উদ্দিন আহম্মদকে সদস্য সচিব করা হয়। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম শহিদুল ইসলাম।
তাদের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রি নেন বেনজীর আহমেদ। গত বছরের ১৪ জুন তার ডক্টরের ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ভর্তি যোগ্যতা না থাকলেও তিনি এই ডিগ্রি গ্রহণ করে নিজের নামের পাশে ড. পদবি ব্যবহার করছিলেন।
বেনজীর আহমেদ পুলিশের বিতর্কিত আইজিপি। গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগেই তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, ব্যাপক জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও জমি দখলের অভিযোগ ওঠে। অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর বেনজীর পুলিশপ্রধান ও র্যাবপ্রধান থাকাকালে বিচারবহির্ভূত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডসহ নানা নিপীড়নের অভিযোগ সামনে আসে। তিনি বর্তমানে পলাতক।
সরকারি বরাদ্দ পাওয়া সত্ত্বেও শুধু ব্যাংক হিসাবসংক্রান্ত ভুল, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) তথ্য বিভ্রাট এবং কে-ওয়াইসি আপডেট না থাকার কারণে ‘বিশেষ অনুদান’ পাননি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত এই সহায়তা কার্যক্রমে তথ্যঘাটতির জেরে অনেক প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দকৃত টাকাও জমা হয়নি নির্ধারিত হিসাবে।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বাজেট শাখা থেকে প্রকাশিত একটি স্মারকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের অনুদান বাবদ মনোনীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের তালিকা গত ১৭ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল ১০১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ক্যাটাগরিতে ২৫০ জন এবং ৭ হাজার ১০০ জন শিক্ষার্থী। তবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এর মাধ্যমে অর্থ বিতরণের সময় দেখা যায়, ১০১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির ব্যাংক হিসাবসংক্রান্ত তথ্য ভুল ছিল। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের হিসাবে টাকা পাঠানো যায়নি।
এছাড়া শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রী ক্যাটাগরিতে ৬ হাজার ৯৯৯ জন উপকারভোগীর মধ্যে ৪৬২ জনের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে কে-ওয়াইসি তথ্য হালনাগাদ না থাকায় তাদেরও অনুদানের টাকা প্রদান করা সম্ভব হয়নি।
এ অবস্থায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে- যেসব শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা তাদের আবেদনপত্রে দেওয়া নগদ মোবাইল নম্বরে এখনও অর্থ পাননি, তাদেরকে ওয়াইসি তথ্য আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে হালনাগাদ করতে হবে। আর যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তথ্য ভুল রয়েছে, তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব নম্বর, শাখার নাম, রাউটিং নম্বর, হিসাবের নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বাক্ষর এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির প্রতিস্বাক্ষরসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখায় নির্ধারিত ই-মেইল ([email protected]) ঠিকানায় পাঠাতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য না পাঠালে বা হালনাগাদ না করলে অনুদান বিতরণে বিলম্ব হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই মধ্যবিত্তের। কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দামে। এতে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। পাশাপাশি ডিম ও মুরগির দামেও স্বস্তি নেই। ব্রয়লার মুরগির দাম খুব বেশি না বাড়লেও সোনালি জাতের মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। এছাড়া সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি ইলিশের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সবজি বিক্রেতারা জানান, আলু ও পেঁপে ছাড়া বাকি সব সবজি ৬০ টাকার বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি সবজির চড়া দামকে আরও উসকে দিয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দামে খানিকটা স্থিতিশীলতা লক্ষ্য করা গেলেও বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দাম। প্রতি কেজি সোনালি মুরগির ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়।
গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির মাংস কেজি প্রতি ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সরবরাহ বাড়লেও ইলিশ এখনো মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে। বাজারগুলোতে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা, ৩০০ গ্রামের ইলিশ হাজার টাকা ও ১৫০ থেকে ২০০ গ্রামের ইলিশ ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যান্য মাছের ক্ষেত্রে এক কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশি শিং ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকায় ও পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে কয়েকদিন আগেও ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হলেও এখন দাম বেড়ে তা ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।
এছাড়া প্রতি কেজি বেগুন, ঝিঙা, কচুর লতি, করলা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব সবজির দাম কিছুটা কম থাকলেও বৃষ্টির কারণে এখন সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। ঢেঁড়স, পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।
তবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে পেঁপে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। এছাড়া বরবটি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচামরিচ প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা।
প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান গাজর ১৪০ টাকা, দেশি শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা কেজি, কাঁচাকলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০ টাকা পিস, কাঁকরোল ৮০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক আঁটি লালশাক কিনতে কমপক্ষে ২০ টাকা লাগছে। লাউশাক কিনতে খরচ হচ্ছে বাজারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কলমিশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত প্রতিআঁটি বিক্রি হচ্ছে। কলমিশাক ২ আঁটি ২০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা ও ডাটা শাক দুই আঁটি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বৃষ্টি হওয়ায় সরবরাহ কমেছে ফলে। বেশিরবভাগ সবজির দাম বেড়েছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চালের দাম ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের এক ধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজিরশাইল রয়েছে, যা শুধু ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বাকি সব চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশে শিশুদের ডায়রিয়া চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এতে শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ঝুঁকি বাড়ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলের একটি তৃতীয় স্তরের হাসপাতালে ১ থেকে ৫৯ মাস বয়সি ৮ হাজার ২৯৪টি শিশুর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। এই গবেষণায় শিশুদের চিকিৎসা নেওয়ার ধরন ও অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ (৫৫ শতাংশ) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ মাত্র ৬ শতাংশ শিশুর আমাশয় (রক্তযুক্ত পায়খানা) ছিল, যার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা অনুযায়ী, কলেরা ছাড়া সাধারণ পানিবাহিত ডায়রিয়ার চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, ৭৭ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) ছাড়াই স্থানীয় ফার্মেসি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। আমাশয় আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে শুধু অ্যান্টিবায়োটিক (জিংক বা ওআরএস ছাড়া) ব্যবহারের প্রবণতা সাধারণ পানিবাহিত ডায়রিয়ার চেয়ে বেশি ছিল (১৫ শতাংশ বনাম ৯ শতাংশ)। যদিও ৮৫ শতাংশ শিশু ওআরএস (খাবার স্যালাইন) নিয়েছে। কিন্তু মাত্র ৭ শতাংশ শিশু অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া জিংক ও ওআরএস দুটোই পেয়েছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যে শিশুরা হাসপাতালে আসার আগে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়েছে, তাদের হাসপাতালে ভর্তির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। যারা অ্যান্টিবায়োটিক নিয়েছে ও নেয়নি, সে তুলনায় এই হার যথাক্রমে ২০ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ ছিল। এতে এমন ইঙ্গিত মেলে যে, অ্যান্টিবায়োটিকের অযৌক্তিক ব্যবহার কেবল অপ্রয়োজনীয়ই নয়, বরং শিশুদের অসুস্থতার তীব্রতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখতে পারে।
অভিভাবকদের মধ্যে দ্রুত সুস্থ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা, ঐতিহ্যগত অভ্যাস, ফার্মেসির প্রতি আস্থা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র দূরে হওয়ার কারণে অনেকে ফার্মেসি থেকে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী। গবেষণায় দেখা গেছে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে আগত শিশুদের মধ্যে যারা মির্জাপুর উপজেলা থেকে বেশি দূরত্বের এলাকা থেকে এসেছে, তাদের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার তুলনামূলক বেশি। এর অর্থ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহজলভ্যতা অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারকে প্রভাবিত করছে।
গবেষণায় বারবার অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের (এএমআর) ভয়াবহতার কথা ওঠে এসেছে। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে সরাসরি ১ দশমিক ২৭ মিলিয়ন মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল। আর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দশমিক ৪৯৫ মিলিয়ন মৃত্যুর কারণ ছিল। এছাড়া ২০৫০ সালের মধ্যে এএমআর এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় এবং ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপি থেকে প্রতি বছর এক ট্রিলিয়ন থেকে ৩ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির কারণ হতে পারে। বাংলাদেশেও অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের উচ্চ প্রবণতা দেখা যায়, বিশেষ করে, শিগেলা ও ভিব্রিও কলেরার মতো ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে যথেচ্ছ ব্যবহার করা হয়।
গবেষকেরা অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমাতে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
তারা বলেছেন, ফার্মেসিগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির ওপর নজরদারি বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান ও অনুশীলনের ব্যবধান কমানোর ওপর জোর দেওয়া দরকার। এছাড়া ওআরএস ও জিংকের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করাও অপরিহার্য।
গবেষণা প্রতিবেদনটি গত ২০ জুলাই বিজ্ঞান সাময়িকী ‘নেচার’-এ প্রকাশিত হয়েছে।
মন্তব্য