১৮ জুলাই ২০২৪ এ ইন্টারনেট শাট ডাউনের প্রতিবাদে এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস পালনের অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার থেকে (১৮ জুলাই, ২০২৫) ৫ দিন মেয়াদে দেশের সব গ্রাহক বিনা মূল্যে ১ জিবি ইন্টারনেট ডেটা পাচ্ছেন।
১৮ জুলাই বিনা মূল্যে গ্রাহকদের ১ জিবি ইন্টারনেট দেওয়া যায় কি-না, সে বিষয়ে বিটিআরসি দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটরকে একটি প্রস্তাব দেয়।
দেশের সব মোবাইল অপারেটর স্বপ্রণোদিত হয়ে এই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে নিজ নিজ গ্রাহকদের বিনা মূল্যে ৫ দিন মেয়াদে ১ জিবি ইন্টারনেট ডেটা ফ্রি দিচ্ছে।
বিটিআরসি’র নির্দেশনায় অপারেটররা গ্রাহকদের ফ্রি ডেটা দেওয়ার বিষয়টি আগেই এসএমএস-এর মাধ্যমে অবহিত করে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আজ থেকে ৫ দিন মেয়াদে ১ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট ডাটা পেতে নিজ নিজ মোবাইল অপারেটরের নির্ধারিত কোড ডায়াল করতে হবে গ্রাহকদের।
ডায়াল কোড-
গ্রামীণফোন: *১২১*১৮০৭#
বাংলালিংক: *১২১*১৮০৭#
রবি: *৪*১৮০৭#
টেলিটক: *১১১*১৮০৭#
বিজ্ঞপ্তিতে প্রেস উইং আরও জানায়, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৭ জুলাই রাতে মুঠোফোনে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরদিন ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দেশ পুরোপুরি ইন্টারনেটবিহীন হয়ে পড়ে।
সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গ্রাহকদের বিনা মূল্যে ১ জিবি ইন্টারনেট ডেটা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঝালকাঠি পৌরসভাটি কাগজে প্রথম শ্রেনীর তালিকায় থাকলেও বাস্তবে তৃতীয় শ্রেনীর মতই। পৌর কর দেয়া বাসিন্দারা বৃষ্টির জলে খাচ্ছে হাবুডুবু। সপ্তাহজুড়ে টানা বৃষ্টিপাতে প্লাবিত হয়েছে ঝালকাঠির বিভিন্ন এলাকা।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের কৃষ্ণকাঠিতে পানিবন্ধী হয়ে আছে প্রায় ২০০ পরিবার। এখানকার ঘরবাড়ি মাসব্যাপী পানিতে তলিয়ে আছে। জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের এমন ভোগান্তি দশ বছর ধরে পোহাতে হচ্ছে।
সেলিম তালুকদার, আলম হাওলাদার, মিল্টন তালুকদার, সাইদুল ইসলাম, এডভোকেট শাহাদাৎ হোসেনের বাড়ির বাসিন্দারা দুর্ভোগের কথা সার্চ বিডি নিউজকে জানিয়েছেন।
পানিবন্দি বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি ডুবে যায়। বিশেষ করে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা পরিষদ ভবনের আশপাশ এলাকার পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।
"বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো যাচ্ছেনা। রান্নাঘরেও পানি উঠে গেছে। প্রাইভেট টিচার পানি পেরিয়ে ঘরে আসতে চায়না। পৌরসভাকে বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি। এমনটাই জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদা বেগম, সেলিম তালুকদার, সাইদুল ইসলামসহ অনেকে।
এলাকাবাসীর দাবি, পৌর কর্তৃপক্ষ যদি ড্রেন তৈরি বা পাইপ দিয়ে নদীতে পানি নামিয়ে দিতো অথবা সঠিক পরিকল্পনায় কাজ করতো, তাহলে এমন পরিস্থিতি হতো না। সাবেক মেয়রদের গাফিলতির কারনেই আজ পানিবন্দি থাকতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌরসভার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'ড্রেনেজ সমস্যা আমরা জানি। তবে সাবেক মেয়রদের আমলে বাজেট ও জনবলের সংকটের কারনে সময়মতো কাজ করা হয়নি না।'
ভুক্তভুগিদের মতে, পৌরসভা যদি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করে, তবে ভবিষ্যতে এই সমস্যা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে জনদুর্ভোগ বাড়তেই থাকবে।
এদিকে বরিশাল-ঝালকাঠি মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছে পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দারা। তাদের দাবি দ্রুত সময়য়ের মধ্যে জলাবদ্ধতার টেকসই সমাধান করে দিতে হবে। অন্যথায় তারা পৌর কর দেয়া বন্ধ করা এবং পৌরসভা ঘেরাও সহ কঠোর কর্মসুচি দিবেন।
তবে অনেকটা আশার বানী শোনালের পৌর প্রশাসক কাওছার হোসেন। তিনি জানান, 'শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতিমধ্যে রেকর্ডিও খালগুলো পুণ:খনন করা হচ্ছে। কৃষ্ণকাঠি এলাকার জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের বিষয়টি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের লড়াইয়ের সময় গোপালগঞ্জে হামলা হয়েছে। আরও ১০ জায়গায় হামলা হলেও আমাদের দমন করা যাবে না।
তিনি বলেন, সামনে আরেকটি লড়াই আছে। লড়াইয়ে মুন্সীগঞ্জবাসীকে পাশে চাই। শুক্রবার (১৮ জুলাই) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের সুপার মার্কেটে এনসিপির পথসভায় বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, ফ্যাসিবাদ ও মুজিববাদের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ফ্যাসিবাদ ও মুজিববাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। তিনি বলেন ‘ভবিষ্যতের নির্বাচনে প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারে, তা আমরা নিশ্চিত করব।’ মুন্সীগঞ্জের নদী ভাঙন, অবৈধ বালু দখলসহ নানা অনিয়ম বন্ধে কাজ করার আশ্বাসও দেন এই নেতা।
সভায় সারজিস বলেন, ফ্যাসিবাদ নির্মূল না হলে দেশ স্বাধীন হবে না। শুধু গোপালগঞ্জে নয়, যেখানেই ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসীরা থাকবে, সেখানেই ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে প্রতিরোধ করতে হবে। দেশের বাইরে থেকে যারা হত্যার পরিকল্পনা করছে তাদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘হাসিনার বিচার করতে হবে। তার মৃত্যুদণ্ড দেখে মরতে চাই।’
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন নেতানির্ভর নয়, নীতিনির্ভর রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে। সব রাজনৈতিক দলকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আগামী মাসের ৩ আগস্ট জাতীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব।
পথসভায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা সবাইকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
এর আগে মুন্সীগঞ্জ শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে একটি পদযাত্রা সুপার মার্কেটের শহীদ চত্বরে এসে যোগ দেয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি সময় গোপালগঞ্জে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ জন শিক্ষক।
শিক্ষকরা যৌথ বিবৃতিতে জানান, এই বর্বরতা শুধু রাজনৈতিক সমাবেশে হামলা নয় বরং জুলাই বিপ্লবের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছে। গোপালগঞ্জে এনসিপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচির ওপর বর্বরোচিত হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, ইউএনওসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ সদস্যদের আহত করা অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত।
তারা মনে করেন, এই হামলা শুধু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়। বরং দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, বাকস্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। শিক্ষকরা দোষীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরুরও দাবি জানান।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এনসিপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে সারা দেশ থেকে সন্ত্রাসীদের গোপালগঞ্জে জড়ো করেছে।
শিক্ষকরা বলেন, অবিলম্বে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে নিরপেক্ষ ও পেশাদার সদস্যদের সমন্বয়ে ঢেলে সাজানোর দাবি জানান।
বিবৃতি দেওয়া শিক্ষকরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহিব্বুল্লাহ ও অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খোন্দকার লুৎফুল এলাহী ও অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শামসুজোহা, অধ্যাপক ড. মো. সোহাইবুর রহমান ও অধ্যাপক ড. আবু খায়ের মোকতাদিউল বারী চৌধুরী, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. কবীর উদ্দিন; জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এএফজি মাসুদ রেজা, ডুয়েট-এর শেখ মো. রোকনুল ইসলাম, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকারসহ মোট ৪৭ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।
ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জুলাই-যোদ্ধাসহ আন্দোলনে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে এক প্রতীকী ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) আয়োজিত এই বিশেষ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বয়সের প্রতিযোগীদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে আয়োজিত এ প্রতীকী ম্যারাথন ছিল এবারের গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপনের অন্যতম অংশ।
আজ সকাল ৭টায় এই ম্যারাথনের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। শুরুতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
ম্যারাথন শেষে উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এই অভ্যুত্থান দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আজকের এই প্রতীকী ম্যারাথনে অংশ নিয়ে আমরা অভ্যুত্থানের সেই মহান আত্মত্যাগীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং তরুণ প্রজন্মকে সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।’
এক হাজার প্রতিযোগী নিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রতীকী ম্যারাথনটি বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে গণভবন, সংসদ ভবন, খামারবাড়ি হয়ে আবারও চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, মুজিববাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি, এই লড়াইয়ে আমরা জিতবো।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, সামনে আরো একটি লড়াই আসছে। আমরা সে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সাহসিকতার সঙ্গে সে লড়াই মোকাবিলা করতে হবে।’
শুক্রবার(১৮ জুলাই) দুপুর ১২টায় বিচার, সংস্কার ও দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে জুলাই পদযাত্রায় অংশ নিয়ে, মুন্সীগঞ্জ শহরের কৃষি ব্যাংক চত্বরের পথসভায় নাহিদ ইসলাম একথা বলেন।
এনসিপি’র আহ্বায়ক বলেন, ‘গোপালগঞ্জে ফ্যাসিবাদীরা হামলা করেছে। আরো হামলা হবে। কিন্তু আমাদের দমন করা যাবে না। পাড়ায় পাড়ায় প্রতিবাদের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি সকলকে সরব হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে আমাদের আরো লড়াই করতে হবে। আমরা প্রতিবাদ করতে শিখেছি। আমরা আমাদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরবো।
নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী হচ্ছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বেহাল দশা। যাতায়াত ব্যবস্থা নাজুক, কর্মসংস্থান নেই। এসব বাধা ও সমস্যার সমাধান করে জনগণ এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়।
এনসিপি’র মুন্সীগঞ্জের প্রধান সমন্বয়কারী মাজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন- উত্তারঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা।
সারজিস আলম বলেন, শোষণমুক্ত দেশ গড়তে এখনো অনেক পথ বাকী আছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সে পথ পাড়ি দিতে হবে। ফ্যাসিবাদীদের জায়গা করে দিলে, তারা আরো ভয়ংকর হয়ে উঠবে। সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বিদেশে থাকা নির্দেশদাতাদের গ্রেফতার করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
পরে নেতৃবৃন্দ শহরের প্রধান জামে মসজিদে শহীদ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের জন্য দোয়ায় অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশে স্টারলিংক সফলভাবে চালু করার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার।
শুক্রবার(১৮ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।
লরেন ড্রেয়ার বলেন, ‘আমরা ১৫০টি দেশ ও অঞ্চলে কাজ করি। আমরা এত দক্ষতা ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ আগে কখনও দেখিনি। স্পেসএক্স-এর সব সহকর্মীর পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আপনার লোকজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ সফরের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল, দেশের এক মনোরম সময়। সুন্দর পরিবেশ। চারদিকে সবুজ আর পানি। কিন্তু বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির বাস্তবতাও আছে। সেজন্য আমাদের ভালো কানেক্টিভিটির স্বার্থে নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তির প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পার্বত্য অঞ্চলের দূরবর্তী এলাকাগুলোতে উন্নত কানেক্টিভিটির বিশেষ প্রয়োজন। এসব অঞ্চলে ভালো স্কুল শিক্ষক ও ডাক্তার নেই। আমরা ১০০টি স্কুলে অনলাইন শিক্ষা চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি, যা বিচ্ছিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের উপকারে আসবে।
অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি, যাতে দূরবর্তী এলাকার মানুষ অনলাইনে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারে। তাদের চিকিৎসার ইতিহাস ডিজিটালি সংরক্ষিত থাকবে, এর ফলে ভবিষ্যতে পরামর্শ দেয়া সহজ হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটি প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে খুব কার্যকর ভূমিকা রাখে। নারীদের এ সময় ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য আরেকজন সহযোগীর প্রয়োজন হয়। ডিজিটাল হেলথ সেবা হলে তারা ঘরে বসেই ডাক্তার দেখাতে পারবেন।’
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরাও ডিজিটাল হেলথ সেবা থেকে উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা ভাষার কারণে অনেক সময় ডাক্তারের কাছে যেতে অস্বস্তিতে ভোগেন। কী বলবেন-এটা নিয়ে ভাবেন। তবে ডিজিটাল হেলসথ সেবা হয়ে গেলে বিদেশ থেকেই বাংলাদেশের ডাক্তারের সাথে তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শের জন্য কথা বলতে পারবেন।’
প্রধান উপদেষ্টা লরেন ড্রেয়ারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা এখানে ছোট ছোট যে উদ্যোগ নিচ্ছি, আপনারা এগুলোকে বৈশ্বিক পরিসরে নিয়ে যেতে পারেন।’
লরেন ড্রেয়ার অধ্যাপক ইউনুসের আইডিয়ার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যে দৃষ্টান্ত তৈরি করছেন, তা নিয়ে অন্য নেতাদের সঙ্গে আমরা কথা বলতে পারি। আমরা বলবো-অধ্যাপক ইউনূস যদি নিজের দেশে এগুলো করতে পারেন, তাহলে আপনারাও আপনার দেশে করতে পারেন।’
তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সরকারি সেবাগুলো দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আপনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি প্রায়ই বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করি, তাই জানি দুর্নীতি কীভাবে একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে। প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা বিকেন্দ্রীকরণ এবং সুশাসন নিশ্চিত করা একটি অর্থবহ দৃষ্টিভঙ্গি।’
বৈঠকে স্পেসএক্সের গ্লোবাল এনগেজমেন্ট কনসালট্যান্ট রিচার্ড গ্রিফিথস, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের পাঁচ আগস্টের আগে বাংলাদেশে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কিংবা মব জাস্টিসের সংস্কৃতি ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও বিএনপি-ঘনিষ্ঠ পেশাজীবী জোটের সমন্বয়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া বা মব জাস্টিসের সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ছিল না। এখন শিশুদের কাছেও এই শব্দগুলো পরিচিত। অনেকেই ২৮ অক্টোবর পল্টনের সেই মর্মান্তিক ঘটনার কথা বলবেন, কিন্তু মানুষ অতীত থেকে শিক্ষা নেয়।
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন-বায়তুল মোকাররম এলাকায় লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা জামায়াত-শিবিরের ৬ নেতাকর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ২৮ অক্টোবর ছিল বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট সরকারের শেষ দিন। সেদিন ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে অস্ত্র তুলে গুলি এবং মানুষ পিটিয়ে মারার ঘটনা গভীর আলোড়ন তুলেছিল। ২৮ অক্টোবরের আগের দিন এবং পরের দিনও দেশের বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষয়ী রাজনৈতিক সংঘাত হয়েছিল।
তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ধরে চলা ভোট ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে চূড়ান্ত রূপ নেয়। যেটি ফ্যাসিস্টদের পালাতে বাধ্য করে। জনগণকে দাবি আদায়ে আর রাস্তায় নামতে হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বলেন, আমরা লক্ষ করছি, ১১ মাস পার হয়ে গেলেও অনেকেই আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা লালন করছেন। সুপরিকল্পিতভাবে নানা ষড়যন্ত্র চলছে।
এ কারণে জনগণ ন্যায্য বিচার নিশ্চিতে বিগত সরকাররে আমলে ধ্বংসপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার বিভাগকে দ্রুত পুনর্গঠন করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিএনপি কেবল একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি গণতন্ত্রও বটে। আমরা বারবার বলেছি ৫ আগস্টের ঐক্য নষ্ট কোরো না। পালিয়ে যাওয়া পতিত ফ্যাসিস্টরা তোমাদের ব্যর্থ করতে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তোমরা শুনলে না। তাই অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে একদল মানুষ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কুৎসিত ভাষায় কথা বলছে। এমনকি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গকারী আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়েও সামাজিকমাধ্যমে বিদ্রুপ করেছে। এটা কোনো রাজনৈতিক ভাষা নয়, এটা ফ্যাসিস্টদের ভাষা।
গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টদের হাতে প্রচুর লুটের টাকা আর অবৈধ অস্ত্র আছে। তাই তারা প্রকাশ্যে হামলা চালাচ্ছে।
আগামী নির্বাচনের তারিখ ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে জাহিদ হোসেন বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে লুকোচুরি খেলা বন্ধ করুন। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিন। জনগণ যাকে উপযুক্ত মনে করবে, তার হাতেই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেবে।
মন্তব্য