গানবাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপস জামিনে মুক্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যায় জামিনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির। তিনি বলেন, ‘গানবাংলার কৌশিক হোসেন তাপসের জামিনের কাগজপত্র গত বুধবার দুপুরে কারাগারে আসে। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বের হন।’ গত বছরের ৩ নভেম্বর গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে কৌশিক হোসেন তাপসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার বাদী ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদ। অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ১৮ জুলাই উত্তরার আজমপুরে নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাইস্কুলের সামনে আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এক কর্মসূচিতে অংশ নেন ইশতিয়াক। সেখানে আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্র লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। অভিযুক্তরা অতঙ্কিত হামলা চালিয়ে ইশতিয়াক মাহমুদকে মারধর ও গুলি করেন। আহতের পেটে, পিঠে, হাতে ও মাথায় গুলি লাগে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার পেট থেকে গুলি বের করা হয়। ঘটনার ৩ মাস পর, ২৯ অক্টোবর উত্তরা পূর্ব থানায় ইশতিয়াক মাহমুদ নিজেই একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলায় তৎকালীন আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। কৌশিক হোসেন তাপস ছিলেন মামলার ৯ নম্বর আসামি। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মামলাটি আদালতে শুনানির পর্যায়ে রয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম চলমান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি, কালেরকণ্ঠের সম্পাদক, কবি হাসান হাফিজ বলেছেন- ২৪ এর জুলাইয়ে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে একটা মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় না হলে আমরা সুন্দর বাংলাদেশ পেতাম না।
নওগাঁয় দুইদিন ব্যাপী শেষ হলো লেখক সম্মেলন ও কাহ্নপা সাহিত্য পদক পুরস্কার। দ্বিতীয় দিনে নওগাঁ সাহিত্য পরিষদ এর আয়োজনে লেখক সম্মেলন ও কাহ্নপা সাহিত্য পদক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সদর উপজেলা হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নওগাঁ সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অরিন্দম মাহমুদ।
কবি হাসান হাফিজ বলেন- আদি বাংলা ভাষার নির্দেশন শুরু হয় কাহ্নপা দিয়ে। যা নওগাঁয় অবস্থিত। এজন্য ৬৪ জেলার মধ্যে শীর্ষ জেলা নওগাঁ। প্রসিন্ধ এ জেলায় আসতে পেতে আমার খুবই ভালো লাগছে। এমন একটি সাহিত্য নির্ভর আয়োজনে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আসলে সাহিত্য চর্চা ব্যক্তি ও সমাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে মানুষ জ্ঞান অর্জন করে, সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং সমাজের প্রতি আরও বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। এছাড়াও, সাহিত্য চর্চা মানুষের ভাষার দক্ষতা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং যোগাযোগ করার ক্ষমতা উন্নত করে। সাহিত্য চর্চা চালিয়ে যেতে হবে।
সীমান্তে হত্যা নিয়ে তিনি বলে- আমরা সীমান্তে কোন হত্যা চাইনা। নওগাঁ সীমান্তে হত্যার মত ঘটনা মাঝেই মাঝেই ঘটে। আমরা রক্তাক্ত চাই না। সেটা বন্ধ করতে হবে। সেজন্য উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ভূমিকা রাখতে হবে।
লেখক সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লেখকদের আগমনে মিলনমেলায় পরিণত হয়। লেখক সম্মেলনে দুইজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক মজিদ মাহমুদ এবং প্রথিতযশা নিভৃতচারী অনুবাদক, হরর গল্পকার, ঔপন্যাসিক ও কবি খসরু চৌধুরী কাহ্নপা সাহিত্য পদক পুরস্কার প্রদান করা হয়। যেখানে পদকের অর্থমূল্য, পদক, সম্মাননাপত্র ও উত্তরীয় প্রদান করা হবে।
এসময় কবি ও গল্পকার মাহফুজ ফারুক ও কবি রিমন মোরশেদ এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- নওগাঁ জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল, পৌরসভা প্রশাসক টি.এম.এ মমিন, কবি আতাউল হক সিদ্দিকী, কবি ও প্রাবন্ধিক আমিনুল ইসলাম, সমাজসেবক ও বিএনপি নেতা মাসুদ হাসান তুহিন, কালের কণ্ঠের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, কথা সাহিত্যিক রবিউল করিম, সাংবাদিক কায়েস উদ্দিন, সাংবাদিক ফরিদ উদ্দিন ও সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল নয়ন, সভাপতি অরিন্দম মাহমুদসহ অন্যরা।
আয়োজকরা জানান- নওগাঁর সহিত্য বিষয়ক সংগঠন নওগাঁ সাহিত্য পরিষদ এর উদ্যোগে চতুর্থবারের মত সাহিত্য সম্মেলন হয়। সারাদেশ হতে আগত শতাধিক কবি-সাহিত্যিকরা উপস্থিতি ছিলেন। চর্যাপদের অন্যতম কবি কাহ্নপা যিনি পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে বসে চর্যাপদ রচনা করেছেন তার নামে পদকটি প্রবর্তিত করা হয়েছে। এ পদকের মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যের সুত্রপাত বরেন্দ্র অঞ্চল থেকে শুরু হয়েছে যা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা হবে। এছাড়া সুস্থ সমাজ বির্নিমানে নতুন প্রজন্ম শিল্প সাহিত্যের সাথে সম্পৃক্ত হবে এবং মানবিক হয়ে উঠবে। এতে করে সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা দুর হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন- ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ১৩৫৬টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। অভিযানকালে ১৬৫টি গাড়ি ডাম্পিং করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, শুক্রবার (১৮ জুলাই) ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন- জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের পর কেউ যদি চাঁদাবাজি করে তা মুখের ওপর বলে দেওয়া হবে। এ সময়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন।
সারজিস আলম বলেন, এই বাংলাদেশে আবারও নতুন করে মুজিববাদী, ভারতপন্থী শক্তিগুলো এখন সক্রিয় হচ্ছে। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু এই বাংলাদেশে বাংলাদেশপন্থী ব্যতীত অন্য কোনো দেশপন্থী, কোনো বাদপন্থী শক্তির আর জায়গা হবে না। ‘আমাদের একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল গত জুলাইয়ের, ওই আগস্টের ৫ তারিখে আমাদের যেই স্বপ্ন ছিল, আরেক আগস্ট আসতে চলেছে, আমাদের সেই স্বপ্নগুলো পূরণ হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা সুশীল সরকারের ভূমিকা চাই না। আমরা তাদের অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই,’।
সারজিস আরও বলেন, এই বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদের জায়গা হতে দেওয়া যাবে না। অন্য যেকোনো দেশের নামের কোনো আধিপত্যবাদের জায়গা বাংলাদেশে হতে দেওয়া যাবে না।
‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমাদের বিচার লাগবে। এই বাংলাদেশে খুনি হাসিনার বিচার হতেই হবে, তার বিচারের রায় কার্যকর দেখতে চাই।’
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই দেশের বিচার বিভাগকে কোনো দলের বিচার বিভাগ হিসেবে দেখতে চাই না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ক্ষমতার তোষামোদ করা বাহিনী হিসেবে আমরা দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানকে একপাশে রেখে কোনোদিন এই বাংলাদেশে বাংলাদেশপন্থী বাংলাদেশ সম্ভব নয়। আমাদের নতুন সংবিধান লাগবে, আমাদের গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে, আমাদের নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের সংখ্যালঘু ভাইবোনদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সারজিস বলেন, আমাদের ১৯৪৭ সালের উপনিবেশবিরোধী যে আকাঙ্ক্ষা, একাত্তরের স্বাধীনতার যে আকাঙ্ক্ষা, চব্বিশের মুক্তির যে আকাঙ্ক্ষা—সেই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হবে।
‘ফ্যাসিস্টবিরোধী চব্বিশের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ মানে এই নয়, আমরা অন্ধভাবে কারো দালালি করব। কেউ যদি চাঁদাবাজি করে, তা আমরা মুখের উপরে বলব। কেউ যদি সিন্ডিকেট চালায়, আমরা সেটাও বলব। কেউ যদি দখলদারিত্ব করে, আমরা সেটাও বলব। তবে আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যাব,’ যোগ করেন সারজিস।
তিনি বলেন, রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, কিন্তু রাজনীতির যে সৌন্দর্য, এই সৌন্দর্য যেন আমরা ধারণ করি—তাহলেই আগামীর বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন ব্যক্তি আক্রমণে রূপ না নেয়। ফ্যাসিস্টবিরোধী ২৪-এর শক্তি আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু মুজিববাদের প্রশ্নে, স্বৈরাচারের প্রশ্নে অভ্যুত্থানের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
নানা আয়োজনে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে শনিবার গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী নুহাশ পল্লীতে কোরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো ও মোনাজাত শেষে মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকদের বলেন, সব লেখকদেরই স্বপ্ন থাকে বই থাকবে পেঙ্গুইন পাবলিকেশনে। হুমায়ূন আহমেদ জীবিত থাকার সময় ইচ্ছে ছিল তার বই পেঙ্গুইন প্রকাশণী থেকে প্রকাশিত হবে। আজ আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, পেঙ্গুইন পাবলিকেশনের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে, খুব শিগগিরই পেঙ্গুইন পাবলিকেশন থেকে হুমায়ূন আহমেদের বই প্রকাশিত হতে দেখবো।
তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের প্রতিষ্ঠা করা নুহাশ পল্লীকে তিনি যে ভাবে রেখে গেছেন সেটা সে ভাবেই সংরক্ষণ করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব। নুহাশপল্লী স্যুটিং স্পট নয়, এটি গাছে ও ও পাখির অভায়রণ্য। গত ১৩ বছরে অন্তত ৫০টি বিরল প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। এখনো কোথাও দূর্লভ গাছ পেলে তা নুহাশ পল্লীতে এসে লাগানো হয়।
শাওন আরো বলেন, হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি যাদুঘর তৈরির কথা বারবার বরা হয়। স্মৃতি যাদুঘর করতে যে পরিমাণ আর্থিক সক্ষমতা থাকা দরকার তা নুহাশ পল্লীর এখনো গড়ে উঠেনি। আর্থিক সক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা চলছে। আমরা না পারলে হয়তো পরবর্তী প্রজন্ম সেটা করতে পারবে।
দুপুরে মিলাদ মাহফিল শেষে এতিম শিশু ও শিক্ষার্থীদের খাদ্য বিতরণ করা হয়। ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।
সকাল থেকে আশপাশের বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্ররা নুহাশ পল্লীতে এসে কোরআন তেলাওয়াত করেন। পরে তারা কবর জিয়ারত ও দোয়ায় অংশ নেন। কর্মসূচিতে অংশ নিতে শুক্রবার হুমায়ূন আহমেদের দুই সন্তান নিষাদ ও নিনিতসহ স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন নুহাশ পল্লীতে এসে অবস্থান নেন। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ছেলে নিষাদ, নিনিতসহ নুহাশ পল্লীর কর্মকর্তা কর্মচারি এবং হুমায়ূনভক্ত ও দর্শনার্থীরা হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং কবরের পাশে ফাতেহা পাঠ ও দোয়ায় অংশ নেন।
এসময় অন্য প্রকাশের প্রধান নির্বাহী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, ধী প্রকাশণীর প্রধান নির্বাহী আব্দুল্লাহ নাছের, কাকলি প্রকাশনীর নাসির আহমেদ সেলিম, নুহাশপল্লীর তত্ত¡াবধায়ক সাইফুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে নুহাশ পল্লীতে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে এতিম শিশু ও শিক্ষার্থীদের খাদ্য বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
গেলে এগারো মাসে বিএনপি-জামায়াতকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পুনর্বহাল ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। সরকার প্রত্যাশিত কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তাদের মূল্যায়ন করতে গেলে দশের মধ্যে সর্বোচ্চ চার কিংবা পাঁচ দেব।
শনিবার (১৯ জুলাই) জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক আলোচনায় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে এই মঞ্চ গঠন করেছে। মূলত গেল বছরের ১৯ জানুয়ারি গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনার স্মরণেই এই আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে উঠে আসা এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘এগারো মাসে সরকারের কার্যক্রম মূল্যায়ন করে দশের মধ্যে যদি তাদের নম্বর দিতে বলেন, তাহলে সর্বোচ্চ চার বা পাঁচ দেব। এই নম্বর দিতেও কষ্ট হয়। কারণ তারা দেশের এতটুকু পরিবর্তনও করতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য আমরা লড়াই করেছি। কিন্তু দুঃখ লাগে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল, সেটা এগারো মাসেও শুধু বিএনপি-জামায়াতকে প্রশাসনে পুনর্বহাল ছাড়া আর কোনো কার্যকর পরিবর্তন হয়নি। এটা আমাদের প্রত্যাশা ছিল না।
‘দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা, ভূমি কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনওি) কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে মানুষে সেবা পেতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। যেসব রাজনৈতিক নেতার ক্ষমতা আছে, এসব অফিস তাদের কথাই চলছে। আমরা এই ব্যবস্থারই পরিবর্তন চেয়েছিলাম,’ যোগ করেন তিনি।
নুর বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সংসদের কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রীর এককেন্দ্রিক ও স্বৈরাচারী ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদের সংশোধনসহ যেসব পরিবর্তনের কথা বলেছি, সেগুলো বাস্তবায়নের সময়ে এসেছে আজ।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও গাছাড়া-লাগামছাড়া ভাব এসেছে বলে মন্তব্য করেন ডাকসুর সাবেক এই ভিপি। তিনি বলেন, কিন্তু কিছু কিছু মৌলিক সংস্কারে আমাদের একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে সব দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে বলেও জানান এই তরুণ রাজনীতিবিদ। তিনি বলেন, এটা যদি করা যায়, তাহলে কিছু ভিন্নমত পার্লামেন্টে থাকবে। নাহলে এই পার্লামেন্ট আগের মতোই থাকবে।
এ সময়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অযথা বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। এতে যারা গণতন্ত্র ও শোষণহীন সমাজে বিশ্বাস করে না; তারা ফের জোট পাকাচ্ছে।’
শনিবার (১৯ জুলাই) জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক আলোচনায় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে এই মঞ্চ গঠন করেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারকে আহ্বান করব, অযথা বিলম্ব না করে সমস্যা চিহ্নিত করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। এরপর সমস্যা শেষ করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। সেটিই বোধহয় একমাত্র পথ।’
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু মনে হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। এতে যারা গণতন্ত্রে, জনগণের অগ্রাযাত্রায় ও একটি শোষণহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, তারা আবার জোট পাকাচ্ছে। যে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলাম, তারা ভেতরে ভেতরে আবার সংগঠিত হচ্ছে এবং ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্ত করে যাচ্ছে।’
দেশে মবতন্ত্র, হত্যা, ছিনতাই ও গুম ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ করে এ সময় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফখরুল। বলেন, ‘যে সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে, এটা যদি হারিয়ে ফেলি, তাহলে বাংলাদেশ আরও পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার জনগণ ও আমাদের ছেলেরা প্রাণ দেবে, একটা সুযোগ তৈরি হবে, আর নিজেদের দায়িত্বহীনতার কারণে সেই সুযোগ হারাব—সেটা হতে পারে না।’
তাই দেরি না করে সংস্কার, জুলাই সনদ ও নির্বাচন—এই তিনটি বিষয় সামনে রেখে যত দ্রুত এগিয়ে যাওয়া যায়, দেশের জন্য ততই মঙ্গল হবে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তার দাবি, ‘নিঃসন্দেহে সেই দায়িত্ব এই অন্তর্বর্তী সরকারের। তবে যত দেরি করছেন, ততই পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। এতে অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে, তারা আবার সংঘটিত হয়ে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে কাজ শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবেন।’
‘বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল আখ্যায়িত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। অতীতে যেমন সব বাধা উপেক্ষা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, আগামী দিনগুলোতেও কোনো আমাদের বাধা ঠেকাতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ ও স্বাধীনতা হচ্ছে আমাদের মূল কথা। সেখানে আমাদের কোনো আপস নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও আমাদের কোনো আপস নেই। আলোচনা, সহনশীলতা ও অন্যের মতকে মেনে নেওয়া—সবকিছু মিলিয়ে আমরা এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব, যেখান আমরা নতুন করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পৌঁছাতে পারি।’
এ সময়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহতের লাশ প্রয়োজনে কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নিহতের স্বজনরা লাশের ময়নাতদন্ত করতে চাননি, তাই হয়নি। কিন্তু যদি সরকার প্রয়োজন মনে করে, তাহলে এখনো ময়নাতদন্তের সুযোগ আছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গোপালগঞ্জের পুরো ঘটনা সাংবাদিকরা লাইভ করেছেন। এখানে লুকোচুরির কিছু নেই। যা হয়েছে, সবার সামনেই হয়েছে।
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষে দায় কার—এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি যা প্রতিবেদন দেবে, সেখান থেকেই জানা যাবে আসলে কেন এমন ঘটনা ঘটল।
থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, এ টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে যাত্রীদের বিদ্যমান অনেক সমস্যা লাঘব হবে। টার্মিনালের ইমিগ্রেশন পুরোপুরি কার্যকর করতে মন্ত্রণালয় প্রস্তুত আছে। ইমিগ্রেশনে ৪০০-এর মতো সদস্য থাকবে।
টার্মিনালের উদ্বোধন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি অন্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়ত্তে যা আছে, সেখান থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’
মন্তব্য